মহান রবের ইবাদতকে কীভাবে উপভোগ করবেন?
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم
আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীন, ওয়াস্-সালাতু ওয়াস্-সালামু আলা সাইয়িদিল আম্বিয়া-ই ওয়াল-মুরসালীন, ওয়া আলা আলিহী, ওয়া আসহাবিহী, ওয়ামান তাবিয়াহুম বি ইহসানিন ইলা ইয়াওমিদ্দীন, মিনাল উলামা ওয়াল মুজাহিদীন, ওয়া আম্মাতিল মুসলিমীন, আমীন ইয়া রাব্বাল আ’লামীন। আম্মা বা’দ,
মুহতারাম ভাইয়েরা! প্রথমে আমরা সকলেই একবার দুরূদ শরীফ পড়ে নিই।
اللهم صل على محمد وعلى آل محمد، كما صليت على ابراهيم وعلي آل إبراهيم، إنك حميد مجيد، اللهم بارك على محمد وعلى آل محمد، كما باركت على إبراهيم وعلى آل إبراهيم إنك حميد مجيد.
আমরা দাওয়াহ ইল্লাল্লাহ ফোরামে হাজির হতে পেরেছি, এই জন্য মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার দরবারে শুকরিয়া আদায় করি আলহামদুলিল্লাহ।
মুহতারাম ভাইয়েরা, আজকে যে বিষয়টি আলোচনা করার ইচ্ছা করেছি তা হচ্ছে,
মহান রবের ইবাদতকে কীভাবে উপভোগ করবেন?
মহান রবের ইবাদতকে উপভোগ করতে হলে রবের সাথে আত্মার বন্ধন মজবুত হতে হবে ৷
ইবাদত হচ্ছে আল্লাহ তাআলার সাথে সাক্ষাত ৷
আর আল্লাহ তাআলার সাথে সাক্ষাতের জন্য দরকার উপযুক্ত প্রস্তুতি ৷
এ ব্যাপারে আল্লাহর সাথে মুসা আলাইহিস সাল্লাম এর কথোপকথনের ঘটনাটি একটি উদাহরন হতে পারে ৷
মুসা আলাইহিস সাল্লাম আল্লাহকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
হে আমার রব! আমি তাড়াতাড়ি আপনার কাছে এলাম,যাতে আপনি আমার উপর সন্তষ্ট হন ৷ (সূরা ত্ব-হা:আয়াত ৮৪)
মুসা আলাইহিস সালাম আল্লাহকে দেখতে চেয়েছিলেন ৷
ফিরাউনকে ধ্বংস করার পর আল্লাহ তাআলা মূসা আলাইহিস সাল্লাম ও বনী ইসরাইলের জন্য একটি সময় ও স্থান নির্বাচন করে দিলেন ৷
মহান রব তাঁর বান্দা মূসা আলাইহিস সালামকে তূর পাহারের নিচে আসতে বললেন ৷
মূসা আলাইহিস সালাম হারুন আলাইহিস সালামকে বনী ইসরাইলের সাথে রেখে একাকী আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের জন্য বেরিয়ে পড়েন ৷ আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের জন্য নির্ধারিত তূর পাহাড়ের দূরত্ব যত ঘনিয়ে আসছিল,মূসা আলাইহিস সালাম গন্তব্যের দিকে দ্রুতবেগে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ৷
মূসা আলাইহিস সালাম তো তাড়াহুড়া না করে ধীরেসুস্থে এগোতে পারতেন ৷
কিন্তু এটা ছিল তাঁর জন্য এক বিশেষ সাক্ষাত—মহা আকাঙ্খিত ৷
কারন এই সাক্ষাত ছিল স্বয়ং আল্লাহর সাথে! এমন এক সাক্ষাত—যা কোনোভাবেই হাতছাড়া করা যাবে না ৷
মূসা আলাইহিস সালাম আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের জন্য, একটিবার তাঁর রবের সাথে কথা বলার জন্য উদগ্রীব ছিলেন ৷
আপনার কাছেও দৈনিক পাঁচবার আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের সুযোগ আছে ৷
আসলে জীবনের প্রতিটি মূহুর্তই আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের সুবর্ণ সুযোগ ৷
আপনি চাইলে এই সুযোগ গাফিলতি করে পার করে দিতে পারেন,মুসা আলাইহিস সালাম এর মতো তীব্র আকাঙ্খা আর ভালোবাসার সাথে আল্লাহর সাক্ষাতে দ্রুত এগিয়ে আসতে পারেন, কিংবা চাইলে এই সাক্ষাত একেবারে বাতিল করে দিতে পারেন ৷
সিদ্ধান্ত একান্তই আপনার ৷
কিন্তু কেন মুসা আলাইহিস সালাম আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের জন্য এত উদগ্রীব ছিলেন? কারণ, আল্লাহর সাথে সাক্ষাত মূসা আলাইহিস সালাম এর জন্য অত্যন্ত আকাঙ্খিত ছিল ৷
আর এই তীব্র আকাঙ্খার পেছনে কারণ হলো,মূসা আলাইহিস সালাম আল্লাহর ইবাদত করতে পছন্দ করতেন ৷
আপনি যতক্ষন না আল্লাহর প্রতি আপনার আকাঙ্খা,ভালোবাসাকে তীব্রভাবে উজ্জাবিত করবেন,ততক্ষন পর্যন্ত আপনি ইবাদত করে আনন্দ পাবেন না ৷
কেউ যদি কারো ভালবাসার প্রত্যুত্তরে তীব্র আবেগ ও ভালোবাসাহীন আচরণ করে,তার এই আচরনে যদি কোনো আকাঙ্খাই না থাকে,তাহলে এই ভালোবাসা সস্তা,মূল্যহীন ৷
আপনার প্রধান কাজ হলো আল্লাহর ইবাদত ৷
এই ইবাদতের মাঝে আপনি যদি আল্লাহর প্রতি আপনার আবেগ,তীব্র ভালোবাসা আর আকাঙ্খা ঢেলে দিতে পারেন,তবেই সেই ইবাদত আপনার কাছে উপভোগ্য হয়ে উঠবে ৷ ইনশাআল্লাহ
মুহতারাম ভাইয়েরা!
আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করছি।
আল্লাহ তা’আলা আমাদের সবাইকে এবং পুরো উম্মাহকে মহান রবের ইবাদতকে উপভোগ করার সর্বাত্মক চেষ্টা করার তাওফীক দান করুন এবং আমাদের সবাইকে ইখলাসের সাথে জিহাদ ও শাহাদাতের পথে অবিচল থাকার তাওফীক দান করুক।
আমিন
وصلى الله تعالى على خير خلقه محمد وآله
واصحابه اجمعين
وآخردعوانا ان الحمد لله رب العالمين
Comment