Announcement

Collapse
No announcement yet.

জ্বী পাঠক ভাই! আসুন আমরা ইমানী চেতনার সাধনা করি

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • জ্বী পাঠক ভাই! আসুন আমরা ইমানী চেতনার সাধনা করি

    আসুন আমরা ইমানী চেতনার সাধনা করি

    প্রিয় ভাই ও বোন!
    প্রাণ সূত্রে মানুষ ও পশু একই গোত্রের। উভয়েরই ক্ষুধা আছে এবং চাহিদা আছে। ক্ষুধা পেটেরও হতে পারে আবার শরীরের । চাহিদা মনেরও হতে পারে আবার জাসাদের। ক্ষুধা ও চাহিদার কোন শেষ নেই। বৈচিত্র্যময় এক জিনিস। রবের পক্ষ হতে অপার এক করুণা।

    অপার করুণা কার জন্য জানো যুবক ভাই!
    যে যুবক তার এ ক্ষুধাকে নিবারণ করে দ্বীনের জন্য। যে যুবক তার এ ক্ষুধাকে মাটিচাপা দেয় রবের সন্তুষ্টির জন্য।

    ★ক্ষুধা লেগেছে পেটের! হালাল খাবার ভক্ষণ করে। পরিমাণমত খায়। যাতে ইবাদতের ময়দানে বিঘ্নতা সৃষ্টি না হয়। শরীর সাস্থ্য সুস্থ রাখায় যত্নবান হয় । যাতে জিহাদের ময়দানে বীর বিক্রমে লড়াই করতে পারে।

    ★ক্ষুধা লেগেছে শরীরের! মনের! সামর্থ্য থাকলে হালাল উপায়ে বিয়ে করে। নিজেকে সংযত করে। খায়েশাত নির্বিয্যকরণ হয়। বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, রোযা রাখতে শুরু করে। শরীয়তের বাতলে দেয়া পথ অনুস্বরণ করে।

    ক্ষুধা নিবারণ হয়ে গেলো রবের সন্তুষ্টির পথও একধাপ আগানো হলো। এখন ইবাদাতে একটু একটু লাজ্জাত আসতে শুরু করেছে। ছোট্ট ছোট্ট আমলগুলো মনে উকিজুকি দিচ্ছে। বড় বড় আমলগুলো তো আবশকীয় বটে। এ মুহূর্তে টেনে ধরতে হবে চাহিদার লাগাম। কেমন করে ধরবেন? এটা তো আর ঘোড়া বা গরুর লাগাম না, হাতে টেনে ধরবেন। ধরতে হবে ইমানী শক্তি দিয়ে। উদ্যমতা দিয়ে। রাসূলের সীরাত পাঠ করে।সাদিকীন ও সালফে সালেহীনদের আত্ম ত্যাগের কথা মনে করে।

    যেমন ধরুন★★
    মুসআব ইবনে উমায়ের রাদিযাল্লাহু আনহুর কথাই। তাঁর ইসলাম গ্রহণের কথা জগতজোড়া প্রসিদ্ধ। কি পরিমান জলাঞ্জলী তাঁকে দিতে হয়েছে। কেন? ধন-সম্পদের কমতি ছিলো।
    কি পরিমান আত্ম বিসর্জন তাঁকে করতে হয়েছে। কেন? সুখের আসবাবের পরিমাণ কম ছিলো।
    কি একটা অবস্থায় তাঁকে জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত কাটাতে হয়েছে।কেন? তাঁর প্রতাপশালী কোন আত্মীয় ছিলো না। না, না ভাই এমন কিছুই না।

    এরপরও কেন?
    দুঃখ আর দুঃখ। কষ্ট আর কষ্ট। যন্ত্রণা আর যন্ত্রণা। এ সিঁড়িগুলো আরোহন করতে করতে উঠতে হয়েছে দহনের চূড়ান্ত সীমায়? তাই বলে কি তিনি পুড়ে ছারখার হয়ে গেছেন? না, বরং ধৈর্য্যের সুমিষ্ট ফল ইমানের নূরে নূরান্নিত হয়েছেন।

    ★★তিনি যৌবনের জোয়ারের চাহিদাকে ধমকে আসা ঢেউয়ের উচ্ছাসের সাথে ভাসিয়ে দিয়েছেন। পূর্ণিমার জোসনার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে আঁধারকে চিনে নিয়েছেন। তিমির অন্ধকারকে পাহাড়ের উচ্চ সীমায় ঠেলে দিয়েছেন। আর সূর্যের তাপ তাকে জ্বলসে দিয়েছে। হলো কি তাহলে? জীবনের চাহিদার মানচিত্র দ্বীনের আলোয় আলোকিত হয়েছে। নববী ইলমের স্বচ্ছ-সুশীতল পানিতে আত্মা পরিতৃপ্ত হয়েছে। এমন অসংখ্য ইমানদীপ্ত উদাহরণ রয়েছে।

    এতক্ষণ তো ক্ষুধা নিবারণ ও চাহিদার লাগাম টেনে ধরলেন। কেন? আমলের তারাক্কীর জন্য। ইলমের উন্নতির জন্য। ফিকিরের অগ্রগতির জন্য।

    ★★প্রিয় যুবক ভাই!
    মানুষ ও পশুর মধ্যে ক্রোধ আছে এবং হিংস্রতা আছে। তাহলে পার্থক্য কোথায় মানুষে ও পশুতে?
    পার্থক্য এই যে, পশুর মধ্যে চিন্তা নেই, চেতনা নেই। মানুষের মধ্যে চিন্তা ও চেতনা রয়েছে। চিন্তাহীন জীবন জীবনই নয়। চেতনাহীন জীবন পশুর চেয়ে অধম। পশুর মত আমরাও ক্ষুধা ও চাহিদা জন্মের সময় সঙ্গে করে নিয়ে আসি কিন্তু চিন্তা ও চেতনা? এটা আমাদের অর্জন করতে হয়। ধীরে ধীরে। ধাপে ধাপে।

    ক্ষুধা-চাহিদা-এ দুটোর মাকসাদ তো অর্জন হলো। কিন্তু চেতনা কিভাবে অর্জন করবো? এটা তো আর যান্ত্রিক মেশিন না যে সুইচবাটন চাপলেই চলা বা বাড়া শুরু হবে বা মুহূর্তেই অর্জন হয়ে যাবে।

    ★★প্রিয় যুবক ভাই! তুমি এত তাড়াতাড়ি রাসূলের ২৩ বছরের মার্জিত, কৌশলপূর্ণ, সুক্ষ্ম, জ্ঞানে গুণে ভরপুর চেতনার কথা ভুলে গেলে? প্রিয় হাবিবের ২৩ বছরের সীরাতই তো আমাদের জীবন চালিকা শক্তির জিয়নকাঠি। বুঝতে আর কোন সমস্যা হলো না তাই তো! সহজ ভাষায় রাসূলের ২৩ বছরের মক্কী আর মাদানী জীবনই হলো প্রত্যেকটা যুবকের চেতনা।

    ওহুদ-তাবুক-বদর আর মক্কা বিজয় এগুলো হলো বড় বড় চেতনা। জ্ঞানীগুণী ও প্রভাবশালীদের মাঝে উমর-আবু-বক্কর-আলী-উসমানের ইসলাম গ্রহণ আমাদের চেতনা। সত্যান্বেষীদের মাঝে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ-আবু-হুরায়রা-
    আবু-দুজানার বিসর্জন আমাদের চেতনা।
    মোট কথা সকল সাহাবীর প্রতিটি কাজ কর্মই আমাদের চেতনা। ইমানী চেতনা। তাঁরা মক্কায় বসে রোম পারস্যের বিজয়ের স্বপ্ন দেখা ইমানী চেতনা। রৌদ্রতপ্ত বালিতে বেলাল রাদিআল্লাহু আনহুর ঘটনা ইমানী চেতনা। খুবাইব রাদিআল্লাহু আনহুকে সুলিতে চড়ানোর ঘটনা ইমানী চেতনা। তায়েফের ময়দানে রাসূলের রক্তাক্ত শরীর আমাদের ইমানী চেতনা। হিজরতের সঙ্গী হবার আশায় রাতের শেষ প্রহর পর্যন্ত আবু বক্কর রাদিয়াল্লাহু প্রিয় রাসূলের জন্য অপেক্ষার ঘটনা আমাদের ইমানী চেতনা। তালহা রাদিআল্লাহু আনহুর শরীরে বিদ্ধ ৯০ তীরের আঘাত আমাদের ইমানী চেতনা।

    ★★এগুলো তো অনেক আগের, তাই? কেমন জানি আবছা আবছা লাগছে। ও আচ্ছা! তাহলে সালাহুদ্দীন আয়ূবীর দূরদর্শীপূর্ণ বীরত্বের কথা?বিন কাসেম ও বিন-নাসিরের পারদর্শীতার কথা?এগুলোও না হয় থাক। সবচেয়ে কাছের একটা দৃষ্টান্ত দেন?

    তাহলে তো আরো গর্বের সঙ্গে বলতে পারি। এইতো একাবিংশ শতাব্দীর সেরা আলোড়ন সৃষ্টিকারী। চেতনা উজ্জীবিতকারী ঘটনা। দুর্বল বান্দার ইমানী শক্তি যে এতই ঝাঁঝালো তা আমি আর তুমি কল্পনাও করতে পারিনি। কই আফগান আর কই আমেরিকা?

    ★ইমানী শক্তি আফগান পাড়ি দিয়ে আমেরিকার এত উচু ও বহুতল ভবন টুইন টাওয়ারে গেলো কিভাবে? এটাই হলো ইমানী চেতনার এটম বুম । উচু সীমা আর গভীর নিচ যাঁচাই করে না। অন্তর ছিদ্র করে কাপুনি ধরিয়ে দেয়। শক্ত ঘেরা প্রাচীরে ফাটল ধরিয়ে দেয়। তীরে এনে জাহাজে আগুন ধরিয়ে দেয়। হয়ত শরীয়ত নয়ত শাহাদাত।★

    তাই? যাক অবশেষে বুঝাতে তো পারলাম! স্বীকার তো করলে!

    প্রিয় লেখক ভাই!
    এখন আর ছোট্ট বড় আমল নয় বরং তাগুতের অন্তের ফাটল আর চির ধরাতে আমার ভয় লাগেনা। ইমানী স্বাধ আস্বাদন করি। অথচ ক্ষুধা-চাহিদা ও দ্বীনি চেতনা অর্জনের আগে ছোট্ট আমলটিও আমাকে জীবননাশের ভয় দেখিয়ে বেড়াতো। অবহেলায় অনাদরে জীবন কাটিয়ে দেওয়ার উৎস যোগাতো। এখন আর সাধারণ জীবন নয় বরং নববী জীবন অতিবাহিত করার ইচ্ছা তৈরি হয়েছে। এখন আর সাধারণ মৃত্যুর স্বাধ নয় বরং শহীদি মৃত্যুর স্বাধ জেগে উঠেছে। এখন আর আমি দুনিয়ার কাছে তুচ্ছ নই বরং দুনিয়া আমার কাছে তুচ্ছ।


    ★জ্বী পাঠক ভাই! তাহলে আসুন আমরা সবাই এক সাথে ইমানী চেতনার সাধনা করি। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জান্নাতের স্বপ্ন বুনি। জান্নাতী বসন্ত শুরু হওয়ার আগেই জান্নাতের টিকেট কাটি।আমিন! আমিন।

    টীকাটিপ্পনীঃ★★
    [[ মজার একটা বিষয় হলো ২০১৮ তে যখন বনানী আরএফ টাওয়ারে আগুন লাগে তখন আমি আর আমার এক চাচাতো ভাই দ্রুত ঘটনার স্থানে চলে যাই। দীর্ঘ তিন ঘন্টা পর ফায়ার সার্ভিসের যান্ত্রিক গাড়ি আসে তাও আবার ৯ তলার উপর উঠেনা। অথচ আরএফ টাওয়ার ১৬ তলা। ঠিক তখনই মনে এ প্রশ্ন জাগ্রত হলো দুনিয়ার এত আধুনিক মেশিন ১৬ তলায় উঠতে পারে না। অথচ অত্যাধিক উচু ও বহুতল ভবন টুইন টাওয়ারের ১১০ তলায় উঠলো কিভাবে? সেটা আবার কেমন মেশিন? পরক্ষণই মনে পড়লো এটাই হলো ইমানী চেতনা। ইমানী শক্তি।
    Last edited by নুআইম আন-নাহহাম; 04-21-2021, 03:31 AM. Reason: আসুন আমরা ইমানী চেতনার সাধনা করি
Working...
X