Announcement

Collapse
No announcement yet.

নফসের সম্মোহন থেকে নিজেকে রক্ষা করুন

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • নফসের সম্মোহন থেকে নিজেকে রক্ষা করুন

    নফসের সম্মোহন থেকে নিজেকে রক্ষা করুন

    প্রিয় যুবক ভাই!
    মরুভূমি, মরুদ্যান, মরীচিকা। এ তিনের উত্থান-পতন জীবন নামক বেলাভূমিতে ভিড়াতে হবে। মরুভূমি পাড়ি দিয়ে তোমাকে যেতে হবে জীবনের অন্যপ্রান্তে। মরুদ্যানে ঘুরে ফিরে তোমাকে খোঁজে নিতে হবে জীবনের মূল হাকীকতকে। মরীচিকা তোমাকে যতই ঝাপটিয়ে ধরুক চিনে নিতে হবে আসল মাকসাদকে।

    বসন্তে পৃথিবীর সমস্ত উদ্যানে যত ফুল ফোটে, সব ফুলের সৌন্দর্য ও সুবাস তুমি অর্জন করতে পারবে শুধু নিজের নফসের পরিচর্যা করে। তার একজন সৎ ও নিষ্ঠা বন্ধু হয়ে ভালোর সহযোগিতা করে। দ্বীনের সাথে তার ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে ত্যাগের পথকে মসৃণ করে দিয়ে।

    মানুষের ভিতরে এমন একটি শক্তি আছে যা আমাকে তোমাকে মন্দের প্রতি প্ররোচিত করে। অশ্লীলতার নীল স্বপ্ন দেখায়। জীবনের পুষ্পকলিগুলোকে রঙিন দুনিয়ার চশমা পড়ায়। শরীয়ার ফুটন্ত স্বপ্নগুলোকে বাকি বাকি বলে জান্নাত থেকে দূরে সরায়। রবের একত্ববাদের মিছিল থেকে ছিটকে পড়ার নানা অজুহাত শিখায়।প্রিয় হাবিবের সুন্নাহকে বিভক্ত করতে একই ফ্রেমে বিভিন্ন মত আটায়।

    নফস! ঘুড়ি হয়ে আকাশে উড়তে বেশ পছন্দ করে তবে ফিরে আসতে চায় না। মরীচিকা হয়ে কাউকে ঝং ধরাতে খুব পছন্দ করে তবে সচ্ছ থাকতে দেয় না। ধুলিকণা হয়ে সূর্যালোকে দিব্যি ছড়তে আনন্দ পায় তবে ধরা দিতে চায় না। অদৃশ্য বন্ধু সেঁজে ঘাত-প্রতিঘাত করেই যায় আসল পরিচয় দিতে চায় না। এটাই তার চরিত্র তবে বদস্বভাবের।

    মানুষের আখলাক ও স্বভাবের মধ্যে যতগুলো মন্দ ঝোঁক ও প্রবণতা রয়েছে তার উৎস হলো এ নফস। নফস শয়তানের এক সহযোগী প্রকৌশলী। সফল ও নামকরা এক ডিজাইনার। বান্দাকে ফাঁদে ফেলার নিখুঁত এক কারিগর। মিথ্যা অভিনয়ে অভিনয় করার সেরা এক নাট্যকার। কন্ঠস্বর নকল করে বিপদ টেনে আনায় সর্বযুগের অভিনেতা।

    শয়তান যখন নফসের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করতে সক্ষম হয় তখন নফস অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠে। মানুষ এত দুর্বল যে, নফসের প্ররোচনা ও সম্মোহন থেকে নিজেকে সে রক্ষা করতে পারে না, বরং কোন না কোনভাবে নফসের ধোকায় সে পড়েই যায়। নফসের কুফলে সে হাত দিয়েই বসে। নফসের বাসিখাবার সে খেতেই থাকে।

    যুবক ভাই! তখন মানুষের অবস্থা কি হয় জানো? শয়তান হয় সবল মানুষ হয় দুর্বল। শয়তান হয় শক্তিশালী মানুষ হয় কট্টরপন্থী। শয়তান বলে ইশ! কতই না ভালো লাগে মানুষ বলে বাহ! কতই না চমৎকার। হালাল কাজ না বরং হারাম কাজ। হালাল খাবার না বরং হারাম খাবার। আমল করা না বরং গোনাহ করা। তখন সীমালঙ্ঘন আর সীমারেখা জীবন অভিধান থেকে মুছে যায়।

    আল্লাহর নবী ইউসুফ আলাইহি ওয়াসাল্লাম যথার্থই বলেছেন-নফসের পক্ষে আমি সাফাই দিতে চাই না, কারণ নফস তো মন্দের প্রতি প্ররোচনা দিতেই থাকে, তবে আমার প্রতিপালক যার প্রতি সদয় হন।

    পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে শুরু করে এ দিন পর্যন্ত কতো অসংখ্য-অগনিত ঘটনা ঘটেছে ইতিহাসে, তার কোন ইয়াত্তা নেই! উত্থান হয়েছে কতো সভ্যতার, ধ্বংস হয়েছে কতো হাজারো সম্প্রদায়। ঢেউয়ের উত্থান আর পতনের মতো কতো অগনন ঘটনার সাক্ষী কালের সময়! কিন্তু কুরআন তার সবটাকে আমাদের সামনে বর্ণনা করেনি। কুরআন তার সবটাকে আমাদের সামনে মেলে ধরেনি।

    যতটুকু প্রয়োজন। কতটুকু বিয়োজন। ততটুকুই তুলে ধরেছে। উপাদান সবই রেখে দিয়েছে। শিক্ষা নেয়ার খুটিনাটি আসবাবের নাম শিখিয়েছে আর বলে দিয়েছে ফিকির করো, যাঁচাই করো, গবেষণা করো, নতুন কিছু রেব হয়ে আসবে।

    এমন অনেক মহীয়ান সভ্যতা ছিলো যা আজ নফসের যাতাকলে পৃষ্ট হয়ে কালের ধুলোয় মিশে গেছে। এমন কতো তেজস্বী বীরপুরুষ বর্তমান ছিলো যখন তারা ঘোড়া নিয়ে ছুটতো তখন আকাশ-বাতাস ধুলোতে মাখামাখি হয়ে যেতো। কিন্তু পৃথিবীর কোথাও নেই তাদের নাম। ক্ষমতা আর দাপটের দাম।

    যা হয়েছে সবই ধূলোয়মাখা। যা অতিবাহিত করেছে সবই ধূলিস্যাতে লেখা। দুনিয়ার পাল্লা দিয়ে মেপেছে তারা পরকাল। তাই হয়েছে সবই তাদের অতিতকাল। তাকদিরে মুআল্লাককে মুবরাম ভেবেছে যারা উভয়জগতে ঠকেছে তারা।

    তাফসীরে ইবনে কাসীর ও তাফসীরে মাযহারীতে উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহুর রেওয়ায়েতে পাওয়া যায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে সম্বোধন করে বলেছেন- তুমি আল্লাহর নিকট নফসের ব্যাপারে এভাবে দু'আ করোঃ-
    أللهم إني أسالك نفسابك مطمىئنة تؤمن بلقائك وترضي بقضائك وتقنع بعطائك

    হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট এমন নফস কামনা করি যা কেবল তোমাতেই তুষ্ট, যা তোমার মিলনে বিশ্বাসী, যা তোমার সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট আর কেবল তোমার দানেই তৃপ্তিবোধ করে।

    যুবক ভাই! নফসের ছলনা বুঝার সাধ্য তোমার নেই। নফসের নিমন্ত্রণ তোমাকে দেখাবে আঁধারের জোনাকি আসলে সত্যিই তা হবে তোমার জন্য অনেক বোকামি। নফসের আনুগত্য তোমাকে দিবে ক্ষণিকের সুখ বঞ্চিত করবে পরকালের শত সহস্র সুযোগ। নফসের মুখে সীসা ঢেলে দিয়েছে যারা তারাই হয়েছে সর্বকালের সেরা।
    কুরআন বলছে-
    ان ربك لبالمرصاد
    নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক তোমার উপর দৃষ্টি রাখছেন।

    আয়াত থেকে বুঝতেই পারছো আল্লাহ তাআলা লোক চক্ষুর আড়াল থেকে সকল বান্দার তিল তাল কার্যকলাপ ও হাল-হাকীকত নিরীক্ষণ করছেন। গতিবিধি ও স্থিতিতার প্রতি পূর্ণমাত্রায় খেয়াল রাখছেন। অবশ্য দন্ড দানে তিনি তাড়াহুড়া করেন না৷ অবকাশ দানে বিন্দু পরিমাণও সময় নেন না। তিনি দেখতে চান-একটা সাময়িক অবস্থার প্রতি দৃষ্টি দিয়ে শেষ পরিণতি বিস্মৃত হয় কি না।

    কিন্তু না! অবুঝ, অমনোযোগী, হেয়ালিপনা বান্দা মনে করে- বিশাল এ দুনিয়ায় দেখার তো কেউ নেই, জিজ্ঞেস করার তো কেউ নেই, পাঁকড়াও করার মতোও তো কাউকে দেখছি না কাজেই নফস যা চায় তাই করে নাও নির্দ্ধিধায়-নিশ্চিন্তে। অভিশপ্ত কাজগুলো করে নাও মাখরায হাসিল করে। লানতপ্রাপ্তদের হাতে হাত রেখে শপথ নাও সবার আগে।

    যুবক ভাই! তুমি তো দেখছি খুবই মেধাবী। অদৃশ্য মেমোরিতে নফসকে নিয়ে দুষ্টামির ফন্দি তুমি সহজেই আটাতে পারো। তাহলে বুঝা গেলো নফসকে নিয়ন্ত্রণ করা তোমার মত যুবকের মুহূর্তের ব্যাপার। তুমি চাইলে নফসকে তোমার আয়ত্ত্বাধীন করে নিতে পারো। তোমার কব্জায় এনে শরঈ মানশায় চালাতে পারো।

    যুবক ভাই! নফসের প্রতিদন্ধিতায় তুমি যেন হেরে না যাও। নফসের সম্মোহন যেন তোমাকে ঘিরে স্বপ্ন না বুনে। বরং নফস যেন তোমার বাতানো পথে হাটে। তোমার দেখানো মানচিত্রে বিচরণ করে। তখন তুমিই হবে راضية مرضية এর অনুসারী।

  • #2
    -----------------

    Comment


    • #3
      মুহতারাম ভায়ের কথার মাকসাদ ক্ষুদ্র জ্ঞানে বুঝতে অক্ষম। সংশোধনের নিয়তে বুঝিয়ে বললে খুশি হবো।

      Comment


      • #4
        .........................

        Comment


        • #5
          শুকরান মুহতারাম আঁখি!

          Comment

          Working...
          X