Announcement

Collapse
No announcement yet.

বোন তোমার নারীত্বের আঁচল এত সুন্দর কেন? {৬ষ্ঠ-পর্ব}

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • বোন তোমার নারীত্বের আঁচল এত সুন্দর কেন? {৬ষ্ঠ-পর্ব}

    বোন তোমার নারীত্বের আঁচল এত সুন্দর কেন? {৬ষ্ঠ-পর্ব}

    প্রিয় বোন আমার!
    ইসলাম শান্তিকামী মানুষের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল। ইসলামের সুমহান বাণী এ ধরায় ছড়িয়ে দিতে, অন্যায় অপরাধের বিরুদ্ধে ন্যায়ের সংগ্রামে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও অনেক অবদান রেখেছেন। ইসলামের জন্য জীবন দিয়ে অমর করেছেন অসংখ্য ঘটনা। ইসলামী জ্ঞান প্রসার করে দ্বীনের ব্যাপকতা ছড়িয়েছেন অগণিত নারী।

    বোন! নারীর কতৃত্ব আর কৃতিত্বের ইতিহাস পড়লে অন্তর বিগলিত হয়ে যায়। নারী অবদানের কথা পর্যালোচনা করলে চোখ ধাঁধিয়ে বড় হয়ে যায়। হৃদয়ে বন্দরে প্রতিভার বড় বড় জাহাজ নোঙর গাড়তে প্রস্তুত হয়ে যায়। একটুখানি জায়গা পেতে মরিয়া উঠে পালতোলা নৌকার মাঝি। হাফ ছেড়ে প্রাণ বাঁচাতে জাগ্রত হয়ে উঠে তার অধিবাসী।

    তাঁকিয়ে দেখ্যো পবিত্র সীরাতে! নবূয়ত প্রাপ্তির আগে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেরা গুহায় দীর্ঘ ধ্যান-ধারণা ও ইবাদতে নিমগ্ন থাকতেন। হেরা গুহায় যাওয়ার সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খাবার প্রস্তুত করে দিতেন আম্মাজান খাদিজা রা.। খাবার শেষ হলে আম্মাজান হযরত খাদিজা রা. প্রিয় মানুষটির কাছে আবারো ছুঁটে যেতেন প্রয়োজনীয় আসবাব পত্র নিয়ে। সুখ দুঃখ ভাগ করে সান্ত্বনার থলি নিয়ে গুহা থেকে ফিরে আসতেন।

    মন ফিরে আসতে চাইতো না। আরেকটু থাকো! আরেকটু থাকো! বলে মন সায় দিতো কিন্তু কি আর করার- প্রিয় মানুষটির ইবাদতে বিঘ্নতা সৃষ্টি হবে। প্রিয় মানুষটির দেহ মন শীতল হতে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে। সাতপাঁচ ভেবে আম্মাজান খুশি মনে ফিরে আসতেন। এই আনন্দের কোন তুলনাই হয়না। এই একা অনুভবতার মাঝে একাকিত্বের মজাই আলাদা। স্বাধই ভিন্ন।

    মক্কা থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে হেঁটে গিয়ে গুহার ৮৯০ ফুট উঁচুতে উঠে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে খাবার পৌঁছে দিতেন একজন নারী! এভাবেই ইসলামের গোড়ায় অবদান রেখেছেন এমন মহীয়সী নারীরা। তাঁদের এ অবদান কতটা যে গুরুত্বপূর্ণ ছিলো তা ইতিহাস না পড়লে বুঝে আসবে না। ইতিহাসের কাঠুরিয়া না বনলে তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা শব্দের অপব্যবহার করা হবে।

    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর প্রথম ওহী নাজিল হলে এ ওহী নাজিলের দৃশ্যপট ছিলো খুবই রহস্যময়। জিবরাইল আলাইহিস সালামের দৃঢ় আলিঙ্গন ও বিশাল দায়িত্বে ভারাক্রান্ত হয়ে তিনি কাঁপতে কাঁপতে ঘরে ফিরে এসেছিলেন। আম্মাজান খাদিজা রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অভয় দিয়ে বলেছিলেন-হে আল্লাহর হাবিব! আপনি শান্ত হোন। আপনার রব আপনার সাথেই আছেন। এসব বলে তাঁর মনোবলকে চাঙা করে দিতেন।

    আরো তিনি বলতেন-না, তা কখনো হতে পারে না। আল্লাহর কসম! তিনি আপনাকে লাঞ্ছিত করবেন না। আপনি আত্মীয়তার বন্ধন সুদৃঢ়কারী, গরিব-দুঃখীদের জন্য সাহায্যকারী, অতিথিপরায়ণ ও বিপদে মানুষের সাহায্যকারী। আপনি আল্লাহর রাসূল। তাঁর প্রিয় বন্ধু। আপনার রক্ষণাবেক্ষণ তাঁরই দায়িত্বে। সুতরাং আপনি চিন্তা মুক্ত থাকুন।

    আম্মাজান হযরত খাদিজাতুল কুবরা রা. প্রথম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর নিঃসংকোচে ইমান আনেন। ইমান আনার গৌরবও অর্জন করেন অতি অল্প সময়ে। ইসলাম ও প্রিয় নাবীর জন্য তার সমস্ত সম্পত্তি দান করে দেন। ইসলামের দাওয়াত প্রদানের কারণে মুশরিকরা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে অমার্জিত আচরণ করত তখন হযরত খাদিজা রা. সে আচরণগুলোকে হালকা ও তুচ্ছভাবে তুলে ধরে নবীজী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সাহস দিতেন।

    সে কালের ধনাঢ্য খাদিজা শিয়াবে আবু তালিবে অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে সে কষ্ট হাসিমুখে বরণ করে নিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি ইসলামের জন্য অবরুদ্ধ বনু হাশিমের জন্য ছলে-বলে কৌশলে কিছু কিছু খাবার আনার ব্যবস্থা করতেন। ইসলামের জন্য এই মহীয়সী নারীর অসামান্য ত্যাগ আল্লাহর দরবারে কবুল হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!

    আল্লাহ তাঁকে সালাম জানিয়েছেন এবং তাঁর জন্য জান্নাতে মণি-মুক্তার তৈরি প্রাসাদের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ফেরেশতা জিবরাঈল আলাইহিস সালাম এসে বললেন- ওগো আল্লাহর হাবিব! এই তো খাদিজা আপনার কাছে একটা পাত্র নিয়ে আসতেছেন যাতে কিছু তরকারি, খাদ্য বা পানীয় রয়েছে। তিনি এলে তাঁর প্রতিপালকের ও আমার পক্ষ থেকে সালাম দেবেন। আর তাঁকে জান্নাতে একটি ঘরের সুসংবাদ দেবেন যা মনিমুক্তা দিয়ে তৈরি, যার ভিতরের সবকিছুই রবের আদেশে সাঁজানো। আর তাতে কোনো হৈ চৈ নেই।

    বোন! দেখলে তো আম্মাজান খাদিজার রা. তাগ্যের এই অসামান্য দৃষ্টান্ত। প্রিয় মানুষটি যেখানে কঠিন বিপদে পড়ে আছে সেখানে তাঁর ভূমিকা কতটাই না নিঁখুত। যেখানে আল্লাহর হাবিব মুশরিকদের কটুকথায় মর্মাহত সেখানে আম্মাজান কতটাই না সহনশীল। সমস্ত ব্যাকুলতা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে উদারতাকে বানিয়েছেন স্বামীকে শান্ত রাখার মূল মন্ত্র। নিজের পবিত্র সদরকে শরাহ করে দিয়ে বলেছেন-হে আল্লাহর রাসূল! আপনার পবিত্র মাথা মোবারক আমার সদরে রেখে আপনি স্বস্তিতে দাওয়াতের কাজ করুন।

    বোন! তুমি কি তোমার মায়ের মত হতে এমন গুণধর, ভাগ্যশীলা নারী হতে চাও না? যার ব্যাপারে সয়ং আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত পুরষ্কারের ঘোষণা দিয়েছেন। ফেরেশতারা সাক্ষী হয়েছেন। দুনিয়ার সর্বত্রই গুণের এ গুঞ্জন ছড়িয়ে দিয়েছেন। আগত বিগত সকল সন্তানরাই আম্মাজানের পদাঙ্ক অনুস্বরণ করেছে এবং করবে। সৃষ্টিকর্তা নারী জাতিকে সম্মানের কতটা না উঁচু সিঁড়িতে অধিষ্ঠিত করেছেন।

    সুবহানাল্লাহ! দয়াময় আল্লাহ তোমাদের খুশি করতে কত কিছুরই না প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সন্তান প্রসব করা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে শহীদি মর্যাদা দিবেন। আর ময়দানে মৃত্যু হলে শাহাদাত নামক অমিয় সুধা দান করবেন। অসুস্থ অবস্থায় তোমাদের ইবাদতের সময়সীমা বেধে দিয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে অনেক বিধানকে ছাড় দিয়েছেন। পুরষ্কারের বেলায় কিন্তু সরষে দানা পরিমাণও কম নয়। তবে তোমাদের আত্ম বিসর্জনটাও কিঞ্চিৎ নয়।

    প্রিয় বোন!
    হাদিসে বর্ণিত আম্মাজানের এ ঘটনাগুলো খুবই মর্মস্পর্শী। কোন বোন যদি তার স্বামীর সাথে সুখের সংসার গড়তে চায় সে যেন আম্মাজানের বাতানো পথ অনুস্বরণ করে। তাঁর দেখানো মতকে প্রাধান্য দেয়। তাঁর মাঝে বিদ্যমান গুণগুলোর সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলে। তাহলে কাল হাশরে তোমার সামনে সম্মানের মুকুটের বিশাল পাহাড় জমে আছে দেখবে। যা কল্পনাতীত। আশাতীত। কেউ হাজারো আমল করে এতটুকু পাবে না কিন্তু তুমি একটু অনুস্বরণে যতটুকু পাবে।

  • #2
    মুহতারাম ভাই, আপনার প্রতিটি পর্বই চমৎকার। আল্লাহ তা'আলা মুহতারাম ভাইয়ের কলমকে আরো শানিত করুন। আমীন।

    Comment


    • #3
      আলহামদুলিল্লাহ্ অনেক সুন্দর হয়েছে..আল্লাহ তায়া-লা আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করুন..সিরিজের সামনের পর্ব গুলো সহজ করে দিন,আমিন ইয়া রব্ব।

      Comment


      • #4
        প্রিয় শায়খ! আপনি আমাদেরকে কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী যেদিক নির্দেশনা দিবেন আমরা তা পালনে দৃঢ় সংকল্প করি।

        Comment


        • #5
          আল্লাহ আপনার সকল প্রচেষ্টাকে কবুল করুন। আমিন
          গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

          Comment


          • #6
            আল্লাহুম্মা আমিন! আল্লাহুম্মা আমিন! ওগো রব ভাইদের কাজগুলো তুমি সহজ করে দাও। তোমার সাহায্যকে উম্মুক্ত করে দাও। ময়দানের চরাই উৎড়াই পথকে মসৃণ করে দাও।

            Comment


            • #7
              হে আল্লাহ! তোমার বান্দার এ দুআকে কবুল করে নাও । তাঁর নেক মাকাসিদগুলোকে পূরণ করে দাও। তুমি রহমান। তুমি রহিম। তুমি জাব্বার।

              Comment


              • #8
                হে আল্লাহ! তোমার বান্দার এ দুআকে কবুল করে নাও । তাঁর নেক মাকাসিদগুলোকে পূরণ করে দাও। তুমি রহমান। তুমি রহিম। তুমি জাব্বার।

                Comment


                • #9
                  মাশাআল্লাহ! আল্লাহ তা'আলা আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করুন

                  Comment


                  • #10
                    আমিন আমিন ইয়া রাব্বাল আলামিন।

                    Comment

                    Working...
                    X