Announcement

Collapse
No announcement yet.

রমাদান- "ঝোক বুঝে কোপ মারার" অন্যতম শ্রেষ্ঠ সময়

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • রমাদান- "ঝোক বুঝে কোপ মারার" অন্যতম শ্রেষ্ঠ সময়

    রমাদান- সফলতা লাভের মহাসুযোগ
    রমাদান আল্লাহ্‌ তায়ালার অশেষ নেয়ামতের মধ্যে এক বিশেষ নেয়ামত । আল্লাহ তায়াল্র অশেষ অনুগ্রহে আমরা আরেকটি রমাদান পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ । কবরে শায়িত প্রত্যেকজন ব্যক্তি এখন আফসোস করে যাচ্ছে- "ইশ যদি আরেকটা রমযান পেতাম,এক রাকাত সালাত আদায় করতে পারতাম "। আর আমরা অনেকে রামযান পেয়েও অবহেলায় কাটিয়ে দিচ্ছি । রমজানের সদ্ব্যবহার করতে পারছি না । তাই আল্লাহ্‌র কাছে আকুল ফরিয়াদ, তিঁনি যেন আমাদেরকে এই বাকি রমজানের পুরোটা সময় তার ইবাদাতে মশগুল থাকার তৌফিক দেন এবং এই রমজানকে আমাদের নাজাতের এবং জান্নাত লাভের উসিলা হিসেবে কবুল করেনেন । আমিন ।

    আমাদের জীবনের প্রত্যেকটি মূহুর্তই খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর তার মাঝে রমজানের মুহূর্তগুলো তো সর্বোত্তম । রমজানে আমাদের উচিত অধিকহারে ইবাদাত করা । আমাদের উচিত এমনভাবে কুরআন তিলাওয়াত করা এবং শুনা যেন আল্লাহ্‌র সাথে আপনি কথা বলছেন । আল্লাহ্‌ যা আপনাকে বলেছেন তা আপনি শুনেছেন এবং তা মানতে আপনি সম্পূর্ণ রূপে প্রস্তুত । এমনভাবে হাদিস অধ্যয়ন করা যেন রাসুল (সাঃ) আপনাকে বলছেন এবং আপনি তা মানতে প্রস্তুত । সালাফে-সালেহিনদের ঘটনাগুলো এমনভাবে পড়া যেন আপনি সেই যুগে ফিরে গেছেন । এছাড়াও সকল ধরনের ইবাদাত পূর্ণ একাগ্রতা,তাকওয়া,তওয়াক্কুল এবং উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে করা ।

    এই রমজানে আপনার টার্গেট থাকবে সফলদের কাতারে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করা । এখন প্রশ্ন হচ্ছে 'এই রমজানে সফল কারা হবে ?' ।

    এই রমজানে সফল তারাই হবে,যারা এই একটি মাসের পূর্ণ মেহনতের বিনিময়ে আল্লাহ্‌ তায়ালার কাছ থেকে ক্ষমার পুরস্কার লাভ করবে । রাসুল (সা) বান্দার এই সফলতাকে একজন দাসের মুক্তি পাওয়ার সাথে তুলনা করেছেন । কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে- 'তারা কি থেকে মুক্তি পেল ?'। এটা বুঝার জন্য আমাদের একটু ফিকহের দিকে তাকাতে হবে । ফিকহ অনুযায়ী, তালাক,বিয়ে,দাস মুক্তির ক্ষেত্রে কেউ বুঝেশুনে বা ঠাট্টাচ্ছলে যা বলবে তা আর ফিরিয়ে নেয়ার উপায় নেই । অর্থাৎ এসব ক্ষেত্রে যেই অবস্থায়, যা বলবে তা কার্যকর হয়ে যাবে ।
    একটু চিন্তা করুন, মানুষের এতো সীমাবদ্ধতা,ভুল-ত্রুটি থাকার পরেও সামান্য এই কথা ফিরিয়ে নেয়া যায় না তাহলে সর্বশক্তিমান, মহাক্ষমাশীল, মহাদয়ালু আল্লাহ্‌ তায়ালা যদি আপনাকে একবার ক্ষমা করে দেন- আপনার কি ধারণা তিনি তাঁর কথা আবার ফিরিয়ে নেবেন ? প্রশ্নই উঠে না । রমাদান এমন এক মাস, যে মাসে ক্ষমা ও সফলতা সবদিক থেকে হাতছানি দেয়।
    আর আপনি এই মাসে ক্ষমা অর্জন করতে না পারেন তার মানে হচ্ছে আপনি ক্ষমা পাওয়ার জন্য যথেষ্ঠ চেষ্টা করেন নি- এটা আপনার ব্যর্থতা । তাই আসুন আমরা রমাদান প্রথম থেকেই আল্লাহর ক্ষমা লাভের চেষ্টা চালিয়ে যায় । রমাদানে ক্ষমা লাভের ৩টি মহামূল্যবান সুযোগ রয়েছে ।
    প্রথম সুযোগ

    "যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে এবং আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার লাভের আশায় রমজানে সিয়াম পালন করে, তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে ।" (সহিহ বুখারি-৩৮)

    এই হাদিসে 'ইহতিসাব' শব্দটি উল্লেখ্য করা হয়েছে । এর ব্যাখ্যায় ইবনু হাজার রহঃ বলেন "ইহতিসাব মানে শুধুমাত্র আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কারের আশা"। আর এই পুরস্কার হচ্ছে আল্লাহর ক্ষমা । এছাড়াও রয়েছে আরো অনেক পুরস্কার ।

    দ্বিতীয় সুযোগ

    কোনো কারণে হয়তো আপনার সিয়ামে ত্রুটি হয়ে গেছে । এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই । আপনার জন্য আরকটি সুযোগ আছে ক্ষমা লাভের তা হলো রাতের সালাত ।

    "যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে এবং আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার লাভের আশায় রমজানে কিয়াম করবে, তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে ।" (সহিহ বুখারি-৩৭)"

    তৃতীয় সুযোগ

    ধরুণ আপনার সিয়াম ও কিয়াম দুটোই ত্রুটিপূর্ণ । তাহলেও হতাশ হওয়ার কিছু নেই । আপনার শেষ আরেকটি দরজা খোলা আছে তা হলো লাইলাতুল ক্বদর । এই একটি রাত আল্লাহর মাগফিরাত অর্জনের জন্য যথেষ্ঠ হতে পারে ।

    "যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে এবং আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার লাভের আশায় লাইলাতুল ক্বদরে সালাত আদায় করবে, তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে ।" (সহিহ বুখারি-২০১৪)

    এই তিনটি হাদিসের শেষ অংশের দিকে খেয়াল করলে দেখবেন সবগুলোতেই বলা আছে 'তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে' । অর্থাৎ আপনি যদি সিয়াম পালন করেন,রাতে সালাত আদায় করেন এবং ক্বদরের রাতে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদাত করেন তাহলে আপনাকে মাফ করে দেয়া হবে । আর ক্ষমার সাথে সাথে প্রতিটি আমলের জন্য জান্নাতে আপনার কয়েকগুণ মর্যাদা বৃদ্ধি করা হবে । এতো সব সুযোগের পরেও আপনি আল্লাহর ক্ষমা হাসিল না করতে পারেন তাহলে এই শেষ হাদিসটা আপনার জন্য,

    আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত,
    রাসুল (সাঃ) একবার মিম্বারে আরহণের সময় প্রতি ধাপে আমিন বললেন । সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন,"ইয়া রাসুলাল্লাহ, আপনি আমীন বললেন কেন ?" নবীজি জবাব দিলেন," জিবরীল (আঃ) এসে বদ-দুয়া করলেন, আল্লাহ্‌ তার নাক ধুলোয় ধুসোরিত করুন, যে রমাদান পেল কিন্তু ক্ষমা হাসিল করতে পারলো না । তাই আমি বললাম- আমীন ।" (মুসনাদে আহমাদ-৭৪৫১)


    এই হাদিস শুনেও যদি উদাসীনদের বোধ উদয় না হয় তবে তাদের ব্যাপারে আল্লাহ্‌ তায়ালাই অধিক জ্ঞাত । আল্লাহ্‌ আমিসহ সকল ভাই ও বোনকে এই রমাদানে সফলদের কাতারে শামিল হওয়ার তৌফিক দান করুন এবং জাহান্নাম থেকে নাজাত ও জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব করুন । আমিন ইয়া রব্বাল আলামিন ।

  • #2
    "যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে এবং আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার লাভের আশায় রমজানে সিয়াম পালন করে, তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে ।" (সহিহ বুখারি-৩৮)

    "যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে এবং আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার লাভের আশায় রমজানে কিয়াম করবে, তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে ।" (সহিহ বুখারি-৩৭)"

    "যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে এবং আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার লাভের আশায় লাইলাতুল ক্বদরে সালাত আদায় করবে, তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে ।" (সহিহ বুখারি-২০১৪)

    @সিয়াম@কিয়াম@লাইলাতুল ক্বদর
    +
    @ঈমান ও @ইহতিসাব/সাওয়াবের বাসনা


    নিশ্চয়ই হাদীস তিনটি সায়িম বা রোজাদারদের জন্য জ্বালানিস্বরূপ! এতে রয়েছে রমাদানের গুরুত্ব, বিশেষত্ব এবং এ-সময়টুকু খুব করে আমলে লেগে থাকার ভিত্তি।

    Comment

    Working...
    X