গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রশ্ন !!

[abo horayra]

আস-সালামু আলাইকুম।প্রিয় ভাই, আমার দুটি প্রশ্ন আশা করি দলীল সহ উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন। আল্লাহ আমাদেরকে তার পথে কবুল করে নিন। আমীন
প্রশ্ন নং ১/ আমরা জানি কুফফাররা যদি কোন মুসলিম ভূখন্ডের এক ইঞ্চি জমিও দখল করে নেয় তাহলে পর্যায়ক্রমে সমস্ত বিশ্বের মুসলিমের উপর জিহাদ ফারদুল আইন হয়ে যায়।কিন্তু আন্দালুস তো বহু আগেই মুসলমানদের হাতছাড়া হয়ে যায়; এমনকি হাতছাড়া হওয়ার পর অনেক ইমাম অতিবাহিত হয়েছেন এবং অনেক বীর অতিবাহিত হয়েছেন; কিন্তু তারা তো সেখানে জিহাদ করেননি, তাহলে কি তখন জিহাদ ফারদুল আইন ছিলনা ?
প্রশ্ন নং ২/ কুফফারদের বিভিন্ন ওয়েবসাইট যদি হ্যাক করে নষ্ট করে দেয়া হয় তাহলে কি এটা শরীয়াহ সম্মত হবে?

[Munshi Abdur Rahman]

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ.

প্রশ্ন নং ২/ কুফফারদের বিভিন্ন ওয়েবসাইট যদি হ্যাক করে নষ্ট করে দেয়া হয় তাহলে কি এটা শরীয়াহ সম্মত হবে?

এটার উত্তর নিচের লিংকে দেখুন-

https://dawahilallah.com/showthread.php?20443-%26%232489%3B%26%232509%3B%26%232479%3B%26%232494%3B%26%232453%3B%26%232495%3B%26%232434%3B-%26%232453%3B%26%232480%3B%26%232503%3B-%26%232437%3B%26%232480%3B%26%232509%3B%26%232469%3B-%26%232459%3B%26%232495%3B%26%232472%3B%26%232495%3B%26%232527%3B%26%232503%3B-%26%232472%3B%26%232495%3B%26%232527%3B%26%232503%3B-%26%232478%3B%26%232497%3B%26%232460%3B%26%232494%3B%26%232489%3B%26%232495%3B%26%232470%3B%26%232496%3B%26%232472%3B%26%232470%3B%26%232503%3B%26%232480%3B-%26%232453%3B%26%232494%3B%26%232459%3B%26%232503%3B-%26%232489%3B%26%232488%3B%26%232509%3B%26%232468%3B%26%232494%3B%26%232472%3B%26%232509%3B%26%232468%3B%26%232480%3B%26%232503%3B%26%232480%3B-%26%232476%3B%26%232509%3B%26%232479%3B%26%232494%3B%26%232474%3B%26%232494%3B%26%232480%3B%26%232503%3B

[ইলম ও জিহাদ]

মুসলিম ভূমিগুলো উদ্ধার করা


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

মুহতারাম ভাই, এ ব্যাপারে উলামায়ে কেরাম বহু আগেই ফতোয়া দিয়ে গেছেন। কিন্তু দুঃখের কথা হলো, ফতোয়ার উপর তো আমল করতে হবে। যদি আমলই করা হতো তাহলে তো আর আন্দালুস আমাদের হাত থেকে ছুটে যেতো না। কুরআন সুন্নাহ এবং উলামায়ে কেরামের ফতোয়ার প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে বিলাসিতায় গা ভাসিয়ে দেয়ার কারণেই তো আমাদের ভূমিগুলো হাতছাড়া হয়েছে।

আর অনেক বীর অতিবাহিত হয়েছেন ঠিক কথা, তবে ঘুনেধরা সমাজে দু’চার জন বীর দ্বারা কিছু হয় না। তাছাড়া তারা তখন নিজেদের এলাকাগুলো হাতে রাখতেই হিমশিম খেতেন। অন্য এলাকা উদ্ধার তো দূর কি বাত। তাছাড়া অনেক এলাকা তো তারা উদ্ধার করেছেনও। যেমন বাতেনিরা মিশর ও মাগরিব দখল করে নিয়েছিল। সালাউদ্দীন আইয়্যূবি রহ.সহ অন্যান্যরা সেগুলো উদ্ধার করেছেন। বাইতুল মুকাদ্দাসও তো হাতছাড়া হয়েছিল। পরে উদ্ধার হয়েছে। তাতাররদের হাত থেকেও বহু এলাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তবে যতই দিন গিয়েছে মুসলিমরা দ্বীন থেকে দূরে সরে গেছে। ফলে আবার কাফেররা চেপে বসেছে।


মুসলিম ভূমিগুলো উদ্ধারের ব্যাপারে ইমাম তুসুলি রহ. (১২৫৮হি.) দীর্ঘ আলোচনা করেছেন। সেখান থেকে কয়েকটি ফতোয়া তুলে ধরছি:


এক. মাগরিবের ইমাম শাকরুন বিন হিবাতুল্লাহ (৯৮৩হি.)

(الجهاد اليوم فرض عين، لأنّهم قالوا: "إذ نزل العدوّ ساحة الإسلام، فالجهاد فرض عين" ولا مخالف لهذا القول، واليوم قد نزلوا بساحات، وهتكوا أستاراً وحرمات، وأخذوا معاقل وحصوناً، وسبوا 2 قبائل وبطوناً). اهـ

“বর্তমানে জিহাদ ফরযে আইন। কেননা উলামায়ে কেরাম বলেছেন, শত্রু যখন মুসলিমভূমিতে অবতরণ করে তখন জিহাদ ফরযে আইন হয়ে যায়। এক্ষেত্রে আলেমদের মাঝে কোন মতভেদ নেই।

আর বর্তমানে শত্রুরা অসংখ্য মুসলিমভূমিতে অবতরণ করেছে। মুসলমানদের ইজ্জত-সম্মান ভূলুন্ঠিত করেছে। অসংখ্য দূর্গ ও কেল্লা দখল করেছে। অসংখ্য গোত্র ও গোষ্ঠীর লোকদের বন্দী করেছে”। -আজবিবাতুত তুসুলি: ২৮১


দুই. মাগরিবের ইমাম ফাসি (১০৫২হি.)

(لا يبرأ المسلمون من عهدة المدافعة، ونصرة من عجز، إلاّ إذا استفرغوا الوسع في إزاحة الكفّار من المدائن التي أخذوها للمسلمين، (فلو نازلوها فلم تفتح، وجب عليهم معاودتها كلما أمكنهم ذلك، حتى يفتحها الله عليهم، ولا فرق في ذلك بين المدائن المأخوذة للمسلمين) حديثاً أو قديماً). اهـ

“প্রতিরোধ জিহাদ ও শত্রু প্রতিরোধে অক্ষমদের সাহায্যের দায়িত্ব হতে মুসলমানরা মুক্তি পাবে না, যতক্ষণ না তারা দখলকৃত মুসলিম ভূমিসমূহ হতে কাফেরদের উৎখাত করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা ব্যয় করে। যদি মুসলমানরা (কাফেরদের দখলকৃত ভূমি উদ্ধার করার জন্য) অভিযান চালায়, কিন্তু তারা তা বিজয় করতে ব্যর্থ হয়, তবে তাদের উপর ফরয হবে যখনই সম্ভব পুনরায় হামলা করা, যতক্ষণ না আল্লাহ তায়ালা তাদের বিজয় দান করেন। এক্ষেত্রে বর্তমানে দখলকৃত ও বহুপূর্বে দখলকৃত ভূমির মাঝে কোন পার্থক্য নেই”। -আজবিবাতুত তুসুলি: ২৭৯


তিন. তিউনিসিয়ার ইমাম ইবনে আরাফা (৮০৩হি.)
তিনি ইমাম মাযিরি রহ. (৫৩৬হি.) এর বরাতে বলেন,

وترك من تقدم من أئمة المسلمين مدائن الإسلام في أيدي الكفّار، هم بذلك في محل العصيان، لا في محل الاقتداء والاستنان. اهـ

“পূর্ববর্তী যেসব শাসক মুসলিমভূমি কাফেরদের হাতে ছেড়ে রেখেছে তারা এর দ্বারা গুনাহের কাজ করেছে। এক্ষেত্রে তারা নাফরমান, অনুসরণীয় নয়।” –আজবিবাতুত তুসুলি: ২৭৯


শেষে ইমাম তুসুলি রহ. (১২৫৮হি.) বলেন,

وبهذا نعلم: أن محل كون الجهاد فرض كفاية: إذا لم يكن العدوّ أخذ شيئاً من بلاد المسلمين، وإلاّ كان فرض عين- على ما مرّ تفصيله قريباً- إذ هو: نازل بهم دائماً ما دام آخذاً لثغورهم وبلادهم، فيجب على أئمة وقته، وعلى من يليهم إن عجزوا، على من بعدهم إن ماتوا أو عصوا وتركوا أن يخرجوهم ممّا استولوا عليه، ولا يحلّ لهم تركهم، إلاّ بقدر ما [48/أ] يتجهّزون، ويعاودون ذلك المرة بعد المرّة، حتى يفتحها الله عليهم. اهـ

“উপরোক্ত আলোচনা হতে আমরা বুঝতে পারলাম, জিহাদ ফরযে কেফায়া হওয়ার বিধান ঐ সময়ে প্রযোজ্য যখন মুসলমানদের কোন একটি ভূমিও কাফেরদের দখলে না থাকবে। নতুবা জিহাদ ফরযে আইন। কেননা যতক্ষণ পর্যন্ত মুসলিম ভূমি ও তাদের সীমান্তগুলো কাফেরদের দখলে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত তো কাফেররা মুসলিম ভূমিতেই অবতরণ করে রয়েছে, (আর কাফেররা মুসলিম ভূমি কিংব তার সীমান্তে অবতরণ করলে আলেমদের ঐক্যমতে জিহাদ ফরযে আইন হয়ে যায়।) তাই সমকালীন শাসকদের উপর, আর তারা অক্ষম হলে কিংবা আল্লাহর অবাধ্য হয়ে না করলে, পরবর্তী শাসকবর্গের উপর ফরয হবে কাফেরদেরকে দখলকৃত ভূমি হতে বিতাড়িত করা। তাদের জন্য কাফেরদের ছেড়ে রাখা বৈধ হবে না। কেবল ততটুকু পরিমাণ ছেড়ে রাখা যাবে যতটুকু প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজন পড়ে। এরপর তারা একের পর একের আক্রমণ করতে থাকবে, যতক্ষণ না আল্লাহ তায়ালা তাদের বিজয় দান করেন।” -আজবিবাতুত তুসুলী: ২৮৫

[Bara ibn Malik]

মাশা-আল্লাহ। আল্লাহ আপনার ইলমে বারাকাহ দান করুন আমীন।

[abo horayra]

জাঝাকাল্লাহু খইরান প্রিয় ভাই, আল্লাহ আপনাকে কবুল করে নিন। আপনার ইলমে বারাকাহ দিন। আমীন।

[কালো পতাকাবাহী]

মাশাআল্লাহ, বারাকাল্লাহ।
আল্লাহ তাআলা আমাদের দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করুন, আমীন।
সম্মানিত ইলম ও জিহাদ ভাই! এই পোস্টটি মূল থ্রেডে করলে করলে আরো অনেক ভাই জানতে পারতো। জাযাকাল্লাহ।

[Rumman Al Hind]

হে আল্লাহ্ আমাদের প্রানপ্রিয় সম্মানীত শায়েখ দ্বীনের জন্য অনেক ইলমি শ্রম দেন,
আল্লাহ ভাইকে আপনার রহমত দ্বারা ঢেকে রাখুন সর্বদা সুস্থ ও নিরাপদ রাখুন,
আমাদের মাঝে শায়েখকে দীর্ঘায়িত করে দিন, এবং আমাদেরকে জান্নাতে একত্রিত করুন আমীন।
-------------------
প্রিয় শায়েখ! ছোট একটা প্রশ্নঃ আমাদের সম্মানিতা মুজাহিদা বোন তার মাথার অবানচিত ছেড়া চুল গুছিয়ে রেখেছে,বিক্রয় করে টাকা মুজাহিদদের বাইতুল মালে জমা করার জন্য, বোন জানতে চেয়েছেন এটা জায়েজ হবে কি না?
এর ফলে পর্দার কনো ক্ষতি হবে কি না, উত্তর টা খুবই প্রয়োজন প্রিয় শায়েখ।

[আবু যুবাইর]

মাশাআল্লাহ, ইলম ও জিহাদ ভাই দলীলভিত্তিক সুন্দরভাবে উ্ত্তর দিয়েছেন। জাযাকাল্লাহ ও বারাকাল্লাহ