হ্যাকিং শিখার আগ্রহ নেই এমন মানুষ এখনকার দুনিয়ায় খুব কম মিলবে । বিশেষকরে এখনকার যুগের তরুণ-তরুণীদের মাঝে রয়েছে হ্যাকিং শিখার অনেক আগ্রহ । কিভাবে হ্যাকিং শিখা শুরু করবে তা না জানার কারণে পেরে উঠতে পারছেনা অনেকেই । তাই তাদের জন্য এই লেখাটা । আশা করি লেখাটা সবার উপকারে আসবে ।
অনেকেই মনে করেন হ্যাকিং এর জন্য আলাদা কোনো কোর্স রয়েছে । সত্যিকার অর্থে হ্যাকিং এর জন্য আলাদা কোনো কোর্স নেই । সবই প্রোগ্রামিং এর খেলা । আপনি ভাল প্রোগ্রামার হলে ভাল হ্যাকারও হতে পারবেন ।
কাজেই হ্যাকিং সম্বন্ধে জানতে হলে এই লেখাটুকু পড়ুন ।
হ্যাকার কে?
হ্যাকার হচ্ছে সেই ব্যক্তি যিনি নিরাপত্তা/অনিরাপত্তার সাথে জড়িত এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার দূর্বল দিক খুজে বের করায় দক্ষ অথবা অন্য কম্পিউটার ব্যবস্থায় অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে সক্ষম এবং এর সম্পর্কে গভীর জ্ঞানের অধিকারী । সাধারণত হ্যাকার শব্দটি কালো টুপি হ্যাকার (Black Hat Hacker) অর্থেই বেশি ব্যবহৃত হয় যারা মুলত ধ্বংসাত্বক ও অপরাধমুলক কর্মকাণ্ড করে থাকে ।
এছাড়াও আরো নৈ্তিক হ্যাকার রয়েছে যারা মুলত সাদা টুপি হ্যাকার (White Hat Hacker) নামে পরিচিত এবং নৈ্তিকতা সম্পর্কে অপরিষ্কার হ্যাকার রয়েছে যারা ধূসর টুপি হ্যাকার (Grey Hat Hacker) পরিচিত ।
এদের মধ্যে পার্থক্য করার জন্য প্রায়শই ক্র্যাকার শব্দটি ব্যবহার করা হয় । কম্পিউটার নিরাপত্তা হ্যাকার থেকে একাডেমিক বিষয়ের হ্যাকার থেকে আলাদা করার জন্য ব্যবহার করা হয় অসাধু হ্যাকার (কালো টুপি হ্যাকার) থেকে নৈ্তিক হ্যাকারের (সাদা টুপি হ্যাকার) পার্থক্য বুঝাতে ব্যবহৃত হয় ।
হ্যাকারের শ্রেনীবিভাগ:-
সাদা টুপি হ্যাকার (White Hat Hacker) :- এরা কম্পিউটার তথা সাইবার ওয়ার্ল্ডে নিরাপত্তা প্রধান করে থাকে । অপরের ক্ষতি সাধন করে না । এদেরকে এথিক্যাল হ্যাকারও বলা হয় ।
ধূসর টুপি হ্যাকার (Grey Hat Hacker) :- এরা এমন এক ধরণের হ্যাকার যারা সাদা টুপি আর কালো টুপি হ্যাকার এই দুইয়ের মাঝে অবস্থান করে । এরা ইচ্ছে করলে কারো ক্ষতিও করতে পারে আবার কারো উপকারও করতে পারে ।
কালো টুপি হ্যাকার (Black Hat Hacker) :- হ্যাকার বলতে সাধারণত কালো টুপি হ্যাকারদেরই বুঝায় । এরা সবসময়ই কোনো না কোনো ভাবে অপরের ক্ষতি সাধণ করে থাকে । পৃ্থিবীর সবচেয়ে ভয়ানক হ্যাকার এরাই । সাইবার ওয়ার্ল্ডে এরা সবসময়ই ঘৃণিত হয়ে থাকে । প্রোগ্রামিং সম্বন্ধে এদের ভাল ধারণা থাকে ।
এলিট (Elite):- এরা খুব দক্ষ হ্যাকার । এরা সিস্টেম ক্র্যাক করে ভিতরে ঢুকতে পারে এবং নিজেদেরকে সঠিকভাবে লুকায়িত করে রাখতে পারে । এরা সাধারণত বিভিন্ন ধরণের এক্সপ্লয়েট খুজে বের করতে পারে । প্রোগ্রামিং সম্বন্ধেও এদের ভাল ধারণা থাকে । মুলত এলিট হ্যাকাররা হচ্ছে কালো টুপি হ্যাকারদের পরবর্তী রুপ । কালো টুপি হ্যাকাররাই বিভিন্ন সিস্টেমে এট্যাক করতে করতেই যখন সফল হবে এবং সফলভাবে নিজেকে লুকায়িত করে রাখতে পারবে তখনই তাকে এলিট বলা হয় । এরা মুলত কালো টুপি হ্যাকারেরই একটা অংশ ।
স্ক্রিপ্টকিডি (Script Kidie):- এরা নিজেরা কোনো টুল বানাতে পারেনা । বিভিন্ন টুলস বা অন্যের তৈরী স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করে এরা কার্যোসিদ্ধি করে । মুলত যারা বিভিন্ন বই দেখে বা ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখে হ্যাকিং শিখে তাদেরকেই স্ক্রিপ্টকিডি বলে । এরা যতই Grey hat hacking book, black hat hacking book বা white hat hacking নামের বই পড়ুক না কেন, এরা যেহেতু নিজেরা টুলস বানাতে পারেনা অন্যের টুলস দিয়ে হ্যাক করে তাই তাদের কে স্ক্রিপ্টকিডিই বলে ।
নিওফাইট বা নুব (Neophyte বা nOOb)- এরা হ্যাকিং শিক্ষার্থী । এরা হ্যাকিং কেবল শিখছে । অন্য অর্থে এদেরকে বিগিনার বা নিউবি বলা হয় ।
নীল টুপি হ্যাকার (Blue Hat Hacker):- এরা আসলে হ্যাকিংয়ের সাথে তেমন জড়িত নয়। কোন সফটওয়ার বা সিস্টেম শুরু করার পূর্বে এরা ঐ সফটওয়ার বা সিস্টেমের খারাপ বা ক্ষতিকারক দিকগুলো যাচাই বাছাই করে তা শোধরানের চেষ্টা করে।
হ্যাকটিভিস্ট (Hacktivist):- এরা মূলত কোন রাজনৈতিক ব্যাপার, ধর্ম, সোসাল এ্যাটাক ইত্যাদির সাথে জড়িত। তবে অধিকাংশ হ্যাকটিভিস্টরা মূলত ডস এ্যাটাক বা ডি-ডস এ্যাটাকের সাথেই জড়িত।
কিভাবে হ্যাকার হওয়া যায়?
হ্যাকার হতে হলে আপনাকে অবশ্যই প্রোগ্রামিং সম্বন্ধে ভাল ধারণা থাকে হবে এবং দক্ষ হতে হবে । এলিট হ্যাকার হওয়াটা এতো সহজ না এবং খুব তাড়াতাড়ি হওয়া যায়না । একজন হ্যাকার হিসেবে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় এবং একটি সমস্যার চেয়ে আরো বেশি সমাধান করতে হয় । সবসময় মনে রাখবেন হ্যাকিং মুল হচ্ছে আপনার জ্ঞান । সবসময় ধৈর্যধারণ করতে হবে । ধৈর্য না থাকলে হ্যাকার হওয়ার আশা করবেন না ।
হ্যাকার হতে হলে প্রয়োজনঃ-
হ্যাকার হতে হলে প্রয়োজন প্রোগ্রামিং শিখা । যত বেশি প্রোগ্রামিং শিখা যায় । প্রোগ্রামিং ভাল ভাবে না জানা থাকলে সঠিকভাবে হ্যাকিং করা যায়না । অল্প বিদ্যা ভয়ংকর এটা সবসময় মনে রেখে সামনে এগোবেন । যদি প্রোগ্রামিং না শিখে হ্যাকিং করতে যান তাহলে সবাই আপনাকে স্ক্রিপ্টকিডি বলে বিবেচিত করবে । প্রোগ্রামিং জানার কিছু সুবিধা হলোঃ-
>> আপনাকে একজন দক্ষ হ্যাকার হিসেবে বিবেচনা করা হবে ।
>> প্রোগ্রামিং এর মাধ্যমে কালো টুপি হ্যাকাররা অতি সহজে Vulnerability খুজে বের করে ।
>> তোমার নিজের বানানো প্রোগ্রাম দিয়ে সাইট হ্যাক করলে তুমি নিজেই হ্যাকিং করে মজা পাবে ।
কোথা থেকে শুরু করবেনঃ-
অনেকে সিদ্ধান্ত নেয় প্রোগ্রামিং শিখা শুরু করবে , কিন্তু কোথায় শিখবে তা জানেনা । এর জন্য আমি বলব অনলাইনে কোনো ওয়েবসাইট থেকে না শিখে ভাল কোনো ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হোন । আর যদি অনলাইনে কোনো ওয়েবসাইট থেকে শিখতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রোগ্রামিং সম্বন্ধে ব্যসিক ধারণা থাকতে হবে । নয়তো কোড এর ঝামেলা বুঝবেন না । যারা অনলাইন থেকে শিখতে চান তারা এই ওয়েবসাইট থেকে শিখতে পারেন https://www.w3schools.com । এখান থেকে আপনি জাস্ট HTML, JavaScript, SQL, PHP টি শিখুন । বাকিগুলো অন্য কোনো ওয়েবসাইট থেকে শিখুন । কারন এই ওয়েবসাইটি মুলত ওয়েব ডিজাইন শিখার জন্য উপকারী । এই সাইট থেকে আপনি শিখতে পারবেন – HTML, JavaScript, SQL, PHP, jQuery, CSS, Color Picker এবং BootStrap । তবে হ্যাকিং এর জন্য এগুলোর থেকে HTML, JavaScript, SQL এবং PHP শিখতে পারেন ।
শিখার উপায়ঃ-
>> ভাল মানের একটা কম্পিউটার লাগবে । ল্যাপটপ হলে সবচেয়ে ভাল হয় ।
>> অনলাইন থেকে শিখুন, বই পড়ে শিখুন অথবা ট্রেনিং সেন্টার থেকে শিখুন, যেখান থেকেই শিখুন না কেন, গভীর মনোযোগ দিয়ে শিখবেন । ভাল হয় ট্রেনিং সেন্টারে প্রোগ্রামিং শিখলে । আর হ্যা, আপনি জাস্ট প্রোগ্রামিং শিখবেন । সেন্টারে গিয়ে হ্যাকিং এর নামও নিবেন না ।
>> উইন্ডোজ পরিবর্তন করেন, লিনাক্স ব্যবহার করেন । হ্যাকারদের জন্য লিনাক্স এর চেয়ে ভালো কোনো অপারেটিং সিস্টেম নাই । হ্যাকাররা মুলত কালি লিনাক্স (KALI LINUX) ব্যবহার করে । আপনি চাইলে লিনাক্সমিন্ট (LinuxMint), লিনাক্স উবুন্তু (Linux Ubuntu) বা কালি লিনাক্স (Kali Linux) ব্যবহার করতে পারেন । বর্তমানে লিনাক্স এর সোর্স কোড উন্মুক্ত ।
>> এবার ধীরে ধীরে কয়েকটা প্রোগ্রামিং শিখে ফেলুন । এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ । প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজে আপনার দক্ষতা বেশী হবে আপনি তত ভাল মানের হ্যাকার হতে পারবেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই । কোন কোন প্রোগ্রামিং গুলো শিখবেন-
1. HTML
2. JavaScript
3. C
4. C++
5. Perl
6. Python
7. Web Development (হ্যাকার হতে হলে আপনাকে অবশ্যই ভাল মানের একজন ওয়েব ডেভেলপার হতে হবে ।)
8. PHP
9. ASP or ASPX
10. CPanel
11. SQLI
12. XSS
13. Server Rooting
14. RAT
15. Single & Mass Defacement
16. Shell Functioning
17. DDOS
18. Mirroring
19. Phishing
20. Social Engineering
ভয় পাবেন না, এগুলো শিখতে আপনার বেশি সময় লাগবে না ।
আপনি যত বেশি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ জানবেন ও প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ এর প্রতি যত বেশি দক্ষ হবেন তত ভালো মানের হ্যাকার হতে পারবেন । আর ভাল মানে হ্যাকার মানেই ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার । যদিও সাইবার ওয়াল্ডে এরা সবচেয়ে ঘৃণিত তবুও বলছি, হ্যাকার বলতে মুলত ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারদেরই বুঝায় ।
আর অপারেটিং সিস্টেম টা তেমন গুরুত্বপুর্ন না হলেও কালি লিনাক্স হ্যাকিং এর জন্যে সবচেয়ে সেরা।
মনে রাখবেন এর বাহিরে অনেক কিছু আছে। প্রাথমিক অবস্থাতে এসবই পর্যায়ক্রমে শিখুন, এরপর এক্সপ্লয়েট নিয়ে কাজ করবেন। দুঃখিত তাড়াহুড়ো করে লিখতে হয়েছে কিছু বাদ পড়লে সংযোজন করা হবে।
সাথে থাকুন।
অনেকেই মনে করেন হ্যাকিং এর জন্য আলাদা কোনো কোর্স রয়েছে । সত্যিকার অর্থে হ্যাকিং এর জন্য আলাদা কোনো কোর্স নেই । সবই প্রোগ্রামিং এর খেলা । আপনি ভাল প্রোগ্রামার হলে ভাল হ্যাকারও হতে পারবেন ।
কাজেই হ্যাকিং সম্বন্ধে জানতে হলে এই লেখাটুকু পড়ুন ।
হ্যাকার কে?
হ্যাকার হচ্ছে সেই ব্যক্তি যিনি নিরাপত্তা/অনিরাপত্তার সাথে জড়িত এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার দূর্বল দিক খুজে বের করায় দক্ষ অথবা অন্য কম্পিউটার ব্যবস্থায় অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে সক্ষম এবং এর সম্পর্কে গভীর জ্ঞানের অধিকারী । সাধারণত হ্যাকার শব্দটি কালো টুপি হ্যাকার (Black Hat Hacker) অর্থেই বেশি ব্যবহৃত হয় যারা মুলত ধ্বংসাত্বক ও অপরাধমুলক কর্মকাণ্ড করে থাকে ।
এছাড়াও আরো নৈ্তিক হ্যাকার রয়েছে যারা মুলত সাদা টুপি হ্যাকার (White Hat Hacker) নামে পরিচিত এবং নৈ্তিকতা সম্পর্কে অপরিষ্কার হ্যাকার রয়েছে যারা ধূসর টুপি হ্যাকার (Grey Hat Hacker) পরিচিত ।
এদের মধ্যে পার্থক্য করার জন্য প্রায়শই ক্র্যাকার শব্দটি ব্যবহার করা হয় । কম্পিউটার নিরাপত্তা হ্যাকার থেকে একাডেমিক বিষয়ের হ্যাকার থেকে আলাদা করার জন্য ব্যবহার করা হয় অসাধু হ্যাকার (কালো টুপি হ্যাকার) থেকে নৈ্তিক হ্যাকারের (সাদা টুপি হ্যাকার) পার্থক্য বুঝাতে ব্যবহৃত হয় ।
হ্যাকারের শ্রেনীবিভাগ:-
সাদা টুপি হ্যাকার (White Hat Hacker) :- এরা কম্পিউটার তথা সাইবার ওয়ার্ল্ডে নিরাপত্তা প্রধান করে থাকে । অপরের ক্ষতি সাধন করে না । এদেরকে এথিক্যাল হ্যাকারও বলা হয় ।
ধূসর টুপি হ্যাকার (Grey Hat Hacker) :- এরা এমন এক ধরণের হ্যাকার যারা সাদা টুপি আর কালো টুপি হ্যাকার এই দুইয়ের মাঝে অবস্থান করে । এরা ইচ্ছে করলে কারো ক্ষতিও করতে পারে আবার কারো উপকারও করতে পারে ।
কালো টুপি হ্যাকার (Black Hat Hacker) :- হ্যাকার বলতে সাধারণত কালো টুপি হ্যাকারদেরই বুঝায় । এরা সবসময়ই কোনো না কোনো ভাবে অপরের ক্ষতি সাধণ করে থাকে । পৃ্থিবীর সবচেয়ে ভয়ানক হ্যাকার এরাই । সাইবার ওয়ার্ল্ডে এরা সবসময়ই ঘৃণিত হয়ে থাকে । প্রোগ্রামিং সম্বন্ধে এদের ভাল ধারণা থাকে ।
এলিট (Elite):- এরা খুব দক্ষ হ্যাকার । এরা সিস্টেম ক্র্যাক করে ভিতরে ঢুকতে পারে এবং নিজেদেরকে সঠিকভাবে লুকায়িত করে রাখতে পারে । এরা সাধারণত বিভিন্ন ধরণের এক্সপ্লয়েট খুজে বের করতে পারে । প্রোগ্রামিং সম্বন্ধেও এদের ভাল ধারণা থাকে । মুলত এলিট হ্যাকাররা হচ্ছে কালো টুপি হ্যাকারদের পরবর্তী রুপ । কালো টুপি হ্যাকাররাই বিভিন্ন সিস্টেমে এট্যাক করতে করতেই যখন সফল হবে এবং সফলভাবে নিজেকে লুকায়িত করে রাখতে পারবে তখনই তাকে এলিট বলা হয় । এরা মুলত কালো টুপি হ্যাকারেরই একটা অংশ ।
স্ক্রিপ্টকিডি (Script Kidie):- এরা নিজেরা কোনো টুল বানাতে পারেনা । বিভিন্ন টুলস বা অন্যের তৈরী স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করে এরা কার্যোসিদ্ধি করে । মুলত যারা বিভিন্ন বই দেখে বা ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখে হ্যাকিং শিখে তাদেরকেই স্ক্রিপ্টকিডি বলে । এরা যতই Grey hat hacking book, black hat hacking book বা white hat hacking নামের বই পড়ুক না কেন, এরা যেহেতু নিজেরা টুলস বানাতে পারেনা অন্যের টুলস দিয়ে হ্যাক করে তাই তাদের কে স্ক্রিপ্টকিডিই বলে ।
নিওফাইট বা নুব (Neophyte বা nOOb)- এরা হ্যাকিং শিক্ষার্থী । এরা হ্যাকিং কেবল শিখছে । অন্য অর্থে এদেরকে বিগিনার বা নিউবি বলা হয় ।
নীল টুপি হ্যাকার (Blue Hat Hacker):- এরা আসলে হ্যাকিংয়ের সাথে তেমন জড়িত নয়। কোন সফটওয়ার বা সিস্টেম শুরু করার পূর্বে এরা ঐ সফটওয়ার বা সিস্টেমের খারাপ বা ক্ষতিকারক দিকগুলো যাচাই বাছাই করে তা শোধরানের চেষ্টা করে।
হ্যাকটিভিস্ট (Hacktivist):- এরা মূলত কোন রাজনৈতিক ব্যাপার, ধর্ম, সোসাল এ্যাটাক ইত্যাদির সাথে জড়িত। তবে অধিকাংশ হ্যাকটিভিস্টরা মূলত ডস এ্যাটাক বা ডি-ডস এ্যাটাকের সাথেই জড়িত।
কিভাবে হ্যাকার হওয়া যায়?
হ্যাকার হতে হলে আপনাকে অবশ্যই প্রোগ্রামিং সম্বন্ধে ভাল ধারণা থাকে হবে এবং দক্ষ হতে হবে । এলিট হ্যাকার হওয়াটা এতো সহজ না এবং খুব তাড়াতাড়ি হওয়া যায়না । একজন হ্যাকার হিসেবে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় এবং একটি সমস্যার চেয়ে আরো বেশি সমাধান করতে হয় । সবসময় মনে রাখবেন হ্যাকিং মুল হচ্ছে আপনার জ্ঞান । সবসময় ধৈর্যধারণ করতে হবে । ধৈর্য না থাকলে হ্যাকার হওয়ার আশা করবেন না ।
হ্যাকার হতে হলে প্রয়োজনঃ-
হ্যাকার হতে হলে প্রয়োজন প্রোগ্রামিং শিখা । যত বেশি প্রোগ্রামিং শিখা যায় । প্রোগ্রামিং ভাল ভাবে না জানা থাকলে সঠিকভাবে হ্যাকিং করা যায়না । অল্প বিদ্যা ভয়ংকর এটা সবসময় মনে রেখে সামনে এগোবেন । যদি প্রোগ্রামিং না শিখে হ্যাকিং করতে যান তাহলে সবাই আপনাকে স্ক্রিপ্টকিডি বলে বিবেচিত করবে । প্রোগ্রামিং জানার কিছু সুবিধা হলোঃ-
>> আপনাকে একজন দক্ষ হ্যাকার হিসেবে বিবেচনা করা হবে ।
>> প্রোগ্রামিং এর মাধ্যমে কালো টুপি হ্যাকাররা অতি সহজে Vulnerability খুজে বের করে ।
>> তোমার নিজের বানানো প্রোগ্রাম দিয়ে সাইট হ্যাক করলে তুমি নিজেই হ্যাকিং করে মজা পাবে ।
কোথা থেকে শুরু করবেনঃ-
অনেকে সিদ্ধান্ত নেয় প্রোগ্রামিং শিখা শুরু করবে , কিন্তু কোথায় শিখবে তা জানেনা । এর জন্য আমি বলব অনলাইনে কোনো ওয়েবসাইট থেকে না শিখে ভাল কোনো ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হোন । আর যদি অনলাইনে কোনো ওয়েবসাইট থেকে শিখতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রোগ্রামিং সম্বন্ধে ব্যসিক ধারণা থাকতে হবে । নয়তো কোড এর ঝামেলা বুঝবেন না । যারা অনলাইন থেকে শিখতে চান তারা এই ওয়েবসাইট থেকে শিখতে পারেন https://www.w3schools.com । এখান থেকে আপনি জাস্ট HTML, JavaScript, SQL, PHP টি শিখুন । বাকিগুলো অন্য কোনো ওয়েবসাইট থেকে শিখুন । কারন এই ওয়েবসাইটি মুলত ওয়েব ডিজাইন শিখার জন্য উপকারী । এই সাইট থেকে আপনি শিখতে পারবেন – HTML, JavaScript, SQL, PHP, jQuery, CSS, Color Picker এবং BootStrap । তবে হ্যাকিং এর জন্য এগুলোর থেকে HTML, JavaScript, SQL এবং PHP শিখতে পারেন ।
শিখার উপায়ঃ-
>> ভাল মানের একটা কম্পিউটার লাগবে । ল্যাপটপ হলে সবচেয়ে ভাল হয় ।
>> অনলাইন থেকে শিখুন, বই পড়ে শিখুন অথবা ট্রেনিং সেন্টার থেকে শিখুন, যেখান থেকেই শিখুন না কেন, গভীর মনোযোগ দিয়ে শিখবেন । ভাল হয় ট্রেনিং সেন্টারে প্রোগ্রামিং শিখলে । আর হ্যা, আপনি জাস্ট প্রোগ্রামিং শিখবেন । সেন্টারে গিয়ে হ্যাকিং এর নামও নিবেন না ।
>> উইন্ডোজ পরিবর্তন করেন, লিনাক্স ব্যবহার করেন । হ্যাকারদের জন্য লিনাক্স এর চেয়ে ভালো কোনো অপারেটিং সিস্টেম নাই । হ্যাকাররা মুলত কালি লিনাক্স (KALI LINUX) ব্যবহার করে । আপনি চাইলে লিনাক্সমিন্ট (LinuxMint), লিনাক্স উবুন্তু (Linux Ubuntu) বা কালি লিনাক্স (Kali Linux) ব্যবহার করতে পারেন । বর্তমানে লিনাক্স এর সোর্স কোড উন্মুক্ত ।
>> এবার ধীরে ধীরে কয়েকটা প্রোগ্রামিং শিখে ফেলুন । এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ । প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজে আপনার দক্ষতা বেশী হবে আপনি তত ভাল মানের হ্যাকার হতে পারবেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই । কোন কোন প্রোগ্রামিং গুলো শিখবেন-
1. HTML
2. JavaScript
3. C
4. C++
5. Perl
6. Python
7. Web Development (হ্যাকার হতে হলে আপনাকে অবশ্যই ভাল মানের একজন ওয়েব ডেভেলপার হতে হবে ।)
8. PHP
9. ASP or ASPX
10. CPanel
11. SQLI
12. XSS
13. Server Rooting
14. RAT
15. Single & Mass Defacement
16. Shell Functioning
17. DDOS
18. Mirroring
19. Phishing
20. Social Engineering
ভয় পাবেন না, এগুলো শিখতে আপনার বেশি সময় লাগবে না ।
আপনি যত বেশি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ জানবেন ও প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ এর প্রতি যত বেশি দক্ষ হবেন তত ভালো মানের হ্যাকার হতে পারবেন । আর ভাল মানে হ্যাকার মানেই ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার । যদিও সাইবার ওয়াল্ডে এরা সবচেয়ে ঘৃণিত তবুও বলছি, হ্যাকার বলতে মুলত ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারদেরই বুঝায় ।
আর অপারেটিং সিস্টেম টা তেমন গুরুত্বপুর্ন না হলেও কালি লিনাক্স হ্যাকিং এর জন্যে সবচেয়ে সেরা।
মনে রাখবেন এর বাহিরে অনেক কিছু আছে। প্রাথমিক অবস্থাতে এসবই পর্যায়ক্রমে শিখুন, এরপর এক্সপ্লয়েট নিয়ে কাজ করবেন। দুঃখিত তাড়াহুড়ো করে লিখতে হয়েছে কিছু বাদ পড়লে সংযোজন করা হবে।
সাথে থাকুন।
Comment