মুসলিমদের সাথে যুদ্ধরত দেশসমূহের
জনসাধারণকে হামলার লক্ষ্যবস্তু বানানো
_শাইখ আনোয়ার আল-আওলাকি
(রাহিমাহুল্লাহ) আমাদের পাঠকদের কাছে থেকে যেসব
প্রশ্ন পাই তার উত্তর প্রদানের জন্য ইন্সপায়ার
ম্যাগাজিন আমার সাথে একটি ভিডিও রেকর্ডিং করার
অভিমত ব্যক্ত করেছে। সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন
করা হয়েছে মুসলিমদের সাথে যুদ্ধরত
দেশসমূহের বেসামরিক জনসাধারনকে লক্ষ্যবস্তু
করে হামলার শরিয়াহগত বৈধতা নিয়ে। বিষয়টি বিভ্রান্তির
জালে আচ্ছন্ন। অধিকন্তু বর্তমান সময়ের
জিহাদে এটার গুরুত্ব ও সম্পৃক্ততার কারণে এ
প্রশ্নের উত্তরে কুরআন, সুন্নাহর আলোকে
এবং রাসুল (সাঃ), তাঁর সাহাবী এবং পরবর্তিতে
মুজাহিদিনদের জিহাদের বিভিন্ন কর্মপন্থা থেকে
আমি এই প্রবন্ধটি লিখছি। একই সাথে আমরা বর্তমান
সময়ে জিহাদের বাস্তবতাটা দেখব এবং এতে
সফল হওয়ার জন্য কোন পদ্ধতিতে যুদ্ধ চালিয়ে
নেয়া দরকার তাও দেখার চেষ্টা করব। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মাসআলা (ফিকহ) গুলোর
সার–সংক্ষেপ আমি তুলে ধরছি – http://anonym.to/?https://gurabamedi...2468;-দ/ [U] http://anonym.to/?https://dawahilall...om/type/quote/ /U]
[SIZE=4] আমার নিজের দেখা অনেক আলেম এবং অনেক
দ্বীনি ভাই এখনও আজও সংশয়ে আছে ৯/১১ এর
ঘটনাটা কারা ঘটিয়েছে এ নিয়ে! জিহাদ ও মুসলিম
উম্মাহর দুশমন ইহুদি ঘৃষ্ঠান মিডিয়ার দ্বারা প্রভাবিত
হয়ে তারা এই ঘটনা নিয়ে বিভ্রান্ত হয়। এবং মিডিয়ার
নানামুখি তথ্যে তাল-গোল পাকিয়ে ফেলে।
আবার অনেকে এমনও বলে যে, এই ঘটনার দ্বারা
মুসলিম উম্মাহ ফায়দার চেয়ে ক্ষতির সম্মুখিন
হয়েছে বেশী, তাই এই হামলাকে তাঁরা সমর্থনও
দেয় না বা মুসলিম মুজাহিদগন এটা করেছে বলে
মেনে নেয় না। এ বিষয়টি এখনই যদি আমাদের
নিকট পরিষ্কার না হয় তাহলে কেয়মত পর্যন্ত
আমরা বিভ্রান্তই থেকে যাব আর আল্লাহ্ তা‘য়ালা না
করুক দাজ্জাল এসে আমাদের হয়তবা আমাদের
ঈমান হরণ করে নেবে। চতুর্দিক থেকে ইয়াহুদি-
ঘৃষ্ঠানেরা চক্রান্ত করে যাচ্ছে, তারা দাজ্জালকে
শক্তিশালী করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে,
মুসলিমের ঈমান ধ্বংস করার জন্য *উঠি পড়ে
লেগে আছে। আর আমরা! আমরা আজও
গাফেল। আমরা তাদের সেই চক্রান্তে পা দিয়ে
নির্লিপ্ত বসে আছি। আজও যদি আমাদের
বোধোদয় না হয় তাহলে কবে হবে ভাই! কিছু
ভাই এর সহ যোগীতায় ৯/১১ ঘটনার সত্যতার
উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ সহ আমি আপনাদের
খেদমতে একটি নোট পেশ করছি। ইনশা আল্লাহ
আশা করছি আপনাদের নিকট আজ দিবালোকের
ন্যায় পরিষ্কার হয়ে যাবে এই হামলার পুরো বিষয়;
কারা এই হামলা করেছে, কেন করেছে, এই
হামলাটি কুরআন- সুন্নাহ ও মানবতার দৃষ্টিতে কতটুকু
বৈধ হয়েছে? *মুসলিম উম্মাহর কি উপকার হয়েছে
এতে!
“হে মুমিনগন! যদি কোন পাপাচারী তোমাদের
নিকট কোন বার্তা আনয়ন করে, তোমরা তা
পরীক্ষা করে দেখবে, পাছে অজ্ঞতাবশত
তোমরা কোন সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্থ করে
বস, এবং পরে তোমাদের কৃত কর্মের জন্য
তোমাদিগকে অনুতপ্ত হতে হয়।” (সূরা হুজুরাত
৪৯:০৬)
মূল আলোচনায় যাওয়ার পুর্বে একটা বিষয় পরিষ্কার
করা প্রয়োজন যে, লেখাটির শেষ অবধি পড়া
পর্যন্ত নিজের মন মস্তিষ্ককে পশ্চিমা তাগুত
মিডিয়ার প্রচারণা থেকে মুক্ত রাখবেন।
আসুন, এবার মুল আলোচনায় সু-স্বাগতম!
কে বা কারা করেছে এই হামলা?
০১: নবীজীর হাদীস, “আমার উম্মতের একটি
দল সর্বদাই হক্বের পক্ষে লড়াই করবে এবং
কিয়ামত পর্যন্ত তারা বিজয়ী থাকবে।” (মুসলিম)
আর আমরা অন্তত এটুকু বিশ্বাস করি, মুসলিমেরা
যেই জিহাদকে ভুলে গিয়েছিল, *দুনিয়ার বুকে
যেই জিহাদ নিভু নিভু করছিল, সেই জিহাদ পুণরায় জিন্দা
হয়েছে আফগানেই, আজ দুনিয়াময় গ্লোবাল
জিহাদের এই কাজ আফগান তালেবানদের হাত
ধরেই সুসংগঠিত হয়েছে। এই তালেবান, আল
ক্বায়েদাকে তো অন্তত আমরা হক্ব বলে জানি।
আর আল-ক্বায়েদার ভারত উপমহাদেশ শাখা তথা
“ক্বাইদাতুল জিহাদ ফী শিবহিল ক্বররতিল হিনদিয়্যাহ”
তথা “আল-ক্বায়েদা ইন ইন্ডিয়ান সাব কন্টিনেন্ট” এর
আমীর, পাকিস্তানের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন,
মাওলানা আসেম উমর এর ভাষ্য নিচে তুলে ধরা
হল-
“যে সকল লোক ৯/১১ এর ঘটনাকে ইহুদিদের
চক্রান্ত বলে মনে করে এর মূল কারণ মিডিয়া।
মিডিয়া যে মুসলিমদের দুশমন এ কথা তো বলাই
বাহুল্য। মিডিয়া সাধারণ মানুষের মাঝে এমন একটা ধারণা
তৈরি করে ফেলেছে যে, দুনিয়াতে যা কিছু
কল্যানকর, বড়ত্ব-বাহাদুরির বিষয় তার সব কিছুই ওই
পশ্চিমা, ইহুদী আর হিন্দুদের।
তাদের দৃষ্টিভংগি দিয়ে দেখলে মনে হয়, দুনিয়ার
কোন মুসলিমের সাহস নেই ওয়ার্ল্ড-ট্রেড
সেন্টার ধ্বংস করার মত এত বিশাল হামলা চালানোর।
যে সকল লোক ১১ সেপ্টেম্বরের হামলাকে
মুসলিম মুজাহিদদের হামলা বলে মেনে নেয় না
প্রথম কারণ হচ্ছে, তাদের মস্তিষ্কের ভেতর
এই চেতনা ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে যে, কোন
মুসলমান এ-ধরনের বিশাল আক্রমনের যোগ্যতাই
রাখে না। অথচ এ ব্যাপারে তাদের কোন জ্ঞানই
নেই যে, উম্মতে মু'হাম্মাদী এখনো জাগ্রত,
বাজি এখনো তাদের হাতে। আরেকটি কারণ
হচ্ছে, এসব লোকেরা রনাঙ্গন থেকে বহু
দূরে। জিহাদের ময়দান থেকে তাদের নিকট
কোন সংবাদ পৌঁছতে পারে না। তাদের সমস্ত
জ্ঞানের মাধ্যম হচ্ছে, টিভি, রেডিও, সংবাদপত্র
কিংবা এরকম কোন সংবাদ মাধ্যম। পাশাপাশি তাদের
কাছে না আছে ওয়ার্ল্ড-ট্রেড সম্পর্কিত কোন
তথ্য না আছে পেন্টাগন সম্পর্কিত কোন
গোপন খবর। শুধু এতটুকুই জানে যে, এগুলো
শুধু দুটো বিল্ডিং ছিল। প্রকৃতপক্ষে এগুলো ছিল
দুটি বিশাল মুর্তি। যাকে পুরো বিশ্ব "রিজিকদাতা"
মেনে পুজো করে আসছিল। এগুলো ছিল
ইবলিসের কোটি বৎসরের মেহনতের ফসল,
যাকে বিগত যুগে সে বাস্তবতায় রুপ দিতে সক্ষম
হয়েছিল। কিন্তু কতিপয় আল্লাহর বান্দা আল্লাহর
মদদে এগুলোকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে
সক্ষম হয়েছেন।
এ সম্পর্কিত ভূয়া তথ্যগুলো স্বয়ং ইহুদি
নেতৃত্বস্থানিয় ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে পশ্চিমা
মিডিয়াতে ছড়ানো হয়েছে। অতঃপর মুসলিম
সংবাদকর্মীগন একে গভীর পর্যায়ের গবেষণা
মনে করে প্রচার করতে থাকে।
আল্লাহ তা'য়ালার পক্ষ থেকে প্রকাশ্য এ
সাহায্যকে ইহুদি কতৃক ধামাচাপার প্রথম উদ্দেশ্য
হচ্ছে, মুসলিমদের সাহস যাতে বেড়ে না যায়
যে, জিহাদী শক্তির মাধ্যমে আমেরিকাকে
পরাজিত করা সম্ভব। দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হচ্ছে,
সাধারণ ইহুদিদেরকে এ ব্যাপারে ভরসা দেয়া যে,
তারা যাতে না ঘাবড়ায়। ইহুদিদেরকে যদি এ কথা বলা না
হত তাহলে বিশ্বের সকল প্রান্ত থেকে ইহুদিরা
ইসরাইলে গমন করতে অস্বিকার করত (ইহুদিদের
দলকে ভারি করার জন্য এবং দাজ্জালের সাথে যুদ্ধ
করার জন্য তারা বিশ্বের সকল ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা
ইহুদিদের একত্রিত করছে ইজরাইলে)। তারা এ কথা
বলতে পারত যে, তোমরা স্বয়ং নিজেরাই
আমেরিকাতে নিরাপদ নও, সুতরাং আমাদেরকে
কোন ভরসায় ইসরাইলে গমন করতে বাধ্য করছ? *
আর এই হামলাকে ইহুদের হামলা বলে যেসব
প্রমাণ সাব্যস্ত করা হয় তার সবগুলোই ইহুদিদের
বানানো তথ্য; যা তারা সর্বদাই সত্যকে ঘোলাটে
করার জন্য সৃষ্টি করে থাকে। তাদের সাব্যস্তকৃত
প্রমাণগুলো নিয়ে যদি চিন্তাশীল ব্যক্তিবর্গ
গবেষণা করে তাহলে সকল প্রমাণাদি একটিকে
অপরটির বিপরীত দেখতে পাবে। সকল
প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব ও সমাধান হাতে আছে
কিন্তু বিস্তারিতভাবে পেশ করার সময় হাতে নেই।”
(সুত্র: বারমুডা ট্রাইএঙ্গেল ও দাজ্জাল - মাওলানা
আসেম ওমর)
২: স্বয়ং ওসামা বিন লাদেন (রহমাতুল্লাহি ‘আলাইহি) এর
ভাষ্য শুনুন এই লিঙ্ক থেকেপ্রথম পর্ব;
দ্বিতীয় পর্ব; তৃতীয় পর্ব)।
৩: ২০০৬সালে আল কায়দার অফিসিয়াল মিডিয়া “আস
সাহাব” মেনহাটন রেইড নামে একটি ডকুমেন্টারি
ফিল্ম বের করে। যার মধ্যে উক্ত হামলার
আলোচনা প্রমাণসহ উপস্থিত করা হয়। এই লিঙ্ক
থেকে আপনার সুবিধামত ফাইলটি ডাউনলোড
করে দেখে নিন।
কেন করা হয়েছে এই হামলা!
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন দ্বিতীয় টার্মে
শাসনকালে একবার ঘোষণা করলেন যে,
'আমেরিকা তার যোগ্যতা বলে এই পর্যায়ে
এসে পৌছেছে যে সমগ্র পৃথিবীবাসীর উচিৎ
আমেরিকার অনুসরণ করা; যাতে তারাও আমেরিকার
মতো সফল হতে পারে।' বিল ক্লিনটন যখন এই
কথা বলেছিলেন তখন আমেরিকার অবস্থা ছিলো
যে তাদের প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার পুর্ণ
হওয়ার পরও প্রতিবছর জনপ্রতি প্রায় ৫০হাজার ডলার
উদ্ধৃত থাকতো। বিশ্বের অন্যান্য দেশ যখন
খাদ্য সঙ্কটে ভোগতো তখন আমেরিকা তার
অবশিষ্ট খাদ্যকে সমুদ্রে ফেলতো। ক্লিনটন
যুগকে আমেরিকার স্বর্ণযুগ হিসেবে ধরা হয়।
ঠিক এই মুহুর্তে ১৯৯৬সালে আমীরুল মুজাহিদীন
শায়খ উসামা বিন লাদেন রাহ. আমেরিকার বিরুদ্ধে
জিহাদ ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, মুসলমানদের
প্রথম কিবলা বায়তুল মুকাদ্দস ফিরিয়ে দাও; আরব
উপদ্বীপ থেকে ইয়াহুদী-খৃষ্টান মার্কিন সৈন্য
হটিয়ে নাও; ইরাক থেকে অবরোধ উঠিয়ে নাও।
কারণ তখন আন্তর্জাতিক অবরোধের কারণে
ইরাকে প্রায় দশ লাখ শিশু খাদ্য-চিকিৎসার অভাবে মারা
যায়।
আমেরিকার কাছে শায়খ উসামার এই ইয়েমেনি
হুংকার হাতির পিঠে মশা বসার মতোই মনে হলো।
এদিকে উসামা বিন লাদেন শুরু করলেন আমেরিকার
বিরুদ্ধে জিহাদ। নব্বই দশকে সোমালিয়া থেকে
আল- কায়দার মুজাহিদরা মার্কিনিদের তাড়ানোর পর
কেনিয়ার নাইরোবিতে অবস্থিত মার্কিন দুতাবাসে
হামলা করেন। এরপরে এডেন সাগরে উপস্থিত
মার্কিন রণতরীতে হামলা করেন। যেহেতু এসব
হামলা আমেরিকার বাহিরে তাই এই সমস্ত হামলা সফল
হবার পর শায়খ উসামা চিন্তা করেন আমেরিকার
ভেতরে একটি ভয়ংকর হামলা পরিচালন করবেন। এটা
এ কারণে যে যাতে করে মানুষের অন্তরে
আমেরিকার প্রতি ভীতি দুর হয়ে যায়। মার্কিনিরা
যে অপরাজেয় নয় তাও প্রমাণিত হয়ে যায়। এই
উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই গাযওয়াজে
মেনহাটন রেইড তথা ৯/১১ এর হামলার পরিকল্পনা
করা হয়।
আফগানিস্তানে শায়খ উসামার সার্বিক তত্ত্বাবধানে
চার আরব ভাইদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এই
প্রশিক্ষণের প্রধান লক্ষ্য ছিলো আমেরিকার
তিনটি প্রধান কেন্দ্রে আঘাত হানা। ১- হোয়াইট
হাউজে, কারণ বিশ্ব নির্যাতনের ছক এখানেই আকা
হয়। ২- পেন্টাগনে আমেরিকার সামরিক সদর
দফতরে এবং ৩- আমেরিকার অর্থনৈতিক মেরুদন্ড
টু ইন টাওয়ারে। এই অপারেশনের নাম দেওয়া হয়
মেনহাটন রেইড। নির্ধারিত তারিখের কয়েকদিন
পুর্বে এইসব ভায়েরা আফগান থেকে
আমেরিকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। সেখানে পুর্ব
থেকেই প্রস্তুত আরো ১৩জন বিমান
বিশেষজ্ঞ ভায়ের সাথে যুক্ত হন। এভাবে
একত্রিত হলেন মোট ১৭জন ভাই। প্রথমে
সিদ্ধান্ত হয় ১০টা বিমান ছিনতাই করবেন। পরে হামলার
মুল পরিকল্পনাকারী খালিদ মোহাম্মাদ শেখের
পরামর্শে কমিয়ে ৪টায় আনা হয়। নির্ধারিত তারিখে
সকাল আটটায় হামলার সময় নির্ধারণ করা হয়। কারণ
অন্য সময় হামলা হলে সাধারণ মানুষের বেশি ক্ষতির
আশঙ্কা ছিলো।
আলহামদুলিল্লাহ ৪টা যাত্রী বিমান ছিনতাই করা হলো;
একটি হোয়াইট হাউজের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
কিন্তু মুল জায়গায় পৌছার পুর্বেই পথিমধ্যে ধ্বংস
হয়ে যায়। অন্যটি রওনা হয় পেন্টাগনের
উদ্দেশ্যে, যেহেতু পেন্টাগন সামরিক সদর
অফিস ছিলো তাই হামলায় পেন্টাগনের কিছু ধ্বংস
হয়। আর বাকী দুটো রওয়া হয় বিশ্ব বাণিজ্য
কেন্দ্র ১১০তলার টু ইন টাওয়ারের উদ্দেশ্যে।
আল হামদুলিল্লাহ এটি পুরোপুরি সফল হয়। এভাবে
সম্পন্ন হয় মেনহাটন রেইড অপারেশন। কিন্তু
আমেরিকা মুজাহিদদেরকে বদনামী করার
উদ্দেশ্যে শুধু টু ইন টাওয়ারে হামলার কথা বার বার
জপে। বাকীগুলো ইচ্ছে করেই চেপে
রাখতে চায়। কারণ টু ইন টাওয়ারের কথা বলে
মানুষের যতটুকু মুজাহিদবিদ্বেষী করা যাবে;
হোয়াইট হাউজ পেন্টাগনের কথা বলে ততটুকু
করা যাবে না।
এখন প্রশ্ন হলো, এই হামলাটি কুরআন- সুন্নাহ ও
মানবতার দৃষ্টিতে কতটুকু বৈধ হয়েছে? আসুন এর
জবাব কুরআন-সুন্নাহ ও মানবাধিকারের আলোকেই
খুঁজে বের করি।
কুরআন থেকে
আল্লাহ তাআলা বলেন, ... সম্মানিত মাসই সম্মানিত
মাসের বদলা। আর সম্মান রক্ষা করারও বদলা
রয়েছে। বস্তুতঃ যারা "তোমাদের উপর
সীমালংঘন করেছে, তোমরা তাদের উপর
সীমালংঘন কর, যেমন সীমালংঘন তারা করেছে
তোমাদের উপর"। আর তোমরা আল্লাহকে ভয়
কর এবং জেনে রাখ, যারা পরহেযগার, আল্লাহ
তাদের সাথে রয়েছেন। (সুরা বাকারাহ - ১৯৪)
আর সুরা নাহলের ১২৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ
বলেন, 'যদি তোমরা প্রতিশোধ গ্রহণ কর, তবে
ঐ পরিমাণ প্রতিশোধ গ্রহণ করবে, যে পরিমাণ
তোমাদেরকে কষ্ট দেয়া হয়। যদি সবর কর,
তবে তা সবরকারীদের জন্যে উত্তম।' উক্ত
দুটো আয়াতের মধ্যেই তাদের দ্বারা জুলুমের
পরিমাণ প্রতিশোধ গ্রহণের অনুমতি প্রদান করা
হয়েছে। (বিস্তারিত দেখতে তাফসীরে ইবনে
কাসীর হাতে নিন) এবার চিন্তা করে বলুনতো
১৯৪৭ সাল ২০০১ সাল পর্যন্ত আমেরিকা
ইসরাইলকে সাহায্য করে এবং ৯০দশকে ইরাক
আক্রমণ পরে উক্ত দেশে পরে ২০০৩
পর্যন্ত অবরোধ করে যে পরিমাণ জুলুম ও
সীমাসংঘন মুসলমানদের উপর করেছে, সে
তুলনায় কি ৯/১১ এর বরকতময় হামলার সীমালংঘন
বেশি হয়ে গেছে?
সুন্নাহ থেকে
২য় হিজরিতে মক্কার সর্দার আবু সুফিয়ান (তখন
অমুসলিম ছিলেন) যখন সিরিয়া থেকে বাণিজ্য
কাফেলা নিয়ে মদীনা হয়ে যাচ্ছিলেন। তখন
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম সাহাবা
রাদিআল্লাহু আনহুমদেরকে সাথে নিয়ে মক্কার
ওই বণিক কাফেলা কেড়ে নেওয়ার জন্যে বের
হয়ে হয়েছিলেন। কারণ মুসলমানরা তখন
ভালোভাবেই জানতেন যে এই ব্যবসার লভ্যাংশ
মুসলমানদের বিরুদ্ধেই ব্যবহৃত হবে, আর
এগুলো হলো মুহাজির মুসলমানদের রেখে
আসা সম্পদ। তাই এগুলো লুট করা প্রয়োজন।
এরই জের ধরে পরে বদর যুদ্ধ হয়। এবার বলুন
তো, ওয়ার্ড ট্রেড সেন্টারের মাধ্যমে
আমেরিকা যেসব অর্থ উপার্জন করে তা কি
ইসলামি আন্দোলন ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে
ব্যবহৃত হয় নি? আমেরিকা কেনো ইসরাইল ও
দালাল মুরতাদ মুসলিমদেশের শাসকদেরকে অর্থ
দেয়? আমেরিকার কি মুসলিম ভুমির খনিজদ্রব্য লুট
করে নি?
খন্দকের যুদ্ধের পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ও সাহাবারা মদীনায় বিশ্রাম না নিয়ে
আল্লাহর নির্দেশে সরাসরি ইয়াহুদি গোত্র বনী
কুরাইজা অবরোধ করেন। পরে যখন ইয়াহুদিরা
আত্মসমর্পণ করে তখন ইয়াহুদিদের প্রিয় ব্যক্তি
বিশিষ্ট সাহাবী আহত সাদ বিন মুয়াজ রাজি.-এর
সিদ্ধান্তে ইয়াহুদি পুরুষদেরকে জবাই করা হয় এবং
তাদের স্ত্রী ও শিশুদেরকে বাদী বানানো হয়।
পরে সাদ (রাঃ)-এর সিদ্ধান্ত আল্লাহর কাছে পছন্দ
হয়েছে বলে ওহি আসে। দেখুন. এখানে
পুরুষদের হত্যার ক্ষেত্রে এ কথা বলা হয় নি যে
বেসামরিকদেরকে ছেড়ে দেওয়া হবে আর
সামরিকদেরকে হত্যা করা হবে। তাহলে কেনো
৯/১১ এ সামরিক বেসামরিকের প্রশ্ন তোলায়
হয়?
হুদায়বিয়ার সন্ধির মধ্যে একটি শর্ত ছিলো যে যদি
মক্কা থেকে কেউ যদি মুসলমান হয়ে মদীনায়
আসে তাহলে তাকে মক্কাবাসীর হাওলায় দেওয়া
হবে। সেই সুবাদে হযরত আবু জান্দাল ও আবু
বসীর রাজি.কে মক্কার কাফিরদের হাতে অর্পণ
করা হয়। কিন্তু উনারা মক্কা থেকে পালিয়ে
সমুদ্রের উপকুলে গিয়ে আশ্রয় নেন।
সেখানে তারা ছোট খাট একটি গেরিলাবাহিনী তৈরি
করেন। পরে এরা বিভিন্ন সময় মক্কার বনিক
কাফেলায় হামলা শুরু করেন। তখনতো রাসুলুল্লাহ
তাদেরকে নিষেধ করে বলেন নি যে তোমরা
বেসামরিক কাফের উপর হামলা করিও না। তাহলে
আজ যখন আমাদের ভায়েরা হারবি দেশের উপর
হামলা চালান তখন কেনো ওরা এত নাক সিটকায়?
(উপরের প্রতিটি ঘটনা সবার কাছে প্রসিদ্ধ. তাই
সুত্র দিলাম না। তারপরও যদি বিশ্বাস না হয় তাহলে
দেখুন বুখারী শরীফের কিতাবুল মাগাজি,
নবীজীর সীরাত ও আল বিদায়া ওয়ান নেহায়াহ)
এবার মানবাধিকারের আলোকে
আমরা সবাই জানি বর্তমানে ইসরাইল গাজায় নির্বিচারে
বিমান হামলা চালাচ্ছে। এর জবাবে আমাদের
ভায়েরাও গাজা থেকে হাজার খানেক রকেট
ছুড়েছেন। এতে কিন্তু ইসরাইলের অনেক
নিরীহ লোক ও বেসামরিক স্থাপনারও ক্ষতি
হচ্ছে। কিন্তু এখানে কেউ গাজার রকেট
ছোড়াকে অপরাধ হিসেবে দেখছে না। কারণ
ইসরায়েল যে পরিমাণ ক্ষতি করছে এ তুলনায় গাজার
জবাব কিচ্ছুই নয়। এবার তাহলে বলুন, আমেরিকা যে
পরিমাণ ইসলাম ও মুসলমানদের ক্ষতি করেছে সে
তুলনায় কি ৯/১১এর ক্ষতি তেমন কিছু?
আসুন এবার দেখি ৯/১১ এর হামলার পর আমাদের
কী কী লাভ হয়েছে
যখন ৯/১১ হামলা হয় তখন রাজনীতি বোঝার
মতো আমার বয়েস ছিল না। কিন্তু যতটুকু বুঝতে
পেরেছি যে এই ঘটনার পরক্ষণে বিশ্বের
সমস্ত মুসলমান আনন্দিত হয়েছেন। কিন্তু
যেহেতু মানুষ সর্বদা শক্তির পক্ষে তাই
আমেরিকার আগ্রাসনে তারা ফিরে গেলেন সেই
ভীরু পুর্বাস্থায় অবস্থায়। কিন্তু যেহেতু
মুসলমানরা প্রথমে খুশি হয়েছেন তাই তাদের
স্মরণে কুরআনের এই আয়াত পড়ছি- 'যুদ্ধ কর
ওদের সাথে, আল্লাহ তোমাদের হস্তে তাদের
শাস্তি দেবেন। তাদের লাঞ্ছিত করবেন, তাদের
বিরুদ্ধে তোমাদের জয়ী করবেন এবং
মুসলমানদের অন্তরসমূহ শান্ত করবেন।' [সূরা তাওবাঃ
১৪]
৯/১১ এর পরে সমগ্র ইউরোপ- আমেরিকা
ইসলাম নিয়ে গবেষণায় লিপ্ত হয়। যার ফলে শুধু
আমেরিকায়ই ৪৭ হাজার লোক ইসলাম গ্রহণ করে।
ইউরোপ-আমেরিকার কোথাও কোনো একটি
ঘটনাকে কেন্দ্র এক সাথে এত লোক ইসলাম
গ্রহণ করে নি। এটা কি ৯/১১এর বরকতের নিদর্শন
নয় ?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকার মাধ্যমে
হিটলারের পরাজয়ের কারণে আমেরিকা বিশ্বশান্তির
ধ্বজাধারী(?) হয়ে যায়। আর ৮০ দশকে
আফগানে জিহাদ আমেরিকার রহস্যজনক ভুমিকার
কারণে আমেরিকাকে অনেক মুসলিম বন্ধু ভাবা শুরু
করে। কিন্তু ৯/১১এর পর আজ আমেরিকা বিশ্বের
সবার ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয়েছে।
ক্লিনটনের আমলে যে আমেরিকা ছিলো
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী রাষ্ট্র; আজ সে
আমেরিকার অর্থনীতি দেউলিয়া হয়ে গেছে।
ঋণে জর্জরিত আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পয়সার
অভাবে এশিয়া সফর পর্যন্ত বাতিল করতে বাধ্য
হয়েছেন। ৯/১১ এর পুর্ব পর্যন্ত আমেরিকার
নাম শুনলে সবার অন্তর কেপে উঠত। কিন্তু আজ
কি কেউ আমেরিকাকে আগের মতো ভয় পায়?
এটা কি আমাদের ওই মাত্র ১৭জন ভায়ের কুরবানীর
ফলাফল নয়? আমরা তাদেরকে শহীদই মনে করি।
আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতুল ফিরদাউসে স্থান দিন।
আমীন।
উপসংহার
লেখাটি পড়ার পরে অনেকে ভাবতে পারে এই
হামলা মুসলিম মুজাহিদেরা করেছে, একথা গোপন
রাখলে বিরোধী শক্তির লাভ কি? লাভ তো
অবশ্যই আছে। ইয়াহুদি-ঘৃষ্ঠানেরা সব সময় সব
অবস্থায় মুসলিমদের দুশমনি করবে এটাই তো
স্বাভাবিক! তারা তো সবসময়ই চায় *মুসলিমেরা যেন
তাদের গোলামি করে। তারা খুব ভাল করেই জানে
যে, মুসলিমরা যদি একবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে
পারে তাহলে দুনিয়াতে তাদের অস্তিত্ব বিলিন
হয়ে যাবে। ইতিহাস এমনটাই বলে। তাই তারা সবসময়
চেয়েছে দুনিময় মুসলিমদের উপর কতৃত্ব
করতে; আজ হয়েছেও তাই। এমন কোন
ক্ষেত্র নেই যেই ক্ষেত্রে তারা মুসলিমদের
উপর কতৃত্ব করছে না। রাজনিতি বলেন, অর্থনিতি
বলেন, সংস্কৃতি বলেন, ইতিহাস-ঐতিহ্য বলেন সব
জায়গায় তাদের কতৃত্ব, আর তাদের সবচেয়ে বড়
দখল হচ্ছে মিডিয়া। তাদের এই কতৃত্ব হাত ছাড়া
হতে পারে একমাত্র মুসলিম কতৃক জিহাদি বিপ্লব
সৃষ্টির মাধ্যমে। তাই জিহাদ নিয়ে তাদের এত ভয়,
এত ষড়যন্ত্র, এত অপপ্রচার।
মুসলিম বিশ্বে যদি চলমান জিহাদের সফলতা,
জিহাদের বরকত, জিহাদের অলৌকিতার কথা প্রচার
হয়ে যায় তাহলে মুসলিম যুবকেরা জিহাদের
ব্যাপারে আরো উদ্বুদ্ধ হবে, জিহাদ আরো
শক্তিশালী হবে, জিহাদি বিপ্লবকে দমানো
অসম্ভব হয়ে যাবে। তাই তারা তাদের মিডিয়ার
মাধ্যমে মানুষকে বোঝাতে লাগল এগুলো
আসলে কোন মুসলিম করেনি, এটা জিহাদের
কোন অংশ নয়, এগুলো তাদের নিজেদেরই
কাজ, এগুলো তাদের আভ্যন্তরিণ কৌশল মাত্র। তারা
এধরনের ঘটনার নানামুখি বিভ্রান্তিকর তথ্য দিতে
থাকে মানুষদেরকে। ফলে মানুষেরা এসব নিয়ে
চিন্তা-ভাবনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এবং তাদের
উদ্দেশ্য মূলক বক্তব্যগুলোই শেষ পর্যন্ত
মেনে নেয়। এবং এখানেই জিহাদ ও ইসলামের
দুশমনেরা সফল।
আল্লাহ্ তা‘য়ালা আমাদেরকে সত্যের সঙ্গেই
রাখুন। আমীন, http://anonym.to/?https://facebook.c...78&__tn__=%2As
Comment