ইদারায়ে সাহাব মিডিয়া, উপমহাদেশ পরিবেশিত
“আমল সংশোধনের”।। উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ
এর থেকে || ২য় পর্ব
==================================================
=====
“আমল সংশোধনের”।। উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ
এর থেকে || ২য় পর্ব
==================================================
=====
আরেকটি বিষয় হলো, বর্ণিত হয়েছে:
وتقيم الصلاة
“নামায কায়েম করো।”
وتؤتي الزكاة
“যাকাত আদায় করো।”
وتصوم رمضان
“এবং রমযানের রোযা রাখো।”
وتحج البيت
“এবং হজ পালন করো।”
وتقيم الصلاة
“নামায কায়েম করো।”
وتؤتي الزكاة
“যাকাত আদায় করো।”
وتصوم رمضان
“এবং রমযানের রোযা রাখো।”
وتحج البيت
“এবং হজ পালন করো।”
এগুলো ফরযের আলোচনা। এগুলো হলো এমন আমল, যা ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে।
"ثم قال ألا أدلك على أبواب الخير؟"
"
"
এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-আমি কি তোমাকে কল্যাণের দ্বার সম্পর্কে বলে দিবো না? "
কল্যাণের দরজা কী? এখানে কল্যাণের দরজা দ্বারা উদ্দেশ্য কী? উদ্দেশ্য হলো নফল আমল।
তিনি বলেন:
الصوم جنة
“রোযা হচ্ছে ঢাল।”
والصدقة تطفئ الخطيئة كما يطفئ النار الماء.
“সাদাকা গুনাহকে এমনভাবে বিলুপ্ত করে দেয়, যেমনভাবে পানি আগুনকে নিভিয়ে দেয়।”
وصلاة الرجل في جوف الليل
“এবং ব্যক্তির গভীর রাতের নামায।” অর্থাৎ রাতের শেষাংশে তাহাজ্জুদের নামায।
এরপর তিনি পাঠ করলেন:
الصوم جنة
“রোযা হচ্ছে ঢাল।”
والصدقة تطفئ الخطيئة كما يطفئ النار الماء.
“সাদাকা গুনাহকে এমনভাবে বিলুপ্ত করে দেয়, যেমনভাবে পানি আগুনকে নিভিয়ে দেয়।”
وصلاة الرجل في جوف الليل
“এবং ব্যক্তির গভীর রাতের নামায।” অর্থাৎ রাতের শেষাংশে তাহাজ্জুদের নামায।
এরপর তিনি পাঠ করলেন:
تَتَجَافَىٰ جُنُوبُهُمۡ عَنِ ٱلۡمَضَاجِعِ يَدۡعُونَ رَبَّهُمۡ خَوۡفا وَطَمَعا وَمِمَّا رَزَقۡنَٰهُمۡ يُنفِقُونَ [السجدة: 16]
"তাদের পার্শ্বদেশ বিছানা থেকে পৃথক থাকে; তারা আল্লাহকে ডাকে, আল্লাহকে স্মরণ করে ভয় ও আশার সাথে, এবং আল্লাহ তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছেন তা থেকে ব্যয় করে।” (সূরা সাজদা ৩২:১৬)
এরপর তিনি বলেন:
فَلَا تَعۡلَمُ نَفۡس مَّآ أُخۡفِيَ لَهُم مِّن قُرَّةِ أَعۡيُنجَزَآءَۢ بِمَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ [السجدة: 17]
“নফস জানে না, মানুষ নিজেও জানে না যে, আল্লাহ তাআলা তাদের চক্ষু শীতল করার জন্য কী রেখেছেন। এটি তার প্রতিদান—যা তারা করেছে।” (সূরা সাজদা ৩২:১৭)
হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দুই আয়াতের আলোচনা উল্লেখ করেছেন।
সুতরাং এই ‘আবওয়াবুল খায়ের’ তথা ‘খায়েরের দরজা’ দ্বারা উদ্দেশ্য হল নাওয়াফেল (নফল)। কারণ, আপনি যখন নফল আদায় করবেন, তখন আপনি ফরয ভালোভাবে আদায় করতে পারবেন। আলেমগণ বলেন-
من ترك الأدب عوقب بحرمان النوافل ومن ترك النوافل عوقب بحرمان السنن ومن ترك السنن عوقب بحرمان الفرائض ومن ترك الفرائض يوشك ان يعاقب بحرمان المعرفة.
‘ইসলামী শিষ্টাচার বর্জন, ব্যক্তিকে নফল ইবাদত থেকে বঞ্চিত করে। নফল ইবাদত ছেড়ে দেয়া, ব্যক্তিকে সুন্নত ছেড়ে দেয়ার দিকে নিয়ে যায়। সুন্নত ছাড়লে ব্যক্তি ফরয ইবাদত থেকে বঞ্চিত হয়। আর কেউ যদি ফরয ইবাদত ছেড়ে দেয়, তাহলে তার ঈমান চলে যাওয়ারও আশঙ্কা থেকে যায়’।
এই আদব, নফল, সুন্নত, ফরয এবং ঈমান ও মারেফাত, এগুলো নিচের দিক থেকে উপরের দিকে যায়। তাই আলেমগণ বলেন, যে ব্যক্তি আদব ছেড়ে দেয় এর ফলসরূপ সে নফল থেকে মাহরূম হয়। যে ব্যক্তি নফল ছেড়ে দেয়, সে সুন্নত থেকে বঞ্চিত হয়। আর যে সুন্নতের মধ্যে ত্রুটি করে, তার ফরয ভালোভাবে আদায় হয় না। আর যে ব্যক্তি ফরযের মাঝে ত্রুটি করে সে আল্লাহ তাআলার মারেফত থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় থাকে।
তাই আমরা যদি আল্লাহ তাআলার মারেফাত থেকে বঞ্চিত না হতে চাই, তাহলে আমাদের ফরয আদায় করতে হবে। আর ফরয আদায়ের পাশাপাশি এই ফিকির থাকতে হবে যে, ফরয সঠিক ভাবে আদায় করার জন্য সুন্নত আদায় করতে হবে। আর সুন্নত সঠিকভাবে আদায় করতে হলে নফল আদায় করতে হবে।
নফলের মাঝে কমতি থাকলে, দেখতে হবে আদবগুলো আদায় হচ্ছে কি না। আল্লাহ তাআলার সাথে, আল্লাহর দীনের সাথে, উলামায়ে কেরামগণের সাথে এবং নিজেদের সাথি-সঙ্গীদের সাথে আদব রক্ষা হচ্ছে কি না? আদবের কমতির কারণে নফলের তাওফীক উঠে যায়, এমনকি একপর্যায়ে আল্লাহ তাআলার মারেফত (ঈমান) পর্যন্ত উঠে যায়। তাই এই নাওয়াফেলকেই আবওয়াবুল খায়ের তথা খায়েরের দরজা বলা হয়েছে।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আমি কি তোমাকে বলে দেবো না, এই দীনের মূল কী! এর খুঁটি কী! এবং দীনের স্বচ্ছ চূড়া কী!” তখন মুয়াজ ইবনে জাবাল রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “অবশ্যই বলুন হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম!” তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন;
راس الامر الاسلام
“দীনের মূল হল ইসলাম”,
و عموده الصلاة
“আর দীনের খুঁটি হল নামায”,
وذروة سنامه الجهاد
“আর এর স্বচ্ছ চূড়া হল জিহাদ।”
দেখুন! এখানে ইসলামের কথা উল্লেখ হয়েছে, নামাযের কথা উল্লেখ হয়েছে এবং জিহাদের কথা উল্লেখ হয়েছে। আর জিহাদের ব্যাপারে বলা হয়েছে যে, এটা হল স্বচ্ছ চূড়া। উটের যেটা কুজ হয় সেটা উপরে হয়, এভাবে দীনের যেটা স্বচ্ছ চূড়া, সেটা হল জিহাদ। কেননা, এতে কষ্ট করতে হয়, সবর করতে হয়, দুশমনের মোকাবেলা করতে হয়। অর্থাৎ এতে বহুমুখী সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, তাই এটাকে স্বচ্ছ চূড়া বলা হয়েছে। আর স্বচ্ছ চূড়া যেমন সবাই দেখতে পায়, অনুরূপ জিহাদে যেসব আমল হয়, শত্রুর মোকাবেলার মধ্য দিয়ে জিহাদের সময় যে পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং নিজেদের মাঝে যেসব আমল হয়, এগুলো উম্মতের নজরে আসে, সকল মানুষের দৃষ্টিগোচর হয়। এই জন্য জিহাদের মধ্যে ভালো আমল ও ভালো কর্মপদ্ধতি গ্রহণ করা জিহাদী আন্দোলনের জন্য আবশ্যক। আর যখন এর মধ্যে ভুল হবে তখন এর প্রভাব চলে যাবে।
আরও পড়ুন
Comment