মহাবিচারের ভয়াবহমত দিনেও যে নাফসকে সম্মোধন করে আমরা "ইয়া নাফসি", "ইয়া নাফসি" বলে ডাকতে থাকব সেই নাফস আসলে কী?
আমাদের ইচ্ছা,আমাদের হুকুমকারী সত্তা,আমাদের চাহিদা-আমাদের নাফস।
নাফস কি বুঝতে হলে এক ছাত্র আর তার শিক্ষকের ঘটনাটি জেনে আসি।ছাত্রটি তার শিক্ষককে জিজ্ঞেস করেছিল,"নাফসের তাড়না যদি শুধুমাত্র শাইত্বনের দোষ হয়,তাহলে রমাদানে যখন শাইত্বন শিকলবন্দী থাকে,তখন মানুষ পাপ করে কেন?"
শিক্ষক এই প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন, কফিতে খুব জোরে চামচ দিয়ে নাড়ার পর,চামচ উঠিয়ে নিলেও কফি নিজেই ঘুরতে থাকে।আমাদের নাফসের বিষয়টি এমনই।আমাদের বদ আমল,গুনাহ এত বেশী হয়ে যায় যে,রমাদানেও এর কুপ্রভাব রয়ে যায়।
তাহলে নাফসের কুপ্রভাব থেকে বাঁচতে করণীয়? যুদ্ধ।নয়ত জীবনের সফলতা থেকে সে বহু দূরে নিয়ে যাবে।নাফসটাকে একটু ম্যানেজ করতে হবে।বড্ড বেয়ারা।
নাফস তিন প্রকার।
১)নাফসুল আম্মারা (নিম্ন পর্যায়ের) - যে নাফস খারাপ কাজের হুকুম দেয়।রাগ,হিংসা,গীবতসহ যাবতীয় পাপের পেছনে এই নাফসের তাড়না রয়েছে।
২) নাফসুল লাওয়ামা (মধ্যম পর্যায়ের) - নিজেকে দোষ দেয় এই নাফস।সে ভাবায়,"তুমি এই কাজটা করতে পারলে?তুমি কেন তার সাথে খারাপ আচরণ করলে?"
৩)নাফসুল মুতমাইন্না(উচ্চ পর্যায়ের) - শান্তিপূর্ণ নাফস।বারবার রবের কাছে ফিরে আসে।ঈমান,আমল,ভাল নিয়াতের মাধ্যমে শক্তিশালী করা যায় এই নাফস।
যে নাফসের কথা আমরা বেশী শুনব সেই নাফস বেশী শক্তিশালী হবে।নাফসুল আম্মারার কথা তাহলে শোনাই যাবে না।কিন্ত,একবারেই ত আমরা সেই অবস্থানে যেতে পারব না।তাহলে নাফসকে ট্রেনিং দিব কিভাবে?
- ফেসবুকে ঢোকার জন্য মন খুব আনচান করলেও ঢুকব না ।
- পছন্দের খাবার সামনে আসলেও,খুব আগ্রহ থাকলেও খাব না ।
- যখন যা করতে মন চাইবে,সেটা ভাল কাজ হলেও তখনই করব না।
নাফসুল আম্মারা থেকে বাঁচতে কী করব?
- কম খাব।খাওয়ার সাথে নাফসের সম্পর্ক আছে।সুন্নাহ মোতাবেক খাব ।
- অতিরিক্ত ঘুমাব না।কম ঘুমাব ।
- দুনিয়াদার মানুষের মজলিশে বেশী সময় থাকব না।
- আখিরাতমুখী মানুষের জীবনী পড়ব।
নাফসুল লাওয়ামা এক্টিভ হলে কি করব?
- তার কথা শুনব।
- তাকে স্বাগত জানাব।কারণ আমার হৃদয় এখনও জীবিত।
নাফসুল মুতমাইন্না এক্টিভ হলে কি করব?
- আমলগুলো জারি রাখব।
- আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করব।
আমাদের গুনাহ করার প্রসেসটা কি রকম?
১) মাথায় পাপের চিন্তা আসে
২)চিন্তাটাকে স্থির করি
৩)কাজটা করার নিয়াত করি
৪)এরপর কাজটি করি
এই প্রসেস থেকে হেল্প পেতে পারি কিভাবে?
১) চিন্তা আসলে - যাচাই করব চিন্তাটাকে
২) স্থির করে ফেললে- মনস্থির হতে চাচ্ছে বুঝলে তখনই থেমে যাব।
৩) নিয়াত করে ফেললে- তবু কাজটি করব না।আল্লাহ এর বিনিময়ে উত্তম বিনিময় দিবেন এই আশায়।
৪) এরপরও কাজটি করে ফেললে- ইস্তিগফার।সাথে ২ রাকাআাত সলাত।
পাপটা করেই ফেললাম। ম্যানেজমেন্ট শিখে কি হবে তাহলে?আগের মর্যাদা পাওয়ার রাস্তাটা আমার এখনও আছে।সফলতার পথ খোলা।ম্যানেজমেন্ট শিখে লাভ আছে।আমাদের পিতার ঘটনাটি নিশ্চয়ই জানা আছে। আদম (আঃ) আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করার পর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা তাকে শাস্তিস্বরুপ জান্নাত থেকে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিলেন।এতটা দূরত্ব আল্লাহর সাথে আপনার আমার ত হয়নি।পৃথিবীতে পাঠানোর পরও আল্লাহ তাআলা কি আদম (আঃ) কে আবার জান্নাতে আসার পথটা বলে দেননি? তাহলে কঠিন কেন ভাবছেন?আদম (আঃ) পাপ করেছিলেন ইচ্ছা থেকে।আর ইবলীশ পাপ করেছিল অহংকার থেকে।ইচ্ছা থেকে পাপ করা ব্যক্তির ফিরে আসার সম্ভাবনা বেশী থাকে।তাহলে বোঝা গেল অহংকার নামক বদগুণটাকে একদমই পাত্তা দেয়া যাবে না।অহংকার আমাদের শত্রু।
নাফস ছাড়া আর কি কি শত্রু আমাদের আছে?
ভেতরের শত্রু-
১)অহংকার
২) খামখেয়ালীপূর্ণ ইচ্ছা
বাইরের শত্রু-
১)শাইত্বন
২) দুনিয়া নিজে
এই শত্রুগুলো থেকে নিরাপদ থাকব কিভাবে?
পরিবেশ নিরাপদ রাখব দুনিয়াকে কম ভালোবেসে।দুনিয়া আমরা প্রয়োজনে ব্যবহার করব,কিন্ত ভালোবাসব না। শাইত্বন থেকে নিরাপদ থাকতে ওযুসহ থাকব,সকাল বিকালের মাসনুন দুয়াগুলো আমল করব।ঘরটাকে যেমন নিরাপদ রাখি তেমন।আমার ঈমানকে নিরাপদ রাখব নিয়মিত কুরআন নিয়ে তাদাব্বুর,যাবতীয় নেক কাজের মাধ্যমে।ঈমান আমার হীরার টুকরা।চুরি হতে দেয়া যাবে না,হারানোও যাবে না।
যুদ্ধ করতে করতে কি জীবনের সকল আনন্দ হারিয়ে ফেললাম?দীনে ফিরে অনেকের দীনটাকে বড্ড নিরানন্দ মনে হয়।কিন্ত বাস্তবে আমরা সৃজনশীল কাজ করার মাধ্যমে দীনের মধ্যেও আনন্দ পেতে পারি।নতুন কোন বই পড়তে পারি,নতুন বন্ধু বানাতে পারি,ভাল কোনো প্রজেক্ট চালু করতে পারি।ব্যায়াম করতে পারি, নতুন নতুন রান্না শিখতে পারি। দীনি বোনদের নিয়ে একটি প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কারের ব্যবস্থা করতে পারি।আমাদের চাহিদা কমালে আমরা আনন্দ পাব সহজে।
এক বালক একজন মানুষের কাছে বলেছিল,"আমি আনন্দ চাই।তিনি বলেছিলেন,"আমি" কেটে দাও।আমিটা তোমার অহংকার।"চাই" কেটে দাও,এটা তোমার চাহিদা।অহংকার আর চাহিদা বাদ দিলে বাকি থাকে আনন্দ।
দুনিয়াতে চূড়ান্ত আনন্দ আমরা পাব না।আমাদের চিরসুখের জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা জান্নাতের ব্যবস্থা রেখেছেন।নাফসুল মুতমাইন্নার অধিকারীরা মৃত্যুর সময় ফেরেশতাদের মুখে শুনতে থাকবে,
"হে প্রশান্ত আত্মা!
ফিরে এসো তোমার রবের প্রতি সন্তষ্টচিত্ত ও সন্তোষভাজন হয়ে।অতঃপর আমার বান্দাদের মধ্যে শামিল হয়ে যাও।আর প্রবেশ করো আমার জান্নাতে।(সুরা আল ফাজরঃ২৭-৩০)"
এই বাক্যগুলো যারা শুনতে পাবে তারা কতই না সফল।নাফসুল মুতমাইন্নাকে তাই সবসময় এক্টিভ রাখতে হবে।ঠিক ইউসুফ আঃ এর মত।জুলাইখা একের পর এক দরজা বন্ধ করে,পরিপূর্ণ রুপে সেজে যখন মোহনীয় ভঙ্গিতে তাঁকে ডেকে বলেছিল,"ইউসূফ!আ
মার কাছে এসো।" এত কঠিন পরীক্ষার মুহুর্তে কেমন ছিল তাঁর প্রতিক্রিয়া? তিনি কি করেছিলেন? আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার কাছে আশ্রয় চাইলেন।আর সাথে সাথেই দরজা খুলে বের হতে দৌড় দিলেন।তিনি কিন্ত আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়ে বসে থাকেননি।দৌড় দিয়েছেন।আমাদেরও এমন পাপ থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে,প্রয়োজনে দৌড় দিতে হবে।এরপর ইউসুফ আঃ এর সামনে আরো পরীক্ষা আসলে তিনি কি করলেন? ফিতনা থেকে বাঁচতে জেলখানা চেয়ে নিলেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার কাছে।আমরা নাফসুল আম্মামার কথা না শুনে,নাফসুল আম্মারাকে জেলবন্দী করতে পারব ত?
নাফসুল আম্মারাকে জেলবন্দী করে,নাফসুল লাওয়ামার কথা শুনে আমরা নাফসুল মুতমাইন্নাকে ক্রমে এক্টিভ করব।আমরা একটা চেকলিস্ট মেইনটেইন করতে পারি।আমাদের দিনের কাজগুলোর টু ডু লিস্ট সকালেই করে ফেলি।কাজগুলোর ডানে আরো দুটি ছক করি।কোন নাফস এক্টিভ হচ্ছে লিখি একটা ছকে।আরো ডানের ছকে আমার এ্যাকশন প্ল্যান করি। এক একটা পাপ হওয়ার পর ২ রাকাত সলাত,কিছু সাদাকা,কয়েকটা আয়াত মুখস্থ করি কুরআন থেকে।এই কাজগুলো ক্রমেই বাড়িয়ে দিয়ে পাপ করাটাকে কঠিন করে ফেলি।নিজের নাফসকে বুঝে চেকলিস্টটা করি।
এই প্রসেসগুলোম করলে নাফসকে কি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব?নাফসকে আসলে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না।এর নিয়ন্ত্রণ আল্লাহ তাআলার কাছে।আমরা ম্যানেজ করতে পারব আল্লাহ চাইলে।নিয়ন্ত্রণকারীর কাছে তাই দুয়া জারি রাখব।
ﻳَﺎ ﻣُﻘَﻠِّﺐَ ﺍﻟْﻘُﻠُﻮﺏِ ﺛَﺒِّﺖْ ﻗَﻠْﺒِﻰ ﻋَﻠَﻰ ﺩِﻳﻨِﻚَ
অর্থ- হে অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারী! আমার অন্তরকে তোমার দ্বীনের উপর সুদৃঢ় করে
সংক্ষরণ
আমাদের ইচ্ছা,আমাদের হুকুমকারী সত্তা,আমাদের চাহিদা-আমাদের নাফস।
নাফস কি বুঝতে হলে এক ছাত্র আর তার শিক্ষকের ঘটনাটি জেনে আসি।ছাত্রটি তার শিক্ষককে জিজ্ঞেস করেছিল,"নাফসের তাড়না যদি শুধুমাত্র শাইত্বনের দোষ হয়,তাহলে রমাদানে যখন শাইত্বন শিকলবন্দী থাকে,তখন মানুষ পাপ করে কেন?"
শিক্ষক এই প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন, কফিতে খুব জোরে চামচ দিয়ে নাড়ার পর,চামচ উঠিয়ে নিলেও কফি নিজেই ঘুরতে থাকে।আমাদের নাফসের বিষয়টি এমনই।আমাদের বদ আমল,গুনাহ এত বেশী হয়ে যায় যে,রমাদানেও এর কুপ্রভাব রয়ে যায়।
তাহলে নাফসের কুপ্রভাব থেকে বাঁচতে করণীয়? যুদ্ধ।নয়ত জীবনের সফলতা থেকে সে বহু দূরে নিয়ে যাবে।নাফসটাকে একটু ম্যানেজ করতে হবে।বড্ড বেয়ারা।
নাফস তিন প্রকার।
১)নাফসুল আম্মারা (নিম্ন পর্যায়ের) - যে নাফস খারাপ কাজের হুকুম দেয়।রাগ,হিংসা,গীবতসহ যাবতীয় পাপের পেছনে এই নাফসের তাড়না রয়েছে।
২) নাফসুল লাওয়ামা (মধ্যম পর্যায়ের) - নিজেকে দোষ দেয় এই নাফস।সে ভাবায়,"তুমি এই কাজটা করতে পারলে?তুমি কেন তার সাথে খারাপ আচরণ করলে?"
৩)নাফসুল মুতমাইন্না(উচ্চ পর্যায়ের) - শান্তিপূর্ণ নাফস।বারবার রবের কাছে ফিরে আসে।ঈমান,আমল,ভাল নিয়াতের মাধ্যমে শক্তিশালী করা যায় এই নাফস।
যে নাফসের কথা আমরা বেশী শুনব সেই নাফস বেশী শক্তিশালী হবে।নাফসুল আম্মারার কথা তাহলে শোনাই যাবে না।কিন্ত,একবারেই ত আমরা সেই অবস্থানে যেতে পারব না।তাহলে নাফসকে ট্রেনিং দিব কিভাবে?
- ফেসবুকে ঢোকার জন্য মন খুব আনচান করলেও ঢুকব না ।
- পছন্দের খাবার সামনে আসলেও,খুব আগ্রহ থাকলেও খাব না ।
- যখন যা করতে মন চাইবে,সেটা ভাল কাজ হলেও তখনই করব না।
নাফসুল আম্মারা থেকে বাঁচতে কী করব?
- কম খাব।খাওয়ার সাথে নাফসের সম্পর্ক আছে।সুন্নাহ মোতাবেক খাব ।
- অতিরিক্ত ঘুমাব না।কম ঘুমাব ।
- দুনিয়াদার মানুষের মজলিশে বেশী সময় থাকব না।
- আখিরাতমুখী মানুষের জীবনী পড়ব।
নাফসুল লাওয়ামা এক্টিভ হলে কি করব?
- তার কথা শুনব।
- তাকে স্বাগত জানাব।কারণ আমার হৃদয় এখনও জীবিত।
নাফসুল মুতমাইন্না এক্টিভ হলে কি করব?
- আমলগুলো জারি রাখব।
- আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করব।
আমাদের গুনাহ করার প্রসেসটা কি রকম?
১) মাথায় পাপের চিন্তা আসে
২)চিন্তাটাকে স্থির করি
৩)কাজটা করার নিয়াত করি
৪)এরপর কাজটি করি
এই প্রসেস থেকে হেল্প পেতে পারি কিভাবে?
১) চিন্তা আসলে - যাচাই করব চিন্তাটাকে
২) স্থির করে ফেললে- মনস্থির হতে চাচ্ছে বুঝলে তখনই থেমে যাব।
৩) নিয়াত করে ফেললে- তবু কাজটি করব না।আল্লাহ এর বিনিময়ে উত্তম বিনিময় দিবেন এই আশায়।
৪) এরপরও কাজটি করে ফেললে- ইস্তিগফার।সাথে ২ রাকাআাত সলাত।
পাপটা করেই ফেললাম। ম্যানেজমেন্ট শিখে কি হবে তাহলে?আগের মর্যাদা পাওয়ার রাস্তাটা আমার এখনও আছে।সফলতার পথ খোলা।ম্যানেজমেন্ট শিখে লাভ আছে।আমাদের পিতার ঘটনাটি নিশ্চয়ই জানা আছে। আদম (আঃ) আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করার পর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা তাকে শাস্তিস্বরুপ জান্নাত থেকে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিলেন।এতটা দূরত্ব আল্লাহর সাথে আপনার আমার ত হয়নি।পৃথিবীতে পাঠানোর পরও আল্লাহ তাআলা কি আদম (আঃ) কে আবার জান্নাতে আসার পথটা বলে দেননি? তাহলে কঠিন কেন ভাবছেন?আদম (আঃ) পাপ করেছিলেন ইচ্ছা থেকে।আর ইবলীশ পাপ করেছিল অহংকার থেকে।ইচ্ছা থেকে পাপ করা ব্যক্তির ফিরে আসার সম্ভাবনা বেশী থাকে।তাহলে বোঝা গেল অহংকার নামক বদগুণটাকে একদমই পাত্তা দেয়া যাবে না।অহংকার আমাদের শত্রু।
নাফস ছাড়া আর কি কি শত্রু আমাদের আছে?
ভেতরের শত্রু-
১)অহংকার
২) খামখেয়ালীপূর্ণ ইচ্ছা
বাইরের শত্রু-
১)শাইত্বন
২) দুনিয়া নিজে
এই শত্রুগুলো থেকে নিরাপদ থাকব কিভাবে?
পরিবেশ নিরাপদ রাখব দুনিয়াকে কম ভালোবেসে।দুনিয়া আমরা প্রয়োজনে ব্যবহার করব,কিন্ত ভালোবাসব না। শাইত্বন থেকে নিরাপদ থাকতে ওযুসহ থাকব,সকাল বিকালের মাসনুন দুয়াগুলো আমল করব।ঘরটাকে যেমন নিরাপদ রাখি তেমন।আমার ঈমানকে নিরাপদ রাখব নিয়মিত কুরআন নিয়ে তাদাব্বুর,যাবতীয় নেক কাজের মাধ্যমে।ঈমান আমার হীরার টুকরা।চুরি হতে দেয়া যাবে না,হারানোও যাবে না।
যুদ্ধ করতে করতে কি জীবনের সকল আনন্দ হারিয়ে ফেললাম?দীনে ফিরে অনেকের দীনটাকে বড্ড নিরানন্দ মনে হয়।কিন্ত বাস্তবে আমরা সৃজনশীল কাজ করার মাধ্যমে দীনের মধ্যেও আনন্দ পেতে পারি।নতুন কোন বই পড়তে পারি,নতুন বন্ধু বানাতে পারি,ভাল কোনো প্রজেক্ট চালু করতে পারি।ব্যায়াম করতে পারি, নতুন নতুন রান্না শিখতে পারি। দীনি বোনদের নিয়ে একটি প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কারের ব্যবস্থা করতে পারি।আমাদের চাহিদা কমালে আমরা আনন্দ পাব সহজে।
এক বালক একজন মানুষের কাছে বলেছিল,"আমি আনন্দ চাই।তিনি বলেছিলেন,"আমি" কেটে দাও।আমিটা তোমার অহংকার।"চাই" কেটে দাও,এটা তোমার চাহিদা।অহংকার আর চাহিদা বাদ দিলে বাকি থাকে আনন্দ।
দুনিয়াতে চূড়ান্ত আনন্দ আমরা পাব না।আমাদের চিরসুখের জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা জান্নাতের ব্যবস্থা রেখেছেন।নাফসুল মুতমাইন্নার অধিকারীরা মৃত্যুর সময় ফেরেশতাদের মুখে শুনতে থাকবে,
"হে প্রশান্ত আত্মা!
ফিরে এসো তোমার রবের প্রতি সন্তষ্টচিত্ত ও সন্তোষভাজন হয়ে।অতঃপর আমার বান্দাদের মধ্যে শামিল হয়ে যাও।আর প্রবেশ করো আমার জান্নাতে।(সুরা আল ফাজরঃ২৭-৩০)"
এই বাক্যগুলো যারা শুনতে পাবে তারা কতই না সফল।নাফসুল মুতমাইন্নাকে তাই সবসময় এক্টিভ রাখতে হবে।ঠিক ইউসুফ আঃ এর মত।জুলাইখা একের পর এক দরজা বন্ধ করে,পরিপূর্ণ রুপে সেজে যখন মোহনীয় ভঙ্গিতে তাঁকে ডেকে বলেছিল,"ইউসূফ!আ
মার কাছে এসো।" এত কঠিন পরীক্ষার মুহুর্তে কেমন ছিল তাঁর প্রতিক্রিয়া? তিনি কি করেছিলেন? আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার কাছে আশ্রয় চাইলেন।আর সাথে সাথেই দরজা খুলে বের হতে দৌড় দিলেন।তিনি কিন্ত আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়ে বসে থাকেননি।দৌড় দিয়েছেন।আমাদেরও এমন পাপ থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে,প্রয়োজনে দৌড় দিতে হবে।এরপর ইউসুফ আঃ এর সামনে আরো পরীক্ষা আসলে তিনি কি করলেন? ফিতনা থেকে বাঁচতে জেলখানা চেয়ে নিলেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার কাছে।আমরা নাফসুল আম্মামার কথা না শুনে,নাফসুল আম্মারাকে জেলবন্দী করতে পারব ত?
নাফসুল আম্মারাকে জেলবন্দী করে,নাফসুল লাওয়ামার কথা শুনে আমরা নাফসুল মুতমাইন্নাকে ক্রমে এক্টিভ করব।আমরা একটা চেকলিস্ট মেইনটেইন করতে পারি।আমাদের দিনের কাজগুলোর টু ডু লিস্ট সকালেই করে ফেলি।কাজগুলোর ডানে আরো দুটি ছক করি।কোন নাফস এক্টিভ হচ্ছে লিখি একটা ছকে।আরো ডানের ছকে আমার এ্যাকশন প্ল্যান করি। এক একটা পাপ হওয়ার পর ২ রাকাত সলাত,কিছু সাদাকা,কয়েকটা আয়াত মুখস্থ করি কুরআন থেকে।এই কাজগুলো ক্রমেই বাড়িয়ে দিয়ে পাপ করাটাকে কঠিন করে ফেলি।নিজের নাফসকে বুঝে চেকলিস্টটা করি।
এই প্রসেসগুলোম করলে নাফসকে কি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব?নাফসকে আসলে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না।এর নিয়ন্ত্রণ আল্লাহ তাআলার কাছে।আমরা ম্যানেজ করতে পারব আল্লাহ চাইলে।নিয়ন্ত্রণকারীর কাছে তাই দুয়া জারি রাখব।
ﻳَﺎ ﻣُﻘَﻠِّﺐَ ﺍﻟْﻘُﻠُﻮﺏِ ﺛَﺒِّﺖْ ﻗَﻠْﺒِﻰ ﻋَﻠَﻰ ﺩِﻳﻨِﻚَ
অর্থ- হে অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারী! আমার অন্তরকে তোমার দ্বীনের উপর সুদৃঢ় করে
সংক্ষরণ
Comment