আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন , ওয়াসছোলাতু ওয়াসসালামুআলা রসুলিল্লাহ আম্মাবায়াদ
হে আমার চক্ষু শিতলকারী প্রিয় ভাইয়েরা
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ
হে আমার ভাইয়েরা, আমরা এক দিকে দয়াময় রব করতিক এক কঠিন পরিক্ষায় পতিত হয়েছি আর অপরদিকে তাঁর-ই অনুগ্রহে বরকতময় ও মর্যাদাপূর্ণ আশরায়ে জিলহাজ্জ বা জিলহাজ্জ এর প্রথম ১০ দিন অতিক্রম করছি। হে ভাই এটি তাঁরই এক বিশেষ করুণা আমাদের উপর যে তিনি আমাদের এই কঠিন পরিক্ষার সময় আমাদের এই আশরায়ে জিলহাজ্জ এর মর্যাদাপূর্ণ নিয়ামতের মধ্যে রেখেছেন । চলুন এবার একটু দেখা যাক আশরায়ে জিলহাজ্জ এর শ্রেষ্ঠত্ব, মর্যাদা ও এর ফযিলত
করুনাময় মহান রব বলেন -
“কসম ভোরবেলার। কসম দশ রাতের”।( সূরা ফাজর, আয়াত: ১-২)
ইবনে কাসীর রাহিমাহুল্লাহ বলেন: এর দ্বারা উদ্দেশ্য যিলহজ মাসের দশ দিন।
দয়াময় রব আরও বলেন -
‘
যাতে তারা তাদের কল্যাণময় স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে পারে এবং তিনি তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু হতে যা রিজিক হিসেবে দান করেছেন তার উপর নির্দিষ্ট দিনসমূহে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে।’(সূরা হজ, আয়াত: ২৮)
এ আয়াতে নির্দিষ্ট দিনসমূহ বলতে কোন দিনগুলোকে বুঝানো হয়েছে সে সম্পর্কে ইমাম বুখারি রাহিমাহুল্লাহ বলেন,“ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন: ‘নির্দিষ্ট দিনসমূহ দ্বারা উদ্দেশ্য যিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন”।
আমাদের আদর্শ আমাদের নেতা সাইয়েদুল আম্বিয়া মুহাম্মদ (স) বলেন –
যিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনে নেক আমল করার মত অধিক প্রিয় আল্লাহর নিকট আর কোনো আমল নেই। তারা প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর পথে জিহাদ করাও কি তার চেয়ে প্রিয় নয়? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: না,আল্লাহর পথে জিহাদও নয়। তবে ঐ ব্যক্তির কথা আলাদা যে তার জান-মাল নিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদে বের হয়ে গেল অতঃপর তার প্রাণ ও সম্পদের কিছুই ফিরে এলো না।(বুখারি: ৯৬৯, তিরমিযি: ৭৫৭)
হে ভাই একটি লক্ষণীয় বিষয় আর তা হল উপরিউক্ত হাদিসে বহু শিক্ষার মধ্যে এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা যে, কেন সাহাবাকেরাম (রা) আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করলেন যে, আল্লাহর পথে জিহাদ করাও কি তার চেয়ে প্রিয় নয়? কেননা তাঁরা জানতেন যে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহই হল সর্বোত্তম ইবাদাত। তাই তাঁরা অবাক হয়ে গেলেন যে এমন কোন আমল যা জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহার চাইতে উত্তম !!
ওই আল্লাহকে ভালবাসা প্রকাশের সরবচ্চ মাধ্যম আর কি হতে পারে আল্লাহর রাস্তায় মারো এবং মরো ছাড়া !!
ওই এর চাইতে আর বড় শ্রেষ্ঠ ইবাদাত কি হতে পারে যে আল্লাহর জন্য মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান আর প্রিয় জীবনটাকে তছনছ করে বিলিয়ে দেয় আর নিজের দেহের তপ্ত-উত্তপ্ত রক্ত জমিনে প্রবাহিত করে !!!
ওহে রাসুলের (স) এর কথিত আশেকানেরা !!
একটু ভাবো , দয়ে করে একটু ভাবো, তিনি (স) কি করলেন? আর আজ তোমরা কি করছ?? তোমাদের বাহাদুর নবি (স) এর দেহের উত্তপ্ত রক্ত তো মাথা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত গড়িয়েছে আর আজ তোমাদের রক্ত তো বহু দূরে বরং যেকোনো ইবাদাতে একটু ঘাম ঝরলেই তোমাদের আত্মাগুলি বেরিয়ে যায়। যার ফলেই তোমাদের আজ এসি প্রতিযোগিতা । এটা অবশ্যই ঠিক যে কিছু লোক মসজিদে আগে আগে যায় আল্লাহ্*রই সন্তুষ্টি হাসিলের জন্য কিন্তু কিছু বেক্তি যারা আগে আগে যায় পাছে যদি এসির মধ্যে যায়গা পাওয়া না যায়, হায় আফসোস! আর এরাই নাকি রাসুল (স) এর প্রকৃত আশেকান!!!আল্লাহ আমাদের শুভ বুদ্ধির উদয় ঘটান ।
ইবনে ওমর রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর নিকট কোনো দিন অধিক প্রিয় নয়, আর না তাতে আমল করা, এ দিনের তুলনায়। সুতরাং, তাতে তোমরা বেশি করে তাহলীল, তাকবীর ও তাহমীদ পাঠ কর।( তাবরানী ফীল মুজামিল কাবীর)
সাঈদ ইবনে জুবায়ের রাহিমাহুল্লাহর অভ্যাস ছিল, যিনি পূর্বে বর্ণিত ইবনে আব্বাসের হাদিস বর্ণনা করেছেন: যখন যিলহজ মাসরে ১ম দশ দিন প্রবেশ করত, তখন তিনি খুব মুজাহাদা করতেন, যেন তার উপর তিনি শক্তি হারিয়ে ফেলবেন।( দারামী: ২৫৬৪ হাসান সনদে )
হে আমার ভাই, মুমিনদের সিফতই হল এ সকল মর্যাদা ও ফযিলতপূর্ণ সময় কে যথাযথ ভাবে কাজে লাগাতে সর্বউচ্চ সচেষ্ট থাকা। আমি জানি আপনারা খুব বেস্ত থাকেন। কিন্তু আমি বলি রমজান মাস যেমন আমাদের জন্য ইবাদাতের সিজন ঠিক এই ১০ টা দিনও আমাদের জন্য ইবাদাতের সিজন। তাই আপনাদের প্রতি আমার দরদ মাখা বিনীত আহ্বান, যে যার অবস্থান থেকে যতটুকু পারা যায় এই বরকতময় সময়ে বেশি বেশি ইবাদাত করে আমাদের দয়াময় রবের নৈকট্য হাসিলের জন্য সুচেষ্টা অব্যাহত রাখুন।
হে ভাই, এটা অবশ্যই সত্য যে কুফুরি মিল্লাতের অত্যাধুনিক মরনাস্ত্র ও পারমাণবিক বোমা রয়েছে। যা দ্বারা তারা জাপানের হিরশিমা আর নাগাসাকি ধ্বংস করতে পারে। আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি আপনাদের অনবিক বোমা কুফুরি মিল্লাতের পরমানবিকের চাইতে হাজার আর লক্ষ্য গুণে অধিক ভয়ংকর আর ক্ষমতাসম্পন্ন । হে ভাই আমি গাজাখরি কথা বলছি না ।যদি সত্যি আমরা আমাদের পারমাণবিকে শ্রেষ্ঠ উপাদান ইখলাস , আন্তরিকতা আর ধৈর্যের মিসেল ঘটাতে পারি তাহলে তা হয়ে উঠবে এমনই এক ভয়ংকর মরনাস্ত্র যা শুধু হিরশিমা আর নাগাসাকি নয় আমেরিকা থেকে শুরু করে রাশিয়া ফ্রান্স চীন জাপান আর সমগ্র ভারতকে তছনছ আর চূর্ণ- বিচূর্ণ করে দিবে ইনশাআল্লাহ্* । তাই হে আমার প্রাণপ্রিয় ভাইয়েরা এখনি সর্বোৎকৃষ্ট ও উপযুক্ত সময় আমাদের পারমাণবিক বিস্ফোরণের ।
হে ভাই আসলেই মুমিনদের কোনই অস্ত্র নেই। তাদের একমাত্র অস্ত্রই হল দুয়া । তৎকালীন রোম সাম্রাজ্য মুসলিমদের সাথে পেরে না উঠে মুসলিমদের মধ্যে গোয়েন্দা নিযুক্ত করলো । যার কাজ ছিল গোয়েন্দাগিরি করে জানা যে মুসলমানদের এতো শক্তিশালী অস্ত্র কি যার কারণে তারা তৎকালীন পরাশক্তি হওয়া সত্তেও মুসলমানদের সাথে পেরে উঠছে না । সে কিছুদিন পর প্রতিবেদন করলো যে “ এরা দিনে একেকজন বীর আর রাতে অসহায় দরবেশ আর ফকির ”
ডক্টর আব্দুল্লাহ আজ্জাম (র) তাঁর “আফগানিস্তানে আমার দেখা আল্লাহর নিদর্শন” কিতাবে লিখেন যে – একবার শ্রেষ্ঠ গেরিলা নেতা সিরাজুদ্দিন হক্কানি (র) মুজাহিদিনের ১ টি দলকে স্বল্প কিছু যুদ্ধ সরঞ্জাম ও রসদ দিয়ে একটি অভিযানে পাঠান । তো আলহামদুলিল্লাহ্* তারা সেই অভিযানে বিজয় লাভ করে ও গনিমাহ অর্জন করে । কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল তাদেরকে অভিযানের জন্য যে যুদ্ধ সরঞ্জাম ও রসদ দেওয়া হয়েছিল তার কিছুই খরচ হয়নি। বরং তারা যেভাবে তা নিয়ে গিয়েছে সেভাবেই তা অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে এনেছে । ( আল্লাহু আকবর )
তাই আমার ভাই বলুন , মুমিনদের এমন কোন শক্তিশালী হাতিয়ার যা দুয়ার চাইতে শ্রেষ্ঠ হতে পারে !!
হে ভাই আমরা সবাই ওয়াকিবহাল যে আমরা এক কঠিন সময় পার করছি অপরদিকে এটা মিথ্যা নয় যে আমরা আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যাবহারের এক উপযুক্ত সময় অতিক্রম করছি । হে ভাই সঠিক সময়ে সঠিক অস্ত্রের ব্যাবহার বা সমন্বয় করতে পারাই হল নেতা কমান্ডার বা মুজাহিদিনের একটি অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট । তাই আমার সকল ভাইদের প্রতি আমার হৃদয়ের গহীন থেকে , অন্তরের অন্তরস্থল থেকে , উদারচিত্তে , অত্যন্ত আন্তরিকতা আর বিনীতভাবে ,দরদ মাখা কণ্ঠে উদাত্ত আহবান জানাই -
আমার অন্তর প্রশান্তকারি প্রিয় ভাইয়েরা – বিস্ফোরণ ঘটান রাতের আঁধারে ইখলাছ আর আন্তরিকতার ভরপুর পারমাণবিকের ।।
রাহমানের দরবারে আবেদন রাখুন আমাদের বন্দী ভাইদের নিয়ে , প্রার্থনা করুন আমাদের পালিয়ে বেড়ানো ভাইদের তরে। ভুলে যাবেন না আমাদের মুকুল ভাইয়ের রক্তকে , ভুলে যাবেন না আমাদের সকল অগ্রগামী ভাইদের ত্যাগ আর কুরবানিকে । দুয়া করুন আমাদের বাহ্যিক যতটুকু ক্ষতি হয়েছে দয়াময় রব যেন তা শত আর হাজার গুনে বারিয়ে লাভ আর মুনাফা দ্বারা পুশিয়ে দেয় । দুয়া করুন আমাদের একমাত্র আভিভাবক মহান আল্লাহ যেন আমাদের দয়ে করে এমন এক ঝাঁক ত্যাগী , কুরবানি করনেওয়ালা আর আনুগত্যশীল সিংহ তৈরি করে দেয় যারা আল্লাহদ্রোহী আর আমাদের চক্ষু শীতল কারী রাসুল (স) শত্রুদেরদের জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে । দুয়া করুন আমাদের এই তাঞ্জিম কে নিয়ে আল্লাহ যেন একে হক পথের উপর দিঢ় রাখেন । আল্লাহ যেন আমাদের তামকিন দান করেন । নিজেদের জন্য দুয়া তো করবেন- ই যে আল্লাহ যেন আমাদের কে তাঁর পছন্দনীয় ও ধৈর্যশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করেন আর রিয়া ভীরুতা- কাপুরুষতা অলসতা বাচালতা থেকে হেফাজত করে দুঃসাহসিকতায় আমাদের অন্তর কে প্রসস্থ করে দেন । আর দয়া করে , দয়া করে ভুলে যাবেন না আপনাদের এই ভাইটিকে ।।
“ হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছ, হে আমাদের প্রভূ! এবং আমাদের দ্বারা ঐ বোঝা বহন করিও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন কর। আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কে সাহায্যে কর।( আল বাকারা – ২৮৬)
আর আমার শেষ কথা হল সকল তারিফ একমাত্র সেই মহান রবের জন্য যিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী । যিনি চিরস্থায়ী আর চিরঞ্জীব ।
ওয়াসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ
হে আমার চক্ষু শিতলকারী প্রিয় ভাইয়েরা
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ
হে আমার ভাইয়েরা, আমরা এক দিকে দয়াময় রব করতিক এক কঠিন পরিক্ষায় পতিত হয়েছি আর অপরদিকে তাঁর-ই অনুগ্রহে বরকতময় ও মর্যাদাপূর্ণ আশরায়ে জিলহাজ্জ বা জিলহাজ্জ এর প্রথম ১০ দিন অতিক্রম করছি। হে ভাই এটি তাঁরই এক বিশেষ করুণা আমাদের উপর যে তিনি আমাদের এই কঠিন পরিক্ষার সময় আমাদের এই আশরায়ে জিলহাজ্জ এর মর্যাদাপূর্ণ নিয়ামতের মধ্যে রেখেছেন । চলুন এবার একটু দেখা যাক আশরায়ে জিলহাজ্জ এর শ্রেষ্ঠত্ব, মর্যাদা ও এর ফযিলত
করুনাময় মহান রব বলেন -
“কসম ভোরবেলার। কসম দশ রাতের”।( সূরা ফাজর, আয়াত: ১-২)
ইবনে কাসীর রাহিমাহুল্লাহ বলেন: এর দ্বারা উদ্দেশ্য যিলহজ মাসের দশ দিন।
দয়াময় রব আরও বলেন -
‘
যাতে তারা তাদের কল্যাণময় স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে পারে এবং তিনি তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু হতে যা রিজিক হিসেবে দান করেছেন তার উপর নির্দিষ্ট দিনসমূহে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে।’(সূরা হজ, আয়াত: ২৮)
এ আয়াতে নির্দিষ্ট দিনসমূহ বলতে কোন দিনগুলোকে বুঝানো হয়েছে সে সম্পর্কে ইমাম বুখারি রাহিমাহুল্লাহ বলেন,“ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন: ‘নির্দিষ্ট দিনসমূহ দ্বারা উদ্দেশ্য যিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন”।
আমাদের আদর্শ আমাদের নেতা সাইয়েদুল আম্বিয়া মুহাম্মদ (স) বলেন –
যিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনে নেক আমল করার মত অধিক প্রিয় আল্লাহর নিকট আর কোনো আমল নেই। তারা প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর পথে জিহাদ করাও কি তার চেয়ে প্রিয় নয়? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: না,আল্লাহর পথে জিহাদও নয়। তবে ঐ ব্যক্তির কথা আলাদা যে তার জান-মাল নিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদে বের হয়ে গেল অতঃপর তার প্রাণ ও সম্পদের কিছুই ফিরে এলো না।(বুখারি: ৯৬৯, তিরমিযি: ৭৫৭)
হে ভাই একটি লক্ষণীয় বিষয় আর তা হল উপরিউক্ত হাদিসে বহু শিক্ষার মধ্যে এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা যে, কেন সাহাবাকেরাম (রা) আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করলেন যে, আল্লাহর পথে জিহাদ করাও কি তার চেয়ে প্রিয় নয়? কেননা তাঁরা জানতেন যে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহই হল সর্বোত্তম ইবাদাত। তাই তাঁরা অবাক হয়ে গেলেন যে এমন কোন আমল যা জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহার চাইতে উত্তম !!
ওই আল্লাহকে ভালবাসা প্রকাশের সরবচ্চ মাধ্যম আর কি হতে পারে আল্লাহর রাস্তায় মারো এবং মরো ছাড়া !!
ওই এর চাইতে আর বড় শ্রেষ্ঠ ইবাদাত কি হতে পারে যে আল্লাহর জন্য মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান আর প্রিয় জীবনটাকে তছনছ করে বিলিয়ে দেয় আর নিজের দেহের তপ্ত-উত্তপ্ত রক্ত জমিনে প্রবাহিত করে !!!
ওহে রাসুলের (স) এর কথিত আশেকানেরা !!
একটু ভাবো , দয়ে করে একটু ভাবো, তিনি (স) কি করলেন? আর আজ তোমরা কি করছ?? তোমাদের বাহাদুর নবি (স) এর দেহের উত্তপ্ত রক্ত তো মাথা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত গড়িয়েছে আর আজ তোমাদের রক্ত তো বহু দূরে বরং যেকোনো ইবাদাতে একটু ঘাম ঝরলেই তোমাদের আত্মাগুলি বেরিয়ে যায়। যার ফলেই তোমাদের আজ এসি প্রতিযোগিতা । এটা অবশ্যই ঠিক যে কিছু লোক মসজিদে আগে আগে যায় আল্লাহ্*রই সন্তুষ্টি হাসিলের জন্য কিন্তু কিছু বেক্তি যারা আগে আগে যায় পাছে যদি এসির মধ্যে যায়গা পাওয়া না যায়, হায় আফসোস! আর এরাই নাকি রাসুল (স) এর প্রকৃত আশেকান!!!আল্লাহ আমাদের শুভ বুদ্ধির উদয় ঘটান ।
ইবনে ওমর রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর নিকট কোনো দিন অধিক প্রিয় নয়, আর না তাতে আমল করা, এ দিনের তুলনায়। সুতরাং, তাতে তোমরা বেশি করে তাহলীল, তাকবীর ও তাহমীদ পাঠ কর।( তাবরানী ফীল মুজামিল কাবীর)
সাঈদ ইবনে জুবায়ের রাহিমাহুল্লাহর অভ্যাস ছিল, যিনি পূর্বে বর্ণিত ইবনে আব্বাসের হাদিস বর্ণনা করেছেন: যখন যিলহজ মাসরে ১ম দশ দিন প্রবেশ করত, তখন তিনি খুব মুজাহাদা করতেন, যেন তার উপর তিনি শক্তি হারিয়ে ফেলবেন।( দারামী: ২৫৬৪ হাসান সনদে )
হে আমার ভাই, মুমিনদের সিফতই হল এ সকল মর্যাদা ও ফযিলতপূর্ণ সময় কে যথাযথ ভাবে কাজে লাগাতে সর্বউচ্চ সচেষ্ট থাকা। আমি জানি আপনারা খুব বেস্ত থাকেন। কিন্তু আমি বলি রমজান মাস যেমন আমাদের জন্য ইবাদাতের সিজন ঠিক এই ১০ টা দিনও আমাদের জন্য ইবাদাতের সিজন। তাই আপনাদের প্রতি আমার দরদ মাখা বিনীত আহ্বান, যে যার অবস্থান থেকে যতটুকু পারা যায় এই বরকতময় সময়ে বেশি বেশি ইবাদাত করে আমাদের দয়াময় রবের নৈকট্য হাসিলের জন্য সুচেষ্টা অব্যাহত রাখুন।
হে ভাই, এটা অবশ্যই সত্য যে কুফুরি মিল্লাতের অত্যাধুনিক মরনাস্ত্র ও পারমাণবিক বোমা রয়েছে। যা দ্বারা তারা জাপানের হিরশিমা আর নাগাসাকি ধ্বংস করতে পারে। আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি আপনাদের অনবিক বোমা কুফুরি মিল্লাতের পরমানবিকের চাইতে হাজার আর লক্ষ্য গুণে অধিক ভয়ংকর আর ক্ষমতাসম্পন্ন । হে ভাই আমি গাজাখরি কথা বলছি না ।যদি সত্যি আমরা আমাদের পারমাণবিকে শ্রেষ্ঠ উপাদান ইখলাস , আন্তরিকতা আর ধৈর্যের মিসেল ঘটাতে পারি তাহলে তা হয়ে উঠবে এমনই এক ভয়ংকর মরনাস্ত্র যা শুধু হিরশিমা আর নাগাসাকি নয় আমেরিকা থেকে শুরু করে রাশিয়া ফ্রান্স চীন জাপান আর সমগ্র ভারতকে তছনছ আর চূর্ণ- বিচূর্ণ করে দিবে ইনশাআল্লাহ্* । তাই হে আমার প্রাণপ্রিয় ভাইয়েরা এখনি সর্বোৎকৃষ্ট ও উপযুক্ত সময় আমাদের পারমাণবিক বিস্ফোরণের ।
হে ভাই আসলেই মুমিনদের কোনই অস্ত্র নেই। তাদের একমাত্র অস্ত্রই হল দুয়া । তৎকালীন রোম সাম্রাজ্য মুসলিমদের সাথে পেরে না উঠে মুসলিমদের মধ্যে গোয়েন্দা নিযুক্ত করলো । যার কাজ ছিল গোয়েন্দাগিরি করে জানা যে মুসলমানদের এতো শক্তিশালী অস্ত্র কি যার কারণে তারা তৎকালীন পরাশক্তি হওয়া সত্তেও মুসলমানদের সাথে পেরে উঠছে না । সে কিছুদিন পর প্রতিবেদন করলো যে “ এরা দিনে একেকজন বীর আর রাতে অসহায় দরবেশ আর ফকির ”
ডক্টর আব্দুল্লাহ আজ্জাম (র) তাঁর “আফগানিস্তানে আমার দেখা আল্লাহর নিদর্শন” কিতাবে লিখেন যে – একবার শ্রেষ্ঠ গেরিলা নেতা সিরাজুদ্দিন হক্কানি (র) মুজাহিদিনের ১ টি দলকে স্বল্প কিছু যুদ্ধ সরঞ্জাম ও রসদ দিয়ে একটি অভিযানে পাঠান । তো আলহামদুলিল্লাহ্* তারা সেই অভিযানে বিজয় লাভ করে ও গনিমাহ অর্জন করে । কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল তাদেরকে অভিযানের জন্য যে যুদ্ধ সরঞ্জাম ও রসদ দেওয়া হয়েছিল তার কিছুই খরচ হয়নি। বরং তারা যেভাবে তা নিয়ে গিয়েছে সেভাবেই তা অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে এনেছে । ( আল্লাহু আকবর )
তাই আমার ভাই বলুন , মুমিনদের এমন কোন শক্তিশালী হাতিয়ার যা দুয়ার চাইতে শ্রেষ্ঠ হতে পারে !!
হে ভাই আমরা সবাই ওয়াকিবহাল যে আমরা এক কঠিন সময় পার করছি অপরদিকে এটা মিথ্যা নয় যে আমরা আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যাবহারের এক উপযুক্ত সময় অতিক্রম করছি । হে ভাই সঠিক সময়ে সঠিক অস্ত্রের ব্যাবহার বা সমন্বয় করতে পারাই হল নেতা কমান্ডার বা মুজাহিদিনের একটি অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট । তাই আমার সকল ভাইদের প্রতি আমার হৃদয়ের গহীন থেকে , অন্তরের অন্তরস্থল থেকে , উদারচিত্তে , অত্যন্ত আন্তরিকতা আর বিনীতভাবে ,দরদ মাখা কণ্ঠে উদাত্ত আহবান জানাই -
আমার অন্তর প্রশান্তকারি প্রিয় ভাইয়েরা – বিস্ফোরণ ঘটান রাতের আঁধারে ইখলাছ আর আন্তরিকতার ভরপুর পারমাণবিকের ।।
রাহমানের দরবারে আবেদন রাখুন আমাদের বন্দী ভাইদের নিয়ে , প্রার্থনা করুন আমাদের পালিয়ে বেড়ানো ভাইদের তরে। ভুলে যাবেন না আমাদের মুকুল ভাইয়ের রক্তকে , ভুলে যাবেন না আমাদের সকল অগ্রগামী ভাইদের ত্যাগ আর কুরবানিকে । দুয়া করুন আমাদের বাহ্যিক যতটুকু ক্ষতি হয়েছে দয়াময় রব যেন তা শত আর হাজার গুনে বারিয়ে লাভ আর মুনাফা দ্বারা পুশিয়ে দেয় । দুয়া করুন আমাদের একমাত্র আভিভাবক মহান আল্লাহ যেন আমাদের দয়ে করে এমন এক ঝাঁক ত্যাগী , কুরবানি করনেওয়ালা আর আনুগত্যশীল সিংহ তৈরি করে দেয় যারা আল্লাহদ্রোহী আর আমাদের চক্ষু শীতল কারী রাসুল (স) শত্রুদেরদের জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে । দুয়া করুন আমাদের এই তাঞ্জিম কে নিয়ে আল্লাহ যেন একে হক পথের উপর দিঢ় রাখেন । আল্লাহ যেন আমাদের তামকিন দান করেন । নিজেদের জন্য দুয়া তো করবেন- ই যে আল্লাহ যেন আমাদের কে তাঁর পছন্দনীয় ও ধৈর্যশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করেন আর রিয়া ভীরুতা- কাপুরুষতা অলসতা বাচালতা থেকে হেফাজত করে দুঃসাহসিকতায় আমাদের অন্তর কে প্রসস্থ করে দেন । আর দয়া করে , দয়া করে ভুলে যাবেন না আপনাদের এই ভাইটিকে ।।
“ হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করো না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছ, হে আমাদের প্রভূ! এবং আমাদের দ্বারা ঐ বোঝা বহন করিও না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন কর। আমাদেরকে ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কে সাহায্যে কর।( আল বাকারা – ২৮৬)
আর আমার শেষ কথা হল সকল তারিফ একমাত্র সেই মহান রবের জন্য যিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী । যিনি চিরস্থায়ী আর চিরঞ্জীব ।
ওয়াসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ
Comment