Announcement

Collapse
No announcement yet.

💯গুনাহ পপরিত্যাগ করা-

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • 💯গুনাহ পপরিত্যাগ করা-

    💯গুনাহ পরিত্যাগ করা-

    نحمده ونصلى على رسوله الكريم اما بعد، فاعوذ بالله من السيطان الرجيم بسم الله الرحمن الرحيم- قال جل شأنه: ﴿ وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَتَعَدَّ حُدُودَهُ يُدْخِلْهُ نَارًا خَالِدًا فِيهَا وَلَهُ عَذَابٌ مُهِينٌ ﴾

    দুনিয়া প্রেমিদের কাছে পছন্দ ও ভালোবাসার মানদণ্ড সম্পদ ও সৌন্দর্য এবং ক্ষমতা ও লৌকিকতা। যে যত বেশি সুন্দর হবে কিংবা লোক দেখানোর জন্য কাজ করবে, সে ততো বেশি জনপ্রিয় হবে। দুনিয়া প্রেমিদের কাছে একজন ব্যক্তির নিখুঁত হওয়ার মানদণ্ড তার বাহ্যিক রুপ-সৌন্দর্য ও মান-সম্মান।

    কিন্তু মহান রব্বুল আলামিনের কাছে প্রিয় হওয়ার ও সম্মানিত হওয়ার মানদণ্ড হলো তাক্বওয়া তথা আল্লাহ ভীতি। যে যতো বেশি আল্লাহ তাআলাকে ভয় করবে আল্লাহর কাছে সে ততো বেশি প্রিয় ও সম্মানিত। আল্লাহ তাআলা বলেন-

    یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ اِنَّا خَلَقۡنٰکُمۡ مِّنۡ ذَکَرٍ وَّ اُنۡثٰی وَ جَعَلۡنٰکُمۡ شُعُوۡبًا وَّ قَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوۡا ؕ اِنَّ اَکۡرَمَکُمۡ عِنۡدَ اللّٰہِ اَتۡقٰکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَلِیۡمٌ خَبِیۡرٌ ﴿۱٣}
    হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে। অতপর, তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পারো। তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদাবান, যে অধিক মুত্তাকী। আল্লাহ সব কিছু জানেন, সব কিছুর খবর রাখেন। (হুজুরাত:১৩)

    মহান আল্লাহর কাছে একজন ব্যক্তির নিখুঁত হওয়ার অত্যাবশকীয় সবব বা উপকরণ হলো গুনাহ পরিত্যাগ করা। যে যতো বেশি গুনাহ থেকে বেঁচে থাকবে, সে আল্লাহর কাছে ততো বেশি নিখুঁত থাকবে। আর যে যতো বেশি নিখুঁত হবে, মহান আল্লাহর কাছে সে ততো বেশি সম্মানিত ও মানী এবং দামী হবে।

    সুতরাং, কালো-সাদা, উঁচু-নিচু ও জাত-বর্ণ এসবরের কোন মান ও মুল্য আল্লাহর কাছে নেই। বরং আল্লাহর কাছে মান হলো তাক্বওয়ার ও গুনাহ পরিত্যাগের।

    গুনাহের পরকালীন ক্ষতি
    --------------------------------

    কোন মুমিনের জন্য গুনাহ পরিত্যাগ না করে কোন উপায় নেই। কেননা, গুনাহ বান্দা ও আল্লাহর মাঝে একটি খুঁত ও একটি অন্তরায়। একজন মুমিনের পরকালীন সফলতার পথে সবচেয়ে বড় বাধা বান্দার গুনাহ। মুমিনের ঈমান থাকা স্বত্তেও (কিছু কালের জন্য) জান্নাত থেকে বঞ্চিত হয়ে জাহান্নামের ভয়াবহ শাস্তি ভোগ করার একমাত্র কারণ মুমিনের পাপ তথা গুনাহ।

    গুনাহ বান্দা ও রবের সম্পর্ক নষ্ট করে দেয়। আল্লাহ থেকে বান্দাকে দূরে ঠেলে দেয়। গুনাহ মুমিনের অন্তরকে সারশূন্য করে দেয়। অন্তরে ঈমান ও ইবাদতের স্বাদ বিনষ্ট করে দেয়। এবং এক পর্যায়ে ফুলের পাপড়ির ন্যায় কোমল অন্তরকে পাথরের চেয়েও অধিক শক্ত করে দেয়। তখন তার অন্ত্র ভালো কিছু অনুধাবন করতে পারেনা। তার দুচোখ ভালো কিছু দেখতে পারেনা। তার দুকান ভালো কিছু শুনতে পারেনা। এমন অবস্থা হয় যে, সে পশুর চেয়েও নিকৃষ্টতর হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা বলেন-


    وَ لَقَدۡ ذَرَاۡنَا لِجَہَنَّمَ کَثِیۡرًا مِّنَ الۡجِنِّ وَ الۡاِنۡسِ ۫ۖ لَہُمۡ قُلُوۡبٌ لَّا یَفۡقَہُوۡنَ بِہَا ۫ وَ لَہُمۡ اَعۡیُنٌ لَّا یُبۡصِرُوۡنَ بِہَا ۫ وَ لَہُمۡ اٰذَانٌ لَّا یَسۡمَعُوۡنَ بِہَا ؕ اُولٰٓئِکَ کَالۡاَنۡعَامِ بَلۡ ہُمۡ اَضَلُّ ؕ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡغٰفِلُوۡنَ ﴿۱۷۹﴾
    আমি বহু জিন ও মানুষকে জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছি। তাদের হৃদয় রয়েছে, কিন্তু তারা তদ্বারা উপলব্ধি করেনা; তাদের চক্ষু রয়েছে, কিন্তু তারা তদ্বারা দেখেনা। তাদের কর্ণ রয়েছে, কিন্তু তদ্বারা তারা শোনেনা। তারাই হল পশুর ন্যায়, বরং তা অপেক্ষাও অধিক বিভ্রান্ত। তারাই হল গাফিল বা উদাসীন। (আরাফ:১৭৯)


    وَ مَنۡ یَّعۡصِ اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ وَ یَتَعَدَّ حُدُوۡدَہٗ یُدۡخِلۡہُ نَارًا خَالِدًا فِیۡہَا ۪ وَ لَہٗ عَذَابٌ مُّہِیۡنٌ ﴿٪۱۴﴾
    আর যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করে এবং তাঁর নির্দিষ্ট সীমাসমূহ অতিক্রম করে, তিনি তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে সর্বদা অবস্থান করবে এবং তার জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি রয়েছে। (নিসা:১৪)


    وَ اَصۡحٰبُ الشِّمَالِ ۬ۙ مَاۤ اَصۡحٰبُ الشِّمَالِ ﴿ؕ۴۱﴾ فِیۡ سَمُوۡمٍ وَّ حَمِیۡمٍ ﴿ۙ۴۲} وَّ ظِلٍّ مِّنۡ یَّحۡمُوۡمٍ ﴿ۙ۴۳﴾ لَّا بَارِدٍ وَّ لَا کَرِیۡمٍ ﴿۴۴} اِنَّہُمۡ کَانُوۡا قَبۡلَ ذٰلِکَ مُتۡرَفِیۡنَ ﴿ۚۖ۴۵﴾ وَ کَانُوۡا یُصِرُّوۡنَ عَلَی الۡحِنۡثِ الۡعَظِیۡمِ ﴿ۚ۴۶﴾

    আর বাম দিকের দল, কত হতভাগা বাম দিকের দল! তারা থাকবে অত্যুষ্ণ বায়ু ও উত্তপ্ত পানিতে, যা শীতলও নয়, আরামদায়কও নয়। কৃষ্ণ বর্ণ ধুম্রের ছায়ায়, ইতিপূর্বে তারাতো মগ্ন ছিল ভোগ বিলাসে। এবং তারা অবিরাম লিপ্ত ছিল ঘোরতর পাপ কর্মে। (ওয়াকিয়া:৪১-৪৬)

    فَاَمَّا مَنۡ طَغٰی ﴿ۙ۳۷﴾ وَ اٰثَرَ الۡحَیٰوۃَ الدُّنۡیَا ﴿ۙ۳۸﴾ فَاِنَّ الۡجَحِیۡمَ ہِیَ الۡمَاۡوٰی ﴿ؕ۳۹﴾

    অনন্তর যে সীমালংঘন করে। এবং পার্থিব জীবনকে বেছে নেয়। জাহান্নামই হবে তার অবস্থান স্থল। ( নাজি'আত:৩৭-৩৯)


    গুনাহের ইহকালীন ক্ষতি
    -------------------------------

    গুনাহ সুখ-শান্তি বিনষ্টকারী ও অশান্তির বৃদ্ধির উপকরণ। যে যতো বেশি গুনাহ করবে, সে ততো বেশি অশান্তিতে ভোগবে। তাই অন্তত নিজের শান্তির জন্য হলেও মানুষের গুনাহ পরিত্যাগ করা প্রয়োজন। গুনাহগার ব্যক্তি কখনো স্থীর হতে পারেনা। সবসময় অজানা এক অস্থিরতা তাকে গ্রাস করতে থাকে। দুঃচিন্তা ও অশান্তির ছাপ তার চোখে-মুখে ফুটে ওঠে। গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তি কখনোই কোন ভালো কাজে বিন্দুমাত্র মনোযোগ সৃষ্টি করতে পারেনা। ফলে সে তার অতিকাংখিত দুনিয়াও অর্জন করতে পারেনা। এর দৃষ্টান্ত আজ আমাদের সমাজে ভুরিভুরি। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এই খতরনাক অবস্থা থেকে উদ্ধার করুন। আমীন।

    গুনাহের কারণে দুনিয়াতেও যেকোনো মুহুর্তে আযাব চলে আসতে পারে।
    আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা এরশাদ করেন-

    فَکُلًّا اَخَذۡنَا بِذَنۡۢبِہٖ ۚ فَمِنۡہُمۡ مَّنۡ اَرۡسَلۡنَا عَلَیۡہِ حَاصِبًا ۚ وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ اَخَذَتۡہُ الصَّیۡحَۃُ ۚ وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ خَسَفۡنَا بِہِ الۡاَرۡضَ ۚ وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ اَغۡرَقۡنَا ۚ وَ مَا کَانَ اللّٰہُ لِیَظۡلِمَہُمۡ وَ لٰکِنۡ کَانُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ یَظۡلِمُوۡنَ ﴿۴۰﴾

    তাদের প্রত্যেককেই তাদের অপরাধের জন্য শাস্তি দিয়েছিলাম; তাদের কারও প্রতি প্রেরণ করেছি প্রস্তরসহ প্রচন্ড ঝটিকা, তাদের কাউকে আঘাত করেছিল মহানাদ।, কাউকে আমি প্রোথিত করেছিলাম ভূ-গর্ভে। এবং কাউকে করেছিলাম নিমজ্জিত। আল্লাহ তাদের প্রতি কোন যুলুম করেননি; তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলুম করেছিলো।


    فَلَمَّا نَسُوۡا مَا ذُکِّرُوۡا بِہٖ فَتَحۡنَا عَلَیۡہِمۡ اَبۡوَابَ کُلِّ شَیۡءٍ ؕ حَتّٰۤی اِذَا فَرِحُوۡا بِمَاۤ اُوۡتُوۡۤا اَخَذۡنٰہُمۡ بَغۡتَۃً فَاِذَا ہُمۡ مُّبۡلِسُوۡنَ ﴿۴۴﴾

    অতঃপর তাদেরকে যা কিছু উপদেশ ও নাসীহাত করা হয়েছিল তা যখন তারা ভুলে গেল তখন আমি সুখ শান্তির জন্য প্রতিটি বস্তুর দরজা উন্মুক্ত করে দিলাম। যখন তারা তাদেরকে দানকৃত বস্তু লাভ করে খুব আনন্দিত ও উল্লসিত হল তখন হঠাৎ একদিন আমি তাদেরকে পাকড়াও করলাম, আর তারা সেই অবস্থায় নিরাশ হয়ে পড়ল। (আন'আম:৪৪)


    اَفَاَمِنَ اَہۡلُ الۡقُرٰۤی اَنۡ یَّاۡتِیَہُمۡ بَاۡسُنَا بَیَاتًا وَّ ہُمۡ نَآئِمُوۡنَ ﴿ؕ۹۷﴾
    রাতে যখন তারা ঘুমিয়ে থাকে তখন আমার শাস্তি এসে তাদেরকে গ্রাস করে ফেলবে - এটা হতে কি জনপদের অধিবাসীরা নির্ভয় হয়ে পড়েছে ?

    اَوَ اَمِنَ اَہۡلُ الۡقُرٰۤی اَنۡ یَّاۡتِیَہُمۡ بَاۡسُنَا ضُحًی وَّ ہُمۡ یَلۡعَبُوۡنَ ﴿۹۸﴾
    অথবা জনপদের লোকেরা কি এই ভয় রাখেনা যে, আমার শাস্তি তাদের উপর তখন আপতিত হবে যখন তারা পূর্বাহ্নে আমোদ প্রমোদে রত থাকবে ?

    اَفَاَمِنُوۡا مَکۡرَ اللّٰہِ ۚ فَلَا یَاۡمَنُ مَکۡرَ اللّٰہِ اِلَّا الۡقَوۡمُ الۡخٰسِرُوۡنَ ﴿٪۹۹﴾

    তারা কি আল্লাহর পাকড়াও থেকে নিরাপদ হয়ে গেছে ? সর্বনাশগ্রস্থ সম্প্রদায় ছাড়া আল্লাহর পাকড়াও থেকে কেহই শংকামুক্ত হতে পারেনা। (আরাফ:৯৭-৯৯)


    পক্ষান্তরে যে বা যারা গুনাহ পরিত্যাগ করবে ও নেকআমল করবে তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখেরাতে উত্তম জীবন। আল্লাহ তাআলা বলেন-

    مَنۡ عَمِلَ صَالِحًا مِّنۡ ذَکَرٍ اَوۡ اُنۡثٰی وَ ہُوَ مُؤۡمِنٌ فَلَنُحۡیِیَنَّہٗ حَیٰوۃً طَیِّبَۃً ۚ وَ لَنَجۡزِیَنَّہُمۡ اَجۡرَہُمۡ بِاَحۡسَنِ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۹۷﴾

    মু’মিন পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকাজ করবে তাকে আমি নিশ্চয়ই আনন্দময় জীবন দান করব এবং তাদেরকে তাদের কর্মের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার প্রদান করব। (নাহল:৯৭)

    اِنۡ تَجۡتَنِبُوۡا کَبَآئِرَ مَا تُنۡہَوۡنَ عَنۡہُ نُکَفِّرۡ عَنۡکُمۡ سَیِّاٰتِکُمۡ وَ نُدۡخِلۡکُمۡ مُّدۡخَلًا کَرِیۡمًا ﴿۳۱﴾

    তোমরা যদি সেই বড় বড় পাপসমূহ হতে বিরত হও যা তোমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে, তাহলেই আমি তোমাদের ক্রটি বিচ্যুতিগুলি ক্ষমা করে দিব এবং তোমাদেরকে সম্মানজনক স্থানে প্রবিষ্ট করাব। (নিসা:৩১)


    গুনাহ হয়ে গেলে করণীয় কি?
    -------------------------------------

    তাওবা। তাওবাই হচ্ছে সর্বপ্রথম করণীয়। আল্লাহ তাআলা বলেন-

    یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا تُوۡبُوۡۤا اِلَی اللّٰہِ تَوۡبَۃً نَّصُوۡحًا ؕ عَسٰی رَبُّکُمۡ اَنۡ یُّکَفِّرَ عَنۡکُمۡ سَیِّاٰتِکُمۡ وَ یُدۡخِلَکُمۡ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ ۙ یَوۡمَ لَا یُخۡزِی اللّٰہُ النَّبِیَّ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَہٗ ۚ نُوۡرُہُمۡ یَسۡعٰی بَیۡنَ اَیۡدِیۡہِمۡ وَ بِاَیۡمَانِہِمۡ یَقُوۡلُوۡنَ رَبَّنَاۤ اَتۡمِمۡ لَنَا نُوۡرَنَا وَ اغۡفِرۡ لَنَا ۚ اِنَّکَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۸﴾

    হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমরা আল্লাহর নিকট তাওবাহ কর, বিশুদ্ধ তাওবাহ; অবশ্যই তোমাদের রব তোমাদের মন্দ কাজগুলি মোচন করে দিবেন এবং তোমাদেরকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। সেই দিন নবী এবং তাঁর বিশ্বাসী বান্দাদেরকে আল্লাহ অপদস্ত করবেননা। তাদের জ্যোতি তাদের সম্মুখে এবং দক্ষিণ পার্শ্বে ধাবিত হবে। তারা বলবেঃ হে আমাদের রাব্ব! আমাদের জ্যোতিকে পূর্ণতা দান করুন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন, আপনি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাবান। (তাহরিম:৮)

    اِنَّمَا التَّوۡبَۃُ عَلَی اللّٰہِ لِلَّذِیۡنَ یَعۡمَلُوۡنَ السُّوۡٓءَ بِجَہَالَۃٍ ثُمَّ یَتُوۡبُوۡنَ مِنۡ قَرِیۡبٍ فَاُولٰٓئِکَ یَتُوۡبُ اللّٰہُ عَلَیۡہِمۡ ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ عَلِیۡمًا حَکِیۡمًا ﴿۱۷﴾

    তাওবাহ কবূল করার দায়িত্ব যে আল্লাহর উপর রয়েছে তাতো শুধু তাদেরই জন্য যারা অজ্ঞতা বশতঃ পাপ করে থাকে, অতঃপর অবিলম্বে ক্ষমা প্রার্থনা করে; সুতরাং আল্লাহ তাদেরকেই ক্ষমা করবেন; আল্লাহ মহাজ্ঞানী, বিজ্ঞানময়। (নিসা:১৭)


    وَ اِذَا جَآءَکَ الَّذِیۡنَ یُؤۡمِنُوۡنَ بِاٰیٰتِنَا فَقُلۡ سَلٰمٌ عَلَیۡکُمۡ کَتَبَ رَبُّکُمۡ عَلٰی نَفۡسِہِ الرَّحۡمَۃَ ۙ اَنَّہٗ مَنۡ عَمِلَ مِنۡکُمۡ سُوۡٓءًۢ ابِجَہَالَۃٍ ثُمَّ تَابَ مِنۡۢ بَعۡدِہٖ وَ اَصۡلَحَ فَاَنَّہٗ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۵۴﴾

    আমার আয়াতসমূহের উপর বিশ্বাস স্থাপনকারীরা যখন তোমার নিকট আসে তখন তাদেরকে বলঃ তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক, তোমাদের রাব্ব নিজের উপর দয়া ও অনুগ্রহ করার নীতি বাধ্যতামূলক করে নিয়েছেন। তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অজ্ঞতা ও মূর্খতাবশতঃ কোন খারাপ কাজ করে, অতঃপর সে যদি তাওবাহ করে এবং নিজেকে সংশোধন করে তাহলে জানবে যে, তিনি হচ্ছেন ক্ষমাপরায়ণ, করুণাময়। (আন'আম:৫৪)

    وَ مَنۡ یَّعۡمَلۡ سُوۡٓءًا اَوۡ یَظۡلِمۡ نَفۡسَہٗ ثُمَّ یَسۡتَغۡفِرِ اللّٰہَ یَجِدِ اللّٰہَ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا ﴿۱۱۰﴾

    এবং যে কেহ দুস্কার্য করে অথবা স্বীয় জীবনের প্রতি অত্যাচার করে, অতঃপর আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থী হয়, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল, করুণাময় দেখতে পাবে। (নিসা:১১০)



    ثُمَّ اِنَّ رَبَّکَ لِلَّذِیۡنَ عَمِلُوا السُّوۡٓءَ بِجَہَالَۃٍ ثُمَّ تَابُوۡا مِنۡۢ بَعۡدِ ذٰلِکَ وَ اَصۡلَحُوۡۤا ۙ اِنَّ رَبَّکَ مِنۡۢ بَعۡدِہَا لَغَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۱۹﴾٪
    ছু ম্মা ইন্না রাব্বাকা লিল্লাযীনা ‘আমিলুছছূআ বিজাহা-লাতিন ছুম্মা তা-বূমিম বা‘দি যালিকা ওয়া আসলাহূ ইন্না রাব্বাকা মিম বা‘দিহা-লাগাফরুর রাহীম।
    যারা অজ্ঞতা বশতঃ খারাপ কাজ করে তারা পরে তাওবাহ করলে এবং নিজেদেরকে সংশোধন করলে তাদের জন্য তোমার রাব্ব অবশ্যই অতি ক্ষমাশীল। (নাহল:১১৯)

    وَ اِنِّیۡ لَغَفَّارٌ لِّمَنۡ تَابَ وَ اٰمَنَ وَ عَمِلَ صَالِحًا ثُمَّ اہۡتَدٰی ﴿۸۲﴾

    এবং আমি অবশ্যই ক্ষমাশীল তার প্রতি যে তাওবাহ’ করে, ঈমান আনে, সৎ কাজ করে ও সৎ পথে অবিচল থাকে। (ত্বহা:৮২)

    ﴿ وَتُوبُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ﴾

    অর্থাৎ “হে ঈমানদারগণ! তোমরা সকলে আল্লাহর কাছে তওবা (প্রত্যাবর্তন) কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।” ( নূর:৩১)


    নবিজী সাঃ বলেন-

    وعنْ أبي حَمْزَةَ أَنَس بن مَالِكٍ الأَنْصَارِيِّ خَادِمِ رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم ، رضي االله عنه قال :قال رسول االله صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم : للَّهُ أَفْرحُ بتْوبةِ عَبْدِهِ مِنْ أَحَدِآُمْ سقطَ عَلَى بعِيرِهِ وقد أَضلَّهُ في أَرضٍفَلاةٍ متفقٌ عليه .وفي رواية لمُسْلمٍ : » للَّهُ أَشدُّ فرحاً بِتَوْبةِ عَبْدِهِ حِين يتُوبُ إِلْيهِ مِنْ أَحَدِآُمْ آان عَلَى راحِلَتِهِ بِأَرْضٍ فلاةٍ ،فانْفلتتْ مِنْهُ وعلَيْها طعامُهُ وشرَابُهُ فأَيِسَ مِنْهَا ، فأَتَى شَجَرةً فاضْطَجَعَ في ظِلِّهَا ، وقد أَيِسَ مِنْ رَاحِلتِهِ ،فَبَيْنما هوَ آَذَلِكَ إِذْ هُوَ بِها قَائِمة عِنْدَهُ ، فَأَخذ بِخطامِهَا ثُمَّ قَالَ مِنْ شِدَّةِ الفَرحِ : اللَّهُمَّ أَنت عبْدِي وأَنا ربُّك،َأَخْطَأَ مِنْ شِدَّةِ الفرح «

    আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খাদেম, আবূ হামযাহ আনাস ইবনু মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় বান্দার তওবা করার জন্য ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা বেশী আনন্দিত হন, যে তার উট জঙ্গলে হারিয়ে ফেলার পর পুনরায় ফিরে পায়।’’(বুখারী ৬৩০৯, মুসলিম ২৭৪৭, আহমাদ ১২৮১৫)

    মুসলিমের অন্য বর্ণনায় এইভাবে এসেছে যে, ‘‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দার তওবায় যখন সে তওবা করে তোমাদের সেই ব্যক্তির চেয়ে বেশী খুশী হন, যে তার বাহনের উপর চড়ে কোনো মরুভূমি বা জনহীন প্রান্তর অতিক্রমকালে বাহনটি তার নিকট থেকে পালিয়ে যায়। আর খাদ্য ও পানীয় সব ওর পিঠের উপর থাকে। অতঃপর বহু খোঁজাখুঁজির পর নিরাশ হয়ে সে একটি গাছের ছায়ায় ঘুমিয়ে পড়ে। ইতোমধ্যে বাহনটি হঠাৎ তার সম্মুখে দাঁড়িয়ে যায়। সে তার লাগাম ধরে খুশীর চোটে বলে ওঠে, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার দাস, আর আমি তোমার প্রভু!’ সীমাহীন খুশীর কারণে সে ভুল করে ফেলে।’’


    االله عنه ، عن النَّبِيَّ صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّم قال: »إِن االله تعالى يبْسُطُ يدهُ بِاللَّيْلِ ليتُوب مُسيءُ النَّهَارِ وَيبْسُطُ يَدهُ بالنَّهَارِ ليَتُوبَ مُسِيءُ اللَّيْلِ حتَّى تَطْلُعَالشَّمْسُ مِن مغْرِبِها

    আবূ মূসা আশ‘আরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা নিজ হাত রাতে প্রসারিত করেন; যেন দিনে পাপকারী (রাতে) তওবা করে এবং দিনে তাঁর হাত প্রসারিত করেন; যেন রাতে পাপকারী (দিনে) তওবাহ করে। যে পর্যন্ত পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয় না হবে, সে পর্যন্ত এই রীতি চালু থাকবে।
    (মুসলিম ২৭৫৯, আহমাদ ১৯০৩৫, ১৯১২২)

    وعَنْ أبي عَبْدِ الرَّحْمن عَبْدِ اللَّهِ بن عُمرَ بن الخطَّاب رضي االله عنهما عن النَّبيِّ صَلّى االلهُ عَلَيْهِ وسَلَّمقال: »إِنَّ االله عزَّ وجَلَّ يقْبَلُ توْبة العبْدِ مَالَم يُغرْغرِ« رواه الترمذي وقال: حديث حسنٌ


    আবূ আব্দুর রহমান আব্দুল্লাহ ইবনু উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা বান্দার তওবাহ সে পর্যন্ত কবুল করবেন, যে পর্যন্ত তার প্রাণ কণ্ঠাগত না হয়। (তিরমিযী , ৩৫৩৭, ইবনুূু মাজাহ ৪২৫৩)


    তাহলে কিভাবে করবো এই তাওবা?
    --------------------------------------------

    ৪ টি কাজের সমন্বয়ে তাওবা সংঘটিত হয়। সহজভাবে বললে ৪টি কাজ করার নামই তাওবা। সে ৪টি কাজ হলো-
    ১। কৃত গুনাহের উপর লজ্জিত হওয়া।
    ২। তাৎক্ষণিক গুনাহটি ছেড়ে দেয়া।
    ৩। ভবিষ্যতে না করার দৃঢ় সংকল্প করা।
    ৪। বান্দার হকের সাথে সম্পৃক্ত হলে, বান্দার হক আদায় করে দেয়া অথবা ক্ষমা চেয়ে নেয়া।

    যখন আমরা এভাবে তাওবা করে নেবো। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আমাদেরকে একটি সুন্দর ও উত্তম ও সুখময় জীবন দান করবেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আমাদের সবাইকে গুনাহমুক্ত আমলী জিন্দেগী দান করুন। আমীন ইয়া রব্বাল আলামিন।

  • #2
    মাশাআল্লাহ, উপকারী পোস্ট।

    Comment


    • #3
      جزاكم الله خيرا أحسن الجزا

      Comment

      Working...
      X