মুজাহিদীনরা হলো স্বার্থহীন বটগাছ
আমরা রবের প্রসংশা করি, যে প্রসংশা রাব্বে কারীমের শান উপযোগী। আমরা তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, যে কৃতজ্ঞতা বান্দায়ে ফাকিরের হাল উপযোগী। আমাদেরকে যিনি ইলম দান করেছেন।সাথে সাথে ইলমের নূর। আমাদেরকে যিনি কলব দান করেছেন। সাথে সাথে কলবের তাজাল্লী। আমাদেরকে যিনি আ'সা দান করেছেন। সাথে সাথে আ,সার লাভ লোকসানের দিকটি। আমাদেরকে যিনি অস্ত্র দান করেছেন। সাথে সাথে অস্ত্রের ফজিলতটি। সেই রাব্বে কারীমের প্রসংশা থেকে কিভাবে এক মুহূর্ত খালি হবো? বড়ই অকৃতজ্ঞতা হবে।
অকৃতজ্ঞতার ধরনটা যদি আরো বিশাল হয় তাহলে অবস্থা কেমন হবে? আমাদের এ ক্ষুদ্র মানসপটে ধরবে না। তাই এ বিষয় নিয়ে আর কথাও বাড়াতে চাই না।
প্রিয় যুবক ভাই!
প্রখর রোদে পৃথিবীর বুক যখন উত্তপ্ত হয়, গাছেরা যখন ঝিমিয়ে পড়ে খরতাপে, কিংবা মরুভূমির মুসাফির যখন পিপাসায় ছটফট করে তখন এক পশলা বৃষ্টি কিংবা একখণ্ড মেঘের ছায়া মানুষকে দেয় শান্তির পরশ। সেই মেঘখন্ড যখন সরে যায়, কিংবা নির্দয় মরুভূমি যখন বৃষ্টির পানিটুকু শুষে নেয়, আর সূর্য আগের তেজে আগুন ঝরাতে থাকে অসহায় মানুষ তখন আবার রোদে পোড়ে এবং পিপাসায় ছটফট করে।
ব্যক্তির ক্ষেত্রে যেমন ঘটে তেমনি উম্মাহর ক্ষেত্রেও এটা সমান সত্য। যুগে যুগে এই উম্মাহর মাঝে আল্লাহ এমন এমন ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটান যারা উম্মাহর জন্য হয়ে থাকে সেই ক্ষণস্থায়ী মেঘের ছায়া কিংবা রহমতের বৃষ্টি। ফেতনা-ফাসাদের খরতাপে বিপর্যস্ত মানুষ তাদের ছায়ায় আশ্রয় নেয়। বাতিলের মরুভূমিতে হকের পিপাসায় ছটফটকারী মানুষ তাদের কাছে পেয়ে থাকে হেদায়েতের সুশীতল বারিধারা।
এই মেঘ খন্ড যখন উম্মাহর উপর থেকে সরে যায় তখন বাতিলের মোকাবেলায় বিপর্যস্ত উম্মাহর কী করুন অবস্থা হয় তা কল্পনা করাও সম্ভব নয়। এই ভাবনা আজ কাল বারবার আমাকে পীড়া দিচ্ছে! কারণ শুধু বাংলাদেশ নয় বরং বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ যে বিশাল মেঘ খন্ডের ছায়ায় আশ্রয় পেয়ে বাতিলের খরতাপ থেকে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলো আল্লাহর হুকুমে তা আমাদের মাথার উপর থেকে সরে গেছে। উম্মাহ আবার বাতিলের আগুন ঝরা রোদে জ্বলে পুড়ে ঝলছে যাচ্ছে।
ফেতনা-ফাসাদের মরুভূমিতে উম্মাহ আবার হকের পিপাসায়, হিদায়াতের পিপাসায় ছটফট করছে। উম্মাহর সেই মেঘ খন্ড, সেই বারিধারা হলেন সবার আদরের, সবার ভালোবাসার, সবার ভক্তি-শ্রদ্ধার এবং সবার অখন্ড আস্থা ও নির্ভরতার পাত্র প্রিয় মুজাহিদ ফি-সাবিলিল্লাহ।
যারা তাঁদের সত্যকে ধারণ করেন তাদের হৃদয় হয় নূরের আঁধার। তাদের কথায় থাকে সেই নূরের বিচ্ছুরণ। তাদের লেখায় থাকে সেই সত্যের উদ্ভাস। পথহারা যুবক তাঁদের কথায় খুঁজে পায় পথের দিশা। তাঁদের লেখায় দেখতে পায় হেরার ঝিলিক-নুরের প্রদীপ। বুকখানি মা পায় অদৃশ্য সান্ত্বনা। উদর থেকে কেড়ে নেয়া বোন পায় গায়বী সান্ত্বনা।
শহরের ওলিতে গলিতে একা একা যখন হাঁটা হয় পাওনা যায় না কোন মুনাফিক আর গাদ্দার। নিঝুম রাতে গাছতলা পাড়ি দিয়ে যায় সূদুর আকসায় দেখতে পাওয়া যায় না বদদুআ ভিখারী কোন অভিশপ্ত মানুষ। সূদুর শাম থেকে একা একা হেঁটে পবিত্র আকসা তাওয়াফ করে আবার নির্বিঘ্নে ফিরে যান স্বদেশে পথিমধ্যে এক আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পায়নি কোন বোন ।
কিন্তু কেন আজ বিশ্বমানচিত্রের কোণায় কোণায়,
স্বদেশের আনাচে কানাচে ভারি কান্নার আওয়াজ? একই মানচিত্রের দুটি রুপ? মুসলমানদের ভারি কান্নার আওয়াজ আর কাফেরদের ভারি মিষ্টি হাসি? মক্কা বিজয় আমাদের কি বার্তা দেয় এটা সবারই জানা। সেদিন মক্কার ভূখণ্ডে শুধুই আল্লাহু আকবার ধ্বনির আওয়াজ শোনা গিয়েছিলো। হামদান লিল্লাহ! হামদান লিল্লাহ! তাকবীর ধ্বনিতে মুখরিত হয়েছিলো পুরো শহর। লাব্বাঈকা লাব্বাঈকা শ্লোগানের শ্রুতিমধুর কন্ঠ ভেসে এসেছিলো বিশ্ব মানবতার কমান্ডার প্রিয় হাবিব সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কান মোবারকে।
এমন সুন্দর পুলকিত মনোরম আচ্ছাদিত পরিবেশ কে না চায়? এমন মার্জিত শ্রুতিমধুর সাবলীল ভাষা কে না শুনতে চায়? এমন নিরাপদ জনপদ- আবাসস্থলে কে না থাকতে চায়? এমন ব্যক্তির ছায়াতলে কে না বায়াত আর আশ্রয় পেতে চায়? এসব কিছুর গুণেই গুণান্বিত ছিলেন প্রিয় নাবিয়ে কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তাহলে কি আমরা সেই নবীর পুঙ্কানো অনুসারী অনুকরণকারী প্রিয় মুজাহিদীনে কেরামের মাঝে এর কিঞ্চিৎ পরিমাণও খোঁজে পাবো না, এটা কিছুতেই হতে পারে না।
প্রিয় যুবক ভাই!
সে কথাই বলছিলাম- পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে যারা বা যে দেশের মানুষ এ সত্যনিষ্ঠ ব্যক্তিদের সাথে অসৎ ব্যবহার করেছে তারা নিশ্চিত জিল্লতির সাগরে হাবুডুবু খেয়েছে। আর আল্লাহ তাঁর সত্যনিষ্ঠ বান্দাদেরকে {মুজাহিদেরকে} পুরষ্কৃত করেছেন।
বাস্তবতা সত্যিই কঠিন-
আত্মসমালোচনা করছি। সমালোচনা নয়। কেউ অন্যদিকে মোড় ঘোরানোর চিন্তা করবেন না কারণ আমি যে আপনার মুসলিম ভাই! আমরা যে একটি দেহ! আমরা যে একে অপরের আয়নাস্বরুপ।
যেমন দরুন-
আরাকানের কথা- তারা মুজাহিদ ভাইদের সঙ্গ নিতে চায়নি। তাঁদের কার্যকলাপকে ভুল বলে আখ্যায়িত করতে চাইছিলো। তাঁদেরকে বিপদ ডেকে আনার কারণ ভেবে বসেছিলো। এমনকি কিছু কিছু মুজাহিদ ভাইদেরকে তাগুতের কাছে সোপর্দও করে দিয়েছিলো। যার পায়শ্চিত্তের গ্লানি গতকিছু কাল ধরে টানতে হচ্ছে।
রবের পক্ষ থেকে পাঠানো ছায়ায় আশ্রয় নিতে তারা অস্বকৃতি জানিয়েছে। তাই এর জন্য নির্যাতনের খরতাপে পুড়ে তক্তা হচ্ছে। এসব কিছুই হাতের কামাই। মনের চাহিদা। দেহের তেজ। আর মনের এই তৃপ্তি এতই বিষাক্ত, এতই খারাপ। জনম জনমধরে নির্যাতনের বিষাক্ত পানি পান করায়। দেখতে দেখা যায় ঝর্ণার সুমিষ্ট পানি কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সে পানি হলো জাক্কুম ফল নিঙড়ানো তিক্ত রস। মুখের উপরি ভাগ ঠিকই থাকবে তবে ভিতরী ভাগ হয়ে যাবে ঝলসানো। পানাহ চাই প্রভু! পানাহ চাই!
কাশ্মীরীদের অবস্থা পুরো এমনই ছিলো তারা ভুলের পায়শ্চিত্ত দিতে হয়েছে একযুগ কিন্তু এখন আলহামদুলিল্লাহ রাজকীয় হালতে লড়ে যাচ্ছে।
কিভাবে ভাবতে পারেন-
ফিলিস্তিনীদের পায়শ্চিত্তের গ্লানি টানতে হবে না? মুজাহিদদের সঙ্গ না নেওয়ার কারণে। হ্যা-অবশ্যই। অমোঘ বিধান সবার জন্য সমান সত্য। ভুলের পায়শ্চিত্ত সবার জন্য সমান। এটা মক্কার মানুষ হোক আর সীমান্তবর্তী আইসল্যান্ডের মানুষ। তবে আল্লাহর সাহায্যের রশিটাও সবার জন্য সমান। যে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যতটুকু তাদের কায়মনোবাক্যের জোড়ে নিচে নামাতে পারে। তারা তত দ্রুত সফলতা ও সম্মানের মুখ দেখতে পারে।
প্রিয় যুবক ভাই!
আমরা হিন্দের ভূমিতে পূণরায় এর মানচিত্র আঁকতে চাইনা। মুজাহিদদের সাথে অযাচিত আচরণ করে লাঞ্ছিত হতে চাই না। জিল্লতির খনিতে দেহ ডুবাতে চাই না। নিপীড়নের চুলায় শরীরকে দগ্ধ করতে চাই না। মা-বোন আর আদরের ছোট্ট ছোট্ট খোকামনিদের নিথর লাশ আর পড়ে থাকতে চাই না। কান্নার আহাজারিতে আকাশ বাতাসকে ব্যথিত করতে চাই না। ফেরেতেশতাদের নেক দুআ থেকে বঞ্চিত হতে চাই না।
প্রিয় যুবক ভাই!
মুজাহিদীনরা হলো স্বার্থহীন বটগাছ। দাঁড়িয়ে থেকে শুধু ছায়া দিয়ে যায়। কারো থেকে কিছু পাওয়ার আশা করে না। সবাইকে সমানভাবে ছায়ার আপ্যায়ন করে। কারো ক্ষেত্রে কমতি করে না। কিন্তু মানুষ পরক্ষণই ভুলে যায় তাঁর উপকারের কথা। ঢিল ছুঁড়ে প্রমাণ করে দিয়ে যায় মানুষ সত্যিই নিমকহারামি। তারপরও শত বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকে একজন পথিকের জন্য, যে তাঁর উপকারে মুগ্ধ হয়ে একটুখানি পানি তাঁর গোড়ায় ঢেলে দিবে পরম যত্ন সহকারে।
তাই.....
আমরা এই বট গাছগুলো কেটে ছায়াহীন হবো না। রৌদ্রের খরতাপে আর পুড়তে পারবো না। অনেক হয়েছে। অনেক পুড়েছে। অনেকের দগ্ধ শরীর এখনো শুকায়নি। কারণ তাঁদের শরীরে নেফাকি নামক ডায়াবেটিস রয়েছে। যেদিকে ক্ষত হয় সেদিকেই ঘা হয়ে যায়, ভালো আর হয় না। সুতরাং
এখন আমাদের বেঁচে থাকতে হলে একটাই উপায়। সেটা হলো ইমানের ইনসুলিন গ্রহণ করে করে বেঁচে থাকতে হবে। মুজাহিদদের সঙ্গ নিয়ে নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে। তাছাড়া একটা সময় আসবে নিঃস্বাস নেওয়াও সম্ভব হবে না।
আল্লাহ তাআলা নিরঙ্কুশভাবে বলে দিয়েছেন-
ইজ্জত-সম্মান, পদ মর্যাদা, হালাল রিযিক, নেক সন্তানের উৎসরণ, ভূমির নিরাপত্তা, জান-মালের নিরাপত্তা, নির্জন ইবাদতের উপায় যে জিনিসগুলোর মধ্যে রেখেছেন সে জিনিসগুলোর মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী মজবুত একটি ভান্ডার হলো অস্ত্র। আর এ ভান্ডার নিয়েই যে সমস্ত মুজাহিদরা সারাক্ষণ ঘুরে বেড়ায় তাদের সাথে লেগে থাকবো না তাহলে কাদের সাথে লেগে থাকবো? তাদের সমর্থন করবো না তাহলে কাদের সমর্থন করবো? তাঁদেরকে আর্থিক তাত্ত্বিক সাহায্য করবো না তাহলে কাদেরকে করবো? সয়ং আল্লাহ যাদেরকে ভালোবাসের তাঁদেরকে ভালো না বেসে কাদের ভালোবাসবো? প্রিয় রাসূল যে দলের কমান্ডার সে দলে না ভিড়ে কোন দলে ভিড়বো?
পরিশেষে কথা একটাই-
স্বার্থহীন বটগাছগুলোর{ মুজাহিদ ফি-সাবিলিল্লাহ} পরম যত্ন নেবো। সুখে দুখে ভাগাভাগি করে বসবাস করবো। তাঁদের পরিবারের পিছনে হাতের কামানো হালাল কিছু রুপি খরচ করবো। শহীদদের ছোট বড় সন্তানগুলোকে আগলে রাখবো। এ বীচগুলো নিজের ভূমিতে বোপন করবো। তাদের উরশ থেকে জন্ম নেবে উসামা। তাদের উদর থেকে বের হয়ে আসবে মুয়াজ ও মুয়াওয়্যিজ।
আমরা রবের প্রসংশা করি, যে প্রসংশা রাব্বে কারীমের শান উপযোগী। আমরা তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, যে কৃতজ্ঞতা বান্দায়ে ফাকিরের হাল উপযোগী। আমাদেরকে যিনি ইলম দান করেছেন।সাথে সাথে ইলমের নূর। আমাদেরকে যিনি কলব দান করেছেন। সাথে সাথে কলবের তাজাল্লী। আমাদেরকে যিনি আ'সা দান করেছেন। সাথে সাথে আ,সার লাভ লোকসানের দিকটি। আমাদেরকে যিনি অস্ত্র দান করেছেন। সাথে সাথে অস্ত্রের ফজিলতটি। সেই রাব্বে কারীমের প্রসংশা থেকে কিভাবে এক মুহূর্ত খালি হবো? বড়ই অকৃতজ্ঞতা হবে।
অকৃতজ্ঞতার ধরনটা যদি আরো বিশাল হয় তাহলে অবস্থা কেমন হবে? আমাদের এ ক্ষুদ্র মানসপটে ধরবে না। তাই এ বিষয় নিয়ে আর কথাও বাড়াতে চাই না।
প্রিয় যুবক ভাই!
প্রখর রোদে পৃথিবীর বুক যখন উত্তপ্ত হয়, গাছেরা যখন ঝিমিয়ে পড়ে খরতাপে, কিংবা মরুভূমির মুসাফির যখন পিপাসায় ছটফট করে তখন এক পশলা বৃষ্টি কিংবা একখণ্ড মেঘের ছায়া মানুষকে দেয় শান্তির পরশ। সেই মেঘখন্ড যখন সরে যায়, কিংবা নির্দয় মরুভূমি যখন বৃষ্টির পানিটুকু শুষে নেয়, আর সূর্য আগের তেজে আগুন ঝরাতে থাকে অসহায় মানুষ তখন আবার রোদে পোড়ে এবং পিপাসায় ছটফট করে।
ব্যক্তির ক্ষেত্রে যেমন ঘটে তেমনি উম্মাহর ক্ষেত্রেও এটা সমান সত্য। যুগে যুগে এই উম্মাহর মাঝে আল্লাহ এমন এমন ব্যক্তির আবির্ভাব ঘটান যারা উম্মাহর জন্য হয়ে থাকে সেই ক্ষণস্থায়ী মেঘের ছায়া কিংবা রহমতের বৃষ্টি। ফেতনা-ফাসাদের খরতাপে বিপর্যস্ত মানুষ তাদের ছায়ায় আশ্রয় নেয়। বাতিলের মরুভূমিতে হকের পিপাসায় ছটফটকারী মানুষ তাদের কাছে পেয়ে থাকে হেদায়েতের সুশীতল বারিধারা।
এই মেঘ খন্ড যখন উম্মাহর উপর থেকে সরে যায় তখন বাতিলের মোকাবেলায় বিপর্যস্ত উম্মাহর কী করুন অবস্থা হয় তা কল্পনা করাও সম্ভব নয়। এই ভাবনা আজ কাল বারবার আমাকে পীড়া দিচ্ছে! কারণ শুধু বাংলাদেশ নয় বরং বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ যে বিশাল মেঘ খন্ডের ছায়ায় আশ্রয় পেয়ে বাতিলের খরতাপ থেকে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলো আল্লাহর হুকুমে তা আমাদের মাথার উপর থেকে সরে গেছে। উম্মাহ আবার বাতিলের আগুন ঝরা রোদে জ্বলে পুড়ে ঝলছে যাচ্ছে।
ফেতনা-ফাসাদের মরুভূমিতে উম্মাহ আবার হকের পিপাসায়, হিদায়াতের পিপাসায় ছটফট করছে। উম্মাহর সেই মেঘ খন্ড, সেই বারিধারা হলেন সবার আদরের, সবার ভালোবাসার, সবার ভক্তি-শ্রদ্ধার এবং সবার অখন্ড আস্থা ও নির্ভরতার পাত্র প্রিয় মুজাহিদ ফি-সাবিলিল্লাহ।
যারা তাঁদের সত্যকে ধারণ করেন তাদের হৃদয় হয় নূরের আঁধার। তাদের কথায় থাকে সেই নূরের বিচ্ছুরণ। তাদের লেখায় থাকে সেই সত্যের উদ্ভাস। পথহারা যুবক তাঁদের কথায় খুঁজে পায় পথের দিশা। তাঁদের লেখায় দেখতে পায় হেরার ঝিলিক-নুরের প্রদীপ। বুকখানি মা পায় অদৃশ্য সান্ত্বনা। উদর থেকে কেড়ে নেয়া বোন পায় গায়বী সান্ত্বনা।
শহরের ওলিতে গলিতে একা একা যখন হাঁটা হয় পাওনা যায় না কোন মুনাফিক আর গাদ্দার। নিঝুম রাতে গাছতলা পাড়ি দিয়ে যায় সূদুর আকসায় দেখতে পাওয়া যায় না বদদুআ ভিখারী কোন অভিশপ্ত মানুষ। সূদুর শাম থেকে একা একা হেঁটে পবিত্র আকসা তাওয়াফ করে আবার নির্বিঘ্নে ফিরে যান স্বদেশে পথিমধ্যে এক আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পায়নি কোন বোন ।
কিন্তু কেন আজ বিশ্বমানচিত্রের কোণায় কোণায়,
স্বদেশের আনাচে কানাচে ভারি কান্নার আওয়াজ? একই মানচিত্রের দুটি রুপ? মুসলমানদের ভারি কান্নার আওয়াজ আর কাফেরদের ভারি মিষ্টি হাসি? মক্কা বিজয় আমাদের কি বার্তা দেয় এটা সবারই জানা। সেদিন মক্কার ভূখণ্ডে শুধুই আল্লাহু আকবার ধ্বনির আওয়াজ শোনা গিয়েছিলো। হামদান লিল্লাহ! হামদান লিল্লাহ! তাকবীর ধ্বনিতে মুখরিত হয়েছিলো পুরো শহর। লাব্বাঈকা লাব্বাঈকা শ্লোগানের শ্রুতিমধুর কন্ঠ ভেসে এসেছিলো বিশ্ব মানবতার কমান্ডার প্রিয় হাবিব সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কান মোবারকে।
এমন সুন্দর পুলকিত মনোরম আচ্ছাদিত পরিবেশ কে না চায়? এমন মার্জিত শ্রুতিমধুর সাবলীল ভাষা কে না শুনতে চায়? এমন নিরাপদ জনপদ- আবাসস্থলে কে না থাকতে চায়? এমন ব্যক্তির ছায়াতলে কে না বায়াত আর আশ্রয় পেতে চায়? এসব কিছুর গুণেই গুণান্বিত ছিলেন প্রিয় নাবিয়ে কারীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তাহলে কি আমরা সেই নবীর পুঙ্কানো অনুসারী অনুকরণকারী প্রিয় মুজাহিদীনে কেরামের মাঝে এর কিঞ্চিৎ পরিমাণও খোঁজে পাবো না, এটা কিছুতেই হতে পারে না।
প্রিয় যুবক ভাই!
সে কথাই বলছিলাম- পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে যারা বা যে দেশের মানুষ এ সত্যনিষ্ঠ ব্যক্তিদের সাথে অসৎ ব্যবহার করেছে তারা নিশ্চিত জিল্লতির সাগরে হাবুডুবু খেয়েছে। আর আল্লাহ তাঁর সত্যনিষ্ঠ বান্দাদেরকে {মুজাহিদেরকে} পুরষ্কৃত করেছেন।
বাস্তবতা সত্যিই কঠিন-
আত্মসমালোচনা করছি। সমালোচনা নয়। কেউ অন্যদিকে মোড় ঘোরানোর চিন্তা করবেন না কারণ আমি যে আপনার মুসলিম ভাই! আমরা যে একটি দেহ! আমরা যে একে অপরের আয়নাস্বরুপ।
যেমন দরুন-
আরাকানের কথা- তারা মুজাহিদ ভাইদের সঙ্গ নিতে চায়নি। তাঁদের কার্যকলাপকে ভুল বলে আখ্যায়িত করতে চাইছিলো। তাঁদেরকে বিপদ ডেকে আনার কারণ ভেবে বসেছিলো। এমনকি কিছু কিছু মুজাহিদ ভাইদেরকে তাগুতের কাছে সোপর্দও করে দিয়েছিলো। যার পায়শ্চিত্তের গ্লানি গতকিছু কাল ধরে টানতে হচ্ছে।
রবের পক্ষ থেকে পাঠানো ছায়ায় আশ্রয় নিতে তারা অস্বকৃতি জানিয়েছে। তাই এর জন্য নির্যাতনের খরতাপে পুড়ে তক্তা হচ্ছে। এসব কিছুই হাতের কামাই। মনের চাহিদা। দেহের তেজ। আর মনের এই তৃপ্তি এতই বিষাক্ত, এতই খারাপ। জনম জনমধরে নির্যাতনের বিষাক্ত পানি পান করায়। দেখতে দেখা যায় ঝর্ণার সুমিষ্ট পানি কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সে পানি হলো জাক্কুম ফল নিঙড়ানো তিক্ত রস। মুখের উপরি ভাগ ঠিকই থাকবে তবে ভিতরী ভাগ হয়ে যাবে ঝলসানো। পানাহ চাই প্রভু! পানাহ চাই!
কাশ্মীরীদের অবস্থা পুরো এমনই ছিলো তারা ভুলের পায়শ্চিত্ত দিতে হয়েছে একযুগ কিন্তু এখন আলহামদুলিল্লাহ রাজকীয় হালতে লড়ে যাচ্ছে।
কিভাবে ভাবতে পারেন-
ফিলিস্তিনীদের পায়শ্চিত্তের গ্লানি টানতে হবে না? মুজাহিদদের সঙ্গ না নেওয়ার কারণে। হ্যা-অবশ্যই। অমোঘ বিধান সবার জন্য সমান সত্য। ভুলের পায়শ্চিত্ত সবার জন্য সমান। এটা মক্কার মানুষ হোক আর সীমান্তবর্তী আইসল্যান্ডের মানুষ। তবে আল্লাহর সাহায্যের রশিটাও সবার জন্য সমান। যে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যতটুকু তাদের কায়মনোবাক্যের জোড়ে নিচে নামাতে পারে। তারা তত দ্রুত সফলতা ও সম্মানের মুখ দেখতে পারে।
প্রিয় যুবক ভাই!
আমরা হিন্দের ভূমিতে পূণরায় এর মানচিত্র আঁকতে চাইনা। মুজাহিদদের সাথে অযাচিত আচরণ করে লাঞ্ছিত হতে চাই না। জিল্লতির খনিতে দেহ ডুবাতে চাই না। নিপীড়নের চুলায় শরীরকে দগ্ধ করতে চাই না। মা-বোন আর আদরের ছোট্ট ছোট্ট খোকামনিদের নিথর লাশ আর পড়ে থাকতে চাই না। কান্নার আহাজারিতে আকাশ বাতাসকে ব্যথিত করতে চাই না। ফেরেতেশতাদের নেক দুআ থেকে বঞ্চিত হতে চাই না।
প্রিয় যুবক ভাই!
মুজাহিদীনরা হলো স্বার্থহীন বটগাছ। দাঁড়িয়ে থেকে শুধু ছায়া দিয়ে যায়। কারো থেকে কিছু পাওয়ার আশা করে না। সবাইকে সমানভাবে ছায়ার আপ্যায়ন করে। কারো ক্ষেত্রে কমতি করে না। কিন্তু মানুষ পরক্ষণই ভুলে যায় তাঁর উপকারের কথা। ঢিল ছুঁড়ে প্রমাণ করে দিয়ে যায় মানুষ সত্যিই নিমকহারামি। তারপরও শত বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকে একজন পথিকের জন্য, যে তাঁর উপকারে মুগ্ধ হয়ে একটুখানি পানি তাঁর গোড়ায় ঢেলে দিবে পরম যত্ন সহকারে।
তাই.....
আমরা এই বট গাছগুলো কেটে ছায়াহীন হবো না। রৌদ্রের খরতাপে আর পুড়তে পারবো না। অনেক হয়েছে। অনেক পুড়েছে। অনেকের দগ্ধ শরীর এখনো শুকায়নি। কারণ তাঁদের শরীরে নেফাকি নামক ডায়াবেটিস রয়েছে। যেদিকে ক্ষত হয় সেদিকেই ঘা হয়ে যায়, ভালো আর হয় না। সুতরাং
এখন আমাদের বেঁচে থাকতে হলে একটাই উপায়। সেটা হলো ইমানের ইনসুলিন গ্রহণ করে করে বেঁচে থাকতে হবে। মুজাহিদদের সঙ্গ নিয়ে নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে। তাছাড়া একটা সময় আসবে নিঃস্বাস নেওয়াও সম্ভব হবে না।
আল্লাহ তাআলা নিরঙ্কুশভাবে বলে দিয়েছেন-
ইজ্জত-সম্মান, পদ মর্যাদা, হালাল রিযিক, নেক সন্তানের উৎসরণ, ভূমির নিরাপত্তা, জান-মালের নিরাপত্তা, নির্জন ইবাদতের উপায় যে জিনিসগুলোর মধ্যে রেখেছেন সে জিনিসগুলোর মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী মজবুত একটি ভান্ডার হলো অস্ত্র। আর এ ভান্ডার নিয়েই যে সমস্ত মুজাহিদরা সারাক্ষণ ঘুরে বেড়ায় তাদের সাথে লেগে থাকবো না তাহলে কাদের সাথে লেগে থাকবো? তাদের সমর্থন করবো না তাহলে কাদের সমর্থন করবো? তাঁদেরকে আর্থিক তাত্ত্বিক সাহায্য করবো না তাহলে কাদেরকে করবো? সয়ং আল্লাহ যাদেরকে ভালোবাসের তাঁদেরকে ভালো না বেসে কাদের ভালোবাসবো? প্রিয় রাসূল যে দলের কমান্ডার সে দলে না ভিড়ে কোন দলে ভিড়বো?
পরিশেষে কথা একটাই-
স্বার্থহীন বটগাছগুলোর{ মুজাহিদ ফি-সাবিলিল্লাহ} পরম যত্ন নেবো। সুখে দুখে ভাগাভাগি করে বসবাস করবো। তাঁদের পরিবারের পিছনে হাতের কামানো হালাল কিছু রুপি খরচ করবো। শহীদদের ছোট বড় সন্তানগুলোকে আগলে রাখবো। এ বীচগুলো নিজের ভূমিতে বোপন করবো। তাদের উরশ থেকে জন্ম নেবে উসামা। তাদের উদর থেকে বের হয়ে আসবে মুয়াজ ও মুয়াওয়্যিজ।
Comment