Announcement

Collapse
No announcement yet.

তায়েফায়ে মানসূরা সম্পর্কে আরো দু’টি কথা

Collapse
This is a sticky topic.
X
X
 
  • Filter
  • Time
  • Show
Clear All
new posts

  • তায়েফায়ে মানসূরা সম্পর্কে আরো দু’টি কথা

    তায়েফায়ে মানসূরা সংক্রান্ত পোস্টে আমি বলেছিলাম যে, কিতাল তায়েফায়ে মানসূরার আবশ্যকীয় সিফাত। কিতালে জড়িত হওয়া ছাড়া তায়েফায়ে মানসূরা হওয়া যায় না। এ প্রসঙ্গে কাশ্মিরী রহ. এর বক্তব্যও উল্লেখ করেছিলাম। কাশ্মিরী রহ. এর বক্তব্য থেকে সালাফের বক্তব্যসমূহের উদ্দেশ্যও বুঝা যায়।


    আমার এ বক্তব্য থেকে কারো কারো সংশয় হতে পারে যে, তাহলে আলেম উলামা, যারা দ্বীনের জন্য তাদের সর্ব সামর্থ্য ব্যয় করে গেছেন, তারা কি তায়েফায়ে মানসূরা নন?


    উত্তর:

    বিষয়টা বুঝার আগে বুঝা দরকার- জিহাদ কাকে বলে?

    আমরা জানি, জিহাদ একটি ব্যাপক আমল। এখানে অনেক শ্রেণী ও ভাগ থাকে। একদল সরাসরি কিতালে থাকেন। বাকিরা জিহাদের প্রয়োজনমাফিক অন্যান্য কাজে থাকেন। কেউ চিকিৎসা বিভাগে থাকেন। কেউ অস্ত্র তৈরিতে থাকেন। কেউ অর্থনৈতিক বিষয়াদি দেখাশুনা করেন। কেউ মিডিয়ার কাজ করেন। কেউ কিতাব লেখা ও রচনায় থাকেন। কেউ ফতোয়া দেয়া ও মাসআলা মাসায়েল বয়ানে থাকেন। এভাবে বিভিন্নজন বিভিন্ন কাজে রত থাকেন। তাদের এ কাজগুলোর সবগুলোই জিহাদে শামিল। সবাই নিজ নিজ মেহনত ও প্রয়োজন অনুসারে সওয়াব পাবেন। সকলেই মুজাহিদ।


    অতএব, যেসকল আলেম উলামা দ্বীনের অন্যান্য বিষয়ের মাসায়েল বলা ও খেদমত করার পাশাপাশি জিহাদের বিষয়েও ফতোয়া দিচ্ছেন বা লেখালেখি করছেন, তারাও মুজাহিদ। তারাও তায়েফায়ে মানসূরার অন্তর্ভুক্ত। যারা সরাসরি কিতালে আছেন, তারা যেমন তায়েফায়ে মানসূরা, যারা জিহাদের সাথে জড়িত হয়ে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজে লিপ্ত আছেন, তারাও তায়েফায়ে মানসূরা।


    দ্বিতীয়ত: সহীহ হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোন মুজাহদিকে জিহাদের খরচ সরবরাহ করলো, সেও জিহাদ করলো।’

    একজন জান দিয়ে করলো, আরেকজন মাল দিয়ে করলো। একজন প্রত্যক্ষভাবে করলো, আরেকজন পরোক্ষভাবে করলো। এভাবে যে কেউ যেকোন ভাবে জিহাদে সহায়তা করলো, তারাও পরোক্ষভাবে মুজাহিদ। তারাও পরোক্ষভাবে তায়েফায়ে মানসূরা।


    তৃতীয়ত: হকপন্থী আলেম উলামারা কোন সময় জিহাদবিরোধী হতে পারেন না। জিহাদবিরোধী হলে আর হকপন্থী থাকে না। তাহলে যারা হকপন্থী আলেম, তারা সরাসরি জিহাদে না গেলেও জিহাদের সমর্থক হওয়ার কারণে পরোক্ষভাবে জিহাদে শরীক আছেন। এ হিসেবে তারাও পরোক্ষভাবে তায়েফায়ে মানসূরায় পড়েন।



    এ হিসেবে আমরা বলতে পারি, যারা সরাসরি কিতালে আছেন বা সরাসরি জিহাদের কাজে লিপ্ত আছেন- চাই ইলমী কাজই হোক না কেন- তারা সরাসরি তায়েফায়ে মানসূরা। আর যারা সরাসরি জিহাদে লিপ্ত নেই, সহায়তায় আছেন কিংবা সমর্থন করছেন, তারাও পরোক্ষভাবে তায়েফায়ে মানসূরা।



    অধিকন্তু বলতে গেলে, আহলুস সুন্নাহর প্রকৃত আকীদা বিশ্বাস পোষণকারী ব্যক্তি কোনভাবেই জিহাদ বিরোধী হতে পারে না। তারা- ফরযে আইন না হলে- জিহাদ না করলেও বা সহায়তায় না থাকলেও সমর্থক হওয়ার কারণে পরোক্ষভাবে তারাও তায়েফায়ে মানসূরা। এ হিসেবে যদি বলা হয় যে, আহলুস সুন্নাহর সকলেই তায়েফায়ে মানসূরা, তাহলে তাও ঠিক আছে।


    তাহলে বলা যায়, যারা সরাসরি জিহাদ বা কিতালে আছেন, তারা সরাসরি তায়েফায়ে মানসূরা। আর আলেম উলামা ও প্রকৃত আহলুস সুন্নাহগণ, তারা সরাসরি জিহাদে না থাকলেও সহায়তার মাধ্যমে কিংবা সমর্থনের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে জিহাদে জড়িত আছেন। তারাও পরোক্ষভাবে তায়েফায়ে মানসূরা। এ হিসেবে সালাফের যারা বলেছেন যে, তায়েফায়ে মানসূরা হলো- আহলে ইলম, আহলুল হাদিস বা আহলুস সুন্নাহ্: তাদের কথায় কোন বৈপরীত্ব নেই।



    মোল্লা আলী কারী রহ. (১০১৪ হি.) বলেন,
    نعم هذه الأحاديث شاملة للعلماء أيضا حتى قيل المراد بهم علماء الحديث والله أعلم. اهـ
    “হ্যাঁ, তায়েফায়ে মানসূরার হাদিসগুলো (মুজাহিদগণের পাশপাশি) উলামায়ে কেরামকেও অন্তর্ভুক্ত করে। এমনকি এও বলা হয় যে, তায়েফায়ে মানসূরা দ্বারা উদ্দেশ্য- হাদিস বিশেষজ্ঞ উলামাগণ।”- মিরকাত ৬/২৬৬২



    এ কথাগুলো তায়েফায়ে মানসূরার সংক্রান্ত আগের পোস্টেই বলা দরকার ছিল। আমার মাথায় সেগুলো ছিল। বিভিন্ন কারণে বলতে পারিনি। পরে দেখলাম, এ থেকে কারো কারো সংশয় হচ্ছে যে, আমরা সালাফের পথ পরিত্যাগ করে নিজেরা মনমতো ব্যাখ্যা করছি। এ সংশয় দূর করার জন্য এখন বলে দিচ্ছি। আমরা সালাফের পথ ছাড়িনি। সালাফের বক্তব্যসমূহের সহীহ ব্যাখ্যা অবলম্বন করেছি। এতে হাদিসের সাথে সালাফের বক্তব্যসমূহের আর দ্বন্ধ থাকে না। ফালিল্লাহিল হামদ।


    এখানেআরো দুটিকথাবলেদেয়ামুনাসিবমনেকরছি:
    এক.
    তায়েফায়ে মানসূরার উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট যদিও কিতাল, কিন্তু এটাই তাদের একমাত্র বৈশিষ্ট নয়। গোটা দ্বীনই তাদের কর্মের পরিধি। গোটা দ্বীনের জন্যই তাদের মেহনত-মুজাহাদা-কুরবানী। অতএব, তারা কিতালে যেমন লিপ্ত থাকবেন, পাশাপাশি দ্বীনের অন্যান্য কাজেও লিপ্ত থাকতে পারেন। শিরক, বিদআন, ইলহাদ, যান্দাকাসহ সকল বাতিলের বিরুদ্ধে তারা কাজ করে যেতে পারেন। উভয়টার মাঝে কোন বৈপরীত্ব নেই।

    দুই.
    তায়েফায়ে মানসূরা দ্বারা যা-ই উদ্দেশ্য হোক, এতটুকুতে তো সকলেই একমত যে, হকপন্থী মুজাহিদগণ অবশ্যই তায়েফায়ে মানসূরার অন্তর্ভুক্ত। তারা তায়েফায়ে মানসূরার অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ব্যাপারে আশাকরি কারো কোন দ্বিমত নেই। আলেম উলামা যারা জিহাদে সরাসরি জড়িত নন, তারা তায়েফায়ে মানসূরার অন্তর্ভুক্ত কি’না সেটাতে দ্বিমত হতে পারে। কিন্তু মুজাহিদগণ যে, তায়েফায়ে মানসূরার অন্তর্ভুক্ত, তাতে আশাকরি কারো দ্বিমত নেই।



    আবার এতটুকুতেও কোন দ্বিমত নেই যে, খেলাফত না থাকার সময়ও তায়েফায়ে মানসূরা বিদ্যমান থাকবে।



    যদি তায়েফায়ে মানসূরাকে ব্যাপকার্থবোধক ধরা হয়, তাহলে অন্তত এতটুকু বলা যায় যে, খেলাফত না থাকার সময় জিহাদি জামাত থাকতে পারে। খেলাফত না থাকাবস্থায় আলেম উলামা যেমন থাকতে পারেন, জিহাদি জামাতও থাকতে পারে। তায়েফায়ে মানসূরাকে ব্যাপাকার্থে ধরার এবং আলেম উলামাদেরকেও কিংবা গোটা আহলুস সুন্নাহকেই তায়েফায়ে মানসূরার অন্তর্ভুক্ত ধরার অর্থ তো এই নয় যে, মুজাহিদগ তায়েফায়ে মানসূরার অন্তর্ভুক্ত নন। বরং অর্থ- মুজাহিদগণের পাশাপাশি অন্যরাও হতে পারেন।


    যদি এমনটাই হয়, তাহলে বলতে হবে, যখন খেলাফত থাকবে না, তখন জিহাদরত মুজাহিদ জামাত ও তানজীম –আবশ্যিকভাবে সর্বদা বিদ্যমান না থাকলেও- বিদ্যমান থাকাতে কোন বাধা নেই। অতএব, খেলাফত না থাকাবস্থায় মুজাহিদ জামাত থাকতে কোন অসুবিধা নাই। গঠন করতেও কোন অসুবিধা নাই।



    মোটকথা, তায়েফায়ে মানসূরার অর্থ যাই ধরা হোক না কেন, এ থেকে এতটুকু সকলের ঐক্যমতে সাব্যস্ত হবে যে, খেলাফত না থাকাবস্থায় আহলুস সুন্নাহর আকীদা মানহাজ বিশিষ্ট জিহাদি তানজীম গঠন করতে কোন বাধা নেই। ফিতনা অধ্যায়ের হুযায়ফা রাদিয়াল্লাহু আনহুর সকল দলমত পরিত্যাগ করার হাদিসকে তায়েফায়ে মানসূরার হাদিসগুলোর সাথে মিলালে বলা যায়, হুযায়ফা রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদিসে যেসব দল ত্যাগ করতে বলা হয়েছে সেগুলো গোমরাহ, ভ্রান্ত ও আহলুস সুন্নাহর বহির্ভূত দল উদ্দেশ্য। হক দল বা তানজীম ত্যাগ করা উদ্দেশ্য নয়।


    আমি আমার সামর্থ্যানুযায়ী বিষয়টা বুঝানোর চেষ্টা করেছি। কারো কাছে আমার কোন ভুল ধরা পড়লে আমাকে অবগত করলে আমি শুকরিয়া আদায় করব। নিজেকে শুধরে নেবো। আর সঠিক *বুঝ দেয়ার মালিক তো এক আল্লাহ তাআলা।
    হে আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন!


  • #2
    আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ। আখি,আপনাকে ধন্যবাদ। একটা কথা ক্লিয়ার হয়েছে, যারা কিতালের বিরোধিতা করবে তারা ত্বইফায়ে মানছুরা হতে পারবে না,ত্বইফায়ে মানছুরার অন্তর্ভুক্ত হতে হলে জিহাদ/ কিতাল না করলেও সাহায্য করতে হবে।
    ولو ارادوا الخروج لاعدواله عدةولکن کره الله انبعاثهم فثبطهم وقیل اقعدوا مع القعدین.

    Comment


    • #3
      যাজাকআল্লাহ

      Comment


      • #4
        জিহাদ শরীয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল, যার সাথে উম্মাহের নিরাপত্তা নিহিত।জিহাদ করতে যারাই গাফলতি করবে তারাই ধংস হবে। মুসলিম প্রতিটি ব্যাক্তিই নিজেকে কাফেরের আক্রমণ থেকে বাচার জন্য প্রস্তুত থাকবে, না হয় তার ধংস অনিবার্য।
        والیتلطف ولا یشعرن بکم احدا٠انهم ان یظهروا علیکم یرجموکم او یعیدو کم فی ملتهم ولن تفلحو اذا ابدا

        Comment


        • #5
          আমরা জানি যে, যারা আমিরুল মু’মিনীনের নির্দেশনা অনুযায়ী যে কোন সেক্টরে কাজ করবে, তারা সকলেই তায়িফায়ে মানসুরার অন্তুর্ভুক্ত হবে। চাই সে লেখালেখা করুন বা ওয়াজ করুক বা ব্যবসা করুক ইত্যাদি। আর এ সবগুলিই জিহাদের প্রয়োজনে করা হবে। কারণ, মু’মিনের জীবন জিহাদ বিহীন কল্পনা করা যায় না!
          ‘যার গুনাহ অনেক বেশি তার সর্বোত্তম চিকিৎসা হল জিহাদ’-শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ.

          Comment


          • #6
            মুসলিমদের এই দুর্দিনে মুজাহিদদের পক্ষে না বলে চুপ করে থাকা কী জিহাদের পক্ষে সমর্থন বলে গণ্য হবে যখন এই যুগে ফেক একাউন্ট খুলে বা পরিচয় প্রকাশ না করেও মুজাহিদদের পক্ষে প্রচার প্রচারণা চালানো যায় বা জিহাদের পক্ষে কলম ধরা যায় ? @ইলম ও জিহাদ ভাই

            Comment

            Working...
            X