মুসলিম তরুণদের সবকিছু হবে ধর্মকে কেন্দ্র করে
যে কথায় রক্ত টগবগ করে সে কথা বলা সহজ। আর যে কথায় উষ্ণতাকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং চিন্তা ও চেতনাকে জাগ্রত করে সে কথা বলা কঠিন।
প্রিয় ভাই ও বোন!
দুঃখে ক্ষোভে বুকটা ফেটে যায়, যখন দেখি মুসলিম বিশ্বের তরুণ নেতৃবৃন্দ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহ'র বিষয়গুলোকে, সমস্যাগুলোকে, রাজনৈতিক, আঞ্চলিক, আভ্যন্তরীণ ইত্যাদি বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে।
আরাকানের মুহাজিরীনদের সমস্যা, কাশ্মীরের নির্যাতিত মুসলমানদের সমস্যা, বসনিয়ার অসহায় এতিম-বিধবাদের সমস্যা, বাংলায় তাওহীদবাদী সমস্যা, এমনকি ফিলিস্তিন ও বাইতুল মাকদিসের সমস্যা, কোন সমস্যার সঙ্গে যেন দিন ও মিল্লাতের কোন সম্পর্ক নেই!
★★অথচ হিন্দু, নাসারা, ইহুদি, যে জাতি ও জনগোষ্ঠীর দিকে তাঁকাই, প্রতিটি বিষয়কে তারা ধর্মীয় এবং শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখে থাকে। এমনকি তাদের রাজনীতি, কূটনীতি, অর্থনীতি ও অস্ত্রনীতি, এমনকি তাদের সাহায্যনীতিও পরিচালিত হয় ধর্মকে কেন্দ্র করে।
তাদের মিডিয়া ও গণমাধ্যম তাও আগাগোড়া ধর্মকে সামনে রেখে। পুরা অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভাঙা হলো ধর্মের নামে, রামের জন্মভূমির কথা বলে। আসাম ও গুজরাটে মুসলিমদের জন্ম নিবন্ধন বাতিল করা হলো ধর্ম ও ধর্ম গুরুর নির্দেশে।
কাশ্মীরে এত রক্ত ঝরছে, দিল্লিতে এত লাশ পড়ছে, শুধু এজন্য যে তারা মুসলিম। তিমুরে কোন রক্ত ঝরল না, ওয়াংসোতে কোন রক্ত ঝরল না, শুধু এজন্য যে, ওরা খ্রীস্টান।
ফিলিস্তিনের বুকে ইহুদি নামে রাষ্ট্র হল তাও নাকি এই যুক্তিতে যে, এটা হচ্ছে ওদের ধর্মগ্রন্থ মতে প্রতিশ্রুত ভূমি। ওরা দূর্গত মানুষকে সাহায্য করে মানবতার নামে নয়, ধর্মপ্রচারের মতলবে, তবুও ওরা আগাগোড়া মানবতাবাদি।
আমেরিকার মতো চরম পুঁজিবাদী ও আধুনিক বস্তুবাদের দেশের মুদ্রার গায়ে থাকে ধর্ম ও বিশ্বাসের স্লোগান, অথচ কোন মুসলিম দেশের সংবিধানে....!
★★আজ বাস্তবতা!!
আমরা আমাদের সমস্যাগুলোকে দেখি নেতাকে কেন্দ্র করে, সাহায্য করি নেতাকে উপলক্ষ্য বানিয়ে, দ্বীনের ইখলাস খুঁজে বেড়াই পদবীর ছোট বড় চেয়ারে। আমরা নিজের স্বার্থকে বড় করে দেখি, উম্মাহর স্বার্থকে ছোট্ট করে ভাবি। রাহনুমায়ি কামনা করি আত্মীয়ের সীমারেখার ভেতরে, উম্মাহ যে পরম আত্মীয় সে কথা শুনলে আঁতকে উঠি। দয়াময়ের এ ছোট্র ছাউনীতে এ স্বার্থ আমার আর তোমার কাঠিন্য দিলেই বয়ে বেড়ানো সম্ভব।
★★কিন্তু উম্মাহর অতন্দ্রপ্রহরী, মানবতার অগ্রদূত, মুজাহিদীনে কেরামের পক্ষে সম্ভব নয়, তারা স্বার্থ খুঁজে পারলৌকিক প্রত্যেকটি জিনিসে, যেমনঃ জিহাদ ও শাহাদাত, মুজাদালাত ও মুকাতালাতে।
দ্বীনকে তারা প্রাধান্য দেয়, ছোট্ট ছোট্ট নফল আমলগুলোতেও আর ফরয বিধানগুলোকে উঁচু সীমারেখায় আসীন করা তো তাদের তাকদীরি লিখন।
বিশেষ করে হিজরত আর মুজাহাদাত যেন তাদের কাছে মনিমুক্তার দানারমত, আনকা পাখি যেমন এক ফোটা বৃষ্টির জন্য আকাশপানে হা করে তাঁকিয়ে থাকে ঠিকতেমনি বীর মুজাহিদীনরাও মহান রবের দরবারে এ সাহায্যের জন্য নতজানু হয়ে ফ্যাঁলফ্যালিয়ে তাঁকিয়ে থাকে।
এবার আপনিই বলুন, রব কি তাদের ফিরিয়ে দিতে পারেন? তাদের সাহায্য করার ক্ষেত্রে, দুঃখ কষ্ট লাঘব করার ক্ষেত্রে, তাদের মুখে শাহাদাতের অস্লান হাসি ফোটানোর ক্ষেত্রে? না, না, অবশ্যই না কারণ তাদের সবকিছুই ধর্মকে কেন্দ্র করে, ধর্মের স্রষ্টাকে সঠিক আসনে আধিষ্টিত করে, ধর্মের নেতার নীতিকে জীবনাদর্শ বানিয়ে।
স্বার্থপর হৃদয়ে কি এ প্রশ্ন জাগে না?
★★তারা কি জান্নাতের জন্য না জান্নাত তাদের জন্য?
তাহলে কি হবে এর উত্তরঃ-
হে আমার ভাই! জান্নাত হলো তাদের জন্য, কারণ তারা তা ক্রয় করে নিয়েছে নিজ জান-মালের বিনিময়ে। নিজ পরিবার পরিজনকে আল্লাহর হাওলায় রেখে দিয়ে।
বিভিন্ন ব্যাখ্যাগ্রন্থ অধ্যয়ন করে, বিশ্লেষণ করে এমনি পাওয়া যায়, তিনটি জিনিসের যোগ্যতা অর্জন হলে জান্নাত কারো জন্য হয়ে যায়।
সে জিনিসগুলো কি কি?
এক. صراط المستقيم {{ সঠিক পথ}}
দুই. اموال و انفاس {{ জান-মালের কুরবানী }}
তিন. فيقتلون و يقتلون {{নিজে নিহত হওয়া ও অন্যকে নিহত করা। সূরা তাওবা, আয়াত নং ১১১
যাদের মধ্যে এ গুণগুলো পাওয়া যাবে জান্নাত তাদের জন্য। আর যাদের মধ্যে এগুণগুলো পাওয়া যাবে না তারা জান্নাতের জন্য কারণ তারা জান্নাতকে এ গুণগুলো দ্বারা ক্রয় করেনি। যেহেতু তারা ক্রয় করেনি তাহলে মালিকানা রবের হাতে। আর যারা ক্রয় করেছে রব তাদের জন্য জান্নাতকে বরাদ্দ করে রেখেছেন মানে সুনিশ্চিতভাবে নির্ধারণ করেছেন ।
★★এজন্যই ঐশী গ্রন্থে ইরশাদ হয়েছে,
শহীদদেরকে বিনা হিসাবে জান্নাত দেওয়া হবে। অর্থাৎ শহীদরা আগেই রবের কাছে জান্নাতে যাওয়ার টিকিট জমা দিয়ে রেখেছেন আর রবও তা গ্রহণ করে নিয়েছেন।
নিয়তির অমোঘ বিধান যেহেতু হাশরের ময়দান কায়েম হবে সেহেতু তাদের প্রাপ্তিটা ঐখানে সকলের সামনে পুরষ্কার ও সম্মান হিসেবে বলা হবে, আমার অমুক অমুক বান্দাকে বিনা হিসাবে জান্নাত দেওয়া হলো, তাদের কর্মফল সাবলীল ভাষায়, জান্নাতী ভাষায়, ঘোষণা করা হবে, এ অবস্থায় অন্য সকল মুমিন বান্দা খুশিতে আত্মহারা হয়ে যাবে, পরক্ষণই আফসোস করতে থাকবে আবার তো পেরেশানীর অন্ত নেই।
কিন্তু আমার আপনার ক্ষেত্রে?
জান্নাতের জন্য আমরা, আমাদের জন্য জান্নাত নয়, কারণ আমরা জান-মাল দিয়ে ক্রয় করছিনা, নফল বিধান তো দূরের কথা, ফরয বিধান পালনের ক্ষেত্রেই ধর্মের কোন পরোয়া করছি না। হালাল হারামের কোন তোয়াক্কা করছি না। স্রষ্টার নাফরমানির সীমারেখা অতিক্রম করে, লাগামহীন অবস্থায় লোভাতুর হয়ে জান্নাতের স্বপ্ন বুকে লালন করে বসে আছি। সুতরাংদয়াময় প্রভুর করুণা হলে তা পেতে পারি।
সুতরাং হে আমার ভাই!
যে ধর্মের অন্ধকারে ডুবে আছে তার সামনে আলো ধরো, যে ধর্মের পিপাসায় ছটফট করছে তার সামনে ইলমের শীতল জল তুলে ধরো, আর যে শাহাদাতের পিপাসায় উন্মাদ হয়ে আছে তার সামনে জিহাদের বিধানকে স্পষ্ট করে তুলো। কারণ মানুষ বড় হয় ছোট্ট একটি বিধানের চিরন্তন সাধনায়, আবার ছোট হয় মুহুর্তের একটি ছোট্ট আচরণ ও উচ্চারণে, তুমি আমি কোনটা চাই?
মানুষ কত স্বপ্ন দেখে, কত আশা পোষণ করে, আশা ও স্বপ্নের বাস্তবায়নে কত দৌড়ঝাঁপ। আর এদিকে আমাদের অজান্তেই জীবন ফুরিয়ে যায়, আশা ও স্বপ্ন মরীচিকা হয়ে যায়!!
জানা কথা বারবার কেন বলি! দেখা স্বপ্ন বারবার কেন মুযাকারা করি! এটা তোমার প্রশ্ন তাই তো? তা এ জন্য যে, নিজের বিশ্বাসকে পাকাপোক্ত করার জন্য, উম্মাহর সাধারণ মানুষের বিশ্বাসকে সুদূর করার জন্য, পথ ভুলা তরুণকে তারুণ্যের উচ্ছাসে ফিরিয়ে আনার জন্য, যেন সে রবের একটুখানি পায়রবি করে, প্রিয় হাবিবের একটুখানি আনুগত্য করে।
এখনো কি দিলে আশা জাগে না ধর্মের ব্যানারে জড়ো হওয়ার, ধর্মের স্রষ্টা ও সৃষ্টিকে প্রাধান্য দেওয়ার, দাসত্বের জিঞ্জিরকে ছিড়ে ফেলার, তাওহীদবাদীদের কাতারে শামিল হওয়ার?
★★হে আমার যুবক ভাই, তোমার অন্তর এতই পাষাণ, অন্তরে এতই মরীচিকা, তাওহীদের হাতুড়ির বারি পর্যন্ত ঝং দূর হচ্ছে না! আমি জানি তো তোমার পাপকিষ্ট আত্মায়, তোমার মোহরাংকিত হৃদয়ে একফোঁটা প্রশান্তি নেই।
আজ বুঝবে না, একদিন অবশ্যই বুঝবে, আমি তোমার কত হিতাকাঙ্ক্ষী ছিলাম। তখন হয়ত আমি থাকবো না তোমার চোখের অশ্রু দেখতে..
হে আমার যুবক ভাই! এখনো কি দিলে আশা জাগে না ধর্মের ব্যানারে জড়ো হওয়ার, ধর্মের স্রষ্টা ও সৃষ্টিকে পাধান্য দেওয়ার, দাসত্বের জিঞ্জিরকে ছিড়ে ফেলার, তাওহীদবাদীদের কাতারে শামিল হওয়ার?
একটু বিনয়ী হয়ে অনুধাবন করার চেষ্টা করো, কারণ তারুণ্যের উদ্যমের সঙ্গে বিনয় যুক্ত হলে সামনে থাকে আলো; সেই আলোতে দেখা যায় সরল পথ; আর তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের সঙ্গে অহংকার যুক্ত হলে সামনে থাকে আলেয়া, যা সরল পথ থেকে বিচ্যুত। পুরো তরুণ বয়স হলো আলো-আলেয়ার গোলকধাঁধা।
অবশেষে আমার কথায় কর্ণপাত করলে, তাই তো! আলহামদুলিল্লাহ! আলহামদুলিল্লাহ!! হাজার শুকরিয়া হে আমার কলিজার টুকরা যুবক ভাই।
ভাই, তুমি তো জানো না!
★★সমাজ ও পরিবেশের বিভিন্ন আবিলতা তরুণের স্বভাবধর্মকে মলিন করে দিতে চায়; তবে সাহসী ও উদ্যমী তরুণ সকল বাঁধা অতিক্রম করে, নু-রুন আলা নূর এ আয়াতের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। এমন তরুণকে আমার সশ্রদ্ধ সালাম!
যে কথায় রক্ত টগবগ করে সে কথা বলা সহজ। আর যে কথায় উষ্ণতাকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং চিন্তা ও চেতনাকে জাগ্রত করে সে কথা বলা কঠিন।
প্রিয় ভাই ও বোন!
দুঃখে ক্ষোভে বুকটা ফেটে যায়, যখন দেখি মুসলিম বিশ্বের তরুণ নেতৃবৃন্দ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহ'র বিষয়গুলোকে, সমস্যাগুলোকে, রাজনৈতিক, আঞ্চলিক, আভ্যন্তরীণ ইত্যাদি বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে।
আরাকানের মুহাজিরীনদের সমস্যা, কাশ্মীরের নির্যাতিত মুসলমানদের সমস্যা, বসনিয়ার অসহায় এতিম-বিধবাদের সমস্যা, বাংলায় তাওহীদবাদী সমস্যা, এমনকি ফিলিস্তিন ও বাইতুল মাকদিসের সমস্যা, কোন সমস্যার সঙ্গে যেন দিন ও মিল্লাতের কোন সম্পর্ক নেই!
★★অথচ হিন্দু, নাসারা, ইহুদি, যে জাতি ও জনগোষ্ঠীর দিকে তাঁকাই, প্রতিটি বিষয়কে তারা ধর্মীয় এবং শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখে থাকে। এমনকি তাদের রাজনীতি, কূটনীতি, অর্থনীতি ও অস্ত্রনীতি, এমনকি তাদের সাহায্যনীতিও পরিচালিত হয় ধর্মকে কেন্দ্র করে।
তাদের মিডিয়া ও গণমাধ্যম তাও আগাগোড়া ধর্মকে সামনে রেখে। পুরা অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভাঙা হলো ধর্মের নামে, রামের জন্মভূমির কথা বলে। আসাম ও গুজরাটে মুসলিমদের জন্ম নিবন্ধন বাতিল করা হলো ধর্ম ও ধর্ম গুরুর নির্দেশে।
কাশ্মীরে এত রক্ত ঝরছে, দিল্লিতে এত লাশ পড়ছে, শুধু এজন্য যে তারা মুসলিম। তিমুরে কোন রক্ত ঝরল না, ওয়াংসোতে কোন রক্ত ঝরল না, শুধু এজন্য যে, ওরা খ্রীস্টান।
ফিলিস্তিনের বুকে ইহুদি নামে রাষ্ট্র হল তাও নাকি এই যুক্তিতে যে, এটা হচ্ছে ওদের ধর্মগ্রন্থ মতে প্রতিশ্রুত ভূমি। ওরা দূর্গত মানুষকে সাহায্য করে মানবতার নামে নয়, ধর্মপ্রচারের মতলবে, তবুও ওরা আগাগোড়া মানবতাবাদি।
আমেরিকার মতো চরম পুঁজিবাদী ও আধুনিক বস্তুবাদের দেশের মুদ্রার গায়ে থাকে ধর্ম ও বিশ্বাসের স্লোগান, অথচ কোন মুসলিম দেশের সংবিধানে....!
★★আজ বাস্তবতা!!
আমরা আমাদের সমস্যাগুলোকে দেখি নেতাকে কেন্দ্র করে, সাহায্য করি নেতাকে উপলক্ষ্য বানিয়ে, দ্বীনের ইখলাস খুঁজে বেড়াই পদবীর ছোট বড় চেয়ারে। আমরা নিজের স্বার্থকে বড় করে দেখি, উম্মাহর স্বার্থকে ছোট্ট করে ভাবি। রাহনুমায়ি কামনা করি আত্মীয়ের সীমারেখার ভেতরে, উম্মাহ যে পরম আত্মীয় সে কথা শুনলে আঁতকে উঠি। দয়াময়ের এ ছোট্র ছাউনীতে এ স্বার্থ আমার আর তোমার কাঠিন্য দিলেই বয়ে বেড়ানো সম্ভব।
★★কিন্তু উম্মাহর অতন্দ্রপ্রহরী, মানবতার অগ্রদূত, মুজাহিদীনে কেরামের পক্ষে সম্ভব নয়, তারা স্বার্থ খুঁজে পারলৌকিক প্রত্যেকটি জিনিসে, যেমনঃ জিহাদ ও শাহাদাত, মুজাদালাত ও মুকাতালাতে।
দ্বীনকে তারা প্রাধান্য দেয়, ছোট্ট ছোট্ট নফল আমলগুলোতেও আর ফরয বিধানগুলোকে উঁচু সীমারেখায় আসীন করা তো তাদের তাকদীরি লিখন।
বিশেষ করে হিজরত আর মুজাহাদাত যেন তাদের কাছে মনিমুক্তার দানারমত, আনকা পাখি যেমন এক ফোটা বৃষ্টির জন্য আকাশপানে হা করে তাঁকিয়ে থাকে ঠিকতেমনি বীর মুজাহিদীনরাও মহান রবের দরবারে এ সাহায্যের জন্য নতজানু হয়ে ফ্যাঁলফ্যালিয়ে তাঁকিয়ে থাকে।
এবার আপনিই বলুন, রব কি তাদের ফিরিয়ে দিতে পারেন? তাদের সাহায্য করার ক্ষেত্রে, দুঃখ কষ্ট লাঘব করার ক্ষেত্রে, তাদের মুখে শাহাদাতের অস্লান হাসি ফোটানোর ক্ষেত্রে? না, না, অবশ্যই না কারণ তাদের সবকিছুই ধর্মকে কেন্দ্র করে, ধর্মের স্রষ্টাকে সঠিক আসনে আধিষ্টিত করে, ধর্মের নেতার নীতিকে জীবনাদর্শ বানিয়ে।
স্বার্থপর হৃদয়ে কি এ প্রশ্ন জাগে না?
★★তারা কি জান্নাতের জন্য না জান্নাত তাদের জন্য?
তাহলে কি হবে এর উত্তরঃ-
হে আমার ভাই! জান্নাত হলো তাদের জন্য, কারণ তারা তা ক্রয় করে নিয়েছে নিজ জান-মালের বিনিময়ে। নিজ পরিবার পরিজনকে আল্লাহর হাওলায় রেখে দিয়ে।
বিভিন্ন ব্যাখ্যাগ্রন্থ অধ্যয়ন করে, বিশ্লেষণ করে এমনি পাওয়া যায়, তিনটি জিনিসের যোগ্যতা অর্জন হলে জান্নাত কারো জন্য হয়ে যায়।
সে জিনিসগুলো কি কি?
এক. صراط المستقيم {{ সঠিক পথ}}
দুই. اموال و انفاس {{ জান-মালের কুরবানী }}
তিন. فيقتلون و يقتلون {{নিজে নিহত হওয়া ও অন্যকে নিহত করা। সূরা তাওবা, আয়াত নং ১১১
যাদের মধ্যে এ গুণগুলো পাওয়া যাবে জান্নাত তাদের জন্য। আর যাদের মধ্যে এগুণগুলো পাওয়া যাবে না তারা জান্নাতের জন্য কারণ তারা জান্নাতকে এ গুণগুলো দ্বারা ক্রয় করেনি। যেহেতু তারা ক্রয় করেনি তাহলে মালিকানা রবের হাতে। আর যারা ক্রয় করেছে রব তাদের জন্য জান্নাতকে বরাদ্দ করে রেখেছেন মানে সুনিশ্চিতভাবে নির্ধারণ করেছেন ।
★★এজন্যই ঐশী গ্রন্থে ইরশাদ হয়েছে,
শহীদদেরকে বিনা হিসাবে জান্নাত দেওয়া হবে। অর্থাৎ শহীদরা আগেই রবের কাছে জান্নাতে যাওয়ার টিকিট জমা দিয়ে রেখেছেন আর রবও তা গ্রহণ করে নিয়েছেন।
নিয়তির অমোঘ বিধান যেহেতু হাশরের ময়দান কায়েম হবে সেহেতু তাদের প্রাপ্তিটা ঐখানে সকলের সামনে পুরষ্কার ও সম্মান হিসেবে বলা হবে, আমার অমুক অমুক বান্দাকে বিনা হিসাবে জান্নাত দেওয়া হলো, তাদের কর্মফল সাবলীল ভাষায়, জান্নাতী ভাষায়, ঘোষণা করা হবে, এ অবস্থায় অন্য সকল মুমিন বান্দা খুশিতে আত্মহারা হয়ে যাবে, পরক্ষণই আফসোস করতে থাকবে আবার তো পেরেশানীর অন্ত নেই।
কিন্তু আমার আপনার ক্ষেত্রে?
জান্নাতের জন্য আমরা, আমাদের জন্য জান্নাত নয়, কারণ আমরা জান-মাল দিয়ে ক্রয় করছিনা, নফল বিধান তো দূরের কথা, ফরয বিধান পালনের ক্ষেত্রেই ধর্মের কোন পরোয়া করছি না। হালাল হারামের কোন তোয়াক্কা করছি না। স্রষ্টার নাফরমানির সীমারেখা অতিক্রম করে, লাগামহীন অবস্থায় লোভাতুর হয়ে জান্নাতের স্বপ্ন বুকে লালন করে বসে আছি। সুতরাংদয়াময় প্রভুর করুণা হলে তা পেতে পারি।
সুতরাং হে আমার ভাই!
যে ধর্মের অন্ধকারে ডুবে আছে তার সামনে আলো ধরো, যে ধর্মের পিপাসায় ছটফট করছে তার সামনে ইলমের শীতল জল তুলে ধরো, আর যে শাহাদাতের পিপাসায় উন্মাদ হয়ে আছে তার সামনে জিহাদের বিধানকে স্পষ্ট করে তুলো। কারণ মানুষ বড় হয় ছোট্ট একটি বিধানের চিরন্তন সাধনায়, আবার ছোট হয় মুহুর্তের একটি ছোট্ট আচরণ ও উচ্চারণে, তুমি আমি কোনটা চাই?
মানুষ কত স্বপ্ন দেখে, কত আশা পোষণ করে, আশা ও স্বপ্নের বাস্তবায়নে কত দৌড়ঝাঁপ। আর এদিকে আমাদের অজান্তেই জীবন ফুরিয়ে যায়, আশা ও স্বপ্ন মরীচিকা হয়ে যায়!!
জানা কথা বারবার কেন বলি! দেখা স্বপ্ন বারবার কেন মুযাকারা করি! এটা তোমার প্রশ্ন তাই তো? তা এ জন্য যে, নিজের বিশ্বাসকে পাকাপোক্ত করার জন্য, উম্মাহর সাধারণ মানুষের বিশ্বাসকে সুদূর করার জন্য, পথ ভুলা তরুণকে তারুণ্যের উচ্ছাসে ফিরিয়ে আনার জন্য, যেন সে রবের একটুখানি পায়রবি করে, প্রিয় হাবিবের একটুখানি আনুগত্য করে।
এখনো কি দিলে আশা জাগে না ধর্মের ব্যানারে জড়ো হওয়ার, ধর্মের স্রষ্টা ও সৃষ্টিকে প্রাধান্য দেওয়ার, দাসত্বের জিঞ্জিরকে ছিড়ে ফেলার, তাওহীদবাদীদের কাতারে শামিল হওয়ার?
★★হে আমার যুবক ভাই, তোমার অন্তর এতই পাষাণ, অন্তরে এতই মরীচিকা, তাওহীদের হাতুড়ির বারি পর্যন্ত ঝং দূর হচ্ছে না! আমি জানি তো তোমার পাপকিষ্ট আত্মায়, তোমার মোহরাংকিত হৃদয়ে একফোঁটা প্রশান্তি নেই।
আজ বুঝবে না, একদিন অবশ্যই বুঝবে, আমি তোমার কত হিতাকাঙ্ক্ষী ছিলাম। তখন হয়ত আমি থাকবো না তোমার চোখের অশ্রু দেখতে..
হে আমার যুবক ভাই! এখনো কি দিলে আশা জাগে না ধর্মের ব্যানারে জড়ো হওয়ার, ধর্মের স্রষ্টা ও সৃষ্টিকে পাধান্য দেওয়ার, দাসত্বের জিঞ্জিরকে ছিড়ে ফেলার, তাওহীদবাদীদের কাতারে শামিল হওয়ার?
একটু বিনয়ী হয়ে অনুধাবন করার চেষ্টা করো, কারণ তারুণ্যের উদ্যমের সঙ্গে বিনয় যুক্ত হলে সামনে থাকে আলো; সেই আলোতে দেখা যায় সরল পথ; আর তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের সঙ্গে অহংকার যুক্ত হলে সামনে থাকে আলেয়া, যা সরল পথ থেকে বিচ্যুত। পুরো তরুণ বয়স হলো আলো-আলেয়ার গোলকধাঁধা।
অবশেষে আমার কথায় কর্ণপাত করলে, তাই তো! আলহামদুলিল্লাহ! আলহামদুলিল্লাহ!! হাজার শুকরিয়া হে আমার কলিজার টুকরা যুবক ভাই।
ভাই, তুমি তো জানো না!
★★সমাজ ও পরিবেশের বিভিন্ন আবিলতা তরুণের স্বভাবধর্মকে মলিন করে দিতে চায়; তবে সাহসী ও উদ্যমী তরুণ সকল বাঁধা অতিক্রম করে, নু-রুন আলা নূর এ আয়াতের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। এমন তরুণকে আমার সশ্রদ্ধ সালাম!
Comment