ﺑِﺴْــــــــــــــــﻢِﷲِﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِﺍلرَّﺣِﻴﻢ ️
অনেক অবুঝ মা-বোনকে দেখা যায় কোনো মসিবতে পরলে–অস্থির হয়ে উঠেন, চিৎকার করে কাঁন্না করেন, বুক চাপড়ান, কাপড় ছিড়েন আবার অনেকে আছেন, আল্লাহ রব্বুল আ'লামীনের ব্যাপারেও অনেক গর্হিত মন্তব্য করে বসেন। বিশেষ করে কোন প্রিয়জনের মৃত্যু হলে বোনেরা খুব কমই সবর করতে পারেন।
প্রিয় বোন!
মসিবত আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা, আল্লাহ রব্বুল আ'লামীন দেখতে চান আপনি সবর করেন নাকি আল্লাহর নাফরমানি করেন। একটু ভেবে দেখুন তো, প্রিয়জনকে হারিয়ে আপনি যদি বিলাপ করেন, মাথার চুল ছিড়েন, বুক চাপড়ান–তাহলে কি এই বিপদ কেটে যাবে? আপনার প্রিয়জন ফিরে আসবে! বলুন, কী লাভ হবে এতে? কোনো লাভ নেই বরং অনেক ক্ষতি। বিরহের অতিশয্যে অনেক সময় মা-বোনেরা এমন কথা বলে ফেলেন যাতে ঈমান পর্যন্ত চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। নাউজুবিল্লাহি মিন জালিক।
প্রিয় বোন!
যখনি কোনো মসিবত আসে আপনি সবর করুন, নিজেকে নিয়ন্ত্রন করুন, আল্লাহর কাছে দোয়া করুন, এমন কিছু করবেন না–যাতে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন। চোখ দিয়ে আপনার অশ্রু ঝরুক, ঝরতে দিন, মন ভরে কাঁদুন–আল্লাহর দরবারে। কিন্তু বিলাপ করা–সম্পূর্ণ হারাম, চুল ছেড়া, কপাল চাপড়ানো ইত্যাদি অনেক বড় গুনাহের কাজ।
রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কলিজার টুকরো সন্তান ইবরাহিম যখন মারা যান–তখন রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কী বলেছিলেন জানেন? অশ্রুসিক্ত নয়নে তিনি বলেন, “চোখগুলো আজ প্রবহমান, অন্তর বেদনাক্লিষ্ট, তবুও আমরা শুধু তাই বলবো যাতে খুশি হন–আমাদের রব। আল্লাহর কসম, হে ইবরাহিম! আমরা তোমার বিয়োগ ব্যথায় শোকাহত।”
সুবহানাল্লাহ! কত সুন্দর কথা! মুসিবত যখন আসে আপনিও তাই বলুন, যা আপনার রবকে খুশি করবে। আপনি যা হারিয়েছেন আল্লাহ চাইলে কি আপনাকে এর উত্তম বদলা দিতে পারেন না?
প্রিয় বোন! চলুন রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস থেকে আপনাকে একটি দুয়া শিখিয়ে দেই, মসিবতের সময় এটি পড়লে আপনি যা হারিয়েছেন আল্লাহ তা'য়ালা তার চেয়ে উত্তম বদলা আপনাকে দান করবেন।
হাদিসটি বর্ণনা করেছেন আম্মাজান উম্মু সালামা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা, ইমাম মুসলিম রহিমাহুল্লাহ হাদীসটি তাঁর সহীহ গ্রন্থে সংকলন করেছেন। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি কোনো মসিবতে পরার পর এই দুয়া পড়বে, আল্লাহ তা'য়ালা তাকে–সে যা হারিয়েছে, তার চেয়ে উত্তম বদলা দান করবেন:
إِنَّا لِلّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُوْنَ، اللّٰهُمَّ أْجُرْنِيْ فِيْ مُصِيْبَتِي، وَأَخْلِفْ لِيْ خَيْرًا مِنْهَا
[অর্থঃ আমরা তো আল্লাহ্*রই। আর নিশ্চয় আমরা তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী। হে আল্লাহ! আমাকে আমার বিপদে সওয়াব দিন এবং আমার জন্য তার চেয়েও উত্তম কিছু স্থলাভিষিক্ত করে দিন।] - মুসলিম ২/৬৩২, নং ৯১৮
উম্মুল মু'মিনিন উম্মে সালামা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা বলেন, “আমার স্বামী আবু সালামা ইন্তেকাল করার পর আমি এই দুয়া পড়েছিলাম, আল্লাহ তা'য়ালা আমাকে আবু সালামার থেকে উত্তম স্বামী দান করেছেন। আমি রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে স্বামী হিসেবে পেয়েছি।”
প্রিয় বোন!
দেখুন মসিবতের সময় সবর করলে; আল্লাহর কাছে দুয়া করলে কেমন ফল পাওয়া যায়! আল্লাহ আপনাকেও আমল করার তাওফীক দিন।
এবার আপনাকে একটি আশ্চর্যজনক গল্প শোনাবো। একজন সন্তানহারা মায়ের সবরের গল্প।
একদিন আবু তালহা রাদিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহুর এক ছেলে মারা গেল, ছেলের মা উম্মে সুলাইম রাদিআল্লাহু তা'য়ালা আনহা পরিবারের সবাইকে ডেকে বললেন, “তোমরা আবু তালহা কে আমার ছেলের ব্যাপারে কিছুই বলবো না, যা বলার আমি নিজেই বলবো।” রাতে আবু তালহা ঘরে এলেন, উম্মু সুলাইম রাদিআল্লাহু তা'য়ালা আনহা–স্বামীকে রাতের খাবার পরিবেশন করলেন, আবু তালহা খানাপিনা শেষ করে শুতে গেলেন। উম্মে সুলাইম রাদিআল্লাহু তা'য়ালা আনহা সেদিন অন্য দিনের তুলনায় একটু বেশি সাজগোজ করলেন। তারপর একসময়ে স্বামীকে শান্ত ও পরিতৃপ্ত দেখে উম্মু সুলাইম রাদিআল্লাহু তা'য়া'লা আনহা বললেন, “হে আবু তালহা! কেউ যদি কোন পরিবারের কাছে কোন জিনিস আমানত রাখে–পরে সে সেটা ফেরত চায়, তখন পরিবারটির কি এই আমানত আটকে রাখার কোনো অধিকার থাকে?” তিনি বললেন, “না”। উম্মে সুলাইম রাদিআল্লাহু তা'য়ালা আনহা বললেন, “এখন আপনার ছেলেকে নিয়ে ভাবুন।” একথা শুনে আবু তালহা রেগে গেলেন স্ত্রীকে তিরস্কার করে বললেন, “আমার কাছ থেকে এতক্ষণ লুকালে আর অপবিত্র হওয়ার পর এখন আমাকে আমার ছেলের খবর দিচ্ছো!” একথা বলে তিনি রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গেলেন এবং পুরো ঘটনা শোনালেন। রাসূল সল্লাল্লাহু সাল্লাম এই ঘটনা শুনে খুশি হয়ে বললেন, “আল্লাহ তাআলা তোমাদের বিগত রাত্রিতে বরকত দিন।”
প্রিয় বোন!
আপনাদের পূর্বসূরি সাহাবিয়ারা–মসিবতে কীভাবে সবর করতেন দেখুন! উম্মে সুলাইম রাদিআল্লাহু তা'য়া'লা আনহা কেবল নিজে সবর করে ক্ষান্ত হননি বরং স্বামীকেও সবর করতে শিখিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তাঁদের জীবনে আছে–আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ। আল্লাহ তা'য়ালা আমাদের মা-বোনদের—তাদের মত সবর করার তৌফিক দিন। আমীন ইয়া রব্বাল আ'লামীন।
সন্তানহারা মায়ের সবরের আশ্চর্য ঘটনা!
┇শাইখ তামিম আল আদনানি হাফিজাহুল্লাহ┇
┇শাইখ তামিম আল আদনানি হাফিজাহুল্লাহ┇
অনেক অবুঝ মা-বোনকে দেখা যায় কোনো মসিবতে পরলে–অস্থির হয়ে উঠেন, চিৎকার করে কাঁন্না করেন, বুক চাপড়ান, কাপড় ছিড়েন আবার অনেকে আছেন, আল্লাহ রব্বুল আ'লামীনের ব্যাপারেও অনেক গর্হিত মন্তব্য করে বসেন। বিশেষ করে কোন প্রিয়জনের মৃত্যু হলে বোনেরা খুব কমই সবর করতে পারেন।
প্রিয় বোন!
মসিবত আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা, আল্লাহ রব্বুল আ'লামীন দেখতে চান আপনি সবর করেন নাকি আল্লাহর নাফরমানি করেন। একটু ভেবে দেখুন তো, প্রিয়জনকে হারিয়ে আপনি যদি বিলাপ করেন, মাথার চুল ছিড়েন, বুক চাপড়ান–তাহলে কি এই বিপদ কেটে যাবে? আপনার প্রিয়জন ফিরে আসবে! বলুন, কী লাভ হবে এতে? কোনো লাভ নেই বরং অনেক ক্ষতি। বিরহের অতিশয্যে অনেক সময় মা-বোনেরা এমন কথা বলে ফেলেন যাতে ঈমান পর্যন্ত চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। নাউজুবিল্লাহি মিন জালিক।
প্রিয় বোন!
যখনি কোনো মসিবত আসে আপনি সবর করুন, নিজেকে নিয়ন্ত্রন করুন, আল্লাহর কাছে দোয়া করুন, এমন কিছু করবেন না–যাতে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন। চোখ দিয়ে আপনার অশ্রু ঝরুক, ঝরতে দিন, মন ভরে কাঁদুন–আল্লাহর দরবারে। কিন্তু বিলাপ করা–সম্পূর্ণ হারাম, চুল ছেড়া, কপাল চাপড়ানো ইত্যাদি অনেক বড় গুনাহের কাজ।
রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কলিজার টুকরো সন্তান ইবরাহিম যখন মারা যান–তখন রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কী বলেছিলেন জানেন? অশ্রুসিক্ত নয়নে তিনি বলেন, “চোখগুলো আজ প্রবহমান, অন্তর বেদনাক্লিষ্ট, তবুও আমরা শুধু তাই বলবো যাতে খুশি হন–আমাদের রব। আল্লাহর কসম, হে ইবরাহিম! আমরা তোমার বিয়োগ ব্যথায় শোকাহত।”
সুবহানাল্লাহ! কত সুন্দর কথা! মুসিবত যখন আসে আপনিও তাই বলুন, যা আপনার রবকে খুশি করবে। আপনি যা হারিয়েছেন আল্লাহ চাইলে কি আপনাকে এর উত্তম বদলা দিতে পারেন না?
প্রিয় বোন! চলুন রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস থেকে আপনাকে একটি দুয়া শিখিয়ে দেই, মসিবতের সময় এটি পড়লে আপনি যা হারিয়েছেন আল্লাহ তা'য়ালা তার চেয়ে উত্তম বদলা আপনাকে দান করবেন।
হাদিসটি বর্ণনা করেছেন আম্মাজান উম্মু সালামা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা, ইমাম মুসলিম রহিমাহুল্লাহ হাদীসটি তাঁর সহীহ গ্রন্থে সংকলন করেছেন। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি কোনো মসিবতে পরার পর এই দুয়া পড়বে, আল্লাহ তা'য়ালা তাকে–সে যা হারিয়েছে, তার চেয়ে উত্তম বদলা দান করবেন:
إِنَّا لِلّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُوْنَ، اللّٰهُمَّ أْجُرْنِيْ فِيْ مُصِيْبَتِي، وَأَخْلِفْ لِيْ خَيْرًا مِنْهَا
[অর্থঃ আমরা তো আল্লাহ্*রই। আর নিশ্চয় আমরা তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী। হে আল্লাহ! আমাকে আমার বিপদে সওয়াব দিন এবং আমার জন্য তার চেয়েও উত্তম কিছু স্থলাভিষিক্ত করে দিন।] - মুসলিম ২/৬৩২, নং ৯১৮
উম্মুল মু'মিনিন উম্মে সালামা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা বলেন, “আমার স্বামী আবু সালামা ইন্তেকাল করার পর আমি এই দুয়া পড়েছিলাম, আল্লাহ তা'য়ালা আমাকে আবু সালামার থেকে উত্তম স্বামী দান করেছেন। আমি রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে স্বামী হিসেবে পেয়েছি।”
প্রিয় বোন!
দেখুন মসিবতের সময় সবর করলে; আল্লাহর কাছে দুয়া করলে কেমন ফল পাওয়া যায়! আল্লাহ আপনাকেও আমল করার তাওফীক দিন।
এবার আপনাকে একটি আশ্চর্যজনক গল্প শোনাবো। একজন সন্তানহারা মায়ের সবরের গল্প।
একদিন আবু তালহা রাদিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহুর এক ছেলে মারা গেল, ছেলের মা উম্মে সুলাইম রাদিআল্লাহু তা'য়ালা আনহা পরিবারের সবাইকে ডেকে বললেন, “তোমরা আবু তালহা কে আমার ছেলের ব্যাপারে কিছুই বলবো না, যা বলার আমি নিজেই বলবো।” রাতে আবু তালহা ঘরে এলেন, উম্মু সুলাইম রাদিআল্লাহু তা'য়ালা আনহা–স্বামীকে রাতের খাবার পরিবেশন করলেন, আবু তালহা খানাপিনা শেষ করে শুতে গেলেন। উম্মে সুলাইম রাদিআল্লাহু তা'য়ালা আনহা সেদিন অন্য দিনের তুলনায় একটু বেশি সাজগোজ করলেন। তারপর একসময়ে স্বামীকে শান্ত ও পরিতৃপ্ত দেখে উম্মু সুলাইম রাদিআল্লাহু তা'য়া'লা আনহা বললেন, “হে আবু তালহা! কেউ যদি কোন পরিবারের কাছে কোন জিনিস আমানত রাখে–পরে সে সেটা ফেরত চায়, তখন পরিবারটির কি এই আমানত আটকে রাখার কোনো অধিকার থাকে?” তিনি বললেন, “না”। উম্মে সুলাইম রাদিআল্লাহু তা'য়ালা আনহা বললেন, “এখন আপনার ছেলেকে নিয়ে ভাবুন।” একথা শুনে আবু তালহা রেগে গেলেন স্ত্রীকে তিরস্কার করে বললেন, “আমার কাছ থেকে এতক্ষণ লুকালে আর অপবিত্র হওয়ার পর এখন আমাকে আমার ছেলের খবর দিচ্ছো!” একথা বলে তিনি রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গেলেন এবং পুরো ঘটনা শোনালেন। রাসূল সল্লাল্লাহু সাল্লাম এই ঘটনা শুনে খুশি হয়ে বললেন, “আল্লাহ তাআলা তোমাদের বিগত রাত্রিতে বরকত দিন।”
প্রিয় বোন!
আপনাদের পূর্বসূরি সাহাবিয়ারা–মসিবতে কীভাবে সবর করতেন দেখুন! উম্মে সুলাইম রাদিআল্লাহু তা'য়া'লা আনহা কেবল নিজে সবর করে ক্ষান্ত হননি বরং স্বামীকেও সবর করতে শিখিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তাঁদের জীবনে আছে–আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ। আল্লাহ তা'য়ালা আমাদের মা-বোনদের—তাদের মত সবর করার তৌফিক দিন। আমীন ইয়া রব্বাল আ'লামীন।
Comment