আমার জিহাদ ফ্যান্টাসিতে ভরা নয় তো !
------------------------------------------------------
------------------------------------------------------
আলহামদুলিল্লাহ্, অনেক অনেক ভাই জিহাদ করতে আকাঙ্ক্ষী। আমরা আল্লাহর জমীনে আল্লাহর দ্বীন , আল্লাহর শারীয়া কায়েম করতে চাই। আমাদের এই আকাঙ্ক্ষার সাথে সাথে একটি শংকার কথা আজকে ভাইদের সাথে শেয়ার করতে চাই যা আমার কাছে অনেক ভয়ংকর মনে হয়।
আমার ধারণা- আপনাদের কাছেও এই সমস্যাকে ভয়ংকরই মনে হবে।
আমরা অনেকে দ্বীনহীন অবস্থা থেকে দ্বীনের পথে পা বাড়িয়েছি আলহামদুলিল্লাহ্। আল্লাহ্ তায়ালা হেদায়েত দিয়ে আমাদের ধন্য করেছেন আলহামদুলিল্লাহ্। দ্বীনহীন অবস্থায় অনেকে হলিউড, বলিউডের বিভিন্ন সিনেমায় যুদ্ধ সংক্রান্ত নান(নানা) বিষয়, বিভিন্ন গেইম খেলে যুদ্ধ সমন্ধে অনেক কিছু জেনে ফেলেছেন বা অনেক ম্যাগাজিন, গল্প পড়ে আমাদের অনেকের মধ্যে যুদ্ধ নিয়ে আলাদা একটা আগ্রহের জায়গা অনেক সময় তৈরি হয়ে থাকে। দ্বীনে ফেরার পরে ঐ যুদ্ধ নিয়ে ফ্যান্টাসিগুলো জিহাদের সাথে মিলিয়ে মনের মধ্যে এক প্রখর শক্তি তৈরি করে। বারবার সেই জ্ঞান সামনে আসতে থাকে। আর কোন অসংগতি দেখলেই মন চায় যে এভাবেই যদি আমি যুদ্ধ করে , গুলি করে ওদের শেষ করে দিতে পারতাম!
আমাদের মধ্যে যুদ্ধের প্রতি আগ্রহ সবসময়ই প্রবল থাকে অনেক ক্ষেত্রেই উপরের প্রভাবগুলোর কারণে। এখন যেন হামলা হচ্ছে না, কেন ওদের জবাই করতে পারছি না, ওরা কীভাবে নিরাপদে ঘুরে বেড়াচ্ছে এসব প্রশ্ন বারবার সামনে আসতে থাকে। যাদের মধ্যে যুদ্ধ ফ্যান্টাসি বেশি কাজ করে তাদের বেশিরভাগের মধ্যেই যুদ্ধের জ্ঞান বলতে ভিডিও যুদ্ধ দেখা ছাড়া বা কিছু বই পড়ে কিছু জানা ছাড়া আর কিছু নেই। ফলে ভাইদের বুঝানো কঠিন হয় যে, কেন এখন এরকম হচ্ছে না। কেন এখন এখানে হামলা হচ্ছে নাম(না) কেন ওদের উপর প্রতিশোধ নেয়া হচ্ছে না।
বাংলাদেশের মত একটা জায়গাতে চাইলেই যা-তা করা যায় না। চাইলেই যেকেউ একটা হামলা করে সব কিছু দখলে নিয়ে নিতে পারবে না। এই বাস্তবতা আমাকে যেন বুঝানোই যায় না। আমি সর্বদা আমার মনের মধ্যে সিনেমায় দেখা সেই নায়ক যে স্নাইপার এটাক করে একের পর এক শত্রুকে কুপোকাত করছে! আমি তলোয়ার হাতে সবাইকে ধরাশায়ী করছি, কিন্তু আমার কিছু হচ্ছে না ! আমিই সেই নায়ক !
মাআযাল্লাহ!
আমাদের নফসকে আমাদের নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। আমাদেরকে নিজের দিকে সর্বদা নজর দেয়া জরুরি যেন আমরা নফসকে খুশি করতে জিহাদকে অবলম্বন না বানাই। আমার নফস চায় যুদ্ধ, সে যুদ্ধ করলে খুশি হবে তাই আমি যুদ্ধ করতে চাই- এটাই কি আসলে আমার মুজাহিদ হওয়ার গোপন রহস্য কিনা আমাদের বারবার নিজেকে প্রশ্ন করা উচিত। আমি এডভেঞ্চার অনেক পছন্দ করি। আর মুজাহিদ হলে আমি সেগুলো করতে পারবো, একটা সাস্পেন্স কাজ করবে, তাই আমি জিহাদ করতে চাই, যুদ্ধ করতে চাই। এগুলো কি আমার জিহাদে শরীক হওয়ার কারণ কিনা এগুলো নিয়ে বারবার আমাদের ভাবা উচিত। আমাদের নিয়াতকে কি আমরা পরিশুদ্ধ করতে পারছি কিনা এগুলো নিয়ে বারবার ভাবা উচিত। যদি আমাদের নিয়াত এগুলোই হয় তাহলে কতই না ভয়ংকর ব্যাপার ! নাউযুবিল্লাহ।
সবশেষে ঐ হাদিসের দিকে ইঙ্গিত করে নিজেকে ও আমার প্রিয় মুহব্বতের ভাইদেরকে বলতে চাই-
ঐ শহীদকে তো জাহান্নামে উপুড় করে ফেলে দেয়া হবে যে দুনিয়াতে বিখ্যাত হওয়ার জন্য জিহাদ করেছে, আমরা কি আমাদের নফসের চাহিদায় জিহাদ করে এই শাস্তি থেকে বাঁচতে পারবো?
প্রকৃতপক্ষেই কি আমরা আল্লাহর ফরজ হিসেবে জিহাদের কাজে শরীক হচ্ছি বা হতে চাই ? যদি তাই চাই তাহলে কি এই বিষয়ে উমারাদের নির্দেশনাগুলোকে আমলে নিচ্ছি? উপযুক্ত পড়াশুনা ও আমল করছি? নিজেকে ফ্যান্টাসির বাইরে বের করে নিয়ে আসছি ? নিজেকে কি আল্লাহর জিম্মায় বেঁচে দিয়েছি ?
----------
আমার কথায় কেউ কষ্ট পেলে মাফ করে দিবেন। আর কোন ভুল থাকলে জানিয়ে দিবেন ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ্ তায়ালা আমাদেরকে তাঁর শহীদ বান্দাদের মধ্যে কবুল করুন। আমীন
Comment