এফবিআই এর হাতে গ্রেফতার একজন নিলাশ মুহাম্মাদ ও গুপ্তচরদের চক্রান্ত বুঝার এবং তা নস্যাৎ করার ১০টি পদ্ধতি
সম্মানিত ভাইয়েরা গতকাল খবরে প্রকাশ এফবিআই’র স্টিং অপারেশনে গ্রেফতার হন বাংলাদেশি আইএস জিহাদি নিলাশ মুহাম্মাদ। আমি ওই ভাইয়ের গ্রেফতারির পূর্ণ বিবরণ তুলে দিচ্ছি এবং সেই সাথে গুপ্তচরদের চক্রান্ত বুঝার এবং তা নস্যাৎ করার ১০টি পদ্ধতি উল্লেখ করছি। পরিশেষে কথা সেই একটাই প্রথমে আপনি আপনার উটকে বাঁধুন অতঃপর আল্লাহর উপর ভরসা করুন। জাঝাকুমুল্লাহ
(তাগুত বাংলাট্রিবিউন থেকে হুবহু কপি)
যেভাবে এফবিআই’র স্টিং অপারেশনে গ্রেফতার হন বাংলাদেশি নিলাশ
এফবিআই স্টিং অপারেশনযুক্তরাষ্ট্রে এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক নিলাশ মোহাম্মদের বিরুদ্ধে ইসলামিক স্টেট (আইএস)-কে সহযোগিতা এবং সেনা সদস্যকে হত্যার ষড়যন্ত্রের মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর আগে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই স্টিং অপারেশনের মাধ্যমে তাকে গ্রেফতার করে।
বর্তমানে ২৪ বছর বয়সী নিলাশ ১৯৯৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যান। তখন তিনি শিশু। গত বছর সেপ্টেম্বরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আইএসকে সমর্থন জানিয়ে এফবিআইয়ের নজরদারিতে আসেন নিলাশ। ওই সময় নিলাশ ফ্রান্সের প্যারিসে এবং ক্যালিফোর্নিয়ার সান বারনারডিনোতে আইএসের হামলার প্রশংসা করেন।
এরপর অক্টোবরে নিলাশ মার্কিন সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে আগ্রহী এক ব্যক্তির ছবি টুইট করেন। ছবির ক্যাপশনে নিলাশ লিখেন, ‘এই ব্যক্তি মুসলিমদের হত্যায় উৎসাহ দেয়’। ওই ব্যক্তিকে হামলার জন্য তার অনেক ব্যক্তিগত তথ্যও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন নিলাশ।
জানুয়ারিতে এসে নিলাশ একে-৪৭ অ্যাসল্ট রাইফেলের একটি ছবি পোস্ট করেন। এবার ক্যাপশনে লিখেন, ‘এটা অস্ত্রের চেয়েও বেশি কিছু। এটা জান্নাতে যাওয়ার টিকিট’।
এপ্রিল মাসে এফবিআই জানতে পারে, সন্দেহভাজন নিলাশ প্রিন্স জর্জ কাউন্টিতে হ্যান্ডগান পাওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন। এ সময় নিলাশ তার এক সহপাঠীকে বলেন যে, তিনি একটি গ্লক নাইনএমএম হ্যান্ডগান ও একে-৪৭ রাইফেল কিনতে চান। ওই সময় নিলাম নিয়মিত শুটিং অনুশীলন শুরু করেন। এছাড়া অস্ত্রের লাইসেন্স পেতে ফিঙ্গার প্রিন্টও জমা দেন।
মে মাসে এসে নিলাশের পরিচয় হয় এফবিআইয়ের এক আন্ডারকাভার এজেন্টের সঙ্গে। ওই এজেন্টকে নিলাশ জানায়, বিদেশে আইএসের সদস্যদের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে এবং এক মার্কিন সেনাকে হত্যা করতে চায়, যার ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে। ওই এজেন্ট নিলাশকে জানায়, আইএসের তারও যোগাযোগ রয়েছে। চাইলে নিলাশকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবস্থা করে দিতে পারবে। পরে এজেন্ট তাকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র দেয়। এফবিআইয়ের দাবি অস্ত্রটি অচল করা ছিল যদিও নিলাশ তা জানত না।
সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে নিলাশ ও এফবিআই এজেন্ট ভার্জিনিয়ার একটি অস্ত্রের দোকানে যান। সেখান থেকে নিলাশ নাইনএমএম ও পয়েন্ট ফোরটি ক্যালিবারের গুলি কেনেন। ওই এজেন্ট নিলাশকে হত্যার টার্গেট মার্কিন সেনার ঠিকানা দেয়। কিন্তু মার্কিন সেনার জীবন রক্ষায় নিলাশকে ভুল ঠিকানা দেয় এফবিআই এজেন্ট।
এরপর এজেন্টকে নিয়ে নিলাশ ওই ঠিকানায় উপস্থিত হয়। গুলি লোড করে নিলাশ কোনও এক ব্যক্তিকে টেক্সট মেসেজ পাঠান, যাকে তিনি আইএসের সদস্য মনে করেন। মেসেজে তিনি লিখেন, ‘আমি প্রস্তুত’। গাড়ি থেকে নেমে মার্কিন সেনার অবস্থান লক্ষ্য করে আগাতে গেলেই এফবিআই সদস্যরা তাকে ঘিরে ফেলেন। এ সময় নিলাশ দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করা হয় তাকে।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিলাশের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরে কথা জানিয়েছে। শনিবার দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে, তিনি এক মার্কিন সেনা সদস্যকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছিলেন।
জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের বিবৃতিতে বলা হয়, পুলিশ ইনফর্মারের সহযোগিতায় অস্ত্র কেনার সময় ভার্জিনিয়ার কাছ থেকে গ্রেফতার করা হয় নিলাশকে। সোমবার আদালতে প্রাথমিক শুনানি শেষে আটক করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ২০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে নিলাশের।
ম্যারিল্যান্ড জেলার অ্যাটর্নি রব রসেনস্টেইন বিবৃতিতে বলেন, হামলার পূর্বেই সন্দেহভাজন বিপজ্জনক ব্যক্তিদের গ্রেফতার করা আমাদের লক্ষ্য। একই সঙ্গে সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করা। জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের কাছ থেকে আমেরিকানরা এটাই প্রত্যাশা করেন এবং আমরা সে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের চেষ্টা করি।
সোমবার আদালতে প্রাথমিক শুনানি শেষে আটক করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ২০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে নিলাশের। ৬ অক্টোবর ডিটেনশনে নেওয়ার জন্য শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। সূত্র: ওয়াশিংটন এক্সামিনার।
গুপ্তচরদের চক্রান্ত বুঝার এবং তা নস্যাৎ করার ১০টি পদ্ধতি
পরম করুনাময়, অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
সমস্ত প্রশংসা মহাবিশ্বের স্রষ্টা ও প্রতিপালক আল্লাহ তা’আলার। সমস্ত প্রশংসা তাঁরই, তিনি বলেনঃ
“এবং তোমরা তোমাদের কথা গোপনেই বলো অথবা প্রকাশ্যে বলো, তিনি তো অন্তর্যামী।” (সূরা মু্লক(৬৭)-১৩)
এবং শান্তি বর্ষিত হোক শেষ নবী মুহাম্মদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), তার পরিবারবর্গ, তার সাহাবীগণ ও তার অনুসারীদের উপর; তিনি বলেনঃ
“নিশ্চয় সত্যবাদিতা পুণ্যের পথ দেখায়। আর পুণ্য জান্নাতের দিকে পথ নির্দেশনা করে। আর মানুষ সত্য কথা বলতে থাকে, শেষ পর্যন্ত আল্লাহর নিকট তাকে মহাসত্যবাদী রুপে লিপিবদ্ধ করা হয়। আর নিঃসন্দেহে মিথ্যাবাদিতা নির্লজ্জতা ও পাপাচারের দিকে নিয়ে যায়। আর পাপাচার জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। আর মানুষ মিথ্যা বলতে থাকে, শেষ পর্যন্ত আল্লাহর নিকট তাকে মহামিথ্যাবাদী রুপে লিপিবদ্ধ করা হয়। (বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ এবং আল-তিরমিজি)।”
শুরু করছিঃ
আল্লাহ তা’আলা কুরআনে বলেনঃ
“এবং যখন কাফিররা তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তোমাকে বন্দী করার জন্য, হত্যা করার অথবা নির্বাসিত করার জন্য এবং তারা ষড়যন্ত্র করে আর আল্লাহ্*ও কৌশল করেন, কিন্তু আল্লাহ্*ই সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশলী।” (সূরা আনফাল(৮)-৩০)
সাম্প্রতিক ঘটনার আলোকে, বিশেষ করে আমাদের ওরিগন (আমেরিকার একটি অঙ্গরাজ্য)-এর ভাইয়ের (আল্লাহ তাকে অবিচল রাখুন এবং মুক্ত করুন) বন্দী হওয়ার ঘটনার প্রেক্ষিতে; আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে মুসলিমদের আটকানো এবং পরে বন্দী করার উদ্দেশ্যে গুপ্তচর ও সংবাদদাতারা যেসব কৌশল অবলম্বন করে সেগুলো এড়ানো এবং তাদের সেই সমস্ত চক্রান্ত নস্যাৎ করার ১০টি উপায় লিখবো এবং রেকর্ড করবো।
#এক#
একটা গুপ্তচর সবসময় চিত্ত আকর্ষন (বা গ্রুমিং) দিয়ে শুরু করে। এই চিত্ত আকর্ষন (বা গ্রুমিং) প্রক্রিয়াটি কয়েক মাস ধরে চলতে পারে। যাকে তারা ধরতে চায় তার সাথে সাক্ষাৎ করারও পূর্বে কখনো কখনো তারা (গুপ্তচররা) কয়েক মাসের জন্য একাকী (গোপনে) তথ্য সংগ্রহ করে এবং ফোরামে অথবা মসজিদে সক্রিয় থাকে। প্রথমবার সাক্ষাতে তারা সাধারনত ছোটখাট বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। যেমন ধরুন, কোন অনুবাদ চাওয়া, নাসিদ খোঁজা, বিবাহ উপযুক্ত বর / কনের খোঁজ করা অথবা হালাল খাদ্যের জন্য বিখ্যাত কোন জায়গা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা বলে; কারণ এগুলোই হচ্ছে আলোচনা শুরু করার প্রাথমিক চাবিকাঠি। আর এগুলোই বিশ্বাস অর্জনে কাজে লাগে এবং কাঠখোট্টা বলে মনে হয় না, কারণ কাঠখোট্টা / নীরস (যেমনঃ প্রথম দিনই জিহাদের ব্যাপারে কথা বলা) কথাবার্তা (প্রথমেই) বিপদ সংকেত উত্তোলন করে। একটা গুপ্তচর জিহাদের কথা বলার আগে তার লক্ষ্যবস্তুর উপর মাসের পর মাস ধরে (চিত্ত আকর্ষনের / প্রস্তুত করার লক্ষ্যে) তৎপরতা চালাতে পারে, (কিন্তু) তারপরও তারা ছোটখাট বিষয় দিয়েই কথা শুরু করে; যেমন বলে, “তোমার কি আস-সাহাবের নতুন ভিডিওটা ভালো লেগেছে” অথবা “তোমার প্রিয় জিহাদি নাসিদ কোনটা” ইত্যাদি।
#দুই#
আপনি হয়ত খেয়াল করলে দেখবেন মিথ্যা ও অসঙ্গতির আড়ালে বিপদ সংকেত থাকে। এইধরনের বিপদ সংকেতগুলোর মধ্যে হতে পারে; যেমনঃ গল্পের মধ্যে (কাহিনীতে) পরিবর্তন আনা (যা সাধারণত উদঘাটিত হয় যখন আপনি তাদের বুঝতে দেন যে, তাদের গল্প পরিবর্তনের বিষয়ে আপনি সজাগ)। উদাহরণস্বরূপ, একটা গুপ্তচর হয়ত বলতে পারে, সে আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। অথচ আপনি একটু বুদ্ধি খরচ করলেই দেখবেন, সে অনলাইন হচ্ছে অথবা মসজিদে আসছে বিশ্ববিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে। যখন আপনি বলবেন “আমি ভেবেছি আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ে” সাথে সাথে তারা গল্পে পরিবর্তন আনবে যাতে তাদের আগের কথার সাথে মিল থাকে; যেমন বলতে পারে - “আমি অনলাইনে ক্লাস করি” অথবা “আমি রাতে ক্লাস করি”। ছোটখাট বিষয়াদি খেয়াল করবেন (যেগুলো অপ্রয়োজনীয় মনে হতে পারে), যেমনঃ পরিবারের সদস্য, চাকুরী অথবা কোন বিশেষ বিষয়ে জ্ঞান। যদি এই ব্যাক্তির কথায় কোন একটি গড়মিল খুঁজে পান (যদিও তা কোন ছোট বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত), সতর্কতা অবলম্বন করুন হতে পারে সবকিছুই মিথ্যা।
#তিন#
আরেকটি সতর্ক সংকেত / বিপদ সংকেত হচ্ছে একটু গুরুত্বপূর্ণ কথাবার্তা বলা। এর মধ্যে রয়েছে, কোন মুজাহিদিন সংঘঠনের সদস্য দাবী করা অথবা কোন মুজাহিদিন বা কোন বিশেষ শাইখের সাথে যোগাযোগ থাকা অথবা ব্যাক্তিগতভাবে তাদের চিনা বা বিভিন্ন মুজাহিদ নেতার সাথে সাক্ষাৎ থাকা ইত্যাদি। এটা সুস্পষ্ট - যে কেউ এমনটা দাবী করবে, হয় সে মিথ্যাবাদী অথবা যদি সে সত্যবাদীও হয়ে থাকে, তাহলে তার নিজের এবং যে মুজাহিদ ভাইকে সে উপস্থাপন করেছে তাদের উভয়ের নিরাপত্তার ব্যাপারে সে চরম জাহেল(অর্থাৎ অজ্ঞ)।
#চার#
একটা গুপ্তচর সাধারণত নিজেকে বেশীরভাগ সময়ই ব্যস্ত দাবী করবে - যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা নিয়ে । তাই (সচরাচর) না দেখার কারণ হিসাবে মিডটার্মের পড়াশুনা অথবা বাড়ির কাজের অজুহাত দেখিয়ে ব্যাক্তিগতভাবে ঘন ঘন ক্ষমা চাইবে। গুপ্তচররা এইধরনের ছলচাতুরীর আশ্রয় নেয়, নিজেদেরকে স্বাভাবিক প্রমাণ করার জন্য, যাতে মনে হয় এগুলো (অর্থাৎ, তাদের পড়াশুনার চাপ) তাদের এই (অর্থাৎ মুজাহিদ) জীবনধারারই অংশ। তার মানে এই বুঝাচ্ছি না যে, কোন মুজাহিদিন ভাই ছাত্র হবেন না এবং পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন না বরং বাস্তবতা হচ্ছে এমন অনেক মুজাহিদিন ভাই আছেন (যারা ছাত্র এবং পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন)। তারপরও যদি কেউ সত্যিকার অর্থে জিহাদ করতে চায় এবং বিশেষ করে শাহাদাত কামনা করে (ইশতিহাদি অথবা ফিদায়ই হামলার মাধ্যমে), তাদের ক্ষেত্রে পড়াশুনাকে অধিক গুরুত্ব দেয়াটা মানানসই না। চাকরি বা স্বাস্থ্যগত সমস্যার অজুহাতের তুলনায় তারা (অর্থাৎ, গুপ্তচররা) পড়াশুনার অজুহাতটা অনেক বেশী দিয়ে থাকে; এর সম্ভাব্য কারণ হতে পারে, যাকে (অর্থাৎ যে টার্গেটকে) তারা সময় দেয় সে হয়ত মনে করে অসুস্থ্য ব্যাক্তি জিহাদের জন্য যোগ্য না আর যে কিনা চাকুরীজীবী এবং শুল্ক আদায় করে সে (তাগুতের / গুপ্তচরদের) সাহায্যকারী। এসব কারণ উপেক্ষা করলেও এইধরনের অজুহাত এবং দেরিতে (যদিও আপনার মেসেজ পাঠানোর এক বা দুই দিন পর) রিপ্লাই দেয়ার জন্য বারবার ক্ষমা চাওয়াটা খুবই প্রচলিত একটি বৈশিষ্ট্য।
#পাঁচ#
গুপ্তচররা তাদের টার্গেটদের সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি বলেন জিহাদ করতে চাই, তাহলে তারা জিজ্ঞাসা করবে আপনি (জিহাদ বলতে) শারীরিক জিহাদ (অর্থাৎ সমর যুদ্ধ) বুঝাচ্ছেন কিনা। আর যদি বলেন আপনার আগ্নেয়াস্ত্র সম্পর্কে জ্ঞান আছে, তাহলে তারা জিজ্ঞাসা করবে কি ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র এবং আপনি কি জানেন। প্রত্যেকেরই উচিত সবসময় বুঝেশুনে কথা বলা অথবা ভালো হয় কিছুই না বলা। যে কারণে গুপ্তচররা তাদের টার্গেটদের সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে, তার কারণ এই না যে তারা আপনাকে চিনতে পারে নাই বরং আপনি যদি কখনো গ্রেফতার হন, তাহলে তারা যেন বিচারক পর্ষদের (অর্থাৎ জুরির) নিকট আপনাকে অপরাধী সাব্যস্ত করতে পারে। আপনি যদি অস্পষ্ট হন, তাহলে বিচারক পর্ষদ (অর্থাৎ জুরি) আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করতে না পারার একটা সুযোগ আপনার থাকবে। আর আপনি যদি মুখ বন্ধ রাখেন তাহলে তো আপনার গ্রেফতার না হওয়ার একটা সুযোগ থাকে। একটা গুপ্তচর আপনাকে হুমকি দিতেও পারে আবার নাও দিতে পারে কিন্তু আপনি আগে কথা না বলা পর্যন্ত সে অপেক্ষা করবে। অবশেষে তারা চায় আপনাকে, সুতরাং যাই হোক না কেন এবং যে হুমকিরই সম্মুখীন আপনাকে করুক না কেনো, এগুলো করতে গিয়ে সে (অর্থাৎ একটা গুপ্তচর) কোনো প্রকারের ঝামেলায় পড়তে চাইবে না। তারা শুধু চায় আপনি কথা বলুন এবং তা যেন হয় সুনির্দিষ্ট (যে কথা তারা জানতে চায়)।
#ছয়#
চিত্ত আকর্ষন করার (বা গ্রুমিং-এর) সময় একটা গুপ্তচর সবসময় আপনাকে মেনে নিবে। তারা আপনার মানহাজও মেনে নিবে এবং এই নিয়ে তর্ক করবে না (যদি বলেও থাকে যে আপনার মানহাজ তাদের মানহাজ থেকে আলাদা তবুও)। ধূমপান করা, গান শুনা অথবা ছবি ঝুলানো এ জাতীয় কাজকে (তাদের টার্গেট যদি বলে এগুলো সে করে তবুও) গুপ্তচররা কখনোই নিন্দা জানাবে না; প্রকৃতপক্ষে তারা নিজেরাই এগুলো করে বলে দাবী করবে। তারা সবসময় ব্যাক্তিগত প্রশ্নের উত্তর দিবে এবং আপনি যদি জিজ্ঞাসা করেন তাতে তারা ইতঃস্ততও বোধ করবে না; কারণ পরিশেষে তারা মিথ্যাই বলবে। আপনি যদি রিভার্ট হয়ে (ইসলামে প্রত্যাবর্তন করে) থাকেন এবং আপনার ইসলাম গ্রহণের পূর্বের পাপ কর্মের কথা উল্লেখ করেন তাতে একটা গুপ্তচর একটুও ভ্রূক্ষেপ করবে না। একটি ব্যাতিক্রম ছাড়া কোনো পরিস্থিতিতে গুপ্তচররা আপনার উপর চড়াও হবে না বা দ্বিমত পোষণ করবে না। আর সেই ব্যাতিক্রমটা হচ্ছে, যদি টার্গেট জিহাদ করার চিন্তা-ভাবনা থেকে দূরে সরে যায় বা তার(অর্থাৎ, টার্গেটের) জিহাদী ঘোর কেটে যায়। তখন গুপ্তচর তার টার্গেটকে বিরক্ত করবে, সাধারণত অতীতের কথা স্বরণ করিয়ে দিবে অথবা তার (অর্থাৎ টার্গেটের) মনে অপরাধ বোধ তৈরি করার চেষ্টা করবে। গুপ্তচর কেবলমাত্র তখনই হতাশ হয়ে পড়বে যখন সে দেখবে তার টার্গেট জিহাদের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে চলে গেছে [যে কথা সে (অর্থাৎ গুপ্তচর) বলছে (যদিও তা আল-কায়দা অথবা জয়স ই মুহাম্মদ যাই হোক না কেনো) তার বিরুদ্ধে চলে গেছে]।
#সাত#
নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, এই ব্যক্তি কি আপনাকে বিশ্বাস করে? বর্তমান বিশ্বে যেখানে আক্ষরিক অর্থে যে কেউই গুপ্তচর হতে পারে, সেখানে কেনই বা এই ব্যাক্তি আপনাকে বিশ্বাস করবে? কেন তারা নিজেদের মুজাহিদ দাবী করে এবং তা এমন কাউকে বলে, যার সাথে কম্পিটারের মাধ্যমে পরিচয় অথবা মসজিদে? কেন তারা আপনাকেই বলছে যে তারা জিহাদি অপারেশন করতে চায় বা হিজরত করতে চায়? আপনি কখনও বুঝতেই পারবেন না যে, সে (জিহাদের ব্যাপারে) আন্তরিক ছিল কিনা আর বিষয়টা দুঃখজনক হলেও সত্য। একটু ভেবে দেখুন কেন তারা এতো মানুষ থাকতে শুধু আপনাকে বিশ্বাস করবে আর অন্য কাউকে কেন (বিশ্বাস করবে) না। উত্তর হচ্ছে, কারণ তারা আপনাকে গ্রেফতার করতে চায় এবং এইটা তাদের চিত্ত আকর্ষন (বা গ্রুমিং) প্রক্রিয়ার একটি অংশ মাত্র।
#আট#
এখন নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, যদি তারা আপনাকে বিশ্বাস করে থাকে তাহলে কেন তাদের আপনাকে দরকার? যদি তারা চায় আপনি তাদের সাথে হিজরত করেন, তাহলে নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, কেন তারা একাকী যাচ্ছে না অথবা অন্য কাউকে সাথে নিচ্ছে না। যদি আভ্যন্তরীণ অপারেশন পরিচালনার জন্য আপনার মত কাউকে তাদের দরকার হয়, তাহলে আপনাকে কেন বাছাই করল। আপনি যদি ওরেগণ (আমেরিকার একটি অঙ্গরাজ্য)–এর ঘটনার দিকে তাকান এবং তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন, তাহলে আপনি দেখবেন যে তারাও ছিল একদল “ভাই” (যারা কিনা প্রকৃতপক্ষে গুপ্তচর ছিল) আমাদের সরলমনা ভাইকে (আল্লাহ তাকে মুক্ত করুন) সেই (অর্থাৎ জিহাদি) কাজে নিয়োজিত করেছিল। এখন যে কেউ নিজেকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন “যদি তারা আগে থেকেই একটি সংঘবদ্ধ দল হয়ে থাকে (যাদের মধ্যে বোমার কারিগর মজুদ আছে), তাহলে গাড়ি চালানোর জন্য কেন অন্য কাউকে প্রয়োজন হবে?” যদি কেউ দাবি করে কিভাবে বোমা বানাতে হয় তা সে জানে, তাহলে তারা আপনাকে বোমা স্থাপন করতে বলবে? এটা কি এজন্য যে তারা মৃত্যুকে ভয় পায়? এটা কি এজন্য যে তারা আরো বোমা বানাতে চায়? অথবা এই জন্য যে তারা আপনাকে ফাঁদে ফেলতে চায়? এই বিষয়গুলো বাস্তব, বিশেষত যখন বহু গুপ্তচর এতে অন্তর্ভুক্ত থাকে। যদি এমন একটি দলই মজুদ থাকে যারা নিজেদের মুজাহিদিন দাবি করে এবং আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে কি চাইতে পারে?
যদি তারা নিজেদের ফিদায়ী (দল) দাবী করে, তাহলে তাদের কেন আরেকজন বেশি লাগবে?
কেন তারা আরো দশজন নিচ্ছে না, কেনোই বা তাদের একজন কম হলে হচ্ছে না?
কেন তারা আপনার কাছ থেকে শিখতে চাচ্ছে অথচ তাদের আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক সম্পর্কে জ্ঞান আছে দাবী করছে?
কেন তাদের একজন ক্যামেরাম্যান লাগবে; তাদের মধ্য থেকে কি একজন (প্রশিক্ষণ) ধারণ (ক্যামেরা) করতে পারবে না?
কখনো কখনো যখন একটি অপারেশন চালিয়ে যাওয়ার দরকার হয়, (আর) যদি আপনাকেই বোমা স্থাপন করতে বলে, তাহলে নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন কেন তারা আপনাকে দিয়ে বোমা স্থাপন করাতে চায় বা (আপনাকে) ফিদায়ই বানাতে চায়? আর তাদের যদি আগে থেকে পরিকল্পনা থাকে, তাহলে কেন তাদেরকে সাহায্য করার জন্য আপনার মতো (একজন অপরিচিতকে) বিশ্বাস করবে? এই প্রশ্নগুলো অবশ্যই (নিজেকে) জিজ্ঞাসা করা উচিত।
#নয়#
গুপ্তচররা অতিরিক্ত কথাবার্তা ও প্রশিক্ষণ দিবে। বেশিরভাগ অপারেশনে, বিশেষ করে ইশতিহাদি অপারেশনের ক্ষেত্রে মাসের পর মাস প্রশিক্ষণের দরকার হয় না কিন্তু গুপ্তচররা বুঝাবে যে দরকার হয়। যদি অপারেশনটা বোমা হামলার হয়, তাহলে নানা রকম প্রশিক্ষণ বা বিস্ফোরকের প্রদর্শনী থাকবে। কেনো? একটা শুটিং জাতিয় ফিদায়ই আক্রমনের জন্য গুপ্তচররা মাসের পর মাস প্রশিক্ষণের আবদার করবে। আরো উল্লেখ্য যে, বেশিরভাগ সময়ই গুপ্তচররা আপনাকে আপনার নিজের জায়গায় ও নিজের অস্ত্র (যদি আপনার তা থেকে থাকে) দ্বারা প্রশিক্ষণ নিতে বলবে। এই ধরণের অপারেশনের জন্য গুপ্তচররা যে ধরণের পরিকল্পনার কথা বলে তার প্রয়োজন হয় না এবং বিশেষ করে সেই মাত্রারও না, যা তারা বলে। এর প্রথম কারণ হচ্ছে আপনাকে প্রস্তুত করা (বা উপযোগী করে তোলা) ও আপনার আস্থা অর্জন করা এবং দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে অপারেশনকে পেছানো, যা কিনা আগে থেকেই পাতানো ছিল। অতিরিক্ত কথাবার্তার ব্যাপারে উপরে উল্লেখিত পাঁচ নম্বর পদ্ধতিটি অনুসরণ করুন। গুপ্তচররা চাইবে সব কথা আপনিই বলেন। গুপ্তচররা সাধারণত আপনার চিন্তা-ভাবনা, আপনার প্রচেষ্টা আর আপনি যদি কোন কিছু ভেবে থাকেন তা পরিবর্তন করা বা সংশোধন করা যায় কিনা ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে চাইবে। তারা আপনার কাছে জানতে চাইবে আপনার দৃষ্টিতে উপযুক্ত টার্গেট কে হতে পারে। তারা চায় যেন আপনি বলেন যে, আপনি শহীদ হতে চান অথবা অন্য মানুষদের মারতে চান। মনে রাখবেন, চুপ থাকাটাই উত্তম পন্থা।
#দশ#
সর্বশেষে, আপনি যদি কোন গুপ্তচরের খপ্পরে পড়েছেন বলে সন্দেহ করেন, সে ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। অবশ্যই (উচিত হবে) সন্দেহভাজন গুপ্তচরের সাথে সমস্ত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা। তবে আরো ভালো হয়, আপনি যদি এর আগেই তাদের বলেন যে, আপনার জিহাদের ব্যাপারে মোহ কেটে গেছে। তার চেয়েও ভালো হয়, যদি বলেন আপনি ইসলামের উপরই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন! মিথ্যা বলেন, মিথ্যা বলেন, মিথ্যা বলেন! মনে রাখবেন, আপনি একটা গুপ্তচরের সাথে কথা বলছেন। এর পরে (অর্থাৎ মিথ্যা বলার পরে) সর্বোত্তম হবে, আপনি যদি হাওয়া হয়ে যান। কোন কারণ জানানোর প্রয়োজন নেই অথবা বলতে পারেন যে, আপনার স্ত্রী অন্তঃসত্তা বা আপনি দূরে চলে যাচ্ছেন। আর আপনার ফোরামের ইউজার নেম অথবা ইমেইল এড্রেস পরিবর্তন করাটা কিন্তু বুদ্ধিমানের মত কাজ হবে। যদি সম্ভব হয়, তাদের বুঝতে দিবেন না, যে আপনি তাদের ব্যাপারে (তারা যে গুপ্তচর এই ব্যাপারে) অবগত। অন্যথায়, তারা বুঝে ফেলবে যে আপনি মিথ্যা বলছেন এবং তাদের তদন্ত জারী রাখবে। সবশেষে বলব, অন্যদের সতর্ক করুন যারা এধরনের চক্রান্তের শিকার এবং তাদের কাছে উপরোল্লেখিত (গুপ্তচরদের প্রয়োগকৃত) পদ্ধতিগুলো প্রকাশ করে দিন।
আমি চাই আল্লাহ যেন আমার কাজ গ্রহণ করেন এবং আল্লাহর ইচ্ছায় আমার ভাই ও বোনেরা যেন এর দ্বারা উপকৃত হন।
আপনার মুসলিম ভাই
উৎসঃ theunjustmedia, kavkazcenter
সম্মানিত ভাইয়েরা গতকাল খবরে প্রকাশ এফবিআই’র স্টিং অপারেশনে গ্রেফতার হন বাংলাদেশি আইএস জিহাদি নিলাশ মুহাম্মাদ। আমি ওই ভাইয়ের গ্রেফতারির পূর্ণ বিবরণ তুলে দিচ্ছি এবং সেই সাথে গুপ্তচরদের চক্রান্ত বুঝার এবং তা নস্যাৎ করার ১০টি পদ্ধতি উল্লেখ করছি। পরিশেষে কথা সেই একটাই প্রথমে আপনি আপনার উটকে বাঁধুন অতঃপর আল্লাহর উপর ভরসা করুন। জাঝাকুমুল্লাহ
(তাগুত বাংলাট্রিবিউন থেকে হুবহু কপি)
যেভাবে এফবিআই’র স্টিং অপারেশনে গ্রেফতার হন বাংলাদেশি নিলাশ
এফবিআই স্টিং অপারেশনযুক্তরাষ্ট্রে এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক নিলাশ মোহাম্মদের বিরুদ্ধে ইসলামিক স্টেট (আইএস)-কে সহযোগিতা এবং সেনা সদস্যকে হত্যার ষড়যন্ত্রের মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর আগে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই স্টিং অপারেশনের মাধ্যমে তাকে গ্রেফতার করে।
বর্তমানে ২৪ বছর বয়সী নিলাশ ১৯৯৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যান। তখন তিনি শিশু। গত বছর সেপ্টেম্বরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আইএসকে সমর্থন জানিয়ে এফবিআইয়ের নজরদারিতে আসেন নিলাশ। ওই সময় নিলাশ ফ্রান্সের প্যারিসে এবং ক্যালিফোর্নিয়ার সান বারনারডিনোতে আইএসের হামলার প্রশংসা করেন।
এরপর অক্টোবরে নিলাশ মার্কিন সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে আগ্রহী এক ব্যক্তির ছবি টুইট করেন। ছবির ক্যাপশনে নিলাশ লিখেন, ‘এই ব্যক্তি মুসলিমদের হত্যায় উৎসাহ দেয়’। ওই ব্যক্তিকে হামলার জন্য তার অনেক ব্যক্তিগত তথ্যও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেন নিলাশ।
জানুয়ারিতে এসে নিলাশ একে-৪৭ অ্যাসল্ট রাইফেলের একটি ছবি পোস্ট করেন। এবার ক্যাপশনে লিখেন, ‘এটা অস্ত্রের চেয়েও বেশি কিছু। এটা জান্নাতে যাওয়ার টিকিট’।
এপ্রিল মাসে এফবিআই জানতে পারে, সন্দেহভাজন নিলাশ প্রিন্স জর্জ কাউন্টিতে হ্যান্ডগান পাওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন। এ সময় নিলাশ তার এক সহপাঠীকে বলেন যে, তিনি একটি গ্লক নাইনএমএম হ্যান্ডগান ও একে-৪৭ রাইফেল কিনতে চান। ওই সময় নিলাম নিয়মিত শুটিং অনুশীলন শুরু করেন। এছাড়া অস্ত্রের লাইসেন্স পেতে ফিঙ্গার প্রিন্টও জমা দেন।
মে মাসে এসে নিলাশের পরিচয় হয় এফবিআইয়ের এক আন্ডারকাভার এজেন্টের সঙ্গে। ওই এজেন্টকে নিলাশ জানায়, বিদেশে আইএসের সদস্যদের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে এবং এক মার্কিন সেনাকে হত্যা করতে চায়, যার ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে। ওই এজেন্ট নিলাশকে জানায়, আইএসের তারও যোগাযোগ রয়েছে। চাইলে নিলাশকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবস্থা করে দিতে পারবে। পরে এজেন্ট তাকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র দেয়। এফবিআইয়ের দাবি অস্ত্রটি অচল করা ছিল যদিও নিলাশ তা জানত না।
সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে নিলাশ ও এফবিআই এজেন্ট ভার্জিনিয়ার একটি অস্ত্রের দোকানে যান। সেখান থেকে নিলাশ নাইনএমএম ও পয়েন্ট ফোরটি ক্যালিবারের গুলি কেনেন। ওই এজেন্ট নিলাশকে হত্যার টার্গেট মার্কিন সেনার ঠিকানা দেয়। কিন্তু মার্কিন সেনার জীবন রক্ষায় নিলাশকে ভুল ঠিকানা দেয় এফবিআই এজেন্ট।
এরপর এজেন্টকে নিয়ে নিলাশ ওই ঠিকানায় উপস্থিত হয়। গুলি লোড করে নিলাশ কোনও এক ব্যক্তিকে টেক্সট মেসেজ পাঠান, যাকে তিনি আইএসের সদস্য মনে করেন। মেসেজে তিনি লিখেন, ‘আমি প্রস্তুত’। গাড়ি থেকে নেমে মার্কিন সেনার অবস্থান লক্ষ্য করে আগাতে গেলেই এফবিআই সদস্যরা তাকে ঘিরে ফেলেন। এ সময় নিলাশ দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করা হয় তাকে।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিলাশের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরে কথা জানিয়েছে। শনিবার দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে, তিনি এক মার্কিন সেনা সদস্যকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছিলেন।
জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের বিবৃতিতে বলা হয়, পুলিশ ইনফর্মারের সহযোগিতায় অস্ত্র কেনার সময় ভার্জিনিয়ার কাছ থেকে গ্রেফতার করা হয় নিলাশকে। সোমবার আদালতে প্রাথমিক শুনানি শেষে আটক করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ২০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে নিলাশের।
ম্যারিল্যান্ড জেলার অ্যাটর্নি রব রসেনস্টেইন বিবৃতিতে বলেন, হামলার পূর্বেই সন্দেহভাজন বিপজ্জনক ব্যক্তিদের গ্রেফতার করা আমাদের লক্ষ্য। একই সঙ্গে সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করা। জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের কাছ থেকে আমেরিকানরা এটাই প্রত্যাশা করেন এবং আমরা সে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের চেষ্টা করি।
সোমবার আদালতে প্রাথমিক শুনানি শেষে আটক করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ২০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে নিলাশের। ৬ অক্টোবর ডিটেনশনে নেওয়ার জন্য শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। সূত্র: ওয়াশিংটন এক্সামিনার।
গুপ্তচরদের চক্রান্ত বুঝার এবং তা নস্যাৎ করার ১০টি পদ্ধতি
পরম করুনাময়, অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
সমস্ত প্রশংসা মহাবিশ্বের স্রষ্টা ও প্রতিপালক আল্লাহ তা’আলার। সমস্ত প্রশংসা তাঁরই, তিনি বলেনঃ
“এবং তোমরা তোমাদের কথা গোপনেই বলো অথবা প্রকাশ্যে বলো, তিনি তো অন্তর্যামী।” (সূরা মু্লক(৬৭)-১৩)
এবং শান্তি বর্ষিত হোক শেষ নবী মুহাম্মদ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), তার পরিবারবর্গ, তার সাহাবীগণ ও তার অনুসারীদের উপর; তিনি বলেনঃ
“নিশ্চয় সত্যবাদিতা পুণ্যের পথ দেখায়। আর পুণ্য জান্নাতের দিকে পথ নির্দেশনা করে। আর মানুষ সত্য কথা বলতে থাকে, শেষ পর্যন্ত আল্লাহর নিকট তাকে মহাসত্যবাদী রুপে লিপিবদ্ধ করা হয়। আর নিঃসন্দেহে মিথ্যাবাদিতা নির্লজ্জতা ও পাপাচারের দিকে নিয়ে যায়। আর পাপাচার জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। আর মানুষ মিথ্যা বলতে থাকে, শেষ পর্যন্ত আল্লাহর নিকট তাকে মহামিথ্যাবাদী রুপে লিপিবদ্ধ করা হয়। (বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ এবং আল-তিরমিজি)।”
শুরু করছিঃ
আল্লাহ তা’আলা কুরআনে বলেনঃ
“এবং যখন কাফিররা তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তোমাকে বন্দী করার জন্য, হত্যা করার অথবা নির্বাসিত করার জন্য এবং তারা ষড়যন্ত্র করে আর আল্লাহ্*ও কৌশল করেন, কিন্তু আল্লাহ্*ই সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশলী।” (সূরা আনফাল(৮)-৩০)
সাম্প্রতিক ঘটনার আলোকে, বিশেষ করে আমাদের ওরিগন (আমেরিকার একটি অঙ্গরাজ্য)-এর ভাইয়ের (আল্লাহ তাকে অবিচল রাখুন এবং মুক্ত করুন) বন্দী হওয়ার ঘটনার প্রেক্ষিতে; আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে মুসলিমদের আটকানো এবং পরে বন্দী করার উদ্দেশ্যে গুপ্তচর ও সংবাদদাতারা যেসব কৌশল অবলম্বন করে সেগুলো এড়ানো এবং তাদের সেই সমস্ত চক্রান্ত নস্যাৎ করার ১০টি উপায় লিখবো এবং রেকর্ড করবো।
#এক#
একটা গুপ্তচর সবসময় চিত্ত আকর্ষন (বা গ্রুমিং) দিয়ে শুরু করে। এই চিত্ত আকর্ষন (বা গ্রুমিং) প্রক্রিয়াটি কয়েক মাস ধরে চলতে পারে। যাকে তারা ধরতে চায় তার সাথে সাক্ষাৎ করারও পূর্বে কখনো কখনো তারা (গুপ্তচররা) কয়েক মাসের জন্য একাকী (গোপনে) তথ্য সংগ্রহ করে এবং ফোরামে অথবা মসজিদে সক্রিয় থাকে। প্রথমবার সাক্ষাতে তারা সাধারনত ছোটখাট বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। যেমন ধরুন, কোন অনুবাদ চাওয়া, নাসিদ খোঁজা, বিবাহ উপযুক্ত বর / কনের খোঁজ করা অথবা হালাল খাদ্যের জন্য বিখ্যাত কোন জায়গা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা বলে; কারণ এগুলোই হচ্ছে আলোচনা শুরু করার প্রাথমিক চাবিকাঠি। আর এগুলোই বিশ্বাস অর্জনে কাজে লাগে এবং কাঠখোট্টা বলে মনে হয় না, কারণ কাঠখোট্টা / নীরস (যেমনঃ প্রথম দিনই জিহাদের ব্যাপারে কথা বলা) কথাবার্তা (প্রথমেই) বিপদ সংকেত উত্তোলন করে। একটা গুপ্তচর জিহাদের কথা বলার আগে তার লক্ষ্যবস্তুর উপর মাসের পর মাস ধরে (চিত্ত আকর্ষনের / প্রস্তুত করার লক্ষ্যে) তৎপরতা চালাতে পারে, (কিন্তু) তারপরও তারা ছোটখাট বিষয় দিয়েই কথা শুরু করে; যেমন বলে, “তোমার কি আস-সাহাবের নতুন ভিডিওটা ভালো লেগেছে” অথবা “তোমার প্রিয় জিহাদি নাসিদ কোনটা” ইত্যাদি।
#দুই#
আপনি হয়ত খেয়াল করলে দেখবেন মিথ্যা ও অসঙ্গতির আড়ালে বিপদ সংকেত থাকে। এইধরনের বিপদ সংকেতগুলোর মধ্যে হতে পারে; যেমনঃ গল্পের মধ্যে (কাহিনীতে) পরিবর্তন আনা (যা সাধারণত উদঘাটিত হয় যখন আপনি তাদের বুঝতে দেন যে, তাদের গল্প পরিবর্তনের বিষয়ে আপনি সজাগ)। উদাহরণস্বরূপ, একটা গুপ্তচর হয়ত বলতে পারে, সে আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। অথচ আপনি একটু বুদ্ধি খরচ করলেই দেখবেন, সে অনলাইন হচ্ছে অথবা মসজিদে আসছে বিশ্ববিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে। যখন আপনি বলবেন “আমি ভেবেছি আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ে” সাথে সাথে তারা গল্পে পরিবর্তন আনবে যাতে তাদের আগের কথার সাথে মিল থাকে; যেমন বলতে পারে - “আমি অনলাইনে ক্লাস করি” অথবা “আমি রাতে ক্লাস করি”। ছোটখাট বিষয়াদি খেয়াল করবেন (যেগুলো অপ্রয়োজনীয় মনে হতে পারে), যেমনঃ পরিবারের সদস্য, চাকুরী অথবা কোন বিশেষ বিষয়ে জ্ঞান। যদি এই ব্যাক্তির কথায় কোন একটি গড়মিল খুঁজে পান (যদিও তা কোন ছোট বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত), সতর্কতা অবলম্বন করুন হতে পারে সবকিছুই মিথ্যা।
#তিন#
আরেকটি সতর্ক সংকেত / বিপদ সংকেত হচ্ছে একটু গুরুত্বপূর্ণ কথাবার্তা বলা। এর মধ্যে রয়েছে, কোন মুজাহিদিন সংঘঠনের সদস্য দাবী করা অথবা কোন মুজাহিদিন বা কোন বিশেষ শাইখের সাথে যোগাযোগ থাকা অথবা ব্যাক্তিগতভাবে তাদের চিনা বা বিভিন্ন মুজাহিদ নেতার সাথে সাক্ষাৎ থাকা ইত্যাদি। এটা সুস্পষ্ট - যে কেউ এমনটা দাবী করবে, হয় সে মিথ্যাবাদী অথবা যদি সে সত্যবাদীও হয়ে থাকে, তাহলে তার নিজের এবং যে মুজাহিদ ভাইকে সে উপস্থাপন করেছে তাদের উভয়ের নিরাপত্তার ব্যাপারে সে চরম জাহেল(অর্থাৎ অজ্ঞ)।
#চার#
একটা গুপ্তচর সাধারণত নিজেকে বেশীরভাগ সময়ই ব্যস্ত দাবী করবে - যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনা নিয়ে । তাই (সচরাচর) না দেখার কারণ হিসাবে মিডটার্মের পড়াশুনা অথবা বাড়ির কাজের অজুহাত দেখিয়ে ব্যাক্তিগতভাবে ঘন ঘন ক্ষমা চাইবে। গুপ্তচররা এইধরনের ছলচাতুরীর আশ্রয় নেয়, নিজেদেরকে স্বাভাবিক প্রমাণ করার জন্য, যাতে মনে হয় এগুলো (অর্থাৎ, তাদের পড়াশুনার চাপ) তাদের এই (অর্থাৎ মুজাহিদ) জীবনধারারই অংশ। তার মানে এই বুঝাচ্ছি না যে, কোন মুজাহিদিন ভাই ছাত্র হবেন না এবং পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন না বরং বাস্তবতা হচ্ছে এমন অনেক মুজাহিদিন ভাই আছেন (যারা ছাত্র এবং পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন)। তারপরও যদি কেউ সত্যিকার অর্থে জিহাদ করতে চায় এবং বিশেষ করে শাহাদাত কামনা করে (ইশতিহাদি অথবা ফিদায়ই হামলার মাধ্যমে), তাদের ক্ষেত্রে পড়াশুনাকে অধিক গুরুত্ব দেয়াটা মানানসই না। চাকরি বা স্বাস্থ্যগত সমস্যার অজুহাতের তুলনায় তারা (অর্থাৎ, গুপ্তচররা) পড়াশুনার অজুহাতটা অনেক বেশী দিয়ে থাকে; এর সম্ভাব্য কারণ হতে পারে, যাকে (অর্থাৎ যে টার্গেটকে) তারা সময় দেয় সে হয়ত মনে করে অসুস্থ্য ব্যাক্তি জিহাদের জন্য যোগ্য না আর যে কিনা চাকুরীজীবী এবং শুল্ক আদায় করে সে (তাগুতের / গুপ্তচরদের) সাহায্যকারী। এসব কারণ উপেক্ষা করলেও এইধরনের অজুহাত এবং দেরিতে (যদিও আপনার মেসেজ পাঠানোর এক বা দুই দিন পর) রিপ্লাই দেয়ার জন্য বারবার ক্ষমা চাওয়াটা খুবই প্রচলিত একটি বৈশিষ্ট্য।
#পাঁচ#
গুপ্তচররা তাদের টার্গেটদের সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি বলেন জিহাদ করতে চাই, তাহলে তারা জিজ্ঞাসা করবে আপনি (জিহাদ বলতে) শারীরিক জিহাদ (অর্থাৎ সমর যুদ্ধ) বুঝাচ্ছেন কিনা। আর যদি বলেন আপনার আগ্নেয়াস্ত্র সম্পর্কে জ্ঞান আছে, তাহলে তারা জিজ্ঞাসা করবে কি ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র এবং আপনি কি জানেন। প্রত্যেকেরই উচিত সবসময় বুঝেশুনে কথা বলা অথবা ভালো হয় কিছুই না বলা। যে কারণে গুপ্তচররা তাদের টার্গেটদের সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে, তার কারণ এই না যে তারা আপনাকে চিনতে পারে নাই বরং আপনি যদি কখনো গ্রেফতার হন, তাহলে তারা যেন বিচারক পর্ষদের (অর্থাৎ জুরির) নিকট আপনাকে অপরাধী সাব্যস্ত করতে পারে। আপনি যদি অস্পষ্ট হন, তাহলে বিচারক পর্ষদ (অর্থাৎ জুরি) আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করতে না পারার একটা সুযোগ আপনার থাকবে। আর আপনি যদি মুখ বন্ধ রাখেন তাহলে তো আপনার গ্রেফতার না হওয়ার একটা সুযোগ থাকে। একটা গুপ্তচর আপনাকে হুমকি দিতেও পারে আবার নাও দিতে পারে কিন্তু আপনি আগে কথা না বলা পর্যন্ত সে অপেক্ষা করবে। অবশেষে তারা চায় আপনাকে, সুতরাং যাই হোক না কেন এবং যে হুমকিরই সম্মুখীন আপনাকে করুক না কেনো, এগুলো করতে গিয়ে সে (অর্থাৎ একটা গুপ্তচর) কোনো প্রকারের ঝামেলায় পড়তে চাইবে না। তারা শুধু চায় আপনি কথা বলুন এবং তা যেন হয় সুনির্দিষ্ট (যে কথা তারা জানতে চায়)।
#ছয়#
চিত্ত আকর্ষন করার (বা গ্রুমিং-এর) সময় একটা গুপ্তচর সবসময় আপনাকে মেনে নিবে। তারা আপনার মানহাজও মেনে নিবে এবং এই নিয়ে তর্ক করবে না (যদি বলেও থাকে যে আপনার মানহাজ তাদের মানহাজ থেকে আলাদা তবুও)। ধূমপান করা, গান শুনা অথবা ছবি ঝুলানো এ জাতীয় কাজকে (তাদের টার্গেট যদি বলে এগুলো সে করে তবুও) গুপ্তচররা কখনোই নিন্দা জানাবে না; প্রকৃতপক্ষে তারা নিজেরাই এগুলো করে বলে দাবী করবে। তারা সবসময় ব্যাক্তিগত প্রশ্নের উত্তর দিবে এবং আপনি যদি জিজ্ঞাসা করেন তাতে তারা ইতঃস্ততও বোধ করবে না; কারণ পরিশেষে তারা মিথ্যাই বলবে। আপনি যদি রিভার্ট হয়ে (ইসলামে প্রত্যাবর্তন করে) থাকেন এবং আপনার ইসলাম গ্রহণের পূর্বের পাপ কর্মের কথা উল্লেখ করেন তাতে একটা গুপ্তচর একটুও ভ্রূক্ষেপ করবে না। একটি ব্যাতিক্রম ছাড়া কোনো পরিস্থিতিতে গুপ্তচররা আপনার উপর চড়াও হবে না বা দ্বিমত পোষণ করবে না। আর সেই ব্যাতিক্রমটা হচ্ছে, যদি টার্গেট জিহাদ করার চিন্তা-ভাবনা থেকে দূরে সরে যায় বা তার(অর্থাৎ, টার্গেটের) জিহাদী ঘোর কেটে যায়। তখন গুপ্তচর তার টার্গেটকে বিরক্ত করবে, সাধারণত অতীতের কথা স্বরণ করিয়ে দিবে অথবা তার (অর্থাৎ টার্গেটের) মনে অপরাধ বোধ তৈরি করার চেষ্টা করবে। গুপ্তচর কেবলমাত্র তখনই হতাশ হয়ে পড়বে যখন সে দেখবে তার টার্গেট জিহাদের সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে চলে গেছে [যে কথা সে (অর্থাৎ গুপ্তচর) বলছে (যদিও তা আল-কায়দা অথবা জয়স ই মুহাম্মদ যাই হোক না কেনো) তার বিরুদ্ধে চলে গেছে]।
#সাত#
নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, এই ব্যক্তি কি আপনাকে বিশ্বাস করে? বর্তমান বিশ্বে যেখানে আক্ষরিক অর্থে যে কেউই গুপ্তচর হতে পারে, সেখানে কেনই বা এই ব্যাক্তি আপনাকে বিশ্বাস করবে? কেন তারা নিজেদের মুজাহিদ দাবী করে এবং তা এমন কাউকে বলে, যার সাথে কম্পিটারের মাধ্যমে পরিচয় অথবা মসজিদে? কেন তারা আপনাকেই বলছে যে তারা জিহাদি অপারেশন করতে চায় বা হিজরত করতে চায়? আপনি কখনও বুঝতেই পারবেন না যে, সে (জিহাদের ব্যাপারে) আন্তরিক ছিল কিনা আর বিষয়টা দুঃখজনক হলেও সত্য। একটু ভেবে দেখুন কেন তারা এতো মানুষ থাকতে শুধু আপনাকে বিশ্বাস করবে আর অন্য কাউকে কেন (বিশ্বাস করবে) না। উত্তর হচ্ছে, কারণ তারা আপনাকে গ্রেফতার করতে চায় এবং এইটা তাদের চিত্ত আকর্ষন (বা গ্রুমিং) প্রক্রিয়ার একটি অংশ মাত্র।
#আট#
এখন নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, যদি তারা আপনাকে বিশ্বাস করে থাকে তাহলে কেন তাদের আপনাকে দরকার? যদি তারা চায় আপনি তাদের সাথে হিজরত করেন, তাহলে নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, কেন তারা একাকী যাচ্ছে না অথবা অন্য কাউকে সাথে নিচ্ছে না। যদি আভ্যন্তরীণ অপারেশন পরিচালনার জন্য আপনার মত কাউকে তাদের দরকার হয়, তাহলে আপনাকে কেন বাছাই করল। আপনি যদি ওরেগণ (আমেরিকার একটি অঙ্গরাজ্য)–এর ঘটনার দিকে তাকান এবং তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন, তাহলে আপনি দেখবেন যে তারাও ছিল একদল “ভাই” (যারা কিনা প্রকৃতপক্ষে গুপ্তচর ছিল) আমাদের সরলমনা ভাইকে (আল্লাহ তাকে মুক্ত করুন) সেই (অর্থাৎ জিহাদি) কাজে নিয়োজিত করেছিল। এখন যে কেউ নিজেকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন “যদি তারা আগে থেকেই একটি সংঘবদ্ধ দল হয়ে থাকে (যাদের মধ্যে বোমার কারিগর মজুদ আছে), তাহলে গাড়ি চালানোর জন্য কেন অন্য কাউকে প্রয়োজন হবে?” যদি কেউ দাবি করে কিভাবে বোমা বানাতে হয় তা সে জানে, তাহলে তারা আপনাকে বোমা স্থাপন করতে বলবে? এটা কি এজন্য যে তারা মৃত্যুকে ভয় পায়? এটা কি এজন্য যে তারা আরো বোমা বানাতে চায়? অথবা এই জন্য যে তারা আপনাকে ফাঁদে ফেলতে চায়? এই বিষয়গুলো বাস্তব, বিশেষত যখন বহু গুপ্তচর এতে অন্তর্ভুক্ত থাকে। যদি এমন একটি দলই মজুদ থাকে যারা নিজেদের মুজাহিদিন দাবি করে এবং আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে কি চাইতে পারে?
যদি তারা নিজেদের ফিদায়ী (দল) দাবী করে, তাহলে তাদের কেন আরেকজন বেশি লাগবে?
কেন তারা আরো দশজন নিচ্ছে না, কেনোই বা তাদের একজন কম হলে হচ্ছে না?
কেন তারা আপনার কাছ থেকে শিখতে চাচ্ছে অথচ তাদের আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক সম্পর্কে জ্ঞান আছে দাবী করছে?
কেন তাদের একজন ক্যামেরাম্যান লাগবে; তাদের মধ্য থেকে কি একজন (প্রশিক্ষণ) ধারণ (ক্যামেরা) করতে পারবে না?
কখনো কখনো যখন একটি অপারেশন চালিয়ে যাওয়ার দরকার হয়, (আর) যদি আপনাকেই বোমা স্থাপন করতে বলে, তাহলে নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন কেন তারা আপনাকে দিয়ে বোমা স্থাপন করাতে চায় বা (আপনাকে) ফিদায়ই বানাতে চায়? আর তাদের যদি আগে থেকে পরিকল্পনা থাকে, তাহলে কেন তাদেরকে সাহায্য করার জন্য আপনার মতো (একজন অপরিচিতকে) বিশ্বাস করবে? এই প্রশ্নগুলো অবশ্যই (নিজেকে) জিজ্ঞাসা করা উচিত।
#নয়#
গুপ্তচররা অতিরিক্ত কথাবার্তা ও প্রশিক্ষণ দিবে। বেশিরভাগ অপারেশনে, বিশেষ করে ইশতিহাদি অপারেশনের ক্ষেত্রে মাসের পর মাস প্রশিক্ষণের দরকার হয় না কিন্তু গুপ্তচররা বুঝাবে যে দরকার হয়। যদি অপারেশনটা বোমা হামলার হয়, তাহলে নানা রকম প্রশিক্ষণ বা বিস্ফোরকের প্রদর্শনী থাকবে। কেনো? একটা শুটিং জাতিয় ফিদায়ই আক্রমনের জন্য গুপ্তচররা মাসের পর মাস প্রশিক্ষণের আবদার করবে। আরো উল্লেখ্য যে, বেশিরভাগ সময়ই গুপ্তচররা আপনাকে আপনার নিজের জায়গায় ও নিজের অস্ত্র (যদি আপনার তা থেকে থাকে) দ্বারা প্রশিক্ষণ নিতে বলবে। এই ধরণের অপারেশনের জন্য গুপ্তচররা যে ধরণের পরিকল্পনার কথা বলে তার প্রয়োজন হয় না এবং বিশেষ করে সেই মাত্রারও না, যা তারা বলে। এর প্রথম কারণ হচ্ছে আপনাকে প্রস্তুত করা (বা উপযোগী করে তোলা) ও আপনার আস্থা অর্জন করা এবং দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে অপারেশনকে পেছানো, যা কিনা আগে থেকেই পাতানো ছিল। অতিরিক্ত কথাবার্তার ব্যাপারে উপরে উল্লেখিত পাঁচ নম্বর পদ্ধতিটি অনুসরণ করুন। গুপ্তচররা চাইবে সব কথা আপনিই বলেন। গুপ্তচররা সাধারণত আপনার চিন্তা-ভাবনা, আপনার প্রচেষ্টা আর আপনি যদি কোন কিছু ভেবে থাকেন তা পরিবর্তন করা বা সংশোধন করা যায় কিনা ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে চাইবে। তারা আপনার কাছে জানতে চাইবে আপনার দৃষ্টিতে উপযুক্ত টার্গেট কে হতে পারে। তারা চায় যেন আপনি বলেন যে, আপনি শহীদ হতে চান অথবা অন্য মানুষদের মারতে চান। মনে রাখবেন, চুপ থাকাটাই উত্তম পন্থা।
#দশ#
সর্বশেষে, আপনি যদি কোন গুপ্তচরের খপ্পরে পড়েছেন বলে সন্দেহ করেন, সে ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। অবশ্যই (উচিত হবে) সন্দেহভাজন গুপ্তচরের সাথে সমস্ত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা। তবে আরো ভালো হয়, আপনি যদি এর আগেই তাদের বলেন যে, আপনার জিহাদের ব্যাপারে মোহ কেটে গেছে। তার চেয়েও ভালো হয়, যদি বলেন আপনি ইসলামের উপরই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন! মিথ্যা বলেন, মিথ্যা বলেন, মিথ্যা বলেন! মনে রাখবেন, আপনি একটা গুপ্তচরের সাথে কথা বলছেন। এর পরে (অর্থাৎ মিথ্যা বলার পরে) সর্বোত্তম হবে, আপনি যদি হাওয়া হয়ে যান। কোন কারণ জানানোর প্রয়োজন নেই অথবা বলতে পারেন যে, আপনার স্ত্রী অন্তঃসত্তা বা আপনি দূরে চলে যাচ্ছেন। আর আপনার ফোরামের ইউজার নেম অথবা ইমেইল এড্রেস পরিবর্তন করাটা কিন্তু বুদ্ধিমানের মত কাজ হবে। যদি সম্ভব হয়, তাদের বুঝতে দিবেন না, যে আপনি তাদের ব্যাপারে (তারা যে গুপ্তচর এই ব্যাপারে) অবগত। অন্যথায়, তারা বুঝে ফেলবে যে আপনি মিথ্যা বলছেন এবং তাদের তদন্ত জারী রাখবে। সবশেষে বলব, অন্যদের সতর্ক করুন যারা এধরনের চক্রান্তের শিকার এবং তাদের কাছে উপরোল্লেখিত (গুপ্তচরদের প্রয়োগকৃত) পদ্ধতিগুলো প্রকাশ করে দিন।
আমি চাই আল্লাহ যেন আমার কাজ গ্রহণ করেন এবং আল্লাহর ইচ্ছায় আমার ভাই ও বোনেরা যেন এর দ্বারা উপকৃত হন।
আপনার মুসলিম ভাই
উৎসঃ theunjustmedia, kavkazcenter
Comment