Announcement

Collapse
No announcement yet.

মূসা আঃ এর দোয়া থেকে আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা।

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • মূসা আঃ এর দোয়া থেকে আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা।

    ""মূসা আঃ এর দোয়া থেকে আমাদের শিক্ষা""



    মহান আল্লাহ মূসা আঃ কে ফেরাউনের মত ক্ষমতাধর, অহংকারী, জালেম শাসকের নিকট দাওয়াত প্রেরন করার দায়িত্ব দেন। এ দায়িত্ব পেয়ে মূসা আঃ মহান আল্লাহর নিকট কয়েকটি দোয়া করে। মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেনঃ
    قَالَ رَبِّ اشۡرَحۡ لِیۡ صَدۡرِیۡ ﴿ۙ۲۵﴾وَ یَسِّرۡ لِیۡۤ اَمۡرِیۡ ﴿ۙ۲۶﴾وَ احۡلُلۡ عُقۡدَۃً مِّنۡ لِّسَانِیۡ ﴿ۙ۲۷﴾ یَفۡقَہُوۡا قَوۡلِیۡ ﴿۪۲۸﴾

    সে বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দাও।এবং আমার কর্ম সহজ করে দাও।আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দাও।যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে।( সুরা ত্ব-হা ২৫-২৮)
    মূসা আঃ দায়িত্ব পেয়ে দোয়া করেছেন যেন উনার বক্ষ প্রশস্ত হয়। কেননা সংকীর্ণ বক্ষ নিয়ে দ্বীনের কাজ করা যায় না। এরপরে তিনি দোয়া করেছেন মহান আল্লাহ যেন উনার কাজ সহজ করে দেন।
    একটু চিন্তে করে দেখুন, মূসা আঃ কত বড় নবী ছিলেন, যিনি আল্লাহর সাথে কথা বলতেন। অথচ তিনি দোয়া করলেন যেন আল্লাহ তার এ বিশাল দায়িত্ব সহজ করে দেন। অথচ আমরা কয় দিন আমাদের নিজেদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সহজতার জন্য দোয়া করেছি?
    আল্লাহ যদি কোন কাজ সহজ না করেন তাহলে সেটা অনেক কঠিন। এ কারণে দেখা যায় অনেকে নামাযের সময় আরেক জনের জন্য খুব কঠিন কাজ করে অথচ নামাজ পড়ে না। নামাযের জন্য ছুটি চাইলে নিষেধ করবে না, তবুও নামায না পড়ে আরেকজন কঠিন কাজ করে দিচ্ছে৷ কারন তার জন্য নামাজ পড়া অনেক কঠিন।এমনকি দশ তালা ভবনে মাথায় করে ইট উঠানোর চাইতেও কঠিন মনে হয়।
    আজ অনেকে টাকা পয়সা কামানোর জন্য শত শত মাইল হেঁটে অবৈধ পথে ইউরোপে যায়। অথচ দেখা যায় দ্বীনি কাজে আমরা সামান্য একটু সফর করতে কত হিমশিম খাচ্ছি।

    দ্বীনের কাজ যতই সহজ হোক না কেন আপনি করতে পারবেন না আল্লাহর সাহায্য ছাড়া। এজন্য অনেকে শত শত অনর্থক কথা, বাজে কথা বলতে পারে। অথচ মূখে একটু যিকির করতে পারে না।তাই নিজের জন্য দোয়া করুন, যেন আল্লাহ আমাদের কাজকে সহজ করে দেন। বিশেষ করে জিহাদের ফরযিয়্যাত পরিপূর্ণ ভাবে ইখলাসের সাথে আদায় করা সহজ করে দেন। আল্লাহ যদি সহজ করে দেন তাহলে দেখবেন দ্বীনের অনেক বড় কাজ আপনি খুব সহজে করে ফেলছেন।দেখুন সুলাইমান আঃ কত বিশাল ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন।মানুষ যুদ্ব করে মানুষের উপর বিজয় লাভ করতে পারে কিন্তু পশু পাখির উপর বিজয় লাভ করতে পারে না। জ্বিনের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। অথচ তার ক্ষমতা জ্বিনের উপরেও ছিলো। তিনি পশু, পাখির কথা পর্যন্ত বুঝতেন।কিন্তু তিনি এতো ক্ষমতা কিভাবে পেলেন? তিনি দোয়ার বরকতেই তো পেলেন। আল্লাহ বলেন,

    قَالَ رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَهَبْ لِيْ مُلْكاً لاَّ يَنْبَغِي لِأَحَدٍ مِّنْ بَعْدِيْ إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ- (ص ৩৫)-

    ‘সুলায়মান বলল, হে আমার পালনকর্তা! আমাকে ক্ষমা কর এবং আমাকে এমন এক সাম্রাজ্য দান কর, যা আমার পরে আর কেউ যেন না পায়। নিশ্চয়ই তুমি মহান দাতা’ (ছোয়াদ ৩৮/৩৫)।

    এই পৃথিবীতে যারাই বড় কিছু করে তারা কারো না কারো দোয়ার বরকতেই করে। শয়তান এতো বছর হায়াত পেয়েছ দোয়ার কারনেই। সেও আল্লাহর নিকট দোয়া করে কিয়ামত পর্যন্ত হায়াত চেয়ে নিয়েছে। ফেরাউনও পর্যন্ত মহান আল্লাহর নিকট দোয়া করেছে। নিজেকে রব দাবী করার পর যখন নীল নদের পানি শুকিয়ে যায় তখন সেও গোপনে আল্লাহর নিকট দোয়া করেছে।
    দেখুন ইবরাহীম আঃ এর বংশে নবী সাঃ এর জন্ম দোয়ার কারনেই হয়েছে।তিনি আল্লাহর নিকট চেয়ে নিয়েছেন।

    এরপরে দেখুন মূসা আঃ নিজের দূর্বলতা মহান রবের নিকট তুলে ধরেছেন। উনার মুখে জড়তা ছিলো, একারনে তিনি মুখের জড়তা দূর করার জন্য দোয়া করেছেন। অথচ আমাদের প্রত্যেকের ভিতরেই অনেক দূর্বলতা আছে, কেউ অলস, কেউ ভীরু, কেউ কৃপন, কেউ বদমেজাজি আবার কেউ অহংকরী বা হিংসুটে। কিন্তু আমরা কি নিজেদের দূর্বলতাগুলো চিহ্নিত করেছি? এবং তা দূর করার জন্য কয়দিন দোয়া করেছি? আপনার ভিতরে যত দূর্বলতাই থাকুক না কেন যদি আপনি রবের নিকট দোয়া করেন তাহলে তিনি দূর্বলতার মধ্যে দিয়েও অনেক কিছু করাতে পারেন। হযরত জাকারিয়া আঃ এর জীবনি পড়ে দেখুন, তিনি বার্ধক্য বয়সে দূর্বল অবস্থায় আল্লাহর নিকট সন্তানের জন্য দোয়া করেছেন। ফলে আল্লাহ উনাকে বার্ধক্যে বয়সেই সন্তানের সুসংবাদ দিলেন।যে সময় সন্তানের কথা কল্পনাও করা যায় না।
    মহান আল্লাহ চাইলে সব কিছুই পারেন। তিনি চাইলে দূর্বল, ভীরু মানুষটিকে একজন সাহসী, শক্তিশালী মুজাহিদ বানিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু আমরা অনেকেই জিহাদ করার তাওফীক চাওয়ার দোয়াটি করতেও ভয় পাই।
    আল্লাহ আমাদের সকল দূর্বলতা থেকে আশ্রয় চাওয়ার তাওফিক দিন।

    এরপরে দেখুন, মূসা আঃ মহান আল্লাহর নিকট আরো দোয়া করেছেন।মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেনঃ
    وَ اجۡعَلۡ لِّیۡ وَزِیۡرًا مِّنۡ اَہۡلِیۡ ﴿ۙ۲۹﴾ ہٰرُوۡنَ اَخِی ﴿ۙ۳۰﴾ اشۡدُدۡ بِہٖۤ اَزۡرِیۡ ﴿ۙ۳۱﴾ وَ اَشۡرِکۡہُ فِیۡۤ اَمۡرِیۡ ﴿ۙ۳۲﴾ کَیۡ نُسَبِّحَکَ کَثِیۡرًا ﴿ۙ۳۳﴾ وَّ نَذۡکُرَکَ کَثِیۡرًا ﴿ؕ۳۴﴾ اِنَّکَ کُنۡتَ بِنَا بَصِیۡرًا ﴿۳۵﴾ قَالَ قَدۡ اُوۡتِیۡتَ سُؤۡلَکَ یٰمُوۡسٰی ﴿۳۶﴾


    আমার স্বজনবর্গের মধ্য হতে আমার জন্য একজন সহায়ক নিযুক্ত কর।
    আমার ভাই হারূনকে।তার দ্বারা আমার শক্তি সুদৃঢ় কর।এবং তাকে আমার কর্মে অংশী কর।যাতে আমরা তোমার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করতে পারি প্রচুর।এবং তোমাকে স্মরণ করতে পারি অধিক।[তুমি তো আমাদের সম্যক দ্রষ্টা।’তিনি বললেন, হে মূসা! তুমি যা চেয়েছ তা তোমাকে দেওয়া হল।( সুরা ত্ব-হা ২৯-৩৬)

    এবার দেখুন মূসা আঃ এর ভাই হারুন আঃ ছিলেন একজন সাধারন মানুষ। অথচ মূসা আঃ তার জন্য দোয়া করেছেন, যে দোয়ার ফলে আল্লাহ তায়ালা হারুন আঃ কে সাধারন মানুষ থেকে নবী বানিয়ে দিয়েছেন এবং মূসা আঃ এর দায়িত্ব পালন করাকে সহজ করে দিয়েছেন।শুধু দোয়ার ফলেই একজন সাধারন মানুষকে আল্লাহ নবী বানিয়ে দিছেন। তাহলে তিনি চাইলে দেশের ভুল চিন্তা লালন কারী বা জিহাদ বিরুধী আলেমদেরকে সঠিক দিশা দিতে পারেন। ইসলামের যোগ্য রাহবার বানিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু আমরা তাদের হিদায়েতের জন্য দোয়া করতে পারি নি। নাম ধরে ধরে তাদের জন্য দোয়া করতে পারি নাই। একজন জনপ্রিয় আলেম পরিবর্তন হলে কত লক্ষ লক্ষ মানুষ পরিবর্তন হয় তার প্রমান আমরা ইতিপূর্বে দেখেছি। আমাদের উচিত সব বড় বড় আলেমদের নাম ধরে ধরে দোয়া করা। ফলে আমাদের কাজ অনেকটাই সহজ হবে ইনশাআল্লাহ । যে কাজ আমার দ্বারা হবে না সে কাজ তাদের দ্বারা হবে।


    মূসা আঃ এর দোয়া থেকে আরেকটা বিষয় আমরা শিক্ষা পাই, তা হলো আমরা অনেক সময় আবেগকে প্রাধান্য দিয়।কোন প্লান বাস্তবায়নের জন্য ভালোভাবে প্রস্ততি নিই না। নিজেদের দূর্বলতার দিকে তাকাই না। এখানে দেখুন মূসা আঃ নিজের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে তা থেকে পরিত্রানের দোয়া করেছেন।আল্লাহ উনার দূর্বলতা গুলো দূর করেছেন। অথচ আমরা এতটাই আবেগী যে, কোন প্রস্তুতি ছাড়াই কাফেরদের মুকাবিলা করতে চাই। তাদের অস্ত্রের মোকাবিলা আমরা মুখের প্রতিবাদ বা কয়েকটা পোষ্টার ও ফেস্টুন দিয়ে করতে চাই। আমরা প্রস্তুতিকে প্রাধান্য না দিয়ে আবেগকে প্রাধান্য দিই। যার ফলে অনেক সময় দেখা যায় আমাদের কাজ কাঙ্ক্ষিত ফলাফলের বিপরীত কিছু বয়ে আনে।দেখা যায় মাঝপথ থেকে আমরা ফিরে আসি। তাই আমাদের উচিত নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করা, প্রস্তুতি নেওয়া। ইনশাআল্লাহ মহান আল্লাহ আমাদের সাহায্য করবেন।
    Last edited by tahsin muhammad; 11-09-2022, 05:37 PM.

  • #2
    দোয়ার অনেক গুরুত্ব রয়েছে। আমি আমার লাইফে দোয়া ছাড়া কিছুই করতে পারি না। দোয়া করলেই আমি সফলতা পাই । অন্যথায় নয়।
    পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

    Comment


    • #3
      মাশা আল্লাহ

      Comment

      Working...
      X