যুব সমাজ ধ্বংসের অন্যতম কারণ হলো দৃষ্টি। রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার সর্বত্র উলঙ্গ, অর্ধ উলঙ্গ ও নগ্ন ছবি দেখে যুব সমাজ তাদের চরিত্রকে জলাঞ্জলি দিচ্ছে প্রতি নিয়ত। এ ছাড়া ঘরে বসে টিভির পর্দায় বিভিন্ন ধরনের জোন উত্তেজক নাটক সিনেমা দেখে দেখে তারা ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে। তাই যুব সমাজকে ধ্বংস ও অপ মৃত্যুর হাত থেকে বাচাতে হলে, অবশ্যই এ সব খারাপ দৃশ্য ও নগ্ন নাটক সিনেমা থেকে চোখকে হেফাযত করতে হবে। চোখ মানবাত্মার অন্তরে কোনো কিছু প্রবেশ করা বা উদ্রেকের জন্য বড় ধরণের সু-রঙ্গ ও প্রবেশদ্বার।
ইমাম কুরতবী রহ. বলেন, চোখ অন্তরে কোনো কিছু প্রবেশের বড় দরজা। চোখের কারণেই মানুষের পদস্খলনটি বেশি হয়। ফলে চোখ থেকে অধিক সতর্ক হতে হবে। চক্ষুকে নিষিদ্ধ বস্তু ও ফিতনার আশংকা থাকে এমন সব বস্তুর দিক তাকানো হতে অবনত রাখতে হবে। আর চক্ষু অবনত রাখার অর্থ, একজন মুসলিম নিষিদ্ধ বস্তুর দিক তাকানো হতে বিরত থাকবে, সে শুধু বৈধ বিষয়সমূহ দেখবে। আর যদি অনিচ্ছায় কোনো নিষিদ্ধ বস্তুর দিক নজর পড়ে যায়, তবে সাথে সাথে তা ফিরিয়ে নেবে। দৃষ্টিকে দীর্ঘায়ত করবে না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে লজ্জাস্থানের হেফাজতের পূর্বে চোখের হেফাজত করার নির্দেশ দেন। কারণ, যাবতীয় দূর্ঘটনা ও বিপদের মূল হলো দৃষ্টি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় হাদিসে আমাদেরকে চক্ষু অবনত রাখতে নির্দেশ দেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে প্রমাণিত তিনি বলেন,
اضمنوا لي ستا من أنفسكم أضمن لكم الجنة: اصدقوا إذا حدثتم، وأوفوا إذا عاهدتم، وأدوا إذا ائتمنتم، واحفظوا فروجكم، وغضوا أبصاركم، وكفوا أيديكم".
“তোমরা আমার জন্য ছয়টি জিনিসের জিনিসের দায়িত্ব নিলে, আমি তোমাদের জান্নাতের দায়িত্ব নিব। যখন কথা বল, সত্য বল। যখন প্রতিশ্রুতি দেবে তা পুরো করবে, আর যখন তোমার নিকট আমানত রাখা হবে, তা রক্ষা করবে। আর তোমরা তোমাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করবে, তোমাদের চক্ষুকে অবনত করবে এবং তোমরা তোমাদের হাতকে বিরত রাখবে”।[2]
বরং অপর একটি হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চক্ষু অবনত রাখাকে রাস্তার হক হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি তার সাথীদেরকে বলেন,
" إياكم والجلوس في الطرقات، فقالوا: يا رسول الله مالنا من مجالسنا بُدٌّ نتحدث فيها. فقال: " فإذا أبيتم إلا المجلس فأعطوا الطريق حقه. قالوا: وما حق الطريق يا رسول الله؟ قال: غض البصر، وكف الأذى ، ورد السلام، والأمر بالمعروف، والنهي عن المنكر".
“তোমরা রাস্তা বা মানুষের চলাচলের পথে বসা থেকে বিরত থাক। সাহাবীরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! রাস্তায় বসা ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নাই আমরা রাস্তায় বসে কথা-বার্তা বলি-আলোচনা করি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যদি তোমাদের বসতেই হয়, তাহলে তোমরা আল্লাহর হক আদায় কর। তারা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! রাস্তার হক কি? তিনি বললেন, চক্ষু অবনত করা, কষ্ট দায়ক বস্তু পথের থেকে সরানো, সালামের উত্তর দেয়া, সৎকাজের আদেশ দেওয়া ও অসৎ কাজ হতে নিষেধ করা”।[3]
وقد وجد النبي صلى الله عليه وسلم الفضل بن عباس رضي الله عنهما ينظر إلى امرأة جاءت تستفتيه صلى الله عليه وسلم فأخذ بذقن الفضل فعدل وجهه عن النظر إليها.
একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট একজন মহিলা ফতোয়া জানতে আসলে, তার দিক ফযল ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে তাকাতে দেখলে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার থুতনী নীচে ধরে তার চেহারাকে অন্যদিক ফিরিয়ে দেন।[4]আল্লামা ইবনুল কাইয়েম রহ. বলেন, এ কাজটি হল, তাকে এ ধরনের দৃষ্টি হতে নিষেধ করা এবং কাজটি থেকে বারণ করা। যদি এ ধরনের কাজ বৈধ হত, তাহলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ফিরিয়ে না দিয়ে আপন অবস্থায় ছেড়ে দিত।
---------------------------
টীকা:
[1] সূরা নূর, আয়াত: ৩০
[2] আহমদ, হাদিস: ২২৭৫৭
[3] মুসলিম, হাদিস: ২১২১
[4] বুখারি, হাদিস: ৬২২৮
Collected
ইমাম কুরতবী রহ. বলেন, চোখ অন্তরে কোনো কিছু প্রবেশের বড় দরজা। চোখের কারণেই মানুষের পদস্খলনটি বেশি হয়। ফলে চোখ থেকে অধিক সতর্ক হতে হবে। চক্ষুকে নিষিদ্ধ বস্তু ও ফিতনার আশংকা থাকে এমন সব বস্তুর দিক তাকানো হতে অবনত রাখতে হবে। আর চক্ষু অবনত রাখার অর্থ, একজন মুসলিম নিষিদ্ধ বস্তুর দিক তাকানো হতে বিরত থাকবে, সে শুধু বৈধ বিষয়সমূহ দেখবে। আর যদি অনিচ্ছায় কোনো নিষিদ্ধ বস্তুর দিক নজর পড়ে যায়, তবে সাথে সাথে তা ফিরিয়ে নেবে। দৃষ্টিকে দীর্ঘায়ত করবে না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ قُل لِّلۡمُؤۡمِنِينَ يَغُضُّواْ مِنۡ أَبۡصَٰرِهِمۡ وَيَحۡفَظُواْ فُرُوجَهُمۡۚ ذَٰلِكَ أَزۡكَىٰ لَهُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ خَبِيرُۢ بِمَا يَصۡنَعُونَ ٣٠ ﴾ [النور : ٣٠]
“মুমিন পুরুষদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাজত করবে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয় তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত”।[1]
“মুমিন পুরুষদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাজত করবে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয় তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত”।[1]
আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে লজ্জাস্থানের হেফাজতের পূর্বে চোখের হেফাজত করার নির্দেশ দেন। কারণ, যাবতীয় দূর্ঘটনা ও বিপদের মূল হলো দৃষ্টি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় হাদিসে আমাদেরকে চক্ষু অবনত রাখতে নির্দেশ দেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে প্রমাণিত তিনি বলেন,
اضمنوا لي ستا من أنفسكم أضمن لكم الجنة: اصدقوا إذا حدثتم، وأوفوا إذا عاهدتم، وأدوا إذا ائتمنتم، واحفظوا فروجكم، وغضوا أبصاركم، وكفوا أيديكم".
“তোমরা আমার জন্য ছয়টি জিনিসের জিনিসের দায়িত্ব নিলে, আমি তোমাদের জান্নাতের দায়িত্ব নিব। যখন কথা বল, সত্য বল। যখন প্রতিশ্রুতি দেবে তা পুরো করবে, আর যখন তোমার নিকট আমানত রাখা হবে, তা রক্ষা করবে। আর তোমরা তোমাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করবে, তোমাদের চক্ষুকে অবনত করবে এবং তোমরা তোমাদের হাতকে বিরত রাখবে”।[2]
বরং অপর একটি হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চক্ষু অবনত রাখাকে রাস্তার হক হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি তার সাথীদেরকে বলেন,
" إياكم والجلوس في الطرقات، فقالوا: يا رسول الله مالنا من مجالسنا بُدٌّ نتحدث فيها. فقال: " فإذا أبيتم إلا المجلس فأعطوا الطريق حقه. قالوا: وما حق الطريق يا رسول الله؟ قال: غض البصر، وكف الأذى ، ورد السلام، والأمر بالمعروف، والنهي عن المنكر".
“তোমরা রাস্তা বা মানুষের চলাচলের পথে বসা থেকে বিরত থাক। সাহাবীরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! রাস্তায় বসা ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নাই আমরা রাস্তায় বসে কথা-বার্তা বলি-আলোচনা করি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যদি তোমাদের বসতেই হয়, তাহলে তোমরা আল্লাহর হক আদায় কর। তারা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! রাস্তার হক কি? তিনি বললেন, চক্ষু অবনত করা, কষ্ট দায়ক বস্তু পথের থেকে সরানো, সালামের উত্তর দেয়া, সৎকাজের আদেশ দেওয়া ও অসৎ কাজ হতে নিষেধ করা”।[3]
وقد وجد النبي صلى الله عليه وسلم الفضل بن عباس رضي الله عنهما ينظر إلى امرأة جاءت تستفتيه صلى الله عليه وسلم فأخذ بذقن الفضل فعدل وجهه عن النظر إليها.
একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট একজন মহিলা ফতোয়া জানতে আসলে, তার দিক ফযল ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে তাকাতে দেখলে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার থুতনী নীচে ধরে তার চেহারাকে অন্যদিক ফিরিয়ে দেন।[4]
---------------------------
টীকা:
[1] সূরা নূর, আয়াত: ৩০
[2] আহমদ, হাদিস: ২২৭৫৭
[3] মুসলিম, হাদিস: ২১২১
[4] বুখারি, হাদিস: ৬২২৮
Collected
Comment