Announcement

Collapse
No announcement yet.

যে কাফেরকে কাফের বলেনা সে কাফের” – এই মূলনীতির বিশ্লেষণ!

Collapse
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • যে কাফেরকে কাফের বলেনা সে কাফের” – এই মূলনীতির বিশ্লেষণ!

    আল্লামা সুলাইমান আল উলওয়ান
    বলেন :

    “কাফের কে কাফের না বললে কাফের হয়ে যাবে"

    এই মূলনীতির ব্যাখ্যা রয়েছে এখানে ৭ টি প্রকার রয়েছেঃ

    ১ম প্রকারঃ

    যে ব্যক্তি ইহুদি, খৃষ্টান বা পৌত্তলিক জাতিকে বা তাদের

    কোনো সদস্যকে কাফের
    বলেনা সে কাফের।

    কারন
    সে এর মাধ্যমে শরিয়তের
    অকাট্য দলীলকে অস্বীকার করেছে।

    ২য় প্রকারঃ

    যে ব্যক্তি প্রাচীন ধর্মে প্রত্যাবর্তনকারীকে কাফের বলেনা-

    যেমন কেউ ইহুদি , খৃষ্টান বা মাজুসী ধর্মে ধর্মান্তরিত হলো,

    তাকে যে কাফের মনে না করবে
    সে কাফের কারন সে অকাট্য দলীলকে অস্বীকার করেছে।

    ৩য় প্রকারঃ

    যে ব্যক্তি কাফের হয়েছে ঈমান ভঙ্গের সর্বস্বীকৃত কর্ম করে

    এই কর্মটি কুফরি তার
    উপর প্রমান প্রতিষ্ঠা হয়েছে এবং
    সংশয় নিরসন হয়েছে।

    যদি এই ব্যক্তিকে সন্দেহের কোন কারন বা ব্যখ্যার আশ্রয় ছাড়া শুধুমাত্র মনের খাহেশের কারনে অথবা গুরুত্বহীনতার কারনে

    কেউ কাফের মনে না করে সে এই মূলনীতির আওতাভুক্ত হবে

    “যে কাফেরকে কাফের মনে করেনা সে কাফের”।

    ৪র্থ প্রকারঃ

    ঈমান ভঙ্গের কোন কর্মে লিপ্ত
    কাফের ব্যক্তিকে কে এই কারনে কাফের মনে করছে না যে,

    এই কর্মটির দ্বারা ঈমান ভঙ্গের ব্যপারে তার সংশয় রয়েছে

    অথবা,
    তার বিশ্বাস সেই ব্যক্তির সামনে প্রমান (হুজ্জাহ) প্রতিষ্ঠা পায়নি

    অথবা ,
    তার ক্ষেত্রে কাফের হওয়ার শর্তসমূহ পরিপুর্ন উপস্থিত নেই

    তাহলে ,
    এমতাবস্থায় সর্বসম্মতিক্রমে এমন কাফেরকে কাফের না বলার কারনে সে কাফের হবেনা।

    ৫ম প্রকারঃ

    কেউ কাফেরকে কাফের মনে করছেনা নিজের কোন বিদাতি মতবাদের কারনে যেমন মুর্জিয়া যে কিনা ঈমান ভঙ্গের কারণকে সীমিত করে রেখেছে বিশ্বাস অথবা অস্বীকার অথবা হারাম কে হালাল বানানোর মধ্যে।

    সবার ঐক্যমত রয়েছে যে,
    সে কাফের নয় ।

    কারন ,
    তাকে কাফের বলা হলে এমন বিদাতি আকীদা পোষনকারি দলগুলো যেমন মুরজিয়া, আশায়িরা, কাররামিয়া, সালেমিয়া সব ফির্কাকেই কাফের বলতে হবে।
    অথচ কেউ এমন বলেনা।

    ৬ষ্ট প্রকারঃ

    ঈমান ভঙ্গের মত কর্মে জড়িত ব্যক্তি বা শ্রেণী যেমন ইচ্ছাকৃত নামাজ তরককারি, যাদুকর ইত্যাদিকে
    যে কাফের বলেনা ।

    এদের কে কাফের না বলার দুই অবস্থা। একটি হলো এগুলো্কে আমল পর্যায়ভুক্ত বলে সংশ্লিষ্টদের কাফের না বলা, এটা বিদাতি মতাদর্শের লোকদের বক্তব্য ।

    এদেরকে কাফের বলা হবেনা।
    এ ক্ষেত্রেও দ্বিমত নেই ।

    দ্বিতীয় অবস্থা হলো দলীলসমূহের পারস্পরিক ভারসাম্য বিধান করতে গিয়ে কাফের না বলা।

    এই ব্যক্তিকেও সর্বসম্মত ভাবেই কাফের বলা যাবেনা ।

    কারন
    এই ব্যক্তিকেও যদি কাফের বলা হয় তাহলে আইম্মায়ে আরবায়া সহ পুর্ববর্তি অনেক আলেম যেমন

    ইমাম যুহরি…
    তাদেরকে কাফের বলতে হবে।

    এই কারনেই সালাফদের মাঝে খারেজিদের ব্যপারে মতানৈক্য হয়েছে

    মুতাযিলাদের ব্যপারে মতানৈক্য করেছেন,

    পুর্ববর্তি ইমামদের মাঝে হাজ্জাজের মত ব্যক্তিবিশেষদের ব্যপারেও মতভিন্নতা ছিল

    এতদসত্বেও তারা একে অপরকে কাফের বলেননি বরং একে অন্যকে বিদাতিও বলেননি

    কারন এটি হয়েছে তাদের ইজতিহাদ এবং ব্যখ্যার আলোকে।

    এইতো সাহাবায়ে কিরামের মধ্যে খারেজিদের ব্যপারে মতপার্থক্য হয়েছে

    এক্ষেত্রে কাফের আখ্যায়িত কারীগন এরা যারা কাফের বলেন না

    তাদেরকে মুর্জিয়া বলেন নি,
    আবার যারা খারেজিদের কাফের বলেন না তারা কাফের আখ্যায়িত কারিদের খারেজি বলেন নি।

    এই যে হাসান বসরি, ওমার ইবনে আব্দুল আজীজ, মুজাহিদ প্রমুখ

    আকাবির হাজ্জাজ কে কাফের মনে করতেন আর মুহাম্মাদ ইবনে সিরীন এবং আরো একদল তাকে কাফের মনে করতেন না।

    এতদসত্বেও তারা একে অপর কে বিভ্রান্ত বলতেন না একে অন্যকে কাফেরও বলেন নি।

    কারন এটি ছিল গবেষনাধর্মী বিষয়, যেহেতু প্রত্যেকেই এই অভিমত পোষণ করতেন

    যে আসলে তার মধ্যে কুফরি সাব্যস্ত হওয়ার মত যথেষ্ট দলীল সমূহ পাওয়া যাচ্ছে না বা কুফর সাব্যস্ত হওয়ার দলীল সমূহ পরিপুর্ন বিদ্যমান নেই।

    এই ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে মতানৈক্য হয়েছে এজন্য কেউই অন্যকে কাফের বলেননি

    বরং বিদাতিও বলেন নি
    বরং একে অপরের মার্যাদা হানিও করেন নি বিদাতি বলাতো বহুদূর।
    কাফের বলাতো আরো দূরের বিষয়।

    ৭ম প্রকারঃ

    কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণির ক্ষেত্রে সর্বসম্মতভাবে কুফরি সাব্যস্ত হয়েছে , এখন কেউ সেই শ্রেণির কাফের হওয়ার ব্যপারে নয় বরং শ্রেনীর ব্যক্তি বিশেষের ক্ষেত্রে কুফরির বিধান প্রয়োগে মতানৈক্য করছে,

    বলা যায় সে শ্রেনীর কাফের হওয়া স্বীকার করছে কিন্তু এই শ্রেণীর প্রতিটি ব্যক্তি সুনির্দিষ্ট ভাবে কাফের এটা স্বীকার করে না,

    আর ইজমা সংঘটিত হয়েছিল শ্রেণীর কুফরের ক্ষেত্রে,
    প্রতিটি সদস্যের ক্ষেত্রে নয়।

    বিধায় তাকে কাফের বলা যাবে না কারন সে অকাট্য বিষয়কে অস্বীকার করেনি আর এখানে কাফের আখ্যা প্রদানের শর্ত সমুহের মধ্যে এটিও একটি যে অকাট্য বিষয়ের অস্বীকার সাব্যস্ত হতে হবে এখানে অকাট্য বিষয় হলো শ্রেনী; ব্যক্তি নহে ।

    হ্যাঁ যেখানে ব্যক্তি বিশেষের পর্যায়ে কাফের আখ্যা না দেওয়া হলে অকাট্য বিষয়ের অস্বীকার সাব্যস্ত হয়ে যায়,

    সে ক্ষেত্রে ব্যক্তি বিশেষকেও কাফের না বলা হলে কাফের হয়ে যাবে।
    যেমন- দ্বিতীয় প্রকারে;

    এমনিভাবে তৃতীয় প্রকারের কাফেরদের ক্ষেত্রে ব্যক্তি বিশেষকে কাফের না বললেও নিশ্চিত বিষয়ের অস্বীকার সাব্যস্ত হয়ে যায়।

    তথ্য সূত্র : দারুল উলুম
    বন্দী ভাই ও তাদের পরিবারের জন্য আপনার সাহায্যের হাতকে প্রসারিত করুন

  • #2
    সুন্দর একটি পোস্ট।
    পৃথিবীর রঙ্গে রঙ্গিন না হয়ে পৃথিবীকে আখেরাতের রঙ্গে রাঙ্গাই।

    Comment

    Working...
    X