ফিতনার দুনিয়ায় নানা প্রতিকূল পরিবেশে আমাদেরকে থাকতে হয়। দ্বীনের বুঝের মহামূল্যবান নিয়ামত পাওয়ার পরেও আমরা অনেকে সময়ের সাথে সাথে আস্তে আস্তে ঝিমিয়ে যাই। দ্বীনের বিষয়গুলো আগের মত আর চিত্তাকর্ষক থাকে না। কোন আমলে আগে যে আগ্রহ থাকত তা অনেকটাই হারিয়ে ফেলি। সামান্য একটা গোনাহ সামনে আসলেও আগে যেমন চমকে গিয়ে নিবৃত হতাম, আস্তে আস্তে এটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। কমবেশি আমাদের অনেকেরই এমন হালতের সম্মুখীন হতে হয়।
আত্মিক এ অধঃপতনের পিছনে অনেক বিষয় জড়িয়ে আছে৷ এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হল- নাফস বা প্রবৃত্তির অনুসরণ। এটা এমন এক ভয়ানক ব্যাধি যা অন্য অনেক অনিষ্টতার দ্বার খুলে দেয়। শয়তানের ধোঁকায় পড়ার পিছনেও এটা দায়ী।
কুরআন সুন্নাহর অনেক জায়গায় এব্যাপারে আমাদেরকে সজাগ করা হয়েছে এবং এথেকে উত্তরণের উপায় বলে দেওয়া হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা বলেন-
أَفَرَءَيْتَ مَنِ ٱتَّخَذَ إِلَـٰهَهُۥ هَوَىٰهُ وَأَضَلَّهُ ٱللَّهُ عَلَىٰ عِلْمٍۢ وَخَتَمَ عَلَىٰ سَمْعِهِۦ وَقَلْبِهِۦ وَجَعَلَ عَلَىٰ بَصَرِهِۦ غِشَـٰوَةًۭ فَمَن يَهْدِيهِ مِنۢ بَعْدِ ٱللَّهِ ۚ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ
তুমি কি লক্ষ্য করেছ তার প্রতি যে তার খেয়াল-খুশিকে ইলাহ বানিয়ে নিয়েছে? আল্লাহ জেনে শুনেই তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন আর তার কানে ও দিলে মোহর মেরে দিয়েছেন আর তার চোখের উপর টেনে দিয়েছেন পর্দা। অতঃপর আল্লাহর পর আর কে (আছে যে) তাকে সঠিক পথ দেখাবে? এরপরও কি তোমরা শিক্ষাগ্রহণ করবে না? [সূরা জাসিয়া- ২৩]
فَإِن لَّمْ يَسْتَجِيبُوا۟ لَكَ فَٱعْلَمْ أَنَّمَا يَتَّبِعُونَ أَهْوَآءَهُمْ ۚ وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنِ ٱتَّبَعَ هَوَىٰهُ بِغَيْرِ هُدًۭى مِّنَ ٱللَّهِ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهْدِى ٱلْقَوْمَ ٱلظَّـٰلِمِينَ
অতঃপর তারা যদি তোমার কথায় সাড়া না দেয় তাহলে জেনে রেখ, তারা শুধু তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে। আল্লাহর পথ নির্দেশ ছাড়াই যে নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে আছে? আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে সঠিক পথে পরিচালিত করেন না। [সূরা কাসাস- ৫০]
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আওফ রহিঃ বলেন-
إذا غلب الهوى على القلب،استحسن الرجل ما كان يستقبحه
যখন কুপ্রবৃত্তি অন্তরে বিজয়ী হয় তখন (আস্তে আস্তে) মানুষ এমন বিষয়ও ভাল মনে করতে শুরু করে যা আগে খারাপ মনে করত৷ [আলইবানাতুস সুগরা-ইবনে বাত্তা]
আমাদেরকে এই সমস্যার বাস্তব বা ব্যবহারিক কিছু সূরত এবং এগুলি থেকে উত্তরণের কিছু পদ্ধতি জানা দরকার।
ধরা যাক, এখন আপনার কুরআন তিলাওয়াত-তদাব্বুর, দ্বীনী পড়াশোনা, কোন নফল নামায, যিকির, হাত তুলে দুয়া ইত্যাদির কোনটার সময়। এখন গ্রহণযোগ্য কোন কারণ ছাড়াই 'দিনের অন্য সময় বা পরে করে নিব' এটা বলে অলসতা করে ছেড়ে দিলেন। শুরুতে দেখা যাবে কিছুদিন হয়ত পরে আদায় করা হবে৷ কিন্তু আস্তে আস্তে এমন হবে যে, দিনের পর দিন এগুলি ছুটে যাবে টেরও পাওয়া যাবে না। শুরুতে মনে হবে ও আত্মবিশ্বাস আসবে যে- এটা আপনার পক্ষে করা কোন ব্যাপারই না, আবার বাস্তবেও এমন যে এটা অসম্ভব না। কিন্তু একটা সময় এমন হবে যে শত চেষ্টা করেও আপনি পূর্বের রুটিন ও অভ্যাসে ফিরতে পারবেন না। কয়েকদিন পর পর দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করবেন যে- সামনে থেকে এই কাজগুলো করব। আপনার এর শক্তি-সামর্থ্য ও সময় সবই আছে৷ তবু কেন যেন আপনি পারবেন না। অনেক চেষ্টা করেও আপনি এগুলির অভ্যাস ফিরে পাবেন না। তখন আপনার জীবনটা অগোছালো হয়ে যাবে, ভাল লাগবে না, হতাশা ও অস্থিরতা কাজ করবে। মাআযাল্লাহ!
এমনিভাবে ধরেন, এখন ইউটিউব বা ফেইসবুক ব্রাউজিং করা দরকার নেই। বা অন্য কোন কোন একটা কাজ করার দরকার নেই। তবু আপনি বললেন- আচ্ছা আরেকটু দেখে নেই বা আরেকটু করি৷ একটু সময় গেলেই কী...পরে পুষিয়ে নিব... ইত্যাদি। কিন্তু কিছুদিন পরেই দেখা যাবে নাফসের অনুসরণের কারণে আপনার এগুলির প্রতি আসক্তির ব্যাধি তৈরি হয়েছে। এর ফলস্বরূপ কান ও চোখের খেয়ানতসহ আরো বিভিন্ন ব্যাধি জন্ম হচ্ছে৷ আপনি অনেক চেষ্টা করেও এথেকে ফিরতে পারবেন না। মাআযাল্লাহ!
তবে আল্লাহর ইচ্ছায় কেউ নিজেকে সংশোধন কিরে নিলে ভিন্ন বিষয়। আলহামদুলিল্লাহ৷ এমনিভাবে অন্য আরো অনেক বিষয়ে মনের কথায় চলা বা নাফসের অনুসরণ দ্বারা ভয়ানক বিভিন্ন ব্যাধির সৃষ্টি হয়।
তাই আত্মশুদ্ধির একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নাফস বা প্রবৃত্তির অনুসরণ না করা। সময়ের কাজ সময়ে করা। আহ্লাদী, ঢিলেমি ইত্যাদি থেকে বেঁচে থাকা। আল্লাহ আমাদেরকে হেফাজত করুন। আমীন।
আত্মিক এ অধঃপতনের পিছনে অনেক বিষয় জড়িয়ে আছে৷ এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হল- নাফস বা প্রবৃত্তির অনুসরণ। এটা এমন এক ভয়ানক ব্যাধি যা অন্য অনেক অনিষ্টতার দ্বার খুলে দেয়। শয়তানের ধোঁকায় পড়ার পিছনেও এটা দায়ী।
কুরআন সুন্নাহর অনেক জায়গায় এব্যাপারে আমাদেরকে সজাগ করা হয়েছে এবং এথেকে উত্তরণের উপায় বলে দেওয়া হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা বলেন-
أَفَرَءَيْتَ مَنِ ٱتَّخَذَ إِلَـٰهَهُۥ هَوَىٰهُ وَأَضَلَّهُ ٱللَّهُ عَلَىٰ عِلْمٍۢ وَخَتَمَ عَلَىٰ سَمْعِهِۦ وَقَلْبِهِۦ وَجَعَلَ عَلَىٰ بَصَرِهِۦ غِشَـٰوَةًۭ فَمَن يَهْدِيهِ مِنۢ بَعْدِ ٱللَّهِ ۚ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ
তুমি কি লক্ষ্য করেছ তার প্রতি যে তার খেয়াল-খুশিকে ইলাহ বানিয়ে নিয়েছে? আল্লাহ জেনে শুনেই তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন আর তার কানে ও দিলে মোহর মেরে দিয়েছেন আর তার চোখের উপর টেনে দিয়েছেন পর্দা। অতঃপর আল্লাহর পর আর কে (আছে যে) তাকে সঠিক পথ দেখাবে? এরপরও কি তোমরা শিক্ষাগ্রহণ করবে না? [সূরা জাসিয়া- ২৩]
فَإِن لَّمْ يَسْتَجِيبُوا۟ لَكَ فَٱعْلَمْ أَنَّمَا يَتَّبِعُونَ أَهْوَآءَهُمْ ۚ وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنِ ٱتَّبَعَ هَوَىٰهُ بِغَيْرِ هُدًۭى مِّنَ ٱللَّهِ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهْدِى ٱلْقَوْمَ ٱلظَّـٰلِمِينَ
অতঃপর তারা যদি তোমার কথায় সাড়া না দেয় তাহলে জেনে রেখ, তারা শুধু তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে। আল্লাহর পথ নির্দেশ ছাড়াই যে নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে আছে? আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে সঠিক পথে পরিচালিত করেন না। [সূরা কাসাস- ৫০]
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আওফ রহিঃ বলেন-
إذا غلب الهوى على القلب،استحسن الرجل ما كان يستقبحه
যখন কুপ্রবৃত্তি অন্তরে বিজয়ী হয় তখন (আস্তে আস্তে) মানুষ এমন বিষয়ও ভাল মনে করতে শুরু করে যা আগে খারাপ মনে করত৷ [আলইবানাতুস সুগরা-ইবনে বাত্তা]
আমাদেরকে এই সমস্যার বাস্তব বা ব্যবহারিক কিছু সূরত এবং এগুলি থেকে উত্তরণের কিছু পদ্ধতি জানা দরকার।
ধরা যাক, এখন আপনার কুরআন তিলাওয়াত-তদাব্বুর, দ্বীনী পড়াশোনা, কোন নফল নামায, যিকির, হাত তুলে দুয়া ইত্যাদির কোনটার সময়। এখন গ্রহণযোগ্য কোন কারণ ছাড়াই 'দিনের অন্য সময় বা পরে করে নিব' এটা বলে অলসতা করে ছেড়ে দিলেন। শুরুতে দেখা যাবে কিছুদিন হয়ত পরে আদায় করা হবে৷ কিন্তু আস্তে আস্তে এমন হবে যে, দিনের পর দিন এগুলি ছুটে যাবে টেরও পাওয়া যাবে না। শুরুতে মনে হবে ও আত্মবিশ্বাস আসবে যে- এটা আপনার পক্ষে করা কোন ব্যাপারই না, আবার বাস্তবেও এমন যে এটা অসম্ভব না। কিন্তু একটা সময় এমন হবে যে শত চেষ্টা করেও আপনি পূর্বের রুটিন ও অভ্যাসে ফিরতে পারবেন না। কয়েকদিন পর পর দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করবেন যে- সামনে থেকে এই কাজগুলো করব। আপনার এর শক্তি-সামর্থ্য ও সময় সবই আছে৷ তবু কেন যেন আপনি পারবেন না। অনেক চেষ্টা করেও আপনি এগুলির অভ্যাস ফিরে পাবেন না। তখন আপনার জীবনটা অগোছালো হয়ে যাবে, ভাল লাগবে না, হতাশা ও অস্থিরতা কাজ করবে। মাআযাল্লাহ!
এমনিভাবে ধরেন, এখন ইউটিউব বা ফেইসবুক ব্রাউজিং করা দরকার নেই। বা অন্য কোন কোন একটা কাজ করার দরকার নেই। তবু আপনি বললেন- আচ্ছা আরেকটু দেখে নেই বা আরেকটু করি৷ একটু সময় গেলেই কী...পরে পুষিয়ে নিব... ইত্যাদি। কিন্তু কিছুদিন পরেই দেখা যাবে নাফসের অনুসরণের কারণে আপনার এগুলির প্রতি আসক্তির ব্যাধি তৈরি হয়েছে। এর ফলস্বরূপ কান ও চোখের খেয়ানতসহ আরো বিভিন্ন ব্যাধি জন্ম হচ্ছে৷ আপনি অনেক চেষ্টা করেও এথেকে ফিরতে পারবেন না। মাআযাল্লাহ!
তবে আল্লাহর ইচ্ছায় কেউ নিজেকে সংশোধন কিরে নিলে ভিন্ন বিষয়। আলহামদুলিল্লাহ৷ এমনিভাবে অন্য আরো অনেক বিষয়ে মনের কথায় চলা বা নাফসের অনুসরণ দ্বারা ভয়ানক বিভিন্ন ব্যাধির সৃষ্টি হয়।
তাই আত্মশুদ্ধির একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নাফস বা প্রবৃত্তির অনুসরণ না করা। সময়ের কাজ সময়ে করা। আহ্লাদী, ঢিলেমি ইত্যাদি থেকে বেঁচে থাকা। আল্লাহ আমাদেরকে হেফাজত করুন। আমীন।
Comment