প্রিয় মুজাহিদ ভাইয়েরা, আপনারা কেমন আছেন? আশাকরি ভালই আছেন। আমি নতুন আইডি খুলেছি। সবার কাছে দোয়া চাই যেন দ্বীন ও উম্মাহর খেদমতে নিয়মিত ফোরামে অংশগ্রহণ করতে পারি।
Announcement
Collapse
No announcement yet.
হদ-কিসাসের প্রাথমিক ধারণা
Collapse
X
-
হদ-কিসাসের প্রাথমিক ধারণা
- ইসলামি শরিয়ার পরিভাষায় শাস্তি বলা হয়-“ মহান প্রজ্ঞাবান শরিয়াহপ্রণেতা স্রষ্ট্রা কর্তৃক নির্ধারিত কর্মফলকে, যা নির্ধেশের অবাধ্য হওয়ার কারণে অপরাধীর উপর আপতিত হয়, যাতে অপরাধী তার অপকর্ম থেকে নিবৃত্ত হয় এবং অন্যরা তাকে দেখে শিক্ষা নেয়।” ইসলামের শাস্তিসমূহ প্রথমত দু’ভাগে বিভক্ত;
- ১. পারলৈাকিক শাস্তি
- ২. পার্থিব শাস্তি
- পারলৈাকিক শাস্তি আবার দু’ভাগে বিভক্
- ১. চিরস্থায়ী শাস্তি
- ২. ক্ষণস্থায়ী শাস্তি
- উল্লিখিত মাকালার (প্রবন্ধের) আলোচ্যবিষয় হলো পার্থিব শাস্তি। পার্থিব শাস্তি মৌলিকভাবে তিন প্রকার;
- ১. হদ
- ২. তা’যির
- ৩. কিসাস ও দিয়াত
- হদ বলা হয় সেসকল শাস্তিকে, যার পরিমান শরিয়াহ কর্তৃক সুনির্ধারিত এবং যা আল্লাহ তায়ালার হক (অধিকৃত অধিকার) বলে স্থিরীকৃত। পরিমান সুনির্ধারিত হওয়ার অর্থ হলো, তাতে কোনো হ্রাস-বৃদ্ধি চলে না, সেসব শাস্তিসমূহে সর্বনিম্ম ও সর্বোচ্চ পরিমান বলতে কিছু নেই বরং তার মাত্রা ও প্রয়োগ সবই সুনির্ধারিত। আল্লাহ তায়ালার হক্ব (অধিকার) হওয়ার অর্থ হলো, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী চাইলেও তা মাফ করতে পারে না। হদ (দণ্ডবিধী) রহিত হওয়ার কোনো কারণ না পাওয়া গেলে সর্বাবস্থায় তা প্রয়োগ করা অপরিহার্য- অপরাধী সে যেই হোক না কেন?
- একটি বিষয় আমাদের জেনে রাখা উচিৎ: ইসলামি শরিয়াহ কোনো শাস্তিকে তখনই হদের গণ্ডীভূত করে, যখন এর প্রয়োগিক প্রয়োজনীয়তার কারণ ব্যক্তিকেন্দ্রিক না হয়ে সামাজিক ও রাষ্ট্রিয়পরিধি পর্যন্ত বিস্তীত হয়; অর্থাৎ সার্বিক জনকল্যাণার্থে বিধিবদ্ধ ও অপরিহার্য বলে গন্য হয়। সর্বময়ী কল্যাণের অর্থ যেহেতু জনমানুষের মধ্য থেকে ফ্যাসাদ দূর করা এবং তাদের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা, এজন্যই ইসলামি শরিয়াহ হদকে ইসলামি বিচারব্যবস্থার মূল অবয়েবের শিরামূল বলে স্বীকৃতি দিয়েছে।
- প্রত্যেক এমন অপরাধকর্ম, যার ফ্যাসাদ জনমানুষের দিকে সামু্দ্রিক জলোচ্ছ্বাস ন্যায় ধেয়ে আসে, যার ক্ষতিকর প্রভাব সমাজের প্রতিটি নাগরিককে আক্রান্ত করে, এর জন্য স্থিরীকৃত শাস্তিকেই হদ তথা আল্লাহর হক্ব বলে ইসলামি বিচারব্যবস্থায় স্থির করা হয়েছে। যাতে সার্বিক কল্যাণ ও অভিষ্ট লক্ষ্য পরিপূর্ণরূপে অর্জন হয় এবং ক্ষতি ও ফ্যাসাদ পুরোপুরি দূরীভূত হয়। বস্তুত কোনো শাস্তিকে আল্লাহর হদ ও হক্ব হিসেবে বিবেচনা করার সবচে’ বড় উপকার হলো, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী তা আর রহিত করার অধিকার রাখে না। সাত ধরণের অপরাধকর্মে হদ অবধারিত হয়;
- ১. চুরি
- ২. ব্যভিচার-ধর্ষণ
- ৩. ডাকাতি-রাহাজানি
- ৪. মদ ও মাদকদ্রব সেবন
- ৫. ইসলাম ত্যাগ বা রিদ্দাহ
- ৬. ব্যভিচারের অপবাদ আরোপ
- ৭. বৈধ খলিফার বা আমিরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ
- কিসাস ও দিয়াতের শাস্তি ও সুনির্ধারিত। এক্ষেত্রেও হ্রাস-বৃদ্ধি চলে না, ব্যক্তিভেদে শাস্তির পরিমান কম বেশি হয় না। তবে তা আল্লাহর অধিকৃত হক্ব নয় বরং তা বান্দার হক্ব, অর্থাৎ ভিকটিম বা তার আত্মীয়স্বজন চাইলে অপরাধীকে ক্ষমা করতে পারে অথবা চাইলে উভয়টিও ক্ষমা করতে পারে।
- কিসাস বলা হয় অপরাধীকে তার অপরাধকর্মের অনুরূপ শাস্তি দেয়া। যেমন আল্লাহ বলেন:
- “ আমি কিতাবে তাদের জন্য বিধান লিখে দিয়েছি যে, প্রাণের বদলায় প্রাণ, চোখের বদলায় চোখ, কানের বদলায কান ও দাঁতের বদলায় দাঁত। আর জখমের অনুরূপ জখমও নেওয়া হবে। অবশ্য ব্যক্তি কিসাস ক্ষমা করে দিবে, তার জন্য তা গুনাহের কাফ্ফারা হয়ে যাবে। যারা আল্লাহর নাজিল করা বিধান দ্বারা বিচারব্যবস্থা পরিচালনা করে না, তারাই জালিম। ” (সূরা: মায়িদা ৪৫)
- আর ‘দিয়াত’ বলা হয় প্রাণ বা কোনো অঙ্গের বিনিময়ে ধার*্যকৃত অর্থদণ্ডকে। তা’যির বলা হয় এমন দণ্ডকে, যা শরিয়াহসিদ্ধ করা হয়েছে এমন কিছু অন্যায় ও অপরাধের ব্যাপারে শাস্তি প্রদানের উদ্দেশ্যে, যাতে হদ ও কাফ্ফারা অবধারিত হয় না। অথবা হদ অবধারিত হলেও এক্ষেত্রে তার শর্তসমূহে কোনো ঘাটতি বা অপূর্ণতা থাকার কারণে হদ রহিত হয়ে গেছে। ফলে বিজ্ঞ-পাজ্ঞ দূরদর্শী মুসলিম বিচারককে তা’যিরস্বরূপ অন্য কোনো শাস্তি আরোপ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। তা’যির শব্দের অর্থই হলো শিষ্টাচার শিক্ষাদান। তা’যিরের পরিমান সুনির্ধারিত নয়। শরিয়াহ কতক বিশেষ ধরণের শাস্তিকে তা’যিরের জন্য নির্ধারণ করেছে। মুসলিম বিচারক প্রয়োজনের তাগিদে সেই শাস্তিগুলো থেকে এক বা একাধিক শাস্তিকে বাছাই করে অপরাধীর উপর প্রয়োগ করতে পারেন। তা’যিরের কতক শাস্তি নিম্মরূপ;
- ১. হত্যা
- ২. বন্দি করা
- ৩. বেত্রাঘাত
- ৪. অপমান করা
- ৫. দেশান্তর করা
- ৬. বরখাস্ত করা
- ৭. কোনো কিছু ক্ষয় বা নষ্ট করে দেওয়া
- ৮. ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করে দেয়া
- যে-সকল অপরাধের জন্য তা’যির আরোপিত হয়, সেসব ক্ষেত্র নির্দিষ্ট করে এর আওতাকে সিমাবদ্ধ করে দেয়া হয়নি। কুরআন-সুন্নায় কেবল নির্ধারিত কিছু অপরাধের কথা উল্লিখিত রয়েছে। তবে তা’যিরের আওতাভুক্ত আরো অনেক অপরাধ এমন রয়েছে যা কুরআন-সুন্নায় অনুক্ত রয়েছে। যে সকল অপরাধের কারণে তা’যিরের বিধান আরোপিত হয়, তার কতক এই;
- ১. সমকামিতা
- ২. শ্লীলতাহানি
- ৩. পায়ুপথে ব্যভিচার
- ৪. মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া
- ৫. ঘুষের আদান-প্রদান
- ৬. আমানাতের খিয়ানাত
- ৭. সুদের আদান-প্রদান
- ৮. কোনো সাহাবীকে গালি দেওয়া
- ৯. অপহরণ, জবরদখল, ছিনতাই, লুণ্ঠন, ধর্ষণ প্রভৃতি
- ১০. সামর্থ্য থাকা সত্ত্বে ঋণ পরিশোধে গড়িমসি করা ইত্যাদি।
- ১১. মুসলিম বা অমুসলিম কর্তৃক মুসলমানের বিরুদ্ধে গোয়েন্দাগিরি
- ১২. নিদোর্ষ কারো উপর সমকামিতা ব্যভিচার ছাড়াও অন্যকিছুর অপবাদ আরোপ
- ১৩. চৌর*্যবৃত্তি ( যদি তা এমন পর*্যায় না পৌঁছে যে, তার হাত কেটে ফেলা বৈধ হয়)
৪
Comment
-
Originally posted by মুক্তির পথ View Post- ইসলামি শরিয়ার পরিভাষায় শাস্তি বলা হয়-“ মহান প্রজ্ঞাবান শরিয়াহপ্রণেতা স্রষ্ট্রা কর্তৃক নির্ধারিত কর্মফলকে, যা নির্ধেশের অবাধ্য হওয়ার কারণে অপরাধীর উপর আপতিত হয়, যাতে অপরাধী তার অপকর্ম থেকে নিবৃত্ত হয় এবং অন্যরা তাকে দেখে শিক্ষা নেয়।” ইসলামের শাস্তিসমূহ প্রথমত দু’ভাগে বিভক্ত;
- ১. পারলৈাকিক শাস্তি
- ২. পার্থিব শাস্তি
- পারলৈাকিক শাস্তি আবার দু’ভাগে বিভক্
- ১. চিরস্থায়ী শাস্তি
- ২. ক্ষণস্থায়ী শাস্তি
- উল্লিখিত মাকালার (প্রবন্ধের) আলোচ্যবিষয় হলো পার্থিব শাস্তি। পার্থিব শাস্তি মৌলিকভাবে তিন প্রকার;
- ১. হদ
- ২. তা’যির
- ৩. কিসাস ও দিয়াত
- হদ বলা হয় সেসকল শাস্তিকে, যার পরিমান শরিয়াহ কর্তৃক সুনির্ধারিত এবং যা আল্লাহ তায়ালার হক (অধিকৃত অধিকার) বলে স্থিরীকৃত। পরিমান সুনির্ধারিত হওয়ার অর্থ হলো, তাতে কোনো হ্রাস-বৃদ্ধি চলে না, সেসব শাস্তিসমূহে সর্বনিম্ম ও সর্বোচ্চ পরিমান বলতে কিছু নেই বরং তার মাত্রা ও প্রয়োগ সবই সুনির্ধারিত। আল্লাহ তায়ালার হক্ব (অধিকার) হওয়ার অর্থ হলো, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী চাইলেও তা মাফ করতে পারে না। হদ (দণ্ডবিধী) রহিত হওয়ার কোনো কারণ না পাওয়া গেলে সর্বাবস্থায় তা প্রয়োগ করা অপরিহার্য- অপরাধী সে যেই হোক না কেন?
- একটি বিষয় আমাদের জেনে রাখা উচিৎ: ইসলামি শরিয়াহ কোনো শাস্তিকে তখনই হদের গণ্ডীভূত করে, যখন এর প্রয়োগিক প্রয়োজনীয়তার কারণ ব্যক্তিকেন্দ্রিক না হয়ে সামাজিক ও রাষ্ট্রিয়পরিধি পর্যন্ত বিস্তীত হয়; অর্থাৎ সার্বিক জনকল্যাণার্থে বিধিবদ্ধ ও অপরিহার্য বলে গন্য হয়। সর্বময়ী কল্যাণের অর্থ যেহেতু জনমানুষের মধ্য থেকে ফ্যাসাদ দূর করা এবং তাদের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা, এজন্যই ইসলামি শরিয়াহ হদকে ইসলামি বিচারব্যবস্থার মূল অবয়েবের শিরামূল বলে স্বীকৃতি দিয়েছে।
- প্রত্যেক এমন অপরাধকর্ম, যার ফ্যাসাদ জনমানুষের দিকে সামু্দ্রিক জলোচ্ছ্বাস ন্যায় ধেয়ে আসে, যার ক্ষতিকর প্রভাব সমাজের প্রতিটি নাগরিককে আক্রান্ত করে, এর জন্য স্থিরীকৃত শাস্তিকেই হদ তথা আল্লাহর হক্ব বলে ইসলামি বিচারব্যবস্থায় স্থির করা হয়েছে। যাতে সার্বিক কল্যাণ ও অভিষ্ট লক্ষ্য পরিপূর্ণরূপে অর্জন হয় এবং ক্ষতি ও ফ্যাসাদ পুরোপুরি দূরীভূত হয়। বস্তুত কোনো শাস্তিকে আল্লাহর হদ ও হক্ব হিসেবে বিবেচনা করার সবচে’ বড় উপকার হলো, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী তা আর রহিত করার অধিকার রাখে না। সাত ধরণের অপরাধকর্মে হদ অবধারিত হয়;
- ১. চুরি
- ২. ব্যভিচার-ধর্ষণ
- ৩. ডাকাতি-রাহাজানি
- ৪. মদ ও মাদকদ্রব সেবন
- ৫. ইসলাম ত্যাগ বা রিদ্দাহ
- ৬. ব্যভিচারের অপবাদ আরোপ
- ৭. বৈধ খলিফার বা আমিরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ
- কিসাস ও দিয়াতের শাস্তি ও সুনির্ধারিত। এক্ষেত্রেও হ্রাস-বৃদ্ধি চলে না, ব্যক্তিভেদে শাস্তির পরিমান কম বেশি হয় না। তবে তা আল্লাহর অধিকৃত হক্ব নয় বরং তা বান্দার হক্ব, অর্থাৎ ভিকটিম বা তার আত্মীয়স্বজন চাইলে অপরাধীকে ক্ষমা করতে পারে অথবা চাইলে উভয়টিও ক্ষমা করতে পারে।
- কিসাস বলা হয় অপরাধীকে তার অপরাধকর্মের অনুরূপ শাস্তি দেয়া। যেমন আল্লাহ বলেন:
- “ আমি কিতাবে তাদের জন্য বিধান লিখে দিয়েছি যে, প্রাণের বদলায় প্রাণ, চোখের বদলায় চোখ, কানের বদলায কান ও দাঁতের বদলায় দাঁত। আর জখমের অনুরূপ জখমও নেওয়া হবে। অবশ্য ব্যক্তি কিসাস ক্ষমা করে দিবে, তার জন্য তা গুনাহের কাফ্ফারা হয়ে যাবে। যারা আল্লাহর নাজিল করা বিধান দ্বারা বিচারব্যবস্থা পরিচালনা করে না, তারাই জালিম। ” (সূরা: মায়িদা ৪৫)
- আর ‘দিয়াত’ বলা হয় প্রাণ বা কোনো অঙ্গের বিনিময়ে ধার*্যকৃত অর্থদণ্ডকে। তা’যির বলা হয় এমন দণ্ডকে, যা শরিয়াহসিদ্ধ করা হয়েছে এমন কিছু অন্যায় ও অপরাধের ব্যাপারে শাস্তি প্রদানের উদ্দেশ্যে, যাতে হদ ও কাফ্ফারা অবধারিত হয় না। অথবা হদ অবধারিত হলেও এক্ষেত্রে তার শর্তসমূহে কোনো ঘাটতি বা অপূর্ণতা থাকার কারণে হদ রহিত হয়ে গেছে। ফলে বিজ্ঞ-পাজ্ঞ দূরদর্শী মুসলিম বিচারককে তা’যিরস্বরূপ অন্য কোনো শাস্তি আরোপ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। তা’যির শব্দের অর্থই হলো শিষ্টাচার শিক্ষাদান। তা’যিরের পরিমান সুনির্ধারিত নয়। শরিয়াহ কতক বিশেষ ধরণের শাস্তিকে তা’যিরের জন্য নির্ধারণ করেছে। মুসলিম বিচারক প্রয়োজনের তাগিদে সেই শাস্তিগুলো থেকে এক বা একাধিক শাস্তিকে বাছাই করে অপরাধীর উপর প্রয়োগ করতে পারেন। তা’যিরের কতক শাস্তি নিম্মরূপ;
- ১. হত্যা
- ২. বন্দি করা
- ৩. বেত্রাঘাত
- ৪. অপমান করা
- ৫. দেশান্তর করা
- ৬. বরখাস্ত করা
- ৭. কোনো কিছু ক্ষয় বা নষ্ট করে দেওয়া
- ৮. ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করে দেয়া
- যে-সকল অপরাধের জন্য তা’যির আরোপিত হয়, সেসব ক্ষেত্র নির্দিষ্ট করে এর আওতাকে সিমাবদ্ধ করে দেয়া হয়নি। কুরআন-সুন্নায় কেবল নির্ধারিত কিছু অপরাধের কথা উল্লিখিত রয়েছে। তবে তা’যিরের আওতাভুক্ত আরো অনেক অপরাধ এমন রয়েছে যা কুরআন-সুন্নায় অনুক্ত রয়েছে। যে সকল অপরাধের কারণে তা’যিরের বিধান আরোপিত হয়, তার কতক এই;
- ১. সমকামিতা
- ২. শ্লীলতাহানি
- ৩. পায়ুপথে ব্যভিচার
- ৪. মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া
- ৫. ঘুষের আদান-প্রদান
- ৬. আমানাতের খিয়ানাত
- ৭. সুদের আদান-প্রদান
- ৮. কোনো সাহাবীকে গালি দেওয়া
- ৯. অপহরণ, জবরদখল, ছিনতাই, লুণ্ঠন, ধর্ষণ প্রভৃতি
- ১০. সামর্থ্য থাকা সত্ত্বে ঋণ পরিশোধে গড়িমসি করা ইত্যাদি।
- ১১. মুসলিম বা অমুসলিম কর্তৃক মুসলমানের বিরুদ্ধে গোয়েন্দাগিরি
- ১২. নিদোর্ষ কারো উপর সমকামিতা ব্যভিচার ছাড়াও অন্যকিছুর অপবাদ আরোপ
- ১৩. চৌর*্যবৃত্তি ( যদি তা এমন পর*্যায় না পৌঁছে যে, তার হাত কেটে ফেলা বৈধ হয়)
৪
ফিরে এসো দ্বীনের পথে।
Comment
-
ইসলামি শরিয়ার দণ্ডবিধি দু’ভাগে বিভক্ত;
১ . সে-সকল দণ্ডবিধি, যা কুরআন-সুন্নার পরিষ্কার বিবৃতি দ্বারা প্রমাণিত ও সুনির্ধারিত, যাতে কোনো প্রকার পরিবর্তন বা হ্রাস-বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। যোগ চাহিদা যতোই বৈচিত্রীক ও বিতর্কিত হোক না কেন?
২ . সে-সকল দণ্ডবিধি শরিয়াহ যা নির্ধারণের বিষয়টি বিজ্ঞ-প্রাজ্ঞ মুসলিম বিচারকের উপন্যস্ত করে দিয়েছে। তবে এক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয় হলো, উল্লিখিত দ্বিতীয় প্রকার দণ্ডবিধি যাতে কোরআন সুন্নায় বর্ণিত প্রথম প্রকার দণ্ডবিধির চেয়ে পরিমানের দিক হতে মাত্রারিক্ত পরিলক্ষিত না হয়।
উল্লিখিত শর্তটি সবক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। আল্লামা মাওয়ারদি (রহ বলেন, যখন কেউ সমাজে শরিয়াবিরোধী এমন কোনো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়, ইসলামি বিচারব্যাস্থায় যে ব্যাপারে কুরআন-সুন্নায় বর্ণিত সুনির্ধারিত কোনো বিধান নেই। অপরাপর মুসলিম প্রাজ্ঞ-বিজ্ঞ বিচারকের দৃষ্টিতে সংঘটিত অপরাধটিও সমাজের জন্য মহাবিপদ ও ঝুঁকির কারণ। অপরাধ কর্মটিও এমন যে, এর কোনো না, কোনো শাস্তি হবেই। এমন ক্ষেত্রে বিজ্ঞ-প্রাজ্ঞ মুসলিম বিচারকের জন্য সুযোগ রয়েছে যে, তিনি ইচ্ছা করলে এ শ্রেণীর অপরাধীকে এমন কোনো শাস্তি প্রদান করবেন, যা তিনি তার অন্যায় ও অপরাধের জন্য উপযুগি মনে করবেন। ইসলমি বিচারব্যবস্থায় এটিই সেই দণ্ড ফকিহগন যাকে তা’যির নামে অভহিত করে থাকেন।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে এ কথা পরিষ্কার যে, তা’যিরের মাত্রা অবস্থাভেদে হালকা ও ভারি হতে পারে। মুসলিম দূরদর্শী বিচারক যার জন্য এবং যে অপরাধের জন্য যে ধরণের শাস্তি নির্ধারণ করবেন, তিনি তার উপর সে ধরণের শাস্তি প্রয়োগ করার অধিকার রাখেন। বিচারক অপরাধীকে তা’যিরস্বরূপ তার কৃত অপরাধের সঙ্গে মানানসই যে কোনো শাস্তি প্রদান করতে পারেন।
তবে তা’যিরের উদ্দেশ্য যেহেতু শিষ্টাচার শিক্ষাদান, তাই তা’যিরের ক্ষেত্রে যৌক্তিক বিধান এই যে, তা’যিরের ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তি প্রদান করা হবে না। যেমনটি হদের ক্ষেত্রে প্রদান করা হয়। তবে ক্ষেত্রবিশেষ তা হতেও পারে তাতে আপত্তির কিছু নেই। তা’যিরস্বরূপ যে শাস্তি প্রদান করা হয়, তার মাত্রা যদিও ক্ষেত্রবিশেষ প্রচণ্ড হয়ে থাকে; তবে স্বাভাবিক অবস্থায় তা’যিরের পরিমাণ হদের চেয়ে কমই হয়ে থাকে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সাধারণত তা’যিরের পরিমাণ হদের সীমা অতিক্রম করে না। এ দিকে ইঙ্গিত করে একটি হাদিসও অনেকে ফকিহগন উল্লেখ করেছেন।
من بلغ حدّا في غير حدّ فهو من المعتدين
যে ব্যাক্তি হদ ছাড়া অন্য কোনো দণ্ডে শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে হদের সীমায় পৌঁছে যায়, সে সীমালঙ্ঘনকারীদের অন্তর্ভূক্ত। { বাইহাকি: ১৭০২৭ মাজমা’উয যাওয়ায়িদ: ১০৬৯২ }
Comment
Comment