Announcement

Collapse
No announcement yet.

বোন তোমার নারীত্বের আঁচল এত সুন্দর কেন? ১৮তম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • বোন তোমার নারীত্বের আঁচল এত সুন্দর কেন? ১৮তম পর্ব

    বোন তোমার নারীত্বের আঁচল এত সুন্দর কেন?
    ১৮তম পর্ব

    প্রিয় বোন আমার!
    সরলতার সঙ্গায় জীবনটা সাজানো চারটিখানি কথা নয়। কারণ এই অদৃশ্য বৃত্তের রেখা ধারণ করা হয় সচ্ছ ইলমী আমল দ্বারা। বলো তুমি-এমন ক'জন আছেন যারা সঙ্গার মান ঠিক ধরে রাখতে পারে? পূর্ব সালাফী নারীদের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি-জমিনের মুগ্ধতা আর স্বার্থতা যখন মানবের মনে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে তখন তার লাগাম টেনে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে যে মানব, সেই সরলতার সিঁড়িতে পা দিতে শুরু করেছে মাত্র। শাইখ খালেদ মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ প্রায়দিনই বলতেন-সরল বনে যাও তবে বোকা বনো না।

    উস্তাদ তাহলে সরলতার সঙ্গা দিন? শোন বাবা-দ্বীনের এমন অনেক বিধান আছে যেগুলো অঙ্গ-পতঙ্গের মত আলাদা আলাদা, এগুলোকে জোড়া লাগিয়ে একটি কাঠামো তৈরি করতে পারে যে সেই তার সঙ্গা। দ্বীনের মাখরায বুঝে সঠিক স্থানে প্রয়োগ করতে পারে যে সেই তার পরিচয়। বিধানের ক্ষেত্রে আ'লা গাইরে আ'লার স্তর বিন্যাস করতে পারে যে সেই তার হকদার। কালের ঘূর্ণাঝর অনুযায়ী সমাধান আনতে পারে যে সেই এ বৃত্তের পূর্ণ সমঝদার। আর এর বৃত্তেরই চৌকস একজন পথচারী তার বাবা ফখরুন নাবিদ রাহিমাহুল্লাহ

    যিনি ছিলেন সরলরেখার একজন জগদ্বিখ্যাত ক্যালোগ্রাফার। চিত্রয়ান ক্ষেত্রে যতটা না এগিয়ে তারচে বেশি আগানো ছিলেন জীবন নামক সরলতারেখার সঙ্গায়। এ বৃত্তের সমাধানগুলো শৈল্পিক কারুকার্যের চেয়ে অতিসুন্দর করে পরিবার ও সমাজের মাঝে অঙ্কনের চেষ্টা করতেন। শহরের আশপাশের বিশিষ্ট আলেমরা পর্যন্ত তাঁর সোহবতে দীর্ঘক্ষণ সময় কাটাতে পছন্দ করতেন। তাঁর আত্মজার জ্ঞানের নেশা, বিদ্যার প্রতি অধ্যয়ন, বিধান পালনের প্রতি উত্তাল অনুরাগ দেখে অনেক বোনরা পর্যন্ত জ্ঞান সাধনে, বিধান পালনে অনুপ্রাণিত হয়ে পড়েছিলেন।[১]

    সমকালীন বড় বড় মাশায়েখরা পর্যন্ত তাঁর কথা ও ভাষার যাদুময়তায় আকৃষ্ট হয়ে পড়তেন। অবশেষে তারা বলতে বাধ্য হয়েছেন-ফখরুন নাবিদ শুধু একজন জ্ঞান তাপস-ই ছিলেন না, চুপিসারে ময়দানের একজন বিচক্ষণ, বিদগ্ধ গবেষকও ছিলেন। বয়স তখনো তাঁর পয়তাল্লিশ পেরোয়নি। শত্রুদের ঘাঁয়ে জ্বালাপোঁড়া শুরু হয়ে গিয়েছিলো।
    ক্ষুধার্ত নেকড়ের ন্যায় ওঁৎপেতে বসে থাকতো সারাক্ষণ, কোনো ক্ষতি করা যায়না কিনা। যাক! আল্লাহর মানশা ছিলো! তাঁকে মসজিদে যাওয়া অবস্থায় শহীদ করে দেয়া হলো।

    এর মধ্যেই মেয়ে মারিয়া শাতজাকি আঁকাআকিতে বেশ পাকাপোক্ত হয়ে গিয়েছে। হাদিসশাস্ত্রের ব্যাপারে অসাধারণ জ্ঞান রাখে। অবিকল বাবার প্রতিচ্ছবি বললে একটুও ভুল হবে না বরং ধাঁধা খাওয়া হবে। যা পুরুষের জন্য রহমত ছিলো তা এখন পুরোটাই নারী জাতির জন্য। পাণ্ডিত্যের মুগ্ধতা ছেঁয়ে গিয়েছিলো বোখারার প্রতিটি দালানবাড়ি আর ছোট্ট ছোট্ট খড়কুটোর ঘরে। তাঁর আচরণে ফোঁটে উঠেছিলো নারীদের যৌবনের আঁচল। ইসলামের ঘোষণার কথা মনে পড়ে গেলো- নারী নাড়ীর ধন, পরকালের সম্পদ, অতুল কল্যাণের আঁধার। নারী নরের সহধর্মিণী, সজনী, সঙ্গিনী। সুতরাং নারী তুমিই মহান জননী।[২]

    প্রিয় বোন আমার!
    সেই সময়টাতে কথিত আধুনিক সভ্যতার নামে শেকড়ছিন্ন নানারুপ অসভ্য সংস্কৃতির খামার গড়ে উঠেছিলো পৃথিবী জুড়ে। বোখারা তার থেকে বাদ যায়নি। সবাই ঘরে ফিরে দেখে অস্তিত্বে আঘাতের শতচিহ্ন, নিজ ব্যক্তিত্ব রক্তাক্তের দশা, সম্ভ্রম নিয়ে চলছে কাড়াকাড়ি, ইসলামের এপিট-ওপিটে নখরের ভয়ংকর শত থাবা, শিউরে ওঠলো নারী। অনেক আধুনিক নারীও। কাঁচের তৈরি এই অসভ্যতাকে চুরমার করে শাশ্বত বিশ্বস্ত ঠিকানায় পৌঁছে নিতে এগিয়ে এলো অনেক রূপ-যৌবনা, অনল-অগ্নিতে পুড়ে ভষ্ম হওয়া কিছু নারী। তাদের মধ্যে একজন হলেন ফখরুন নাবিদ রাহিমাহুল্লাহ এর মেয়ে মারিয়া শাতজাকি।[৩]

    যার কাছে সুখ ছিলো গদ্য পদ্যের মত টুটস্থ এক ঝলকা। সেই বোনই আজ চতুর্মাত্রিক ফিতনার দমবন্ধ এই পরিস্থিতিতে চরিত্র রক্ষার বা-কৌশলী হাতিয়ারের সন্ধানে নেমে পড়েছেন। ডুব দিয়েছেন আম্মাজান খাদিজা রাদিআল্লাহু আনহার সুখের একাল-ওকালে। সুখ তাঁকে কতই কিছুই না দেখিয়েছে! পড়িয়েছে রেশমের মত কত দামী আইটেম! করিয়েছে কত ঝটিকাসফর! উপলব্ধি করিয়েছে বৈচিত্র্যে ঠাসা তামাম কুল-কায়েনাত! এত হলো আম্মাজানের নববী চালচিত্র গ্রহণের পূর্বের অবস্থা। পরের হাল কি ছিলো! হাদিসের ভাষ্যগুলো পড়লে চোখ নড়বড়ে হয়ে উঠে। ছলছল করে উঠে সময়ের যাতাকলে পিষ্টতার কথাগুলো পড়ে।

    প্রাণোচ্ছল চঞ্চলতা নিয়ে শুরু হলো তাঁর জীবনযাত্রার নতুন এক মোড়। আইডল এখন একজনই আম্মাজান খাদিজা। আগ্রহের তীর এখন হন্যে হয়ে খোঁজছে সমস্যা উত্তরণের উপায়। নিজ চরিত্র সাক্ষ্য দেয় সুখকে আগলে রাখতে কিন্তু আম্মাজানের চরিত্র তাগাদা দেয় মিছে এ সুখ জলাঞ্জলি দিতে! বিপাকে না পড়েও কোন উপায় নেই আর ছেড়ে দিলে তো ক্ষতির কোন শেষ নেই। নানা সংশয় আর ওয়াসওসা আজ আবার বিপদের বড় শত্রুতে প্রমাণিত হলো। তাই দিনক্ষণ চিন্তা না করেই শুরু হলো তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম। এই বেড়াজালে সুখ থাকুক টিকে বা না থাকুক এই শপথে ছিলো দৃঢ় অনড় ।

    খাবারের বিভিন্ন ধরণ দস্তরে উপস্থিতি না দেখলে যার রুচিতে বাটা পরতো সে আজকাল দিনাতিপাত করে উপবাসে। পোশাক গণনা শুরুই হতো যার পঞ্চাশের পর থেকে এগুলো এখন তাঁর বেচে থাকার সামান্য সম্বল। কারণ চাহিদার মোড় এখন বাস্তবতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। অণু অণু করে বুঝতে শিখেছে নারী তার আসল মাকসাদ। বিন্দু বিন্দু করে হাঁটতে শুরু করেছে গগন সিঁড়ির দিকে।
    চেহারার সমস্যা তো আয়নায় দেখে নির্ণয় করা সম্ভব কিন্তু এ হাল থেকে নিরুত্তরের মত সহজ উপায় রেব করা এক দিকে কঠিন হলেও অন্য চিন্তায় অনেকটাই আসান হবে যদি তার মগজের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আম্মাজানদের দিকে থাকে।


    তথ্যাদি_______________

    ১. নির্মল জীবন-৪৭পৃ
    ২.নির্মল জীবন-৪৭পৃ
    ৩.নির্মল জীবন-৪৯পৃ


    Starts
    04-05-2022
    Ends
    04-05-2022

  • #2
    খুব সুন্দর এবং ভালো হয়েছে।
    পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

    Comment


    • #3
      প্রিয় ভাই আল্লাহ তা'য়ালা আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করুন... ভাইজান! সিরিজটা চালু করার অনুরোধ করছি..এবং সিরিজের সকল পোষ্ট পাবলিশ করে সমাপ্ত করে দিন।
      আল্লাহ তা'য়ালা আপনাকে সহজ করেদিন,আমিন।

      Comment


      • #4
        আপনার এই সিরিজের লিখাগুলোর জন্য অপেক্ষায় থাকি। আল্লাহ তাউফিক দিলেন আলহামদুলিল্লাহ। জাযাকাল্লহু খইর ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আখিরহ।
        ভাই আপনার কাছে , আপনার লিখার বানানগুলোর শুদ্ধতার প্রতি খেয়াল রাখার অনুরোধ থাকবে ইনশাআল্লাহ। আপনার সুযোগ থাকলে এ বিষয়টার দিকে লক্ষ্য রাখবেন আশা করি। আবারও জাযাকাল্লহ।

        Comment


        • #5
          ভাই আপনি অধীক সাহিত্যতা ব্যবহার না করে সহনীয় এবং সাবলীল সাহিত্যিকতা ব্যবহার করলে পাঠক বৃন্দ উপকৃত হত।
          পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

          Comment

          Working...
          X