আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন, ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা সাইয়িদিল আম্বিয়া-ই ওয়াল-মুরসালীন, ওয়া আলা আলিহী, ওয়া আসহাবিহী, ওয়ামান তাবিয়াহুম বি ইহসানিন ইলা ইয়াওমিদ্দীন, মিনাল উলামা ওয়াল মুজাহিদীন ওয়া আম্মাতিল মুসলিমীন। আমীন ইয়া রাব্বাল আ’লামীন।
ভাই ! আমরা সকলেই প্রথমে দুরূদ শরীফ পড়ে নিই।
اللهم صل على محمد وعلى آل محمد، كما صليت على ابراهيم وعلي آل إبراهيم، إنك حميد مجيد، اللهم بارك على محمد وعلى آل محمد، كما باركت على إبراهيم وعلى آل إبراهيم إنك حميد مجيد.
আজকের আলচনার বিষয় - পরীক্ষা ও সবর ।
আল্লাহ সুবহানু তায়ালা পবিত্র কোরআন এ বলেন,
লোকেরা কি মনে করে যে ‘আমরা ঈমান এনেছি’ বললেই তাদেরকে অব্যাহতি দিয়ে দেয়া হবে,আর তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না?-সুরা আনকাবুত
সুবহানাল্লাহ, এক আয়াতই ইমানদারদের জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ কোর'আনে আমাদের বার বার মনে করিয়ে দিয়েছন ,যে তোমাদের পরীক্ষা করা হবেই । অবশ্যই হবে। আল্লাহ সুবহানু তায়ালা আমাদের এই দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন ,পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই করার জন্য । কারা আল্লাহর পুরস্কার পাবার হ্বকদার। আর আল্লাহ্*র পুরস্কার হচ্ছে জান্নাত , সব থেকে দামী বস্তু ।
আল্লাহ তাওফীক দাতা । দুনিয়াতেই আমরা দেখি, যে জিনিসের মূল্য যত বেশী তাঁর জন্য ত্যাগ ও বেশী করতে হয়। আর জিহাদের রাস্তাই হচ্ছে পরীক্ষার । আল্লাহ অবশ্যই আমাদের মধ্যে থেকে বাছাই করবেন কে সত্যবাদী, কে আল্লাহ্*র সাথে ওয়াদাতে অটল থাকে । কে সব কিছুই চাইতে আল্লাহকে ভালোবাসে। আল্লাহ বলেন,
আমি তোমাদেরকে অবশ্য অবশ্যই পরীক্ষা করব যতক্ষণ না আমি জেনে নিতে পারি তোমাদের মধ্যে মুজাহিদ আর ধৈর্যশীলদেরকে, আর তোমাদের অবস্থা যাচাই করতে পারি।-সুরা মুহাম্মাদ
সুবাহান'আল্লাহ,আল্লাহ বলছেন,আল্লাহ মুজাহিদদের থেকে বাছাই করবেন কে ধৈয্যশীল ।
এমনি কি মুহাদ্দিসরা বলেন,আল্লাহ এও বাছাই করবেন যে ,কে শুধুমাত্র আল্লাহ কে খুশি করার জন্য আল্লাহ্*র রাস্তায় এসেছে । আল্লাহ্*র হুকুমকে বাস্তবায়ন করার জন্য জিহাদের পথ কে বেছে নিয়েছে । নাকি তাঁর অন্য কোন উদ্দ্যেশ্য আছে ?
তাঁর উদ্দেশ্য কি শুধুই ইনকিলাব ? শুধুই বীরত্ব জাহির? সবাই তাঁকে মুজাহিদ বলে জানবে,সবাই জানবে ওমুক ভাই জিহাদি মানহায লানন করেন। সবাই সম্মান করবে। সার্কেলে আলাদা একটা দাম পাওয় যাবে !
আর ভাই আল্লাহ তো অন্তরের খরব পর্যন্ত জানেন। কাজেই আল্লাহ পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই করবেন।পরীক্ষার মাধ্যমে আমাদের অন্তর কে প্রস্তুত করবেন, যাতে আমরা এই কঠিন রাস্তাতে অটল থাকতে পারি। যাতে আমরা নিজেদের কে আল্লাহ্*র প্রিয় বান্দায় পরিণত করতে পারি। জান্নাতের জন্য যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।
আর এই পরীক্ষা কিভাবে আসবে, সেটাও আল্লাহ বলে দিচ্ছেন
:
" আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করবো (কখনো) ভয়-ভীতি, (কখনো) ক্ষুধা-অনাহার, (কখনো) তোমাদের জান- মাল ও ফল-ফসলাদির (ব্যবসা বাণিজ্য, চাকুরী ইত্যাদি) ক্ষতি সাধনের মাধ্যমে; (যারা ধৈর্যের সাথে এসকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে) তুমি (সেসকল) ধৈর্যশীলদের (জান্নাতের) সুসংবাদ দাও!" [সুরা বাকারাঃ ২:১৫৫]।
সুবাহান'আল্লাহ এই আয়াত টা আমাদের দুনিয়াবি সামগ্রিক জীবনের একটা বাস্তব চিত্র। মানুষ কেন আল্লাহ রাস্তায় থেকে বিচ্যুত হয়? কেন মানুষ হারামের দিকে ধাবিত হয়? জিহাদ ছেরে দেয় ?কারন সে ভয় পায়, সে মনে করে জিহাদের কথা বললে আমাকে জেলে যেতে হবে, আমাকে চাকুরি হারা হতে হবে, আমার উপর নির্যাতন নেমে আসবে। আমাকে পরিবার ছাড়া হতে হবে।কাজেই আল্লাহ আমাদের আগেই জানিয়ে দিচ্ছেন, যে তোমাদের অবশ্যই পরীক্ষা করা হবে।তোমাদের কিছু সাথী শহিদ হবে, কিছু সাথী গ্রেপ্তার হবে, তোমাদের কে তোমাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করা হবে।যাতে আমরা নিজেদের কে প্রস্তুত করতে পারি । হতাশ না হয়ে যাই। যাতে বলতে না পারি যে আমার উপর পরীক্ষা আসবে এটা আমরা জানতাম না।অথচ আল্লাহ আমাদের আগেই জানিয়ে দিয়েছেন যে অবশ্যই পরীক্ষা করা হবে। আচ্ছা ধরেন এখন যদি আমরা কেও গ্রেপ্তার হই কিংবা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হতে হয় । তাহলে কি আমরা এটা বলার অধিকার রাখি যে,আমরা প্রস্তুত ছিলাম না?
উপস্থিত এক ভাই- জ্বি না ভাই
কেননা আল্লাহ সুবহানু তায়ালা আমাদের আগে থেকেই বিপদ সংকেত দিয়ে রেখেছেন ।
আজকে যারা কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্টে বন্দি । সেদিন ও কি কেও কল্পনা করতে পেরেছিলেন আজকে তাদের সামনে এই পরীক্ষা আসবে? না, ভাই আমার পরীক্ষা এভাবেই আসবে, একদম আকস্মিক ভাবে।
তাই আমাদের অন্তর কে আমাদের প্রস্তুত রাখতে হবে । আমরা যে রাস্তাকে বেছে নিয়েছি তা খুব কঠিন । পরীক্ষার রাস্তা। আর পরীক্ষার মাঝে একটা অন্যতম কঠিন পরীক্ষা হচ্ছে কারাগারের পরীক্ষা।ভাইয়েরা আমার,আমাদের কে মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকা দরকার । আল্লাহ কাছে দূয়া করা দরকার,যেন আল্লাহ এই পরীক্ষায় না ফেলেন,আর ফেলেলেও যেন সবর আর ইস্তেকামাত থাকার তাওফিক দান করেন । আল্লাহ যদি আমাদের তাওফিক না দেন তাহলে কি আমরা পারব এই পরীক্ষা থেকে উত্তরণ হতে?
উপস্তিত ভাই রা- : নাহ ।
কাজেই আমাদের উচিত বেশী বেশী দূয়া করা আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়া । আল্লাহ তাউফিক দিক ।
নফল সলাতের পরিমান বাড়িয়ে দেওয়া, জিকরের অভ্যাস করা ।
ভাই কারাগার যেমন মানুষকে আল্লাহ্*র নিকটবর্তী হবার তাওফিক দেয়, তেমনি অনেক কে বদলেও দেয়। অনেক ভাই আছেন যারা কারাগারে গিয়ে আরো ম্যাচিউর হয়েছেন, নিজের ইমানি হালত মজবুত করছেন। আবার অনেকে আছেন যারা হতাশ হয়ে বের হয়েছেন,নিজেদের উপর পরীক্ষার ব্যাপারে যারা প্রস্তুত ছিলেন না । জেল থেকে বের হয়ে হারামের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছেন। শুধু জিহাদ না বরং আল্লাহ্*র দ্বীন থেকে অনেক দূরে সরে গেছেন ।কাজেই আমরা আমাদের নিয়াত কে পরিশুদ্ধ করি, কেন আমরা এই জিহাদের রাস্তাকে বেছে নিয়েছি ? আমরা আল্লাহ্*র সাথে সৎ হই। যেন পরীক্ষা আসলে আমরা ঝরে না পড়ি ।সেই দিনের কথা চিন্তা করি, যেদিন আমাদের আমলনামা আমাদের সামনে থাকবে, আল্লাহ মুমিন আর মুনাফেকদের সামনে দেয়াল দাড় করিয়ে দেবেন। আল্লাহ যেন মুমিনদের কাতারে রাখেন।সেদিন এক সাথে সলাত আদায় করা ব্যাক্তিও আলাদা হয়ে যাবে। আল্লাহ রহম না করলে কোনো ছাড় নাই ভাই।
হাদিসে এসেছে, এক সাথে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে সলাত আদায় ব্যাক্তিদের সলাতের পার্থক্য এমন হবে যে, যেমন জমিন আর আসমানের পার্থক্য ।
সুবাহান'আল্লাহ। সেদিনে এক সাথে জিহাদ করা ব্যাক্তিরা আলাদা হয়ে যাবে। একসাথে দাওরাহ করা ব্যাক্তিরা আলাদা হয়ে যাবে।
একই ময়দানে শহিদ হওয়া ব্যাক্তিরা আলাদা হয়ে যাবে। কেন আলাদা হবে? বাহ্যিক ভাবে তো দেখা যাচ্ছে যে সবাই আমল একই। অথচ তাদের আমলের মাঝে পার্থক্য ছিল জমিন আসমানের । তাদের উদ্দ্যেশের কারণে ।
আমরা একটু চিন্তা করি, একটু ফিকির করি নিজেদের হালত নিয়ে ।
আল্লাহ আমাদের তাঁর বিশেষ অনুগ্রহ করে আল্লাহ রাস্তায় জিহাদ ও দাওয়াহ এর জন্য একত্রিত করেছেন। আমরা নিজেরা কতটা এই কাজেই ব্যাপারে সৎ? কতটা আমরা দিতে পারতাম কতটা দিচ্ছি ? কেও না জানুন আল্লাহ তো জানেন। এটা চিন্তা করলেই আসলে কিছুটা বুঝে আসে। আল্লাহ আমাদের পুরাটা এই কাজে দেবার তাওফীক দিন।
কাজেই এক দিকে যেমন পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকা, কারন আল্লাহ আমাদের জানিয়েই দিয়েছেন যে পরীক্ষা আসবে। আল্লাহ কসম খেয়ে বলছেন পরীক্ষা আসবে। আল্লাহ যাচাই করে নেবেন কে সত্যবাদি, কে নয়। যেন আমরা একদিকে যেমন প্রস্তুত থাকতে পারি ।
আরেক দিকে যেন নিজেদের সত্যবাদি হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। যেন আল্লাহ্*র রাস্তায় সবর আর ইস্তেকামাতের সাথে লেগে থাকতে পারি। যেন ঝাড় এসে আমাদের সহজে উপড়ে ফেলতে না পারে। যে বাধাই আসুক পরীক্ষা আসুক, আল্লাহ যেহেতু আমাদের আগেই সাবধান করেছেন, আমরা যেন তা মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারি। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুক ।
আল্লাহ পরীক্ষার মাধ্যমে মাধ্যমে আমাদের বাছাই করবেন
আর পরীক্ষার সাথে যে বিষয়টা জরিয়ে আছে, সেটা হচ্ছে সবর।
এখন কথা হচ্ছে আমরা এই কঠিন সময়ে কিভাবে সবর করব?
এর একটি উপায় হচ্ছে আমাদের মধ্যে মৃত্যু আর আখেরাতের আকিদাকে মজবুত করা ।
যখন আমাদের মাঝে মৃত্যুর আকিদা মজুবুত হবে, এই দুনিয়া আমাদের জন্য না এই দুনিয়া তো ক্ষণস্থায়ী । আমরা আল্লাহ্*র কাছে আজর পাবো জান্নাতে। তাহলে আমাদের জন্য সবর করা সহজ হয়ে যাবে। চিন্তা করুন যে কফফাররা মুসলিমদের উপর যে পরিমাণ নির্যাতন চালাচ্ছে দুনিয়াতে তাঁর শোধ নেওয়া কি সম্ভব?
উপস্তিত এক ভাই- নাহ
প্রকৃত বদলা তো হবে আখেরাতে। দুনিয়াতে আমরা তাদের যতই যন্ত্রনা দিয়ে হত্যা করি না কেন, তাদের অপরাধের তুলনার তা খুব সামান্য । কাজেই আখেরাত হচ্ছে প্রকৃত জাযাহ পাবার জায়গা। সেখানে আমরা আমাদের রবের সাথে মিলিত হবো ।
যখন আমরা এই আকিদাকে বন্ধমুল করে নেব, আমাদের জন্য সবর করা সহজ হবে। আমাদের বন্দিত্ব, আমাদের ত্যাগ সব কিছুই মধুর মনে হবে। কেননা আমরা এর বিনিময়ে সব থেকে দামি বস্ত জান্নাত পাবো । রবের সাক্ষাত পাবো ।
জান্নাতের নিয়ামত ব্যাপারে চিন্তা করব, আমরা সেখানে আমাদের প্রিয় মানুষদের সাথে মিলিত হবো । সব থেকে বড় কথা আমরা আমাদের রবের সাক্ষাত পাবো । যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন ,সেই রবের সাক্ষাত পাবো ।
চিন্তা করি যারা সব কিছু ছেড়ে, নিজেদের পরিবার স্ত্রী সব ছেড়ে হিজরত করেন তাদের অবস্থা। তাদের কাছে তো তাদের সাথীরা সব থেকে আপন। যখন সাথীদের কেও শাহাদাত লাভ করে,তখন তাদের মনের অবস্থা কি হয়?
শাইখ আইমানের কথাই ধরুন,শাইখ উসামা শহিদ হলেন, মোল্লা উমার মারা গেলেন, আবু যুবাইদা,শাইখ খালিদ,আবু ফারিস, রাহিমাহুল্লাহ। একে একে সবাই যারা তাঁর কাছের মানুষ ছিলেন তারা সবাই রবের ডাকে সারা দিলেন। যদি জান্নাতে মিলিত হবার ওয়াদা না থাকত তাহলে কি বান্দার পক্ষে সুস্থ থাকা সম্ভব? সেতো পাগল হয়ে যেত ।
আমরা বেশী বেশী জান্নাতের ব্যাপারে ভাবব, তাহলে আমাদের পরীক্ষা আমদের জন্য সহজ মনে হবে।
মৃত্যুর আকিদা বুলন্দ করার আরো একটা ফায়দা হচ্ছে দুনিয়া বিমুখতা সৃষ্টি করে, দুনিয়ার সম্পদের প্রতি ভালবাসা নস্ট করে দেয়। যার ফলে অন্তর পরিশুদ্ধ হয়।
একই ভাবে কাফেরদের কাছে দাওয়াহ পৌছানোর মাধ্যম। কাফেররা পর্যন্ত চিন্তায় পড়ে যায়। কিসের লোভে, কি এমন জিনিসের জন্য এইসব যুবকরা নিজেদের জীবন দিচ্ছে।
যখন বেলাল রাদি এর উপর অত্যাচার করা হতো কাফেররা অবাক হয়ে যেত। কিভাবে এত নির্যাতন সহ্য করে !
মৃত্যুকে বেশী বেশী স্মরণকরি ভাই, কেননা মৃত্যু সুখ শান্তি বিনষ্টকারী।
আরো একটি উপায় হচ্ছে , সাহাবাদের ব্যাপারে জানা , তাদের ত্যাগের ব্যাপারে জানা । সাহাবাদের হচ্ছেন মিয়ারে হ্বক । উম্মাহ জন্য উত্তম আদর্শ । আমরা যখন সাহাবাদের আমলের সামনে , তাদের পরীক্ষার সামনে আমাদের পরীক্ষার তুলনা করব । তখন নিজেদের আমল , ত্যাগ পরীক্ষাকে তুচ্ছ মনে হবে । সাহবারা দ্বীনের জন্য কি পরিমাণ ত্যাগ করেছেন । নিজেদের জান মাল কে আল্লাহর রাস্তায় বিলিয়ে দিয়েছেন । সুবাহান’আল্লাহ , সুহাইব রুমি(রাদিঃ) প্রথমে জীবনে কৃতদাস ছিলেন । এরপর স্বাধীন হলেন , অনেক সম্পদের মালিক হলেন । যখন হিজরতের সময় আসল ? এক কথাতে সব ত্যাগ করে চলে গেলেন ? কি ব্যাবসা? আল্লাহ পর্যন্ত খুশি হয়ে গেলেন । আয়াত নাজিল করে জানিয়ে দিলেন । মুসআব ইবনে উমাইর (রাদিঃ) মক্কার সব থেকে সভ্রান্ত যুবক । যার পড়নে শোভা পেত সব থেকে দামী পোশাক । তাকে যখন দাফন করা হচ্ছিল পুরো শরীর ঢাকার জন্য কাপড় পাওয়া যাচ্ছিল না । ভাই সাহাবাদের ব্যাপারে যত বলব ততই নিজেদের কে তুচ্ছ মনে হবে । কাজেই যখনি মনে হবে আমরা অনেক কস্টে আছি , কারাগারে আছি , আনসার হাউজে আছি , পরিবার থেকে দূরে আছি । ভাই সাহাবাদের ব্যাপারে চিন্তা করব । তাদের এত ত্যাগের পরেও তারা কি পরিমাণ আল্লাহ কে ভয় পেতেন । আর আমরা !! একটু ফিকির করি ভাই । একটু ফিকির করি । আল্লাহ আমাদের এত নিয়ামত দিয়েছেন , বছরের পর বছর আমাদের মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নেওয়ার তাওফিক দিয়েছেন । যদি আমাদের উপর কোন পরীক্ষা আসে , সেটা কি এই নিয়ামতের তুলনার কিছু? হায় আফসোস যিনি আমাদের জীবন দিয়েছেন সেই মহান সন্তুষ্টির রবের জন্য যদি আমাদের পরীক্ষা উপস্থিত হয় তাহলে আমরা কিভাবে হতাশ হতে পারি? আমরা কিভাবে আমাদের পালনকর্তার এত নিয়ামতের ব্যাপারে অভিযোগ করতে পারি?
আল্লাহ আমাদের অন্তর কে পরিশুদ্ধ করে দিক । আমাদের অন্তর থেকে যাবতীয় দুনিয়া প্রেম, ভয় ভীতি দূর করে দিক ।
ভাই ! আমরা সকলেই প্রথমে দুরূদ শরীফ পড়ে নিই।
اللهم صل على محمد وعلى آل محمد، كما صليت على ابراهيم وعلي آل إبراهيم، إنك حميد مجيد، اللهم بارك على محمد وعلى آل محمد، كما باركت على إبراهيم وعلى آل إبراهيم إنك حميد مجيد.
আজকের আলচনার বিষয় - পরীক্ষা ও সবর ।
আল্লাহ সুবহানু তায়ালা পবিত্র কোরআন এ বলেন,
লোকেরা কি মনে করে যে ‘আমরা ঈমান এনেছি’ বললেই তাদেরকে অব্যাহতি দিয়ে দেয়া হবে,আর তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না?-সুরা আনকাবুত
সুবহানাল্লাহ, এক আয়াতই ইমানদারদের জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ কোর'আনে আমাদের বার বার মনে করিয়ে দিয়েছন ,যে তোমাদের পরীক্ষা করা হবেই । অবশ্যই হবে। আল্লাহ সুবহানু তায়ালা আমাদের এই দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন ,পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই করার জন্য । কারা আল্লাহর পুরস্কার পাবার হ্বকদার। আর আল্লাহ্*র পুরস্কার হচ্ছে জান্নাত , সব থেকে দামী বস্তু ।
আল্লাহ তাওফীক দাতা । দুনিয়াতেই আমরা দেখি, যে জিনিসের মূল্য যত বেশী তাঁর জন্য ত্যাগ ও বেশী করতে হয়। আর জিহাদের রাস্তাই হচ্ছে পরীক্ষার । আল্লাহ অবশ্যই আমাদের মধ্যে থেকে বাছাই করবেন কে সত্যবাদী, কে আল্লাহ্*র সাথে ওয়াদাতে অটল থাকে । কে সব কিছুই চাইতে আল্লাহকে ভালোবাসে। আল্লাহ বলেন,
আমি তোমাদেরকে অবশ্য অবশ্যই পরীক্ষা করব যতক্ষণ না আমি জেনে নিতে পারি তোমাদের মধ্যে মুজাহিদ আর ধৈর্যশীলদেরকে, আর তোমাদের অবস্থা যাচাই করতে পারি।-সুরা মুহাম্মাদ
সুবাহান'আল্লাহ,আল্লাহ বলছেন,আল্লাহ মুজাহিদদের থেকে বাছাই করবেন কে ধৈয্যশীল ।
এমনি কি মুহাদ্দিসরা বলেন,আল্লাহ এও বাছাই করবেন যে ,কে শুধুমাত্র আল্লাহ কে খুশি করার জন্য আল্লাহ্*র রাস্তায় এসেছে । আল্লাহ্*র হুকুমকে বাস্তবায়ন করার জন্য জিহাদের পথ কে বেছে নিয়েছে । নাকি তাঁর অন্য কোন উদ্দ্যেশ্য আছে ?
তাঁর উদ্দেশ্য কি শুধুই ইনকিলাব ? শুধুই বীরত্ব জাহির? সবাই তাঁকে মুজাহিদ বলে জানবে,সবাই জানবে ওমুক ভাই জিহাদি মানহায লানন করেন। সবাই সম্মান করবে। সার্কেলে আলাদা একটা দাম পাওয় যাবে !
আর ভাই আল্লাহ তো অন্তরের খরব পর্যন্ত জানেন। কাজেই আল্লাহ পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই করবেন।পরীক্ষার মাধ্যমে আমাদের অন্তর কে প্রস্তুত করবেন, যাতে আমরা এই কঠিন রাস্তাতে অটল থাকতে পারি। যাতে আমরা নিজেদের কে আল্লাহ্*র প্রিয় বান্দায় পরিণত করতে পারি। জান্নাতের জন্য যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।
আর এই পরীক্ষা কিভাবে আসবে, সেটাও আল্লাহ বলে দিচ্ছেন
:
" আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করবো (কখনো) ভয়-ভীতি, (কখনো) ক্ষুধা-অনাহার, (কখনো) তোমাদের জান- মাল ও ফল-ফসলাদির (ব্যবসা বাণিজ্য, চাকুরী ইত্যাদি) ক্ষতি সাধনের মাধ্যমে; (যারা ধৈর্যের সাথে এসকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে) তুমি (সেসকল) ধৈর্যশীলদের (জান্নাতের) সুসংবাদ দাও!" [সুরা বাকারাঃ ২:১৫৫]।
সুবাহান'আল্লাহ এই আয়াত টা আমাদের দুনিয়াবি সামগ্রিক জীবনের একটা বাস্তব চিত্র। মানুষ কেন আল্লাহ রাস্তায় থেকে বিচ্যুত হয়? কেন মানুষ হারামের দিকে ধাবিত হয়? জিহাদ ছেরে দেয় ?কারন সে ভয় পায়, সে মনে করে জিহাদের কথা বললে আমাকে জেলে যেতে হবে, আমাকে চাকুরি হারা হতে হবে, আমার উপর নির্যাতন নেমে আসবে। আমাকে পরিবার ছাড়া হতে হবে।কাজেই আল্লাহ আমাদের আগেই জানিয়ে দিচ্ছেন, যে তোমাদের অবশ্যই পরীক্ষা করা হবে।তোমাদের কিছু সাথী শহিদ হবে, কিছু সাথী গ্রেপ্তার হবে, তোমাদের কে তোমাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করা হবে।যাতে আমরা নিজেদের কে প্রস্তুত করতে পারি । হতাশ না হয়ে যাই। যাতে বলতে না পারি যে আমার উপর পরীক্ষা আসবে এটা আমরা জানতাম না।অথচ আল্লাহ আমাদের আগেই জানিয়ে দিয়েছেন যে অবশ্যই পরীক্ষা করা হবে। আচ্ছা ধরেন এখন যদি আমরা কেও গ্রেপ্তার হই কিংবা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হতে হয় । তাহলে কি আমরা এটা বলার অধিকার রাখি যে,আমরা প্রস্তুত ছিলাম না?
উপস্থিত এক ভাই- জ্বি না ভাই
কেননা আল্লাহ সুবহানু তায়ালা আমাদের আগে থেকেই বিপদ সংকেত দিয়ে রেখেছেন ।
আজকে যারা কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্টে বন্দি । সেদিন ও কি কেও কল্পনা করতে পেরেছিলেন আজকে তাদের সামনে এই পরীক্ষা আসবে? না, ভাই আমার পরীক্ষা এভাবেই আসবে, একদম আকস্মিক ভাবে।
তাই আমাদের অন্তর কে আমাদের প্রস্তুত রাখতে হবে । আমরা যে রাস্তাকে বেছে নিয়েছি তা খুব কঠিন । পরীক্ষার রাস্তা। আর পরীক্ষার মাঝে একটা অন্যতম কঠিন পরীক্ষা হচ্ছে কারাগারের পরীক্ষা।ভাইয়েরা আমার,আমাদের কে মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকা দরকার । আল্লাহ কাছে দূয়া করা দরকার,যেন আল্লাহ এই পরীক্ষায় না ফেলেন,আর ফেলেলেও যেন সবর আর ইস্তেকামাত থাকার তাওফিক দান করেন । আল্লাহ যদি আমাদের তাওফিক না দেন তাহলে কি আমরা পারব এই পরীক্ষা থেকে উত্তরণ হতে?
উপস্তিত ভাই রা- : নাহ ।
কাজেই আমাদের উচিত বেশী বেশী দূয়া করা আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়া । আল্লাহ তাউফিক দিক ।
নফল সলাতের পরিমান বাড়িয়ে দেওয়া, জিকরের অভ্যাস করা ।
ভাই কারাগার যেমন মানুষকে আল্লাহ্*র নিকটবর্তী হবার তাওফিক দেয়, তেমনি অনেক কে বদলেও দেয়। অনেক ভাই আছেন যারা কারাগারে গিয়ে আরো ম্যাচিউর হয়েছেন, নিজের ইমানি হালত মজবুত করছেন। আবার অনেকে আছেন যারা হতাশ হয়ে বের হয়েছেন,নিজেদের উপর পরীক্ষার ব্যাপারে যারা প্রস্তুত ছিলেন না । জেল থেকে বের হয়ে হারামের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছেন। শুধু জিহাদ না বরং আল্লাহ্*র দ্বীন থেকে অনেক দূরে সরে গেছেন ।কাজেই আমরা আমাদের নিয়াত কে পরিশুদ্ধ করি, কেন আমরা এই জিহাদের রাস্তাকে বেছে নিয়েছি ? আমরা আল্লাহ্*র সাথে সৎ হই। যেন পরীক্ষা আসলে আমরা ঝরে না পড়ি ।সেই দিনের কথা চিন্তা করি, যেদিন আমাদের আমলনামা আমাদের সামনে থাকবে, আল্লাহ মুমিন আর মুনাফেকদের সামনে দেয়াল দাড় করিয়ে দেবেন। আল্লাহ যেন মুমিনদের কাতারে রাখেন।সেদিন এক সাথে সলাত আদায় করা ব্যাক্তিও আলাদা হয়ে যাবে। আল্লাহ রহম না করলে কোনো ছাড় নাই ভাই।
হাদিসে এসেছে, এক সাথে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে সলাত আদায় ব্যাক্তিদের সলাতের পার্থক্য এমন হবে যে, যেমন জমিন আর আসমানের পার্থক্য ।
সুবাহান'আল্লাহ। সেদিনে এক সাথে জিহাদ করা ব্যাক্তিরা আলাদা হয়ে যাবে। একসাথে দাওরাহ করা ব্যাক্তিরা আলাদা হয়ে যাবে।
একই ময়দানে শহিদ হওয়া ব্যাক্তিরা আলাদা হয়ে যাবে। কেন আলাদা হবে? বাহ্যিক ভাবে তো দেখা যাচ্ছে যে সবাই আমল একই। অথচ তাদের আমলের মাঝে পার্থক্য ছিল জমিন আসমানের । তাদের উদ্দ্যেশের কারণে ।
আমরা একটু চিন্তা করি, একটু ফিকির করি নিজেদের হালত নিয়ে ।
আল্লাহ আমাদের তাঁর বিশেষ অনুগ্রহ করে আল্লাহ রাস্তায় জিহাদ ও দাওয়াহ এর জন্য একত্রিত করেছেন। আমরা নিজেরা কতটা এই কাজেই ব্যাপারে সৎ? কতটা আমরা দিতে পারতাম কতটা দিচ্ছি ? কেও না জানুন আল্লাহ তো জানেন। এটা চিন্তা করলেই আসলে কিছুটা বুঝে আসে। আল্লাহ আমাদের পুরাটা এই কাজে দেবার তাওফীক দিন।
কাজেই এক দিকে যেমন পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকা, কারন আল্লাহ আমাদের জানিয়েই দিয়েছেন যে পরীক্ষা আসবে। আল্লাহ কসম খেয়ে বলছেন পরীক্ষা আসবে। আল্লাহ যাচাই করে নেবেন কে সত্যবাদি, কে নয়। যেন আমরা একদিকে যেমন প্রস্তুত থাকতে পারি ।
আরেক দিকে যেন নিজেদের সত্যবাদি হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। যেন আল্লাহ্*র রাস্তায় সবর আর ইস্তেকামাতের সাথে লেগে থাকতে পারি। যেন ঝাড় এসে আমাদের সহজে উপড়ে ফেলতে না পারে। যে বাধাই আসুক পরীক্ষা আসুক, আল্লাহ যেহেতু আমাদের আগেই সাবধান করেছেন, আমরা যেন তা মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারি। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুক ।
আল্লাহ পরীক্ষার মাধ্যমে মাধ্যমে আমাদের বাছাই করবেন
আর পরীক্ষার সাথে যে বিষয়টা জরিয়ে আছে, সেটা হচ্ছে সবর।
এখন কথা হচ্ছে আমরা এই কঠিন সময়ে কিভাবে সবর করব?
এর একটি উপায় হচ্ছে আমাদের মধ্যে মৃত্যু আর আখেরাতের আকিদাকে মজবুত করা ।
যখন আমাদের মাঝে মৃত্যুর আকিদা মজুবুত হবে, এই দুনিয়া আমাদের জন্য না এই দুনিয়া তো ক্ষণস্থায়ী । আমরা আল্লাহ্*র কাছে আজর পাবো জান্নাতে। তাহলে আমাদের জন্য সবর করা সহজ হয়ে যাবে। চিন্তা করুন যে কফফাররা মুসলিমদের উপর যে পরিমাণ নির্যাতন চালাচ্ছে দুনিয়াতে তাঁর শোধ নেওয়া কি সম্ভব?
উপস্তিত এক ভাই- নাহ
প্রকৃত বদলা তো হবে আখেরাতে। দুনিয়াতে আমরা তাদের যতই যন্ত্রনা দিয়ে হত্যা করি না কেন, তাদের অপরাধের তুলনার তা খুব সামান্য । কাজেই আখেরাত হচ্ছে প্রকৃত জাযাহ পাবার জায়গা। সেখানে আমরা আমাদের রবের সাথে মিলিত হবো ।
যখন আমরা এই আকিদাকে বন্ধমুল করে নেব, আমাদের জন্য সবর করা সহজ হবে। আমাদের বন্দিত্ব, আমাদের ত্যাগ সব কিছুই মধুর মনে হবে। কেননা আমরা এর বিনিময়ে সব থেকে দামি বস্ত জান্নাত পাবো । রবের সাক্ষাত পাবো ।
জান্নাতের নিয়ামত ব্যাপারে চিন্তা করব, আমরা সেখানে আমাদের প্রিয় মানুষদের সাথে মিলিত হবো । সব থেকে বড় কথা আমরা আমাদের রবের সাক্ষাত পাবো । যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন ,সেই রবের সাক্ষাত পাবো ।
চিন্তা করি যারা সব কিছু ছেড়ে, নিজেদের পরিবার স্ত্রী সব ছেড়ে হিজরত করেন তাদের অবস্থা। তাদের কাছে তো তাদের সাথীরা সব থেকে আপন। যখন সাথীদের কেও শাহাদাত লাভ করে,তখন তাদের মনের অবস্থা কি হয়?
শাইখ আইমানের কথাই ধরুন,শাইখ উসামা শহিদ হলেন, মোল্লা উমার মারা গেলেন, আবু যুবাইদা,শাইখ খালিদ,আবু ফারিস, রাহিমাহুল্লাহ। একে একে সবাই যারা তাঁর কাছের মানুষ ছিলেন তারা সবাই রবের ডাকে সারা দিলেন। যদি জান্নাতে মিলিত হবার ওয়াদা না থাকত তাহলে কি বান্দার পক্ষে সুস্থ থাকা সম্ভব? সেতো পাগল হয়ে যেত ।
আমরা বেশী বেশী জান্নাতের ব্যাপারে ভাবব, তাহলে আমাদের পরীক্ষা আমদের জন্য সহজ মনে হবে।
মৃত্যুর আকিদা বুলন্দ করার আরো একটা ফায়দা হচ্ছে দুনিয়া বিমুখতা সৃষ্টি করে, দুনিয়ার সম্পদের প্রতি ভালবাসা নস্ট করে দেয়। যার ফলে অন্তর পরিশুদ্ধ হয়।
একই ভাবে কাফেরদের কাছে দাওয়াহ পৌছানোর মাধ্যম। কাফেররা পর্যন্ত চিন্তায় পড়ে যায়। কিসের লোভে, কি এমন জিনিসের জন্য এইসব যুবকরা নিজেদের জীবন দিচ্ছে।
যখন বেলাল রাদি এর উপর অত্যাচার করা হতো কাফেররা অবাক হয়ে যেত। কিভাবে এত নির্যাতন সহ্য করে !
মৃত্যুকে বেশী বেশী স্মরণকরি ভাই, কেননা মৃত্যু সুখ শান্তি বিনষ্টকারী।
আরো একটি উপায় হচ্ছে , সাহাবাদের ব্যাপারে জানা , তাদের ত্যাগের ব্যাপারে জানা । সাহাবাদের হচ্ছেন মিয়ারে হ্বক । উম্মাহ জন্য উত্তম আদর্শ । আমরা যখন সাহাবাদের আমলের সামনে , তাদের পরীক্ষার সামনে আমাদের পরীক্ষার তুলনা করব । তখন নিজেদের আমল , ত্যাগ পরীক্ষাকে তুচ্ছ মনে হবে । সাহবারা দ্বীনের জন্য কি পরিমাণ ত্যাগ করেছেন । নিজেদের জান মাল কে আল্লাহর রাস্তায় বিলিয়ে দিয়েছেন । সুবাহান’আল্লাহ , সুহাইব রুমি(রাদিঃ) প্রথমে জীবনে কৃতদাস ছিলেন । এরপর স্বাধীন হলেন , অনেক সম্পদের মালিক হলেন । যখন হিজরতের সময় আসল ? এক কথাতে সব ত্যাগ করে চলে গেলেন ? কি ব্যাবসা? আল্লাহ পর্যন্ত খুশি হয়ে গেলেন । আয়াত নাজিল করে জানিয়ে দিলেন । মুসআব ইবনে উমাইর (রাদিঃ) মক্কার সব থেকে সভ্রান্ত যুবক । যার পড়নে শোভা পেত সব থেকে দামী পোশাক । তাকে যখন দাফন করা হচ্ছিল পুরো শরীর ঢাকার জন্য কাপড় পাওয়া যাচ্ছিল না । ভাই সাহাবাদের ব্যাপারে যত বলব ততই নিজেদের কে তুচ্ছ মনে হবে । কাজেই যখনি মনে হবে আমরা অনেক কস্টে আছি , কারাগারে আছি , আনসার হাউজে আছি , পরিবার থেকে দূরে আছি । ভাই সাহাবাদের ব্যাপারে চিন্তা করব । তাদের এত ত্যাগের পরেও তারা কি পরিমাণ আল্লাহ কে ভয় পেতেন । আর আমরা !! একটু ফিকির করি ভাই । একটু ফিকির করি । আল্লাহ আমাদের এত নিয়ামত দিয়েছেন , বছরের পর বছর আমাদের মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নেওয়ার তাওফিক দিয়েছেন । যদি আমাদের উপর কোন পরীক্ষা আসে , সেটা কি এই নিয়ামতের তুলনার কিছু? হায় আফসোস যিনি আমাদের জীবন দিয়েছেন সেই মহান সন্তুষ্টির রবের জন্য যদি আমাদের পরীক্ষা উপস্থিত হয় তাহলে আমরা কিভাবে হতাশ হতে পারি? আমরা কিভাবে আমাদের পালনকর্তার এত নিয়ামতের ব্যাপারে অভিযোগ করতে পারি?
আল্লাহ আমাদের অন্তর কে পরিশুদ্ধ করে দিক । আমাদের অন্তর থেকে যাবতীয় দুনিয়া প্রেম, ভয় ভীতি দূর করে দিক ।
Comment