যেসব ভুল আমাদের সমূলে ধ্বংস করবে :
অস্তিত্ব সংকটে ভোগা একটি জাতি যখন অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে মনোযোগী না হয়ে মেতে থাকে হাসি-ঠাট্টা ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলে, তখন সে জাতির ধ্বংসের ব্যাপারে আর কোনো সন্দেহ-সংশয়ের অবকাশ থাকে না। সময় এখন কতটা নাজুক, তা কেবল তারাই অনুধাবন করতে পারবে, যারা মালাহিম, ফিতান ও আলামতে কিয়ামতের পাশপাশি ইতিহাস, সমরকৌশল ও বিশ্বের ভূ-রাজনীতি সম্বন্ধেও ভালোভাবে ওয়াকিফহাল। আল্লাহর শপথ! যদি না এসব বিষয়ে আমার টুটাফাটা অধ্যয়ন থাকত, চলমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট নিয়ে কিছু ধারণা না থাকত তাহলে আজ আমিও সে পথেই হাঁটতাম, যে পথে হাঁটছে সময়ের গড্ডালিকা প্রবাহে ভাসমান অধিকাংশ মানুষ।
এ সঙ্গীন মুহূর্তে আমাদের কী করণীয় ছিল, আর আমরা করছিটা কী! এ বড় আজিব এক ব্যাপার। আমি দেখতে পাচ্ছি, তাতারি ফিতনার আগ মুহূর্তে মুসলমানদের যে অবস্থা ছিল, ঠিক সে অবস্থাই আজ বিরাজ করছে মুসলিম সমাজে। জানি, আমার এক চিৎকারে এ জাতির কোনো বোধদয় হবে না। তবুও মাঝেমধ্যে বোকার মতো চিল্লাই; এ আশায় যে, এতে যদি একজন মানুষও বেঁচে যায়, সেটাওবা কম কীসে! আজ আমি সংক্ষিপ্তাকারে সমাজে চলমান ওই সব বিষয় নিয়ে সতর্ক করব, যা আমাদের ধ্বংসকে আরও তরান্বিত করছে। এগুলো থেকে আমাদের পুরোপুরি বেঁচে থাকতে হবে, নইলে ধ্বংসের করাল গ্রাস থেকে আমরা কেউই রেহাই পাব না।
★এক. অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও অন্তর্দ্বন্দ্ব। চলমান ভুল ও সংকটগুলোর মাঝেই এটাই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। দ্বন্দ্বগুলো কেন যেন শেষ হতে গিয়েও শেষ হচ্ছে না; বরং কারা যেন এ আগুনে ক্রমাগত আরও ঘি ঢেলেই যাচ্ছে! অথচ এ থেকে আমাদের এখন হাজারও ক্রোশ দূরে অবস্থান করা জরুরি ছিল। এখন আমাদের এ সময় নেই যে, আমরা আহলে হাদিস-হানাফি, জামাত-হিফাজত, আলিয়া-কওমি, মানহাজি-মাদখালি, দেওবন্দি-মাদানি, সুন্নি-বিদআতি অন্তর্কলহ জাগিয়ে নিজেদের দমে যাওয়া যুদ্ধের আগুন জ্বালিয়ে নিজেরাই নিজেদেরকে ভস্মিত করব। বর্তমানে শাখাগত সকল ফিকহি মতভেদ, এমনকি বৈধ মতানৈক্যপূর্ণ আকিদাগত বিষয়গুলোও এড়িয়ে চলা আবশ্যক।
★দুই. দ্বীন প্রতিষ্ঠার গুরুদায়িত্ব বিস্মৃরণ। সাধারণরা তো দূরে থাক, স্বয়ং ছোট-বড় অনেক আলিমও এখন বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে দ্বীন প্রতিষ্ঠার মতো অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিই ভুলে যাচ্ছে। অথচ একটু সচেতনভাবে খোঁজ নিলেও দেখা যায়, এসব অপ্রয়োজনীয় ইস্যু তৈরির পেছনেও এমন অনেক ষড়যন্ত্র থাকে, যা সাধারণ লোকেরা বোঝে না। তখন তারা মূল বিষয় থেকে মনোযোগ সরিয়ে গৌণ বিষয় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু আলিমদের তো এ ব্যাপারে প্রবঞ্চিত হওয়া উচিত নয়। তাদের তো সকল বিষয়েই সজাগ থাকা জরুরি। বিষয়গুলো নিয়ে এখনই সচেতন না হলে আমরা সর্বদা এ চক্রেই আটকে থাকব, কখনও চিন্তার এ বন্দিশালা থেকে বের হতে পারব না।
★তিন : উদ্দেশ্যহীন অর্নথক ট্রল ও হাসিঠাট্টা। জেনে বা না জেনে বর্তমানের অধিকাংশ মানুষ বিভিন্ন ভণ্ড পির, সেলিব্রেটি, জোকার ও টিকটক তারকাদের অঙ্গভঙ্গি নকল করে ব্যাপকভাবে প্রচার-প্রসার করছে। এগুলো নিয়ে হাসি-ঠাট্টা ও ট্রল করে যাচ্ছে। এমনকি অনেকে তো পরিবারেও এগুলো এপ্লাই করছে এবং শিশুদের এসবে অভ্যস্ত করে তুলছে। অথচ চিন্তাশীল ও সুস্থ রুচির মানুষ এসব কর্মকাণ্ডকে চরম ঘৃণার চোখে দেখে থাকে, আর বাস্তবে এমনটাই হওয়া উচিত। বর্তমান উম্মাহর করুণ হালের কথা মনে পড়লে অনেক সময় তো খাবারও গলধঃকরণ কষ্টকর হয়ে পড়ে, সেখানে কিনা আমরা এসব নিয়ে হাসি-ঠাট্টা ও আড্ডায় সময় পার করছি!
★চার. প্রয়োজনীয় ইলমের অভাব। আমাদের অধিকাংশ আলিম ও তালিবুল ইলম ভাইদের এখনও আলোচনার বিষয়বস্তু হলো ইখতিলাফি মাসআলা-মাসায়িল কিংবা দলীয় আকিদা-মতাদর্শ। ঠুনকো বিষয় নিয়ে আমাদের সময়ের অভাব হয় না, পিছুটান শুরু হয় তখনই, যখন তাদেরকে শিখতে বলা হয় প্রয়োজনীয় আকিদার ইলম, ওয়ালা বারার বিধান, মালাহিম-ফিতানের হাদিস আর ইতিহাসের সবক। এগুলোর ব্যাপারে না আছে তাদের জ্ঞান আর না আছে জানার প্রতি কোনো আগ্রহ। অথচ গুরুত্বের বিচারে কোনটা আগে আর কোনটা পরে, সেটা নির্ণয় করা প্রথম কর্তব্য। ইশ! বর্তমান এ নাজুক পরিস্থিতিতে এসবের যে কতটা প্রয়োজন, তা যদি বুঝাতে পারতাম!
★পাঁচ. দুনিয়ার মোহ ও আখিরাত বিস্মৃতি। এ জেনারেশনের অধিকাংশই আজ আধুনিক ও আপডেট হওয়ার চিন্তায় বিভোর। সবাই এখন উন্নত বাড়ী, অত্যাধুনিক গাড়ি ও রাজকীয় হালে চলতে চায়। কিন্তু মুসলিমদের ওপর আল্লাহ যে ইদাদ ফরজ করে দিয়েছেন, সে বিষয়ে কি কারও সন্দেহ আছে? এত এত জায়গা-জমি কিনছি, গাড়ী-বাড়ীর ফিকির করছি, কিন্তু কেউ কি ইদাদের জন্য কিছু অর্থ বা সামান্য সামগ্রী হলেও প্রস্তুত করে রাখছি? শারীরিক ইদাদ করতে না পারলেও মানসিক ও আর্থিক ইদাদের বিষয়ে আমরা কতটা সচেতন? আমরা না পারলেও আমাদের শত্রুদের ইদাদ কিন্তু ঠিকই সম্পন্ন হয়ে গেছে। তাই এ ব্যাপারে আমাদের পরিপূর্ণ প্রস্তুতি ও সচেতনতা একান্ত জরুরি।
কালেক্ট ::
অস্তিত্ব সংকটে ভোগা একটি জাতি যখন অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে মনোযোগী না হয়ে মেতে থাকে হাসি-ঠাট্টা ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলে, তখন সে জাতির ধ্বংসের ব্যাপারে আর কোনো সন্দেহ-সংশয়ের অবকাশ থাকে না। সময় এখন কতটা নাজুক, তা কেবল তারাই অনুধাবন করতে পারবে, যারা মালাহিম, ফিতান ও আলামতে কিয়ামতের পাশপাশি ইতিহাস, সমরকৌশল ও বিশ্বের ভূ-রাজনীতি সম্বন্ধেও ভালোভাবে ওয়াকিফহাল। আল্লাহর শপথ! যদি না এসব বিষয়ে আমার টুটাফাটা অধ্যয়ন থাকত, চলমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট নিয়ে কিছু ধারণা না থাকত তাহলে আজ আমিও সে পথেই হাঁটতাম, যে পথে হাঁটছে সময়ের গড্ডালিকা প্রবাহে ভাসমান অধিকাংশ মানুষ।
এ সঙ্গীন মুহূর্তে আমাদের কী করণীয় ছিল, আর আমরা করছিটা কী! এ বড় আজিব এক ব্যাপার। আমি দেখতে পাচ্ছি, তাতারি ফিতনার আগ মুহূর্তে মুসলমানদের যে অবস্থা ছিল, ঠিক সে অবস্থাই আজ বিরাজ করছে মুসলিম সমাজে। জানি, আমার এক চিৎকারে এ জাতির কোনো বোধদয় হবে না। তবুও মাঝেমধ্যে বোকার মতো চিল্লাই; এ আশায় যে, এতে যদি একজন মানুষও বেঁচে যায়, সেটাওবা কম কীসে! আজ আমি সংক্ষিপ্তাকারে সমাজে চলমান ওই সব বিষয় নিয়ে সতর্ক করব, যা আমাদের ধ্বংসকে আরও তরান্বিত করছে। এগুলো থেকে আমাদের পুরোপুরি বেঁচে থাকতে হবে, নইলে ধ্বংসের করাল গ্রাস থেকে আমরা কেউই রেহাই পাব না।
★এক. অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও অন্তর্দ্বন্দ্ব। চলমান ভুল ও সংকটগুলোর মাঝেই এটাই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। দ্বন্দ্বগুলো কেন যেন শেষ হতে গিয়েও শেষ হচ্ছে না; বরং কারা যেন এ আগুনে ক্রমাগত আরও ঘি ঢেলেই যাচ্ছে! অথচ এ থেকে আমাদের এখন হাজারও ক্রোশ দূরে অবস্থান করা জরুরি ছিল। এখন আমাদের এ সময় নেই যে, আমরা আহলে হাদিস-হানাফি, জামাত-হিফাজত, আলিয়া-কওমি, মানহাজি-মাদখালি, দেওবন্দি-মাদানি, সুন্নি-বিদআতি অন্তর্কলহ জাগিয়ে নিজেদের দমে যাওয়া যুদ্ধের আগুন জ্বালিয়ে নিজেরাই নিজেদেরকে ভস্মিত করব। বর্তমানে শাখাগত সকল ফিকহি মতভেদ, এমনকি বৈধ মতানৈক্যপূর্ণ আকিদাগত বিষয়গুলোও এড়িয়ে চলা আবশ্যক।
★দুই. দ্বীন প্রতিষ্ঠার গুরুদায়িত্ব বিস্মৃরণ। সাধারণরা তো দূরে থাক, স্বয়ং ছোট-বড় অনেক আলিমও এখন বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে দ্বীন প্রতিষ্ঠার মতো অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিই ভুলে যাচ্ছে। অথচ একটু সচেতনভাবে খোঁজ নিলেও দেখা যায়, এসব অপ্রয়োজনীয় ইস্যু তৈরির পেছনেও এমন অনেক ষড়যন্ত্র থাকে, যা সাধারণ লোকেরা বোঝে না। তখন তারা মূল বিষয় থেকে মনোযোগ সরিয়ে গৌণ বিষয় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু আলিমদের তো এ ব্যাপারে প্রবঞ্চিত হওয়া উচিত নয়। তাদের তো সকল বিষয়েই সজাগ থাকা জরুরি। বিষয়গুলো নিয়ে এখনই সচেতন না হলে আমরা সর্বদা এ চক্রেই আটকে থাকব, কখনও চিন্তার এ বন্দিশালা থেকে বের হতে পারব না।
★তিন : উদ্দেশ্যহীন অর্নথক ট্রল ও হাসিঠাট্টা। জেনে বা না জেনে বর্তমানের অধিকাংশ মানুষ বিভিন্ন ভণ্ড পির, সেলিব্রেটি, জোকার ও টিকটক তারকাদের অঙ্গভঙ্গি নকল করে ব্যাপকভাবে প্রচার-প্রসার করছে। এগুলো নিয়ে হাসি-ঠাট্টা ও ট্রল করে যাচ্ছে। এমনকি অনেকে তো পরিবারেও এগুলো এপ্লাই করছে এবং শিশুদের এসবে অভ্যস্ত করে তুলছে। অথচ চিন্তাশীল ও সুস্থ রুচির মানুষ এসব কর্মকাণ্ডকে চরম ঘৃণার চোখে দেখে থাকে, আর বাস্তবে এমনটাই হওয়া উচিত। বর্তমান উম্মাহর করুণ হালের কথা মনে পড়লে অনেক সময় তো খাবারও গলধঃকরণ কষ্টকর হয়ে পড়ে, সেখানে কিনা আমরা এসব নিয়ে হাসি-ঠাট্টা ও আড্ডায় সময় পার করছি!
★চার. প্রয়োজনীয় ইলমের অভাব। আমাদের অধিকাংশ আলিম ও তালিবুল ইলম ভাইদের এখনও আলোচনার বিষয়বস্তু হলো ইখতিলাফি মাসআলা-মাসায়িল কিংবা দলীয় আকিদা-মতাদর্শ। ঠুনকো বিষয় নিয়ে আমাদের সময়ের অভাব হয় না, পিছুটান শুরু হয় তখনই, যখন তাদেরকে শিখতে বলা হয় প্রয়োজনীয় আকিদার ইলম, ওয়ালা বারার বিধান, মালাহিম-ফিতানের হাদিস আর ইতিহাসের সবক। এগুলোর ব্যাপারে না আছে তাদের জ্ঞান আর না আছে জানার প্রতি কোনো আগ্রহ। অথচ গুরুত্বের বিচারে কোনটা আগে আর কোনটা পরে, সেটা নির্ণয় করা প্রথম কর্তব্য। ইশ! বর্তমান এ নাজুক পরিস্থিতিতে এসবের যে কতটা প্রয়োজন, তা যদি বুঝাতে পারতাম!
★পাঁচ. দুনিয়ার মোহ ও আখিরাত বিস্মৃতি। এ জেনারেশনের অধিকাংশই আজ আধুনিক ও আপডেট হওয়ার চিন্তায় বিভোর। সবাই এখন উন্নত বাড়ী, অত্যাধুনিক গাড়ি ও রাজকীয় হালে চলতে চায়। কিন্তু মুসলিমদের ওপর আল্লাহ যে ইদাদ ফরজ করে দিয়েছেন, সে বিষয়ে কি কারও সন্দেহ আছে? এত এত জায়গা-জমি কিনছি, গাড়ী-বাড়ীর ফিকির করছি, কিন্তু কেউ কি ইদাদের জন্য কিছু অর্থ বা সামান্য সামগ্রী হলেও প্রস্তুত করে রাখছি? শারীরিক ইদাদ করতে না পারলেও মানসিক ও আর্থিক ইদাদের বিষয়ে আমরা কতটা সচেতন? আমরা না পারলেও আমাদের শত্রুদের ইদাদ কিন্তু ঠিকই সম্পন্ন হয়ে গেছে। তাই এ ব্যাপারে আমাদের পরিপূর্ণ প্রস্তুতি ও সচেতনতা একান্ত জরুরি।
কালেক্ট ::
Comment