মায়েদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা ┇ শাইখ যুবাইর আল-হাসান হাফিজাহুল্লাহ
হে মা! আজ তোমাকে লক্ষ্য করে কিছু কথা বলব।
হে মা! আজ গোটা পৃথিবী মজলুম মুসলমানের রক্তে রঞ্জিত। দুনিয়ার কোথাও আজ আমাদের মা-বোনরা সুরক্ষিত নেই। আমাদের ভাই-বোনেরা কোথাও নিরাপদ নেই। মুসলিম মা-বোনেরা আজ কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে জুলুম নির্যাতন সইতে না পেরে আমাদের বলছে, যদি তোমরা আমাদের রক্ষা করতে না পারো, তবে বোম মেরে আমাদেরসহ উড়িয়ে দাও!
হে মা! মুসলিম উম্মাহকে রক্ষার জন্য আজ একজন উমারের খুব বেশি প্রয়োজন। সালাহউদ্দীন আইয়ুবি কিংবা মুহাম্মদ বিন কাসিমের মত বীরদের খুব বেশি প্রয়োজন। আজ পৃথিবীর চতুর্দিক থেকে ভেসে আসছে মজলুম মুসলমানের হৃদয় ফাঁটা আত্মচিৎকার।
অথচ এতকিছু দেখার পরও আমরা প্রবৃত্তির অনুসরণ আর অলিক কল্পনায় ডুবে আছি! আমরা আমাদের সন্তানদের নিয়ে দুনিয়া কেন্দ্রিক সকল কল্পনা জল্পনায় মাতাল হয়ে আছি! আমরা ভুলে গেছি, ইসলামের জন্য নারীদের কী অবদান ছিল! আমরা ভুলে গেছি, সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহাদের সন্তান জন্মদানের কি উদ্দেশ্য ছিল!
হে মা! একটু স্মরণ করে দেখো! যুগে যুগে এই উম্মাহর বীরশ্রেষ্ঠ মুজাহিদদের কারা গড়ে তুলেছিলো! কারা তাদের আদর সোহাগ ও শিক্ষা-দীক্ষা দিয়ে বীর সাহসী করে তুলেছিল! হ্যাঁ তোমরাই। যুগে যুগে, তোমাদের হাতেই তৈরি হয়েছিল এ উম্মাহর শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা।
হে মা! এ মজলুম উম্মাহ আজ তোমার অপেক্ষায় আছে, যে তুমি কখন তোমার সন্তানদেরকে বীর মুজাহিদ হিসেবে গঠন করবে! যুদ্ধ সাজে সজ্জিত করে রণাঙ্গনে পাঠাবে! দুনিয়ার মায়া ছিন্ন করে আখেরাতকে ভালবাসতে শেখাবে! তাদের মাঝে দ্বীন পালনের স্পৃহা ও শাহাদাতের তামান্না বপন করবে! খাঁটি আবেদ, যাহেদ ও আলেমে রব্বানী হিসেবে গড়ে তুলবে!
তোমাদের আদরের সন্তানদেরকে হযরত খানসা রাদিয়াল্লাহু আনহার মত নিজ হাতে রণসাজে সজ্জিত করে রণাঙ্গনে পাঠিয়ে দেবে!
হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহার মতো সম্পদের সবটুকু ইসলামের জন্য বিলিয়ে দিবে!
হযরত আসমা রাদিয়াল্লাহু আনহার মতো গোপনে মুহাজিরদের খাবার তৈরি করে দেবে!
হযরত আসমা বিনতে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহার এর মতো কলিজার টুকরা আদরের সন্তানকে বলবে," যদি তুমি যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ফিরে আসো - তবে আমি আনন্দিত হবো। কিন্তু তুমি যদি আমার কোলে ফিরে না আসো - তবে আমি আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবো!"
হযরত সাফিয়্যাহ রাদিয়াল্লাহু আনহার মতো জিহাদের ময়দানে প্রাণ-প্রিয় ভাইয়ের লাশ দেখেও মরিয়া হওয়ার পরিবর্তে মন্তব্য করবে, "আল্লাহর রাস্তায এটা বড় কোনো কুরবানি নয়!"
হযরত উম্মে আম্মার রাদিয়াল্লাহু আনহার মতো যুদ্ধে শত্রুর তীর-বর্ষার ১২ টি আঘাত খাওয়ার পরও হাসি মুখে তা সহ্য করে নিবে!
হযরত সুমাইয়া রাদিয়াল্লাহু আনহার মতো ইসলামের জন্য নিজের জীবন বিলিয়ে দিবে!
হে মা! এটা কখনোই সম্ভব হবে না যতক্ষণ না তুমি নিজে- পূর্ণ দায়িত্ববান ও সৎ পথের পথিক হবে এবং ছোটবেলা থেকেই আদরের সন্তানদেরকে জিহাদ ও মুজাহিদদের মর্যাদা শেখাবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সকল মায়েদেরকে সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহাদের মত মা হওয়ার তাওফীক দান করুন। আমাদের সকলকে শাহাদাতের অমীয় সুধা পাণে ধন্য করুন। আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন।
Comment