প্রিয় ভাই, আস্সালামুআলাইকুম ওয়া রহমাহতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু
এন্ড্রোয়েড টিপস সিরিজ (পর্ব ৩)
রুট কি,কেন রুট করবেন ও কিভাবে রুট করবেন?
এন্ড্রোয়েড টিপস সিরিজ (পর্ব ৩)
রুট কি,কেন রুট করবেন ও কিভাবে রুট করবেন?
রুট কি?
রুট হচ্ছে একটি পারমিশন বা অনুমতি। এই অনুমতি থাকলে আপনি আপনার ডিভাইসে যা ইচ্ছে তাই করতে পারবেন।
সাধারণত এই পারমিশন বা অনুমতি ডিভাইস প্রস্তুতকাররা ইচ্ছে করে লক করে দেয়। কারন রুট ফোল্ডার/পার্টিশনে থাকা ফাইলগুলো অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এর কোনো একটি দুর্ঘটনাবশতঃ মুছে গেলে আপনার পুরো ডিভাইস কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে। এছাড়াও ম্যালিশিয়াস বা ক্ষতিকারক প্রোগ্রামও অনেক সময় রুট করা ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারে। কিন্তু লক থাকা অবস্থায় ব্যবহারকারী নিজেই রুট অ্যাক্সেস পান না, তাই অন্য প্রোগ্রামগুলোর রুট অ্যাক্সেস পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই বললেই চলে।
কেন রুট করবেন?
ধরেন কোন কারনে আপনার মোবাইল নাম্বারটি তাবুত গোয়েন্দাদের কাছে চলে গেল। এখন আপনি কি করবেন? সিম খুলে ফেলে দিবেন? আচ্ছা ভাল। এবার কি করবেন? নতুন একটা সিম কিনে ব্যবহার করবেন?
এখন কি আপনি নিরাপদ???
উত্তর হচ্ছে না। কারন আপনার মোবাইলটিতে একটি নির্দিষ্ট আইএমআই নাম্বার আছে যেটা আপনি পরিবর্তন করেন নি।
ফলে তাবুত সিম কোম্পানির ডাটাবেস থেকে আপনার মোবাইল নাম্বার দিয়ে আইএমআই নাম্বারটি সংগ্রহ করবে। তারপর আইএমআই নাম্বারটি ট্রাক করে আপনার বর্তমান ব্যবহারিত সিম নাম্বারটি পেয়ে যাবে।
এজন্য সিম পরিবর্তনের সাথে সাথে আপনার এন্ড্রয়েডের আইএমআই নাম্বারটিও পরিবর্তন করতে হবে। আর এন্ড্রয়েডের আইএমআই পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই আপনার ডিভাইসটিকে রুট করতে হবে।
রুট করার আরো কিছু সুবিধা:
পারফরমেন্স বাড়ানোঃ বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে ডিভাইসের অব্যবহৃত ফাইল, টেমপোরারি ফাইল ইত্যাদি নিয়মিত মুছে ফোনের গতি ঠিক রাখা।
ওভারক্লকিং করাঃ সিপিইউ স্পিড স্বাভাবিক অবস্থায় যতটা থাকে তারচেয়ে বেশি দ্রুত কাজ করানো। এর মাধ্যমে কোনো বিশেষ কাজে প্রসেসরের গতি বাড়ানোর প্রয়োজন পড়লে তা করা যায়।
আন্ডারক্লকিং করাঃ যখন ডিভাইস এমনিতেই পড়ে থাকে, তখন সিপিইউ যেন অযথা কাজ না করে যে জন্য এর কাজের ক্ষমতা কমিয়ে আনা। এতে করে ব্যাটারি ব্যাকআপ বাড়ানো সম্ভব।
কাস্টম ইউআই: আপনার ডিভাইসের হোমস্ক্রিন, লক স্ক্রিন, মেনু ইত্যাদি বিভিন্ন ইউজার ইন্টারফেসের ডিজাইন একটা সময় পর আর ভালো নাও লাগতে পারে। তখন আপনি ডিভাইসে নতুনত্ব আনতে পারবেন নতুন সব কাস্টম ইউজার ইন্টারফেসের মাধ্যমে। এগুলোকে অন্যভাবে রমও বলা হয়।
কাস্টম রম: ইন্সটল করার সুবিধা। অনেক ডেভেলপার বিভিন্ন জনপ্রিয় ডিভাইসের জন্য কাস্টম রম তৈরি করে। এসব রম ইন্সটল করে আপনি আপনার সেটকে সম্পূর্ণ নতুন একটি সেটের রূপ দিতে পারবেন। বাইরে থেকে অবশ্যই এর ডানা-পাখনা গজাবে না বা ক্যামেরা ৫ মেগাপিক্সেল থেকে ৮ মেগাপিক্সেল হবে না।
রুট করার কিছু আসুবিধা:
ওয়ারেন্টি হারানোঃ ডিভাইস রুট করার মাধ্যমে আপনার ওয়ারেন্টি বাতিল হয়ে যাবে। অবশ্য অনেক মোবাইল আবার আনরুট করা যায়। আর মোবাইল আনরুট করা হলে তা সার্ভিস সেন্টারে থাকা টেকনিশিয়ানরা অনেক সময়ই ধরতে পারে না যে সেটটি রুট করা হয়েছিল। তবে কাস্টম রম থাকলে ধরা খাওয়া এড়ানোর উপায় নেই।
ফোন ব্রিক হওয়ার সম্ভাবনাঃ রুট করা ও এর পরবর্তী সময়ে বিভিন্য কারনে ফোন ব্রিক হতে পারে। সাধারনত সিস্টেম ফাইলগুলো ডিলেট বা মুভ না করলে সমস্যা হয় না।
কিভাবে রুট করবেন:
রুট দুইভাবে করা যায়:
১। এন্ডয়েডের মাদ্ধ্যমে
২। কম্পিউটারের মাদ্ধ্যম
বিস্তারিত:
১। এন্ডয়েডের মাদ্ধ্যমে রুট:
প্রথম ধাপঃ এই লিঙ্ক থেকে এপ্পসটি ডাউনলোড করুন। এটা ওরিজিনাল সাইট।
দ্বিতীয় ধাপঃ এপ্সটি ওপেন করে "One Click Root" এ ক্লিক করুন।
ত্রিতীয় ধাপঃ রুট চলতে থাকবে। অপেক্ষা করুন।
শেষ ধাপঃ রুট সম্পন্য হলে নিচের মত দেখতে পাবেন।
নোট: একই পদ্ধতিতে আরো কিছু এপ্পস দ্বারা রুট করা যায়। এই এপ্পস এ কাজ না করলে এগুলো ট্রাই করতে পারেন।
Framaroot (apk), KingoRoot(apk), Root Master (apk), iroot (apk), z4root (apk), Universal Androot (apk) , Baidu Root (apk), Root Genius (apk)
২। কম্পিউটারের মাদ্ধ্যম রুট:
প্রথম ধাপঃ এই লিঙ্ক থেকে সফটওয়ারটি ডাউনলোড করুন। এটা ওরিজিনাল সাইট।
দ্বিতীয় ধাপঃ সফটওয়ারটি ওপেন করুন।
ত্রিতীয় ধাপঃ এবার আপনার ইউএসবি দিয়ে মোবাইলটি কানেক্ট করুন। অবস্যই কম্পিউটারে নেট চালু রাখবেন।
চতুর্থ ধাপঃ সফটওয়ারটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার মোবাইলের ড্রাইভার ইন্সটাল করে নিবে।
পঞ্চম ধাপঃ ইন্সটাল শেষে আপনার মোবাইলে নিচের মত একটি নোটিফিকেশন দেখবেন। "Always allow from this computer" এ টিক দিয়ে ওকে চাপুন।
ষস্ট ধাপঃ এবার "ROOT" এ ক্লিক করুন।
সপ্তম ধাপঃ রুট চলতে থাকবে। অপেক্ষা করুন।
শেষ ধাপঃ সম্পন্য হলে নিচের মত দেখতে পাবেন।
নোট: একই পদ্ধতিতে আরো কিছু সফটওয়ার দ্বারা রুট করা যায়। এই সফটওয়ার এ কাজ না করলে এগুলো ট্রাই করতে পারেন।
Vroot (Software), kingoapp Root (Software), iroot (Software), SRSRoot (Software), wondersare dr.fone (Software)
উপ্রুক্ত পদ্ধতি দ্বারা অনেক এনড্রোয়েড রুট নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে আরেকটি পদ্ধতি আছে। কিন্তু সেটা বেশ জটিল। রুট না হলে কমেন্টে জানান। ওই পদ্ধতিটাও দেওয়ার চেস্টা করব ইনসাআল্লাহ।
পরবর্তী পর্বে এন্ড্রয়েড আইএমইআই(imei)পরিবতর্ন করা নিয়ে আলোচনা করব ইনসাআল্লাহ।
Comment