জান্নাতের নেয়ামতসমূহের প্রতি আগ্রহ ও জাহান্নামের শাস্তির ভয়
نحمده ونصلى على رسوله الكريم اما بعد، فاعوذ بالله من السيطان الرجيم بسم الله الرحمن الرحيم - لمثل هذا فليعمل العاملون.....
জান্নাতের নেয়ামতসমূহের প্রতি আগ্রহ ও জাহান্নামের শাস্তির ভয় একজন মানুষকে প্রকৃত মানুষ হতে সাহায্য করে। এবং একজন মানুষের মানবীয় গুণাবলির ভালো-মন্দগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে ই'তিদাল তথা ভারসাম্যতা দান করে।
আর একথা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট যে, যেকোন মানুষের জীবনে সুখ-স্বাচ্ছন্দ, স্থিতিশীলতা, অগ্রগামিতা, মান-সম্মান ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের জন্য স্বীয় ব্যাক্তিত্বের উপর নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্যতা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। সুতরাং, যে ব্যাক্তি স্বীয় ব্যাক্তিত্বের উপর যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্যতা কায়েম করতে পারেনা, সে ব্যাক্তির জন্য সুখ-স্বাচ্ছন্দ, স্থিতিশীলতা, অগ্রগামিতা, মান-সম্মান গ্রহণযোগ্যতা অর্জন ও আশা করা শুধু কল্পনার ঘোরে ঘুরপাক খাওয়া ছাড়া কিছুই নয়।
তাহলে কিভাবে স্বীয় ব্যাক্তিত্বের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবো?
--------------------------------------------------------------------------------
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোর'আনে এরশাদ করেন-
فَاَمَّا مَنۡ طَغٰی ﴿ۙ۳۷﴾ وَ اٰثَرَ الۡحَیٰوۃَ الدُّنۡیَا ﴿ۙ۳۸﴾ فَاِنَّ الۡجَحِیۡمَ ہِیَ الۡمَاۡوٰی ﴿ؕ۳۹﴾
অতপর যে ব্যাক্তি সীমালঙ্ঘন করলো ও দুনিয়ার জীবনকে প্রধান্য দিলো, তার ঠিকানা হলো জাহান্নাম। (নাজি'আত: ৩৭-৩৯)
وَ اَمَّا مَنۡ خَافَ مَقَامَ رَبِّہٖ وَ نَہَی النَّفۡسَ عَنِ الۡہَوٰی﴿ۙ۴۰﴾ فَاِنَّ الۡجَنَّۃَ ہِیَ الۡمَاۡوٰی ﴿ؕ۴۱﴾
আর যে তাঁর রবের সামনে দন্ডায়মান হওয়াকে ভয় করলো এবং স্বীয় প্রবৃত্তিকে মন্দ হতে বিরত রাখলো তার ঠিকানা হলো জান্নাত। (নাজি'আত: ৪০-৪১)
সুতরাং যে ব্যক্তি জাহান্নামের শাস্তিকে ভয় করবে, সে ব্যক্তি আপনা-আপনি স্বীয় সত্ত্বাকে নিয়ন্ত্রণ করবে। সীমালঙ্ঘন পরিত্যাগ করবে। দুনিয়া বাদ দিয়ে আখেরাতকে প্রাধান্য দেবে। কেননা সে জানে, সীমালঙ্ঘন করা এ আখেরাতের উপর দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দেয়া, এগুলো জাহান্নামী হওয়ার উপকরণ। তাই সে এগুলো এড়িয়ে চলবে। এবং এড়িয়ে চলতে বাধ্য হবে। এতএব, যে ব্যক্তি জাহান্নামের শাস্তির ভয়ের দাবী করে, কিন্তু সীমালঙ্ঘন পরিত্যাগ করেনা, তার দাবী কিছুতেই সত্য হতে পারেনা।
ঠিক একই কথা সেই ব্যাক্তির ক্ষেত্রেও জান্নাত লাভের আশা করে। জান্নাত লাভের প্রকৃত আশা-আকাঙ্ক্ষা তাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই একজন ভালো, সৎ ও ভারসাম্যপূর্ণ, নিয়ন্ত্রিত ব্যক্তিত্ব দান করবে। কারণ সে জানে, সীয় রবের সামনে দন্ডায়মান হওয়ার ভয় করা, কু-প্রবৃত্তি থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা এগুলো জান্নাত লাভের উপকরণ। তাই সে এগুলো করবে ও করতে বাধ্য হবে। অতএব, যে ব্যক্তি জান্নাতের আশা-আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে, কিন্তু স্বীয় কু-প্রবৃত্তিকে দমন করেনা, তার এই আশা পোষণ নিতান্তই অবাস্তব ও বোকামী ছাড়া কিছুই নয়।
জান্নাতে লাভের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও জাহান্নামের শাস্তির ভয় যেভাবে মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে-
------------------------------------------------------------------------------------------
নিচের তুলনামূলক দৃষ্টান্তটি লক্ষ্য করুন -
আব্দুল্লাহ একজন দায়ী ইলাল্লাহ। সে জান্নাত লাভের আশা রাখে ও জাহান্নামের শাস্তির ভয় করে। সুতরাং যখন আব্দুল্লাহ-
★মানুষের সাথে চলাফেরা করবে, তখন সে কাউকে কষ্ট দেবেনা। কারো সাথে খারাপ আচরণও করবেনা।
★পন্য বিক্রির সময় তাতে ভেজাল দেবেনা।
★কথা বলার সময় মিথ্যা বলবেনা।
★মাতা-পিতা, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশির হক নষ্ট করবেনা।
★দীনী দায়িত্বে সামান্যতম অবহেলা করবেনা।
কারণ, সে ভালো করেই জানে এর সবই সীমালঙ্ঘন ও দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দান। এবং এগুলো জান্নাত থেকে ছিটকে পড়া ও জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মৌলিক কারণ। তাই আপনা-আপনি সে এর থেকে বিরত থাকবে। আর যে ব্যক্তি এসব থেকে বেঁচে থাকবে, নিঃসন্দেহে সে ব্যক্তি একজন সৎ, ভালো ও ভারসাম্যপূর্ণ নিয়ন্ত্রিত ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে পারবে।
কারা এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ? এর কোন বাস্তব দৃষ্টান্ত আছে কি???
------------------------------------------------------------------------------------
জ্বি আছে! এবং প্রচুর পরিমাণ আছে!! হজরত সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ), তাবেয়ীন, তাবে তাবেয়ীন ও সালফে সালেহিন সবাই এর উৎকৃষ্ট এবং বাস্তব দৃষ্টান্ত। তাঁরা তাঁদের জীবনকে এতোটা সুন্দর করতে পেরেছেন এই গুণটির কারণেই। ঠিক তেমনিভাবে -
★একজন মুজাহিদ জিহাদ করে এই গুণটির কারণে। কেননা, সে জানে, ফর*যে আইন হয়ে থাকা এই জিহাদ পালন করলে সে জান্নাতী হবে। আর পরিত্যাগ করলে নির্ঘাত জাহান্নামে জ্বলতে হবে।
★একজন ব্যবসায়ী সৎ হয় এই গুণটির কারণে। কারণ, সে জানে, ব্যবসায় সৎ হলে সে জান্নাতে যাবে আর অসৎ হলে জাহান্নামে পুড়তে হবে।
★একজন আলেম হক কথা বলে এই গুণটির কারণেই। কেননা, সে জানে যে, আল্লাহর কিতাবে নাজিল হওয়া কোন বিধান মানুষের ভয়ে গোপন করলে সে জাহান্নামে পুড়বে। আর আল্লাহর কিতাবে বর্ণিত সকল বিধান স্পষ্টভাবে বলে দিলে সে জান্নাতী হবে।
সুতরাং, হে আমার ভাইগণ! আমরাও কি আমাদের জীবনকে পরিপূর্ণ সৎ, ভালো, যোগ্য, গ্রহণযোগ্য, ভারসাম্যপূর্ণ, নিয়ন্ত্রিত, সুখ-স্বাচ্ছন্দময়ী ও স্থীতিশীল বানাতে চাই?? তাহলে "জান্নাত লাভের তিব্র আকাংখা ও জাহান্নামের শাস্তির ভয়" এই গুণটি অর্জন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আমাদের সবাইকে বোঝার ও আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন ইয়া রব্বাল আলামিন।
نحمده ونصلى على رسوله الكريم اما بعد، فاعوذ بالله من السيطان الرجيم بسم الله الرحمن الرحيم - لمثل هذا فليعمل العاملون.....
জান্নাতের নেয়ামতসমূহের প্রতি আগ্রহ ও জাহান্নামের শাস্তির ভয় একজন মানুষকে প্রকৃত মানুষ হতে সাহায্য করে। এবং একজন মানুষের মানবীয় গুণাবলির ভালো-মন্দগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে ই'তিদাল তথা ভারসাম্যতা দান করে।
আর একথা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট যে, যেকোন মানুষের জীবনে সুখ-স্বাচ্ছন্দ, স্থিতিশীলতা, অগ্রগামিতা, মান-সম্মান ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের জন্য স্বীয় ব্যাক্তিত্বের উপর নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্যতা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। সুতরাং, যে ব্যাক্তি স্বীয় ব্যাক্তিত্বের উপর যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্যতা কায়েম করতে পারেনা, সে ব্যাক্তির জন্য সুখ-স্বাচ্ছন্দ, স্থিতিশীলতা, অগ্রগামিতা, মান-সম্মান গ্রহণযোগ্যতা অর্জন ও আশা করা শুধু কল্পনার ঘোরে ঘুরপাক খাওয়া ছাড়া কিছুই নয়।
তাহলে কিভাবে স্বীয় ব্যাক্তিত্বের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবো?
--------------------------------------------------------------------------------
আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোর'আনে এরশাদ করেন-
فَاَمَّا مَنۡ طَغٰی ﴿ۙ۳۷﴾ وَ اٰثَرَ الۡحَیٰوۃَ الدُّنۡیَا ﴿ۙ۳۸﴾ فَاِنَّ الۡجَحِیۡمَ ہِیَ الۡمَاۡوٰی ﴿ؕ۳۹﴾
অতপর যে ব্যাক্তি সীমালঙ্ঘন করলো ও দুনিয়ার জীবনকে প্রধান্য দিলো, তার ঠিকানা হলো জাহান্নাম। (নাজি'আত: ৩৭-৩৯)
وَ اَمَّا مَنۡ خَافَ مَقَامَ رَبِّہٖ وَ نَہَی النَّفۡسَ عَنِ الۡہَوٰی﴿ۙ۴۰﴾ فَاِنَّ الۡجَنَّۃَ ہِیَ الۡمَاۡوٰی ﴿ؕ۴۱﴾
আর যে তাঁর রবের সামনে দন্ডায়মান হওয়াকে ভয় করলো এবং স্বীয় প্রবৃত্তিকে মন্দ হতে বিরত রাখলো তার ঠিকানা হলো জান্নাত। (নাজি'আত: ৪০-৪১)
সুতরাং যে ব্যক্তি জাহান্নামের শাস্তিকে ভয় করবে, সে ব্যক্তি আপনা-আপনি স্বীয় সত্ত্বাকে নিয়ন্ত্রণ করবে। সীমালঙ্ঘন পরিত্যাগ করবে। দুনিয়া বাদ দিয়ে আখেরাতকে প্রাধান্য দেবে। কেননা সে জানে, সীমালঙ্ঘন করা এ আখেরাতের উপর দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দেয়া, এগুলো জাহান্নামী হওয়ার উপকরণ। তাই সে এগুলো এড়িয়ে চলবে। এবং এড়িয়ে চলতে বাধ্য হবে। এতএব, যে ব্যক্তি জাহান্নামের শাস্তির ভয়ের দাবী করে, কিন্তু সীমালঙ্ঘন পরিত্যাগ করেনা, তার দাবী কিছুতেই সত্য হতে পারেনা।
ঠিক একই কথা সেই ব্যাক্তির ক্ষেত্রেও জান্নাত লাভের আশা করে। জান্নাত লাভের প্রকৃত আশা-আকাঙ্ক্ষা তাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই একজন ভালো, সৎ ও ভারসাম্যপূর্ণ, নিয়ন্ত্রিত ব্যক্তিত্ব দান করবে। কারণ সে জানে, সীয় রবের সামনে দন্ডায়মান হওয়ার ভয় করা, কু-প্রবৃত্তি থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা এগুলো জান্নাত লাভের উপকরণ। তাই সে এগুলো করবে ও করতে বাধ্য হবে। অতএব, যে ব্যক্তি জান্নাতের আশা-আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে, কিন্তু স্বীয় কু-প্রবৃত্তিকে দমন করেনা, তার এই আশা পোষণ নিতান্তই অবাস্তব ও বোকামী ছাড়া কিছুই নয়।
জান্নাতে লাভের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও জাহান্নামের শাস্তির ভয় যেভাবে মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে-
------------------------------------------------------------------------------------------
নিচের তুলনামূলক দৃষ্টান্তটি লক্ষ্য করুন -
আব্দুল্লাহ একজন দায়ী ইলাল্লাহ। সে জান্নাত লাভের আশা রাখে ও জাহান্নামের শাস্তির ভয় করে। সুতরাং যখন আব্দুল্লাহ-
★মানুষের সাথে চলাফেরা করবে, তখন সে কাউকে কষ্ট দেবেনা। কারো সাথে খারাপ আচরণও করবেনা।
★পন্য বিক্রির সময় তাতে ভেজাল দেবেনা।
★কথা বলার সময় মিথ্যা বলবেনা।
★মাতা-পিতা, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশির হক নষ্ট করবেনা।
★দীনী দায়িত্বে সামান্যতম অবহেলা করবেনা।
কারণ, সে ভালো করেই জানে এর সবই সীমালঙ্ঘন ও দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দান। এবং এগুলো জান্নাত থেকে ছিটকে পড়া ও জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মৌলিক কারণ। তাই আপনা-আপনি সে এর থেকে বিরত থাকবে। আর যে ব্যক্তি এসব থেকে বেঁচে থাকবে, নিঃসন্দেহে সে ব্যক্তি একজন সৎ, ভালো ও ভারসাম্যপূর্ণ নিয়ন্ত্রিত ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে পারবে।
কারা এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ? এর কোন বাস্তব দৃষ্টান্ত আছে কি???
------------------------------------------------------------------------------------
জ্বি আছে! এবং প্রচুর পরিমাণ আছে!! হজরত সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ), তাবেয়ীন, তাবে তাবেয়ীন ও সালফে সালেহিন সবাই এর উৎকৃষ্ট এবং বাস্তব দৃষ্টান্ত। তাঁরা তাঁদের জীবনকে এতোটা সুন্দর করতে পেরেছেন এই গুণটির কারণেই। ঠিক তেমনিভাবে -
★একজন মুজাহিদ জিহাদ করে এই গুণটির কারণে। কেননা, সে জানে, ফর*যে আইন হয়ে থাকা এই জিহাদ পালন করলে সে জান্নাতী হবে। আর পরিত্যাগ করলে নির্ঘাত জাহান্নামে জ্বলতে হবে।
★একজন ব্যবসায়ী সৎ হয় এই গুণটির কারণে। কারণ, সে জানে, ব্যবসায় সৎ হলে সে জান্নাতে যাবে আর অসৎ হলে জাহান্নামে পুড়তে হবে।
★একজন আলেম হক কথা বলে এই গুণটির কারণেই। কেননা, সে জানে যে, আল্লাহর কিতাবে নাজিল হওয়া কোন বিধান মানুষের ভয়ে গোপন করলে সে জাহান্নামে পুড়বে। আর আল্লাহর কিতাবে বর্ণিত সকল বিধান স্পষ্টভাবে বলে দিলে সে জান্নাতী হবে।
সুতরাং, হে আমার ভাইগণ! আমরাও কি আমাদের জীবনকে পরিপূর্ণ সৎ, ভালো, যোগ্য, গ্রহণযোগ্য, ভারসাম্যপূর্ণ, নিয়ন্ত্রিত, সুখ-স্বাচ্ছন্দময়ী ও স্থীতিশীল বানাতে চাই?? তাহলে "জান্নাত লাভের তিব্র আকাংখা ও জাহান্নামের শাস্তির ভয়" এই গুণটি অর্জন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আমাদের সবাইকে বোঝার ও আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন ইয়া রব্বাল আলামিন।
Comment