Announcement

Collapse
No announcement yet.

দ্বীনের প্রয়োজনকে আয়োজন মনে না করা

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • দ্বীনের প্রয়োজনকে আয়োজন মনে না করা

    দ্বীনের প্রয়োজনকে আয়োজন মনে না করা

    প্রিয় যুবক ভাই!
    সব যুগেই কলমের যুদ্ধ যেমন গুরুত্বপূর্ণ ছিলো তেমনি গুরুত্বপূর্ণ ছিলো অস্ত্র যুদ্ধের। লেখকের জন্য কলমের প্রশিক্ষণ আর সৈনিকের জন্য অস্ত্রের প্রশিক্ষণ একই রকম অপরিহার্য। ক্ষেত্র ভিন্ন হলেও একটি অপরটির সম্পূরক। পথ ও মত ভিন্ন হলেও একটি অপরটির অংশ বিশেষ। দুটোই জৈবিক মস্তিষ্কে বদ্ধমূল করে নিতে হবে।[১]

    কেউ যেন তা উপড়ানোর পরিকল্পনা করতে না পারে। কারো চোখ যেন মূল শিকড়ের দিকে না উঠতে পারে। তার ভিত এতটাই মজবুত ও শক্ত প্রাচীরে আবদ্ধ করে নিতে হবে। প্রয়োজনের তাগিদে লেখালেখির অঙ্গনে হাতল আর মনন দুটোই বিলিয়ে দিবো। দ্বীনের তাগিদে জীবন আর যৌবন উভয়টাই উজাড় করে দিবো। তবুও দ্বীনের সামান্য ক্ষতি হতে দিবো না।

    মুহতারাম শাইখ খালেদ মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ প্রায় বলতেন-অস্ত্রের প্রশিক্ষণ আর কলমের আর্ট ছাড়া জীবনটাই কেমন যেন ধোঁয়াশা। মেধাকে ধারালো করতে এ দুটোর প্রশিক্ষণ ফরয। পরকালের রাজকীয় হালত কাছে পেতে হলে এ দুটোতে পারদর্শী হওয়া অত্যাবশ্যকীয়। উম্মাহর দায়ী আর্টিস্ট হতে হলে ময়দানের বিদগ্ধ গবেষক হওয়া ফারযুল আইন । যেন পাহাড়ের চূড়া আর জনবলে ঘেরা শত্রু ছাউনির বিপদে পড়তে না হয়। যেন সৈনিকের পদধ্বনি আর ঊর্ধ্বশ্বাসে ধাবমান শত্রুর ঘুর ভেঙে না দেয়।[২]

    তিরমিয, বুখারা, সমরখন্দের অধিবাসীদের যদি জিজ্ঞাসা করো-ভাই! এত সুন্দর ইলমী মারকায কি করে তোমাদের থেকে হাতছাড়া হলো? এত সুন্দর নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সবুজ পাহাড় আর হিম শীতল ঝর্ণার ভূমি কি করে শত্রুদের করতলে গেলো? বিশাল এক সোয়ালের ছোট্ট একটা জওয়াব আসবে। ভাই! সবই ছিলো কিন্তু অস্ত্রের মারকায গড়তে দেরি হয়ে গিয়েছিলো। তাই আরকি একটু মাশুল!

    যে মাশুল সাদা কালো চিনে না। দলা ফর্সা দেখে না। লম্বা খাটো মাপে না। মুমিন মুনাফিক গুণে না। ওজর মাজুর তোয়াক্কা করে না। শুষে নেয় রক্ত। ফিরিয়ে দেয় নিথর লাশ। এক এক করে পুরো পরিবারের। সময়ে অসময়ে পুরো জাতিগোষ্ঠীর। রাতবিরাতে ভয় আর কোণঠাসা। টার্গেট করে করে ধর্ষণ আর হীন লালসা। যুগ পেরিয়ে যায় শতাব্দীর দেখা মেলে। তবে যদি হুশ একটু ফিরে আসে।

    প্রিয় যুবক ভাই!
    হিন্দের ভূমি এমন নরকে পরিণত হোক তুমি কি এটা চাও? হিন্দের জমি কুকুর আর শূকর চাষ করুক এটা কি তোমার দিলের মানশা? হিন্দের ভূখণ্ড শিশুদের থোকা থোকা রক্তে রঙিন হোক এটা কি তোমার কামনা? জানি ভাই আমার! তুমি বলবে, অবশ্যই না। তাহলে কেন তুমি ইদাদকে দ্বীনের আয়োজন মনে করো? প্রয়োজন ভেবে ঝাপটিয়ে ধরো না! আবশ্যক বুঝে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নাও না! কর্তব্য মনে করে তরবারি কাঁধে তুলে ধরো না!

    প্রয়োজন ভেবে এগিয়ে আসো আসমানী আয়োজন তোমার জন্য উন্মুক্ত। ফরয মনে করে দু পাঁ বাড়াও সাহায্য তোমার জন্য দশ পাঁ এগিয়ে আসবে। তুমি রবের পছন্দের কাজে মন দাও রব তোমার পছন্দের কাজে বারাকাহ দিবেন। তুমি রবের সান্নিধ্য হাসিলের ফিকির করো রব তোমার সফলতা অর্জনের কাজ এগিয়ে দিবেন। আল্লামা ইবনুল কায়্যিম রাহিমাহুল্লাহ বলেন-তুমি যদি তোমার পছন্দের জিনিস পেতে চাও তাহলে তোমার রবের পছন্দের জিনিসের দিকে মন দাও।

    প্রিয় ভাই আমার!
    তোমাদের জন্য মনটা বড়ই ছটফট করে। তুমি যুবকের কদর দ্বীনের কাছে তুলনাহীন। তুমি যুবকের শান-মান দ্বীনের ধরায় আকাশতুল্য। তোমার পাওনা মিটানোর জন্য সারাক্ষণ সে উন্মাদ থাকে। তোমার সম্মানের ফুলঝুরি ছড়ানোর জন্য ফেরেশতাদের আহবান করে। সুতরাং তোমাদের কি মনে চায় না মাজলুমদের ডাকে একটিবার সাড়া দেই? তাদের হয়ে শত্রুর কিছুটা হলেও পাওনা মিটিয়ে দেই? এর ফলস্বরূপ তোমাদের কী পাওয়া থাকতে পারে মহান সৃষ্টিকর্তা তা জানিয়ে দিয়েছেন।

    পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-
    মুমিনদের মধ্যে যারা ওজর ছাড়া ঘরে বসে থাকে আর যারা নিজ জান মাল দ্বারা আল্লাহর রাস্তায় লড়াই করে তারা সমান নয়। আল্লাহ জান মাল দ্বারা লড়াই করা মুমিনদেরকে ঘরে বসে থাকা মুমিনদের থেকে অনেক উঁচু মর্তবা দান করেছেন। এবং আল্লাহ সকলকেই কল্যাণপ্রদ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। উপবিষ্টদের উপর ধর্মযোদ্ধাগণকে মহান প্রতিদানে গৌরবান্বিত করেছেন।[৩]

    যুবক ভাই! আজ নফসের ধোঁকায় জিহাদ ও ইদাদকে উপেক্ষা করে দুনিয়ার ছলনায় মত্ত হতে যাচ্ছি; পারবো কি সেদিন জান্নাতকে উপেক্ষা করে জাহান্নামে যেতে? সেদিন সামনে যা পাবে তার বিনিময় হলেও একটু মুক্তির প্রাণপণ চেষ্টা চালাবে। সুতরাং মৃত্যুর ঘন্টি বাজবার পূর্বেই শেষ সবকটুকু আয়ত্ত করে নাও। প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার কর্মের হিসাব দিতে হবে।

    বিশ্বাসীদের প্রাণবন্ত রুহ তো বরাবরই সচ্ছতার প্রমাণ করে- নেককারদের শরীরটুকুই কেবল দুনিয়ায় থাকে কিন্তু তাদের বাকি মনঃপ্রাণ সবটুকু জুড়েই থাকে আখিরাত। আর আখিরাত বিশ্বাসী সর্বোচ্চ মনোবলের অধিকারী হলেন আল্লাহর রাস্তার ময়দানবাসী। সর্বোচ্চ সম্মান কুড়ানোর আশাবাদী হলেন আল্লাহর রাস্তার লড়াইকারী।

    যুবক ভাই!
    তোমার প্রতি আমার আবদার! নরম দিলটাকে শক্ত করো না। তাহলে আল্লাহ রহম করবেন না। সহজ পথটাকে কঠিন করো না তাহলে আল্লাহ রিযিক বাড়াবেন না। আল্লাহ যখন চারদিকের পথ বন্ধ করে দেন তখন শুধু তাঁর দিকে ফেরার পথটাই খোলা থাকে। তিনি চান বান্দা তাঁর দিকেই ফিরে আসুক। দু চারটা আরজি পেশ করুক। চোখের লোনা পানিতে গাল ভিজে পরুক। আর তিনি তাকে ক্ষমা করে দিবেন। পরম আদুরে যত্নে নিজের কাছে টেনে নিবেন।

    যারাই উম্মাহর সংশোধনকে প্রয়োজনকে মনে করেছে তারা নিজেরাই আগে সংশোধিত হয়েছে। শুধু কি ইলমের পাতায়! না ভাই আমার! সবকিছুতেই ছিলেন সমান পারদর্শী তবে জিহাদের ময়দানে একটু বেশি দূরদর্শী। ইদাদের পাঠশালায় চোখ জুড়ানো আত্মবিশ্বাসী। যার দরুন বিশ্বের সুপার পাওয়ার আর সুপার হিট দেশগুলো রাতকানা রোগে ভোগতে হয়েছে। ফজরের পূর্ব মুহূর্তের হাদিয়াটুকু ঠিকঠাক মত বুঝে পেয়েছে।[৪]

    কারণ খোরাসানের প্রিয় মুজাহিদীন ভায়েরা ছিলেন ইদাদের পাঠশালায় প্রথম সারির ছাত্র। তাদের সামনে ইদাদের নমুনা ছিলো সাহাবায়ে কেরামের রণকৌশল। বল ভরসা ছিলো نَصْرٌ مِّنَ اللَّهِ وَفَتْحٌ قَرِيبٌ এ আয়াতের। দ্বীনের এ ফরযকে তাঁরা ফরয হিসেবে মেনে নিয়েছেন। সমাজের জীবন যৌবনকে সে অনুযায়ী গড়তে চেষ্টা চালিয়েছেন। আল্লাহও তাঁদের সফলতা দান করেছেন।

    প্রিয় যুবক ভাই!
    হিন্দের ভূমিতেও এমন কিছু পালোয়ান প্রয়োজন। এমন কিছু আত্মত্যাগীর নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ বলবৎ থাকা অতিজরুরি। যারা হবেন ইদাদের পাঠশালায় সেরাদের সেরা। যারা হবেন ইসতেশহাদীর কাঠগড়ায় কমান্ডারদের ভরসাস্থল। যারা হবেন দুনিয়া বিরাগী সালাফ মুজাহিদদের উত্তরসূরী। যেই সালাফ মুজাহিদীনরা দ্বীনের প্রত্যেকটি প্রয়োজনকে ফরয বিধানের পাল্লা দিয়ে মাপতো। হোক সেটা দস্তর খানার আমল আর সামান্য অন্যায় থেকে বারণ।

    তুমিও তাঁদের একজন হও। যেন হিন্দের সফলতা তোমার হাত ধরে আসে। তুমিও তাঁদের মত নতজানু হও। যেন তোমার আচরণ উম্মাহর বুকে খেলাফতের ভরসাবাঁধে। তুমিও হও ইদাদের পাঠশালায় চূড়ান্ত ফায়সালাকারী। রব তোমাকে বানিয়ে দেবেন ময়দানে শাহাদাত অর্জনকারী।

    তথ্যসমূহ
    ১.সিরাতুন নাবিয়্যিন লিল আতফাল
    ২.প্রিয় উস্তাদজী
    ৩.সূরা নিসা, আয়াত নং ৯৫
    ৪.ইতিহাস থেকে নেয়া

  • #2
    আলহামদুলিল্লাহ ঈমান জাগানিয়া পোস্ট আল্লাহ তায়া'লা ভাইকে উত্তম বিনিময় দান করুন, আমিন। প্রিয় ভাই! আল্লাহ আপনার উপর রহম করুন..আপনি বোনদের নিয়ে একটা সিরিজ লিখছিলেন সিরিজটা কি শেষ হয়েছে? যদি শেষ হয় ওয়ার্ড ফাইল দেয়ার অনুরোধ করছি...এই সিরিজটা প্রিন্ট করে বোনদের হাতে হাতে দেয়ার মত সিরিজ।

    Comment


    • #3
      মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর আলোচনা।

      অনেকদিন পর আমাদের আমাদের মাঝে ফিরে আসায় আপনাকে মোবারকবাদ জানাচ্ছি। আশা করি আপনি আপনার মূল্যবান লেখার ধারাবহিকতা বজায় রাখবেন।
      আল্লাহ আপনাকে কবুল করুন এবং নিরাপত্তার চাদরে আবৃত করে রাখুন। আমিন
      গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বেঁচে থাকার মধ্যেই রয়েছে প্রকৃত সফলতা ৷

      Comment


      • #4
        কলম যোদ্ধাদের প্রতি নিবেদন- আপনারা নিয়মিত ফোরামে এ্যাক্টিভ থাকবেন! আল্লাহ একমাত্র তাওফীকদাতা।

        “তুমি যদি তোমার পছন্দের জিনিস পেতে চাও, তাহলে তোমার রবের পছন্দের জিনিসের দিকে মন দাও।” -আল্লামা ইবনুল কায়্যিম রহিমাহুল্লাহ
        মা শা আল্লাহ, অতি উত্তম কথা। আল্লাহ আমাদের সকলকে আমলের তাওফীক দিন।
        “ধৈর্যশীল সতর্ক ব্যক্তিরাই লড়াইয়ের জন্য উপযুক্ত।”-শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

        Comment


        • #5
          ,,,,ভাই পরবর্তী আরো ৬ পার্ট ছিলো কিন্তু একটু ব্যস্ততা থাকায় দিতে পারছি না তাই
          আপনি কষ্ট করে ৯ পর্ব পর্যন্ত কপি করে ওয়ার্ড ফাইল করে দিতে পারেন।

          Comment


          • #6
            ভাই! এক্টিভ থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করছি ইনশাআল্লাহ কিন্তু অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন থাকায় আসতে পারছি না। সারাক্ষণ ভাইদের এ দ্বীনি মেলায় ডুবে থাকতে ভারি আনন্দ পাই। আল্লাহ কবুল করুন। আমিন!

            Comment

            Working...
            X