নিয়ত হোক বিশুদ্ধ
হাদীসের দরসঃ ০১
আমীরুল মুমিনীন উমার রদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: সমস্ত আমল বিবেচিত হয় নিয়ত অনুযায়ী। প্রতিটি মানুষ যে যা নিয়ত করে, তাঁর জন্য সেটাই সাব্যস্ত হয়। অতএব যার হিজরত হবে আল্লাহ্* ও তাঁর রাসূলের উদ্দেশ্যে,তার হিজরত হবে আল্লাহ্* ও তাঁর রাসূলের জন্যই। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি হিজরত করবে দুনিয়া-প্রাপ্তির আশায় কিংবা কোন নারীকে বিয়ে করার লালসায়,তার হিজরত সে উদ্দেশ্যেই (বিবেচিত হবে) যে উদ্দেশ্যে সে হিজরত করেছে। (বুখারীঃ ১)
সালাফদের দরসঃ
১। আল্লাহ্*-সচেতনতা বা তাকওয়া
২। ইখলাস ও বিশুদ্ধ নিয়ত
৩। সহীহ পদ্ধতি
হে আল্লাহ্*! তোমার জন্য কত আমলের সংকল্প করেছি; কিন্তু আমল আর করা হয়নি। তাই তোমার কাছেই ক্ষমা চাইছি
হে আল্লাহ্*! তোমার সন্তুষ্টি প্রাপ্তির আশায়ক কত আমল শুরু করেছি; অথচ পরে তাতে নিজের প্রবৃত্তি মিশিয়ে ফেলেছি! তাই তোমার কাছে এবং তোমারই কাছে ক্ষমা চাইছি। ক্ষমা করো হে মালিক!
‘আল্লাহ্ তোমাদেরকে যাচাই করেন,আমলের বিবেচনায় তোমাদের মাঝে কে শ্রেষ্ঠ’।
এই আয়াত তিলাওয়াত করে ফুযাইল রহিমাহুল্লাহ বলেন,আমলে শ্রেষ্ঠ হওয়ার অর্থ হলো : কার আমল কত ইখলাসপূর্ণ ও সঠিক। আমলে যদি ইখলাস থাকে, কিন্তু তা সঠিক না হয়, সে আমল কবুল হবে না। আবার আমল যদি সঠিক হয় কিন্তু তাতে ইখলাস না থাকে, তবে সে আমলও গৃহীত হবে না। আমলে ইখলাস থাকতে হবে এবং তা সঠিকও হতে হবে, তবেই তা গৃহীত হবে। আমলে ইখলাস মানে শুধুই আল্লাহ্র জন্য করা। আর সঠিক হওয়ার মানে রাসূল সল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাহ অনুসারে করা।
হাদীসের দরসঃ ০১
আমীরুল মুমিনীন উমার রদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: সমস্ত আমল বিবেচিত হয় নিয়ত অনুযায়ী। প্রতিটি মানুষ যে যা নিয়ত করে, তাঁর জন্য সেটাই সাব্যস্ত হয়। অতএব যার হিজরত হবে আল্লাহ্* ও তাঁর রাসূলের উদ্দেশ্যে,তার হিজরত হবে আল্লাহ্* ও তাঁর রাসূলের জন্যই। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি হিজরত করবে দুনিয়া-প্রাপ্তির আশায় কিংবা কোন নারীকে বিয়ে করার লালসায়,তার হিজরত সে উদ্দেশ্যেই (বিবেচিত হবে) যে উদ্দেশ্যে সে হিজরত করেছে। (বুখারীঃ ১)
সালাফদের দরসঃ
- আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারাক রহিমাহুল্লাহ বলেন, কত ছোট ছোট কাজ নিয়ত-গুণে মহৎ হয়! আবার কত বড় বড় কাজ নিয়তের কারণেই তুচ্ছ হয়ে যায়!
- ফুযায়েল ইবনুল ইয়াজ রহিমাহুল্লাহ বলেন,আল্লাহ্* তা’আলা তোমার কাছে চান শুধু পূর্ণ ইখলাস আর আমলের বিশুদ্ধতা।
- সুফিয়ান আস-সাওরি রহিমাহুল্লাহ বলেন,আমাকে নিয়ত থেকে জটিল কোনো রোগের মুখোমুখি কখনো হতে হয়নি। কারণ নিয়ত ঘন ঘন বদলায়।
- ফুযাইল ইবনু ইয়াজ রহিমাহুল্লাহ বলেন, আমি আহমাদ ইবনুল হাম্বাল রহিমাহুল্লাহকে নিয়ত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলাম—‘নিয়ত কেমন হওয়া উচিৎ?’ আহমাদ ইবনু হাম্বল রহিমাহুল্লাহ বলেছিলেন,‘কেউ যখন কোন কাজের ইচ্ছাপোষণ করে, তখন সে যেন প্রথমেই নিজেকে শুধরে নেয় এবং আমলটি এক আল্লাহ্*র উদ্দেশ্যে করার সংকল্প করে।’
- ইয়াহইয়া ইবনু কাসীর রহিমাহুল্লাহ বলেন, তোমরা যেভাবে আমল শেখো, সেভাবে নিয়ত শেখো। কারণ নিয়ত আমলের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
- যাইদ শামী রহিমাহুল্লাহ বলেন, পানাহার-সহ সবকিছুতেই একটা নিয়ত থাকাকে আমি পছন্দ করি।
- দাঊদ তাঈ রহিমাহুল্লাহ বলেন, আমি তো দেখি, নিয়তের মাধ্যমেই সমস্ত সাওয়াব জড়ো করা সম্ভব। কেননা সাওয়াবের জন্য কোন আমলের নিয়ত বা সদিচ্ছায় যথেষ্ট;যদিও পরবর্তীকালে সে আমলটি করা আর সম্ভব হয় না।
- ইঊসুফ ইবনু আসবাত রহিমাহুল্লাহ বলেন,দীর্ঘ সময় ধরে আমল করার চেয়েও আবেদের জন্য কষ্টকর হলো,নিয়তকে বিচ্যুতির হাত থেকে রক্ষা করা।
- একবার নাফি ইবনু যুবায়ের রহিমাহুল্লাহ-কে কেউ বলল, ‘জানাযায় যাবেন না?’নাফি বললেন,‘দাঁড়াও! আগে নিয়ত ঠিক করে নিই।’এরপর তিনি কয়েক মুহূর্ত ভাবে বললেন, ‘চলো।’
- মুতরাফ ইবনু আব্দুল্লাহ রহিমাহুল্লাহ বলেন,আমল সঠিক হওয়ার ভিত্তি হলো বিশুদ্ধ নিয়ত আর সঠিক আমলের মধ্য দিয়েই আসে আত্মার পরিশুদ্ধি।
- ইবনু আজালান রহিমাহুল্লাহ বলেন, তিনটি বিষয় ছাড়া আমল সঠিক হয় না,
১। আল্লাহ্*-সচেতনতা বা তাকওয়া
২। ইখলাস ও বিশুদ্ধ নিয়ত
৩। সহীহ পদ্ধতি
- ফুযাইল ইবনু ইয়াজ রহিমাহুল্লাহ বলেন,আল্লাহ্* শুধুই নিয়ত আর সদিচ্ছা দেখতে চান! তিনি আরও বলেন,আল্লাহর রাস্তায় নিহত হওয়ার চেয়ে উত্তম হলো প্রতিটি আমলে আল্লাহ্* তা’আলাকে প্রাধান্য দেওয়া।
- সাহাল ইবনু আব্দুল্লাহ তাসতুরি রহিমাহুল্লাহ বলেন,মানুষের জন্য সবচেয়ে কঠিন কাজ নিয়তকে খালেস রাখা। কারণ নিয়তে আল্লাহ্*র সাথে কারও অংশীদারিত্ব চলে না।
- ইঊসুফ ইবনু হুসাইন রহিমাহুল্লাহ বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজ নিয়তকে পরিশুদ্ধ করা। কত চেষ্টা করলাম, অন্তর থেকে রিয়া বা লৌকিকতার শিকড় উপড়ে ফেলতে! কিন্তু দেখা যায়, রিয়া আবার নতুনরূপে জেগে উঠেছে।
- মুতাররিফ ইবনু আব্দুল্লাহ রহিমাহুল্লাহ সর্বদা দুআ করতেন: হে আল্লাহ্*! কতবার তোমার কাছে তাওবা করেছি, ‘আর অন্যায় করব না’! অথচ আবারও সেই অন্যায়ে ফিরে গিয়েছি। তাই তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি।
হে আল্লাহ্*! তোমার জন্য কত আমলের সংকল্প করেছি; কিন্তু আমল আর করা হয়নি। তাই তোমার কাছেই ক্ষমা চাইছি
হে আল্লাহ্*! তোমার সন্তুষ্টি প্রাপ্তির আশায়ক কত আমল শুরু করেছি; অথচ পরে তাতে নিজের প্রবৃত্তি মিশিয়ে ফেলেছি! তাই তোমার কাছে এবং তোমারই কাছে ক্ষমা চাইছি। ক্ষমা করো হে মালিক!
- আল্লাহ্ তা’আলা পবিত্র কালামে মাজীদে সুরা মুলকের ২নং আয়াতে বলেছেন:
‘আল্লাহ্ তোমাদেরকে যাচাই করেন,আমলের বিবেচনায় তোমাদের মাঝে কে শ্রেষ্ঠ’।
এই আয়াত তিলাওয়াত করে ফুযাইল রহিমাহুল্লাহ বলেন,আমলে শ্রেষ্ঠ হওয়ার অর্থ হলো : কার আমল কত ইখলাসপূর্ণ ও সঠিক। আমলে যদি ইখলাস থাকে, কিন্তু তা সঠিক না হয়, সে আমল কবুল হবে না। আবার আমল যদি সঠিক হয় কিন্তু তাতে ইখলাস না থাকে, তবে সে আমলও গৃহীত হবে না। আমলে ইখলাস থাকতে হবে এবং তা সঠিকও হতে হবে, তবেই তা গৃহীত হবে। আমলে ইখলাস মানে শুধুই আল্লাহ্র জন্য করা। আর সঠিক হওয়ার মানে রাসূল সল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাহ অনুসারে করা।
Comment