হিন্দের আয়নায় কর্ডোভার স্বরুপ দেখতে পাচ্ছি
প্রিয় ভাই ও বোন!
যে কর্ডোভা পাঁচশত বছরের অধিক কাল ধরে ছিলো মুয়াজ্জিনের" আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে আলোড়িত, কাযী মুনযিরের ন্যায় অনলবর্ষী খতিবের অগ্নিঝরা উচ্চারণে প্রকম্পিত। আল্লামা কুরতুবী, ইবনে রুশদ, আল্লামা শাতিবী ন্যায় হাজারও আলেম ও তালিবানে ইলমের ক্ব'লাল্লাহ, ক্ব'লার রাসূল গুঞ্জরণে মুখরিত। আজ তার অস্থির আকাশে-বাতাসে তরঙ্গায়িত হয় না আযানের ধ্বনি! কর্ডোভার দুর্ভাগা ভূমিতে অঙ্কিত হয়না মুমিনের সিজদা চিহ্ন! জামে কর্ডোভার মিম্বারে আজ খতিব মুনযিরের অগ্নিঝরা কণ্ঠস্বরের পরিবর্তে বেজে ওঠে বাদ্যের সুরবীণা! ইবনে রুশদ ও আল্লামা শাতিবীর সিজদা গাহে আজ শোভা পাচ্ছে প্রাণীভাস্কর্য! আল্লামা কুরতুবী ও ইবনুল খতিবের দরসগাহ আজ খ্রীষ্টের বাণী প্রচারের মঞ্চ!
★★আহ! বদনসীব চোখ এ দৃশ্য দেখার পূর্বে কেন দৃষ্টিহীন হয়ে গেল না? দুর্ভাগা আত্মা এ মর্মজ্বালা সহ্য করার পূর্বে কেন দেহ সঙ্গ ত্যাগ করলো না!
হৃদয়ের কানে আমি শুনতে পাচ্ছিলাম যে, জামে কর্ডোভা চিৎকার করে বলছে "সুন্নাতুল্লাহ চিরন্তন"
আল্লাহ তাআলার রীতিনীতি ও বিধান অলঙ্ঘনীয়!
হে আমার যুবক ভাই!
তুমি সুদূর কর্ডোভার ভূমির আচরণে ক্ষুদ্ধ, তাই তো?
তুমি সুদূর কর্ডোভার মনুষ্যত্বহীন মানবের উচ্চারণে রুষ্ট, তাই তো? কিন্তু আমি হিন্দের আয়নায় কর্ডোভার স্বরূপ দেখতে পাচ্ছি, তুমি দেখতে পাচ্ছো না?
★অন্তরের দৃষ্টি দিয়ে তাঁকাও, হৃদয়ে জানালাগুলো খোলে দাও, সীমান্ত পেরিয়ে চোখ ছুঁটে যাবে শ্রীনগরের গলিতে, হিন্দের খন্ড খন্ড ভূমি আসাম, গুজরাট আর দিল্লীর নির্যাতন ছাউনিতে, আরাকান আর হংকং এর লীলাভূমিতে।★
নির্যাতন, নিপিড়ন,
এ ভূমিগুলো যেন হাজার বছর ত্যাগের পর অর্জন করেছে। গ্রাম বাংলার সবুজ শ্যামল পথঘাট মুসলিমের রক্তে কলুষিত।মাঠে ভরা ফসলগুলো বিষাক্ত বিষাদের সোনালী হাসি দিয়ে জালিমদের দিকে তাঁকিয়ে আছে। তবুও তারা এতটুকু করতে পেরেছে। তারা জড়বস্তু, তারা উদ্ভিদ, অথচ তাদের হাসি কান্না শীলাবৃষ্টির ঘূর্ণিপাকে বাষ্প্ব হয়ে যায়। তাই বলে কি আমাদের হাসি কান্নাও নির্যাতনের ঘূর্ণিপাকে বাষ্প্ব হয়ে যাবে? অথচ আমরা সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠ মানবের উৎকৃষ্ট উম্মাহ!
হে আমার যুবক ভাই!
এক্ষুনি সময় ধাওয়া পাল্টা করার, এক্ষুনি সময় বাতিলকে বর্জন করার, এক্ষুনি সময় সিংহের ন্যায় গর্জে উঠার, তরবারি হাতে জালিমের মসনদ তুলোধুনো করে দেবার।
★★আরেহ! আমি তো ভুলেই গেলাম তোমার মনের কথাটা বলতে, বলছি ভাই বলছি! একটু অপেক্ষা করো!
অস্ত্র হাতে, তলোয়ার কাঁধে, অশ্বের পাল ধরে রণাঙ্গনে যেতে চাই। তীর হাতে, ধনুক গায়ে, আঁশের নির্মিত রশি নিয়ে ময়দানে লড়াই করতে চাই।
জ্বি,,মাশাআল্লাহ, আল্লাহ তাআলা আপনার জজবাকে বাস্তবে রুপান্তিত করুন, আপনার প্রতিভাকে সাহাবী হযরত ত্বলহা রাদিয়াল্লাহ আনহুর প্রতিভার বেড়াজালে আবদ্ধ করুন! যার শরীর রাসূলের প্রতিরক্ষায় তীরের আঘাতে তিরান্তিত হয়েছিলো, যার অন্তর প্রিয় হাবিবের প্রাণবন্ত হাসিতে প্রশান্তি খোঁজে পেয়েছিলো।
হে আমার যুবক ভাই!
কেন তুমি প্রতিবাদী হবে! হিন্দে তোমার জন্ম তাই বলে কি? কেন তুমি প্রতিশোধ নেবে! হিন্দে তোমার বসবাস এই দাপুটে কি? কেন তুমি আমর বিল মারুফের ঝান্ডা ধরবে? নাহি আনিল মুনকারের শক্ত প্রাচীরে ফাটল ধরাবে? ভাই জানবে তুমি!★★
তাহলে শোন তোমার বোনের আত্মচিৎকার___,,
নাফিসা ওমর। কাশ্মীরি এক বোন। যার দরদ মাখা কয়েকটি কথা কাঁদিয়ে তুলে ভারতের সাংবাদিক অরবিন্দ মিশ্রকে। যে কথাগুলো সে সহ্য করতে না পেরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করে দেয়। কাশ্মীরে লকডাউন ছিল দীর্ঘ সাত মাস। এ নিয়ে দেশ-বিদেশে নানা কথা উঠতে থাকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকজন সাংবাদিক ও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের পরিদর্শন করানো হয়। এর আয়োজন ও ব্যবস্থা করে ভারতের নরপিচাশ সরকার কসাই মোদি। সেই পরিদর্শক দলের সাথে থাকার অনুমতি দেয়া হয় দেশের কয়েকজন বাঁছাই করা সাংবাদিককে। যাতে কাশ্মীর নিয়ে রিপোর্টিং করা হলেও তা যেন তাগুত সরকারের প্রতিকূলে না যায় বরংতাদের অনুকূলেই থাকে। ওই দেশীয় সাংবাদিকদের মধ্যে ছিলেন ইকোনমিক্স টাইমসের সাংবাদিক অরবিন্দ মিশ্র।
এই ঘটনার কিছুদিন আগে সে সোশ্যাল মিডিয়ায় তার কাশ্মীর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি পোস্ট করেছিলো, যা পত্রপত্রিকায়, সোশ্যাল মিডিয়ায়, ব্যাপক সাড়া জাগে।
★★শ্রীনগরের এক গলির মুখে একটি বাড়ির জানালায় দেখতে পাই এক পর্দানিশীন মেয়েকে। মেয়েটি আওয়াজ দিতেই আমি থেমে যাই। আমি কাছে আসতেই আমাকে দেখে বললেন, ভাইয়্যা! আপনি বিলালের বন্ধু, দিল্লীতে থাকেন তাই না? আমি বললাম, হ্যা, তখন মেয়েটি বললেন, বিলাল আপনার খুব তারিফ করেন। সাথে সাথে মেয়েটির বলে উঠলো, ভাইয়্যা! আপনি খুব বুঝদার মানুষ। মানুষের দুঃখ বোঝেন।
আমি নাফিসা ওমর। বিলালের ফুফাতো বোন। সময়ের স্বল্পতা বুঝে মেয়েটি তাড়াহুড়া করে যে কয়েকটি কথা বলেছিলেন, তাঁর সে কথাগুলো শুনে আমি কয়েকদিন পর্যন্ত ঘুমাতে পারিনি। আজ সে কথাগুলোই আপনাদের কাছে বলাটা জরুরি মনে করছি।
★★নাফিসা ওমর বলেছিলেন; ভাইয়্যা! যদি কোন জায়গায় লাগাতার সাত মাস ধরে কারফিউ জারি থাকে, বাড়ি থেকে বের হওয়া দূরের কথা বাহিরে উঁকি দেওয়াও কঠিন হয়, এলাকাজুড়ে 8/9 লক্ষ সেনা মোতায়েন থাকে, ইন্টারনেট বন্ধ থাকে, মোবাইল ফোন বন্ধ থাকে, ল্যান্ডলাইন বন্ধ থাকে, বাড়ি বাড়ি থেকে শিশু, যুবক, বৃদ্ধসহ হাজারও নিরীহ মানুষকে গ্রেফতার করা হয়ে থাকে, ছোট-বড় সমস্ত নেতাদের জেল বন্দী হয়ে থাকে, স্কুল-কলেজ সদরদপ্তর সবকিছু বন্ধ থাকে, তাহলে মানুষ বাঁচবে কি করে? তাদের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা কি হবে? অসুস্থদের অবস্থা কেমন হবে?★★
এসব কথা ভাবার মতো কেউ নেই। যদি এলাকার জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মানুষ অবসাদে ভুগতে ভুগতে মানসিক অসুস্থতার শিকার হয়ে পড়ে, বাচ্চারা আতঙ্কিত থাকে, নির্যাতন-নিপীড়ন চরম সীমায় পৌঁছায়, আলোর কোন রেখা দেখা না যায়, অবস্থা ভাল করার মত কেউ না থাকে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াই ভালো।
★★বোন নাফিসা ওমর কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন, আমরা সব সহ্য করেছি, যথেষ্ট সহ্য করেছি। কিন্তু ভাইয়্যা ওই সময় অন্তরটা কেঁদে ওঠে, মনটা বড় ছটফট করে, হৃদয়টা মোচড় দিয়ে ওঠে, যখন শুনতে হয় ওদিকের কিছু লোক বলে, ভালোই হয়েছে, ওদের সঙ্গে এরকম হওয়ারই দরকার ছিলো। তবুও আমরা ওদের জন্য কিংবা অন্য কারো জন্য কখনো বদদোয়া করিনি। শুধুমাত্র একটাই প্রার্থনা করেছি। আল্লাহ তায়ালা যেন মুসলিম উম্মাহকে আমাদের অবস্থা থেকে ভালো রাখেন। আর তারা যেন কিছুটা হলেও আমাদের অবস্থা অনুভব করতে পারেন। এতক্ষণে সাংবাদিক অরবিন্দ মিশ্রের দু-চোখ পানিতে ছল ছল করেছিলো। সে দীর্ঘ এক নিঃশ্বাস ছেড়ে বললো, হে আমার বোন! আপনি দেখে নেবেন, আপনার প্রার্থনা খুব শীঘ্রই মঞ্জুর হবে।
এবার আমি জানতে চাইলাম যে, আপনি কি নিয়মিত প্রার্থনা করছেন হে আমার বোন?
তখন নাফিসা ওমর ডুকরে ডুকরে কাঁদতে কাঁদতে চিৎকার করে যা বলেছিলেন, আমার কানে তা অনেক দিন পর্যন্ত বেজেছে, এখনো বোনটিকে চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। তার ব্যথা অনুভব করার চেষ্টা করবেন। হুবুহু তার কথাগুলোই তুলে ধরছিঃ-
★★ইয়া আল্লাহ! যা কিছু আমাদের উপর হচ্ছে তা যেন অন্য কারো উপর না হয়। শুধু তুমি এমন কিছু একটা করে দাও যাতে গোটা পৃথিবী কিছুদিনের জন্য নিজেদের ঘরে বন্দী থাকতে বাধ্য হয়। সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়, সবকিছু থেমে যায়। তাহলে হয়ত দুনিয়া এটা অনুভব করতে পারবে আমরা বেঁচে আছি কেমন করে?
যুবক ভাই! এটা শুনেই তোমার বুক কষ্টে চৌচির হয়ে যাচ্ছে? সি এনএন এর বরাতে এমন হাজারো গল্প শুনলে কী করবে তুমি? অথচ তারা,,,
প্রিয় ভাই ও বোন!
যে কর্ডোভা পাঁচশত বছরের অধিক কাল ধরে ছিলো মুয়াজ্জিনের" আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে আলোড়িত, কাযী মুনযিরের ন্যায় অনলবর্ষী খতিবের অগ্নিঝরা উচ্চারণে প্রকম্পিত। আল্লামা কুরতুবী, ইবনে রুশদ, আল্লামা শাতিবী ন্যায় হাজারও আলেম ও তালিবানে ইলমের ক্ব'লাল্লাহ, ক্ব'লার রাসূল গুঞ্জরণে মুখরিত। আজ তার অস্থির আকাশে-বাতাসে তরঙ্গায়িত হয় না আযানের ধ্বনি! কর্ডোভার দুর্ভাগা ভূমিতে অঙ্কিত হয়না মুমিনের সিজদা চিহ্ন! জামে কর্ডোভার মিম্বারে আজ খতিব মুনযিরের অগ্নিঝরা কণ্ঠস্বরের পরিবর্তে বেজে ওঠে বাদ্যের সুরবীণা! ইবনে রুশদ ও আল্লামা শাতিবীর সিজদা গাহে আজ শোভা পাচ্ছে প্রাণীভাস্কর্য! আল্লামা কুরতুবী ও ইবনুল খতিবের দরসগাহ আজ খ্রীষ্টের বাণী প্রচারের মঞ্চ!
★★আহ! বদনসীব চোখ এ দৃশ্য দেখার পূর্বে কেন দৃষ্টিহীন হয়ে গেল না? দুর্ভাগা আত্মা এ মর্মজ্বালা সহ্য করার পূর্বে কেন দেহ সঙ্গ ত্যাগ করলো না!
হৃদয়ের কানে আমি শুনতে পাচ্ছিলাম যে, জামে কর্ডোভা চিৎকার করে বলছে "সুন্নাতুল্লাহ চিরন্তন"
আল্লাহ তাআলার রীতিনীতি ও বিধান অলঙ্ঘনীয়!
হে আমার যুবক ভাই!
তুমি সুদূর কর্ডোভার ভূমির আচরণে ক্ষুদ্ধ, তাই তো?
তুমি সুদূর কর্ডোভার মনুষ্যত্বহীন মানবের উচ্চারণে রুষ্ট, তাই তো? কিন্তু আমি হিন্দের আয়নায় কর্ডোভার স্বরূপ দেখতে পাচ্ছি, তুমি দেখতে পাচ্ছো না?
★অন্তরের দৃষ্টি দিয়ে তাঁকাও, হৃদয়ে জানালাগুলো খোলে দাও, সীমান্ত পেরিয়ে চোখ ছুঁটে যাবে শ্রীনগরের গলিতে, হিন্দের খন্ড খন্ড ভূমি আসাম, গুজরাট আর দিল্লীর নির্যাতন ছাউনিতে, আরাকান আর হংকং এর লীলাভূমিতে।★
নির্যাতন, নিপিড়ন,
এ ভূমিগুলো যেন হাজার বছর ত্যাগের পর অর্জন করেছে। গ্রাম বাংলার সবুজ শ্যামল পথঘাট মুসলিমের রক্তে কলুষিত।মাঠে ভরা ফসলগুলো বিষাক্ত বিষাদের সোনালী হাসি দিয়ে জালিমদের দিকে তাঁকিয়ে আছে। তবুও তারা এতটুকু করতে পেরেছে। তারা জড়বস্তু, তারা উদ্ভিদ, অথচ তাদের হাসি কান্না শীলাবৃষ্টির ঘূর্ণিপাকে বাষ্প্ব হয়ে যায়। তাই বলে কি আমাদের হাসি কান্নাও নির্যাতনের ঘূর্ণিপাকে বাষ্প্ব হয়ে যাবে? অথচ আমরা সৃষ্টিকুলের শ্রেষ্ঠ মানবের উৎকৃষ্ট উম্মাহ!
হে আমার যুবক ভাই!
এক্ষুনি সময় ধাওয়া পাল্টা করার, এক্ষুনি সময় বাতিলকে বর্জন করার, এক্ষুনি সময় সিংহের ন্যায় গর্জে উঠার, তরবারি হাতে জালিমের মসনদ তুলোধুনো করে দেবার।
★★আরেহ! আমি তো ভুলেই গেলাম তোমার মনের কথাটা বলতে, বলছি ভাই বলছি! একটু অপেক্ষা করো!
অস্ত্র হাতে, তলোয়ার কাঁধে, অশ্বের পাল ধরে রণাঙ্গনে যেতে চাই। তীর হাতে, ধনুক গায়ে, আঁশের নির্মিত রশি নিয়ে ময়দানে লড়াই করতে চাই।
জ্বি,,মাশাআল্লাহ, আল্লাহ তাআলা আপনার জজবাকে বাস্তবে রুপান্তিত করুন, আপনার প্রতিভাকে সাহাবী হযরত ত্বলহা রাদিয়াল্লাহ আনহুর প্রতিভার বেড়াজালে আবদ্ধ করুন! যার শরীর রাসূলের প্রতিরক্ষায় তীরের আঘাতে তিরান্তিত হয়েছিলো, যার অন্তর প্রিয় হাবিবের প্রাণবন্ত হাসিতে প্রশান্তি খোঁজে পেয়েছিলো।
হে আমার যুবক ভাই!
কেন তুমি প্রতিবাদী হবে! হিন্দে তোমার জন্ম তাই বলে কি? কেন তুমি প্রতিশোধ নেবে! হিন্দে তোমার বসবাস এই দাপুটে কি? কেন তুমি আমর বিল মারুফের ঝান্ডা ধরবে? নাহি আনিল মুনকারের শক্ত প্রাচীরে ফাটল ধরাবে? ভাই জানবে তুমি!★★
তাহলে শোন তোমার বোনের আত্মচিৎকার___,,
নাফিসা ওমর। কাশ্মীরি এক বোন। যার দরদ মাখা কয়েকটি কথা কাঁদিয়ে তুলে ভারতের সাংবাদিক অরবিন্দ মিশ্রকে। যে কথাগুলো সে সহ্য করতে না পেরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করে দেয়। কাশ্মীরে লকডাউন ছিল দীর্ঘ সাত মাস। এ নিয়ে দেশ-বিদেশে নানা কথা উঠতে থাকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকজন সাংবাদিক ও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের পরিদর্শন করানো হয়। এর আয়োজন ও ব্যবস্থা করে ভারতের নরপিচাশ সরকার কসাই মোদি। সেই পরিদর্শক দলের সাথে থাকার অনুমতি দেয়া হয় দেশের কয়েকজন বাঁছাই করা সাংবাদিককে। যাতে কাশ্মীর নিয়ে রিপোর্টিং করা হলেও তা যেন তাগুত সরকারের প্রতিকূলে না যায় বরংতাদের অনুকূলেই থাকে। ওই দেশীয় সাংবাদিকদের মধ্যে ছিলেন ইকোনমিক্স টাইমসের সাংবাদিক অরবিন্দ মিশ্র।
এই ঘটনার কিছুদিন আগে সে সোশ্যাল মিডিয়ায় তার কাশ্মীর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি পোস্ট করেছিলো, যা পত্রপত্রিকায়, সোশ্যাল মিডিয়ায়, ব্যাপক সাড়া জাগে।
★★শ্রীনগরের এক গলির মুখে একটি বাড়ির জানালায় দেখতে পাই এক পর্দানিশীন মেয়েকে। মেয়েটি আওয়াজ দিতেই আমি থেমে যাই। আমি কাছে আসতেই আমাকে দেখে বললেন, ভাইয়্যা! আপনি বিলালের বন্ধু, দিল্লীতে থাকেন তাই না? আমি বললাম, হ্যা, তখন মেয়েটি বললেন, বিলাল আপনার খুব তারিফ করেন। সাথে সাথে মেয়েটির বলে উঠলো, ভাইয়্যা! আপনি খুব বুঝদার মানুষ। মানুষের দুঃখ বোঝেন।
আমি নাফিসা ওমর। বিলালের ফুফাতো বোন। সময়ের স্বল্পতা বুঝে মেয়েটি তাড়াহুড়া করে যে কয়েকটি কথা বলেছিলেন, তাঁর সে কথাগুলো শুনে আমি কয়েকদিন পর্যন্ত ঘুমাতে পারিনি। আজ সে কথাগুলোই আপনাদের কাছে বলাটা জরুরি মনে করছি।
★★নাফিসা ওমর বলেছিলেন; ভাইয়্যা! যদি কোন জায়গায় লাগাতার সাত মাস ধরে কারফিউ জারি থাকে, বাড়ি থেকে বের হওয়া দূরের কথা বাহিরে উঁকি দেওয়াও কঠিন হয়, এলাকাজুড়ে 8/9 লক্ষ সেনা মোতায়েন থাকে, ইন্টারনেট বন্ধ থাকে, মোবাইল ফোন বন্ধ থাকে, ল্যান্ডলাইন বন্ধ থাকে, বাড়ি বাড়ি থেকে শিশু, যুবক, বৃদ্ধসহ হাজারও নিরীহ মানুষকে গ্রেফতার করা হয়ে থাকে, ছোট-বড় সমস্ত নেতাদের জেল বন্দী হয়ে থাকে, স্কুল-কলেজ সদরদপ্তর সবকিছু বন্ধ থাকে, তাহলে মানুষ বাঁচবে কি করে? তাদের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা কি হবে? অসুস্থদের অবস্থা কেমন হবে?★★
এসব কথা ভাবার মতো কেউ নেই। যদি এলাকার জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মানুষ অবসাদে ভুগতে ভুগতে মানসিক অসুস্থতার শিকার হয়ে পড়ে, বাচ্চারা আতঙ্কিত থাকে, নির্যাতন-নিপীড়ন চরম সীমায় পৌঁছায়, আলোর কোন রেখা দেখা না যায়, অবস্থা ভাল করার মত কেউ না থাকে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াই ভালো।
★★বোন নাফিসা ওমর কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন, আমরা সব সহ্য করেছি, যথেষ্ট সহ্য করেছি। কিন্তু ভাইয়্যা ওই সময় অন্তরটা কেঁদে ওঠে, মনটা বড় ছটফট করে, হৃদয়টা মোচড় দিয়ে ওঠে, যখন শুনতে হয় ওদিকের কিছু লোক বলে, ভালোই হয়েছে, ওদের সঙ্গে এরকম হওয়ারই দরকার ছিলো। তবুও আমরা ওদের জন্য কিংবা অন্য কারো জন্য কখনো বদদোয়া করিনি। শুধুমাত্র একটাই প্রার্থনা করেছি। আল্লাহ তায়ালা যেন মুসলিম উম্মাহকে আমাদের অবস্থা থেকে ভালো রাখেন। আর তারা যেন কিছুটা হলেও আমাদের অবস্থা অনুভব করতে পারেন। এতক্ষণে সাংবাদিক অরবিন্দ মিশ্রের দু-চোখ পানিতে ছল ছল করেছিলো। সে দীর্ঘ এক নিঃশ্বাস ছেড়ে বললো, হে আমার বোন! আপনি দেখে নেবেন, আপনার প্রার্থনা খুব শীঘ্রই মঞ্জুর হবে।
এবার আমি জানতে চাইলাম যে, আপনি কি নিয়মিত প্রার্থনা করছেন হে আমার বোন?
তখন নাফিসা ওমর ডুকরে ডুকরে কাঁদতে কাঁদতে চিৎকার করে যা বলেছিলেন, আমার কানে তা অনেক দিন পর্যন্ত বেজেছে, এখনো বোনটিকে চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। তার ব্যথা অনুভব করার চেষ্টা করবেন। হুবুহু তার কথাগুলোই তুলে ধরছিঃ-
★★ইয়া আল্লাহ! যা কিছু আমাদের উপর হচ্ছে তা যেন অন্য কারো উপর না হয়। শুধু তুমি এমন কিছু একটা করে দাও যাতে গোটা পৃথিবী কিছুদিনের জন্য নিজেদের ঘরে বন্দী থাকতে বাধ্য হয়। সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়, সবকিছু থেমে যায়। তাহলে হয়ত দুনিয়া এটা অনুভব করতে পারবে আমরা বেঁচে আছি কেমন করে?
যুবক ভাই! এটা শুনেই তোমার বুক কষ্টে চৌচির হয়ে যাচ্ছে? সি এনএন এর বরাতে এমন হাজারো গল্প শুনলে কী করবে তুমি? অথচ তারা,,,
Comment