Announcement

Collapse
No announcement yet.

বোন তোমার নারীত্বের আঁচল এত সুন্দর কেন? ১৬ তম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • বোন তোমার নারীত্বের আঁচল এত সুন্দর কেন? ১৬ তম পর্ব

    বোন তোমার নারীত্বের আঁচল এত সুন্দর কেন?
    ১৬ তম পর্ব

    প্রিয় বোন আমার!
    ইসলাহী ফিকিরের সহায়ক হচ্ছে একাগ্রতা বা একসূয়ীর মর্মস্পর্শ। অপরদিকে 'নফসানিয়্যাত-র' সহায়ক হচ্ছে ইনতেশার অর্থাৎ অস্থিরতা বা বহুমুখীতার নানান চাপ। একটা সময় ছিলো আমাদের সালাফ নারীরা এগুলোর অর্জন ও বর্জনের জন্য আল্লাহওয়ালাদের শরণাপন্ন হতেন।
    ফিকিরমান্দদের কাছে গিয়ে সংশয় নিরসন করে
    নিতেন। কিন্তু যুগের আবর্তনে পাঞ্জাবি আর তাসবীহওয়ালা ব্যক্তিটিই হয়ে উঠেছেন ঘরের
    ফিকিরমান্দ ব্যক্তি। লম্বা জোব্বা আর চাপ দাঁড়িওয়ালা ব্যক্তিটিই হয়ে উঠেছেন সংশয় নিরসনের সবচেয়ে উপযোগী সমাধানকারী।

    ইসলাম কি, ইতিহাস কি, এমন ব্যক্তিদের ইসলাহের মাপকাঠি হিসেবে সঙ্গায়িত করেছেন কিনা তা আমার জানা নেই। মুখে খই আর পাত্রে বেশি দই থাকলেই সে পেটুক হয়ে যায় না। উপরোক্ত সংঙ্গাগুলোও ঠিক সেই সেই, যদি মানদন্ডের মান সঠিক থাকে। উপরোক্ত উদাহরণগুলোও সতেরো-কোরি, উঁনিশ আর বিশ নয়। সুতরাং এদের থেকে কি একাগ্রতা বা একসূয়ীর মর্মস্পর্শ অর্জনের আশা করা যায়? অস্থিরতা বা বহুমুখীতার নানান চাপ দূর করার কল্পনা করা যায়?

    অসম্ভব শব্দটা ষোলকলায় পরিপূর্ণ হবে যদি না একসূয়ীর অর্জন কোনো মুমিন মুজাহিদ থেকে না নেয়া হয়! হাদিসে পাওয়া যায়-যখন তোমাদের মাঝে কোনো বিষয়ে ইখতিলাফ দেখা দেয় তখন তোমরা আহলে ছুগুরদের শরণাপন্ন হও। কারণ হাদিসের ব্যাখায় পাওয়া যায় আহলে ছুগুররাই হলো উম্মাহর উত্তম হিতাকাঙ্ক্ষী। তাঁদের মত সমাধান অন্যরা দিতে পারলেও সংশ্লিষ্ট বিষয়ের মধ্যে সন্দেহ থেকে যায়। আর সন্দেহ দূর করতে, কল্যাণকর বিষয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাতে, উম্মাহর মাঝে মেলবন্ধন সৃষ্টি করতে তাঁরাই সবচে বেশি তৎপর ও বাস্তবমুখী।

    বোন আমার!
    আহলে ছুগুর যারা তাঁরা কি তোমার মত কোন একজন বোনের ঔরসজাত সন্তান নয়? তাহলে কেন তোমরা তাঁদেরকে তোমাদের অস্তিত্ব ভাবো না? কেন তোমরা তাঁদের সাথে রুহানিয়্যাত গড়ে তুলো না? তোমাদের এই সন্তানরাই তো উম্মাহর জান-মালের আমানতদার। এতিম, অসহায়দের আপন অভিভাবক। দ্বীন রক্ষার দরিয়ায় শক্ত প্রাচীর। জান-শান কুরবানের তালিকায় সাবিকে আওয়াল। সময়ে সুযোগে অস্ত্র উঁচিয়ে তোলা যাদের কাজ। মুমিন-মুনাফিকের রঙ্গতার পার্থক্য করা যাঁদের নিত্য আচরণ। এ সবকিছু উম্মাহর শান্তির জন্য, আল্লাহ রাসূলের রেযামন্দির জন্য। তাহলে কেন তোমরা তাঁদের সাথে বারাআতের মত ঝুকিপূর্ণ কাজে পা দিতে যাচ্ছো?

    বোন আমার! তোমার সন্তানরা কিন্তু আসমানী পরশের শক্ত হালত ধরে আছে, যার দরুন মারাত্মক আঘাতেও দিলে ক্ষত সৃষ্টি হয়না বরং উন্মাদনা মনে করে শিহরিত হয়ে উঠে। প্রত্যেকটা আঘাতকে পিঁপড়ার কামড়ের ন্যায় মনে করে হাসি মুখে বরণ করে নেয়। কারণ তা যে মালিকের প্রিয় পথ, প্রিয় হাবিবের শ্রেষ্ঠ মত। তাই তুমি যখন তাঁদের নিয়ে ভাবতে শুরু করবে তখন তাঁদের কাছে জীবন মনে হবে ফেনাতুল্য আর রবের সন্তুষ্টি হয়ে উঠবে আকাশতুল্য, যার পানে চেয়ে থাকে প্রতিজন আদম, একটু ছোঁবার জন্য, একটিবার জয় করার জন্য।

    প্রিয় বোন আমার!
    কুরআনুল কারীমে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা
    সকল মুসলিমকে নেককার, সালিহদের সংস্পর্শে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। আর তোমরা হলে তাদের কারিগর, তোমরাই যদি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে হিসেব তো মিলবে না। তোমরাই যদি তাদের রক্ষণশীল না হয়ে উল্টো সুর ধরো, হাঁটবো না তাদের পথে, তাহলে জাতির হাল কোন দিকে যাবে! অনন্ত জান্নাতের দিকে না চিরস্থায়ী ধ্বংসের গর্তে! ভূপৃষ্ঠে এনে তাঁদের থেকে যদি মোনাফাই নিতে না পারি তাহলে ভূমন্ডলে তাঁদের আনাটাই ষোলকলায় ভুল। কষতে হবে অজানা গণিতের সূত্র। পরিশেষে সবই ঠিক কিন্তু ভাগফল বে-ঠিক। সব পাথেয় পূর্ণ, অপূর্ণ শুধু নভোমন্ডলের যাওয়ার পথ। কারণ সব ঘাটে জল খেয়ে অদৃশ্য জলের লালসা হারিয়ে ফেলেছি, তাই তো!

    আসলেই কি আমাদের সালাফ নারীরা এমন অসংহতির উল্টো পিঠে হেঁটেছেন? শোন তাহলে- মারিয়া শাতজাকি-বোখারার পান্থপথের শেষ শহরে যার জন্ম। কিন্তু আজন্ম হয়ে আছেন পুরো নারী জাতির উদাহরণ হয়ে। ইলম আমল উন্নত ফিকির আফকারের অনুস্বারী হয়ে। সবাই তাকে শাতজাকি মুহাদ্দিসা হিসেবে চিনলেও তিনি নিজের হৃদযন্ত্রকে সপে দিয়েছিলেন কিছু মুমিন মুজাহিদ ভাইদের কাছে। পরাশক্তি আর পরামর্শদাতা দুটোই ভাবতেন শাহজাদাদের। সামান্য থেকে নূন্যতম মাশওয়ারার জন্য তাঁদের দরবারে চিরকুট পাঠাতেন। হৃদয়ের সবটুকু আবেগ ঢেলে দিয়ে বলতেন-বদরী আর উহুদের ঝান্ডাধারী বাহিনীর কদর করা এ উম্মাহর মায়েদের কর্তব্য। আর আমিও তাদের একজন।

    পৃষ্ঠাটা উল্টাতেই চোখ ধাঁধিয়ে গেলো-বোন মারিয়া শাতজাকির জীবন গল্পের টুকরো টুকরো খন্ডবিখন্ড অংশগুলো পড়ে। মনে হলো এত জীবন নয়! পুড়িয়ে ছাই আর শুকিয়ে শুঁটকি হবার মতই।
    মরুবনের মাঝে সাহসী পথিকের সাথে হঠাৎ দেখা মেলবার মতই। থলিতে একটু পানি, কাঁধে একটি গামছা, পায়ে দু-ফিতার একজোড়া জুতা, শরীরে জীর্ণশীর্ণ পোশাক কিন্তু ছলছল চাহনির ধরণ আর নম্র আচরণ বলে দেয়-সেতো আস্তো এক কলিজা। বোন মারিয়া শাতজাকি তারচে বড় পথিক ছিলেন। সতের নাম্বার পর্বটা না হয় তাঁর গল্প দিয়েই আঁকবো ইনশাআল্লাহ।




  • #2
    মাশাআল্লহ খুবই চমৎকার উপস্থাপন করেছেন ভাইজান! আপনার লেখাটা পড়ে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। আমাদের সকলের জন্যই এতে শিক্ষা রয়েছে। আশা করি এভাবেই আমাদের উপকৃত করে যাবেন ইনশাআল্লাহ।

    আগের পর্ব গুলোর লিংক ও যদি নতুন পর্ব গুলোর নিচে বা প্রথম কমেন্টে দিয়ে দেন তাহলে খুব ভালো হতো।

    আল্লাহ তা'য়ালা আপনার লিখনিতে বারাকাহ দান করুন! আপনার জীবনে বারাকাহ দান করুন! আপনার মেহনত গুলোকে ক্ববুল করুন ও শাহাদাতের মহান নিয়ামতে আপনাকে ধন্য করুন আমিন!
    হয় শাহাদাহ নাহয় বিজয়।

    Comment


    • #3
      প্রিয় ভাই! সতের নাম্বার পর্বের জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষমান ইনশাআল্লাহ.. আল্লাহ তা'য়ালা আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করুন..

      Comment

      Working...
      X