আল্লাহর প্রতি ভালবাসা
পৃথিবীর সকল মানুষ দুই ভাগে বিভক্ত। মুসলিম, কাফির। ওই ব্যক্তি কতই না সফলকাম যাকে আল্লাহ তাআলা মুসলিম হওয়ার তাওফিক দিয়ে চিরস্থায়ী জাহান্নাম থেকে রক্ষা করেছেন। আবার আপনি দেখতে পাবেন, মুসলিম হওয়ার পরও সকলের পর্যায় সমান না। কাউকে দেখবেন আল্লাহর জন্য নিজের সব বিলিয়ে দিচ্ছে, আর কেউ মূল্যহীন তুচ্ছ দুনিয়ার জন্য আল্লাহর জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ের কুরবানি পেশ করতে পারছে না। কেউ দ্বীনের পথে সীমাহীন দুঃখ-কষ্ট, বিপদের সম্মুখীন হওয়ার পরও হাসিমুখে তা বরণ করে নিচ্ছে, আর কেউ সামান্য কোন বিপদেই দ্বীনের পথ থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে। সবারই তো রক্ত-মাংসে গড়া একটি দেহ আছে, সবাই একই দুনিয়ায় বাস করছে। আমরা কি চিন্তা করে দেখেছি, কি সেই জিনিস যার কারণে এই পার্থক্যটা হচ্ছে?! আমরা গভীরভাবে লক্ষ্য করলে দেখতে পাব, এসব কিছুর মূলে রয়েছে আল্লাহর প্রতি ভালবাসা। আল্লাহর প্রতি ভালবাসায় সিক্ত হয়ে তাঁর স্মরণ এমন এক জিনিস যা আপনাকে আল্লাহর পথে দৃঢ় থাকতে সহযোগী হবে, চলার পথের পাথেয় হবে ও আপনার হৃদয়ে এনে দিবে অনাবিল প্রশান্তি। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَتَطۡمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكۡرِ ٱللَّهِۗ أَلَا بِذِكۡرِ ٱللَّهِ تَطۡمَئِنُّ ٱلۡقُلُوبُ
(আল্লাহর প্রতি অভিমূখী বান্দা হল) যারা ঈমান আনে এবং আল্লাহ্*র স্মরণে যাদের মন প্রশান্ত হয়; জেনে রাখ, আল্লাহ্*র স্মরণেই মন প্রশান্ত হয়। ( সুরা রাদ, আয়াত ২৮)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
ثلاث من كن فيه وجد حلاوة الإيمان أن يكون الله ورسوله أحب إليه مما سواهما، وأن يحب المرء لا يحبه إلا لله، وأن يكره أن يعود في الكفر كما يكره أن يقذف في النار
তিনটি গুন যার মধ্যে আছে, সে ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করতে পারেঃ
১. আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তার নিকট অন্য সকল কিছু হতে অধিক প্রিয় হওয়া;
২. কাউকে একমাত্র আল্লাহর জন্যই ভালবাসা;
৩. কুফুরিতে প্রত্যাবর্তনকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হবার মত অপছন্দ করা।
(বুখারি, মুসলিম)
শাইখুল মুজাহিদ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহিঃ বলেন-
“…বর্তমান যুগে ইসলামের সবেচেয় বড় সমস্যা হচ্ছে যারা ইসলামের জন্য কাজ করছে তাদের মধ্যে সৎ ও নিষ্ঠাবান (দ্বীনের প্রতি /আল্লাহর প্রতি ) লােকের অভাব। তারপরেও কাজ করে যাওয়া কিছু আল্লাহভীরু ও খাঁটি বান্দারা রয়েছেন যারা এ পৃথিবীতে যেন এসেছেনই জাতি সমূহকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য , অথৈ সাগরে পড়া জাহাজকে উদ্ধারের জন্য …”
পক্ষান্তরে যদি আল্লাহর ভালবাসা কারও অন্তরে না থাকে সামান্য বিপদাপদেই সে অস্থির হয়ে পড়ে, আবার কখনও বা আল্লাহর পথ থেকে আরো দূরে সরে যায়। এদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَقُولُ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ فَإِذَآ أُوذِيَ فِي ٱللَّهِ جَعَلَ فِتۡنَةَ ٱلنَّاسِ كَعَذَابِ ٱللَّهِۖ وَلَئِن جَآءَ نَصۡرٞ مِّن رَّبِّكَ لَيَقُولُنَّ إِنَّا كُنَّا مَعَكُمۡۚ أَوَلَيۡسَ ٱللَّهُ بِأَعۡلَمَ بِمَا فِي صُدُورِ ٱلۡعَٰلَمِينَ
আর মানুষের মধ্যে কেউ কেউ বলে, ‘আমরা আল্লাহ্*র উপর ঈমান এনেছি’, কিন্তু আল্লাহ্*র পথে যখন তারা নিগৃহীত হয়, তখন তারা মানুষের পীড়নকে আল্লাহ্*র শাস্তির মত গণ্য করে । আর আপনার রবের কাছ থেকে কোনো সাহায্য আসলে তারা বলতে থাকে, ‘আমরা তো তোমাদের সঙ্গেই ছিলাম ।’ সৃষ্টিকুলের অন্তরে যা আছে, আল্লাহ কি সে সম্পর্কে সম্যক অবগত নন? (সুরা আনকাবুত, আয়াত ১০)
মূলত আল্লাহর জন্য বিপদাপদ আসাটা মুমিনের মর্যাদা বৃদ্ধি ও সফলতার সোপান। তাই কারো আল্লাহর প্রতি ভালবাসা না থাকলে এটিকে তার কাছে আযাব মনে হবে ও এর দ্বারা সে ধ্বংসের পথে আরো বেশি এগিয়ে যাবে।
তাই আল্লাহর পথে টিকে থাকা ও সফলতার সোপানে আরোহন করা আল্লাহর প্রতি ভালবাসা অর্জন ছাড়া কিছুতেই সম্ভব নয়। এটা সকল যুগের বাস্তবতা ও পরীক্ষিত বিষয় যে, কোন ব্যক্তি জিহাদের কাজের ততক্ষণ পর্যন্ত সফল হতে পারে নি যতক্ষণ না সে আল্লাহর সাথে তার সম্পর্ককে দুরস্ত করেছে। আমরা যখন আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্ককে দুরস্ত করব, আল্লাহ তাআলাও মানুষের কাছে আমাদের গ্রহণযোগ্যতা ও ভালবাসাকে দুরস্ত করে দিবেন। কাজের মাঠে আমরা সফল হব ও মানুষ আমাদের দাওয়াহ কবুল করবে। তা না হয় মানুষ আমাদের থেকে দূরে সরে যাবে ও আমাদের দাওয়াহ কল্যাণকর হওয়া সত্ত্বেও তা প্রত্যাখ্যান করবে। ( আল্লাহ হিফাজত করুন)। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
إن الله إذا أحب عبدا دعا جبريل فقال إني أحب فلانا فأحبه - قال - فيحبه جبريل ثم ينادي في السماء فيقول إن الله يحب فلانا فأحبوه . فيحبه أهل السماء - قال - ثم يوضع له القبول في الأرض . وإذا أبغض عبدا دعا جبريل فيقول إني أبغض فلانا فأبغضه - قال - فيبغضه جبريل ثم ينادي في أهل السماء إن الله يبغض فلانا فأبغضوه - قال - فيبغضونه ثم توضع له البغضاء في الأرض
আল্লাহ তাআলা যদি কোন বান্দাকে পছন্দ করেন তখন জিব্রাইল (আঃ)-কে ডাক দেন এবং বলেন, নিশ্চয়ই আমি অমুক লোককে পছন্দ করি, তুমিও তাকে পছন্দ কর। তিনি বলেন, তখন জিব্রাইল (আঃ) তাকে পছন্দ করেন। অতঃপর তিনি আকাশমণ্ডলীতে ঘোষণা দিয়ে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ অমুক লোককে পছন্দ করেন, সুতরাং আপনারাও তাকে পছন্দ করুন। তখন আকাশবাসীরা তাকে পছন্দ করে। তিনি বলেন, এরপর দুনিয়াতে তাকে নন্দিত, সমাদৃত করা হয়। আর আল্লাহ যদি কোন লোকের উপর রাগ করেন তখন জিব্রাইল (আঃ)-কে ডাক দেন এবং বলেন, আমি অমুক বান্দার উপর রাগ করেছি, তুমিও তার প্রতি নারাজ হও। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তখন জিব্রাইল (আঃ) তার উপর রাগান্বিত হন। তারপর তিনি আকাশবাসীদেরকে ডাক দিয়ে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা অমুকের উপর রাগান্বিত। কাজেই আপনারাও তার উপর ক্রোধান্বিত হোন। তিনি বলেন, তখন লোকেরা তার উপর দুশমনি পোষণ করে। তারপর তার জন্য পৃথিবীতে শত্রু বানিয়ে দেয়া হয়। (মুসলিম)
বুঝা গেল, আল্লাহর প্রতি ভালবাসা অর্জন ছাড়া মুমিনের কোন উপায়ন্তর নেই। আর দ্বীনের সর্বোচ্চ চূড়া জিহাদের পথের পথিকদের জন্য তো তা বলাই বাহুল্য।
আল্লাহর প্রতি ভালবাসা অর্জনের ক্ষেত্রে আমাদের জন্য যা সহায়ক হতে পারেঃ
১. সকল গুনাহ পরিত্যাগ করা।
২. জিহাদের প্রস্তুতির ব্যাপারে যেকোন ধরনের অলসতা পরিত্যাগ করা।
৩. গোপনে আল্লাহকে স্মরণ করা ও কোন গোপন আমল করা।
৪. অযথা কথাবার্তা ও গুনাহের পরিবেশ পরিত্যাগ করা।
৫. নিয়মিত অর্থ অনুধাবন করে কুরআন অধ্যয়ন করা, পাশাপাশি হাদিস ও অন্যান্য দ্বীনি বিষয় অন্তর দিয়ে অনুধাবন করে আমলের নিয়াতে অধ্যয়ন করা।
৬. মুহাসাবার ব্যাপারে যত্নবান হওয়া।
৭. সুন্নাহর পাবন্দি করা।
৮. হাত তুলে দুয়া, আযকার, বেশি বেশি নফল আমলের ব্যাপারে যত্নবান হওয়া।
৯. তাহাজ্জুদের পাবন্দি করা।
১০. হারাম ভক্ষণ বান্দার হক নষ্ট করা থেকে সতর্ক থাকা।
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِۦ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسۡلِمُونَ
হে মুমিনগণ, তোমরা যথার্থভাবে আল্লাহ্*র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং তোমরা মুসলিম (পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণকারী) না হয়ে কোনো অবস্থায় মৃত্যুবরণ করো না। (সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১০২)
পৃথিবীর সকল মানুষ দুই ভাগে বিভক্ত। মুসলিম, কাফির। ওই ব্যক্তি কতই না সফলকাম যাকে আল্লাহ তাআলা মুসলিম হওয়ার তাওফিক দিয়ে চিরস্থায়ী জাহান্নাম থেকে রক্ষা করেছেন। আবার আপনি দেখতে পাবেন, মুসলিম হওয়ার পরও সকলের পর্যায় সমান না। কাউকে দেখবেন আল্লাহর জন্য নিজের সব বিলিয়ে দিচ্ছে, আর কেউ মূল্যহীন তুচ্ছ দুনিয়ার জন্য আল্লাহর জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ের কুরবানি পেশ করতে পারছে না। কেউ দ্বীনের পথে সীমাহীন দুঃখ-কষ্ট, বিপদের সম্মুখীন হওয়ার পরও হাসিমুখে তা বরণ করে নিচ্ছে, আর কেউ সামান্য কোন বিপদেই দ্বীনের পথ থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে। সবারই তো রক্ত-মাংসে গড়া একটি দেহ আছে, সবাই একই দুনিয়ায় বাস করছে। আমরা কি চিন্তা করে দেখেছি, কি সেই জিনিস যার কারণে এই পার্থক্যটা হচ্ছে?! আমরা গভীরভাবে লক্ষ্য করলে দেখতে পাব, এসব কিছুর মূলে রয়েছে আল্লাহর প্রতি ভালবাসা। আল্লাহর প্রতি ভালবাসায় সিক্ত হয়ে তাঁর স্মরণ এমন এক জিনিস যা আপনাকে আল্লাহর পথে দৃঢ় থাকতে সহযোগী হবে, চলার পথের পাথেয় হবে ও আপনার হৃদয়ে এনে দিবে অনাবিল প্রশান্তি। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَتَطۡمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكۡرِ ٱللَّهِۗ أَلَا بِذِكۡرِ ٱللَّهِ تَطۡمَئِنُّ ٱلۡقُلُوبُ
(আল্লাহর প্রতি অভিমূখী বান্দা হল) যারা ঈমান আনে এবং আল্লাহ্*র স্মরণে যাদের মন প্রশান্ত হয়; জেনে রাখ, আল্লাহ্*র স্মরণেই মন প্রশান্ত হয়। ( সুরা রাদ, আয়াত ২৮)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
ثلاث من كن فيه وجد حلاوة الإيمان أن يكون الله ورسوله أحب إليه مما سواهما، وأن يحب المرء لا يحبه إلا لله، وأن يكره أن يعود في الكفر كما يكره أن يقذف في النار
তিনটি গুন যার মধ্যে আছে, সে ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করতে পারেঃ
১. আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তার নিকট অন্য সকল কিছু হতে অধিক প্রিয় হওয়া;
২. কাউকে একমাত্র আল্লাহর জন্যই ভালবাসা;
৩. কুফুরিতে প্রত্যাবর্তনকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হবার মত অপছন্দ করা।
(বুখারি, মুসলিম)
শাইখুল মুজাহিদ আব্দুল্লাহ আযযাম রাহিঃ বলেন-
“…বর্তমান যুগে ইসলামের সবেচেয় বড় সমস্যা হচ্ছে যারা ইসলামের জন্য কাজ করছে তাদের মধ্যে সৎ ও নিষ্ঠাবান (দ্বীনের প্রতি /আল্লাহর প্রতি ) লােকের অভাব। তারপরেও কাজ করে যাওয়া কিছু আল্লাহভীরু ও খাঁটি বান্দারা রয়েছেন যারা এ পৃথিবীতে যেন এসেছেনই জাতি সমূহকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য , অথৈ সাগরে পড়া জাহাজকে উদ্ধারের জন্য …”
পক্ষান্তরে যদি আল্লাহর ভালবাসা কারও অন্তরে না থাকে সামান্য বিপদাপদেই সে অস্থির হয়ে পড়ে, আবার কখনও বা আল্লাহর পথ থেকে আরো দূরে সরে যায়। এদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَقُولُ ءَامَنَّا بِٱللَّهِ فَإِذَآ أُوذِيَ فِي ٱللَّهِ جَعَلَ فِتۡنَةَ ٱلنَّاسِ كَعَذَابِ ٱللَّهِۖ وَلَئِن جَآءَ نَصۡرٞ مِّن رَّبِّكَ لَيَقُولُنَّ إِنَّا كُنَّا مَعَكُمۡۚ أَوَلَيۡسَ ٱللَّهُ بِأَعۡلَمَ بِمَا فِي صُدُورِ ٱلۡعَٰلَمِينَ
আর মানুষের মধ্যে কেউ কেউ বলে, ‘আমরা আল্লাহ্*র উপর ঈমান এনেছি’, কিন্তু আল্লাহ্*র পথে যখন তারা নিগৃহীত হয়, তখন তারা মানুষের পীড়নকে আল্লাহ্*র শাস্তির মত গণ্য করে । আর আপনার রবের কাছ থেকে কোনো সাহায্য আসলে তারা বলতে থাকে, ‘আমরা তো তোমাদের সঙ্গেই ছিলাম ।’ সৃষ্টিকুলের অন্তরে যা আছে, আল্লাহ কি সে সম্পর্কে সম্যক অবগত নন? (সুরা আনকাবুত, আয়াত ১০)
মূলত আল্লাহর জন্য বিপদাপদ আসাটা মুমিনের মর্যাদা বৃদ্ধি ও সফলতার সোপান। তাই কারো আল্লাহর প্রতি ভালবাসা না থাকলে এটিকে তার কাছে আযাব মনে হবে ও এর দ্বারা সে ধ্বংসের পথে আরো বেশি এগিয়ে যাবে।
তাই আল্লাহর পথে টিকে থাকা ও সফলতার সোপানে আরোহন করা আল্লাহর প্রতি ভালবাসা অর্জন ছাড়া কিছুতেই সম্ভব নয়। এটা সকল যুগের বাস্তবতা ও পরীক্ষিত বিষয় যে, কোন ব্যক্তি জিহাদের কাজের ততক্ষণ পর্যন্ত সফল হতে পারে নি যতক্ষণ না সে আল্লাহর সাথে তার সম্পর্ককে দুরস্ত করেছে। আমরা যখন আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্ককে দুরস্ত করব, আল্লাহ তাআলাও মানুষের কাছে আমাদের গ্রহণযোগ্যতা ও ভালবাসাকে দুরস্ত করে দিবেন। কাজের মাঠে আমরা সফল হব ও মানুষ আমাদের দাওয়াহ কবুল করবে। তা না হয় মানুষ আমাদের থেকে দূরে সরে যাবে ও আমাদের দাওয়াহ কল্যাণকর হওয়া সত্ত্বেও তা প্রত্যাখ্যান করবে। ( আল্লাহ হিফাজত করুন)। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
إن الله إذا أحب عبدا دعا جبريل فقال إني أحب فلانا فأحبه - قال - فيحبه جبريل ثم ينادي في السماء فيقول إن الله يحب فلانا فأحبوه . فيحبه أهل السماء - قال - ثم يوضع له القبول في الأرض . وإذا أبغض عبدا دعا جبريل فيقول إني أبغض فلانا فأبغضه - قال - فيبغضه جبريل ثم ينادي في أهل السماء إن الله يبغض فلانا فأبغضوه - قال - فيبغضونه ثم توضع له البغضاء في الأرض
আল্লাহ তাআলা যদি কোন বান্দাকে পছন্দ করেন তখন জিব্রাইল (আঃ)-কে ডাক দেন এবং বলেন, নিশ্চয়ই আমি অমুক লোককে পছন্দ করি, তুমিও তাকে পছন্দ কর। তিনি বলেন, তখন জিব্রাইল (আঃ) তাকে পছন্দ করেন। অতঃপর তিনি আকাশমণ্ডলীতে ঘোষণা দিয়ে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ অমুক লোককে পছন্দ করেন, সুতরাং আপনারাও তাকে পছন্দ করুন। তখন আকাশবাসীরা তাকে পছন্দ করে। তিনি বলেন, এরপর দুনিয়াতে তাকে নন্দিত, সমাদৃত করা হয়। আর আল্লাহ যদি কোন লোকের উপর রাগ করেন তখন জিব্রাইল (আঃ)-কে ডাক দেন এবং বলেন, আমি অমুক বান্দার উপর রাগ করেছি, তুমিও তার প্রতি নারাজ হও। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তখন জিব্রাইল (আঃ) তার উপর রাগান্বিত হন। তারপর তিনি আকাশবাসীদেরকে ডাক দিয়ে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা অমুকের উপর রাগান্বিত। কাজেই আপনারাও তার উপর ক্রোধান্বিত হোন। তিনি বলেন, তখন লোকেরা তার উপর দুশমনি পোষণ করে। তারপর তার জন্য পৃথিবীতে শত্রু বানিয়ে দেয়া হয়। (মুসলিম)
বুঝা গেল, আল্লাহর প্রতি ভালবাসা অর্জন ছাড়া মুমিনের কোন উপায়ন্তর নেই। আর দ্বীনের সর্বোচ্চ চূড়া জিহাদের পথের পথিকদের জন্য তো তা বলাই বাহুল্য।
আল্লাহর প্রতি ভালবাসা অর্জনের ক্ষেত্রে আমাদের জন্য যা সহায়ক হতে পারেঃ
১. সকল গুনাহ পরিত্যাগ করা।
২. জিহাদের প্রস্তুতির ব্যাপারে যেকোন ধরনের অলসতা পরিত্যাগ করা।
৩. গোপনে আল্লাহকে স্মরণ করা ও কোন গোপন আমল করা।
৪. অযথা কথাবার্তা ও গুনাহের পরিবেশ পরিত্যাগ করা।
৫. নিয়মিত অর্থ অনুধাবন করে কুরআন অধ্যয়ন করা, পাশাপাশি হাদিস ও অন্যান্য দ্বীনি বিষয় অন্তর দিয়ে অনুধাবন করে আমলের নিয়াতে অধ্যয়ন করা।
৬. মুহাসাবার ব্যাপারে যত্নবান হওয়া।
৭. সুন্নাহর পাবন্দি করা।
৮. হাত তুলে দুয়া, আযকার, বেশি বেশি নফল আমলের ব্যাপারে যত্নবান হওয়া।
৯. তাহাজ্জুদের পাবন্দি করা।
১০. হারাম ভক্ষণ বান্দার হক নষ্ট করা থেকে সতর্ক থাকা।
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِۦ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسۡلِمُونَ
হে মুমিনগণ, তোমরা যথার্থভাবে আল্লাহ্*র তাকওয়া অবলম্বন কর এবং তোমরা মুসলিম (পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণকারী) না হয়ে কোনো অবস্থায় মৃত্যুবরণ করো না। (সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১০২)
Comment