Announcement

Collapse
No announcement yet.

নাসীহা প্রদানের পথ ও পদ্ধতি

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • নাসীহা প্রদানের পথ ও পদ্ধতি

    মুহতারাম ভাইয়েরা! অনেক সময় দেখা যায় আমরা অপর মুসলিম ভাইকে নাসীহা প্রদানের ক্ষেত্রে হিমসীম খেয়ে যাই,দোটানায় ভুগি যে তাকে উপদেশ দিব কি দিব না,এরকম আরে নানাহ সমস্যা। তাই আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় হলো নাসীহা প্রদানের পদ্ধতি ও লক্ষ্যনীয় বিষয়।
    নসীহত তথা কল্যাণকামিতা হলো দীনের ভিত্তি,মৌলিক উপকরণ।বরং দীনের পুরোটাই হলো কল্যাণকামিতা। নসীহত হবে আল্লাহর জন্য,আল্লাহর কিতাবের জন্য, মুসলমানদের নেতা ও কর্ণধার এবং সাধারণ মুসলমানদের জন্য।মানুষ যদি উল্লিখিত বিষয়গুলোয় কল্যাণকামী হয় তবে সে তার দীনকে পূর্ণাঙ্গ করে নেয়।
    আর যদি কোনো একটিতে অবহেলা করে তবে অবহেলার মাত্রানুযায়ী দীনকে অপূর্ণাঙ্গ রেখে দেয়। অবশ্য নসীহত তথা কল্যাণকামিতার ক্ষেত্রে একজন মুসলমানকে আমানতদারিরও পরিচয় দিতে হবে সমানভাবে। কোনো মানুষকে তোষামোদের আশ্রয়ে না গিয়ে যা সত্য তা প্রকাশ করতে হবে অকুতোভয়ে

    নসীহত কাকে বলে?
    এ সম্পর্কে ইমাম খাত্তাবী রহ. ও অন্যান্যরা বলেন, ‘নসীহত হলো, অন্যের ভালো চাওয়া বা কল্যাণ কামনা করা’।

    আর ইসলামের মূল ভিত্তি হলো-নসীহত। যেমন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন

    (الدَّيْنُ النَّصِيْحَةُ، الدَّيْنُ النَّصِيْحَةُ، الدَّيْنُ النَّصِيْحَةُ، قَالُوْا : لِمَنْ يَا رَسُوْلَ اللَّهِ؟ قَالَ : لِلَّهِ وَلِكِتَابِهِ وَلِرَسُوْلِهِ وَلِأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِيْنَ وَعَامَّتِهِمْ ‘)

    দীন হলো নসীহত, দীন হলো নসীহত, দীন হলো নসীহত। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! নসীহত কার জন্য? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: মহান আল্লাহ, তাঁর কিতাব, তাঁর রাসূল, মুসলমানদের ইমাম এবং সমস্ত মুসলমানের জন্য’ (মুসলিম)।

    হাদীসে বর্ণিত ক্ষেত্রসমূহের জন্য পরিপূর্ণরূপে নসীহত বা কল্যাণ কামনা করবে তখন তার দীন পূর্ণ হবে। আর এতে যার যতটুকু কমতি থাকবে তার দীন ততটুকু কম থাকবে।
    আমরা নসীহার পরিচয়,ও তার ক্ষেত্র জানলাম,এখন আমরা নাসীহা প্রদানের ক্ষেত্রে কিছু লক্ষ্যনীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।

    ১. নাসীহা প্রদানে ইখলাস থাকা।

    নসীহত যার জন্যই হোক না কেন, তাতে কোনো রিয়া বা লৌকিকতা থাকবে না। থাকবে না কোনো সুনাম বা সুখ্যাতি অর্জনের কামনা-বাসনা বরং নসীহত বা কল্যাণকামনা হবে শুধু আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে। অন্যকোনো উদ্দেশ্যে নয়। কেননা যেসব কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা হয় না তা আল্লাহ তা‘আলা কবুল করেন না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

    {وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ}

    ‘তাদেরকে কেবল এ নির্দেশই দেওয়া হয়েছে যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ্র ইবাদত করবে’ (সূরা বায়্যিনাহ: ৫)।

    ২. নাসীহা ইলম নির্ভর হওয়া।

    নসীহত হতে হবে ইলমনির্ভর। অর্থাৎ যে বিষয়ের নসীহত করা হচ্ছে, সে বিষয়ে নসীহতকারীর স্পষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে।

    ৩. নাসীহাকারীকে আমানতদার হওয়া।

    নসীহতকারীকে অবশ্যই আমানতদার ও বিশ্বস্ত হতে হবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা হূদ আলাইহিস সালামের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন:

    {أُبَلِّغُكُمْ رِسَالَاتِ رَبِّي وَأَنَا لَكُمْ نَاصِحٌ أَمِينٌ ‘}

    আমি তোমাদের নিকট আমার রবের পয়গাম পৌঁছে দেই। আর আমি তোমাদের জন্য একজন বিশ্বস্ত কল্যাণকামীও বটে’ (সূরা আল আরাফ:৬৮)।


    ৪.যাকে নাসীহা প্রদান করা হবে তার থেকে নাসীহা প্রদানকারীকে বেশী জ্ঞানী, মর্যাদায় বড় এবং ন্যায়পরায়ণতায় পূর্ণতাপ্রাপ্ত হওয়া জরুরী নয়।
    যেমনঃ-
    ইমাম আহমদ ইবনে ইসহাক বলেন, ‘স্বল্পজ্ঞানী ব্যক্তি যদি অধিকজ্ঞানী ব্যক্তিকে অন্যায় কর্মে বাধা দিতে না পারত, তাহলে আমর বিল মারুফ বা সৎকাজের আদেশ করার বিষয়টি বন্ধ হয়ে যেত এবং আমরা বনী ইসরাঈলের মতো হয়ে যেতাম। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

    {كَانُوا لَا يَتَنَاهَوْنَ عَنْ مُنْكَرٍ فَعَلُوهُ لَبِئْسَ مَا كَانُوا يَفْعَلُونَ ‘}

    তারা পরস্পরকে মন্দ কাজে নিষেধ করত না, যা তারা করত’(সূরা মায়িদা: ৭৯)।

    মোটকথা, কম সম্মানী ব্যক্তি অধিক সম্মানী ব্যক্তিকে এবং পাপাচারী ব্যক্তি নেককার ব্যক্তিকেও নসীহত করতে পারবে। পারবে তাকে অন্যায় ও গর্হিত কর্ম থেকে ফিরিয়ে রাখতে এবং এসব বিষয়ে তাকে সতর্ক করতে। তবে এক্ষেত্রে তাদের ইজ্জত-সম্মানের প্রতি অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, যাতে তাদের মর্যাদায় কোনো আঘাত না লাগে।

    আমরা যদি খুলাফায়ে রাশেদীন এবং হেদায়েতপ্রাপ্ত ইমামগণের জীবনের দিকে দৃষ্টিপাত করি তাহলে দেখব যে, তাদের কোনো দোষ কেউ ধরিয়ে দিলে তারা তাতে বেশ খুশি হতেন এবং কল্যাণকামী ব্যক্তির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতেন। এটাকে তারা মোটেই খারাপ মনে করতেন না।
    আবূ বকর রাযি. বলেন, কেউ আমাদের দোষ ধরে দিলে আমরা যদি তা গ্রহণ না করি তবে আমাদের মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই। আর তোমাদের মধ্যেও কোনো কল্যাণ নেই, যদি তোমরা আমাদের দোষ-ত্র“টি না ধর’।
    উমর রাযি. বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো দোষ ধরিয়ে দিল আল্লাহ তা‘আলা তার ওপর রহম করুন।
    আল্লাহু আকবার সাহাবায়ে কেরাম কেমন ছিলেন, উনারা সবসময় অন্যের নাসীহা কামনা করতেন,আর সাহাবায়ে কেরামও নাসীহা প্রদানে কার্পন্য করতেন না।তাই তো তারা ছিলেন সবচেয়ে পরিশুদ্ধ ও একে অন্যের সম্পূরক।
    আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকেও একে অন্যের সম্পূরক বানিয়ে দিন আমীন।

    ৫.সবার জন্য নাসীহা গোপনে হওয়া।

    উপদেশ দিতে হবে গোপনে। প্রকাশ্যে মানুষের সামনে নয়।
    । ইবনে রজব (রহঃ) বলেন: সলফে সালেহীন যখন কাউকে উপদেশ দিতে চাইতেন তখন তারা তাকে গোপনে সদুপদেশ দিতেন। এমনকি তাদের কেউ কেউ বলেছেন: যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইকে একান্তে উপদেশ দিয়েছে সেটাই নসীহা। আর যে ব্যক্তি মানুষের সামনে সদুপদেশ দিয়েছে সে তাকে ভর্ৎসনা করেছে।
    ফুযাইল (রহঃ) বলেন: ঈমানদার লোক দোষ গোপন রাখে ও উপদেশ দেয়। আর পাপী লোক বেইজ্জত করে ও ভর্ৎসনা করে।[জামিউল উলুমি ওয়াল হিকাম (১/২৩৬)

    ইবনে হাযম (রহঃ) বলেন: যদি তুমি উপদেশ দিতে চাও তাহলে গোপনে দাও; প্রকাশ্যে নয়। ইঙ্গিতে দাও, সরাসরি নয়। যদি সে তোমার ইঙ্গিত না বুঝে তাহলে সরাসরি উপদেশ দেয়া ছাড়া উপায় নেই…। যদি তুমি এ দিকগুলো এড়িয়ে যাও তাহলে তুমি জালিম; তুমি হিতৈষী নও।[আল-আখলাক ওয়াস সিয়ার (পৃষ্ঠা-৪৫) থেকে সমাপ্ত]

    তবে,কল্যাণের দিক প্রবল হলে প্রকাশ্যে উপদেশ দেয়া যেতে পারে।নাসীহা টি যদি এমন হয় যে,গোপনে তা সম্পাদন করা সম্ভব নয় তখন তা প্রকাশ্যে করাতে কোনো অসুবিধা নেই।
    বিশেষ করে বিষয়টি যদি ইজমা তথা সকলের ঐক্যমতে প্রতিষ্ঠিত কোনো বিষয়ের বিরোধিতা প্রতিহত করার জন্য হয় তবে তো সেই নসীহত অবশ্যই প্রকাশ্যে করতে হবে।
    উদাহরণত যে ব্যক্তি কোন আকিদার মাসয়ালায় জনসম্মুখে ভুল করেছে; যাতে করে তার কথা দ্বারা মানুষ বিভ্রান্ত না হয় এবং তার ভুলের অনুসরণ না করে। অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি সুদকে জায়েয বলে প্রকাশ্যে তার প্রত্যুত্তর দেয়া।
    কিংবা যে ব্যক্তি মানুষের মাঝে বিদাত ও পাপকর্মের প্রসার ঘটায়। এ ধরণের লোককে প্রকাশ্যে উপদেশ দেয়া
    শরিয়তসম্মত। বরং কখনও কখনও অগ্রগণ্য কল্যাণ হাছিল ও প্রবল সম্ভাবনাময় ক্ষতি প্রতিরোধার্থে ওয়াজিব।

    এ ব্যাপারে ইবনে রজব হাম্বলি (রহিঃ) বলেন: যদি তার উদ্দেশ্য হয় নিছক সত্যকে তুলে ধরা এবং যাতে করে মানুষ বক্তার ভুল কথা দ্বারা প্রতারিত না হয় তাহলে নিঃসন্দেহে সে ব্যক্তি তার নিয়তের কারণে সওয়াব পাবে। তার এ কর্ম ও এ নিয়তের মাধ্যমে সে আল্লাহ্*, তাঁর রাসূল, মুসলিম নেতৃবর্গ ও সাধারণ মুসলমানদের কল্যাণ কামনার অন্তর্ভুক্ত হবে।[আল-ফারকু বাইনান নাসীহা ওয়াত তা’য়ীর (পৃষ্ঠা-৭)]

    ৬.নাসীহা প্রদানের জন্য উত্তমসময় নির্ধারন করা-

    নাসীহা প্রদানের জন্য উপযুক্ত সময় নির্বাচন করা।এ ব্যাপারে
    ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন: “অন্তরগুলোর স্পৃহা ও চঞ্চলতা আছে। আবার জড়তা ও পিছুটান আছে। সুতরাং স্পৃহা ও চাঞ্চলতার সময় অন্তরগুলোকে কাজে লাগাও এবং জড়তা ও পিছুটানের সময় ছাড় দাও।”।[ইবনুল মুবারক ‘আল-যুদহ’ (নং-১৩৩১) উক্তিটি বর্ণনা করেছেন]

    এ বিষয়টি আমরা অনেকে অনেক সময় খেয়াল করি না তাই দেখা যায়,হীতে বিপরীত হয়।পরস্পরে মনমালিন্যতা দেখা দেয়,শুধু মাত্র এই উপযুক্ত সময় নির্বাচন না করার কারনে কতো নাসীহা যে ব্যার্থ হয়েছে!
    কতো সম্পর্ক যে নষ্ট হয়েছে!
    আল্লাহ তায়ালা আমাদের কে হিফাজত করুন। আমীন
    তাই আমাদের নাসীহা প্রদানে উপযুক্ত সময় নির্বাচন করতে হবে তাহলে দেখা যাবে অল্প নাসীহাই বড় ফলাফল বয়ে আনবে ইনশাআল্লাহ।

    আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকল কে নাসীহা প্রদানের ক্ষেত্রে উপরুক্ত বিষয়গুলো খেয়াল করার তাওফিক দিন আমীন।
    জিহাদই হলো মুমিন ও মুনাফিকের মাঝে
    পার্থক্যকারী একটি ইবাদাহ

  • #2
    আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে হিকমাহপুর্ন(পূর্ণ) দাওয়াহ দেয়ার তাওফিক দান করুণ(করুন)। আমিন।

    Comment


    • #3
      নাসিহাহ প্রদানে আমরা যেসব বিষয় লক্ষ্য রাখবো।
      ১. নাসীহা প্রদানে ইখলাস থাকা।
      ২. নাসীহা ইলম নির্ভর হওয়া।
      ৩. নাসীহাকারীকে আমানতদার হওয়া।
      ৪.যাকে নাসীহা প্রদান করা হবে তার থেকে নাসীহা প্রদানকারীকে বেশী জ্ঞানী, মর্যাদায় বড় এবং ন্যায়পরায়ণতায় পূর্ণতাপ্রাপ্ত হওয়া জরুরী নয়।
      ৫.সবার জন্য নাসীহা গোপনে হওয়া।
      ৬.নাসীহা প্রদানের জন্য উত্তমসময় নির্ধারন করা।

      ইয়া আল্লাহ!
      আমাদের উক্ত বিষয়ে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন!
      দাওয়াহ,ইদাদ ও জিহাদের মাধ্যমে ইসলামি খিলাফাহ কায়েম হবে ইনশাআল্লাহ।

      Comment


      • #4
        یا ایها الذین امنوا لتقولون مالا تفعلون
        سورة الصف
        ভআইয়েরা,(ভাইয়েরা) উল্লেখিত আয়াতের ব্যখ্যা ও হুকুম জানতে আগ্রহী।
        اللهم انی اسلک الهدی والتفی والعفافی والغناء

        Comment


        • #5

          নাসিহাহ প্রদানে আমরা যেসব বিষয় লক্ষ্য রাখবো।
          ১. নাসীহা প্রদানে ইখলাস থাকা।
          ২. নাসীহা ইলম নির্ভর হওয়া।
          ৩. নাসীহাকারীকে আমানতদার হওয়া।
          ৪.যাকে নাসীহা প্রদান করা হবে তার থেকে নাসীহা প্রদানকারীকে বেশী জ্ঞানী, মর্যাদায় বড় এবং ন্যায়পরায়ণতায় পূর্ণতাপ্রাপ্ত হওয়া জরুরী নয়।
          ৫.সবার জন্য নাসীহা গোপনে হওয়া।
          ৬.নাসীহা প্রদানের জন্য উত্তমসময় নির্ধারন করা।

          ইয়া আল্লাহ!
          আমাদের উক্ত বিষয়ে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন!
          আমিন। ছু্ম্মা আমিন
          গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

          Comment


          • #6
            মাশা আল্লাহ, অনেক উপকারী পোস্ট।
            “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

            Comment


            • #7
              আলহামদুলিল্লাহ, পোস্টটি পড়ে ভাল লাগল ভাই...নিয়মিত এমন পোস্ট চাই....
              আল্লাহ তা‘আলা আপনার খেদমত কবুল করুন ও জাযায়ে খাইর দান করুন। আমীন
              ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

              Comment

              Working...
              X