কেমন হবে একজন মুজাহিদের আখলাক
* আল্লাহ তায়ালার সাহায্যের প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা।
* শাহাদাতের জন্য প্রস্তুতি।
* নুসরাত।
* ইনতিসার।
* শাজা'য়াত, বীরত্ব ও সাহসিকতা।
* সবর ও মুসাবারাহ।
১/ আল্লাহ তায়ালার সাহায্যের প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসঃ
الاسلام يعلو ولا يعلى
"ইসলাম চির বিজয়ী দ্বীন কখনো পরাজিত নয়।"
* আল্লাহ তায়ালার সাহায্যের প্রতি য়াক্বীন ও আস্থা কখন এবং কেমন হয়া চাইঃ
আল্লাহ তায়ালার সাহায্যের প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের প্রমাণ হয় দুঃখ দুর্দশার অবস্থায় এবং দূর্বলতার ধাপগুলোতে।
ঐ ব্যক্তি য়াক্বীন ও অাস্থার অধিকারী নয়, যে ইসলামের বিজয় ও শক্তি দেখে খুশি হয়, আর দূর্বলতা দেখে হীনমন্যতা এবং হতাশায় ভোগে।
আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা কারী ব্যাক্তির ও অাস্থা তখন হয়া চাই যখন অন্ধকার গাঢ় হয়, চতুর্দিকে ভয়–শংকা এবং বিপদ আপদের সমাবেশ হতে থাকে, সংকীর্ণতা বাড়তে থাকে, শত্রুরা সম্মিলিতভাবে হামলে পড়ে। তখন আল্লাহ তায়ালার প্রতি তার আশা ভরসা হবে বড় , সে বিশ্বাস করবে যে শেষ পরিণাম মুত্তাক্বীদের জন্য, এবং ভবিষ্যৎ এই দ্বীনে হক্বের।
* য়াক্বীনের গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তাঃ
আর মুজাহিদ সে তো জামিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের জন্য লড়াই করে, তাঁকে সে লক্ষ্যে পৌঁছাবে তাঁর ধৈর্য এবং য়াক্বীন। শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ রহঃ বলেনঃ
"بالصبر و اليقين تنال الإمامة في الدين"
" ধৈর্য এবং য়াক্বীন দ্বারাই দ্বীনের নেতৃত্ব অর্জন হয়।"
অতঃপর তিনি এই আয়াত তেলাওয়াত করেনঃ
و جعلنا منهم أئمة يهدون بامرنا لما صبروا و كانوا باياتنا يوقنون. السجدة: ٢٤
" তারা সবর করত বিধায় আমি তাদের মধ্যে থেকে নেতা মনোনিত করেছিলাম। যারা আমার আদেশে পথ প্রদর্শন করত। তারা ছিল আমার আয়াতসমূহে দৃঢ় বিশ্বাসী।
য়াক্বীন হলো আল্লাহর দেয়া নেয়ামতের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
"و سلوا الله اليقين و المعافاة فإنه لم يؤت أحد بعد اليقين خيرا من المعافاة".
"তোমরা আল্লাহর নিকট য়াক্বীন এবং সুস্থতা কামনা কর, কেননা য়াক্বীনের পর সুস্থতা থেকে বড় কোনো নেয়ামত নেই, যা কাউকে দেয়া হয়। (সহীহ জামে, হাদীস, ৪০৭৩)
এই উম্মাহ তখনি ধ্বংসের মুখে পড়েছে যখন তার সন্তানেরা তার সাহায্য ও বিজয়ের জন্য নিজেদের শক্তি সামর্থ্য উৎসর্গ করতে কার্পণ্যতা করেছে, চেষ্টা তদবির ব্যতিত এবং কোনো আমলী পদক্ষেপ গ্রহণ ছাড়া শুধু আশা আকাঙ্ক্ষার দ্বারা পরিতৃপ্ত থেকেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
"صلاح اول هذه الأمة بالزهد و اليقين و هلاك آخر هذه الأمة بالبخل و الامل".
"এই উম্মাহর প্রথম ভাগের সফলতা হলো দুনিয়া বিমুখতা এবং য়াক্বীনের কারণে, আর তার শেষ ভাগের ধ্বংস হলো কৃপণতা এবং আশার কারণে"। ( সহীহ জামে, হাদীসঃ২৮৪৫, হাসান।)
* সাহায্য কখন আসবে?
আর যেহেতু আলিমুল গায়িব একমাত্র আল্লাহ তায়ালা, সুতরাং আমরা বলতে পারি না যে বিজয় কখোন আসবে? আমরা এও জানি না যে কল্যাণ ও সফলতা কোথায় আছে?? তবে আমরা জানি এবং বিশ্বাস করি যে, এই উম্মাহ বিজয়ী উম্মাহ, এবং এই উম্মাহ কল্যাণ ও সফলতার উম্মাহ।
দ্বীর্ঘকাল পরে হলেও আল্লাহ এই উম্মাহকে সাহায্য করবেন। এটা তার ওয়াদা, আর তিনি কখনো ওয়াদার খেলাফ করেন না। তবে জানা নেই এই কল্যাণ উম্মাহর কোন অংশে রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
"مثل أمتي مثل المطر لا يدرى اوله خير ام آخره".
" আমার উম্মত হলো বৃষ্টির ন্যায়, বলা যায় না তার কোন অংশে কল্যাণ রয়েছে, প্রথম অংশে না শেষ অংশে"। ( সহীহ জামে, হাদীসঃ৫৮৫৪, সহীহ।)
আমাদের জানা নেই যে, আল্লাহ তায়ালা কোন প্রজন্মের দ্বারা এই উম্মাহর দুঃখ–দূর্দশা উন্মোচন করবেন? তবে আমরা জানি যে, এই জগতের মধ্যে আল্লাহ তায়ালার চিরাচরিত নিয়ম হলো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভাষায়ঃ
"لايزال الله يغرس في هذا الدين غرسا يستعملهم فيه بطاعته إلى يوم القيامة".
" আল্লাহ তায়ালা সর্বদা এই দ্বীনের মধ্যে এমন চারা রোপণ করতে থাকবেন যাদেরকে তিনি কিয়ামত পর্যন্ত তাঁর আনুগত্যের সাথে দ্বীনের কাজে ব্যবহার করবেন"।( সহীহ জামে, ৭৬৯২, সহীহ।)
বরকতময় হাদীস ভান্ডারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এমন অনেক সুসংবাদ বর্ণিত হয়েছে যা নিরাশ অন্তরে আশার প্রদীপ জ্বালায়, এবং য়াক্বীনকে শক্তিশালী করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেনঃ
"إنّ الله زوى الارض فرأيت مشارقها و مغاربها و إن أمتي سيبلغ ملكها ما زوى لي منها".
" নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ গোটা পৃথিবীকে আমার জন্য সংকুচিত করেন, ফলে আমি পৃথিবীর পুর্ব থেকে পশ্চিম প্রান্ত দেখতে পাই। আর খুবশীঘ্র আমার উম্মতের রাজত্ব পৃথিবীর ঐ পর্যন্তই পৌঁছে যাবে"।(সহীহ মুসলিম,কিতাবুল ফিতান, হাদীসঃ২৮৮৯)
সুতরাং শত্রুর কূট–কৌশল এবং ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পড়ে এবং নিজেদের চরম উদাসিনতা ও মন্দ কর্মে
র ফলে উম্মাহ আজ যে পরাজয় এবং দুঃখ– দুর্দশার শিকার হয়েছে, তা একটি সাময়িক পরিস্থিতি। উম্মাহর এই সাময়িক দূর্বলতা এবং মন্দ অবস্থা দেখে হতাশ হয়ার কিছু নেই। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো এরশাদ করেছেনঃ
"الإسلام يعلو ولايعلى"
"ইসলাম চির বিজয়ী দ্বীন, কখনো পরাজিত নয়"।( সহীহ জামে, ২৭২৮, হাসান)
তিনি আরো সুসংবাদ দান করেছেন যে, এই দ্বীন প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পেতে থাকবে আর শিরক এবং আহলে শিরক ক্রমশ সংকুচিত হতে থাকবে।
তিনি সাঃ বলেনঃ ঐ সত্ত্বার কসম যার হাতে আমার প্রাণ, দিবারাত্রির আবর্তনে এই দ্বীন পৃথিবীর সেখানে পৌঁছে যাবে যেখানে তারকার আলো পৌঁছে। ( সহীহ আলজামে, হাদীস, ১৭১৬)
পবিত্র হাদীসে এমন আরও অসংখ্য সুসংবাদ বানী বর্ণিত হয়েছে যা হতাশার অন্ধকারকে দূর করে, বেদনাগ্রস্ত হৃদয়ে প্রশান্তি আনে। মেহনতি মানুষের পদ কে সুদৃঢ় করে, আশার প্রভাতকে উজ্জ্বল করে।
তিনি সাঃ বলেনঃ "আমার উম্মতকে সুমহান মর্যাদা, কর্তৃত্ব ক্ষমতার, জমীনে আল্লাহর দ্বীন সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ার এবং বিজয়ের সুসংবাদ দাও"। ( সহীহ আল জামে, হাদীসঃ ২৮৮৫)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও সুসংবাদ দেন যে,
"لن يبرح هذا الدين قائما يقاتل عليه عصابة من المسلمين حتى تقوم الساعة"
" এই দ্বীন সর্বদা কায়েম থাকবে, এই ধারায় যে আমার উম্মতের একটি ক্ষুদ্র দল দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে কিয়ামত পর্যন্ত কিতাল করে যাবে"। ( সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ইমারাহ্, অধ্যায় ৫৩, হাদীস, ১৭২/ ১৯২২)
সুতরাং জিহাদ কিয়ামত পর্যন্ত সজীব ও শ্যামল থাকবে এবং দ্বীনের বিজয় ধারাও ততদিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
* আল্লাহ তায়ালার সাহায্যের মানদন্ডঃ
মুমিন বান্দাদের সাহায্যের জন্য যুগে যুগে আল্লাহ তায়ালা যে মানদন্ড ঠিক করেছেন তা আমাদের চিন্তা গত মানদন্ড থেকে ভিন্ন। তিনি দুর্বলকে শক্তিশালী করে যুগে যুগে সবলের উপর বিজয় দান করেছেন। এবং পরিশেষে দুর্বলদেরকেই জমীনের উত্তরাধিকারী বানিয়েছেন। তিনি বলেনঃ
"وَنُرِيدُ أَنْ نَمُنَّ عَلَى الَّذِينَ اسْتُضْعِفُوا فِي الْأَرْضِ وَنَجْعَلَهُمْ أَئِمَّةً وَنَجْعَلَهُمُ الْوَارِثِينَ".( القصص: ٥)
" জমীনে যাদেরকে দুর্বল করে রাখা হয়েছে আমি চাই তাদের প্রতি অনুগ্রহ করতে, তাদেরকে নেতা বানাতে, এবং জমীনে তাদেরকে উত্তরাধিকারী করতে"। (কসাস, ৫)
আল্লাহ তায়ালা এই উম্মাহকে তার দুর্বল শ্রেণীর কারণে সাহায্য করে থাকেন। এবং তিনি দুর্বলতা থেকে শক্তির সঞ্চয় ঘটান।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
" إنما ينصر الله هذه الأمة بضعيفها، بدعوتهم و صلاتهم و اخلاصهم".
" নিশ্চয়ই আল্লাহ এই উম্মাহকে তার দুর্বল শ্রেণীর মাধ্যমে সাহায্য করেন, তাদের দোয়া, সালাত এবং এখলাসের বরকতে"। ( সহীহ নাসায়ী, কিতাবুল জিহাদ, আলবানী)
আজ যে মুসলিমকে হাতকড়া দিয়ে এবং বেড়ি পরিয়ে হাঁকিয়ে নেয়ে যাওয়া হচ্ছে, যে মুসলিম জালিমের কারাগারে বন্দি, যে মুসলিম সরবত্রে বিতাড়িত, যে মুসলিম অসহায়–নিঃস্ব, নিরস্ত্র, তাঁর দোয়া, সালাত এবং এখলাসের বরকতে আল্লাহ তায়ালা এই উম্মাহকে সাহায্য করবেন। চাই দুর্বলতার ধরণ এবং প্রচন্ডতা যেমনি হোক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
"رب اشعث مدفوع بالابواب لو اقسم على الله لابره"
" এমন অনেক লোক রয়েছে যাদের চুলগুলো এলোমেলো এবং আমির উমারার দরবারে যারা বিতাড়িত তারা যখন আল্লাহ তায়ালার নামে কোনো কিছুর শপথ করে আল্লাহ তায়ালা তার শপথকে পূর্ণ করে দেন"। (সহীহ মুসলিম, কিতাবুল বিররি।)
আজ আমরা দেখছি যে শত্রু পক্ষের হাতে জাগতিক সব শক্তি। তারা আমাদের উপর কর্তৃত্ব করছে, এবং ক্ষমতার ছড়ি ঘোরাচ্ছে। কিন্তু আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, এই জগতের পরিচালক হলেন মহান আল্লাহ। তাঁরই হাতে মহা জগতের রাজত্ব ও ক্ষমতা। তিনিই একমাত্র সর্বভূম ক্ষমতার মালিক। এবং তিনিই এই জগতের পট পরিবর্তন কারী। তিনি তাঁর মুমিন বান্দাদের প্রতি গাফেল নন। এবং তিনি তাঁর শত্রুদের কৃতকর্মের সম্পর্কে বেখবর নন। তিনি মুমিনদের অপমান লাঞ্ছনাকে স্থায়ী হতে দেবেন না, এবং মুমিনদের দুর্বল অবস্থাকে দ্বীর্ঘ করবেন না। তিনি অবশ্যই এই উম্মাহর হারানো শান–শাওকাত ফিরিয়ে দেবেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
"الميزان بيد الرحمن، يرفع اقواما و يضع آخرين"
" মানদন্ড আল্লাহর হাতে, তিনি কোন সম্প্রদায়কে উঁচু করেন আবার কোন সম্প্রদায়কে নিচু করেন"।( সহীহ আল জামে, হাদীসঃ ৬৮৩৭)
* কাদের মাধ্যমে সাহায্য এবং বিজয় আসবে?
আল্লাহ তায়ালা এই উম্মাহকে সত্য ও ন্যায়ের পথে চালানোর জন্য দুটি ধারা অব্যাহত রেখেছেন।
১/ প্রত্যেক প্রজন্মের মধ্যে এমন কিছু ব্যাক্তিত্যের আবির্ভাব ঘটান, যাঁরা সাবিকূন তথা সত্যের পথে অগ্রগামী,
" ولا يخافون لومة لائم"
এবং তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত নন।
যাদের মাধ্যমে আল্লাহ্ তায়ালা এই উম্মাহর অন্তরে য়াক্বীন– আস্থা এবং বীরত্বের বীজ অংকুরিত করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
" في كل قرن من امتي سابقون"
" আমার উম্মাহর প্রত্যেক প্রজন্মের মধ্যে সাবিকূন, তথা সত্যের পথে অগ্রগামী দলের উপস্থিতিতি থাকবে"। ( সহীহ আল জামে, হাদীসঃ ৪২৬৭, হাসান।)
২/ প্রত্যেক শতাব্দীতে একজন মুজাদ্দিদের আগমন, যিনি উম্মাহকে হিদায়াত এবং সফলতার পথে পরিচালিত করবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
"إنّ الله يبعث لهذه الأمة على رأس كل مائة من يجدد لها دينها"
" নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা এই উম্মাহর জন্য প্রত্যেক শতাব্দীতে এমন ব্যক্তিকে পাঠাবেন, যে উম্মাহর দ্বীনকে সংস্কার করবে"। ( সহীহ সুনানে আবী দাউদ, কিতাবুল মালাহিম, অধ্যায়ঃ১ , আলবানী।)
সুতরাং এই উম্মাহর বিজয় ও সফলতা সুনিশ্চিত। হয়তো এই বিজয় সত্যের পথে অগ্রগামী কাফেলার দ্বারা অর্জিত হবে, অথবা কোন মুজাদ্দিদের হাতে সাধিত হব।
* দ্বীন ও উম্মাহর শত্রুদের ধ্বংস অবধারিতঃ
ইসলামের সকল শত্রুরা আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণার মধ্য রয়েছে। এবং অনিবার্যভাবে তারা ধ্বংসগহ্বরের কিনারায় দাঁড়িয়ে,যে কোনো মুহূর্তে তাদের অস্তিত্বের বিনাশ ঘটতে পারে। আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
" و العصر إن الإنسان لفي خسر، إلا الذين آمنوا وعملوا الصالحات، و تواصوا بالحق و تواصوا بالصبر".
" কসম সময়ের, নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত, কিন্তু তারা নয় যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের"।
সুতরাং আজ যারা ঈমান ও ইসলামের পথকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে, ঈমানদারগণের সাথে জুলুম অন্যায়কে বৈধতা দান করেছে এবং সৎকর্মশীলদের সাথে প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে, তাদের ধ্বংস অনিবার্য।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ
"من عادى لي وليا فقد آذنته بالحرب"
" যে ব্যক্তি আমার কোনো ওলী(বন্ধুর) সাথে শত্রুতা করল আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলাম"। ( সহীহ বুখারী, রিক্বাক্ব অধ্যায়।)
* সাহায্যপ্রাপ্ত এবং বিজয়ী হতে আমাদের যা করণীয়ঃ
১) ঈমানের পরিশুদ্ধতা,
২) সৎকাজে অগ্রগামিতা,
৩) পরস্পরকে সত্যের তাকীদ করা,
৪) সবরের তাকীদ করা,
৫) রিযা বিলক্বাযা তথা আল্লাহর সিদ্ধান্তে অটল ও সন্তুষ্ট থাকার জন্য তাকীদ করা।
৬) সাহায্য ও বিজয়ের সুসংবাদ শুনিয়ে মনোবল দৃঢ় করা,
৮) আল্লাহর প্রতি য়াক্বীন, তাওয়াক্কুল এবং আস্থাকে কাজে পরিণত করা। এক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা আমাদের মধ্যে আমলীভাবে যে য়াক্বীন ও আস্থাকে দেখতে চান তা হলো এমন য়াক্বীন ও আস্থা যা হযরত মূসা আঃ এর মধ্যে ঘটেছিল। তিনি আল্লাহ তায়ালার কথা এবং ওয়াদার প্রতি য়াক্বীন রেখে নিজের দুগ্ধপায়ী সন্তানকে সাগরে ভাসিয়ে দিলেন, আর আল্লাহ তাঁর ওয়াদা কে সত্যায়ন করলেন। শিশুটির শত্রু ফেরাউনের হাতেই তাঁর লালন পালন সম্পন্ন করালেন।তিনি তাঁর কুদরতের বিস্ময় প্রকাশ করলেন। আর যুগ যুগ ধরে এভাবেই তাঁর কুদরতের বিস্ময় অব্যাহত রয়েছে।
৯) অন্তর থেকে আল্লাহ তায়ালার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সংশয়–নিরাশাকে মুছে ফেলা।
১০) আর য়াক্বীন–আস্থার দৃঢ়তা আসবে তাক্বদীরের প্রতি গভীর বিশ্বাসের দ্বারা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ" প্রত্যেক জিনিসের একটি বাস্তবতা রয়েছে, কোনো ব্যক্তি তার ঈমানের বাস্তবতা অর্জন করতে পারবে না যদি না সে এই য়াক্বীন করে যে, তাকে যা পৌঁছার তা কখনো তাকে ভুল করবে না, আর যা তাকে ভুল করার তা কখনো তাকে স্পর্শ করবে না"।(সহীহ আল জামে, হাদীস নংঃ২১৫০)
১১) আল্লাহ তায়ালার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তাড়াহুড়ো না করা। আল্লাহ তায়ালা কখনো ওয়াদার খেলাফ করেন না, তিনি তা থেকে মহান এবং পবিত্র। তবে তাঁর ওয়াদা প্রতিফলিত হয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ আছে যা কোন তাড়াহুড়ো কারীর তাড়াহুড়োর কারণে তরান্বিত হবে না এবং কোনো খায়েশপুজারীর অলসতার কারণে বিলম্বিত হবে না। এক্ষেত্রে হযরত ওমর বিন আব্দুল আজিজ রহঃ এই দোয়াটি পড়তেনঃ
"اللهم رضني بقضائك وبارك لي في قدرك حتى لا احب تعجيل شئ اخرته و لا تأخير شئ عجلته"
১২) হতাশার অন্ধকার ছিন্ন করে আশা–ভরসার মশাল হাতে নিয়ে দৃঢ়তার সাথে দাওয়াত এবং জিহাদ কে সামনে এগিয়ে নেয়া। চাই আমরা বিজয় আনতে পারি বা না পারি। আমাদের দাওয়াত ও জিহাদ সত্বেও বিজয় আনতে না পারলে সে কারণে আমাদেরকে দোষারোপ করা হবে না যে, কেন আমরা বিজয় আনতে পারিনি??! হ্যাঁ আমাদেরকে দোষারোপ করা হবে যখন আমরা প্রস্তুতি ও উপকরণ গ্রহণ করতে ত্রুটি করব, এবং নিজেদের শক্তি সামর্থ ব্যয়ে কার্পণ্যতা করব।
* আল্লাহ তায়ালার কাছে জীবিতদের জন্য তাদের শহীদ ভাইদের আবেদনঃ
শহীদগণ যখন তাঁদের জীবিত মুজাহিদ সাথীদের মধ্যে দুর্বলতা দেখেন এবং তাদেরকে জিহাদের ফলাফলের প্রতি হতাশায় নিমজ্জিত দেখেন তখন তাঁরা বলেনঃ
" من يبلغ عنا أنا احياء في الجنة نرزق لئلا يزهدوا في الجهاد و لا ينكلوا عند الحرب، فقال الله سبحانه: أنا أبلغهم عنكم."
" কে আছে আমাদের পক্ষ থেকে খবর পৌঁছে দেয়ার জন্য যে আমরা জীবিত, জান্নাতের
মধ্যে আমাদেরকে খাবার দেয়া হয়, যাতে তারা জিহাদ থেকে বিমুখ না হয় এবং রণাঙ্গনে পিঠ প্রদর্শন না করে??! জবাবে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ " আমিই তাদের কাছে তোমাদের খবর পৌঁছে দেব"। ( সহীহ সুনানে আবীর দাউদ ,আলবানী, কিতাবুল জিহাদ, অধ্যায়ঃ২৭, হাদীস নং ২১৯৯/২৫২০)
সুতরাং অন্ধকার রজনী দূর হয়ে অবশ্যই দিবসের উদয় ঘটবে, নিশ্চয়ই একদিন এই জীমন আবর্জনা মুক্ত হবে এবং তার বুকে মানবতার কল্যাণ প্রতিষ্ঠিত হবে। নিঃসন্দেহে রাব্বুল আলামীনের সিদ্ধান্ত: "শেষ পরিণাম মুত্তাক্বীদের জন্য" একদিন অবশ্যই প্রতিফলিত হবে।
* আলোচনার সারসংক্ষেপঃ
= য়াক্বীনের অধিকারী ব্যক্তি সর্ব অবস্থায় কেবলমাত্র আল্লাহ তায়ালারি উপর আস্থা রাখবে, চাই জমীন যতই সংকীর্ণ হয়ে যাক না কেন।
= সবর এবং য়াক্বীনের দ্বারাই দ্বীনের নেতৃত্ব অর্জন হয়।
= য়াক্বীন হলো বান্দার সর্বশ্রেষ্ঠ গুণ, এবং য়াক্বীনের দ্বারাই দ্বীন ও উম্মাহর বিজয় আসবে।
= আল্লাহ তায়ালা কিয়ামত পর্যন্ত এই দ্বীন ও উম্মাহর সাহায্যের জন্য উম্মাহর মধ্যে একটি সাহায্যপ্রাপ্ত দল রাখবেন, যারা দ্বীনের জন্য লড়াই করে যাবে।
= উম্মাহর কল্যাণ ও সফলতা অবশ্যম্ভাবী।
# আল্লাহ তায়ালার সাহায্যের প্রতিশ্রুতি;
ক) উম্মাহর রাজত্ব পৃথিবীর পুর্ব–পশ্চিমে বিস্তৃত হবে।
খ) ইসলাম চির বিজয়ী দ্বীন কখনো পরাজিত নয়। ইসলাম প্রতিনিয়ত সম্প্রসারিত হবে, কুফুর–শিরক ক্রমশ হ্রাস পাবে।
গ) যুগের পরিবর্তন করণঃ চিরাচরিত নীতি অনুযায়ী আল্লাহ তায়ালা পুনরায় উম্মাহর মর্যাদাকে সমুন্নত করবেন।
ঘ) যুগে যুগে সত্য পথের অগ্রগামী কাফেলার উপস্থিতি, এবং প্রতি শতাব্দীতে মুজাদ্দিদের আগমন।
ঙ) দ্বীন ও উম্মাহর শত্রুদের ধ্বংস অনিবার্য।
চ) আল্লাহ তায়ালা এই উম্মাহকে দুর্বলদের দ্বারা সাহায্য করেন।
= বিজয় অবশ্যম্ভাবী, কিন্তু মানুষ তাড়াহুড়ো করে, এবং সংশয় ও সন্দেহ পোষণ করে এবং তাক্বদীরের প্রতি তাদের ঈমান খুব দুর্বল।
= সাহায্যের প্রতিশ্রুতি অবশ্যই প্রতিফলিত হবে কিন্তু তার সময় আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক নির্ধারিত।
= সত্যের অনুসারীদের স্বল্পতা এবং দুর্বলতা কোনো সমস্যা নয়, সমস্যা হলো উপায় উপকরণ গ্রহণ করতে ত্রুটি করা।
و ما النصر الا من عندالله، و لا حول و لا قوة إلا بالله العلي العظيم، استغفرالله و اتوب اليه.
* আল্লাহ তায়ালার সাহায্যের প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা।
* শাহাদাতের জন্য প্রস্তুতি।
* নুসরাত।
* ইনতিসার।
* শাজা'য়াত, বীরত্ব ও সাহসিকতা।
* সবর ও মুসাবারাহ।
১/ আল্লাহ তায়ালার সাহায্যের প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসঃ
الاسلام يعلو ولا يعلى
"ইসলাম চির বিজয়ী দ্বীন কখনো পরাজিত নয়।"
* আল্লাহ তায়ালার সাহায্যের প্রতি য়াক্বীন ও আস্থা কখন এবং কেমন হয়া চাইঃ
আল্লাহ তায়ালার সাহায্যের প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের প্রমাণ হয় দুঃখ দুর্দশার অবস্থায় এবং দূর্বলতার ধাপগুলোতে।
ঐ ব্যক্তি য়াক্বীন ও অাস্থার অধিকারী নয়, যে ইসলামের বিজয় ও শক্তি দেখে খুশি হয়, আর দূর্বলতা দেখে হীনমন্যতা এবং হতাশায় ভোগে।
আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা কারী ব্যাক্তির ও অাস্থা তখন হয়া চাই যখন অন্ধকার গাঢ় হয়, চতুর্দিকে ভয়–শংকা এবং বিপদ আপদের সমাবেশ হতে থাকে, সংকীর্ণতা বাড়তে থাকে, শত্রুরা সম্মিলিতভাবে হামলে পড়ে। তখন আল্লাহ তায়ালার প্রতি তার আশা ভরসা হবে বড় , সে বিশ্বাস করবে যে শেষ পরিণাম মুত্তাক্বীদের জন্য, এবং ভবিষ্যৎ এই দ্বীনে হক্বের।
* য়াক্বীনের গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তাঃ
আর মুজাহিদ সে তো জামিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের জন্য লড়াই করে, তাঁকে সে লক্ষ্যে পৌঁছাবে তাঁর ধৈর্য এবং য়াক্বীন। শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ রহঃ বলেনঃ
"بالصبر و اليقين تنال الإمامة في الدين"
" ধৈর্য এবং য়াক্বীন দ্বারাই দ্বীনের নেতৃত্ব অর্জন হয়।"
অতঃপর তিনি এই আয়াত তেলাওয়াত করেনঃ
و جعلنا منهم أئمة يهدون بامرنا لما صبروا و كانوا باياتنا يوقنون. السجدة: ٢٤
" তারা সবর করত বিধায় আমি তাদের মধ্যে থেকে নেতা মনোনিত করেছিলাম। যারা আমার আদেশে পথ প্রদর্শন করত। তারা ছিল আমার আয়াতসমূহে দৃঢ় বিশ্বাসী।
য়াক্বীন হলো আল্লাহর দেয়া নেয়ামতের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
"و سلوا الله اليقين و المعافاة فإنه لم يؤت أحد بعد اليقين خيرا من المعافاة".
"তোমরা আল্লাহর নিকট য়াক্বীন এবং সুস্থতা কামনা কর, কেননা য়াক্বীনের পর সুস্থতা থেকে বড় কোনো নেয়ামত নেই, যা কাউকে দেয়া হয়। (সহীহ জামে, হাদীস, ৪০৭৩)
এই উম্মাহ তখনি ধ্বংসের মুখে পড়েছে যখন তার সন্তানেরা তার সাহায্য ও বিজয়ের জন্য নিজেদের শক্তি সামর্থ্য উৎসর্গ করতে কার্পণ্যতা করেছে, চেষ্টা তদবির ব্যতিত এবং কোনো আমলী পদক্ষেপ গ্রহণ ছাড়া শুধু আশা আকাঙ্ক্ষার দ্বারা পরিতৃপ্ত থেকেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
"صلاح اول هذه الأمة بالزهد و اليقين و هلاك آخر هذه الأمة بالبخل و الامل".
"এই উম্মাহর প্রথম ভাগের সফলতা হলো দুনিয়া বিমুখতা এবং য়াক্বীনের কারণে, আর তার শেষ ভাগের ধ্বংস হলো কৃপণতা এবং আশার কারণে"। ( সহীহ জামে, হাদীসঃ২৮৪৫, হাসান।)
* সাহায্য কখন আসবে?
আর যেহেতু আলিমুল গায়িব একমাত্র আল্লাহ তায়ালা, সুতরাং আমরা বলতে পারি না যে বিজয় কখোন আসবে? আমরা এও জানি না যে কল্যাণ ও সফলতা কোথায় আছে?? তবে আমরা জানি এবং বিশ্বাস করি যে, এই উম্মাহ বিজয়ী উম্মাহ, এবং এই উম্মাহ কল্যাণ ও সফলতার উম্মাহ।
দ্বীর্ঘকাল পরে হলেও আল্লাহ এই উম্মাহকে সাহায্য করবেন। এটা তার ওয়াদা, আর তিনি কখনো ওয়াদার খেলাফ করেন না। তবে জানা নেই এই কল্যাণ উম্মাহর কোন অংশে রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
"مثل أمتي مثل المطر لا يدرى اوله خير ام آخره".
" আমার উম্মত হলো বৃষ্টির ন্যায়, বলা যায় না তার কোন অংশে কল্যাণ রয়েছে, প্রথম অংশে না শেষ অংশে"। ( সহীহ জামে, হাদীসঃ৫৮৫৪, সহীহ।)
আমাদের জানা নেই যে, আল্লাহ তায়ালা কোন প্রজন্মের দ্বারা এই উম্মাহর দুঃখ–দূর্দশা উন্মোচন করবেন? তবে আমরা জানি যে, এই জগতের মধ্যে আল্লাহ তায়ালার চিরাচরিত নিয়ম হলো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভাষায়ঃ
"لايزال الله يغرس في هذا الدين غرسا يستعملهم فيه بطاعته إلى يوم القيامة".
" আল্লাহ তায়ালা সর্বদা এই দ্বীনের মধ্যে এমন চারা রোপণ করতে থাকবেন যাদেরকে তিনি কিয়ামত পর্যন্ত তাঁর আনুগত্যের সাথে দ্বীনের কাজে ব্যবহার করবেন"।( সহীহ জামে, ৭৬৯২, সহীহ।)
বরকতময় হাদীস ভান্ডারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এমন অনেক সুসংবাদ বর্ণিত হয়েছে যা নিরাশ অন্তরে আশার প্রদীপ জ্বালায়, এবং য়াক্বীনকে শক্তিশালী করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেনঃ
"إنّ الله زوى الارض فرأيت مشارقها و مغاربها و إن أمتي سيبلغ ملكها ما زوى لي منها".
" নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ গোটা পৃথিবীকে আমার জন্য সংকুচিত করেন, ফলে আমি পৃথিবীর পুর্ব থেকে পশ্চিম প্রান্ত দেখতে পাই। আর খুবশীঘ্র আমার উম্মতের রাজত্ব পৃথিবীর ঐ পর্যন্তই পৌঁছে যাবে"।(সহীহ মুসলিম,কিতাবুল ফিতান, হাদীসঃ২৮৮৯)
সুতরাং শত্রুর কূট–কৌশল এবং ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পড়ে এবং নিজেদের চরম উদাসিনতা ও মন্দ কর্মে
র ফলে উম্মাহ আজ যে পরাজয় এবং দুঃখ– দুর্দশার শিকার হয়েছে, তা একটি সাময়িক পরিস্থিতি। উম্মাহর এই সাময়িক দূর্বলতা এবং মন্দ অবস্থা দেখে হতাশ হয়ার কিছু নেই। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো এরশাদ করেছেনঃ
"الإسلام يعلو ولايعلى"
"ইসলাম চির বিজয়ী দ্বীন, কখনো পরাজিত নয়"।( সহীহ জামে, ২৭২৮, হাসান)
তিনি আরো সুসংবাদ দান করেছেন যে, এই দ্বীন প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পেতে থাকবে আর শিরক এবং আহলে শিরক ক্রমশ সংকুচিত হতে থাকবে।
তিনি সাঃ বলেনঃ ঐ সত্ত্বার কসম যার হাতে আমার প্রাণ, দিবারাত্রির আবর্তনে এই দ্বীন পৃথিবীর সেখানে পৌঁছে যাবে যেখানে তারকার আলো পৌঁছে। ( সহীহ আলজামে, হাদীস, ১৭১৬)
পবিত্র হাদীসে এমন আরও অসংখ্য সুসংবাদ বানী বর্ণিত হয়েছে যা হতাশার অন্ধকারকে দূর করে, বেদনাগ্রস্ত হৃদয়ে প্রশান্তি আনে। মেহনতি মানুষের পদ কে সুদৃঢ় করে, আশার প্রভাতকে উজ্জ্বল করে।
তিনি সাঃ বলেনঃ "আমার উম্মতকে সুমহান মর্যাদা, কর্তৃত্ব ক্ষমতার, জমীনে আল্লাহর দ্বীন সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ার এবং বিজয়ের সুসংবাদ দাও"। ( সহীহ আল জামে, হাদীসঃ ২৮৮৫)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও সুসংবাদ দেন যে,
"لن يبرح هذا الدين قائما يقاتل عليه عصابة من المسلمين حتى تقوم الساعة"
" এই দ্বীন সর্বদা কায়েম থাকবে, এই ধারায় যে আমার উম্মতের একটি ক্ষুদ্র দল দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে কিয়ামত পর্যন্ত কিতাল করে যাবে"। ( সহীহ মুসলিম, কিতাবুল ইমারাহ্, অধ্যায় ৫৩, হাদীস, ১৭২/ ১৯২২)
সুতরাং জিহাদ কিয়ামত পর্যন্ত সজীব ও শ্যামল থাকবে এবং দ্বীনের বিজয় ধারাও ততদিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
* আল্লাহ তায়ালার সাহায্যের মানদন্ডঃ
মুমিন বান্দাদের সাহায্যের জন্য যুগে যুগে আল্লাহ তায়ালা যে মানদন্ড ঠিক করেছেন তা আমাদের চিন্তা গত মানদন্ড থেকে ভিন্ন। তিনি দুর্বলকে শক্তিশালী করে যুগে যুগে সবলের উপর বিজয় দান করেছেন। এবং পরিশেষে দুর্বলদেরকেই জমীনের উত্তরাধিকারী বানিয়েছেন। তিনি বলেনঃ
"وَنُرِيدُ أَنْ نَمُنَّ عَلَى الَّذِينَ اسْتُضْعِفُوا فِي الْأَرْضِ وَنَجْعَلَهُمْ أَئِمَّةً وَنَجْعَلَهُمُ الْوَارِثِينَ".( القصص: ٥)
" জমীনে যাদেরকে দুর্বল করে রাখা হয়েছে আমি চাই তাদের প্রতি অনুগ্রহ করতে, তাদেরকে নেতা বানাতে, এবং জমীনে তাদেরকে উত্তরাধিকারী করতে"। (কসাস, ৫)
আল্লাহ তায়ালা এই উম্মাহকে তার দুর্বল শ্রেণীর কারণে সাহায্য করে থাকেন। এবং তিনি দুর্বলতা থেকে শক্তির সঞ্চয় ঘটান।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
" إنما ينصر الله هذه الأمة بضعيفها، بدعوتهم و صلاتهم و اخلاصهم".
" নিশ্চয়ই আল্লাহ এই উম্মাহকে তার দুর্বল শ্রেণীর মাধ্যমে সাহায্য করেন, তাদের দোয়া, সালাত এবং এখলাসের বরকতে"। ( সহীহ নাসায়ী, কিতাবুল জিহাদ, আলবানী)
আজ যে মুসলিমকে হাতকড়া দিয়ে এবং বেড়ি পরিয়ে হাঁকিয়ে নেয়ে যাওয়া হচ্ছে, যে মুসলিম জালিমের কারাগারে বন্দি, যে মুসলিম সরবত্রে বিতাড়িত, যে মুসলিম অসহায়–নিঃস্ব, নিরস্ত্র, তাঁর দোয়া, সালাত এবং এখলাসের বরকতে আল্লাহ তায়ালা এই উম্মাহকে সাহায্য করবেন। চাই দুর্বলতার ধরণ এবং প্রচন্ডতা যেমনি হোক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
"رب اشعث مدفوع بالابواب لو اقسم على الله لابره"
" এমন অনেক লোক রয়েছে যাদের চুলগুলো এলোমেলো এবং আমির উমারার দরবারে যারা বিতাড়িত তারা যখন আল্লাহ তায়ালার নামে কোনো কিছুর শপথ করে আল্লাহ তায়ালা তার শপথকে পূর্ণ করে দেন"। (সহীহ মুসলিম, কিতাবুল বিররি।)
আজ আমরা দেখছি যে শত্রু পক্ষের হাতে জাগতিক সব শক্তি। তারা আমাদের উপর কর্তৃত্ব করছে, এবং ক্ষমতার ছড়ি ঘোরাচ্ছে। কিন্তু আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, এই জগতের পরিচালক হলেন মহান আল্লাহ। তাঁরই হাতে মহা জগতের রাজত্ব ও ক্ষমতা। তিনিই একমাত্র সর্বভূম ক্ষমতার মালিক। এবং তিনিই এই জগতের পট পরিবর্তন কারী। তিনি তাঁর মুমিন বান্দাদের প্রতি গাফেল নন। এবং তিনি তাঁর শত্রুদের কৃতকর্মের সম্পর্কে বেখবর নন। তিনি মুমিনদের অপমান লাঞ্ছনাকে স্থায়ী হতে দেবেন না, এবং মুমিনদের দুর্বল অবস্থাকে দ্বীর্ঘ করবেন না। তিনি অবশ্যই এই উম্মাহর হারানো শান–শাওকাত ফিরিয়ে দেবেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
"الميزان بيد الرحمن، يرفع اقواما و يضع آخرين"
" মানদন্ড আল্লাহর হাতে, তিনি কোন সম্প্রদায়কে উঁচু করেন আবার কোন সম্প্রদায়কে নিচু করেন"।( সহীহ আল জামে, হাদীসঃ ৬৮৩৭)
* কাদের মাধ্যমে সাহায্য এবং বিজয় আসবে?
আল্লাহ তায়ালা এই উম্মাহকে সত্য ও ন্যায়ের পথে চালানোর জন্য দুটি ধারা অব্যাহত রেখেছেন।
১/ প্রত্যেক প্রজন্মের মধ্যে এমন কিছু ব্যাক্তিত্যের আবির্ভাব ঘটান, যাঁরা সাবিকূন তথা সত্যের পথে অগ্রগামী,
" ولا يخافون لومة لائم"
এবং তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত নন।
যাদের মাধ্যমে আল্লাহ্ তায়ালা এই উম্মাহর অন্তরে য়াক্বীন– আস্থা এবং বীরত্বের বীজ অংকুরিত করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
" في كل قرن من امتي سابقون"
" আমার উম্মাহর প্রত্যেক প্রজন্মের মধ্যে সাবিকূন, তথা সত্যের পথে অগ্রগামী দলের উপস্থিতিতি থাকবে"। ( সহীহ আল জামে, হাদীসঃ ৪২৬৭, হাসান।)
২/ প্রত্যেক শতাব্দীতে একজন মুজাদ্দিদের আগমন, যিনি উম্মাহকে হিদায়াত এবং সফলতার পথে পরিচালিত করবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
"إنّ الله يبعث لهذه الأمة على رأس كل مائة من يجدد لها دينها"
" নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা এই উম্মাহর জন্য প্রত্যেক শতাব্দীতে এমন ব্যক্তিকে পাঠাবেন, যে উম্মাহর দ্বীনকে সংস্কার করবে"। ( সহীহ সুনানে আবী দাউদ, কিতাবুল মালাহিম, অধ্যায়ঃ১ , আলবানী।)
সুতরাং এই উম্মাহর বিজয় ও সফলতা সুনিশ্চিত। হয়তো এই বিজয় সত্যের পথে অগ্রগামী কাফেলার দ্বারা অর্জিত হবে, অথবা কোন মুজাদ্দিদের হাতে সাধিত হব।
* দ্বীন ও উম্মাহর শত্রুদের ধ্বংস অবধারিতঃ
ইসলামের সকল শত্রুরা আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণার মধ্য রয়েছে। এবং অনিবার্যভাবে তারা ধ্বংসগহ্বরের কিনারায় দাঁড়িয়ে,যে কোনো মুহূর্তে তাদের অস্তিত্বের বিনাশ ঘটতে পারে। আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
" و العصر إن الإنسان لفي خسر، إلا الذين آمنوا وعملوا الصالحات، و تواصوا بالحق و تواصوا بالصبر".
" কসম সময়ের, নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত, কিন্তু তারা নয় যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের"।
সুতরাং আজ যারা ঈমান ও ইসলামের পথকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে, ঈমানদারগণের সাথে জুলুম অন্যায়কে বৈধতা দান করেছে এবং সৎকর্মশীলদের সাথে প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে, তাদের ধ্বংস অনিবার্য।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ
"من عادى لي وليا فقد آذنته بالحرب"
" যে ব্যক্তি আমার কোনো ওলী(বন্ধুর) সাথে শত্রুতা করল আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলাম"। ( সহীহ বুখারী, রিক্বাক্ব অধ্যায়।)
* সাহায্যপ্রাপ্ত এবং বিজয়ী হতে আমাদের যা করণীয়ঃ
১) ঈমানের পরিশুদ্ধতা,
২) সৎকাজে অগ্রগামিতা,
৩) পরস্পরকে সত্যের তাকীদ করা,
৪) সবরের তাকীদ করা,
৫) রিযা বিলক্বাযা তথা আল্লাহর সিদ্ধান্তে অটল ও সন্তুষ্ট থাকার জন্য তাকীদ করা।
৬) সাহায্য ও বিজয়ের সুসংবাদ শুনিয়ে মনোবল দৃঢ় করা,
৮) আল্লাহর প্রতি য়াক্বীন, তাওয়াক্কুল এবং আস্থাকে কাজে পরিণত করা। এক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা আমাদের মধ্যে আমলীভাবে যে য়াক্বীন ও আস্থাকে দেখতে চান তা হলো এমন য়াক্বীন ও আস্থা যা হযরত মূসা আঃ এর মধ্যে ঘটেছিল। তিনি আল্লাহ তায়ালার কথা এবং ওয়াদার প্রতি য়াক্বীন রেখে নিজের দুগ্ধপায়ী সন্তানকে সাগরে ভাসিয়ে দিলেন, আর আল্লাহ তাঁর ওয়াদা কে সত্যায়ন করলেন। শিশুটির শত্রু ফেরাউনের হাতেই তাঁর লালন পালন সম্পন্ন করালেন।তিনি তাঁর কুদরতের বিস্ময় প্রকাশ করলেন। আর যুগ যুগ ধরে এভাবেই তাঁর কুদরতের বিস্ময় অব্যাহত রয়েছে।
৯) অন্তর থেকে আল্লাহ তায়ালার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সংশয়–নিরাশাকে মুছে ফেলা।
১০) আর য়াক্বীন–আস্থার দৃঢ়তা আসবে তাক্বদীরের প্রতি গভীর বিশ্বাসের দ্বারা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ" প্রত্যেক জিনিসের একটি বাস্তবতা রয়েছে, কোনো ব্যক্তি তার ঈমানের বাস্তবতা অর্জন করতে পারবে না যদি না সে এই য়াক্বীন করে যে, তাকে যা পৌঁছার তা কখনো তাকে ভুল করবে না, আর যা তাকে ভুল করার তা কখনো তাকে স্পর্শ করবে না"।(সহীহ আল জামে, হাদীস নংঃ২১৫০)
১১) আল্লাহ তায়ালার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তাড়াহুড়ো না করা। আল্লাহ তায়ালা কখনো ওয়াদার খেলাফ করেন না, তিনি তা থেকে মহান এবং পবিত্র। তবে তাঁর ওয়াদা প্রতিফলিত হয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ আছে যা কোন তাড়াহুড়ো কারীর তাড়াহুড়োর কারণে তরান্বিত হবে না এবং কোনো খায়েশপুজারীর অলসতার কারণে বিলম্বিত হবে না। এক্ষেত্রে হযরত ওমর বিন আব্দুল আজিজ রহঃ এই দোয়াটি পড়তেনঃ
"اللهم رضني بقضائك وبارك لي في قدرك حتى لا احب تعجيل شئ اخرته و لا تأخير شئ عجلته"
১২) হতাশার অন্ধকার ছিন্ন করে আশা–ভরসার মশাল হাতে নিয়ে দৃঢ়তার সাথে দাওয়াত এবং জিহাদ কে সামনে এগিয়ে নেয়া। চাই আমরা বিজয় আনতে পারি বা না পারি। আমাদের দাওয়াত ও জিহাদ সত্বেও বিজয় আনতে না পারলে সে কারণে আমাদেরকে দোষারোপ করা হবে না যে, কেন আমরা বিজয় আনতে পারিনি??! হ্যাঁ আমাদেরকে দোষারোপ করা হবে যখন আমরা প্রস্তুতি ও উপকরণ গ্রহণ করতে ত্রুটি করব, এবং নিজেদের শক্তি সামর্থ ব্যয়ে কার্পণ্যতা করব।
* আল্লাহ তায়ালার কাছে জীবিতদের জন্য তাদের শহীদ ভাইদের আবেদনঃ
শহীদগণ যখন তাঁদের জীবিত মুজাহিদ সাথীদের মধ্যে দুর্বলতা দেখেন এবং তাদেরকে জিহাদের ফলাফলের প্রতি হতাশায় নিমজ্জিত দেখেন তখন তাঁরা বলেনঃ
" من يبلغ عنا أنا احياء في الجنة نرزق لئلا يزهدوا في الجهاد و لا ينكلوا عند الحرب، فقال الله سبحانه: أنا أبلغهم عنكم."
" কে আছে আমাদের পক্ষ থেকে খবর পৌঁছে দেয়ার জন্য যে আমরা জীবিত, জান্নাতের
মধ্যে আমাদেরকে খাবার দেয়া হয়, যাতে তারা জিহাদ থেকে বিমুখ না হয় এবং রণাঙ্গনে পিঠ প্রদর্শন না করে??! জবাবে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ " আমিই তাদের কাছে তোমাদের খবর পৌঁছে দেব"। ( সহীহ সুনানে আবীর দাউদ ,আলবানী, কিতাবুল জিহাদ, অধ্যায়ঃ২৭, হাদীস নং ২১৯৯/২৫২০)
সুতরাং অন্ধকার রজনী দূর হয়ে অবশ্যই দিবসের উদয় ঘটবে, নিশ্চয়ই একদিন এই জীমন আবর্জনা মুক্ত হবে এবং তার বুকে মানবতার কল্যাণ প্রতিষ্ঠিত হবে। নিঃসন্দেহে রাব্বুল আলামীনের সিদ্ধান্ত: "শেষ পরিণাম মুত্তাক্বীদের জন্য" একদিন অবশ্যই প্রতিফলিত হবে।
* আলোচনার সারসংক্ষেপঃ
= য়াক্বীনের অধিকারী ব্যক্তি সর্ব অবস্থায় কেবলমাত্র আল্লাহ তায়ালারি উপর আস্থা রাখবে, চাই জমীন যতই সংকীর্ণ হয়ে যাক না কেন।
= সবর এবং য়াক্বীনের দ্বারাই দ্বীনের নেতৃত্ব অর্জন হয়।
= য়াক্বীন হলো বান্দার সর্বশ্রেষ্ঠ গুণ, এবং য়াক্বীনের দ্বারাই দ্বীন ও উম্মাহর বিজয় আসবে।
= আল্লাহ তায়ালা কিয়ামত পর্যন্ত এই দ্বীন ও উম্মাহর সাহায্যের জন্য উম্মাহর মধ্যে একটি সাহায্যপ্রাপ্ত দল রাখবেন, যারা দ্বীনের জন্য লড়াই করে যাবে।
= উম্মাহর কল্যাণ ও সফলতা অবশ্যম্ভাবী।
# আল্লাহ তায়ালার সাহায্যের প্রতিশ্রুতি;
ক) উম্মাহর রাজত্ব পৃথিবীর পুর্ব–পশ্চিমে বিস্তৃত হবে।
খ) ইসলাম চির বিজয়ী দ্বীন কখনো পরাজিত নয়। ইসলাম প্রতিনিয়ত সম্প্রসারিত হবে, কুফুর–শিরক ক্রমশ হ্রাস পাবে।
গ) যুগের পরিবর্তন করণঃ চিরাচরিত নীতি অনুযায়ী আল্লাহ তায়ালা পুনরায় উম্মাহর মর্যাদাকে সমুন্নত করবেন।
ঘ) যুগে যুগে সত্য পথের অগ্রগামী কাফেলার উপস্থিতি, এবং প্রতি শতাব্দীতে মুজাদ্দিদের আগমন।
ঙ) দ্বীন ও উম্মাহর শত্রুদের ধ্বংস অনিবার্য।
চ) আল্লাহ তায়ালা এই উম্মাহকে দুর্বলদের দ্বারা সাহায্য করেন।
= বিজয় অবশ্যম্ভাবী, কিন্তু মানুষ তাড়াহুড়ো করে, এবং সংশয় ও সন্দেহ পোষণ করে এবং তাক্বদীরের প্রতি তাদের ঈমান খুব দুর্বল।
= সাহায্যের প্রতিশ্রুতি অবশ্যই প্রতিফলিত হবে কিন্তু তার সময় আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক নির্ধারিত।
= সত্যের অনুসারীদের স্বল্পতা এবং দুর্বলতা কোনো সমস্যা নয়, সমস্যা হলো উপায় উপকরণ গ্রহণ করতে ত্রুটি করা।
و ما النصر الا من عندالله، و لا حول و لا قوة إلا بالله العلي العظيم، استغفرالله و اتوب اليه.
Comment