আপনার কাছে গুরুত্ব পাওয়া বিষয়গুলোর তালিকায় যদি ইসলামী ফিক্বহ না থাকে, তবে এই আলোচনা আপনার জন্য নয়। আর আপনি যদি এমন না হন, তবে চলুন—
ইয়ারমুকের যুদ্ধে আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা রাযিআল্লাহু তা'আলা আনহু যখন রসূলুল্লাহ ﷺ এর পেছনে সর্বশেষ জুম্মার নামাজ আদায়ের জন্য মুসলিম কাফেলা থেকে পিছনে রয়ে গিয়েছিলেন, তখন রাসুলুল্লাহ ﷺ তাকে কি বলেছিলেন মনে আছে? "তুমি জান্নাতের পথে তাদের চেয়ে পাঁচশত বৎসর পেছনে পড়ে গিয়েছো"
আচ্ছা লক্ষ্য করুন! কাফেলা যখন আল্লাহর রাস্তায় বের হয়েছে, তখন থেকেই যেহেতু তাদের প্রতিটি কাজ জিহাদের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছিল, সে কারণেই তো রাসূলুল্লাহ ﷺ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহাকে একথা বলেছিলেন, তাই না? কিন্তু কাফেলা তো তখন পর্যন্ত কোনো রকম সংঘর্ষের মুখোমুখি হয়নি। তীর তরবারীর ব্যবহার তো তখন পর্যন্ত শুরু হয়নি। কোথায় তাদের সশস্ত্র কার্যক্রম তখন পর্যন্ত আরম্ভ হয়নি।
এবার খেয়াল করুন, ঐ সময় পর্যন্ত তারা সফরের কষ্ট ছাড়া অন্য কোন প্রকার বাড়তি কষ্ট ও দুর্যোগের মুখোমুখি হননি। ওই সময় পর্যন্ত দুর্যোগ ও কষ্টের মুখোমুখি হবার দিক থেকে একটি ব্যবসায়িক কাফেলা এবং তাদের মাঝে কোন প্রকার পার্থক্য নেই। তবুও কেন তাদের এই যাত্রা জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ এর অন্তর্ভুক্ত হলো?
গভীর গবেষণা ও বিশ্লেষণের পর আমরা ধরে নিতে পারি যে —জিহাদ কাকে বলে, এমন প্রশ্নের জবাবে নবীজির মুখনিঃসৃত বাণী— أن تقاتل الكفار اذا لقيتهم তথা সশস্ত্র তৎপরতা এবং তাদের সে যাত্রার মাঝে প্রত্যক্ষ এক বন্ধন ছিল। হ্যাঁ, একমাত্র নবীজির এজাতীয় বাণীগুলোই পারিভাষিক জিহাদের সংজ্ঞা করেছে। এর বাইরে তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কিছুকে জিহাদ বলেছেন, সেগুলো ছিল কেবল ফজিলতের জন্য। যেমন এরশাদ হচ্ছে—
من خرج في طلب العلم فهو في سبيل الله حتى يرجع
আশা করি বিষয়টা আমাদের কাছে স্পষ্ট।বিষয়টি উম্মতের ইমামদের সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকৃত।
এ তো গেল নিজেদের অবস্থান স্থল ত্যাগ করে অন্য কোথাও যুদ্ধের জন্য যাওয়ার বেলায়। কিন্তু কখনও নিজেদের অবস্থান স্থলে যদি যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয় তখন উদাহরণ কি হবে? (উদাহরণটা অতি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বর্তমান যুগে পরিস্থিতি এমন হয়ে গিয়েছে যে, নবী যুগের মত সেভাবে জিহাদের জন্য বের হওয়ার অবস্থা খুব একটা চোখে পড়ে না। বিশেষত বাংলাদেশের মতো দারুল হরব এসকল রাষ্ট্রগুলোতে। এ কারণে নিচের উদাহরণটা গুরুত্বপূর্ণ।)
খন্দকের যুদ্ধ আমরা জানি মদিনায় থেকেই হয়েছিল। তো এই যুদ্ধে পরিখা খননকে যুদ্ধের অংশ হিসেবেই ধরা হয়। তো এই পরীক্ষা খননে কিন্তু কোন ধরনের সশস্ত্র তৎপরতা নেই। এতদসত্ত্বেও এই কাজ যুদ্ধের অংশ ছিল। এখানেও আমরা পূর্বে বলে আসা সে কারণটাই দেখতে পেলাম। এখানে পরিখা খনন এবং সশস্ত্র তৎপরতার মাঝে এক সুগঠিত, প্রত্যক্ষ ও বাস্তব বন্ধন ছিল।
সাধারণ যুদ্ধ আর ইসলামের জিহাদ এক জিনিস না। ইসলামে কোন একটি ঘটিতব্য যুদ্ধকে তখনই জিহাদ বলা হবে, যখন তার লক্ষ্য হবে আল্লাহর দ্বীনকে প্রতিষ্ঠা করা এবং তার মাঝে শরীয়ত বহির্ভূত কোন কাজ না পাওয়া যাবে। হ্যাঁ কৌশলগত ভুল থাকতে পারে কিন্তু সেটা তো আর শরীয়ত বহির্ভূত বা শরীয়ত বিরোধী কোন কিছু না।
আমরা আমাদের একথা প্রমাণ করার জন্য বলতে পারি, সবকিছু ঠিকঠাক থাকা সত্ত্বেও নবীজির যুগে এক লোক শাহাদাতের মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হয়েছে কেবল শরীয়ত বিরোধী একটি কাজের উপস্থিতির কারণে। লোকটি প্রাণপণে লড়াই করে গুরুতর আহত অবস্থায় পড়েছিলেন। তখন পর্যন্ত তিনি পুরোপুরি শরীয়তের উপর ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যায়ে ক্ষতস্থানের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন। তিনি জিহাদের ময়দানে উপস্থিত হয়ে এবং সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেও কেবল শরীয়ত বিরোধী একটি কাজে লিপ্ত হওয়ার কারণে শাহাদাতের মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
উপরে যা কিছু বলা হলো, সেগুলোতে আমরা সংক্ষেপে আরেকবার দৃষ্টি বুলাতে চাই—
জিহাদের রোকনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বন্ধন তৈরি হলে এবং শরীয়ত গর্হিত কোন পন্থার অনুপ্রবেশ না ঘটলে যেকোনো কার্যক্রম জিহাদ বলে গণ্য হবে ইনশাআল্লাহ!
বর্তমানে গণতান্ত্রিক ইসলামী দলগুলোর রাজপথের কার্যক্রমগুলো জিহাদ না হওয়ার কারণ হল, একে তো মূল রোকন —ان تقاتل الكفار اذا لقيتهم এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ বন্ধন তো দূরের কথা, নূন্যতম সম্পর্কও নেই। দ্বিতীয়তঃ তারা যে সিস্টেমের আওতায় এই কাজগুলো করছে, তা একটা কুফরি, ইসলামবিরোধী ও শরীয়ত গর্হিত পন্থা, যার সঙ্গে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই।
পক্ষান্তরে খন্দকের যুদ্ধের মতো যারা আজ এই ভূমিতে একটি জিহাদকে দাঁড় করানোর জন্য নিরন্তর সাধনা করে যাচ্ছেন, আশা করা যায় তাদের এই কাজ খন্দক যুদ্ধের পরিখা খননের মতোই জিহাদের অন্তর্ভুক্ত হবে ইনশাআল্লাহ!!
* এক্ষেত্রে হতে পারে, কদাচিৎ আল্লাহর মেহেরবানীতে তাদের কার্যক্রম গণতান্ত্রিক ইসলামী দলগুলোর রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে অনেকাংশেই কম কষ্টসাধ্য হবে। হতে পারে কোন একটা গণতান্ত্রিক মিটিং মিছিলে আপনাকে কোন কারনে অস্ত্র হাতে তুলে নিতে হবে, হতে পারে আপনাকে সেখানে খুব বেশি ত্যাগ-তিতিক্ষা স্বীকার করতে হবে।অপরদিকে যারা এই ভূমিতে জিহাদকে দাঁড় করানোর জন্য সাধনা করে যাচ্ছেন, হতে পারে ক্ষেত্রবিশেষে একটি মিটিং কিংবা মিছিলে অংশগ্রহণের চাইতেও কম কষ্ট তাদের পোহাতে হয়েছে।[যেমন নাকি খন্দকের যুদ্ধে যখন পরিখা খননের কাজ চলছিল, তখন যে লোকটি একই স্থান থেকে অন্য স্থানে মাটি সরিয়ে রাখছিল। আর এতে তার যতটুকু কষ্ট হচ্ছিল, তার চেয়ে পরিমাণ ও মাত্রায় অনেক বেশি কষ্ট হতেও পারে ওই ব্যক্তির,যে নবীযুগে নিজ ঘর নির্মাণের জন্য মাটি খনন করেছিল, এরপর সে মাটি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে রাখছিল। এটি একটি কল্পনা মাত্র। কিন্তু বাস্তবতা এর ব্যতিক্রম না।] কিন্তু জিহাদের মূল রোকন উপস্থিত না থাকার কারণে এবং যে সিস্টেমের আওতায় এই কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, তা স্পষ্ট একটা কুফরি মতবাদ হওয়ার কারণে কখনোই এগুলোকে জিহাদ বলা যায় না।
গুরুত্বপূর্ণ এ কার্যকারণটিকে অপরিহার্যভাবে বিবেচনায় নেয়ার কারণে অভিন্ন দুটা কাজ দুজন লোক করার পরও একজনেরটা জিহাদের অন্তর্ভুক্ত হবে কিন্তু অন্য জনেরটা হবেনা। যেমন, আপনি যদি কোন জিহাদী দলের সদস্য হন, আর দলীয় কার্যক্রম হিসেবে আপনি যদি কিছু লিফলেট ছাপান, তবে এর টাকাটা ইনশাআল্লাহ ফিসাবিলিল্লাহ খরচ হয়েছে বলে ধরা হবে। কিন্তু একই কাজ যদি গণতান্ত্রিক কোন দলের কেউ করে, তবে তারটা অন্তর্ভুক্ত হবে না।[তবে দলের ঘোষিত মতাদর্শের বাইরে যদি কেউ সত্যিকার অর্থে ভালো কিছু করে, তবে সেটা আশা করা যায় অন্তর্ভুক্ত হবে --الله اعلم-আল্লাহ তাআলা সর্বজ্ঞ] এর দৃষ্টান্ত আমাদের শরীয়তে অনেক রয়েছে।একই কাজ দুইজন করার পরও কেবল নিয়তের একটু এদিক-সেদিক হওয়ার কারণে একজনেরটা বেদআত বলে গণ্য হবে কিন্তু অন্য জনেরটা পুণ্যের কাজ বলে বিবেচিত হবে।
এনিয়ে সময়ে সময়ে আরো কিছু কথা বলার ইচ্ছা আছে।এই মুহূর্তে সময় স্বল্পতার কারণে খুব একটা গুছিয়ে বলতে পারিনি। পুরো বিষয়টাকে গঠনমূলকভাবে সামনে আনার জন্য কিছু সময়ের প্রয়োজন। আশা করা যায় সামনে সে কাজটা করার সুযোগ আল্লাহ তায়ালা দান করবেন ইনশাআল্লাহ!!
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন! আমিন!!
ইয়ারমুকের যুদ্ধে আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা রাযিআল্লাহু তা'আলা আনহু যখন রসূলুল্লাহ ﷺ এর পেছনে সর্বশেষ জুম্মার নামাজ আদায়ের জন্য মুসলিম কাফেলা থেকে পিছনে রয়ে গিয়েছিলেন, তখন রাসুলুল্লাহ ﷺ তাকে কি বলেছিলেন মনে আছে? "তুমি জান্নাতের পথে তাদের চেয়ে পাঁচশত বৎসর পেছনে পড়ে গিয়েছো"
আচ্ছা লক্ষ্য করুন! কাফেলা যখন আল্লাহর রাস্তায় বের হয়েছে, তখন থেকেই যেহেতু তাদের প্রতিটি কাজ জিহাদের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছিল, সে কারণেই তো রাসূলুল্লাহ ﷺ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহাকে একথা বলেছিলেন, তাই না? কিন্তু কাফেলা তো তখন পর্যন্ত কোনো রকম সংঘর্ষের মুখোমুখি হয়নি। তীর তরবারীর ব্যবহার তো তখন পর্যন্ত শুরু হয়নি। কোথায় তাদের সশস্ত্র কার্যক্রম তখন পর্যন্ত আরম্ভ হয়নি।
এবার খেয়াল করুন, ঐ সময় পর্যন্ত তারা সফরের কষ্ট ছাড়া অন্য কোন প্রকার বাড়তি কষ্ট ও দুর্যোগের মুখোমুখি হননি। ওই সময় পর্যন্ত দুর্যোগ ও কষ্টের মুখোমুখি হবার দিক থেকে একটি ব্যবসায়িক কাফেলা এবং তাদের মাঝে কোন প্রকার পার্থক্য নেই। তবুও কেন তাদের এই যাত্রা জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ এর অন্তর্ভুক্ত হলো?
গভীর গবেষণা ও বিশ্লেষণের পর আমরা ধরে নিতে পারি যে —জিহাদ কাকে বলে, এমন প্রশ্নের জবাবে নবীজির মুখনিঃসৃত বাণী— أن تقاتل الكفار اذا لقيتهم তথা সশস্ত্র তৎপরতা এবং তাদের সে যাত্রার মাঝে প্রত্যক্ষ এক বন্ধন ছিল। হ্যাঁ, একমাত্র নবীজির এজাতীয় বাণীগুলোই পারিভাষিক জিহাদের সংজ্ঞা করেছে। এর বাইরে তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কিছুকে জিহাদ বলেছেন, সেগুলো ছিল কেবল ফজিলতের জন্য। যেমন এরশাদ হচ্ছে—
من خرج في طلب العلم فهو في سبيل الله حتى يرجع
আশা করি বিষয়টা আমাদের কাছে স্পষ্ট।বিষয়টি উম্মতের ইমামদের সর্বসম্মতিক্রমে স্বীকৃত।
এ তো গেল নিজেদের অবস্থান স্থল ত্যাগ করে অন্য কোথাও যুদ্ধের জন্য যাওয়ার বেলায়। কিন্তু কখনও নিজেদের অবস্থান স্থলে যদি যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয় তখন উদাহরণ কি হবে? (উদাহরণটা অতি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বর্তমান যুগে পরিস্থিতি এমন হয়ে গিয়েছে যে, নবী যুগের মত সেভাবে জিহাদের জন্য বের হওয়ার অবস্থা খুব একটা চোখে পড়ে না। বিশেষত বাংলাদেশের মতো দারুল হরব এসকল রাষ্ট্রগুলোতে। এ কারণে নিচের উদাহরণটা গুরুত্বপূর্ণ।)
খন্দকের যুদ্ধ আমরা জানি মদিনায় থেকেই হয়েছিল। তো এই যুদ্ধে পরিখা খননকে যুদ্ধের অংশ হিসেবেই ধরা হয়। তো এই পরীক্ষা খননে কিন্তু কোন ধরনের সশস্ত্র তৎপরতা নেই। এতদসত্ত্বেও এই কাজ যুদ্ধের অংশ ছিল। এখানেও আমরা পূর্বে বলে আসা সে কারণটাই দেখতে পেলাম। এখানে পরিখা খনন এবং সশস্ত্র তৎপরতার মাঝে এক সুগঠিত, প্রত্যক্ষ ও বাস্তব বন্ধন ছিল।
সাধারণ যুদ্ধ আর ইসলামের জিহাদ এক জিনিস না। ইসলামে কোন একটি ঘটিতব্য যুদ্ধকে তখনই জিহাদ বলা হবে, যখন তার লক্ষ্য হবে আল্লাহর দ্বীনকে প্রতিষ্ঠা করা এবং তার মাঝে শরীয়ত বহির্ভূত কোন কাজ না পাওয়া যাবে। হ্যাঁ কৌশলগত ভুল থাকতে পারে কিন্তু সেটা তো আর শরীয়ত বহির্ভূত বা শরীয়ত বিরোধী কোন কিছু না।
আমরা আমাদের একথা প্রমাণ করার জন্য বলতে পারি, সবকিছু ঠিকঠাক থাকা সত্ত্বেও নবীজির যুগে এক লোক শাহাদাতের মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হয়েছে কেবল শরীয়ত বিরোধী একটি কাজের উপস্থিতির কারণে। লোকটি প্রাণপণে লড়াই করে গুরুতর আহত অবস্থায় পড়েছিলেন। তখন পর্যন্ত তিনি পুরোপুরি শরীয়তের উপর ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যায়ে ক্ষতস্থানের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন। তিনি জিহাদের ময়দানে উপস্থিত হয়ে এবং সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেও কেবল শরীয়ত বিরোধী একটি কাজে লিপ্ত হওয়ার কারণে শাহাদাতের মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
উপরে যা কিছু বলা হলো, সেগুলোতে আমরা সংক্ষেপে আরেকবার দৃষ্টি বুলাতে চাই—
জিহাদের রোকনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বন্ধন তৈরি হলে এবং শরীয়ত গর্হিত কোন পন্থার অনুপ্রবেশ না ঘটলে যেকোনো কার্যক্রম জিহাদ বলে গণ্য হবে ইনশাআল্লাহ!
বর্তমানে গণতান্ত্রিক ইসলামী দলগুলোর রাজপথের কার্যক্রমগুলো জিহাদ না হওয়ার কারণ হল, একে তো মূল রোকন —ان تقاتل الكفار اذا لقيتهم এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ বন্ধন তো দূরের কথা, নূন্যতম সম্পর্কও নেই। দ্বিতীয়তঃ তারা যে সিস্টেমের আওতায় এই কাজগুলো করছে, তা একটা কুফরি, ইসলামবিরোধী ও শরীয়ত গর্হিত পন্থা, যার সঙ্গে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই।
পক্ষান্তরে খন্দকের যুদ্ধের মতো যারা আজ এই ভূমিতে একটি জিহাদকে দাঁড় করানোর জন্য নিরন্তর সাধনা করে যাচ্ছেন, আশা করা যায় তাদের এই কাজ খন্দক যুদ্ধের পরিখা খননের মতোই জিহাদের অন্তর্ভুক্ত হবে ইনশাআল্লাহ!!
* এক্ষেত্রে হতে পারে, কদাচিৎ আল্লাহর মেহেরবানীতে তাদের কার্যক্রম গণতান্ত্রিক ইসলামী দলগুলোর রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে অনেকাংশেই কম কষ্টসাধ্য হবে। হতে পারে কোন একটা গণতান্ত্রিক মিটিং মিছিলে আপনাকে কোন কারনে অস্ত্র হাতে তুলে নিতে হবে, হতে পারে আপনাকে সেখানে খুব বেশি ত্যাগ-তিতিক্ষা স্বীকার করতে হবে।অপরদিকে যারা এই ভূমিতে জিহাদকে দাঁড় করানোর জন্য সাধনা করে যাচ্ছেন, হতে পারে ক্ষেত্রবিশেষে একটি মিটিং কিংবা মিছিলে অংশগ্রহণের চাইতেও কম কষ্ট তাদের পোহাতে হয়েছে।[যেমন নাকি খন্দকের যুদ্ধে যখন পরিখা খননের কাজ চলছিল, তখন যে লোকটি একই স্থান থেকে অন্য স্থানে মাটি সরিয়ে রাখছিল। আর এতে তার যতটুকু কষ্ট হচ্ছিল, তার চেয়ে পরিমাণ ও মাত্রায় অনেক বেশি কষ্ট হতেও পারে ওই ব্যক্তির,যে নবীযুগে নিজ ঘর নির্মাণের জন্য মাটি খনন করেছিল, এরপর সে মাটি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে রাখছিল। এটি একটি কল্পনা মাত্র। কিন্তু বাস্তবতা এর ব্যতিক্রম না।] কিন্তু জিহাদের মূল রোকন উপস্থিত না থাকার কারণে এবং যে সিস্টেমের আওতায় এই কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, তা স্পষ্ট একটা কুফরি মতবাদ হওয়ার কারণে কখনোই এগুলোকে জিহাদ বলা যায় না।
গুরুত্বপূর্ণ এ কার্যকারণটিকে অপরিহার্যভাবে বিবেচনায় নেয়ার কারণে অভিন্ন দুটা কাজ দুজন লোক করার পরও একজনেরটা জিহাদের অন্তর্ভুক্ত হবে কিন্তু অন্য জনেরটা হবেনা। যেমন, আপনি যদি কোন জিহাদী দলের সদস্য হন, আর দলীয় কার্যক্রম হিসেবে আপনি যদি কিছু লিফলেট ছাপান, তবে এর টাকাটা ইনশাআল্লাহ ফিসাবিলিল্লাহ খরচ হয়েছে বলে ধরা হবে। কিন্তু একই কাজ যদি গণতান্ত্রিক কোন দলের কেউ করে, তবে তারটা অন্তর্ভুক্ত হবে না।[তবে দলের ঘোষিত মতাদর্শের বাইরে যদি কেউ সত্যিকার অর্থে ভালো কিছু করে, তবে সেটা আশা করা যায় অন্তর্ভুক্ত হবে --الله اعلم-আল্লাহ তাআলা সর্বজ্ঞ] এর দৃষ্টান্ত আমাদের শরীয়তে অনেক রয়েছে।একই কাজ দুইজন করার পরও কেবল নিয়তের একটু এদিক-সেদিক হওয়ার কারণে একজনেরটা বেদআত বলে গণ্য হবে কিন্তু অন্য জনেরটা পুণ্যের কাজ বলে বিবেচিত হবে।
এনিয়ে সময়ে সময়ে আরো কিছু কথা বলার ইচ্ছা আছে।এই মুহূর্তে সময় স্বল্পতার কারণে খুব একটা গুছিয়ে বলতে পারিনি। পুরো বিষয়টাকে গঠনমূলকভাবে সামনে আনার জন্য কিছু সময়ের প্রয়োজন। আশা করা যায় সামনে সে কাজটা করার সুযোগ আল্লাহ তায়ালা দান করবেন ইনশাআল্লাহ!!
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন! আমিন!!
Comment