Announcement

Collapse
No announcement yet.

দ্নীনি ভাইদের প্রতি এক মুহাজিরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নসিহাহ

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • দ্নীনি ভাইদের প্রতি এক মুহাজিরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নসিহাহ

    ...শেষ নসিহত হিসেবে আর কী বলবো। আমাদের একজন খালিক আছেন, তাঁর নাম আল্লাহ। তিনিই আমাদের সৃষ্টি করেছেন। যিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, আমাদেরকে তাঁরই ইবাদত করতে হবে। তাঁর নির্দেশই আমাদের মানতে হবে। তাঁর নিষেধগুলো থেকে আমাদের বেঁচে থাকতে হবে, হোক সেটা কষ্টের অথবা শান্তির। সর্বহালতেই তাঁরই কথামত চলতে হবে। আর তাঁর কথামত চলতে গিয়ে যদি আমাদের উপর কষ্ট আসে, বিপদ আসে, তাহলে সেটা তো আল্লাহরই জন্যে। আমাকে বিপদ দেওয়ার মালিকও আল্লাহ, বিপদ থেকে উদ্ধার করার মালিকও আল্লাহ। আল্লাহ যদি আমাকে বিপদ দিতে চান, তাহলে তো এটা আমার জন্য সৌভাগ্য যে, আল্লাহ আমাকে বিপদ দিয়ে পরকালের পুরস্কারের ব্যবস্থা করার ফিকির করেছেন, গোনাহ মাফ করার ব্যবস্থা করেছেন।
    মায়ের কথা মনে পড়ে। দুঃখিনী মা-ও হয়তো আমার কথা মনে করে নীরবে অশ্রু ফেলছেন। জীবিত থেকেও আজ আমি মায়ের কাছে হয়তো মৃতের মত। তারপরও তো মায়ের পাশে তাঁর অন্য সন্তানরা আছেন, বাবা আছেন, আত্মীয়স্বজন-পরিজন আছেন। কিন্তু আমার? এক আল্লাহ ছাড়া তো আর প্রিয় কেউ পাশে নেই! মা-বাবা, পরিজনেরা হয়তো আমাকে কিছুদিন পরেই ভুলে যাবেন, সকলের মাঝে অবস্থানের কারণে হয়তো তাঁরা আমার অনুপস্থিতি খুব একটা টেরই পাবেন না। কিন্তু আমি? গৃহ-পরিবার ছেড়ে একাকী আমি কি ভুলতে পারি তাঁদের? না ভাই, তাঁদের পদচারণা আমার কানে এখনো বাজে। এখনো তাঁদের সুমধুর কণ্ঠের ডাক প্রতিধ্বনিত হয় আমার কানে। তাঁদের স্মৃতি আমাকে ব্যস্ত করে তোলে, চোখের অশ্রু গড়িয়ে পড়ে। তাহলে, আজ আমি বাড়ি থেকে দূরে অবস্থানের কারণ? আল্লাহর হুকুম, আমার রবের নির্দেশ।
    মায়ের খেদমতে নিয়োজিত থাকতে না পারার বেদনা বয়ে বেড়াই। কিন্তু, যে আল্লাহ আমাকে বানিয়েছেন, সে আল্লাহ তো আমার মা-কেও বানিয়েছেন। আল্লাহ তো একজনই। যে আল্লাহ আমাকে দেখা-শোনা করছেন, সে আল্লাহ তো আমার মা-কেও দেখা-শোনা করছেন। আর, এই মুহূর্তে তো আমি মায়ের খেদমত বা মায়ের হকের, মুহাব্বাতের উসিলা দিয়ে আমার খালেকের অবাধ্যতা করতে পারি না। আল্লাহ আমাদের মনগুলোকে আল্লাহর নির্দেশ পালনের জন্য প্রস্তুত করে দিক, (জান্নাতকে আমাদের মিলনস্থল বানাক) এমনভাবে প্রস্তুত করে দিক যে, আল্লাহর নির্দেশের মোকাবেলায় যেন সবকিছুই তুচ্ছ থাকে, আমীন।
    আমি আপনাকে একটি বিষয় বলতে চাই। সেটা হলো- যখন জিহাদ ফরজে আইন হয়ে যায়, তখন কিন্তু মাতাপিতার হক্বের উপর ফরজ জিহাদ প্রাধান্য পাবে। আমাদের মনে রাখা দরকার, এখন জিহাদ ফরজে আইন। যদিও আমরা কোনো ক্ষেত্র এখনো তৈরি করতে পারিনি। তবে, হুকুম কিন্তু সেটাই। তাই, আপনাকে বলছি, আপনি দুনিয়ার এই সবকিছু ছেড়ে দিয়ে একমাত্র দ্বীনের কাজে কীভাবে মনোনিবেশ করা যায়, সেই ফিকির করুন।
    আর আমলের ব্যাপারে বলবো যে, সম্ভব হলে বিয়ে করে ফেলুন। তবে, বিয়ের আগে ভেবে-চিন্তে বিয়ে করুন, যাতে আহলিয়াকে হিজরতের জন্য প্রস্তুত করে গড়ে তোলা যায় এবং আহলিয়াকে এমন মনমানসিকতায় গড়ে তুলবেন যে, আমি চলে গেলে তোমার কোনো ক্ষতি নাই। আমার পরে আমার মত কোনো একজন তোমাকে বিয়ে করে নিতে পারবে। তাহলে আহলিয়া আপনাকে আপনার কাজে বাধা দিবেনা আশা করি ইনশাআল্লাহ। আমাদের সমাজের সমস্যাটা এখানেই; মেয়েরা মনে করে যে, আমার স্বামী মরে গেলে পরে আমি সারা জীবন বিধবা থাকতে হবে, আমি কীভাবে চলবো তাহলে? তাই তারা স্বামীকে জিহাদের পথে বাধা সৃষ্টি করে। আমাদের বোনদেরকে যেমন এই মনমানসিকতার বানাতে হবে, ঠিক আমাদেরও এমন মনমানসিকতার হতে হবে যে, কোনো ভাই মারা গেলে তাঁর বিধবা আহলিয়াকে বিয়ে করে ফেলা। তাহলে আমাদের বোনেরা স্বামীদেরকে জিহাদের পথে বাধা সৃষ্টি করবেনা, ইনশাআল্লাহ।
    আর বিয়ে করার পর প্রাথমিকভাবে মনে হয় নিজেকে নিজের উপর একটু কঠিন রাখতে হবে। যাতে কোনোভাবে আগে চেয়ে দ্বীনের কাজের ক্ষেত্রে কমতি না আসে। এই ধাক্কা সামলাতে পারলে আশা করা যায়, এগিয়ে যেতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। আর, চেষ্টা করুন পারিবারিক ঝামেলা কম এমন পরিবারে বিয়ে করতে। যেমন- আপনি বিয়ে করে কোথাও বাসা নিয়ে থাকলেন, বেড়াতে যাওয়া ইত্যাদি ঝামেলা কম থাকে এমন পরিবারে বিয়ে করতে পারেন ইনশাআল্লাহ।

    > অন্যান্য ভাইদের প্রতি আপনার কী নসিহাহ ভাই?

    সাধারণভাবে সকল ভাইদের প্রতি কিছু নসিহাহ হলো-
    ১. দ্বীনের উপর খুব কষ্ট করে হলেও টিকে থাকা, মানে ইস্তিকামাত। এটা যতো কষ্ট হোক, যতো বিপদের মাঝেই হোক, অ্যাক্টিভিটির সাথে লেগে থাকা।
    ২. গোনাহ থেকে ভালোভাবে বেঁচে থাকার চেষ্টা করা।
    ৩. দ্বীনের কাজে কমতি আসে এমন দুনিয়াবি সব কাজকে পেছনে ফেলে দেওয়া, ত্যাগ করা।
    ৪. আল্লাহর মুহাব্বাত দিলের মধ্যে গেড়ে দেওয়া, যে মুহাব্বাত আল্লাহর জন্য জীবন বিলিয়ে দিতে বাধ্য করে।
    ৫. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এমনভাবে মুহাব্বাত করা, যে মুহাব্বাত তাঁর অনুসরণ করা থেকে শুরু করে তাঁর জন্য জীবন দিতে বাধ্য করে।
    এগুলো আসলে একদিনে হয়না। এইগুলোর জন্য ফরজ, ওয়াজিব, নফল, সবকিছু আদায় করে, সুন্নাত অনুসারে জীবন পরিচালনা করে করে চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহ তা’য়ালা এটা করার সর্বপ্রথম আমাকে তাওফিক দান করুন, আমীন। এর পর বাকি সকল ভাইকে তাওফিক দান করুন।
    আরেকটি বিষয় আমি ভাইদের উদ্দেশ্যে বলবো। সেটি হলো তাহাজ্জুদ। আল্লাহর মুহাব্বাত লাভের অন্যতম উপায় হলো তাহাজ্জুদ। আত্মার অনেক রোগের ঔষধও মনে করি এটি। অনেক ভাইদের দেখা যায়, ফরজ আমল করতেও অলসতা লাগে, অবহেলা করে। তাদের জন্যও তাহাজ্জুদটা লাজেম(আবশ্যক) করে নেওয়া এটা একটা কার্যকরি ঔষধ বলে মনে হচ্ছে। আল্লাহ সহজ করুন, আমীন। সর্বশেষ বলবো, যে শাহাদাত পেতে চায়, সে যেন ভোর রাতে তাহাজ্জুদে আল্লাহর কাছে সেটা চায়। আল্লাহ তা’য়ালা আমাকে এবং সবাইকে এই আমলটি সারা জীবন ধারাবাহিকভাবে করে যাওয়ার তাওফিক দান করুন, আমীন।

  • #2
    লেখাটা পড়ে আপ্লুত হলাম....মনের অজান্তে অশ্রুসিক্ত হলাম... ভাঙ্গা হৃদয়ের আবেগময় কথাগুলো আমার হৃদয়কেও প্রচন্ডভাবে নাড়া দিয়ে গেল...!
    ইয়া আল্লাহ! ঐ ভাইকে কবুল করুন...পোস্টদাতাকে কবুল করুন...আমাদেরকে আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন ইয়া রাব্বাল আলামীন।
    সকল ভাইদেরকে পড়ার ও বুঝার এবং আমল করার জন্য সর্বোচ্চ প্রয়াস ব্যয় করার বিনীত আহবান করছি..........................জাযাকুমুল্লাহ!
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

    Comment


    • #3
      আল্লাহুআকবার! সবার জন্য খুবই গুরুত্বপুর্ণ নসিহা,হে আল্লাহ্ ভাইকে কবুল করুন,,আমাদের আমল করার তৌফিক দিন,
      সব মিডিয়ার ভাইদের নিরাপদ রাখুন আমিন।

      Comment


      • #4
        আল্লাহ রব্বুল আলামিন প্রিয় ভাইকে কবুল করে নিন, আমাদেরকে আল্লাহর পথে অবিচল রাখুন, আল্লাহ আমাদের জন্য সহজ করুন, জান্নাতকে আমাদের মিলনস্থল বানান, আমিন ইয়া রব্বাল আলামিন।

        ভাইয়েরা, হযরত উমার (রদিঃ) দুয়া করতেন,

        اللهم ارزقني شهادة في سبيلك واجعل موتي في بلد رسولك صلى الله عليه وسلم

        উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মারঝুকনি শাহাদাতান ফি সাবিলিক ওয়া জাআল মাওতি ফি বালাদি রসুলিকা সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
        অর্থঃ হে আল্লাহ, আমাকে আপনার পথে শাহাদাত দান করুন এবং আমাকে আপনার রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শহরে (মদিনা) মৃত্যু দিন।
        (সহিহ বুখারি, হাদিস ১৮৯০)

        আমরা এই দুয়াটি মুখস্থ করে ফেলি এবং এই দুয়া বেশি বেশি করি।

        Comment


        • #5
          ভায়ের অন্তরের কথাগুলো ,নসিহতগুলো,আকাংখাগুলো
          অন্তর দিয়ে ও মন দিয়ে পড়েছি ।।
          আল্লাহ তাআলা এ কথার উপর আমল করার তাওফিক দান
          করুন আমিন,,,
          মুমিনের একটাই স্লোগান,''হয়তো শরীয়াহ''নয়তো শাহাদাহ''

          Comment


          • #6
            আল্লাহ আপনি আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন আমীন।
            ان المتقین فی جنت ونعیم
            سورة الطور

            Comment


            • #7
              Originally posted by Masum Shariar View Post
              ...সর্বশেষ বলবো, যে শাহাদাত পেতে চায়, সে যেন ভোর রাতে তাহাজ্জুদে আল্লাহর কাছে সেটা চায়। আল্লাহ তা’য়ালা আমাকে এবং সবাইকে এই আমলটি সারা জীবন ধারাবাহিকভাবে করে যাওয়ার তাওফিক দান করুন, আমীন।
              সত্য কথা। আজ প্রায় দশক হয়ে গেলো। এখনো ভালো মতো চাইতেই পারলাম না।
              আল্লাহ আমাকে ও বাকি ভাইদেরকে কবুল করুন।

              Comment


              • #8
                মাশাআল্লাহ।
                অনেক সুন্দর আলোচনা করেছেন।
                আল্লাহ কবুল করুন,আমিন।
                ’’হয়তো শরিয়াহ, নয়তো শাহাদাহ,,

                Comment


                • #9
                  جزاك الله خيرا

                  [সম্মানিত ভাইদেরকে আমরা আলাদাভাবে জাঝাকাল্লাহ খাইরান না লিখে বাটন ব্যবহারের প্রতি উৎসাহিত করছি। আপনারা আপনাদের ভাইদের অনেক মেহনতের পোস্টে একটু বড় করে কমেন্ট করলে ভাইয়েরা আরও সুন্দর, তথ্যবহুল ও জ্ঞানগর্ভ পোস্ট করতে উৎসাহিত হবেন ইনশা আল্লাহ। সামনে থেকে শুধু জাঝাকাল্লাহ খাইরান কমেন্ট এলাও করা হবে না ইনশা আল্লাহ... ]
                  Last edited by Munshi Abdur Rahman; 03-19-2020, 06:18 AM.

                  Comment


                  • #10
                    تقبل الله هجرته. امين

                    Comment


                    • #11
                      মাশাআল্লাহ, হৃদয়ছোঁয়া কথা।
                      আল্লাহ তা‘আলা ভাইয়ের হিজরতকে কবুল করুন ও আমাদেরকে ভাইয়ের হৃদয় নিঃসৃত নসীহাগুলোর উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমীন
                      ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

                      Comment


                      • #12
                        ভাই অনেক সুন্দর আলোচনা করেছেন আল্লাহ তা'আলা আপনাকে কবুল করুন,এবংআমাদেরকে ও কবুল করুন
                        আমিন।
                        হয়তো শরীয়াহ নয়তো শাহাদাহ

                        Comment

                        Working...
                        X