Announcement

Collapse
No announcement yet.

আমীর-উমারা ও জিম্মাদারগণের প্রতি কিছু উপদেশ ।। পর্ব-২ ।। আমীরুল মুমিনীন শাইখ হিবাতুল্লাহ আখুন্দযাদাহ হাফিযাহুল্লাহ

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • আমীর-উমারা ও জিম্মাদারগণের প্রতি কিছু উপদেশ ।। পর্ব-২ ।। আমীরুল মুমিনীন শাইখ হিবাতুল্লাহ আখুন্দযাদাহ হাফিযাহুল্লাহ

    আমীরুল মুমিনীন শাইখ হিবাতুল্লাহ আখুন্দযাদাহ হাফিযাহুল্লাহ’র পক্ষ থেকে

    আমীর-উমারা ও জিম্মাদারগণের প্রতি কিছু উপদেশ

    পর্ব-২



    (৩) মুজাহিদীন ও শহীদদের পরিবারের প্রতি খেয়াল রাখা

    হযরত আনাস রাযি. বর্ণনা করেন-
    রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় হযরত উম্মে সুলাইম রাযি. ব্যতিত অন্য কারও বাড়িতে যেতেন না। জনৈক সাহাবি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে উম্মে সুলাইমের বাড়িতে ঘনঘন যাওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলেন। প্রতুত্তরে তিনি বলেন, তাকে নিয়ে আমি চিন্তিত হই, কারণ তাঁর ভাই আমার সাথে যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেছিলেন।”

    হযরত উম্মে সুলাইম রাযি. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দুধ খালা ছিলেন। তাঁর ভাই হারাম বিন মিলহান রাযি. বিরে মউনার ঘটনায় শাহাদাত বরণ করেছিলেন।
    সুতরাং আমীরের জন্য তার সাথীদের ও তাদের পরিবারের খবরাখবর রাখা, দেখাশোনা করা অবশ্য কর্তব্য। তাদের প্রয়োজন পূর্ণ করবে। (বিশেষ করে) যিনি ইসলামি ইমারাতের পক্ষে শহীদ হয়েছেন, তার পরিবারের দেখাশুনা করা সেই আমীরের দায়িত্ব। আমীরের এই বদান্যতায় জিহাদের প্রতি মুজাহিদদের আগ্রহ-ভালোবাসা আরও বৃদ্ধি পায়। আল্লাহর রাস্তায় নিজেদের জান-মাল কুরবানি করা সহজ হয়।

    (৪) গোত্রপ্রীতি ও তার অনিষ্টতা

    মহান আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
    يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُم مِّن ذَكَرٍ وَأُنثَىٰ وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا ۚ إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ﴿١٣﴾
    হে মানব, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হও। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেযগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন।“(সূরা হুজুরাত -১৩)

    অর্থাৎ, বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করার উদ্দেশ্য একে অপরের উপর প্রাধান্যতার জন্যে নয়; বরং এজন্য যাতে মানুষের জন্য দিয়্যাত আদায় করা ও মিরাছ বণ্টন করা সহজ হয়। এ কারণে আল্লাহর কাছে সর্বাধিক মর্যাদাবান ঐ ব্যক্তি, যে সর্বাধিক মুত্তাকী ও পরহেযগার। সুতরাং নিজ বংশ ও গোত্র নিয়ে গর্ব ও বড়াই করা সম্পূর্ণ নাজায়েজ।

    হযরত উকবা বিন আমের রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-
    নসব বা বংশ এমন কোনো জিনিস নয়, যার কারণে অন্যকে লাঞ্ছিত করা হবে। তোমরা সবাই তো আদম আলাইহিস সালাম এর সন্তান। যেমন- এক সা অপর সা-র বরাবর হয়, যা দিয়ে তোমরা পরিমাপ করো। সেখানে যেমন একটি অপরটির সাথে ভিন্নতা নেই। তেমনই মানুষও, পরস্পরের মধ্যে তাকওয়া ও দ্বীন ব্যতিত অন্য কিছুর ভিন্নতা নেই। অন্য কিছুর মাধ্যমে কেউ কারও উপর প্রাধান্যতা লাভ করবে না। মানুষ সর্বাধিক নিকৃষ্ট হওয়ার জন্যে অপরের কটুক্তি করা, গালি-গালাজ করা বা বেহুদা কথা বলা ও কৃপন হওয়াই যথেষ্ট।"

    ইমাম যুহরী রহ. বর্ণনা করেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যার অন্তরে যেই পরিমাণ সাম্প্রদায়িকতা বিদ্যমান থাকে, তার অন্তর থেকে সেই পরিমাণ ঈমান বের হয়ে যায়।

    হযরত ওয়াছেলা বিন আসকা রাযি. বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সাম্প্রদায়িকতা তথা জাহিলিয়্যাত কি? তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িকতা হলো, সীমালঙ্ঘনের পরও(অন্যায় করার পরও) নিজ গোত্র ও দলকে সাহায্য-সহযোগিতা করা।(আবু দাউদ)

    হযরত ইবনে মাসউদ রাযি. বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
    যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে নিজ গোত্রের সাহায্য-সহযোগিতা করে, সে ঐ উটের নামান্তর, যে কোনো কূপে পড়ে গেছে, অতঃপর তার লেজ ধরে তাকে উদ্ধার করা হয়।"

    অর্থাৎ, সে ব্যক্তি নিজেকে এমনভাবে ধ্বংসের অতল গহ্বরে নিক্ষেপ করে, যেমন একটি উট কূপে পড়ে যাওয়ার পর উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়েছে তার লেজ ধরে। যেহেতু এইভাবে উটকে বাঁচানো অসম্ভব। সুতরাং উটের মতো এই ব্যক্তিও ধ্বংস থেকে পরিত্রাণ পাওয়া অসম্ভব।

    (৫) একতা ও ঐক্য

    নিজেদের কাজে ঐক্যবদ্ধ-ঐক্যমত থাকা মুজাহিদদের জন্য আবশ্যক। (সুতরাং) একতাকে আঁকড়ে ধরুন। একতার বন্ধনকে দৃঢ় করুন। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
    وَاعۡتَصِمُوۡا بِحَبۡلِ اللّٰه جَمِیۡعًا وَّلَا تَفَرَّقُوۡا۪ وَاذۡکُرُوۡا نِعۡمَتَ اللّٰه عَلَیۡکُمۡ اِذۡ کُنۡتُمۡ اَعۡدَآءً فَاَلَّفَ بَیۡنَ قُلُوۡبِکُمۡ فَاَصۡبَحۡتُمۡ بِنِعۡمَتِه اِخۡوَانًاۚ وَکُنۡتُمۡ عَلٰی شَفَا حُفۡرَۃٍ مِّنَ النَّارِ فَاَنۡقَذَکُمۡ مِّنۡہَاؕ کَذٰلِکَ یُبَیِّنُ اللّٰہُ لَکُمۡ اٰیٰتِہٖ لَعَلَّکُمۡ تَہۡتَدُوۡنَ
    "আল্লাহর রশিকে (অর্থাৎ তাঁর দ্বীন ও কিতাবকে) দৃঢ়ভাবে ধরে রাখো। পরস্পরে বিভেদ করো না। আল্লাহ তোমাদের প্রতি যে অনুগ্রহ করেছেন তা স্মরণ রাখো। একটা সময় ছিল, যখন তোমরা একে অন্যের শত্রু ছিলে। অতঃপর আল্লাহ তোমাদের অন্তরসমূহকে জুড়ে দিলেন। ফলে তাঁর অনুগ্রহে তোমরা ভাই-ভাই হয়ে গেলে। তোমরা অগ্নিকুণ্ডের প্রান্তে ছিলে। আল্লাহ তোমাদেরকে (ইসলামের মাধ্যমে) সেখান থেকে মুক্তি দিলেন। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় নিদর্শনসমূহ সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা সঠিক পথে চলে আস।" (সূরা আলে ইমরান: ১০৩)

    কোনো বিষয়ে মতানৈক্যের শিকার না হওয়া মুজাহিদদের জন্য অপরিহার্য একটি বিষয়। যদি কোনো শরয়ী বিষয়ে মতানৈক্য হয়, তাহলে উলামায়ে কেরামের শরণাপন্ন হবে। যদি কোনো রাজনৈতিক বিষয়ে মতানৈক্য হয়, তাহলে আমীর-উমারার শরণাপন্ন হবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলার বাণী-
    وَمَا أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ إِلَّا رِجَالًا نُّوحِي إِلَيْهِمْ ۚ فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ﴿٤٣﴾
    আপনার পূর্বেও আমি প্রত্যাদেশসহ মানবকেই তাদের প্রতি প্রেরণ করেছিলাম অতএব জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে।” (সূরা আন নাহল: ৪৩)

    অন্য একটি আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
    یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَطِیۡعُوا اللّٰہَ وَاَطِیۡعُوا الرَّسُوۡلَ وَاُولِی الۡاَمۡرِ مِنۡکُمۡۚ فَاِنۡ تَنَازَعۡتُمۡ فِیۡ شَیۡءٍ فَرُدُّوۡہُ اِلَی اللّٰہِ وَالرَّسُوۡلِ اِنۡ کُنۡتُمۡ تُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَالۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِؕ ذٰلِکَ خَیۡرٌ وَّاَحۡسَنُ تَاۡوِیۡلًا
    হে মুমিনগণ! তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, তাঁর রাসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা এখতিয়ারধারী তাদের। অতঃপর তোমাদের মধ্যে যদি কোনও বিষয়ে বিরোধ দেখা দেয়, তবে তোমরা আল্লাহ ও পরকালে সত্যিকারের বিশ্বাসী হয়ে থাকলে সে বিষয়কে আল্লাহ ও রাসূলের উপর ন্যস্ত করো। এটাই উত্তম এবং পরিণামে প্রকৃষ্টতর।” (সূরা নিসা: ৫৯)

    মুজাহিদদের মাঝে মতানৈক্য তাদের শক্তি খর্ব করে দেয়। শত্রুর উপর তাদের যে প্রভাব থাকে, তা নিঃশেষ করে দেয়। যেমনটি আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
    وَاَطِیۡعُوا اللّٰہَ وَرَسُوۡلَہٗ وَلَا تَنَازَعُوۡا فَتَفۡشَلُوۡا وَتَذۡہَبَ رِیۡحُکُمۡ وَاصۡبِرُوۡاؕ اِنَّ اللّٰہَ مَعَ الصّٰبِرِیۡنَ
    এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করো। পরস্পরে কলহ করো না, অন্যথায় তোমরা দুর্বল হয়ে পড়বে এবং তোমাদের হাওয়া (প্রভাব) বিলুপ্ত হবে। আর ধৈর্য ধারণ করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।(সূরা আনফাল: ৪৬)


    (আমাদের দায়িত্ব তো কেবল স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেওয়া!)


    সূত্র: নাওয়ায়ে গাজওয়ায়ে হিন্দ ম্যাগাজিন থেকে অনূদিত


    অনুবাদক:

    husam
    জুনিয়র মেম্বার, দাওয়াহ ইলাল্লাহু ফোরাম


    আইডি লিঙ্ক: https://82.221.139.217/member/32761-husam
    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

  • #2
    প্রথম পর্বের লিঙ্ক:


    “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

    Comment


    • #3
      thank's for allah.
      আল্লাহ ভাইদের সুস্থ রাখুন।আ-মীন ইয়া রব

      Comment

      Working...
      X