Announcement

Collapse
No announcement yet.

সবুজ পাখির গল্প-২

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • সবুজ পাখির গল্প-২

    بسم الله الرحمن الرحيم
    সবুজ পাখির গল্প-২

    শাইখ তামিম আল আদনানী হাফিজাহুল্লাহর ভক্ত হয়ে আদনানের জীবনে অতুলনীয় পরিবর্তন শুরু হলো। ইতিমধ্যে সে শাইখের অনেক বয়ান শুনেছে। কোন গোনাহের কাজ করতে মন চাইলে তখন তার কানে প্রতিধ্বনিত হয় শাইখের হৃদয় নিংড়ানো মমতাময়ী সে কথা, হে যুবক! তোমাকে কি আল্লাহ দেখছে না? তোমাকে কি আল্লাহর দরবারে হিসেব দিতে হবে না?
    তাই সে গুনাহ থেকে ফিরে আসে। বারবার মনে পড়ে স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মতো যুবকদের উদ্দেশ্য শাইখের এ কথা, “হে যুবক! হে আমার প্রিয় ভাই! যৌবনের ঢেউ আছড়ে পড়ছে তোমার হৃদয়ে। তীব্র-তাড়না তোমাকে অস্থির করে তুলেছে। চারো দিকের ফেতনায় পড়া পরিবেশ হাত ছানি দিয়ে ডাকছে তোমায়। তোমার যৌবনের পবিত্রতা বিনষ্ট হওয়ার সব উপকরণ চোখের সামনে ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রিয় ভাই! সতর্ক হও! যৌবনের হেফাজত করো!”
    আদনান এখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মাসজিদে জামাতের সাথে আদায় করে। মাঝে মাঝে জামাত ছুটে গেলে একাকী আদায় করে নেয়। খারাপ বন্ধুদের সাথে উঠা-বসা বাদ দিয়েছে। জুটে গেছে মুত্তাকী এক বন্ধু। দুজনে একসাথে নামাজে যায়। অন্যদেরকে নামাজের দাওয়াতও দেয়। আদনান নামাজী হয়েছে তবে এখনো সব গুনাহ ছাড়তে পারেনি।
    একদিনের ঘটনা:- আদনান ও তার নামাজী বন্ধু কেনাকাটার জন্য মার্কেটে যায়। বন্ধটি খেয়াল করলো, আদনান মেয়েদের দিকে তাকাচ্ছে। চোখ নিচে নামাচ্ছে না। বন্ধু তাকে নজর হেফাজতের কথা বললো। সাময়িক কাজ হলেও পরে আবারও তার অভ্যাসে ফিরে গেল। বন্ধুটি দেখলো আদনানের মোবাইলে এখনো গান আছে। সে এখনো গান শুনে। বন্ধুটি তাকে খুব করে বুঝালো। তাও এ অভ্যাস পুরাপুরি দুর হলো না।
    আজ সে শাইখের বয়ান শুনবে বলে নেটে সার্চ দিলো, সে দেখতে পেলো, শাইখের বয়ানের পাশাপাশি উম্মাহ নিওজেরও কিছু ভিডিও এসেছে। উম্মাহ নিউজ আবার কি জিনিস- এটা দেখার জন্য একটি ভিডিও ওপেন করলো। শুরু হলো, নজর হেফাজতের এক পাওয়ার-ফুল রিমাইন্ডার। সুমধুর কণ্ঠে বেজে উঠলো মহান রবের বানী,
    أَلَمْ يَأْنِ لِلَّذِينَ آمَنُوا أَنْ تَخْشَعَ قُلُوبُهُمْ لِذِكْرِ اللَّهِ وَمَا نَزَلَ مِنَ الْحَقِّ
    “যারা মুমিন, তাদের জন্যে কি আল্লাহর স্মরণে এবং যে সত্য অবতীর্ণ হয়েছে, তার কারণে হৃদয় বিগলিত হওয়ার সময় আসেনি?” –সুরা হাদিদ:১৬
    জায়গা মতো ঔষধ পড়েছে তাই কাজও হলো তাড়াতাড়ি। নজর হেফাজত শুরু হলো। ছেড়ে দিলো গান শুনা। পাক্কা মুমিন হয়ে গেল। এখন সে পূর্ণ শরিয়ত মানার চেষ্টা করে। দাড়ি রেখেছে। লম্বা জুব্বাও ধরেছে। পুরাই হুজুর। এক আলেমের কাছ থেকে কুরআন শিখে নিয়েছে। এখন সে দেখে দেখে কোরআন পড়তে পারে। দৈনিক আধা পাড়া তেলাওয়াত করে। কখনো এক পাড়াও করে।
    সকাল সন্ধ্যার আযকারের বিষয়ে শাইখের একটি বয়ান শুনে আযকার পড়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ হয়। কিন্তু কী পড়বে- তার তো জানা নেই। একদিন সহিহ সূত্রে বর্ণিত আযকার সম্বলিত একটি বই পেয়ে যারপরনাই আনন্দিত হয়ে বইটি সংগ্রহ করলো। এখন সে নিয়মিত সকাল-সন্ধ্যার আযকার আদায় করে।
    যৌবনের হেফাজতের জন্য সে একটি দ্বীনদার মেয়েকে বিবাহ করে নিলো। স্ত্রী তাকে দ্বীনদার হওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগীতা করলো। উভয়ের জীবন হয়ে উঠলো, মধুময় ও আনন্দ-মুখর।
    একদিন বন্ধুর সাথে নদীর পারে এক নিরিবিলি স্থানে ঘুরতে যায়। নোংরামি-অশ্লীলতা আর বেহায়া নারীদের অবাধ বিচরণ, নামে মাত্র কাপড় পড়ে দেহ প্রদর্শন ইত্যাদির কারণে সে এখন কোন পার্কে যায় না। পার্কে গেলেই এগুলোর সম্মুখীন হতে হয়। নজর হেফাজত করা কষ্টকর হয়। তাই সে নদীর পাড়ে ফেতনা-মুক্ত জায়গায় ঘুরতে গেছে।
    দুই বন্ধু সবুজ ঘাসে বসে গল্প জুড়ে দিলো। অতীত-বর্তমানের গল্প। ফিরে আসার অনুভূতির গল্প। বন্ধ বললো:- দুস্ত আদনান! ইসলাম মেনে চলার দ্বারা তোর এখন কেমন লাগছে?
    - কি শান্তির মধ্যে আছি যে দুস্ত। তোকে বলে বুঝানো যাবে না।
    - একটু বলতো!
    - গুনাহ করে কোনোদিন শান্তি পাইনি। যতক্ষণ গোনাহে লিপ্ত থাকতাম তখনই একটু মজা পেতাম। পড়ে শুরু হতো অস্থিরতা ও বিষণ্ণতা। কোন কিছুই ভালো লাগতো না। জীবনটা অসহ্য হয়ে উঠেছিলো।
    - আর এখন?
    - এখন যখন নামাজ পড়ে মাসজিদ থেকে বের হই, অন্তরটা প্রশান্ত হয়ে যায়। যেন দুনিয়ার সবশান্তি আমার উপর ঢেলে দেওয়া হয়েছে। রবের সামনে দাঁড়ানো চেয়ে সুখ ও আনন্দের আর কী আছে? আসমান জমিনের অধিপতির হুকুম মেনে চলার মত শান্তি আর কোথায় পাওয়া যাবে? আগে জানোয়ারের মত উদ্দ্যশহীন জীবন যাপন করতাম। এখন মানুষের মতো উদ্দেশ্য নিয়ে জীবন অতিবাহিত করছি। দুস্ত! আসলে গোনাহে কোন শান্তি নেই। গোনাহ করে অপদস্থ হতাম রাস্তা-ঘাটে। আকল নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো। অন্তরে মোহর এঁটে দেওয়া হয়েছিলো। আল্লাহর লানতসহ জীবন যাপন করতাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দোয়া, ফেরেশতাদের দোয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছিলাম। পরিবেশ দূষিত করতাম হার হামেশা। আত্মমরযাদা হারিয়ে গিয়ে ছিলো। লজ্জা-শরম বলতে কিছুই ছিল না। আল্লাহর বড়ত্ব অন্তর থেকে মুছে গিয়ে ছিলো। আল্লাহকে ভুলে অভিশপ্ত জীবনে হাঁটছিলাম। অন্তর মরে গিয়ে ছিলো। অস্থির থাকতাম সব সময়। মেধা কমে গিয়ে ছিলো। শয়তানের কারাগারের বন্দি ছিলাম। কেউ সম্মান করতো না। কোন কিছুতেই বরকত পেতাম না। নিজেকে অনেক ছোট মনে হতো।
    - আর এখন?
    - এখন সব পেয়েছি। গোনাহের কারণে যা হারিয়েছিলাম, গোনাহ ছাড়ার দ্বারা সব পেয়েছি। আল হামদুলিল্লাহ। আমি সবচেয়ে আনন্দে জীবন-যাপন করছি।

    বিভিন্ন বিষয়ে আরো অনেক কথা হলো।

    কিছুক্ষণ পর পাশের মাসজিদ থেকে কানে ভেসে আসলো, মহান প্রভুর দরবারে দাঁড়ানোর আহবান। মুয়াজ্জিনের কণ্ঠে আকাশ-বাতাস মুখরিত করে সুমধুর সুরে ধ্বনিত হলো, “আল্লাহু আকবার-আল্লাহু আকবার।” মুয়াজ্জিনের সাথে সাথে ধরণীর সবকিছুই যেন আল্লাহর বড়ত্বের গান গাইছিলো।
    মাগরিবের আজান শুনে দুবন্ধু রওয়ানা হলো মাসজিদ পানে।

    ................চলবে ইনশাআল্লাহ।
    ফিরে এসো দ্বীনের পথে।

  • #2
    মাশাআল্লাহ। চালিয়ে যান। বাস্তব উদাহারণ। আল্লাহ আপনার কলমের ধার আলো বাড়িয়ে দিন। আমিন।
    কে আছো জোয়ান, হও আগোয়ান।

    Comment


    • #3
      মাশা-আল্লাহ, চালিয়ে যান ভাই।
      والیتلطف ولا یشعرن بکم احدا٠انهم ان یظهروا علیکم یرجموکم او یعیدو کم فی ملتهم ولن تفلحو اذا ابدا

      Comment


      • #4
        সুন্দর পাখির এ মোবারক গল্প চালিয়ে যান প্রিয় ভাই...

        জাযাকাল্লাহু খাইরান।
        হে মু'মিনগণ! তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হও।

        Comment


        • #5
          আলহামদুলিল্লাহ্ খুব সুন্দর চালিয়ে যান ইনশাআল্লাহ্।

          Comment


          • #6
            মাশাআল্লাহ ভাই অনেক সুন্দর হয়েছে, চালিয়ে যান আল্রাহ আপনার লেখাকে কবুল করুন ।
            মৃত্যু ও বন্দিত্বের ভয় ঝেড়ে ফেলে চলুন ঝাঁপিয়ে পড়ি ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে।

            Comment


            • #7
              মাশা'আল্লাহ। খুবই সুন্দর হচ্ছে ভাই। চালিয়ে যাবেন ভাই ইনশাআল্লাহ। অপেক্ষায় থাকবো ইনশাআল্লাহ।
              বিবেক দিয়ে কোরআনকে নয়,
              কোরআন দিয়ে বিবেক চালাতে চাই।

              Comment


              • #8
                মাসাআল্লাহ ,ভাই চালিয়ে যান ইনশাআল্লাহ।আল্লাহ আপনার লেখনীতে বারাকাহ দান করুন। আমিন।
                দাওয়াত এসেছে নয়া যমানার,ভাঙ্গা কেল্লায় ওড়ে নিশান।

                Comment


                • #9
                  মাশা-আল্লাহ ভাই খুবই উপদেশ পূর্ণ একটি জীবন বদলানো বাস্তব ঘটনা।

                  চালিয়ে যান ভাই,,,,,



                  দাওয়াত এসেছে নয়া জামানার কিতাল করে মরতে,
                  কিতাল বিহীন পারবেনা কখনও শান্তি নিয়ে ফিরতে।

                  Comment


                  • #10
                    মাশাআল্লাহ।
                    উপকারী পোষ্ট।
                    আল্লাহ কবুল করুন,আমিন।
                    ’’হয়তো শরিয়াহ, নয়তো শাহাদাহ,,

                    Comment

                    Working...
                    X