রাবেতাতুল আলামিল ইসলামী’র আল মাজমাউল ফিকহী (ফিকহী বোর্ড) ফুরুয়ী বিষয়ে ইখতিলাফের ব্যাপারে মন্তব্য করেছেনঃ
আকীদা ও বিশ্বাসগত বিষয়ে মতভেদ হচ্ছে يجب أن لا يكون অর্থাৎ তা না হওয়া অপরিহার্য। আর আহকাম ও বিধানের বিষয়ে যে মতভেদ তা لا يمكن أن لا يكون অর্থাৎ তা না হওয়া অসম্ভব।
এতে শায়খ ইবনে বায (রঃ) ও শায়খ আবদুল্লাহ উমর নাসীফ এর মতো সালাফী আলেমদের স্বাক্ষরও আছে।
শাইখ সালিহ আল উসাইমিন (রঃ) ‘আল উসুল মিন ইলমিল উসুল’ বই এ ‘তাকলীদ’ অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেনঃ
واصطلاحاً: اتباع من ليس قوله حجة.
يكون التقليد في موضعين:
الأول: أن يكون المقلِّد عاميًّا لا يستطيع معرفة الحكم بنفسه ففرضه التقليد؛ لقوله تعالى: ) فَاسْأَلوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لا تَعْلَمُونَ)(النحل: الآية43)، ويقلد أفضل من يجده علماً وورعاً، فإن تساوى عنده اثنان خير بينهما.
الثاني: أن يقع للمجتهد حادثة تقتضي الفورية، ولا يتمكن من النظر فيها فيجوز له التقليد حينئذ، واشترط بعضهم لجواز التقليد أن لا تكون المسألة من أصول الدين التي يجب اعتقادها؛ لأن العقائد يجب الجزم فيها، والتقليد إنما يفيد الظن فقط.
অর্থাৎ, “তাকলীদ হচ্ছে এমন কারো অনুসরণ করা যার কথা হুজ্জত নয়। ...
তাকলীদ দুইটি ক্ষেত্রে করা হয়ঃ
১। যখন মুকাল্লিদ হচ্ছেন একজন আ’ম (সাধারণ) ব্যক্তি যার নিজে নিজে শরীয়াতের হুকুম-আহকাম জানার সামর্থ নেই। এই ব্যক্তির উপর তাক্বলীদ ফরজ। ... তাই এই ব্যক্তি এমন এক ব্যক্তির তাক্বলীদ করবে যাকে সে ইলম ও তাকওয়ার অধিকারী বলে জানে। ...
২। মুজতাহিদ, যখন নতুন কোন বিষয়ের সম্মুখীন হন এবং এই ব্যাপারে তার সুযোগ হয়নি ইজতিহাদ করার, এই ক্ষেত্রে তার জন্য অনুমতি আছে তাকলীদ করার। ...”
একই বই এ শাইখ উসাইমিন (রঃ) তাকলীদের প্রকারভেদ উল্লেখ করতে গিয়েঃ সেটাকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন।
তিনি বলেনঃ
“প্রথম ভাগ হচ্ছেঃ সাধারণ তাক্বলিদ যা হচ্ছে দ্বীনের সকল ব্যাপারে যে কোন এক মাজহাবের সকল করণিয় ও বর্জনীয় মেনে চলা।
আলেমরা এই ব্যাপারে মতবিরোধ করেছেন। পরবর্তী যুগের আলেমদের কেউ কেউ এই ব্যক্তির উপর এটা ওয়াজিব বলেছেন কারণ সে ইজতিহাদ করতে অক্ষম (অনুবাদক নোটঃ এই ইজতিহাদ করতে যে কোন ইমাম কোন মাসয়ালায় উত্তম ফতোয়া দিয়েছেন)। অন্যরা এটা তার জন্য হারাম বলে উল্লেখ করেছেন কারণ এর মাধ্যমে রাসুল (সাঃ) ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তিকে সকল ক্ষেত্রে অনুসরণের জন্য নির্ধারিত করা হচ্ছে”।
দেখা যাচ্ছেঃ শাইখ উসাইমিন (রঃ) সাধারণ মুসলমানদের জন্য তাকলীদ ওয়াজিব বলে উল্লেখ করেছেন।
শাইখ উসাইমিন (রঃ) এর উপরুক্ত কথার ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কি হবে? আপনি উনার সাথে এই ব্যাপারে একমত পোষণ করেন? একমত পোষণ না করলে, দয়া করে বিস্তারিত ভাবে জানাবেন।
দেখা যাচ্ছে, শাইখ উসাইমিন (রঃ) মাজহাবকে অস্বীকার করেন নি। এর প্রয়োজনীয়তাকে তিনি অস্বীকার করেন নি। বরং যে কোন এক মাজহাব সর্বদা মানার ক্ষেত্রে আলেমদের মতবিরোধ রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। তারপর তিনি এই দুই মতের মধ্যে তাঁর মতে যেটা সঠিক, সেই মতের পক্ষে কথা বলেছেন।
এই মতবিরোধের এক পক্ষে আছেনঃ ইমাম নববী (রঃ) এর মতো আলেম ও ফকীহ। অন্য দিকে আছেনঃ ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর মতো আলেম।
ইমাম নববী (রঃ) বলেছেনঃ
ووجهه انه لو جاز اتباع أي مذهب شاء لا فضى إلى ان يلتقط رخص المذاهب متبعا هواه ويتخير بين التحليل والتحريم والوجوب والجواز وذلك يؤدى إلى انحلال ربقة التكليف بخلاف العصر الاول فانه لم تكن المذاهب الوافية بأحكام الحوادث مهذبة وعرفت: فعلى هذا يلزمه ان يجتهد في اختيار مذهب يقلده على التعيين
“ব্যক্তি তাকলীদের অপরিহার্যতার কারণ এই যে, মুক্ত তাকলীদের অনুমতি দেয়া হলে, প্রবৃত্তি তাড়িত মানুষ সকল মাজহাবের অনুকূল বিষয়গুলোই শুধু বেছে নিবে। ফলে হালাল-হারাম ও বৈধ-অবৈধ নির্ধারণের এখতিয়ার এসে যাবে তার হাতে। প্রথম যুগে অবশ্য ব্যক্তি তাকলীদ সম্ভব ছিলো না। কেননা ফিকাহ বিষয়ক মাজহাবগুলো যেমন সুবিন্নস্ত ও পূর্ণাংগ ছিলো না তেমনি সর্বত্র সহজলভ্যও ছিলো না। কিন্তু এখন তা সুবিন্যস্ত ও পূর্ণাংগ আকারে সর্বত্র সহজলভ্য। সুতরাং যে কোন একটি মাজহাব বেছে নিয়ে একনিষ্টভাবে তা অনুসরণ করাই এখন অপরিহার্য”। (আল মাজমু শরহুল মুহায্যাব, ১/১৯)
অপরদিকে ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) সর্বদা একই মাজহাব মানা জরুরী এই মতের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেছেনঃ
وقال: من التزم مذهباً معيناً، ثم فعل خلافه من غير تقليد لعالم آخر أفتاه، ولا استدلال بدليل يقتضي خلاف ذلك، ولا عذر شرعي يقتضي حل ما فعله، فهو متبع لهواه فاعل للمحرم بغير عذر شرعي، وهذا منكر، وأما إذا تبين له ما يوجب رجحان قول على قول إما بالأدلة المفصلة إن كان يعرفها ويفهمها، وإما بأن يرى أحد الرجلين أعلم بتلك المسألة من الآخر، وهو أتقى لله فيما يقوله، فيرجع عن قول إلى قول لمثل هذا، فهذا يجوز بل يجب، وقد نص الإمام أحمد على ذلك. الفتاوي الكبرى (4/625) .
“যে ব্যক্তি কোন একটি নির্দিষ্ট মাজহাব অনুসরণ করে এবং এরপর অপর কোন আলেমের তাকলীদ না করেই যিনি তাকে আরেকটি ফতোয়া দিয়েছেন কিংবা এমন কোন দলীলের ভিত্তি ছাড়াই যা তার মাজহাবের ফতোয়ার বাইরে তাকে আমল করতে বাধ্য করে কিংবা শরীয়াতের কোন রুখসত ছাড়াই, যদি সেই মাজহাবের বিরোধি কোন ফতোয়া অনুযায়ী আমল করে, তাহলে সে ব্যক্তি নিজের নফসের অনুসরণ করছে, এমন হারাম কাজ করছে, যে ব্যাপারে শরীয়াতের কোন ছাড় নেই। এটা অন্যায় ও গুনাহর কাজ।
কিন্তু যদি তার কাছে বিস্তারিত দলীল-প্রমাণের কারণে কিংবা দুইজনের মধ্যে একজনকে এই মাসয়ালায় অধিক ইলমের অধিকারী মনে হওয়ায় এবং এই ব্যাপারে তিনি যা বলেছেন তা তাকওয়ার অধিক নিকটবর্তী মনে হওয়ায় তার কাছে এটা পরিস্কার হয়ে যায় যে, এক ইমামের কথার চেয়ে এই ব্যাপারে অন্য এক ইমামের কথা অধিক নির্ভরযোগ্য এবং এই কারণে তিনি একজনের ফতোয়ার বদলে অন্যজনের ফতোয়াকে ছেড়ে দেন, তাহলে সেটা জায়েজ, বরং সেটা ওয়াজিব। এ ব্যাপারে ইমাম আহমেদের একটি উক্তি রয়েছে”। (ফাতওয়া আল কুবরা, ৪/৬২৫)
ইমাম নববী (রঃ) এর কথাতো সুস্পষ্ট। তিনি বর্তমান যুগে সবার জন্য যে কোন এক মাজহাব মানার ব্যাপারে মত দিয়েছেন। ইচ্ছেমতো বিভিন্ন মাজহাবের বিভিন্ন ফতোয়া অনুসরণ উচিত নয় বলে উল্লেখ করেছেন।
আর ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর মত থেকে তো এতটুকু নিশ্চিত যে তাঁর মতেঃ
- যে কোন একটা মাজহাব মানার সুযোগ আছে। এটাকে তিনি হারাম বলে উল্লেখ করেন নি।
- বরং অন্য কোন ইমামের ফতোয়া কিংবা পর্যাপ্ত দলীল-প্রমাণ ছাড়া নিজ মাজহাবের ফতোয়াকে ছেড়ে দেয়াকে তিনি নফসের খায়েশাত বলে উল্লেখ করেছেন।
- শুধুমাত্র কোন মাসয়ালায় নিশ্চিত জ্ঞানের অধিকারী হলেঃ নিজ মাজহাবের ফতোয়াকে ত্যাগ করে অপর ইমামের ফতোয়াকে গ্রহণ করাকে তিনি জায়েজ এবং ওয়াজিব বলেছেন।
কিন্তু আশ্চর্য হতে হয়ঃ আমাদের দেশে আহলে হাদিস কোন কোন আলেম পুরো মাজহাবকেই অস্বীকার করেন। অনেকে বলেনঃ
- মাজহাব বলতে কিছু নেই।
- কারো তাকলীদ করা যাবে না।
- তাকলীদ সর্বাবস্থায় হারাম। ইত্যাদি।
ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) এর ঐ কথার ব্যাপারে আপনার অভিমত কি যেখানে তিনি অন্য কোন আলেমের তাক্বলীদ ব্যতীত কিংবা অন্য শক্তিশালী কোন দলীল ছাড়াই নিজ মাজহাবের বিপরীত আমল করাকে নফসের খায়েশাত বলে উল্লেখ করেছেন?
এই সব ইখতেলাফী ফুরুয়ী মাসয়ালার বিভিন্ন মতের ব্যাপারে ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রঃ) বলেছেনঃ
وَقَاعِدَتُنَا فِي هَذَا الْبَابِ أَصَحُّ الْقَوَاعِدِ أَنَّ جَمِيعَ صِفَاتِ الْعِبَادَاتِ مِنْ الْأَقْوَالِ وَالْأَفْعَالِ إذَا كَانَتْ مَأْثُورَةً أَثَرًا يَصِحُّ التَّمَسُّكُ بِهِ لَمْ يُكْرَهْ شَيْءٌ مِنْ ذَلِكَ بَلْ يُشْرَعُ ذَلِكَ كُلُّهُ كَمَا قُلْنَا فِي أَنْوَاعِ صَلَاةِ الْخَوْفِ وَفِي نَوْعَيْ الْأَذَانِ التَّرْجِيعِ وَتَرْكِهِ وَنَوْعَيْ الْإِقَامَةِ شَفْعِهَا وَإِفْرَادِهَا وَكَمَا قُلْنَا فِي أَنْوَاعِ التَّشَهُّدَاتِ وَأَنْوَاعِ الِاسْتِفْتَاحَاتِ وَأَنْوَاعِ الِاسْتِعَاذَاتِ وَأَنْوَاعِ الْقِرَاءَاتِ وَأَنْوَاعِ تَكْبِيرَاتِ الْعِيدِ الزَّوَائِدِ وَأَنْوَاعِ صَلَاةِ الْجِنَازَةِ وَسُجُودِ السَّهْوِ وَالْقُنُوتِ قَبْلَ الرُّكُوعِ وَبَعْدَهُ وَالتَّحْمِيدِ بِإِثْبَاتِ الْوَاوِ وَحَذْفِهَا وَغَيْرِ ذَلِكَ لَكِنْ قَدْ يُسْتَحَبُّ بَعْضُ هَذِهِ الْمَأْثُورَاتِ وَيُفَضَّلُ عَلَى بَعْضٍ إذَا قَامَ دَلِيلٌ يُوجِبُ التَّفْضِيلَ وَلَا يُكْرَهُ الْآخَرُ .
“এ বিষয়ে আমাদের নীতি, আর এটাই বিশুদ্ধতম নীতি, এই যে, ইবাদতের পদ্ধতির বিষয়ে (যেসব ক্ষেত্রে মতভেদ রয়েছে তাতে) যে পদ্ধতি সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য আছার রয়েছে তা মাকরূহ হবে না; বরং তা হবে শরীয়াত সম্মত। সালাতুল খওফের বিভিন্ন পদ্ধতি, আযানের দুই নিয়ম : তারজীযুক্ত বা তারজীবিহীন, ইকামতের দুই নিয়ম : বাক্যগুলো দুইবার করে বলা কিংবা একবার করে, তাশাহহুদ, ছানা, আউযু এর বিভিন্ন পাঠ, কুরআনের বিভিন্ন কিরাআত, এই সবগুলো এই নীতিরই অন্তর্ভূক্ত। এভাবে ঈদের নামাযের অতিরিক্ত তাকবীর-সংখ্যা (ছয় তাকবীর বা বারো তাকবীর), জানাযার নামাযের বিভিন্ন নিয়ম, সাহু সিজদার বিভিন্ন নিয়ম, কুনুত পাঠ, রুকুর পরে বা পূর্বে, রাব্বানালাকাল হামদ, ওয়াসহ অথবা ওয়া ছাড়া, এই সবগুলোই শরীয়াতসম্মত। কোনো পদ্ধতি কখনো উত্তম হতে পারে কিন্তু অন্যটি মাকরূহ নয়”। (মাজমূউল ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া ২৪/২৪২-২৪৩; আল-ফাতাওয়া আল কুবরা ১/১৪০)
ইবনুল কাইয়্যিম (রঃ) যাদুল মাআদ গ্রন্থে' ফজরের সালাতে কুনুত পড়া প্রসঙ্গে বলেছেনঃ
وهذا من الاختلاف المباح الذي لا يعنف فيه من فعله ولا من تركه وهذا كرفع اليدين في الصلاة وتركه وكالخلاف في أنواع التشهدات وأنواع الأذان والإقامة وأنواع النسك من الإفراد والقران والتمتع
“এটা ওইসব মতভেদের অন্তর্ভূক্ত যাতে কোনো পক্ষই নিন্দা ও ভর্ৎসনার পাত্র নন। এটা ঠিক তেমনই যেমন সালাতে রাফয়ে ইয়াদাইন করা বা না করা, তদ্রূপ আত্তাহিয়্যাতুর বিভিন্ন পাঠ, আযান-ইকামাতের বিভিন্ন ধরন, হজ্বের বিভিন্ন প্রকার - ইফরাদ, কিরান, তামাত্তু বিষয়ে মতভেদের মতোই”। (যাদুল মায়াদ, ১/২৫৬)
দেখা যাচ্ছে, এই দুই সম্মানিত ইমামের (রঃ) মতে আমাদের সমাজে বর্তমানে যে সকল ফুরুয়ী ইখতিলাফী মাসয়ালা নিয়ে প্রচুর সময় ব্যয় করা হচ্ছে, তার বেশীরভাগকেই তাঁরা মুস্তাহাব পর্যায়ের বলছেন। যেমনঃ
- রাফে ইয়াদাইন করা বা না করা।
- ইকামাতের কথাগুলো দুইবার বনাম একবার বলা।
- ঈদের নামাজের ৬ তাকবীর বনাম ১২ তাকবীর।
- সিজদা সাহুর বিভিন্ন নিয়ম।
- দুয়া কুনুত রুকুর আগে বনাম রুকুর পরে। ইত্যাদি।
অর্থাৎ এগুলো করলে কিংবা না করলে নামাজের কোন ক্ষতি হবে না। নামাজ পুরোপুরিই আদায় হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। এসব বেশীরভাগ মাসয়ালায় এক ইমামের মতে এক পদ্ধতি উত্তম এবং অন্য ইমামের মতে অপর কোন পদ্ধতি উত্তম।
শায়খ মুহাম্মাদ ইবনে ছালিহ আল উছাইমীন (১৪২১ হি.) তিনি [লিকাআতুল বাবিল মাফতূহ, প্রশ্ন : ১৩২২] এর উত্তরে বলেনঃ
‘‘এ যুগের কিছু কিছু সালাফী, বিরোধীদেরকে গোমরাহ বলে থাকে, তারা হকপন্থী হলেও। আর কিছু কিছু লোক তো একে বিভিন্ন ‘ইসলামী’ দলের মত একটি দলীয় মতবাদে পরিণত করেছে। এটা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়, অবশ্যই এর প্রতিবাদ করতে হবে। তাদেরকে বলতে হবে, সালাফে সালেহীনের কর্মপদ্ধতি লক্ষ করুন, ইজতিহাদগত মতপার্থক্যের ক্ষেত্রে তাদের নীতি কী ছিল এবং তাঁরা কেমন উদারতার পরিচয় দিয়েছিলেন।
তাঁদের মাঝে তো অপেক্ষাকৃত বড় বড় বিষয়েও মতভেদ হয়েছে, কোনোকোনো (শাখাগত) আকীদা বিষয়েও মতভেদ হয়েছে : দেখুন, আল্লাহর রাসূল তাঁর রবকে দেখেছেন কিনা-এ বিষয়ে কেউ বললেন,দেখেননি; কেউ বললেন, দেখেছেন। কেয়ামতের দিন আমল কীভাবে ওজন করা হবে-এ বিষয়ে কেউ বলেছেন, আমল ওজন করাহবে। কেউ বলেছেন, আমলনামা ওজন করা হবে; তেমনি ফিকহের মাসাইল- নিকাহ, ফারাইয, ইদ্দত, বুয়ূ (বেচাকেনা) ইত্যাদি বিষয়েও তাঁদের মাঝে মতভেদ হয়েছে, কিন্তু তাঁরা তো একে অপরকে গোমরাহ বলেননি।
‘সুতরাং যাদের বিশ্বাস, ‘সালাফী’ একটি সম্প্রদায়, যার নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট রয়েছে, অন্যরা সবাই গোমরাহ, প্রকৃত সালাফী আদর্শের সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। সালাফী মতাদর্শের অর্থ হচ্ছে, আকিদা-বিশ্বাস, আচরণ- উচ্চারণ, মতৈক্য-মতানৈক্য এবং পরস্পর সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির ক্ষেত্রে সালাফে সালেহীনের পথে চলা। যেমনটি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম বলেছেন; প্রীতি, করুণা ও পরস্পরের প্রতি অনুরাগে মুমিনগণ যেন একটি দেহ, যার এক অঙ্গ অসুস্থ হলে গোটা দেহ জ্বর ও নিদ্রাহীনতায় আর্তনাদ করতে থাকে। এটিই হচ্ছে প্রকৃত সালাফী মতাদর্শ।’
(collected)
Comment