Announcement

Collapse
No announcement yet.

ইমানের জালে আবদ্ধ তারা

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • ইমানের জালে আবদ্ধ তারা

    ইমানের জালে আবদ্ধ তারা

    প্রিয় ভাই ও বোন!
    ★ইমান এমন এক জিনিস যা হাত দিয়ে ধরা যায় না কিন্তু অন্তর দিয়ে স্পর্শ যায়। অপবিত্র শরীর নিয়ে ছোঁয়া যায় না ঠিকই পবিত্র দেহ নিয়ে ছোঁয়া যায়। পাপকিষ্ট আত্মা দিয়ে অনুভব করা যায় না মুহরাংকিত হৃদয় নিয়ে যাত্রা শুভ হয় না। প্রয়োজন পবিত্র স্পর্শের ফ্রেশ একটি হৃদয়ের কুঠুরি। অদৃশ্য সে অনুভূতির ছিদ্রগুলোতে বসে যাবে ইমানের জাল। যা দিয়ে কষ্ট আর দুঃখগুলো ছেকে ছেকে পড়ে যাবে। থেকে যাবে শুধু পুরষ্কার আর প্রাপ্তি। রয়ে যাবে শুধু নাজাত আর মুক্তির কলকাঠি।

    ইমানেরও যে বিশাল পাহাড় গড়া যায়। ইমানেরও যে শক্ত প্রাচীর তৈরি করা যায়। ইমানেরও যে শীতল হিমালয় পাড়ি দেয়া যায়। তা ভুলেই বসে ছিলাম আমি। নিম্ন পথিকদের দেখা না মিললে কখনো জানাই হতো না ইমান কি জিনিস![১]

    ★নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নবুয়্যতের মর্যাদায় ভূষিত হলেন এবং মানুষকে তাওহীদের প্রতি আহ্বান করলেন।
    তখন তাদের অন্তর ছিলো কোমল। হেদায়েতের আলো গ্রহণে ছিলো উদগ্রীব। তারা এই আহবানে সাড়া দিলো এবং ঈমান গ্রহণে ধন্য হলো। এই আহবানে সাড়া দানকারী শুধু পুরুষরাই ছিলো না বরং নারীদের সংখ্যাও ছিল উল্লেখযোগ্য। আল্লাহ ও রাসূলের সন্তুষ্টির জন্য তারা কাফেরদের নির্যাতনকে হাসিমুখে গ্রহণ করেছে। তবুও তারা ঈমানের মধ্যে বিন্দু পরিমান নড়চড় হতে দেয়নি। সেই মহিয়সী নারী সাহাবীদের আত্মবিসর্জনের কিঞ্চিৎ তুলে ধরবো ইনশাআল্লাহ।

    যারা ইসলাম ও মানবতার জন্য অসহনীয় কষ্ট সহ্য করেছেন। যারা আল্লাহ ও রাসূলের সান্নিধ্য পাওয়ার জন্য লৌহমর্ষক নির্যাতনকে ঈমানের অংশ হিসেবে বেঁছে নিয়েছেন। তাঁদের মাঝে অন্যতম একজন হলেন হযরত উম্মে শারিক দাওসিয়া রাদিয়াল্লাহু আনহা। তিনি ইয়ামানের দাউস গোত্রের একজন নারী ছিলেন। তিনি কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছাড়াই ইসলামের ডাকে সাড়া দিয়ে পবিত্র জামাতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন।

    আল্লামা ইবনে সা'দ রাহিমাহুল্লাহ {তাবাকাতে} লিখেন- যখন উম্মে শারিক রাদিয়াল্লাহু আনহা ইসলাম গ্রহণ করলেন তখন তার নিকটজনরা তাঁর উপর নির্যাতন শুরু করতে লাগলো। প্রচন্ড নির্যাতন বলে কয়ে বুঝানো সম্ভব নয়। অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ উত্তপ্ত রোদ্রে দাঁড় করিয়ে রাখতো। খাবারের সাথে বিষ মিশিয়ে দিতো। প্রচন্ড পিপাসার সময় এক ফোঁটা পানি পান করতে দিতো না।[২]

    এমনও সময় অতিবাহিত করেছেন যে, লাগাতার তিন বা চার দিন পর্যন্ত কোন খাবার পানীয় পান করতে দেয়নি। এ সময়ের ভিতরে চরম নির্যাতন করেছে। শারীরিকভাবে দুর্বল করে দিয়েছে। মানসিকভাবে অসুস্থ করে তুলেছে। অকথ্য ভাষায় গালি দিয়েছি। যা ভাষায় ব্যক্ত করার মতো নয়। এসবই তিনি অত্যন্ত ধৈর্যের সহ্য করেছেন।

    ঈমানের উপর পাহাড়ের ন্যায় অটল-অবিচল থেকেছেন। নিষ্ঠুর আত্মীয়দের এই কষ্ট যন্ত্রণা তাঁকে তাঁর ঈমান থেকে এক চুল পরিমাণও নড়াতে পারেনি। এক বিন্দু পরিমাণও টলাতে পারেনি। অবশেষে পাথরের ন্যায় শক্ত দিলের মানুষগুলোও তাঁর প্রতি সদয় হলো ইমানের উপর তাঁর অবিচলতা দেখে। তাই নিজ অবস্থার উপর ছেড়ে দিলো। তাঁকে নিয়ে আর কোন বাড়াবাড়ি করলো না।

    ★এদের মাঝে আরেকজন হলেন হযরত যানিরা রাদিয়াল্লাহু আনহা। তিনি কুরাইশ গোত্রের বনু মাখযুমের দাসি ছিলেন। ইসলাম গ্রহণ করা মাত্রই তাঁর উপর নেমে এলো নির্যাতনের পিষ্ট যাতাকলের এক ধমকা ঝড়। সবকিছুকে নিমিষেই শেষ করে দিলো। রাতের আঁধারের চেয়ে আরো বড় আঁধারের আকার ধারণ করলো। যার মধ্যে শুধু ইমানটা দেখা যায় আর নির্যাতনের ছাপগুলো পেঠ-পিঠে রয়ে যায়। এত ভয় ও এত ভোগ নিপীড়ন তাঁর ইমানের সামনে বুক টান করে দাঁড়াতে পারেনি। বরং পশ্চাদবরণ করতে বাধ্য হয়েছে। কারণ এ স্বাধ যে আল্লাহর প্রেমের। কারণ এ স্বাধ যে প্রিয় রাসূলের মহব্বতের।

    একদা আবু জাহেল তাঁকে এমনভাবে প্রহার করলো যে, তার দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে গেলো। মুশরিকরা এই বলে অভিশাপ দিতে লাগল যে, লাত-মানাত তোমার দৃষ্টি কেড়ে নিয়ে গেছে। তা শুনে তিনি ব্যাকুল হয়ে পড়লেন। অস্থির হয়ে গেলে।

    তিনি সাথে সাথে আবদ্ধ কামরায় গিয়ে সেজদায় লুটিয়ে পড়লেন আর বলতে লাগলেন-ওগো দয়াময় রব! লাত মানাত তো পাথরের সৃষ্টি। কে তাকে পূজা করে? এ তাদের মিথ্যা ধারণা। তুমি তোমার কুদরত দ্বারা তা খন্ডন করো। ওগো দয়াময় রব! তুমি তো সবকিছুই দেখো! সবকিছুই শোনো! তুমিই কেবল ফিরিয়ে দিতে পারো আমার হারানো দৃষ্টিশক্তিকে। তুমি আমাকে মুশরিকদের সামনে লজ্জিত করো না। এই বলে তিনি কামরা থেকে বের হওয়া মাত্র আল্লাহ তাআলা তাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিলেন। সুবহানাল্লাহ![৩]

    ★আল্লামা ইবনে হিশাম রাহিমাহুল্লাহ লিখেছেন- সাইয়্যেদুনা হযরত আবু বক্কর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু আনহু পরবর্তীতে খরিদ করে তাঁকে আজাদ করে দিয়েছিলেন। ঐ সময় ইসলাম গ্রহণ করার অর্থ ছিলো সমস্ত বালা-মুসিবত স্বেচ্ছায় নিজের কাঁধে টেনে আনা। তা জানা থাকা সত্ত্বেও ঈমান গ্রহণ করা থেকে তারা বিরত থাকতেন না। তাদের অবস্থা ছিলো এমন- ইসলাম গ্রহনের পূর্বে অত্যন্ত দুর্বল প্রকৃতির কিন্তু ঈমান আনয়নে তারা হয়ে যেতো সবচেয়ে সবল আকৃতির।[৪]

    শিক্ষা:
    আমাদের বোনদের ইমানের অবস্থা একেবারেই নড়বড়ে। ধাক্কা দিলেই ধোঁকার সমুদ্রে পড়ে যাবে এমন একটা পরিস্থিতি। রাত কেটে দিন আসতেই না আসতেই অবস্থার বিরাট এক পরিবর্তন। যার আকিদা যতবেশি সাফ-সোতরা তার ইমানের খুঁটিটাও ততবেশি শক্ত আর যার আবেগ যতবেশি প্রবল তার ইমানের ভিত্তিটাও ততবেশি অঁচল। সুতরাং আমাদের বোনদের ইমান নামক ভবনের মূলভিত্তির গোড়ায় আকিদার পানি ঢালতে হবে।

    প্রমাণাদি.
    ১.বাচ্চু কা ইসলাম। উর্দু ম্যাগাজিন।৪ র্থ সংখ্যা।
    ২.আস-সিরাতুন নাবাবিয়্যাহ লিল আতফাল।
    ৩.আস-সিরাতুন নাবাবিয়্যাহ লিল আতফাল।
    ৪.আস-সিরাতুন নাবাবিয়্যাহ লিল আতফাল।

  • #2
    মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর লেখা.. জাযাকাআল্লাহ্ ভাইজান!

    Comment


    • #3
      Originally posted by Rumman Al Hind View Post
      মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর লেখা.. জাযাকাল্লাহ্ ভাইজান!
      শুকরান আঁখি। জাযাকাল্লাহ!!

      Comment

      Working...
      X