গর্দানে তলোয়ার রাখা বীর-বাহাদুরদের সিফাত
সম্মানিত ভাই ও বোন!
★আমাদের প্রতিটি কথায়, প্রতিটি কাজে, প্রতিটি ইশারা-ইঙ্গিতে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবিদের আমলই প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট। দেখুন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিক শক্তিশালী-সর্বাধিক বাহাদুর হওয়া সত্ত্বেও কখনো নিজ গর্দান থেকে তরবারি নামাতেন না। এক হাদীসে বর্ণিত আছে, একবার মদিনায় রাতের বেলা বিকট শব্দে আওয়াজ হচ্ছিলো। যার কারণে মুসলমানরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়লো। কিন্তু সেখানে সবার আগে উপস্থিত ছিলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি লোকদেরকে শান্তনারবাণী শোনাতে লাগলেন। এ সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত তালহা রা.এর গদিবিহীন ঘোড়ায় আরোহণরত ছিলেন। তখনো তাঁর গর্দান মোবারকে তলোয়ার ঝুলন্ত ছিলো।[১]
যুদ্ধের ময়দানের কথা তো বলাইবাহুল্য। তরবারির জনজনানির জনজন আর শনশনানীর শনশন আওয়াজে মুখর হয়ে উঠতো আশপাশের কয়েক পল্লী। মানুষের গর্দান তো আছেই এমনকি অশ্বের কাঁধগুলোও তরবারি বহন করতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করতো।
মনে আছে তো!
এক যুদ্ধ থেকে ফিরার পথে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কোষযুক্ত তলোয়ারকে জাওলা গাঁছের খুঁটিতে রেখে একটু বিশ্রাম নেয়ার জন্য তার নিচে শুয়েছিলেন। পরে কি হলো সবারই জানা আছে। অথচ রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরীরে অধিক পুরুষের শক্তি বিদ্যমান ছিলো। এরপরও তিনি অস্ত্র পাশে না নিয়ে বিশ্রামে যাননি।
কারণ মহান রব জানেন কিছু বান্দা মুমিনদের ক্ষতিসাধনের প্রাণপ্রণ চেষ্টা চালাবে। বাহ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেহের শক্তি কারো চোখে পড়ে না। তাই তাদের দমানোর জন্য, তাদের দমনীর শ্বাস রুদ্ধ করার জন্য, শরীরের প্রেশার বাড়িয়ে দেয়ার জন্য সবচেয়ে উপযোগী ও কার্যকরি উপায় হলো লোহার কিছু কারুকার্য যাকে শরীয়তের ভাষায় আমরা চিনি আসলিহাহ [অস্ত্র] -সাইফ [তলোয়ার- তরবারী] এমন আরো কিছু যেমন তীরন্দাজী।
জিনিসগুলো দেখতে ছোট হলেও সংশোধনের জন্য আল্লাহ এর মধ্যে যাবতীয় মসলা রেখে দিয়েছেন। হ্বক-বাতিলের পার্থক্য-জাহান্নাম থেকে মুক্তির কারণ-মুসলমানদের নিজের নিরাপত্তা-জানমালের নিরাপত্তা-ইসলামী রাষ্ট্রের নিরাপত্তা। নাস্তিক-মুরতাদদের কল্পা গলায় থাকা বা না থাকার অধিকার। এমন আরো বেশ কিছু।
বর্তমান পৃথিবীর বাস্তবতা-
অপর দিকে মানুষের হাতে কিছু না থাকলে নেড়িকুকুরগুলোও তেড়ে আসে কামড় দেয়ার জন্য। সুতরাং কাফের-মুরতাদরা তো আসবেই বটে। আল্লাহ বলেছেন যাদের অন্তরে ইমান নেই তারা পশুর চেয়ে অধম। এ দিক থেকে তারা যেহেতু কুকুরের চেয়ে নিচে তারা তো আরো আগেই তেড়ে আসার কথা। প্রকৃতপক্ষে তাই করছে। আর আমরা এর বলি হচ্ছি।
★ফাতহুশ-শামে বর্ণিত আছে
হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বন্দিবিনিময় চুক্তির ব্যাপারে রোম সম্রাটের নিকট গেলেন। যখন তিনি সম্রাটের বাসভবনের নিকট পৌঁছলেন তখন এক কাফের সেনাপতি বললো। হে খালিদ বিন ওয়ালিদ! আপনি সম্রাটের বাসভবনে নিকট চলে এসেছেন! অতএব আপনি ঘোড়া থেকে নেমে পড়ুন এবং আপনার কোষযুক্ত তলোয়ারটি আমার কাছে জমা দিন। তখন খালিদ বিন ওয়ালিদ রাযিয়াল্লাহু আনহু উত্তরে বললেন- ঘোড়া থেকে নেমে যাবো কিন্তু কিছুতেই তোমাদের কাছে তলোয়ার জমা দিতে পারবো না। কারণ তোমাদের কাছে আমাদের কোন নিরাপত্তা নেই। [২]
এই তলোয়ারেই রয়েছে মুসলমানদের গৌরব, সম্মান ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন। সুতরাং কেনইবা আমরা সেই সম্মানকে অবহেলা করবো, তোমাদের হাতে দিয়ে লাঞ্চিত করবো? যা নিয়ে আমাদের নবী প্রেরিত হয়েছেন, যাকে নাবীওয়ূল সাইফ ও নাবীওয়ূল মালহামা উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে তাঁর এ পদমর্যাদাকে কেন আমরা অসম্মান করবো?
★ফাতহুল মিশরে বর্ণিত আছে-
মিশর বিজেতা হযরত আমর ইবনুল আস রাযিয়াল্লাহু আনহু তলোয়ার নিয়ে রাজ-প্রাসাদে প্রবেশ করতে লাগলেন তখন নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁর হাত থেকে তলোয়ার নিতে চেষ্টা করলো। তিনি বলে উঠলেন, আমি এখান থেকে ফেরত যেতে পারবো। কিন্তু তলোয়ার হাতছাড়া করে অন্দরমহলে প্রবেশ করতে পারবো না।
সুতরাং হে রাজ প্রাসাদের প্রহরীরা! তোমরা তো জানো না। আমরা সে সবলোক যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা ইসলামের মাধ্যমে সম্মান দান করেছেন। ইমানের দ্বারা সঁজ্জিত করেছেন। তলোয়ারের মাধ্যমে আমাদের প্রতিষ্ঠিত ও সূদুর করেছেন। আর এটা হচ্ছে সেই তলোয়ার যার মাধ্যমে আমরা মুশরিক এবং অহংকারীর মস্তিষ্ক ঠিক করে থাকি। সুতরাং তোমরা এ তলোয়ার চাওয়ার দুঃসাহস দেখাইও না।[৩]
প্রিয় ভাই ও বোন!
আমরা যদি একেবারেই অস্ত্র ধারণ করা ছেড়ে দেই তাহলে কাফেরদের মনের আকাঙ্খা ও মনোবাসনা দিন দিন পূরণ হতেই থাকবে । তাই আল্লাহ তায়ালা উম্মতে মোহাম্মাদীকে সতর্ক করে বলেছেন,
ود الذین کفروا لو تغفلون عن أسلحتکم
وأمتعتکم فیمیلون علیکم میلةواحدة
অর্থ: কাফিররা কামনা করে তোমরা যদি তোমাদের অস্ত্রশস্ত্র এবং যুদ্ধসরঞ্জাম সম্বন্ধে অসতর্ক হও তাহলে তারা তোমাদের উপর একসাথে আক্রমণ করবে। [৪]
এ কারণে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন-
ولیأخذوا حذرھم وأسلحتھم
তারা অর্থাৎ মুসলমানরা যেন সতর্ক হয় এবং অস্ত্র ধারণ করে। [৫]
★এখন আমাদের গভীরভাবে চিন্তা করা প্রয়োজন বর্তমান সময়ে আমরা কি অস্ত্রহীন জীবনযাপন করে আল্লাহকে খুশি করছি নাকি কাফেরদের মনোবাসনা পূরণ করছি? আল্লাহর নির্দেশ উপেক্ষা করার পরিণাম কি হতে কখনো কি তা একবার ভেবে দেখেছি? ভাবার প্রয়োজন নেই। চোখটা বড় করে পাঁয়ের পাতায় একটু ভর দিয়ে তাঁকান আরাকানের দিকে! গ্রামকে গ্রাম দাউদাউ করে জ্বলছে। শুধু ঘরবাড়িতে? খরকুটায়-আর ফসলের জমিতে না মানুষের শরীরেরও? মানুষের শরীরেরও। আহ! অন্তরটা মোচর দিয়ে উঠে সাদা চামড়ার মানুষগুলো এভাবে ছাই হয়ে যাচ্ছে। অন্তসত্তা বোনগুলো গর্ভপাত না করেই চির বিদায় নিচ্ছে। কাশ্মীরের রুপকথার গল্প শুনবে? হলি খেলার আসবাবগুলো কি শুনবে?
রুপ কথার গল্প-৬ বছরের রেহালা অন্তসত্তা। ২০ বছরের তাগড়া তিন মুরতাদ সেনা রাত্রভর আনন্দ উপভোগ করে। মা জানতে গেলে মাও বলি হন তাদের হাতে। বাপ তো আরো আগেই বলি হয়েছেন। তবে হলি খেলায়। ৬ বছর বয়সের মেয়েকে কে অন্তসত্তা করলো প্রশ্ন জাগে না? থাকুক!!
হলি খেলার ধরণঃ-৫/৬ জন মুসলিম যুবকদের ধরে নিয়ে গেলো। কাউকে জবাই । কাউকে কাবাব। কাউকে টুকরো টুকরো। আবার কাউকে চামড়া ছিলানো। তাদের রক্তগুলো কোথায়?
মায়ের সামনে মেয়েকে। মেয়ের সামনে মাকে ।বাবার সামনে ছেলেকে। ছেলের সামনে বাবাকে। ভাইয়ের সামনে বোনকে ধর্ষণ-গুম-হত্যা। কেন এর শিকার হচ্ছি?
★আচ্ছা ভাই! এখন আপনিই বলেন-এ সমস্ত মুসলমানদের কোন কিছুর কমতি ছিলো? সবকিছুই ছিলো। সব উপভোগের বস্তুই ভোগ করছিলো। ছিলো না শুধু অস্ত্র ধারণের মনোবল। ছিলো না শুধু শক্তি অর্জনের জাগরণ। ছিলো না শুধু জিহাদের বিধান পালনের আলোড়ন। আলী হাসান নদভী রাহিমাহুল্লাহ আরাকান সফর শেষে বলেছিলেন-হে আরাকানবাসী! তোমরাতো অনেক ধন-সম্পদ অর্জন করেছো। তাই আমি বলবো এখন শুধুই শক্তি অর্জন করো। অস্ত্র ধারণের মনোবল তৈরি করো। কিন্তু তারা হেসেখেলে ফেলে দিয়েছিলো। আর বলেছিলো এসব উগ্রবাদীতা। কিন্তু সময়ের পালাবদলে দিতে হয়েছে এর কঠিন মাশুল। শুধুই মাশুল না বরং মসলাসহ। মানে সবকিছুই ছাড়তে হয়েছে। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।
প্রিয় ভাই ও বোন!
বিষয়টা শুধু এখানেই শেষ নয়; আল্লাহ তায়ালা উম্মাতে মুহাম্মাদীর কাছে পত্র পাঠিয়ে সতর্ক করে কাফেদের মনের আকাংখার বিষয়বস্তু জানিয়ে দিয়েছেন। তারা ততোদিন পর্যন্ত তোমাদের উপর সন্তুষ্ট হবে না যতদিন পর্যন্ত তোমরা তাদের দ্বীনের অনুসারী না হবে অর্থাৎ তাদের ধর্ম গ্রহণ না করবে। সুতরাং আমাদের রক্তের শিরায় শিরায় লুকিয়ে থাকা কাপুরুষতার নামক ব্যধিগুলো একেবারেই ঝেরে ফেলতে হবে। নিজ গর্দানগুলোতে আবারো সুন্নাতে দায়েমা অস্ত্রকে তুলে নিতে হবে। সম্মান, সফলতা ও বীর বাহাদুরীর একমাত্র পথ যুদ্ধ জিহাদকে বেছে নিতে হবে ।
দলিলায়াদীঃ
________________________.
১.সহীহ্ বোখারী ১/৪০৭
২.ফাতহুশ-শাম ১ম খন্ড
৩.ফাতহুল মিশর ১ম খন্ড
৪.সূরা নিসা আয়াত ১০২
৫.সূরা নিসা আয়াত নং ১০২
সম্মানিত ভাই ও বোন!
★আমাদের প্রতিটি কথায়, প্রতিটি কাজে, প্রতিটি ইশারা-ইঙ্গিতে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবিদের আমলই প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট। দেখুন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিক শক্তিশালী-সর্বাধিক বাহাদুর হওয়া সত্ত্বেও কখনো নিজ গর্দান থেকে তরবারি নামাতেন না। এক হাদীসে বর্ণিত আছে, একবার মদিনায় রাতের বেলা বিকট শব্দে আওয়াজ হচ্ছিলো। যার কারণে মুসলমানরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়লো। কিন্তু সেখানে সবার আগে উপস্থিত ছিলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি লোকদেরকে শান্তনারবাণী শোনাতে লাগলেন। এ সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত তালহা রা.এর গদিবিহীন ঘোড়ায় আরোহণরত ছিলেন। তখনো তাঁর গর্দান মোবারকে তলোয়ার ঝুলন্ত ছিলো।[১]
যুদ্ধের ময়দানের কথা তো বলাইবাহুল্য। তরবারির জনজনানির জনজন আর শনশনানীর শনশন আওয়াজে মুখর হয়ে উঠতো আশপাশের কয়েক পল্লী। মানুষের গর্দান তো আছেই এমনকি অশ্বের কাঁধগুলোও তরবারি বহন করতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করতো।
মনে আছে তো!
এক যুদ্ধ থেকে ফিরার পথে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কোষযুক্ত তলোয়ারকে জাওলা গাঁছের খুঁটিতে রেখে একটু বিশ্রাম নেয়ার জন্য তার নিচে শুয়েছিলেন। পরে কি হলো সবারই জানা আছে। অথচ রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরীরে অধিক পুরুষের শক্তি বিদ্যমান ছিলো। এরপরও তিনি অস্ত্র পাশে না নিয়ে বিশ্রামে যাননি।
কারণ মহান রব জানেন কিছু বান্দা মুমিনদের ক্ষতিসাধনের প্রাণপ্রণ চেষ্টা চালাবে। বাহ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেহের শক্তি কারো চোখে পড়ে না। তাই তাদের দমানোর জন্য, তাদের দমনীর শ্বাস রুদ্ধ করার জন্য, শরীরের প্রেশার বাড়িয়ে দেয়ার জন্য সবচেয়ে উপযোগী ও কার্যকরি উপায় হলো লোহার কিছু কারুকার্য যাকে শরীয়তের ভাষায় আমরা চিনি আসলিহাহ [অস্ত্র] -সাইফ [তলোয়ার- তরবারী] এমন আরো কিছু যেমন তীরন্দাজী।
জিনিসগুলো দেখতে ছোট হলেও সংশোধনের জন্য আল্লাহ এর মধ্যে যাবতীয় মসলা রেখে দিয়েছেন। হ্বক-বাতিলের পার্থক্য-জাহান্নাম থেকে মুক্তির কারণ-মুসলমানদের নিজের নিরাপত্তা-জানমালের নিরাপত্তা-ইসলামী রাষ্ট্রের নিরাপত্তা। নাস্তিক-মুরতাদদের কল্পা গলায় থাকা বা না থাকার অধিকার। এমন আরো বেশ কিছু।
বর্তমান পৃথিবীর বাস্তবতা-
অপর দিকে মানুষের হাতে কিছু না থাকলে নেড়িকুকুরগুলোও তেড়ে আসে কামড় দেয়ার জন্য। সুতরাং কাফের-মুরতাদরা তো আসবেই বটে। আল্লাহ বলেছেন যাদের অন্তরে ইমান নেই তারা পশুর চেয়ে অধম। এ দিক থেকে তারা যেহেতু কুকুরের চেয়ে নিচে তারা তো আরো আগেই তেড়ে আসার কথা। প্রকৃতপক্ষে তাই করছে। আর আমরা এর বলি হচ্ছি।
★ফাতহুশ-শামে বর্ণিত আছে
হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বন্দিবিনিময় চুক্তির ব্যাপারে রোম সম্রাটের নিকট গেলেন। যখন তিনি সম্রাটের বাসভবনের নিকট পৌঁছলেন তখন এক কাফের সেনাপতি বললো। হে খালিদ বিন ওয়ালিদ! আপনি সম্রাটের বাসভবনে নিকট চলে এসেছেন! অতএব আপনি ঘোড়া থেকে নেমে পড়ুন এবং আপনার কোষযুক্ত তলোয়ারটি আমার কাছে জমা দিন। তখন খালিদ বিন ওয়ালিদ রাযিয়াল্লাহু আনহু উত্তরে বললেন- ঘোড়া থেকে নেমে যাবো কিন্তু কিছুতেই তোমাদের কাছে তলোয়ার জমা দিতে পারবো না। কারণ তোমাদের কাছে আমাদের কোন নিরাপত্তা নেই। [২]
এই তলোয়ারেই রয়েছে মুসলমানদের গৌরব, সম্মান ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন। সুতরাং কেনইবা আমরা সেই সম্মানকে অবহেলা করবো, তোমাদের হাতে দিয়ে লাঞ্চিত করবো? যা নিয়ে আমাদের নবী প্রেরিত হয়েছেন, যাকে নাবীওয়ূল সাইফ ও নাবীওয়ূল মালহামা উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে তাঁর এ পদমর্যাদাকে কেন আমরা অসম্মান করবো?
★ফাতহুল মিশরে বর্ণিত আছে-
মিশর বিজেতা হযরত আমর ইবনুল আস রাযিয়াল্লাহু আনহু তলোয়ার নিয়ে রাজ-প্রাসাদে প্রবেশ করতে লাগলেন তখন নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁর হাত থেকে তলোয়ার নিতে চেষ্টা করলো। তিনি বলে উঠলেন, আমি এখান থেকে ফেরত যেতে পারবো। কিন্তু তলোয়ার হাতছাড়া করে অন্দরমহলে প্রবেশ করতে পারবো না।
সুতরাং হে রাজ প্রাসাদের প্রহরীরা! তোমরা তো জানো না। আমরা সে সবলোক যাদেরকে আল্লাহ তায়ালা ইসলামের মাধ্যমে সম্মান দান করেছেন। ইমানের দ্বারা সঁজ্জিত করেছেন। তলোয়ারের মাধ্যমে আমাদের প্রতিষ্ঠিত ও সূদুর করেছেন। আর এটা হচ্ছে সেই তলোয়ার যার মাধ্যমে আমরা মুশরিক এবং অহংকারীর মস্তিষ্ক ঠিক করে থাকি। সুতরাং তোমরা এ তলোয়ার চাওয়ার দুঃসাহস দেখাইও না।[৩]
প্রিয় ভাই ও বোন!
আমরা যদি একেবারেই অস্ত্র ধারণ করা ছেড়ে দেই তাহলে কাফেরদের মনের আকাঙ্খা ও মনোবাসনা দিন দিন পূরণ হতেই থাকবে । তাই আল্লাহ তায়ালা উম্মতে মোহাম্মাদীকে সতর্ক করে বলেছেন,
ود الذین کفروا لو تغفلون عن أسلحتکم
وأمتعتکم فیمیلون علیکم میلةواحدة
অর্থ: কাফিররা কামনা করে তোমরা যদি তোমাদের অস্ত্রশস্ত্র এবং যুদ্ধসরঞ্জাম সম্বন্ধে অসতর্ক হও তাহলে তারা তোমাদের উপর একসাথে আক্রমণ করবে। [৪]
এ কারণে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন-
ولیأخذوا حذرھم وأسلحتھم
তারা অর্থাৎ মুসলমানরা যেন সতর্ক হয় এবং অস্ত্র ধারণ করে। [৫]
★এখন আমাদের গভীরভাবে চিন্তা করা প্রয়োজন বর্তমান সময়ে আমরা কি অস্ত্রহীন জীবনযাপন করে আল্লাহকে খুশি করছি নাকি কাফেরদের মনোবাসনা পূরণ করছি? আল্লাহর নির্দেশ উপেক্ষা করার পরিণাম কি হতে কখনো কি তা একবার ভেবে দেখেছি? ভাবার প্রয়োজন নেই। চোখটা বড় করে পাঁয়ের পাতায় একটু ভর দিয়ে তাঁকান আরাকানের দিকে! গ্রামকে গ্রাম দাউদাউ করে জ্বলছে। শুধু ঘরবাড়িতে? খরকুটায়-আর ফসলের জমিতে না মানুষের শরীরেরও? মানুষের শরীরেরও। আহ! অন্তরটা মোচর দিয়ে উঠে সাদা চামড়ার মানুষগুলো এভাবে ছাই হয়ে যাচ্ছে। অন্তসত্তা বোনগুলো গর্ভপাত না করেই চির বিদায় নিচ্ছে। কাশ্মীরের রুপকথার গল্প শুনবে? হলি খেলার আসবাবগুলো কি শুনবে?
রুপ কথার গল্প-৬ বছরের রেহালা অন্তসত্তা। ২০ বছরের তাগড়া তিন মুরতাদ সেনা রাত্রভর আনন্দ উপভোগ করে। মা জানতে গেলে মাও বলি হন তাদের হাতে। বাপ তো আরো আগেই বলি হয়েছেন। তবে হলি খেলায়। ৬ বছর বয়সের মেয়েকে কে অন্তসত্তা করলো প্রশ্ন জাগে না? থাকুক!!
হলি খেলার ধরণঃ-৫/৬ জন মুসলিম যুবকদের ধরে নিয়ে গেলো। কাউকে জবাই । কাউকে কাবাব। কাউকে টুকরো টুকরো। আবার কাউকে চামড়া ছিলানো। তাদের রক্তগুলো কোথায়?
মায়ের সামনে মেয়েকে। মেয়ের সামনে মাকে ।বাবার সামনে ছেলেকে। ছেলের সামনে বাবাকে। ভাইয়ের সামনে বোনকে ধর্ষণ-গুম-হত্যা। কেন এর শিকার হচ্ছি?
★আচ্ছা ভাই! এখন আপনিই বলেন-এ সমস্ত মুসলমানদের কোন কিছুর কমতি ছিলো? সবকিছুই ছিলো। সব উপভোগের বস্তুই ভোগ করছিলো। ছিলো না শুধু অস্ত্র ধারণের মনোবল। ছিলো না শুধু শক্তি অর্জনের জাগরণ। ছিলো না শুধু জিহাদের বিধান পালনের আলোড়ন। আলী হাসান নদভী রাহিমাহুল্লাহ আরাকান সফর শেষে বলেছিলেন-হে আরাকানবাসী! তোমরাতো অনেক ধন-সম্পদ অর্জন করেছো। তাই আমি বলবো এখন শুধুই শক্তি অর্জন করো। অস্ত্র ধারণের মনোবল তৈরি করো। কিন্তু তারা হেসেখেলে ফেলে দিয়েছিলো। আর বলেছিলো এসব উগ্রবাদীতা। কিন্তু সময়ের পালাবদলে দিতে হয়েছে এর কঠিন মাশুল। শুধুই মাশুল না বরং মসলাসহ। মানে সবকিছুই ছাড়তে হয়েছে। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।
প্রিয় ভাই ও বোন!
বিষয়টা শুধু এখানেই শেষ নয়; আল্লাহ তায়ালা উম্মাতে মুহাম্মাদীর কাছে পত্র পাঠিয়ে সতর্ক করে কাফেদের মনের আকাংখার বিষয়বস্তু জানিয়ে দিয়েছেন। তারা ততোদিন পর্যন্ত তোমাদের উপর সন্তুষ্ট হবে না যতদিন পর্যন্ত তোমরা তাদের দ্বীনের অনুসারী না হবে অর্থাৎ তাদের ধর্ম গ্রহণ না করবে। সুতরাং আমাদের রক্তের শিরায় শিরায় লুকিয়ে থাকা কাপুরুষতার নামক ব্যধিগুলো একেবারেই ঝেরে ফেলতে হবে। নিজ গর্দানগুলোতে আবারো সুন্নাতে দায়েমা অস্ত্রকে তুলে নিতে হবে। সম্মান, সফলতা ও বীর বাহাদুরীর একমাত্র পথ যুদ্ধ জিহাদকে বেছে নিতে হবে ।
দলিলায়াদীঃ
________________________.
১.সহীহ্ বোখারী ১/৪০৭
২.ফাতহুশ-শাম ১ম খন্ড
৩.ফাতহুল মিশর ১ম খন্ড
৪.সূরা নিসা আয়াত ১০২
৫.সূরা নিসা আয়াত নং ১০২
Comment