Announcement

Collapse
No announcement yet.

পাঠচক্র- ১৩ || আমল সংশোধনের উপায় ।। উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ || শেষ পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • পাঠচক্র- ১৩ || আমল সংশোধনের উপায় ।। উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ || শেষ পর্ব

    ইদারায়ে সাহাব মিডিয়া, উপমহাদেশ পরিবেশিত
    আমল সংশোধনের।।উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ
    এর থেকে || শেষ পর্ব


    ==================================================
    =====


    তাকওয়া অর্জনের মাধ্যম কি? তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমই হল –

    ﴿وَقُولُواْ قَوۡلٗا سَدِيدٗا ﴾ [الأحزاب: 70[


    সঠিক কথা বলা।

    এর উপর আমল হবে তখন, যখন আমাদের মাঝে তাকওয়া থাকবে।


    ﴿يُصۡلِحۡ لَكُمۡ أَعۡمَٰلَكُمۡ ﴾ [الأحزاب: 71[


    যখন সত্য কথা বলা হবে, শরীয়ত অনুযায়ী কথা বলা হবে, ইনসাফের কথা বলা হবে, তখন আল্লাহ তোমাদের আমল সংশোধন করে দিবেন। আমাদের সব সময় কষ্ট হয়, পেরেশানি হয় (পেরেশানি হওয়ারই কথা) কারণ, আমাদের আমল ঠিক নাই। আমাদের আমল তা নয়, যার দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন হয়। আমাদের আমল তা নয়, যার দ্বারা উম্মতের উপকার হয়। আমাদের আমল তা নয়, যার দ্বারা জিহাদী আন্দোলনের উপকার হয়। আমাদের আমল তা নয়, যার দ্বারা মুসলমানের কল্যাণ সাধিত হয়। তো এটা সংশোধনের পদ্ধতি কি?

    এটার পদ্ধতি হল; প্রথমে এই জবানকে নিয়ন্ত্রণ করা নিজেদের লোকদের ব্যাপারে যে কথা বলেন, যে কমেন্ট করেন তার উপর নজর রাখুন। কথা বলার আগেই চিন্তা করুন।

    মুফতী মুহাম্মাদ শফী রহিমাহুল্লাহ বলেন: “যখনই কোনো কথা মুখ থেকে বের করবে, তখন এটা মনে করবে যে, আমি কোনো আদালতে দাঁড়িয়ে কথা বলছি এবং আমাকে এটা সত্য প্রমাণিত করতে হবে। দুনিয়ার আদালত না হলেও আল্লাহর আদালতে তো দাঁড়ানোই আছি। আমি কারও ব্যাপারে বলে দিলাম যে, সে ফাসেক, ফাজের, সে ভুল করছে, সে জিহাদ করে না, সে ফাসাদ করছে, তার ভিতর ইখলাস নেই! এমন অনেক কথা আমি বলে ফেললাম! তাই দুনিয়াতেও এসব কথার জবাব দিতে হবে, আর আল্লাহর দরবারেও জবাব দিতে হবে, আল্লাহর আদালতে দাঁড়াতে হবে।”

    আমল ঠিক হবে তখন, যখন জবান ঠিক হবে। আর জবান ঠিক হবে তখন, যখন আল্লাহর ভয় থাকবে। আর আল্লাহর ভয় রাখার জন্য জবান, আর জবান ঠিক রাখার জন্য আমল ঠিক করতে হবে। আর যখন এই সব হবে, আমরা যে আমল করবো তার কি হবে?



    ﴿وَيَغۡفِرۡ لَكُمۡ ذُنُوبَكُمۡۗ ﴾ [الأحزاب: 71]


    “তোমাদের গুনাহ আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দিবেন।” (সূরা আহযাব-৩৩:৭১)


    এই সবকিছুর মূল কী? জবান। হাদীস অনুযায়ী জবান। জবানের ব্যবহার।


    অতঃপর সামনে দেখুন! আল্লাহ তাআলা বলেন:


    ﴿وَمَن يُطِعِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَقَدۡ فَازَ فَوۡزًا عَظِيمًا ﴾ [الأحزاب: 71]


    “যে ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্য করে, আল্লাহর রাসূলের আনুগত্য করে তার জন্য অনেক বড় সফলতা।” (সূরা আহযাব-৩৩:৭১)


    হাদীসের মধ্যে নেক আমল এবং নেক আমলের তাওফীকের কথা এসেছে। তাওফীকই হল আসল তাওফীক এটা অনেক বড় জিনিস, এটা অনেক বড় সৌভাগ্য, এটা অনেক বড় নেয়ামত তাওফীকের অনুভূতি যেমন অন্তরে হয়, তেমনি জবানেও হয়। যদি আমার জবান ঠিক থাকে, আমি সকাল সন্ধ্যায় মানুষের ব্যাপারে যা বলি তাতে জবান ঠিক থাকে, তবে আল্লাহ তাআলা তাওফীক দিয়ে দিবেন। আর যদি এতে আদল-ইনসাফ না থাকে বরং জুলুম হয়, তাহলে আল্লাহ তাওফীক উঠিয়ে নিবেন।


    একটি হাদীসে এসেছে, যার মর্মার্থ এমন: “মানুষ যখন মুখে এমন কোনো শব্দ উচ্চারণ করে যার ভয়াবহতার অনুভূতি তার থাকে না, এ কারণে তাকে জাহান্নামের অতল গহ্বরে যেতে হবে, যেমন আসমান/ উপর থেকে কোন কিছু নিচে ছুড়ে মারা হলে তা মাটির অনেক গভীরে গিয়ে পতিত হয়।”

    ইউনুস ইবনে উবাইদ রহিমাহুল্লাহ বলেন;


    ما رأيت احدا لسانه منه على بال الا رأيت ذلك صلاحا في سائر عمله

    “আমি এমন কোনো ব্যক্তিকে দেখিনি, যার জবান নিজের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, অথচ তার ভালো প্রভাব তার সমস্ত আমলে পাওয়া যায় নাযে ব্যক্তি তার জবানের ইসলাহ করলো, তার আমলেরও ইসলাহ হয়ে গেল


    ইয়াহ্ইয়া ইবনে আবি কাসীর রহিমাহুল্লাহ বলেন:
    ما صلح منطق رجل الا عرفت ذلك في سائر عمله

    “যে ব্যক্তি নিজের কথাগুলোকে ঠিক করলো, নিজের কথাকে পরিশুদ্ধ করলো, আমি দেখেছি তার সব আমল পরিশুদ্ধ হয়ে গেল।”


    মানুষের ব্যাপারে নিজের চিন্তার ইসলাহ যে করলো, দেখা গেল তার আমলেরও ইসলাহ হয়ে গিয়েছেআর যে ব্যক্তির জবান খারাপ হয়ে গিয়েছে, আমি দেখেছি তার সব আমল খারাপ হয়ে গিয়েছে। আমাদের কেউ একজন কোনো এক সময় বলেছিল যে, মাশাআল্লাহ! অমুক ব্যক্তি অনেক ভালো মানুষ। কিন্তু তার মুখের ভাষা অনেক খারাপ। এমনও শুনেছি যে, অমুক ব্যক্তি অনেক ভালো; মানুষের অনেক উপকার করে। তবে ভাই, তার মুখের ভাষা খুব বেশি কুরুচিপূর্ণ। কখনও এর পিছনে বদনাম করে, কখনও ওর পেছনে বদনাম করে। আমরা কখনও তার কথা শুনতাম না।


    ইউনুস ইবনে উবাইদ রহিমাহুল্লাহ আরও বলেন:


    لا تجد من البر شيئاً واحداً يتْبعُه البر كله غير اللسان،

    “আমি কখনও এমন কোনো নেক কাজ দেখিনি যে, আপনি একটি নেক কাজ করলে আপনার আরেকটা নেক কাজ করার তাওফীক হয়ে যাবে; একমাত্র জবান ছাড়া।”

    এই জবান দ্বারা যেই নেক কাজই করুন; আরও নেক কাজ করার তাওফীক প্রাপ্ত হবেন। প্রথমত, আপনি আপনার ভাষাকে পরিশুদ্ধ করুন। আপনি লোকদের উদ্দেশ্য করে যা কিছু বলেন, তা মার্জিত করে নিন। তাহলে সাথে সাথেই আল্লাহ তাআলা আরও বেশি নেক কাজের তাওফীক দিয়ে দিবেন। অতঃপর বলেন,


    فإنك تجد الرجل يكثر الصيام ويفطر على الحرام، ويقوم الليل ويشهد بالزور بالنهار... [وذكر أشياء نحو هذا] ولكن لا تجده لا يتكلم إلا بحق؛ فيخالف ذلك عمله أبدا».


    “আপনি হয়তো দেখেছেন, এমনও লোক আছে যে প্রচুর রোযা রাখে কিন্তু হারাম দ্বারা ইফতার করে। রাতে তাহাজ্জুদ পড়ে, দিনে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়। কিন্তু আপনি কখনও এমন লোক দেখবেন না, যে সত্য বলে, ন্যায়-নীতির কথা বলে কিন্তু তার আমল তার পক্ষে সাক্ষ্য দেয় না তার কথা কাজ এক হবে না, এমনটি কখনও হবে না। বরং অবশ্যই তার আমল ভালো হবে এবং সুন্দর হবে


    একজন মানুষের ইসলাহ এবং তার নেক আমল উপকারী হওয়া উম্মতের জন্য এবং তার নিজের জন্য নির্ভর করে কীসের উপর? তার সীমাবদ্ধতা কীসের উপর? শুধু তার জবানের উপর। এমনভাবে একটি পুরো দলের জন্য অর্থাৎ মুজাহিদদের যে ইসলাহ সেটিও মুখের ভাষার সাথে সম্পৃক্ত। ফিতনা-ফাসাদের মূল কারণ জবান এবং মুখের বে-লাগাম কথা-বার্তা এবং অনুচিত কমেন্ট।


    যে সমস্ত ভাষ্য ও মন্তব্য এমনকি আমরা মজলিসে বসে মুজাহিদদের ব্যাপারে, অন্যান্য লোকের ব্যাপারে এবং সাথি-সঙ্গীদের ব্যাপারেও যেসকল মন্তব্য করে থাকি, যদি এ মন্তব্য সহানুভূতির সহিত আল্লাহকে হাজির নাজির জেনে শরীয়ত, ন্যায়নীতি ও বাস্তবতা অনুযায়ী করি, তাহলে আমার এই কথার প্রভাব আমার নিজের আমলের উপরও পড়বে আমার ভাইয়ের উপরও পড়বে, পুরো জামাতের উপর, মুজাহিদীনের উপর, পুরো উম্মতের উপর পড়বে। পুরো জিহাদের মধ্যে ইতিবাচক ফলাফল আসবে এবং কাফেলা কল্যাণের পথে পরিচালিত হবে


    দুঃখের বিষয় হচ্ছে - আমাদের যে জবান রয়েছে, আমরা তার মধ্যে সতর্কতা অবলম্বন করি না। সুতরাং সর্বপ্রথম বদ আসর যেটা হবে, সেটা হল আমার নিজের আমল নষ্ট হবে। সুবহানাল্লাহ! আপনারা হয়তো শুনেছেন, আমি নিজেও আল্লাহ ওয়ালাদের ব্যাপারে পড়েছি এবং শুনেছি –


    এক ব্যক্তি তাহাজ্জুদও পড়ে, নেক আমলও করে কিন্তু সাথিদের ভুলের ব্যাপারে এমন শব্দ চয়ন করে, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে যা উচিত নয়। বে-ইনসাফির সাথে কথা বলে। এতে করে তার তাহাজ্জুদ নামাযের তাওফীক যা ছিল তা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। যদি আমার নফল নামায পড়ার তাওফীক না হয় এবং নিজের জিহাদী মুআমালাত ঠিক না হয়, তখন নিজের বিষয়ে ভাবতে হবে যে, আমার কোনো ভুল হচ্ছে কিনা, জবানের অপব্যবহার হচ্ছে কিনা? আমি যদি নিজের জবানের অপব্যবহার না করি, তাহলে আল্লাহ অবশ্যই আমাকে সাহায্য করবেন।


    আরও একটি কথা, যদি আমাদের ভাইদের ব্যাপারে, মুসলমানদের ব্যাপারে, মুজাহিদদের ব্যাপারে এবং জিহাদী আন্দোলনের ব্যাপারে আমার জবান সঠিকভাবে পরিচালিত না হয়, তাহলে ….হতে পারে আমরা আসলে ব্যবহার হচ্ছি। আর এই ব্যবহার হওয়াটা এবং ঘর থেকে বের হওয়াটা কি আল্লাহ তাআলার মাকবুল বান্দা হওয়ার জন্য প্রমাণ হতে পারে? আমরা কী এমন প্রজন্ম দেখিনি যারা লড়াইও করে, হত্যাও করে (অর্থাৎ কত বড় ফাসাদ এসমস্ত লোকদের থেকে প্রকাশিত হচ্ছে) এসকল দায়েশী-খারেজীদের সাথে আপনাদের হয়তো মুআমালা হয়েছে।


    আমি একবার নয়, একাধিকবার এই চলমান ফিতনা সম্পর্কে দেখেছি যে, এমন লোক ছিল যাদের সাথে আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হতো (আল্লাহ ক্ষমা করুন) সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি নজরে পড়েছে, এটা ঐ সময়, যখন তাদের পক্ষ থেকে তখনো কেউ গুলি চালায়নি, কোনো মুসলমানের রক্ত তখনো প্রবাহিত করেনি- কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে সবচেয়ে বড় জুলুম যা প্রকাশ পেয়েছে তা ছিলো, তাদের অনেকে বড় বড় আল্লাহ ওয়ালা মুজাহিদীনদের ব্যাপারে জবানের অপব্যবহার করেছেতাদের বিরুদ্ধে কত মারাত্মক মারাত্মক মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে! যাদের পুরো জিন্দেগি কেটেছে জিহাদের ময়দানে, যারা এই উম্মতের জন্য নিজেদেরকে কুরবানী করেছে এবং স্বচ্ছ কুরবানী দিয়েছে – তাদের বিষয়ে জবানের অপব্যবহারের কারণে, তাদের শানে গোস্তাখী করার কারণে অত্যন্ত নিন্দনীয় ও দৃষ্টান্তমূলকভাবে তারা মৃত্যুবরণ করেছে। জুলুম শুধু হাত-পা দ্বারা আঘাত কিংবা অস্ত্রের আঘাতের নাম নয় বরং কারও ব্যাপারে অপবাদ দেওয়া, কারও গীবত করা, কারও অন্তরে দুঃখ দেওয়া এবং কারও ব্যাপারে বে-ইনসাফি কথা বলা এ সবই নাজায়েয জুলুম


    وَيُضِلُّ اللَّهُ الظَّالِمِينَ

    (“আল্লাহ জালেমদেরকে পথভ্রষ্ট করেন।”)

    যে সকল লোক জুলুম করে নিজের ভাইয়ের সাথে, মুজাহিদ ভাইদের সাথে এবং বিভিন্ন আন্দোলনের সাথে, তাদের হক আদায় করে না, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে লাঞ্ছিত করেন। তাদের হক হলো, তাদের প্রশংসা করা, তাদের গুণগান গাওয়া, তাদের ভালো কাজের স্বীকারোক্তি দেয়া, তাদের প্রতি মুহাব্বত প্রকাশ করা। আল্লাহ মাফ করুন আমরা আমাদের স্বজনপ্রীতির কারণে তাদের প্রশংসার স্থলে তিরস্কার করছি। তাদের অপদস্থ করছি। তাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি লোকদের মাঝে ছড়িয়ে বেড়াচ্ছি। আল্লাহ তাআলা কারও থেকে কোনো কাজ নিচ্ছেন, কেউ ভালো কাজ করছেন, কিন্তু আমরা তার ব্যাপারে বিরূপ মন্তব্য করছি যে, তার নিয়ত খারাপ ইত্যাদি। এটা জুলুম। আর এই জুলুমের কারণে হক-বাতিলের পার্থক্য করার যোগ্যতা আল্লাহ তাআলা ছিনিয়ে নেন। যার ফলে ভুল-সঠিক পার্থক্য করার ক্ষেত্রে মানুষ অন্ধ হয়ে যায়। অন্তর কালো হয়ে যায়। তার মধ্যে অতিরিক্ত স্বজনপ্রীতি চলে আসে। এই সবকিছুর কারণ একটাই; তা হলো জুলুম। যার ফলে আল্লাহ তাআলা এসমস্ত কাজে লিপ্ত করেন।


    মুআজ বিন জাবাল রাযিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করেছিলেন এবং তার মাঝে এই অনুভূতি ছিলো যে, “কীভাবে আমি আমল করবো এবং কীভাবে আমলকে বাঁচাবো?” আমাদের অন্তরেও এমন অনুভূতি ও ব্যথা আসুক! আমরা সর্বদা নিজেদের আমলের ব্যাপারে দৃষ্টি রাখবো যে, আমি কী আমল করছি! আর যখন ঐ আমলের তাওফীক আমার থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়, তখন সাথে সাথেই আমার বুঝতে হবে যে, কোন্ কারণে আমার থেকে ঐ আমলের তাওফীক চলে যাচ্ছে!


    দেখুন, “কিয়ামতের দিন এমন এক লোক আসবে তার নিকট নামায, তাহাজ্জুদ, সাদাকা এবং যাকাতও থাকবে, এমনকি জিহাদও থাকবে কিন্তু সে কারও ব্যাপারে জবানের অপব্যবহার করেছে, কাউকে অপদস্থ করেছে, কাউকে কষ্ট দিয়েছে; যার সাথে সে জুলুম করেছে, তাকে বলা হবে এই ব্যক্তির যে আমল তোমার পছন্দ হবে তা তুমি নেয়ে নাও।”


    আমরা জিহাদের জন্য নিজের ঘর-বাড়ি ছেড়েছি, হিজরত করেছি। জিহাদী জিন্দেগি অনেক কষ্টের এই সবকিছু আমরা কী উদ্দেশ্যে করছি? আল্লাহ না করুন- এটা কতই না আফসোসের কথা যে, সকল আমল করার পরও কিয়ামতের দিন আমাদের ঝুড়িতে কোনো আমল থাকবে না! বরং যারা মন্দ আমল করেছে তাদের আমল আমাদের ঝুড়িতে চলে আসবে! আল্লাহ আমাদের পরিশুদ্ধ করুন, আমীন


    খোলাসা কথা হলো, আমরা যা কিছু বলি, যা কিছু লিখি এবং যা কিছু মন্তব্য করি, এ সব কিছুতেই আমরা জিজ্ঞাসিত হবো। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এই দুনিয়ায় লোক সম্মুখেও জিজ্ঞাসা করবেন এবং আখিরাতেও করবেন। সুতরাং সকল আমলের মধ্যে আসল হচ্ছে জবান। আল্লাহ তাআলা আমাদের জবান সংযত রাখুন। এবং আমাদেরকে উপকারী বানান। কোনো ব্যক্তি নিজের জন্য, মুসলমান ভাইদের জন্য, উম্মতের জন্য এবং জিহাদের জন্য ততক্ষণ উপকারী হয় না, যতক্ষণ না তার জবান এবং তার কলম উপকারী হয় তার জবান ও কলম শরীয়ত মোতাবেক হলে, ইনসাফপূর্ণ হলে, আল্লাহর জন্য হলে - উম্মতের মুহাব্বত, দীনের মুহাব্বত এবং আহলে দীনের মুহাব্বত তার অন্তরে থাকে। অর্থাৎ তার অন্তরে তাদের মুহাব্বত এবং ঘৃণার মাপকাঠি স্রেফ আল্লাহর জন্য হয়।


    সুতরাং যদি আমরা উপকারী হতে চাই তাহলে আমরা যেনো আমাদের জবানকে উপকারী করি। আল্লাহ তাআলা আমাদের আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন।

    سبحانك اللهم وبحمدك اشهد ان لا اله الا الله استغفرك واتوب اليه




    আরও পড়ুন
    ৩য় পর্ব

  • #2
    ইউনুস ইবনে উবাইদ রহিমাহুল্লাহ বলেন;


    ما رأيت احدا لسانه منه على بال الا رأيت ذلك صلاحا في سائر عمله


    “আমি এমন কোনো ব্যক্তিকে দেখিনি, যার জবান নিজের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, অথচ তার ভালো প্রভাব তার সমস্ত আমলে পাওয়া যায় নাযে ব্যক্তি তার জবানের ইসলাহ করলো, তার আমলেরও ইসলাহ হয়ে গেল


    ইয়াহ্ইয়া ইবনে আবি কাসীর রহিমাহুল্লাহ বলেন:

    ما صلح منطق رجل الا عرفت ذلك في سائر عمله

    “যে ব্যক্তি নিজের কথাগুলোকে ঠিক করলো, নিজের কথাকে পরিশুদ্ধ করলো, আমি দেখেছি তার সব আমল পরিশুদ্ধ হয়ে গেল।”
    আল্লাহ তাআলা আমাদের আমল করার তাওফীক দান করুন। আমীন।
    ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

    Comment

    Working...
    X