Announcement

Collapse
No announcement yet.

শাষক বিষয়ক ফতোয়া জানতে চাই?????

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • শাষক বিষয়ক ফতোয়া জানতে চাই?????

    প্রশ্ন ১ঃ শাষকের বিরুদ্ধে জিহাদ করা কখন বৈধ???
    প্রশ্ন ২ঃ কুফুরী করলেই কি শাষকের বিরুদ্ধে জিহাদ বৈধ বা কতটুকু কফুরী করলে তার উপর জিহাদ বৈধ??
    প্রশ্ন ৩ঃ শাষককে যেভাবে তাকফীর করা হয়, জনগনের বিষয়ে সেটা শিথিল কেন??? শাষকেরও তো অজ্ঞতা বা তাওয়ীল বা অপারগতা থাকতে পারে, যেমনটা জনগণের আছে। শাসক ও জনগনকে কেন আলাদা করা হয়।
    প্রশ্ন ৪ঃ আর শাষক মুরতাদ হইলেই কি তাকে হত্যা করা যাবে??? এখানে হদ কায়েম কে করবে?????
    প্রশ্ন ৫ঃ হদ ও জিহাদের মধ্যে পার্থক্য কি????

    কুর'আন-হাদীস, তাবে, তাবে-তাবিয়িন, চার ইমাম, সালাফ-আস-সালেহীন, ইসলামী ইতিহাস ও যুগের শ্রেষ্ট মুজাহিদ আলেমগনের এই বিষয়ের উপর মতামত চাচ্ছি।

    কেউ যদি এই বিষয়ে বিস্তারিত সিরিজ আকারে লিখতেন অথবা বিজ্ঞ কোন আলেমকে যদি এই বিষয় লিখতে অনুরোধ করতেন, তাহলে উপকৃত হতাম।

    আর আগের থেকে যদি এগুলো লিখা থাকে, তাহলে লিখাগুলো কমেন্টে দিতে পারেন।

    জাযাকাল্লাহু খায়ের

  • #2
    ??????????????????

    Comment


    • #3
      অপেক্ষা করুন , ইনশাল্লাহ আপনার উত্তর পেতে পারেন।
      আল্লাহ আমাদের ঈমানী হালতে মৃত্যু দান করুন,আমিন।
      আল্লাহ আমাদের শহিদী মৃত্যু দান করুন,আমিন।

      Comment


      • #4
        • যে কোন কারণে শাসক মুরতাদ হয়ে গেলে এবং জিহাদ ব্যতীত তাকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করা না গেলে তখন তার বিরুদ্ধে জিহাদ শুধু বৈধই নয়, বরং ফরয। প্রতিটি সক্ষম মুসলমানের উপর ফরয তার বিরুদ্ধে জিহাদে অবতীর্ণ হওয়া।
        • শাসক মুরতাদ হয়ে গেলে যদি তওবা করে মুসলমান না হয়, তাহলে তাকে হত্যা করে ফেলতে হবে। এই দায়িত্ব সমগ্র উম্মাহর। যে কোন সাধারণ মুসলমানও এই দায়িত্ব পালন করতে পারবে।

        মুরতাদ হত্যা আর অন্যান্য হদ কায়েম করা– যেমন: বিবাহিত যিনাকারীকে হত্যা করা, নিরপরাধ ব্যক্তির হত্যাকারীকে কেসাসসরূপ হত্যা করা ইত্যাদি- এ দুটির মাঝে পার্থক্য আছে। মুরতাদকে যে কেউ হত্যা করতে পারে, কিন্তু অন্যান্য হদ কেবল তারাই কায়েম করতে পারে, যাদের এই পরিমাণ শক্তি-সামর্থ্য আছে যে, এর পরবর্তী ফেতনা ফাসাদকে তারা প্রতিহত করে সুশৃংখলা বজায় রাখতে সক্ষম।
        • শাসকশ্রেণী এবং সাধারণ মুসলমান জনসাধারণের মাঝে বেশ পার্থক্য আছে। এটা একটু বুঝিয়ে বিস্তারিত আলোচনা দরকার।
        এখানে মূল বিষয়টা হচ্ছে-
        রাষ্ট্রীয়ভাবে শরীয়ত বিরোধি আইন প্রণয়ন বা প্রবর্তন কুফরে আকবার। আর শাসকরা স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে তাতে লিপ্ত হচ্ছে। এখানে তাদের কোন অজ্ঞতা নেই। তারা সুস্পষ্ট জানে যে, সংসদে গিয়ে তারা কুফরী আইন প্রবর্তন করবে, সে অনুযায়ী দেশ চালাবে। বরং এ উদ্দেশ্যেই তারা নির্বাচনে দাঁড়ায়। কাজেই এক্ষেত্রে তাদের কোন অজ্ঞতা বা তাবীল নেই।
        বেশির চেয়ে বেশি তাদের কারো কারো ক্ষেত্রে এটা বলা যেতে পারে যে, ‘তারা যে কাজটা কুরছে তা যে কুফর, তারা তা জানে না।’ কিন্তু কাফের হওয়ার জন্য কোন কুফরীতে স্বেচ্ছায় লিপ্ত হওয়াই যথেষ্ট, সেটা করলে কাফের হয় কি’না তা জানা থাকা আবশ্যক নয়। যেমন- কেউ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটূক্তি করলো, কিন্তু সে জানে না যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটূক্তি করলে কাফের হয়ে যায়; এমন ব্যক্তি সর্বসম্মতিতে মুরতাদ। তার অজ্ঞতা ধর্তব্য নয়। কেননা, সে যা করেছে তা স্বেচ্ছায় করেছে। শাসকদের বিষয়টাও এমনই।
        পক্ষান্তরে জনগণ তো আর কুফরী আইন প্রবর্তন করেনি যে, তাদেরকে কাফের বলা হবে। তবে হ্যাঁ, সংসদীয় নির্বাচনে ভোট দেয়া একটা কুফর। কিন্তু কিন্তু ভোটের ব্যাপারে জনগণ বড়ই অন্ধকারে। তাদের অধিকাংশ জানেই না সংসদে কি হয়। তারা বরং ঐ দলকে ভোট দেয়, যে দলের দ্বারা বাহ্যিক সুখ-শান্তি বেশি মিলে, জুলুম অত্যাচার কম হয়। কাজেই এ কাজের কারণে তাদের কাফের বলার কোন সুযোগ নেই।
        পক্ষান্তরে যদি কেউ এ উদ্দেশ্যে ভোট দেয় যে, এমপিরা সংসদে গিয়ে যেন আল্লাহর শাসন প্রত্যাখ্যান করে নিজেদের মন মতো আইন তৈরি করে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পায়- তাহলে এমন জনগণকেও আমরা কাফের বলবো। এই কাজ যে কুফর, তা তার জানা না থাকা না থাকা তখন ধর্তব্য হবে না।


        বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনার দরকার। আপাতত আকীদা-মানহাজের এই অংশগুলো দেখতে পারেন-
        ১.
        গণতন্ত্র (democracy)
        ................................
        • শরয়ী শাসনের বিপরীতে যারা এই শাসন-ব্যবস্থা প্রণয়ন বা প্রবর্তন করে, তারা কাফের।
        • শরীয়তের পরিবর্তে এই শাসন-ব্যবস্থা দ্বারা যেসব শাসক রাষ্ট্র পরিচালনা করে, তারাও কাফের।
        • মন্ত্রী এম.পি এবং আইন প্রণয়ন সংস্থার সদস্য- যারা এই কুফরী আইন প্রণয়ন বা প্রবর্তনে লিপ্ত, তারাও কাফের।
        • যেসব বাহিনী শক্তিবলে এই কুফরী শাসন-ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করে চলেছে, এর হেফাজত ও রক্ষণাবেক্ষণ করছে, এর প্রহরায় নিয়োজিত আছে, তারাও কুফরে আকবারে লিপ্ত।
        • এই শাসন-ব্যবস্থার স্বরূপ সুস্পষ্ট হওয়ার পরও যারা এর প্রতি সন্তুষ্ট, এর সমর্থক, প্রচারক এবং যারা জনশক্তি বা আর্থিক যোগান দিয়ে কিংবা অন্য কোন উপায়ে এর সাহায্য-সহযোগিতা করবে, শক্তি যোগাবে, এসব দলকে ভোট দেবে- তারাও কুফরে আকবারে লিপ্ত।
        উল্লেখ্য, এসব কারণে সুনিদৃষ্টভাবে কোন ব্যক্তির উপর কুফর ও ইরতিদাদের হুকুম আরোপ করার জন্য অনেক ক্ষেত্রেই অজ্ঞতা (الجهل), তাবীল (التأويل) ইত্যাদির মত موانع التكفيرতথা তাকফীরের প্রতিবন্ধক বিষয়গুলো লক্ষ্যনীয়। হক্কানী বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামই কেবল এ ব্যাপারে ফায়সালা দেয়ার অধিকার রাখেন। জনসাধারণের জন্য আবশ্যক উলামায়ে কেরামের আনুগত্য করা।
        ২.
        তাকফীর
        .......
        • আমরা বিশ্বাস করি (تكفير معيّن) তথা নির্দিষ্টভাবে কারো উপর কুফরের হুকুম প্রদানের পূর্বে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত রয়েছে, যেগুলো উক্ত ব্যক্তির মাঝে পরিপূর্ণ পাওয়া যেতে হবে। এবং কিছু (موانع) তথা প্রতিবন্ধক রয়েছে, যেগুলো না পাওয়া যেতে হবে। হক্কানী বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামই নির্দিষ্টভাবে কোন ব্যক্তির উপর কুফরের হুকুম প্রদানের যোগ্যতা রাখেন। সাধারণ মানুষের জন্য তাদের অনুসরণ করা জরুরি।
        যেমন- শরীয়ত বিরোধি আইন প্রণয়ন কিংবা সে অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা কুফরে আকবার, যা উক্ত ব্যক্তিকে দ্বীনে ইসলাম থেকে বের করে দেয়। এসব ব্যক্তিকে ভোট দেয়াও মূলত তাদের কুফরী কর্মে অংশগ্রহণ করা। কিন্তু এ কারণে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকলকে আমরা ঢালাওভাবে কাফের ঘোষণা করি না- যেমনটা নব্য খাওয়ারেজদের অনেকে করে থাকে। কেননা তাদের মাঝে সকলেই এ উদ্দেশ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে না যে, নির্বাচিত মন্ত্রী এম.পিরা সংসদে গিয়ে আল্লাহ তাআলার শরীয়ত বিরোধি আইন-কানুন প্রণয়ন বা প্রবর্তন করে সে অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করবে; বরং বেশীরভাগ মানুষই তাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন দুনিয়াবী সেবা, উন্নয়ন ও অগ্রগতির দিকে লক্ষ্য করে ভোট দিয়ে থাকে। অধিকন্তু, তাদের অধিকাংশই গণতান্ত্রিক নির্বাচনে অংশগ্রহণের হুকুম সম্পর্কে অজ্ঞ। এজন্য সংসদীয় নির্বাচনে ভোট দেয়া কুফরী কাজ হওয়া সত্ত্বেও আমরা সাধারণভাবে ভোটদাতা সকলকে তাকফীর করি না।
        একইভাবে, যেসব জামাত ইসলামের নামে গণতান্ত্রিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, তাদেরকেও আমরা তাদের ‘তাবিলের’ কারণে তাকফীর করি না- যদিও তাদের এই কাজকে আমরা হারাম ও কুফরী মনে করি।
        ৩.
        শাসক
        • মুসলমানদের শরীয়তসম্মত ইমাম ও শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা আমরা জায়েয মনে করি না; যতক্ষণ না তাদের থেকে ‘কুফরে বাওয়াহ’ তথা সুস্পষ্ট কুফর প্রকাশিত হয়, যে কুফর সম্পর্কে আমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে অকাট্য প্রমাণ রয়েছে। যতক্ষণ তারা সৎ কাজের আদেশ দেন, ততক্ষণ তাদের অনুগত থাকা ফরজ মনে করি; কিন্তু অসৎ কাজে তাদের আনুগত্য জায়েয মনে করি না।
        • একই সাথে আমরা বিশ্বাস করি, কোন মুসলিম শাসক মুরতাদ হয়ে গেলে সে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অপসারিত হয়ে যায়। এরপরও যদি জবরদস্তি ক্ষমতায় বসে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তাকে অপসারণ করে শরীয়ত প্রতিষ্ঠাকারী ন্যায়পরায়ণ মুসলিম শাসক নিয়োগ দেয়া ফরয। এ ব্যাপারে আইম্মায়ে কেরামের ইজমা রয়েছে।
        • আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ ও এ রকম অন্যান্য দেশের যে সকল শাসক শরীয়াহ্ পরিপন্থী আইন দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনা করছে, তারা কাফের ও মুরতাদ। কারণ, তারা-
         আল্লাহ তাআলার ‘তাওহীদুর-রুবূবিয়্যাহ্’ প্রত্যাখ্যান করে নিজেদেরকে রবের আসনে সমাসীন করেছে। বিধান দানের যে অধিকার আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ব্যতীত আর কারও নেই, তারা তা নিজেদের জন্য দাবি করেছে।
         শরীয়তের পরিবর্তে মানব রচিত কুফরী আইন প্রণয়ন ও প্রবর্তন করেছে এবং জনসাধারণের উপর তা চাপিয়ে দিয়েছে।
         আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে বাদ দিয়ে বিশ্বের তাগুত ও আইম্মায়ে কুফরদের কাছে বিচার প্রার্থনা করে।
         ঈমান ও কুফরের চলমান যুদ্ধে কুফরের পক্ষ অবলম্বন করে, মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফেরদেরকে সহায়তা করে।
        • যারা কুফরভিত্তিক সরকার ব্যবস্থার অধীনে কাজ করে, ঢালাওভাবে আমরা তাদেরকে তাকফীর করি না- যা কিনা চরমপন্থী ‘মুকাফফিরাহ্’ শ্রেণী করে থাকে। আমরা শুধুমাত্র তাদেরকেই তাকফীর করি, যাদের কর্মকাণ্ড কুফরে আকবারের মধ্যে পড়ে। যারা কুফরী শাসন ও কুফরী বিধি-বিধান প্রণয়ন, প্রবর্তন বা বাস্তবায়নে লিপ্ত কিংবা যাদের মধ্যে অন্য কোন সুস্পষ্ট কুফর পাওয়া যায়; আমরা কেবল তাদেরকেই তাকফীর করি। পক্ষান্তরে যাদের কর্মকাণ্ড এই শ্রেণীভুক্ত নয়, অন্য কোন কুফর না পাওয়া গেলে আমরা তাদের তাকফীর করি না। যেমন- মুরতাদ সরকারের বিদ্যুৎ, পানি বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইত্যাদীর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আমরা তাকফীর করি না।

        Comment


        • #5
          Originally posted by ইলম ও জিহাদ View Post
          • যে কোন কারণে শাসক মুরতাদ হয়ে গেলে এবং জিহাদ ব্যতীত তাকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করা না গেলে তখন তার বিরুদ্ধে জিহাদ শুধু বৈধই নয়, বরং ফরয। প্রতিটি সক্ষম মুসলমানের উপর ফরয তার বিরুদ্ধে জিহাদে অবতীর্ণ হওয়া।
          • শাসক মুরতাদ হয়ে গেলে যদি তওবা করে মুসলমান না হয়, তাহলে তাকে হত্যা করে ফেলতে হবে। এই দায়িত্ব সমগ্র উম্মাহর। যে কোন সাধারণ মুসলমানও এই দায়িত্ব পালন করতে পারবে।

          মুরতাদ হত্যা আর অন্যান্য হদ কায়েম করা– যেমন: বিবাহিত যিনাকারীকে হত্যা করা, নিরপরাধ ব্যক্তির হত্যাকারীকে কেসাসসরূপ হত্যা করা ইত্যাদি- এ দুটির মাঝে পার্থক্য আছে। মুরতাদকে যে কেউ হত্যা করতে পারে, কিন্তু অন্যান্য হদ কেবল তারাই কায়েম করতে পারে, যাদের এই পরিমাণ শক্তি-সামর্থ্য আছে যে, এর পরবর্তী ফেতনা ফাসাদকে তারা প্রতিহত করে সুশৃংখলা বজায় রাখতে সক্ষম।
          • শাসকশ্রেণী এবং সাধারণ মুসলমান জনসাধারণের মাঝে বেশ পার্থক্য আছে। এটা একটু বুঝিয়ে বিস্তারিত আলোচনা দরকার।
          এখানে মূল বিষয়টা হচ্ছে-
          রাষ্ট্রীয়ভাবে শরীয়ত বিরোধি আইন প্রণয়ন বা প্রবর্তন কুফরে আকবার। আর শাসকরা স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে তাতে লিপ্ত হচ্ছে। এখানে তাদের কোন অজ্ঞতা নেই। তারা সুস্পষ্ট জানে যে, সংসদে গিয়ে তারা কুফরী আইন প্রবর্তন করবে, সে অনুযায়ী দেশ চালাবে। বরং এ উদ্দেশ্যেই তারা নির্বাচনে দাঁড়ায়। কাজেই এক্ষেত্রে তাদের কোন অজ্ঞতা বা তাবীল নেই।
          বেশির চেয়ে বেশি তাদের কারো কারো ক্ষেত্রে এটা বলা যেতে পারে যে, ‘তারা যে কাজটা কুরছে তা যে কুফর, তারা তা জানে না।’ কিন্তু কাফের হওয়ার জন্য কোন কুফরীতে স্বেচ্ছায় লিপ্ত হওয়াই যথেষ্ট, সেটা করলে কাফের হয় কি’না তা জানা থাকা আবশ্যক নয়। যেমন- কেউ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটূক্তি করলো, কিন্তু সে জানে না যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটূক্তি করলে কাফের হয়ে যায়; এমন ব্যক্তি সর্বসম্মতিতে মুরতাদ। তার অজ্ঞতা ধর্তব্য নয়। কেননা, সে যা করেছে তা স্বেচ্ছায় করেছে। শাসকদের বিষয়টাও এমনই।
          পক্ষান্তরে জনগণ তো আর কুফরী আইন প্রবর্তন করেনি যে, তাদেরকে কাফের বলা হবে। তবে হ্যাঁ, সংসদীয় নির্বাচনে ভোট দেয়া একটা কুফর। কিন্তু কিন্তু ভোটের ব্যাপারে জনগণ বড়ই অন্ধকারে। তাদের অধিকাংশ জানেই না সংসদে কি হয়। তারা বরং ঐ দলকে ভোট দেয়, যে দলের দ্বারা বাহ্যিক সুখ-শান্তি বেশি মিলে, জুলুম অত্যাচার কম হয়। কাজেই এ কাজের কারণে তাদের কাফের বলার কোন সুযোগ নেই।
          পক্ষান্তরে যদি কেউ এ উদ্দেশ্যে ভোট দেয় যে, এমপিরা সংসদে গিয়ে যেন আল্লাহর শাসন প্রত্যাখ্যান করে নিজেদের মন মতো আইন তৈরি করে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পায়- তাহলে এমন জনগণকেও আমরা কাফের বলবো। এই কাজ যে কুফর, তা তার জানা না থাকা না থাকা তখন ধর্তব্য হবে না।


          বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনার দরকার। আপাতত আকীদা-মানহাজের এই অংশগুলো দেখতে পারেন-
          ১.
          গণতন্ত্র (democracy)
          ................................
          • শরয়ী শাসনের বিপরীতে যারা এই শাসন-ব্যবস্থা প্রণয়ন বা প্রবর্তন করে, তারা কাফের।
          • শরীয়তের পরিবর্তে এই শাসন-ব্যবস্থা দ্বারা যেসব শাসক রাষ্ট্র পরিচালনা করে, তারাও কাফের।
          • মন্ত্রী এম.পি এবং আইন প্রণয়ন সংস্থার সদস্য- যারা এই কুফরী আইন প্রণয়ন বা প্রবর্তনে লিপ্ত, তারাও কাফের।
          • যেসব বাহিনী শক্তিবলে এই কুফরী শাসন-ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করে চলেছে, এর হেফাজত ও রক্ষণাবেক্ষণ করছে, এর প্রহরায় নিয়োজিত আছে, তারাও কুফরে আকবারে লিপ্ত।
          • এই শাসন-ব্যবস্থার স্বরূপ সুস্পষ্ট হওয়ার পরও যারা এর প্রতি সন্তুষ্ট, এর সমর্থক, প্রচারক এবং যারা জনশক্তি বা আর্থিক যোগান দিয়ে কিংবা অন্য কোন উপায়ে এর সাহায্য-সহযোগিতা করবে, শক্তি যোগাবে, এসব দলকে ভোট দেবে- তারাও কুফরে আকবারে লিপ্ত।
          উল্লেখ্য, এসব কারণে সুনিদৃষ্টভাবে কোন ব্যক্তির উপর কুফর ও ইরতিদাদের হুকুম আরোপ করার জন্য অনেক ক্ষেত্রেই অজ্ঞতা (الجهل), তাবীল (التأويل) ইত্যাদির মত موانع التكفيرতথা তাকফীরের প্রতিবন্ধক বিষয়গুলো লক্ষ্যনীয়। হক্কানী বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামই কেবল এ ব্যাপারে ফায়সালা দেয়ার অধিকার রাখেন। জনসাধারণের জন্য আবশ্যক উলামায়ে কেরামের আনুগত্য করা।
          ২.
          তাকফীর
          .......
          • আমরা বিশ্বাস করি (تكفير معيّن) তথা নির্দিষ্টভাবে কারো উপর কুফরের হুকুম প্রদানের পূর্বে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত রয়েছে, যেগুলো উক্ত ব্যক্তির মাঝে পরিপূর্ণ পাওয়া যেতে হবে। এবং কিছু (موانع) তথা প্রতিবন্ধক রয়েছে, যেগুলো না পাওয়া যেতে হবে। হক্কানী বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামই নির্দিষ্টভাবে কোন ব্যক্তির উপর কুফরের হুকুম প্রদানের যোগ্যতা রাখেন। সাধারণ মানুষের জন্য তাদের অনুসরণ করা জরুরি।
          যেমন- শরীয়ত বিরোধি আইন প্রণয়ন কিংবা সে অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা কুফরে আকবার, যা উক্ত ব্যক্তিকে দ্বীনে ইসলাম থেকে বের করে দেয়। এসব ব্যক্তিকে ভোট দেয়াও মূলত তাদের কুফরী কর্মে অংশগ্রহণ করা। কিন্তু এ কারণে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকলকে আমরা ঢালাওভাবে কাফের ঘোষণা করি না- যেমনটা নব্য খাওয়ারেজদের অনেকে করে থাকে। কেননা তাদের মাঝে সকলেই এ উদ্দেশ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে না যে, নির্বাচিত মন্ত্রী এম.পিরা সংসদে গিয়ে আল্লাহ তাআলার শরীয়ত বিরোধি আইন-কানুন প্রণয়ন বা প্রবর্তন করে সে অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করবে; বরং বেশীরভাগ মানুষই তাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন দুনিয়াবী সেবা, উন্নয়ন ও অগ্রগতির দিকে লক্ষ্য করে ভোট দিয়ে থাকে। অধিকন্তু, তাদের অধিকাংশই গণতান্ত্রিক নির্বাচনে অংশগ্রহণের হুকুম সম্পর্কে অজ্ঞ। এজন্য সংসদীয় নির্বাচনে ভোট দেয়া কুফরী কাজ হওয়া সত্ত্বেও আমরা সাধারণভাবে ভোটদাতা সকলকে তাকফীর করি না।
          একইভাবে, যেসব জামাত ইসলামের নামে গণতান্ত্রিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, তাদেরকেও আমরা তাদের ‘তাবিলের’ কারণে তাকফীর করি না- যদিও তাদের এই কাজকে আমরা হারাম ও কুফরী মনে করি।
          ৩.
          শাসক
          • মুসলমানদের শরীয়তসম্মত ইমাম ও শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা আমরা জায়েয মনে করি না; যতক্ষণ না তাদের থেকে ‘কুফরে বাওয়াহ’ তথা সুস্পষ্ট কুফর প্রকাশিত হয়, যে কুফর সম্পর্কে আমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে অকাট্য প্রমাণ রয়েছে। যতক্ষণ তারা সৎ কাজের আদেশ দেন, ততক্ষণ তাদের অনুগত থাকা ফরজ মনে করি; কিন্তু অসৎ কাজে তাদের আনুগত্য জায়েয মনে করি না।
          • একই সাথে আমরা বিশ্বাস করি, কোন মুসলিম শাসক মুরতাদ হয়ে গেলে সে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অপসারিত হয়ে যায়। এরপরও যদি জবরদস্তি ক্ষমতায় বসে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তাকে অপসারণ করে শরীয়ত প্রতিষ্ঠাকারী ন্যায়পরায়ণ মুসলিম শাসক নিয়োগ দেয়া ফরয। এ ব্যাপারে আইম্মায়ে কেরামের ইজমা রয়েছে।
          • আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ ও এ রকম অন্যান্য দেশের যে সকল শাসক শরীয়াহ্ পরিপন্থী আইন দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনা করছে, তারা কাফের ও মুরতাদ। কারণ, তারা-
           আল্লাহ তাআলার ‘তাওহীদুর-রুবূবিয়্যাহ্’ প্রত্যাখ্যান করে নিজেদেরকে রবের আসনে সমাসীন করেছে। বিধান দানের যে অধিকার আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ব্যতীত আর কারও নেই, তারা তা নিজেদের জন্য দাবি করেছে।
           শরীয়তের পরিবর্তে মানব রচিত কুফরী আইন প্রণয়ন ও প্রবর্তন করেছে এবং জনসাধারণের উপর তা চাপিয়ে দিয়েছে।
           আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে বাদ দিয়ে বিশ্বের তাগুত ও আইম্মায়ে কুফরদের কাছে বিচার প্রার্থনা করে।
           ঈমান ও কুফরের চলমান যুদ্ধে কুফরের পক্ষ অবলম্বন করে, মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফেরদেরকে সহায়তা করে।
          • যারা কুফরভিত্তিক সরকার ব্যবস্থার অধীনে কাজ করে, ঢালাওভাবে আমরা তাদেরকে তাকফীর করি না- যা কিনা চরমপন্থী ‘মুকাফফিরাহ্’ শ্রেণী করে থাকে। আমরা শুধুমাত্র তাদেরকেই তাকফীর করি, যাদের কর্মকাণ্ড কুফরে আকবারের মধ্যে পড়ে। যারা কুফরী শাসন ও কুফরী বিধি-বিধান প্রণয়ন, প্রবর্তন বা বাস্তবায়নে লিপ্ত কিংবা যাদের মধ্যে অন্য কোন সুস্পষ্ট কুফর পাওয়া যায়; আমরা কেবল তাদেরকেই তাকফীর করি। পক্ষান্তরে যাদের কর্মকাণ্ড এই শ্রেণীভুক্ত নয়, অন্য কোন কুফর না পাওয়া গেলে আমরা তাদের তাকফীর করি না। যেমন- মুরতাদ সরকারের বিদ্যুৎ, পানি বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইত্যাদীর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আমরা তাকফীর করি না।
          যাজাকাল্লাহ,অল্প কথায় সুন্দর ও স্পষ্ট করে লেখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
          আমি সেই ভাইকে ভাই মনে করি না,যে নিজ ধর্মের শত্রুকে বন্ধু মনে করে।

          Comment

          Working...
          X