মুরতাদকে যারা মুরতাদ মনে করে না তারাও কি কাফের?
দৃষ্টিপাত:
কিছু ভাইয়ের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে Mimbarut Tawhid নামক আইডির মুহতারাম ভাই প্রশ্নটির উত্তর দিয়েছেন। প্রশ্নোত্তরটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় ও এ ব্যাপারে অনেকের সংশয় থাকার কারণে আলাদা থ্রেডে পোস্ট করলাম। ভাইদের কাছে অনুরোধ থাকবে- সাধ্যানুযায়ী অনলাইন ও অফলাইনে প্রশ্নোত্তরটি ছড়িয়ে দেওয়ার। আশা করি আল্লাহ চাইলে উম্মাহ ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে। জাযাকুমুল্লাহ
উত্তরদাতা ভাইয়ের জন্য দু‘আ- আল্লাহ তা‘আলা যেন মুহতারাম ভাইয়ের ইলমে ভরপুর বারাকাহ দান করেন ও শাহাদাতের পেয়ালায় চুমুক দেওয়ার তাওফীক দান করেন। আমীন
**********************
দৃষ্টিপাত:
কিছু ভাইয়ের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে Mimbarut Tawhid নামক আইডির মুহতারাম ভাই প্রশ্নটির উত্তর দিয়েছেন। প্রশ্নোত্তরটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় ও এ ব্যাপারে অনেকের সংশয় থাকার কারণে আলাদা থ্রেডে পোস্ট করলাম। ভাইদের কাছে অনুরোধ থাকবে- সাধ্যানুযায়ী অনলাইন ও অফলাইনে প্রশ্নোত্তরটি ছড়িয়ে দেওয়ার। আশা করি আল্লাহ চাইলে উম্মাহ ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে। জাযাকুমুল্লাহ
উত্তরদাতা ভাইয়ের জন্য দু‘আ- আল্লাহ তা‘আলা যেন মুহতারাম ভাইয়ের ইলমে ভরপুর বারাকাহ দান করেন ও শাহাদাতের পেয়ালায় চুমুক দেওয়ার তাওফীক দান করেন। আমীন
**********************
উত্তর:
শাইখুল ইসলাম মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহহাব নজদী রহ. বলেছেন,
من لم يكفر المشركين أو شك في كفرهم أو صحح مذهبهم كفر إجماعا.
“যে ব্যক্তি কাফেরদেরকে কাফের মনে করে না, কিংবা তারা কাফের হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ করে কিংবা তাদের ধর্মকে সঠিক বলে, সে সকলের ঐক্যমতে কাফের।”
“যে ব্যক্তি কাফেরদেরকে কাফের মনে করে না, কিংবা তারা কাফের হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ করে কিংবা তাদের ধর্মকে সঠিক বলে, সে সকলের ঐক্যমতে কাফের।”
তবে এর দ্বারা উদ্দেশ্য ঐসব কাফের যাদের কাফের হওয়ার কথা কুরআন হাদিসে সুস্পষ্ট উল্লেখ আছে। যেমন ইয়াহুদ, নাসারা, মাজূস … ইত্যাদী কাফের সম্প্রদায়। হিন্দু, বৌদ্ধসহ অন্যান্য সুস্পষ্ট কাফের সম্প্রদায়ও এর অন্তর্ভুক্ত। তদ্রূপ যে ব্যক্তি সুস্পষ্টভাবে ইসলাম ত্যাগ করে এসব ধর্মের কোন একটাতে প্রবেশ করেছে সেও এর অন্তর্ভুক্ত। এদেরকে যে কাফের মনে না করবে সে কাফের হয়ে যাবে। কারণ, কুরআনের অসংখ্য আয়াত এবং অসংখ্য হাদিস দ্বারা তাদের কাফের হওয়াটা সুস্পষ্ট। এদেরকে কাফের না মানার অর্থ অসংখ্য আয়াত ও হাদিসকে প্রত্যাখ্যান করা, যা সুস্পষ্ট কুফর।
পক্ষান্তরে যাদের কাফের হওয়াটা স্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই, বরং বিভিন্ন কারণে তাতে সন্দেহ সংশয়ের অবকাশ রয়েছে; যারা গভীরভাবে তাহকীক করেছেন তাদের নিকট তাদের কুফরটা ধরা পড়েছে আর যারা গভীরভাবে তাহকীক করতে পারেনি কিংবা যাদের ইলমের স্বল্পতা রয়েছে তাদের নিকট ধরা পড়েনি: এমনসব কাফের এখানে উদ্দেশ্য নয়। যাদের নিকট এদের কুফরটা স্পষ্ট নয়, তারা এদেরকে কাফের মনে না করলে তারা কাফের হবে না। বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর কুফরটা এই শ্রেণীভুক্ত।
শায়খ আব্দুল্লাহ ইবনে নাসের আর-রশীদ বলেন,
الثالث: أن يكون تكفيره محتملاً للشبهة، كالحكام الحاكمين بغير ما أنزل الله ونحوهم، فهؤلاء وإن كان كفرهم قطعيًّا عند من حقق المسألة، فإنَّ ورود الشبهة محتمل فلا يكفَّر من لم يكفِّرهم، إلاَّ إن أُقيمت عليه الحجة، وكٌشفت عنه الشبهة وأزيلت، وعرف أنَّ حكم الله فيهم هو تكفيرهم. -اسئلة منبر التوحيد والجهاد، رقم السؤال: 5071
তৃতীয় প্রকার: যার তাকফীরের মাঝে সন্দেহ সংশয়ের অবকাশ আছে। যেমন, আল্লাহ তাআলার নাযিলকৃত বিধান ব্যতীত ভিন্ন বিধান দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনাকারী শাসক ও এ জাতীয় ব্যক্তিরা। মুহাক্কিকদের নিকট এদের কুফরটা অকাট্য হলেও তাতে সন্দেহ সংশয়ের অবকাশ রয়েছে। কাজেই এদেরকে যারা কাফের মনে করে না তাদেরকে কাফের বলা হবে না; যতক্ষণ না তাদের উপর হুজ্জত কায়েম করা হয়, তাদের সংশয় দূর করা হয় এবং তারা বুঝতে পারে যে, এদেরকে তাকফীর করাই এদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার ফায়সালা। -মিম্বারুত তাওহিদ, প্রশ্ন নং ৫০৭১
তৃতীয় প্রকার: যার তাকফীরের মাঝে সন্দেহ সংশয়ের অবকাশ আছে। যেমন, আল্লাহ তাআলার নাযিলকৃত বিধান ব্যতীত ভিন্ন বিধান দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনাকারী শাসক ও এ জাতীয় ব্যক্তিরা। মুহাক্কিকদের নিকট এদের কুফরটা অকাট্য হলেও তাতে সন্দেহ সংশয়ের অবকাশ রয়েছে। কাজেই এদেরকে যারা কাফের মনে করে না তাদেরকে কাফের বলা হবে না; যতক্ষণ না তাদের উপর হুজ্জত কায়েম করা হয়, তাদের সংশয় দূর করা হয় এবং তারা বুঝতে পারে যে, এদেরকে তাকফীর করাই এদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার ফায়সালা। -মিম্বারুত তাওহিদ, প্রশ্ন নং ৫০৭১
শায়খ আবু মুসআব উমাইর আল-আওলাক্বী রহ. বলেন,
قد يقول قائل: إذا كنتم تقولون يسع الخلاف في التنزيل فلماذا القاعدة تشنع على العلماء الذين لا يكفرون الحكام؟ نقول: هذا سؤال جيد ولابد من بيانه، فأقول: إن القاعدة لا تشنع على كل من لم يكفر الحكام، فعندهم الذين لا يكفرون الحكام من العلماء على قسمين:-
أ عالم بعيد عن سلطانهم، تجرد واجتهد ولم يصل إلى تكفيرهم، ولم يُستخدم كوسيلة لحرب المجاهدين، فهذا يقدر عند القاعدة وله اجتهاده.
ب عالم لم يكفر الحكام واستُخدم لحرب المجاهدين، ووصفهم بالفئة الضالة ومدح الطواغيت وخذل الأمة الإسلامية، فهذا الذي تحذر منه القاعدة؛ لأن ضرره على الأمة خطير. -لماذا اخترت القاعدة؟ ـ أبي مصعب محمد عمير الكلوي العولقي، ص: 46
কেউ আপত্তি উঠাতে পারে যে, আপনারা যখন বলে থাকেন, ফতোয়া প্রদানের ক্ষেত্রে মতবিরোধের অবকাশ রয়েছে, তখন যেসব আলেম শাসকদেরকে কাফের মনে করে না আলকায়েদা তাদের সমালোচনা করে কেন?
উত্তরে বলবো, এটি একটি সুন্দর প্রশ্ন। এটি স্পষ্ট করা জরুরী। আমি বলি, শাসকদেরকে কাফের বলে না এমন সকলেরই আলকায়েদা সমালোচনা করে না। যেসকল আলেম শাসকদেরকে কাফের মনে করে না আলকায়েদার দৃষ্টিতে তারা দুই ভাগে বিভক্ত:
১. এমন আলেম যিনি শাসকদের থেকে দূরে। ঐকান্তিক চেষ্টা গবেষণা সত্বেও যার কাছে শাসকরা কাফের বলে মনে হলো না। তবে তাকে মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কোন ওসীলা হিসেবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। আলকায়েদা তার কদর করে। আর তিনি তার নিজের ইজতিহাদ মতো চলবেন।
২. এমন আলেম যে শাসকদেরকে কাফের মনে করে না, তবে মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তাদেরকে গোমরাহ ফেরকা বলে আখ্যায়িত করছে। তাগুতদের প্রশংসা করছে। প্রয়োজন মুহূর্তে মুসলিম উম্মাহকে সাহায্য করছে না। এই আলেমের ব্যাপারেই আলকায়েদা সতর্ক করে থাকে। কেননা, উম্মতের জন্য সে মারাত্নক ক্ষতিকর। -লিমা যা ইখতারতুল কায়েদা: ৪৬
أ عالم بعيد عن سلطانهم، تجرد واجتهد ولم يصل إلى تكفيرهم، ولم يُستخدم كوسيلة لحرب المجاهدين، فهذا يقدر عند القاعدة وله اجتهاده.
ب عالم لم يكفر الحكام واستُخدم لحرب المجاهدين، ووصفهم بالفئة الضالة ومدح الطواغيت وخذل الأمة الإسلامية، فهذا الذي تحذر منه القاعدة؛ لأن ضرره على الأمة خطير. -لماذا اخترت القاعدة؟ ـ أبي مصعب محمد عمير الكلوي العولقي، ص: 46
কেউ আপত্তি উঠাতে পারে যে, আপনারা যখন বলে থাকেন, ফতোয়া প্রদানের ক্ষেত্রে মতবিরোধের অবকাশ রয়েছে, তখন যেসব আলেম শাসকদেরকে কাফের মনে করে না আলকায়েদা তাদের সমালোচনা করে কেন?
উত্তরে বলবো, এটি একটি সুন্দর প্রশ্ন। এটি স্পষ্ট করা জরুরী। আমি বলি, শাসকদেরকে কাফের বলে না এমন সকলেরই আলকায়েদা সমালোচনা করে না। যেসকল আলেম শাসকদেরকে কাফের মনে করে না আলকায়েদার দৃষ্টিতে তারা দুই ভাগে বিভক্ত:
১. এমন আলেম যিনি শাসকদের থেকে দূরে। ঐকান্তিক চেষ্টা গবেষণা সত্বেও যার কাছে শাসকরা কাফের বলে মনে হলো না। তবে তাকে মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কোন ওসীলা হিসেবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। আলকায়েদা তার কদর করে। আর তিনি তার নিজের ইজতিহাদ মতো চলবেন।
২. এমন আলেম যে শাসকদেরকে কাফের মনে করে না, তবে মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তাদেরকে গোমরাহ ফেরকা বলে আখ্যায়িত করছে। তাগুতদের প্রশংসা করছে। প্রয়োজন মুহূর্তে মুসলিম উম্মাহকে সাহায্য করছে না। এই আলেমের ব্যাপারেই আলকায়েদা সতর্ক করে থাকে। কেননা, উম্মতের জন্য সে মারাত্নক ক্ষতিকর। -লিমা যা ইখতারতুল কায়েদা: ৪৬
অতএব, যেসব আলেমের তাহকীকের অভাবে কিংবা ইলমের স্বল্পতার কারণে শাসকদের কুফরটা তাদের নিকট স্পষ্ট নয়, তাদেরকে এ কারণে কাফের বলার যাবে না। তবে অন্য কোনো বিভ্রান্তি যার মাঝে আছে সে অবশ্যই সমালোচনার উপযুক্ত।
নামাযের বিধান: তারা যেহেতু কাফের নয় তাই তাদের পেছনে নামায পড়লে নামায হয় যাবে। বরং যদি সহীহ আকীদার ইমাম না পাওয়া যায় তাহলে এদের পেছনেই নামায আদায় করতে হবে। তবুও জামাআত ছাড়া যাবে না। যেমনটা শায়খ মাকদিসী হাফিজাহুল্লাহর ফতোয়ায় বলা হয়েছে।
****************
শাইখ আবু মুহাম্মাদ আল মাকদিসী হাফিজাহুল্লাহ- এর ফতোয়াটি দেখতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন-
মুরতাদ শাসকের জন্য দু‘আ করে, এমন ব্যক্তির পিছনে সালাত আদায়ের হুকুম কি?
https://dawahilallah.com/showthread....%232497%3B-amp
শাইখ আবু মুহাম্মাদ আল মাকদিসী হাফিজাহুল্লাহ- এর ফতোয়াটি দেখতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন-
মুরতাদ শাসকের জন্য দু‘আ করে, এমন ব্যক্তির পিছনে সালাত আদায়ের হুকুম কি?
https://dawahilallah.com/showthread....%232497%3B-amp
Comment