>===========♠অন্ধ অনুসরণ হতে সাবধান!♠=========<
=======[শায়খ আবু মুহাম্মাদ আইমান]=======
কোনো দলীল ছাড়া কিংবা শরয়ী দলীলের বিরোধিতায় নিজ পিতৃপুরুষ বা পূর্বসূরীদেরকে অন্ধ অনুসরণ করা চরম ভ্রষ্টতা বৈ কিছুই নয়। আর এটাই হলো কাফেরদের গোমরাহী ও কুফুরীর অন্যতম কারণ; তা আজকের হোক কিংবা পূর্বকালের হোক।
وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ اتَّبِعُوا مَا أَنزَلَ اللَّهُ قَالُوا بَلْ نَتَّبِعُ مَا وَجَدْنَا عَلَيْهِ آبَاءَنَا ۚ أَوَلَوْ كَانَ الشَّيْطَانُ يَدْعُوهُمْ إِلَىٰ عَذَابِ السَّعِيرِ
“তাদেরকে যখন বলা হয়, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তোমরা তার অনুসরণ করো। তখন তারা বলে, বরং আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের যার ওপর পেয়েছি, তারই অনুসরণ করবো। যদি শয়তান তাদেরকে জলন্ত আগুনের (জাহান্নামের) শাস্তির দিকে ডাকে তবুও কি তারা পূর্বপুরুষদের অনুসরণ করবে?” -সূরা লুকমান: ২১
এরূপ তাকলীদের মানে হলো- বড়দের প্রতি অতিরিক্ত সম্মান দেখানো; আর এমন ধারণা পোষণ করা যে, তাদের দ্বারা কোনো ভুলই হতে পারে না।
আজকের আলোচনার উদ্দেশ্য হচ্ছে- মুসলিমদের কিছু নেতৃত্বশীল ব্যক্তিত্বের ব্যাপারে; যারা তাগুতকে সন্তুষ্ট রাখার লক্ষ্যে দ্বীনকে এবং এর মৌলিক বিষয়াদিকে বিকৃত করে।
প্রত্যেক মুসলিমের ওপর আবশ্যক হচ্ছে- তারা মানুষের কর্তৃত্ব থেকে বের হয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং মুমিনদের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করবে।
এ ক্ষেত্রে অনুসরণ করতে হবে উত্তম লোকদের। যেমনি আল্লাহ তাআলা বলেন-
إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَالَّذِينَ آمَنُوا
“তোমাদের অভিভাবক তো আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুমিন বান্দাগণ।” -সূরা মায়েদা: ৫৫
তেমনিভাবে প্রত্যেক মুসলমানের ওপর এ কথা জানা আবশ্যক যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পর এ উম্মতের কেউই মা’সুম নন। আর যে কোনো ব্যক্তি যে কোনো সময় তার পূর্ব অবস্থাতে ফিরে যেতে পারে, মুরতাদ হয়ে যেতে পারে।
একদল লোক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সোহবত পেয়েছিলেন; কিন্তু তারা তাঁর ওফাতের পর মুরতাদ হয়ে যায়। এটা ছিল তাকদীরের লিখন।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
فو االله الذي لا إله غیره إن أحدكم لیعمل بعمل أهل الجنة حتي مایكون بینه وبینها إلا ذراع فیسبق علیه الكتاب فیعمل بعمل أهل النار فی دخلها، وإن أحدكم لیعمل بعمل أهل النار حتي مایكون بینه وبینها إلا ذراع فیسبق علیه الكتاب فیعمل بعمل أهل الجنة فیدخلها
“আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ। তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ জান্নাতী ব্যক্তির মতো আমল করতে থাকবে। এমনকি তার মাঝে ও জান্নাতের মাঝে ব্যবধান থাকবে কেবল একহাত পরিমাণ। তারপর তাকদীর তার ওপর বিজয় হয়ে যায়, ফলে সে জাহান্নামীদের মতো আমল করতে শুরু করে।
এমনকি সে জাহান্নামে প্রবেশ করে। আর তোমাদের মধ্য থেকে কেউ কেউ জাহান্নামীদের মতো আমল করতে থাকবে। এমনকি তার মাঝে ও জাহান্নামের মাঝে কেবল এক হাত ফারাক থাকে। তারপর তার ওপর তাকদীর বিজয় হয়ে যায়। আর সে জান্নাতীদের মতো আমল করতে থাকে। এমনকি সে জান্নাতে প্রবেশ করে।”
-বুখারী ও মুসলিম।
আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
لاتعجبوا بعمل أحد حتي تنظروا بما یختم له، فإن العامل یعمل زمانا من دهره أو برهة من دهره بعمل صالح لومات دخل الجنة ثم یتحول فیعمل عملا سیئا، وإن العبد لیعمل زمانا من دهره لومات دخل النار ثم یتحوُّل فیعمل عملاصالحا، فإذا أراد االله بعبد خیرا استعمله قبل موته فوفقه لعم لصالح
“তোমরা কারো আমল দেখে আশ্চর্য হয়ো না, যতক্ষণ না দেখো- তাদের শেষ পরিণতি কী হলো? কেননা কোনো কোনো আমলকারী এমন আছে, সে জীবনের দীর্ঘ সময় ভালো আমল করতে থাকে।
এমনকি যদি সে এ অবস্থায় মারা যায়, তবে জান্নাতে প্রবেশ করা নিশ্চিত থাকে; কিন্তু তার অবস্থার পরিবর্তন ঘটে যায়।
তারপর সে খারাপ আমল করতে শুরু করে। আর এমন কিছু লোক আছে, যারা জীবনের দীর্ঘ সময় ধরে খারাপ আমল করতে থাকে।
এমনকি তার অবস্থা এমন হয় যে, সে মারা গেলে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। কিন্তু তারপর তার অবস্থার পরিবর্তন হয়ে যায়, সে ভালো আমল করতে থাকে।
যখন আল্লাহ তাআলা কোনো বান্দার ভালো চান, তবে তাকে মৃত্যুর আগে সুযোগ দেন। তাকে ভালো আমল করার তাওফীক দান করেন।”
(ইমাম আহমদ রহ. বর্ণনা করেন, আলবানী রহ. বলেন এ হাদীসের সনদ সহীহ, আস-সুন্নাহ লি ইবনে আসেম:১/১৭৪)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো ইরশাদ করেন–
إنما الأعمال بالخواتیم
“সকল আমলের ফলাফল নির্ভর করে শেষ পরিণতির ওপর।” -বুখারী: ৬৬০৭
কেননা জীবিত ব্যক্তি ফেতনা থেকে মুক্ত নয়। সে কিছুদিন পর গোমরাহীর দিকে ফিরে যেতে পারে।
ইবনে মাসউদ রাযি. বলেন-
لایقلدن أحدكم دینه رجلا إن آمن آمن وإن كفر كفر، فإنه لا أسوة في الشر
“তোমাদের কেউ যেন দ্বীনের ক্ষেত্রে কারো অন্ধ অনুসরণ না করে; যদি সে ঈমান আনে তাহলে এ ব্যক্তিও ঈমান আনে। আবার সে যদি কাফের হয়ে যায়; তাহলে এ ব্যক্তিও কাফের হয়ে যায়। কেননা মন্দের ভেতরে কোনো রূপ আদর্শ নেই।-ইলামুল মুআকিয়ীন: ২/১৭৬
আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্যে উদাহরণ উপস্থাপন করেছেন এমন আলেমের সম্পর্কে, যে তার পূর্বের অবস্থার দিকে ফিরে যায়। ঈমান আনার পর আবার কুফরী করে। যেন আমরা অন্ধ অনুসরণ ও গোঁড়ামি থেকে সাবধান থাকি।
আল্লাহর দেয়া উদাহরণ–
وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ الَّذِي آتَيْنَاهُ آيَاتِنَا فَانسَلَخَ مِنْهَا فَأَتْبَعَهُ الشَّيْطَانُ فَكَانَ مِنَ الْغَاوِينَ– وَلَوْ شِئْنَا لَرَفَعْنَاهُ بِهَا وَلَٰكِنَّهُ أَخْلَدَ إِلَى الْأَرْضِ وَاتَّبَعَ هَوَاهُ ۚ فَمَثَلُهُ كَمَثَلِ الْكَلْبِ إِن تَحْمِلْ عَلَيْهِ يَلْهَثْ أَوْ تَتْرُكْهُ يَلْهَث
“আর আপনি তাদেরকে শুনিয়ে দিন সে লোকের কথা, যাকে আমি নিজের নিদর্শনসমূহ দান করেছিলাম, অথচ সে তা পরিহার করে বেরিয়ে গেছে। আর তার পেছনে লেগেছে শয়তান, ফলে সে পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়েছে। অবশ্য আমি ইচ্ছা করলে সে সকল নিদর্শনসমূহের বদৌলতে তার মর্যাদা বাড়িয়ে দিতাম।
কিন্তু সে যে অধঃপতিত এবং নিজের রিপুর অনুগামী হয়ে রইলো। সুতরাং তার অবস্থা হলো কুকুরের মতো; যদি তাকে তাড়া করো তবুও হাঁপাবে আর যদি ছেড়ে দাও তবুও হাঁপাবে।” -সূরা আ’রাফ: ১৭৫-১৭৬
হে আমার ভাই! আপনি দ্বীন শিক্ষা করুন। সত্যকে জানুন, সত্য দিয়ে সত্যবাদীকে চিনতে পারবেন।
জানতে পারবেন- কার থেকে দূরে থাকতে হবে; যেন আপনি তাকে প্রতিহত করতে পারেন।
من رأي منكرا فلیغیره “যে ব্যক্তি কোনো খারাপ কাজ প্রত্যক্ষ করে, সে যেন তা পরিবর্তন করে”
আপনি কারো চাটুকার হবেন না। নেতা যেদিকে যাবে, আপনি তার পেছনে চলে যাবেন এমন যেন না হয়। যখন আপনার নেতা বিকৃত পথে হাঁটা শুরু করবে, তাকে নাসীহা করবেন। প্রত্যাখ্যান করবেন তার কথাকে।
আপনার চিন্তার দ্বার বন্ধ করে রাখবেন না। সত্য-মিথ্যার মাঝে পার্থক্য সব সময় মাথায় রাখবেন। যে জাতিই চিন্তার দ্বার বন্ধ করে রেখেছে, তাদের প্রত্যাবর্তন স্থল জাহান্নাম।
যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَقَالُوا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِي أَصْحَابِ السَّعِيرِ
“তারা আরও বলবে- যদি আমরা শুনতাম অথবা বুদ্ধি খাটাতাম! তবে আমরা জাহান্নামবাসীদের মধ্যে থাকতাম না।” -সূরা মুলক: ১০
=======[শায়খ আবু মুহাম্মাদ আইমান]=======
কোনো দলীল ছাড়া কিংবা শরয়ী দলীলের বিরোধিতায় নিজ পিতৃপুরুষ বা পূর্বসূরীদেরকে অন্ধ অনুসরণ করা চরম ভ্রষ্টতা বৈ কিছুই নয়। আর এটাই হলো কাফেরদের গোমরাহী ও কুফুরীর অন্যতম কারণ; তা আজকের হোক কিংবা পূর্বকালের হোক।
وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ اتَّبِعُوا مَا أَنزَلَ اللَّهُ قَالُوا بَلْ نَتَّبِعُ مَا وَجَدْنَا عَلَيْهِ آبَاءَنَا ۚ أَوَلَوْ كَانَ الشَّيْطَانُ يَدْعُوهُمْ إِلَىٰ عَذَابِ السَّعِيرِ
“তাদেরকে যখন বলা হয়, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তোমরা তার অনুসরণ করো। তখন তারা বলে, বরং আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের যার ওপর পেয়েছি, তারই অনুসরণ করবো। যদি শয়তান তাদেরকে জলন্ত আগুনের (জাহান্নামের) শাস্তির দিকে ডাকে তবুও কি তারা পূর্বপুরুষদের অনুসরণ করবে?” -সূরা লুকমান: ২১
এরূপ তাকলীদের মানে হলো- বড়দের প্রতি অতিরিক্ত সম্মান দেখানো; আর এমন ধারণা পোষণ করা যে, তাদের দ্বারা কোনো ভুলই হতে পারে না।
আজকের আলোচনার উদ্দেশ্য হচ্ছে- মুসলিমদের কিছু নেতৃত্বশীল ব্যক্তিত্বের ব্যাপারে; যারা তাগুতকে সন্তুষ্ট রাখার লক্ষ্যে দ্বীনকে এবং এর মৌলিক বিষয়াদিকে বিকৃত করে।
প্রত্যেক মুসলিমের ওপর আবশ্যক হচ্ছে- তারা মানুষের কর্তৃত্ব থেকে বের হয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং মুমিনদের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করবে।
এ ক্ষেত্রে অনুসরণ করতে হবে উত্তম লোকদের। যেমনি আল্লাহ তাআলা বলেন-
إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَالَّذِينَ آمَنُوا
“তোমাদের অভিভাবক তো আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুমিন বান্দাগণ।” -সূরা মায়েদা: ৫৫
তেমনিভাবে প্রত্যেক মুসলমানের ওপর এ কথা জানা আবশ্যক যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পর এ উম্মতের কেউই মা’সুম নন। আর যে কোনো ব্যক্তি যে কোনো সময় তার পূর্ব অবস্থাতে ফিরে যেতে পারে, মুরতাদ হয়ে যেতে পারে।
একদল লোক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সোহবত পেয়েছিলেন; কিন্তু তারা তাঁর ওফাতের পর মুরতাদ হয়ে যায়। এটা ছিল তাকদীরের লিখন।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
فو االله الذي لا إله غیره إن أحدكم لیعمل بعمل أهل الجنة حتي مایكون بینه وبینها إلا ذراع فیسبق علیه الكتاب فیعمل بعمل أهل النار فی دخلها، وإن أحدكم لیعمل بعمل أهل النار حتي مایكون بینه وبینها إلا ذراع فیسبق علیه الكتاب فیعمل بعمل أهل الجنة فیدخلها
“আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ। তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ জান্নাতী ব্যক্তির মতো আমল করতে থাকবে। এমনকি তার মাঝে ও জান্নাতের মাঝে ব্যবধান থাকবে কেবল একহাত পরিমাণ। তারপর তাকদীর তার ওপর বিজয় হয়ে যায়, ফলে সে জাহান্নামীদের মতো আমল করতে শুরু করে।
এমনকি সে জাহান্নামে প্রবেশ করে। আর তোমাদের মধ্য থেকে কেউ কেউ জাহান্নামীদের মতো আমল করতে থাকবে। এমনকি তার মাঝে ও জাহান্নামের মাঝে কেবল এক হাত ফারাক থাকে। তারপর তার ওপর তাকদীর বিজয় হয়ে যায়। আর সে জান্নাতীদের মতো আমল করতে থাকে। এমনকি সে জান্নাতে প্রবেশ করে।”
-বুখারী ও মুসলিম।
আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
لاتعجبوا بعمل أحد حتي تنظروا بما یختم له، فإن العامل یعمل زمانا من دهره أو برهة من دهره بعمل صالح لومات دخل الجنة ثم یتحول فیعمل عملا سیئا، وإن العبد لیعمل زمانا من دهره لومات دخل النار ثم یتحوُّل فیعمل عملاصالحا، فإذا أراد االله بعبد خیرا استعمله قبل موته فوفقه لعم لصالح
“তোমরা কারো আমল দেখে আশ্চর্য হয়ো না, যতক্ষণ না দেখো- তাদের শেষ পরিণতি কী হলো? কেননা কোনো কোনো আমলকারী এমন আছে, সে জীবনের দীর্ঘ সময় ভালো আমল করতে থাকে।
এমনকি যদি সে এ অবস্থায় মারা যায়, তবে জান্নাতে প্রবেশ করা নিশ্চিত থাকে; কিন্তু তার অবস্থার পরিবর্তন ঘটে যায়।
তারপর সে খারাপ আমল করতে শুরু করে। আর এমন কিছু লোক আছে, যারা জীবনের দীর্ঘ সময় ধরে খারাপ আমল করতে থাকে।
এমনকি তার অবস্থা এমন হয় যে, সে মারা গেলে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। কিন্তু তারপর তার অবস্থার পরিবর্তন হয়ে যায়, সে ভালো আমল করতে থাকে।
যখন আল্লাহ তাআলা কোনো বান্দার ভালো চান, তবে তাকে মৃত্যুর আগে সুযোগ দেন। তাকে ভালো আমল করার তাওফীক দান করেন।”
(ইমাম আহমদ রহ. বর্ণনা করেন, আলবানী রহ. বলেন এ হাদীসের সনদ সহীহ, আস-সুন্নাহ লি ইবনে আসেম:১/১৭৪)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো ইরশাদ করেন–
إنما الأعمال بالخواتیم
“সকল আমলের ফলাফল নির্ভর করে শেষ পরিণতির ওপর।” -বুখারী: ৬৬০৭
কেননা জীবিত ব্যক্তি ফেতনা থেকে মুক্ত নয়। সে কিছুদিন পর গোমরাহীর দিকে ফিরে যেতে পারে।
ইবনে মাসউদ রাযি. বলেন-
لایقلدن أحدكم دینه رجلا إن آمن آمن وإن كفر كفر، فإنه لا أسوة في الشر
“তোমাদের কেউ যেন দ্বীনের ক্ষেত্রে কারো অন্ধ অনুসরণ না করে; যদি সে ঈমান আনে তাহলে এ ব্যক্তিও ঈমান আনে। আবার সে যদি কাফের হয়ে যায়; তাহলে এ ব্যক্তিও কাফের হয়ে যায়। কেননা মন্দের ভেতরে কোনো রূপ আদর্শ নেই।-ইলামুল মুআকিয়ীন: ২/১৭৬
আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্যে উদাহরণ উপস্থাপন করেছেন এমন আলেমের সম্পর্কে, যে তার পূর্বের অবস্থার দিকে ফিরে যায়। ঈমান আনার পর আবার কুফরী করে। যেন আমরা অন্ধ অনুসরণ ও গোঁড়ামি থেকে সাবধান থাকি।
আল্লাহর দেয়া উদাহরণ–
وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ الَّذِي آتَيْنَاهُ آيَاتِنَا فَانسَلَخَ مِنْهَا فَأَتْبَعَهُ الشَّيْطَانُ فَكَانَ مِنَ الْغَاوِينَ– وَلَوْ شِئْنَا لَرَفَعْنَاهُ بِهَا وَلَٰكِنَّهُ أَخْلَدَ إِلَى الْأَرْضِ وَاتَّبَعَ هَوَاهُ ۚ فَمَثَلُهُ كَمَثَلِ الْكَلْبِ إِن تَحْمِلْ عَلَيْهِ يَلْهَثْ أَوْ تَتْرُكْهُ يَلْهَث
“আর আপনি তাদেরকে শুনিয়ে দিন সে লোকের কথা, যাকে আমি নিজের নিদর্শনসমূহ দান করেছিলাম, অথচ সে তা পরিহার করে বেরিয়ে গেছে। আর তার পেছনে লেগেছে শয়তান, ফলে সে পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়েছে। অবশ্য আমি ইচ্ছা করলে সে সকল নিদর্শনসমূহের বদৌলতে তার মর্যাদা বাড়িয়ে দিতাম।
কিন্তু সে যে অধঃপতিত এবং নিজের রিপুর অনুগামী হয়ে রইলো। সুতরাং তার অবস্থা হলো কুকুরের মতো; যদি তাকে তাড়া করো তবুও হাঁপাবে আর যদি ছেড়ে দাও তবুও হাঁপাবে।” -সূরা আ’রাফ: ১৭৫-১৭৬
হে আমার ভাই! আপনি দ্বীন শিক্ষা করুন। সত্যকে জানুন, সত্য দিয়ে সত্যবাদীকে চিনতে পারবেন।
জানতে পারবেন- কার থেকে দূরে থাকতে হবে; যেন আপনি তাকে প্রতিহত করতে পারেন।
من رأي منكرا فلیغیره “যে ব্যক্তি কোনো খারাপ কাজ প্রত্যক্ষ করে, সে যেন তা পরিবর্তন করে”
আপনি কারো চাটুকার হবেন না। নেতা যেদিকে যাবে, আপনি তার পেছনে চলে যাবেন এমন যেন না হয়। যখন আপনার নেতা বিকৃত পথে হাঁটা শুরু করবে, তাকে নাসীহা করবেন। প্রত্যাখ্যান করবেন তার কথাকে।
আপনার চিন্তার দ্বার বন্ধ করে রাখবেন না। সত্য-মিথ্যার মাঝে পার্থক্য সব সময় মাথায় রাখবেন। যে জাতিই চিন্তার দ্বার বন্ধ করে রেখেছে, তাদের প্রত্যাবর্তন স্থল জাহান্নাম।
যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَقَالُوا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِي أَصْحَابِ السَّعِيرِ
“তারা আরও বলবে- যদি আমরা শুনতাম অথবা বুদ্ধি খাটাতাম! তবে আমরা জাহান্নামবাসীদের মধ্যে থাকতাম না।” -সূরা মুলক: ১০
Comment