Announcement

Collapse
No announcement yet.

বোন তোমার নারীত্বের আঁচল এত সুন্দর কেন? ১২তম পর্ব

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • বোন তোমার নারীত্বের আঁচল এত সুন্দর কেন? ১২তম পর্ব

    বোন তোমার নারীত্বের আঁচল এত সুন্দর কেন?
    ১২তম পর্ব

    প্রিয় বোন!
    মানব জীবনে দুঃখ কষ্ট, পরিশ্রম ও সাধনার মাঝে একটু সুখের অনুভূতি, একটুখানি হাসির ঝলক, হালকা আনন্দ স্ফুর্তি, একটু সুখ ও সৌন্দর্য উপভোগ করতে হয়, এই তো বিনোদন এবং এর প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশী। আবার অন্যের বিপদ আপদে আনন্দ খোঁজে বের করে দেয়া। তার পাশে গিয়ে সান্ত্বনার দু-একটি বাণী শুনানো। শত অসুস্থতার মাঝেও তার অসুস্থতায় একটু চোখ বুলানো, এই তো আবেদন এবং এর প্রয়োজনীয়তা আরো বেশি।

    সমস্যা প্রতিকার কল্পে ভালো-মন্দের নিঁখুত যাচাই করা। অন্যের ব্যথায় সমব্যথী হওয়া এবং পরের বিপদে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করা একটি মহৎ গুণ। এক ধরনের নেকীর কাজ। মহৎ ব্যক্তির উদারতার প্রতীক। হিতৈষী মনোভাব ও সহমর্মিতার গুণ ছাড়া মানবিকতা ও মহানুভবতার বিকাশ পূর্ণতা পায় না এবং সব রকম পরাজয়ের দ্বারপ্রান্ত থেকে বেরিয়ে আসতে সাহাবী গল্পগুচ্ছের সঙ্গতা একান্ত কাম্য।

    কিন্তু ইসলাম আমাদের যতটুকু দিতে চাচ্ছে ততটুকু আমরা নিতে পারছি না। আর যতটুকু নিতে পেরেছি ততটুকু প্রয়োগ করতে পারছি না। পরিবেশ প্রতিকূলতার কাছে দায়বদ্ধ হয়ে আছি। নানা অজুহাত আর পেরেশানির কাছে বায়আত গ্রহণ করেছি। হিতের বিপরীতে কোনোকিছুই যেন আমার না। কোনো কাজই যেন মূল্যবান না। সবকিছুতেই পর পর মনোভাব চলে আসে। কিন্তু যখন তোমার সামনে কারো প্রতিচ্ছবি দাঁড় করানো থাকবে বা কোনো মহীয়সী নারীর ঘটনাগুলো জ্বলজ্বল করে তোমার চোখের সামনে ভেসে উঠবে তখন তোমার মানসিক বৈকল্য দূর হয়ে নিবেদিত প্রাণ হতে উৎসাহী হবে।

    প্রিয় বোন!
    দেখেছি আমার মায়ের কাছ থেকে। শুনেছি আমার বোনদের মুখ থেকে। বুঝতে শিখেছি পাড়াপ্রতিবেশি আর নানা পীড়াদায়ক ঘটনাগুলো থেকে। উপলব্ধি করছি সালাফ নারীদের ত্যাগ- তিতিক্ষা থেকে। নারী সে কতটা ধৈর্য্যশীল! নারী সে কতটা সহনশীল! নারী তার ত্যাগের ময়দান কতটুকু চৌরা! তার মমতার বাঁধন কতটুকু শক্ত! এর প্রমাণ দিতে গিয়ে তাদের নারীত্বের আঁচলকে অপমান করতে চাইনা। যতটুকু করতে চাই তা হলো নিজ সত্তাকে ভুলে যাওয়া বোনদের কাছে তাদের পরিচয়টুকু তুলে ধরা।

    নারী সে মনরক্ষী তবে স্বামীর পদতলে। নারী সে কর্ণধার তবে সন্তানের জীবন স্বার্থে। আবার এই নারীই সমাজের প্রধান উৎস জাতিকে সুশিক্ষায় গড়ে তুলতে। শুদ্ধ ও সুশৃঙ্খল একটি জাতি উপহার দিতে পারে একজন নারী। মমতার বাঁধনে উইপোকা ধরতে পারে কোনো পুরুষের কিন্তু নারী তার নারীত্বের আঁচলে সযত্নে বেঁধে রাখে তাকে। পরম মমতা শব্দের ব্যবহার তখনই স্বার্থক হয় যখন নারীর আগে পিছে শব্দটি বসানো হয়।

    প্রিয় বোন!
    জীবনের পরম বাস্তবতা উপলব্ধি করেও আমাদের দুনিয়াবী ফিকির-আফকারের কোথাও কোন ব্যত্যয় ঘটে না। আমরা জীবন সাজাই নিজের মনের মত করে আবার সাজানো জীবন তছনছ হলে দুঃখে কাতর হয়ে পড়ি। জীবনের ভাঙা টুকরোগুলোকে জোড়া লাগাই। সেগুলো আবার ভাঙে, আবার আমরা পসরা সাজাই। অথচ জীবনের রাঙা সূর্য প্রতিদিনই তোমার সাথে সুপ্রভাতে দেখা দিয়ে যায়। এর মাধ্যমে সে এটাই জানান দিয়ে যায়, ক্ষণিক আরামে চিরস্থায়ী সুখকে ভুলে যেওনা।

    দুনিয়ার সূর্য তোমার মত সকল বোনদের মাথার উপর দিয়েই কিন্তু অস্তমিত হয়েছে এবং হচ্ছে । তাদের মাঝে কেউ দ্বীনি সুখগুলো কুড়িয়ে পাহাড়সম সওয়াবের উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছে। আবার কেউ আলো আঁধারের রবকে পেতে গিয়ে সৃষ্টির সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। এমন কিছু মানুষের মাঝে অন্যতম একজন হলেন নবী আইয়ূব আলাইহিস সালামের স্ত্রী বিবি রহিমা।

    আল্লাহ তাআলা তাঁকে পৃথিবীর নারীসহ সব মানুষের জন্য ধৈর্য ও ত্যাগের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বানিয়েছেন। তিনি স্বামীর সেবায় এমন ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন যে, আল্লাহ তাআলা তাঁকে ইসলামের ইতিহাসে প্রসিদ্ধ করেছেন। তাঁর ত্যাগের দ্যুতি সর্বময় ছড়িয়ে দিয়েছেন। নজরকাড়া এমন বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন যা নারী জাতির জন্য বিরাট এক পাওয়া। নারীত্বের এমন এক চেয়ারে আসিন হয়েছেন সম্মানের দিক থেকে যেমন গুরুত্ব ত্যাগের দিক থেকে তেমন।

    আল্লাহ তা'আলা নবী হযরত আইয়ূব আলাইহিস সালামকে প্রচুর ধন-সম্পদের মালিক বানিয়েছেন। সন্তান-সন্ততিতে বরকত দান করেছেন। শস্যাদি ক্ষেত-খামার ও বাগ-বাগিচা সবই ছিলো। কিন্তু আল্লাহ তাআলা তাঁকে আর্থিক, দৈহিক ও সন্তানের দুঃখ-কষ্টে নিপেতিত করেন। নবীর ওপর আল্লাহর কঠিন পরীক্ষা নেমে আসে এবং তাঁর সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যায়। তাঁর সম্পূর্ণ দেহ কুষ্ঠরোগে ভরে যায়। যার দরুন পুরো শরীরই ক্ষতস্থানে পরিণত হয়।

    একপর্যায় সমাজ শ্রেণীর সকল মানুষ নবী হযরত আইয়ূব আলাইহিস সালামকে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করে। বিভিন্ন কটুকথা, কটুবাক্য উচ্চারিত হতে থাকে তাদের মুখে। কেউ ইনিয়ে-বিনিয়ে মিথ্যা অপবাদও দিতে লাগলো এই বলে যে, মানুষের মাঝে মিথ্যা ধর্মের দাওয়াত দিলে শাস্তি এমনই হয়। আইয়ূবের মনে হয় তাই হয়েছে। এখন বুঝো কি মজা! কই তোমার রবতো এখন তোমাকে ভালো করতে পারে না! এমন রোগ আমাদের জীবনও কারো দেখিনি। কত বড় অপরাধ তুমি করেছো বুঝতে পারছো?

    নবী আইয়ূব আলাইহিস সালাম সবর করেছেন। কোনো অনুযোগ অভিযোগ ছিলো না তাঁর মনে। বরং তিনি বলছেন-রব! নিশ্চয় রোগ আমাকে আক্রান্ত করেছে আর তুমি তো দয়ালুদের দয়ালু। এদিকে নিজ স্ত্রী বিবি রহিমা তাঁকে ছেড়ে যাননি। তিনি তাঁর স্বামীর খেদমতে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। সব রকম দুঃখ-কষ্ট সহ্য করতে থাকেন। কারো কথায় স্বামীকে ফেলে রেখে আসতে মন কোনোভাবেই সায় দেয়নি। খাবার নিয়ে তিনি নিজ স্বামী নবী আইয়ূব আলাইহিস সালামের কাছে চলে যেতেন। কিন্তু ঐ মানুষগুলো এটাও পছন্দ করতো না।

    এরপরও স্বামীকে ছেড়ে যাননি বরং কিছুদিন লোকালয়ে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। সমাজপতিদের আচরণ তাঁকে খুব মনঃক্ষুণ্ন করে। স্বামীর প্রতি এ অমানবিক নিষ্ঠুরতম ব্যবহার তাঁর মনে ঘৃণা জন্মালো। নবী আইয়ূব আলাইহিস সালাম স্ত্রীর মনখারাপের মুহূর্তটাকে ঠিকই ধরে ফেলেছেন। অশ্রুসজল নয়নে রবের দরবারে ফরিয়াদ করে বলেছেন-

    ওগো রব! আমি অবসন্ন ও অতিক্ষুন্ন হয়েছি, চিত্তের ব্যকুলতায় আর্ত্তনাদ করছি। হে প্রভু, আমার সমস্ত কামনা তোমার সামনে, আমার কাতরোক্তি তোমার কাছে গুপ্ত নয়। আমার হৃদয় ধুঁকছে, আমার শক্তি নিঃশেষ হয়েছে। সুতরাং আপনি তো দয়ালুদের দয়ালু।

    প্রিয় বোন!
    জীবন আদর্শ তুমি কাকে বানাবে এ নিয়ে হতাশার কিছু নেই। মুহসনাত নারীরাই তোমাদের সর্বোত্তম আদর্শ। নিঃসন্দেহে তুমি তাঁদের দেখানো রুপরেখায় চলতে পারো। তাঁদের বাতানো পথে হাঁটতে পারো। দেখ্যো- বিবি রহিমা সমাজ নিঃসঙ্গ হয়ে মর্মাহত হননি কারণ তিনি রবের অনুগত এক বান্দার সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। অপরদিকে গোটা সমাজ তাদের সৃষ্টিকর্তার সেচ্ছাচারিতায় লিপ্ত। বিবি রহিমা আধিক্যের সমাজের পঁচাগান্ধা বুঝতে পেরে একাকীত্বের সমাজকে বরণ করে নিয়েছেন।

    যেখানে তাঁর রবের সন্তুষ্টি আছে কিন্তু নেই শিরক ও অমানবিকতার কোনো ছিঁটেফোঁটা। মনের সেই ছোট্ট সমাজকে সাঁজাতে রবের আনুগত্যশীল বান্দার সেবাকেই বড় ইবাদত হিসেবে দেখেছেন। স্বামীর দুর্দিনে নিজের সুখকে বড় করে দেখেননি। হৃদয়ের ছোট্ট সেই কুঠুরিতে {{প্রতিদান}} পাবার আশায় দুনিয়াবী চাহিদাকে বিসর্জন দিয়েছেন। তাঁর এ ইখলাসিয়্যাত কতটা মধুর ছিলো তিনিই নিঃসঙ্গমনে অনুধাবন করেছেন।

    প্রিয় বোন!
    আমাদেরও অনেক মুজাহিদ ভাই এ সূরতের পরীক্ষায় নিপাতিত হন। আল্লাহ তাঁদের ক্ষমা করুন! যেমন-শাতেমে রাসূল হত্যার দায়ে কিছু যুবক ভাই তাগুতের কারাগারে বন্ধী। আল্লাহ তাঁদের মুক্তি তরান্বিত করুন। আবার কিছু যুবক ভাইদের ব্যাপারে শাহাদাতের উত্তম ফায়সালা হয়েছে, আল্লাহ তাঁদের শাহাদাতকে কবুল করুন আর তাদের বিরুদ্ধে কলম খোঁচাকারীদের ব্যাপারে আপন শাস্তির ব্যবস্থা করুন।

    বোন আমার! ভাইদের এ নাজুক সময়টাতে বিবি রহিমার আচরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ মুহুর্তটাতে তাঁদের সেবা করা নবী আইয়ূব আলাইহিস সালামকে সেবা করার মানদন্ডে দাঁড় করানো। সমাজের কটুক্তির বাক্স বিবি রহিমা হজম করেছেন নিজ স্বামীর কথা ভেবে, বোন তোমাকেও হজম করতে হবে স্বামীকে রবের কাছের বান্দা হিসেবে দেখতে পেয়ে। এ সুযোগকে যারাই কাজে লাগিয়েছেন আল্লাহ তাআলা তাঁদেরকে বিবি রহিমার ন্যায় মর্তাবা দান করেছেন।

  • #2
    আল্লাহ তা'য়ালা ভাইকে সাহায্য করুন.. ভাইয়ের এই সিরিজটা থেকে আমাদের বোনেরা উপকৃত হচ্ছেন তাদের অন্তরে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে..আল্লাহ আমাদের বোন-দের দ্বীনের জন্য কবুল করে নিন,আল্লাহুম্মা আমিন।

    Comment


    • #3
      হামদান লিল্লাহ,,শুকরান লাহু,,
      মুহতারাম ভাই! যে কজন বোনকে উদ্দেশ্য করে শুরু করেছিলাম তারা আলহামদুলিল্লাহ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছেন, দ্বীনের পথে তারা সুচারু ও গোছালো হবেন। আল্লাহ তাআলা যেন তাদের অন্তরকে দ্বীনের জন্য উর্বর করে দেন। প্রতিদান তো দেবেন আমার রব। কত বড় হতে পারে সে প্রতিদান সে আশায় আশায় আমি হাঁটছি! কারণ শুনেছি রব কোনো বান্দাকেই ফিরিয়ে দেন না বরং আশানুরূপ এমনকি তারচে দিগুণ তার গোলামকে দান করেন। যদি গোলাম ওয়াল বা'সা ওয়াদ দ'ররা অবস্থায় ইশ আশ না করে।

      Comment


      • #4
        Originally posted by নুআইম আন-নাহহাম View Post
        হামদান লিল্লাহ,,শুকরান লাহু,,
        মুহতারাম ভাই! যে কজন বোনকে উদ্দেশ্য করে শুরু করেছিলাম তারা আলহামদুলিল্লাহ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছেন, দ্বীনের পথে তারা সুচারু ও গোছালো হবেন। আল্লাহ তাআলা যেন তাদের অন্তরকে দ্বীনের জন্য উর্বর করে দেন। প্রতিদান তো দেবেন আমার রব। কত বড় হতে পারে সে প্রতিদান সে আশায় আশায় আমি হাঁটছি! কারণ শুনেছি রব কোনো বান্দাকেই ফিরিয়ে দেন না বরং আশানুরূপ এমনকি তারচে দিগুণ তার গোলামকে দান করেন। যদি গোলাম ওয়াল বা'সা ওয়াদ দ'ররা অবস্থায় ইশ আশ না করে।
        আল্লাহ তা'য়ালা কবুল করুন,আল্লাহুম্মা আমিন।

        Comment

        Working...
        X