Announcement

Collapse
No announcement yet.

"বিবেকের তাড়না ও প্রবৃত্তির চাওয়া।"

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • "বিবেকের তাড়না ও প্রবৃত্তির চাওয়া।"

    "বিবেকের তাড়না ও প্রবৃত্তির চাওয়া।"

    পরিণাম না ভেবেই মানুষ প্রবৃত্তির স্বাদ নিতে চায়। অথচ, সে ভালো করেই জানে যে, এ স্বাদ শুধু তার যন্ত্রণাই বাড়াবে এবং এমন আরো অনেক স্বাদের প্রতিবন্ধক হবে। যদিও কামাতুর মুহূর্তে মোটেও এসবের খেয়াল থাকে না। সেটি যে পশুবৃত্তির মুহূর্ত! তবে পশুতো ক্ষমাযোগ্য। পরিণাম নিয়ে তাদের ভাবতে হয় না। বিবেকবান মানুষের কি উচিত, মর্যাদাপূর্ণ মানবপ্রাসাদ থেকে নেমে সম্মানের সীমারেখা ডিঙিয়ে যাওয়া? না! কখনো উচিত নয়। কারণ, বিবেক তো বিচক্ষণ ব্যক্তি ও কল্যাণকামী ডাক্তারের ন্যায় শেষ পরিণামে চোখ রাখে; স্বীয় স্বার্থের প্রতি যথেষ্ট খেয়াল রাখে।
    .
    প্রবৃত্তি তো অবুঝ শিশু কিংবা লোভাতুর রোগীর ন্যায়। তাই যখন কারো প্রবৃত্তি ও বিবেকের মাঝে মতানৈক্য দেখা দেয় এবং সে ভালো করেই জানে যে, বিবেকই জ্ঞানী ও কল্যাণকামী- তখন সে বিবেকের সাথেই পরামর্শ করবে এবং তার কথামতো কাজ করবে- যদিও কষ্ট হয়। বিবেকের শ্রেষ্ঠত্ব সে ভালোই বোঝে; এটিই বিবেককে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। তবুও যদি সে সন্তুষ্ট হতে না পারে, বিবেকের শুদ্ধতার ব্যাপারে যদি সে এখনো সন্দিহান হয়; তবে তাকে প্রবৃত্তির ভয়াবহ পরিণাম নিয়ে ভাবতে হবে। পাপাচারের মুখোশ খুলে যাওয়া, মানুষের সামনে লাঞ্ছিত হওয়া, অবমাননা সহ্য করা এবং সম্মান খোয়ানো ইত্যাদি চিন্তা করতে হবে। খায়েশের গোলামি না করলে কি কারো মর্যাদাহানি হয়? কোনো সম্মানিত ব্যক্তি কি অপমানিত হোন? কোনো পাখিও কি কারো ফাঁদে পড়ে? ব্যাপারটা আরো স্পষ্ট হবে, যদি সে খায়েশের স্বাদটা মনে মনে স্মরণ করতে পারে। স্বাদটা ফুরিয়ে গেলে তার অবস্থা কী হবে, তার হাতে কী বাকি থাকবে- তা যদি একবার অনুধাবন করতে পারে এবং স্বাদের সাথে অপরাধের পরিমাপটা যদি একবার করতে পারে, তখন ভালো করেই বুঝতে পারবে যে, সে যা পেয়েছে তার চেয়ে কতগুণ বেশি খুইয়েছে।
    .
    কবি বলেন-
    ‘কত স্বাদের মরীচিকা সুখের হাতছানি দেয়
    পরিণামে বাজে বিপদের ঘনঘটা
    কত কামনার রোদ্দুপুরে
    খসে পড়ে ধর্ম ও মানবতার সবুজ পোশাক।'
    .
    মানুষ যখন প্রবৃত্তির গোলামি করে তখন দৃশ্যত তার কোনো ক্ষতি না হলেও সে লাঞ্ছনা অনুভব করে। কারণ, সে পরাজিত। পক্ষান্তরে যখন সে প্রবৃত্তির তাড়নাকে দমিয়ে রাখতে সক্ষম হয়, তখন সে পরম সম্মান অনুভব করে। কারণ, সে যে তার কামনার কাছে বিজয়ী! তুমি দেখে থাকবে, মানুষ যখন কোনো আল্লাহওয়ালা ব্যক্তিকে দেখে, তখন বিস্মিত হয়; ভক্তি গদগদ হয়ে তাঁর হাতচুম্বন করতে শুরু করে। এটি কী কারণে সম্ভব হয়েছে, জানো? খায়েশের বিরুদ্ধাচারণ- যেটি সেই আল্লাহওয়ালা দৃঢ়তার সাথে করতে পেরেছে; কিন্তু আমজনতা হেরে গেছে।
    .
    বই: আত-তিব্বুর রূহানী (আত্মার পরিচর্যা), ইবনুল জাওযী রহিমাহুল্লাহ।
Working...
X