কর্মব্যস্ত বনানী এলাকা। সময় আনুমানিক বেলা দেড়টা। অসংখ্য যানবাহন আর পথচারীর আসা-যাওয়া চলছে। ঠিক এই সময় বনানী ৭ নম্বর সড়কে থানার সামনে বিকট আওয়াজ। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। শুরু হয় সবার দিগ্*বিদিক ছোটাছুটি।
এলাকাবাসী প্রথমে ধারণা করে, হয়তো জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। থানার সামনে হওয়ায় আতঙ্কের মাত্রা আরও বহুগুণ বেড়ে যায় সবার মধ্যে। চোখের পলকে চলে আসেন সশস্ত্র অবস্থায় পুলিশ, র*্যাব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নসহ (এপিবিএন) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
ছোড়েন কয়েকটি ফাঁকা গুলি। ঘিরে ফেলেন আশপাশের এলাকা। বনানীর প্রায় সব সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় তল্লাশি কার্যক্রম। আশপাশের ভবনে খোঁজ নেওয়া হয়। বেশ কিছু সময় ধরে চলতে থাকে ‘হামলাকারী’ খুঁজে বের করার কাজ।
পুলিশের গুলিতে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত বনানী থানার সামনে ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে যায়।
কিন্তু কিছুতেই কিছু মিলছিল না। পাওয়া যাচ্ছিল না কারা এই ‘হামলার’ সঙ্গে জড়িত। রুদ্ধশ্বাস এ অবস্থায় বনানী থানার সামনে বিদ্যুতের লাইনের ট্রান্সফরমার থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গেল। ট্রান্সফরমারের সঙ্গে থাকা বিদ্যুতের তারগুলোও পুড়ে গেছে। কিছু তার এলোমেলো হয়ে আছে।
এ দৃশ্য দেখে খবর দেওয়া হয় বিদ্যুৎ বিভাগকে।গুলশান-১ এর ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো)-এর সদস্যরা পরীক্ষা করে জানান, ইন্টারনেট তারে কাক বসার পর তা ছিড়ে গিয়ে বৈদ্যুতিক তারের উপর পরে। ফলে শর্ট সার্কিট হয়ে প্রচণ্ড শব্দের সৃষ্টি হয়। ট্রান্সফরমারটি বিস্ফোরিত হয়েছে। এরই শব্দই ছড়িয়ে পড়ে। বিস্ফোরণে বিদ্যুতের তার পুড়ে গেছে।
এক ব্যক্তি নাম না প্রকাশের শর্তে জানান,দুপুর দেড়টার দিকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের ফলে বিকট আওয়াজ শোনা যায়। এর পর পরই থানায় কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা জঙ্গি আতঙ্কে ব্যাপক গুলি ছুড়তে আরম্ভ করে।
অন্য একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা যখন জানালেন যে ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণে শব্দ হয়েছে, তখন সবার মধ্যে স্বস্তি আসে। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকে। বাসা-বাড়িতে আটকে পড়া লোকজনও বের হয়ে আসে।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে কাজ করছিলেন। এ ব্যাপারে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, বিস্ফোরণের কারণে সতর্কাবস্থা নেওয়া হয়েছিল। তবে, এ কারণে কেউ হতাহত হয়নি। ট্রান্সফরমারের বিস্ফোরণে আগুন ধরে তার পুড়েছে।
গুলিবর্ষণের এ ঘটনায় কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায় নি। আল-ø।
ঘটনার পর থেকে বিকেল পর্যন্ত বনানী জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সেই সঙ্গে বনানী থানায় কড়া নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
Reference:
Comment